গায়ের রঙ মানুষের এমনই এক দৈহিক বৈশিষ্ট্য যার উপর তার নিজের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এ গায়ের রঙের উপর ভিত্তি করেই মানবসমাজ বহুবার বহুভাগে বিভক্ত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে।
খুব বেশিদিন না, আজ থেকে মাত্র অর্ধ শতাব্দী আগেই আমেরিকায় প্রচলিত ছিলো ভয়াবহ রকমের বর্ণপ্রথা। এর শিকার হচ্ছিলো মূলত আফ্রিকান আমেরিকানরা। খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, বিনোদন, চলাফেরা- দৈনন্দিন জীবনের ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে দেশটির সাদা চামড়ার অধিবাসীদের কাছ থেকে নিগ্রহের শিকার হচ্ছিলো তারা।
আজকের এ লেখায় থাকছে মূলত তৎকালে কালোদের নিগৃহীত রুপের বিস্তারিত চিত্র। ছবির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তাদের দুর্দশার বাস্তব চিত্রগুলো।
১
খেলাধুলা সকল শিশুর অধিকার। তবে সেই অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছিলো আফ্রিকান-আমেরিকান শিশুদের। ছবিতে দেখানো খেলার মাঠটির কথাই ধরা যাক। এখানে প্রবেশ নিষেধ ছিলো তাদের, কারণ তারা কালো!
১৯৫৬ সালে আলাবামা থেকে তোলা হয়েছিলো ছবিটি।
২
পানির অপর নাম জীবন। তবে এই পানি পানের জায়গা নির্ধারণেও ছিলো বৈষম্য। ‘For Colored Only’ লিখে আলাদা করে হয়েছিলো কালো চামড়ার মানুষগুলোকে।
ছবিটি তোলার স্থান-কাল সম্পর্কে জানা যায় নি।
৩
১৯৫৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অফ কালার্ড পিপল (এনএএসিপি) কর্তৃক গৃহীত আইনী পদক্ষেপে আদালতের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাদাদের সাথে পড়াশোনার অধিকার পায় কালোরা। তেমনই এক ছবি এটি।
সামনে থাকা নির্ভীক, দৃঢ়চেতা মেয়েটির নাম এলিজাবেথ একফোর্ড। আরকানসাস লিটল রক সেন্ট্রাল হাই স্কুলে সাদা-কালো একত্রে পড়াশোনার ব্যাপারে আইনি নোটিশ এসেছিলো। কিন্তু এমন নির্দেশ কিছুতেই মেনে নিতে চায় নি আমেরিকার সাদা চামড়ার সাধারণ জনগণ। সেই স্কুলে ভর্তি হওয়া নয়জন কালো চামড়ার শিক্ষার্থীর মাঝে একজন ছিলো এলিজাবেথ। সে স্কুলে যাচ্ছে, পেছন থেকে সাদা চামড়ার মানুষগুলো তার উদ্দেশ্যে নানা কটুকথা ছুড়ে দিচ্ছে, দিচ্ছে অদ্ভুত নানা চাহনি। ছবিটি একইসাথে যেমন বিবেককে নাড়িয়ে দেয়, তেমনি শিক্ষার প্রতি এলিজাবেথের আগ্রহ অনুপ্রাণিত করে বিশ্বের নানা প্রান্তে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত নারীদেরও।
৪
ফ্রিডম রাইডাররা আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে যখন বাস ভ্রমণে বৈষম্যের প্রতিবাদ করে চষে বেড়াচ্ছিলো, তখন সেই বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় একদল উত্তেজিত জনতা। সৌভাগ্যক্রমে কেউই তেমন আহত হয় নি।
১৯৬১ সালে তোলা এ ছবিটির স্থান সম্পর্কে অবশ্য জানা যায় নি।
৫
এবারের ঘটনাটিও আরকানসাসের লিটল রক স্কুলকে ঘিরেই। পনের বছর বয়েসী কিশোর জনি গ্রে তার ছোট বোনকে নিয়ে ফুটপাত ধরে স্কুলের দিকে যাচ্ছিলো ১৯৫৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর। এমন সময় সাদা চামড়ার দুই ছেলে এসে তাদেরকে ফুটপাত থেকে সরিয়ে দিতে চাইলে প্রতিবাদে এভাবেই তার দিকে তর্জনি উঁচিয়ে ধরে জনি।
৬
১৯৬৩ সালের ১১ জুন ইউনিভার্সিটি অফ আলাবামার প্রবেশদ্বারে প্রতিবাদস্বরুপ দাঁড়িয়ে আছেন আলাবামার গভর্নর জর্জ ওয়ালেস। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাদা-কালোদের একত্রীকরণের প্রতিবাদ জানাতেই তার এ অবস্থান।
৭
নিজেদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সোচ্চার কালোদের উপর নিপীড়নের এক মর্মস্পর্শী ছবি এটি। আলাবামার বার্মিংহামে পুলিশের দ্বিমুখী নীতি ও বৈষম্যের প্রতিবাদ জানাতে জড় হয়েছিলো তারা। মিছিলে অংশ নেয়া প্রত্যেকের উপর নেমে আসে ভয়াবহ নির্যাতন। জলকামান, শিকারী কুকুর লেলিয়ে দেয়ার পাশাপাশি খালি হাতেও পেটানো হয় তাদের। নারী ও শিশুরাও বাদ যায় নি নির্যাতিতদের তালিকা থেকে।
৮
ভয়ে ভয়ে বসে আছে ক্লাসের একমাত্র কালো চামড়ার মেয়েটি। ১৯৫৭ সালে টেনেসী থেকে তোলা হয় এ ছবিটি।
৯
বেনি অলিভার নামে মিসিসিপির সাবেক এ পুলিশ সদস্য হঠাৎ করেই চড়াও হয়ে ওঠেন মেম্ফিস নরম্যান নামে আফ্রিকান-আমেরিকান এ ছাত্রটির উপর। আরো দুজন সহপাঠীর সাথে নরম্যান কালোদের জন্য পৃথক লাঞ্চ কাউন্টারে অপেক্ষা করছিলো। আশেপাশের মানুষদের হাস্যোজ্জ্বল মুখই বলে দিচ্ছে একজন কালো মানুষকে এভাবে পশুর মতো মার খেতে দেখে তারা কতটা উপভোগ করছিলো!
১৯৬৩ সালের ২৮ মে তোলা হয় ছবিটি।
১০
সাদা-কালোদের একত্রে পড়াশোনার প্রতিবাদ করে ‘Race mixing is communism’, ‘Stop race mixing’ ইত্যাদি নানা কথা লিখে ১৯৫৯ সালে আরকানসাসের লিটল রক সেন্ট্রাল হাই স্কুলে সমবেত হয়েছিলো একদল সাদা চামড়ার মানুষ।
১১
১৯৬৪ সালে নিউ ইয়র্ক থেকে তোলা হয় এ ছবিটি। সাদা-কালোদের একত্রে পড়াশোনার ব্যাপারে আইন করা হলে তীব্র প্রতিবাদ জানায় সাদারা। তারা কালোদের সাথে সংশ্লিষ্ট সবকিছু থেকেই নিজেদের সরিয়ে নিতে চায়। এরই অংশ থেকে ক্লাসে কালো চামড়ার কয়েকজন শিক্ষার্থী আসায় বেরিয়ে যায় সাদারা। ক্লাসে তাই দেখা যাচ্ছে কেবল সাদা চামড়ার শিক্ষিকা এবং কালো চামড়ার কয়েকজন শিক্ষার্থীকে।
১২
বাসের ওয়েটিং রুমেও বিভেদ ছিলো সাদা-কালোদের মাঝে। ‘Colored waiting room’ লেখাটি সেদিকেই ইঙ্গিত করছে।
১৩
সাউদার্ন হাই স্কুলে সাদা-কালোদের সহশিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সেখানেও। একদল আফ্রিকান-আমেরিকান শিক্ষার্থী এসেছিলো সেখানে পড়াশোনা করতে। এরই প্রতিবাদে কয়েকজন সাদা চামড়ার শিক্ষার্থী তাদের পিছু পিছু ব্যানার নিয়ে ঘুরতে থাকে, যাতে লেখা ছিলো ‘Southern don’t want negroes’।
১৯৫৪ সালে মেরিল্যান্ডের বাল্টিমোর থেকে তোলা হয় ছবিটি।
১৪
লুইজিয়ানার উইলিয়াম ফ্রান্তজ এলিমেন্টারি স্কুলে পড়তো কেবল সাদা শিক্ষার্থীরা। সেই স্কুলে আসা প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান শিক্ষার্থী ছিলো ছয় বছর বয়সী রুবি ব্রিজেস। তার মতো বয়সে এ কাজটি যে কত বড় সাহসের পরিচায়ক তা বোধহয় না বললেও চলে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত ইউএস মার্শালের সদস্যরা তাকে নিয়ে যাচ্ছে।
১৫
সাদা-কালোদের জন্য পৃথক পৃথক নীতিমালার প্রতিবাদস্বরুপ দুজন আফ্রিকান-আমেরিকান মেম্ফিসের এক ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের লাঞ্চ কাউন্টারের ঢুকতে যাচ্ছিলো। সাথে সাথেই দড়ি টেনে তাদের যাত্রাপথ আগলে দাঁড়ান দোকানেরই সাদা চামড়ার আরেক কর্মী।
১৬
১৯৬০ সালে জর্জিয়া থেকে তোলা এ ছবিতে দেখা যাচ্ছে কেনিয়ার শিক্ষার্থী ডেভিড এমবিতিকে, যে কিনা প্রথমবারের মতো এমন বৈষম্যের শিকার হলো।
১৭
কালোদের পানি পানের জন্যও ছিলো নির্ধারিত কল। তেমনি ‘Colored’ লেখা একটি কল থেকে এক ছেলেকে পানি পান করতে দেখা যাচ্ছে। ১৯৩৮ সালে নর্থ ক্যারোলাইনার হ্যালিফ্যাক্স থেকে ছবিটি তোলা হয়েছিলো।
১৮
মিলিটারি পুলিশ বাহিনীতেও ছিলো সাদা-কালোর ভেদাভেদ। তেমনি একটি ‘Military Police Colored’ নামক সদর দরজার সামনে দেখা যাচ্ছে একজন পুলিশকে।
১৯
বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে যাতায়াতকারীদের জন্য গায়ের বর্ণভেদে ছিলো আলাদা ওয়েটিং রুম। এমনই এক রুমের সামনে এসে একনাগাড়ে তাকিয়ে আছেন এক ব্যক্তি। তার মনের মাঝে তখন যে কী ঝড় বইছিলো তা তো সহজেই অনুমেয়।
২০
তৎকালে কালোদের জন্য যে আলাদা ট্যাক্সিক্যাবও ছিলো, তা তো এই ‘Colored Taxicab Stand’ লেখা থেকেই পরিষ্কার হয়ে ওঠে।
২১
একইভাবে সাদাদের জন্য ছিলো আলাদা ট্যাক্সি, যাতে লেখা থাকতো ‘White Only’। ১৯৬২ সালে জর্জিয়া থেকে তোলা হয় এ ছবিটি।
২২
এই ক্লাসের সব শিক্ষার্থীই আফ্রিকান-আমেরিকান। ১৯৫৩ সালে ভার্জিনিয়ার এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে তোলা ছবি।
২৩
১৯৫৯ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত ভার্জিনিয়ার প্রিন্স এডওয়ার্ড কাউন্টিতে কালোদের জন্য ছিলো না কোনো পাবলিক স্কুলের সুব্যবস্থা। সেখানে ছিলো প্রায় ১,৭০০ আফ্রিকান-আমেরিকান শিশুর বসবাস। এলাকার আনুমানিক ১,৪০০ সাদা চামড়ার শিশু স্টেট, কাউন্টি ও নানা ব্যক্তির দানে পরিচালিত প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়াশোনা করতো।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে এক রুমের অগোছালো পরিবেশেই কালো শিশুরা কীভাবে পড়াশোনা করতো তার চিত্র।
২৪
একটি বাস টার্মিনালে ‘Colored’ লেখা কন্টেইনার থেকে পানি পান করতে দেখা যাচ্ছে এক তরুণকে। টয়লেটের ব্যাপারে অবশ্য আর বর্ণপ্রথা চালু রাখে নি তারা, অন্তত এ জায়গার বেলায় সেটিই দেখা যাচ্ছে। কারণ ‘White Woman/ Colored Woman’-দের যেমন একদিকে নির্দেশ করা হয়েছে, তেমনি ‘White Man/Colored Man’-দেরও বিপরীত দিকে একই টয়লেটের দিকে নির্দেশ করা হয়েছে। অবশ্য ভেতরে কি তাদের জন্য আলাদা টয়লেট ছিলো কিনা তা এ ছবি দেখে বলা সম্ভব নয়!
২৫
জীবনের এত ক্ষেত্রে যদি বৈষম্য আসে, তাহলে বিনোদনই বা বাদ যাবে কেন? মাঝে মাঝে থিয়েটারে ঢুকতে কালোদের জন্য যেমন আলাদা প্রবেশপথ থাকতো, তেমনই মাঝে মাঝে থাকতো আস্ত আলাদা থিয়েটারই। ১৯৩৭ সালের কাছাকাছি সময়ে মিসিসিপি থেকে তোলা ছবি।
২৬
এই থিয়েটারে মূল প্রবেশপথ দিয়ে ঢোকার সুযোগ ছিলো না আফ্রিকান-আমেরিকানদের। বাইরের একটি সিঁড়ি দিয়েই ভেতরে ঢুকতে হতো তাদের। ১৯৩৯ সালে মিসিসিপি থেকে তোলা হয়েছিলো এ ছবিটি।
২৭
১৯৬০ সালে জর্জিয়া থেকে তোলা এ ছবিতে লাঞ্চ কাউন্টার পৃথকীকরণের প্রতিবাদরত একজন মানুষ।
২৮
সমাজের নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে পৃথকীকরণের প্রতিবাদে আফ্রিকান-আমেরিকানদের লাগানো পোস্টার ছিড়ে ফেলছে সাদা চামড়ার এক আমেরিকান কিশোর।
২৯
আবারো আরকানসাস, আবারো লিটল রক হাই স্কুল। সেখানে আফ্রিকান-আমেরিকানদের পড়াশোনার অধিকার দেয়ার প্রতিবাদে যাচ্ছে একদল সাদা চামড়ার আমেরিকান। দূর থেকে সেটাই দাঁড়িয়ে দেখছিলো এক আফ্রিকান-আমেরিকান শিশু। তার শিশুমনে সেই ঘটনা যে বেশ বড়সড় এক দাগ কেটে গিয়েছিলো, তা বোধহয় আর বলা অপেক্ষা রাখে না। ১৯৫৭ সালে তোলা হয় এ ছবিটি।
৩০
এ ছবিটিও লিটল রক স্কুলকে কেন্দ্র করে। সাদা-কালোদের সহশিক্ষার প্রতিবাদ করে এই নারী এবং শিশু গিয়েছিলো আরকানসাস স্টেট ক্যাপিটলের সামনে।
৩১
১৯৫৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর তোলা এ ছবিটি বেশ গুরুত্ববাহী। কারণ লিটল রক স্কুলের প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান শিক্ষার্থীদের স্কুলে পৌঁছে দিতে সেদিন সেনাবাহিনীর সাহায্য পর্যন্ত নিতে হয়েছিলো!
৩২
সাম্নার এলিমেন্টারি স্কুলের পাশে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে লিন্ডা ব্রাউন। বাড়ি থেকে মাত্র সাত ব্লক দূরে থাকলেও এ স্কুলে পড়ার অধিকার যে তার ছিলো না!
৩৩
স্কুলে বৈষম্যের প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তায় নেমেছে একদল আফ্রিকান-আমেরিকান শিশু। ১৯৫৮ সালে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে তোলা ছবি।
৩৪
রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে প্রথমবারের মতো স্কুলের পথে চলেছে টেনেসীর ক্লিনটন শহরের একদল ছেলে-মেয়ে। পরবর্তীকালে ‘ক্লিনটন ১২’ নামে তারা খ্যাতি পায়। ১৯৫৬ সালে তোলা হয় এ ছবিটি।
৩৫
ওদিকে কালোদেরকে স্কুলে অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে প্রতিবাদ করে চলেছে সাদারা। ১৯৫৭ সালে টেনেসীর ন্যাশভিল থেকে তোলা হয় এ ছবি।
৩৬
স্কুলে রেজিস্ট্রেশন করেছিলো দুজন আফ্রিকান-আমেরিকান শিক্ষার্থী। তাদের উপর হামলার আশঙ্কায় বাইরে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী! ১৯৬৩ সালে আলাবামার টাস্কালুসা থেকে তোলা ছবি।
৩৭
দুই আফ্রিকান-আমেরিকান মেয়ে প্রথমবারের মতো সমন্বিত স্কুলে যাচ্ছিলো। পুলিশ ব্যারিকেডের সামনে তাদের দিকে তাকিয়েই চিৎকার করে কটুক্তি করছিলো এ ছেলেটি।
৩৮
গর্ভনর ফবসের নির্দেশে আরকানসাস ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা কয়েকজন আফ্রিকান-আমেরিকানকে স্কুলে ঢুকতে বাঁধা দিচ্ছে।
৩৯
ওদিকে ন্যাশভিলে অবস্থিত হ্যাটি কটন স্কুলটি সাদারা বোম মেরে উড়িয়ে দিয়েছিলো। তারই ধ্বংসাবশেষ দেখছে কয়েকজন কৌতুহলী।
৪০
মাউরি হাই স্কুলের একমাত্র কালো চামড়ার শিক্ষার্থী ছিলো লুইস কাজিন্স। সে মনোযোগ দিয়েছে ক্লাসের পড়ায়, অন্যদিকে তার দিকে চেয়ে আছে গোটা ক্লাসই!
৪১
অবশ্য সব সাদা চামড়ার মানুষেরা যে খারাপ ছিলো কিংবা কালোদের প্রতি বিরুপ ধারণা পোষণ করতো, এমন দাবি করা যাবে না। এ ছবিটাই দেখুন না। লুইস কাজিন্সকে একা খেতে দেখে এগিয়ে এসেছিলো মার্থা অ্যান পটস ও লিসা ক্যারি, জানতে চেয়েছিলো তারাও তার সাথে খাবারে শরীক হতে পারবে কিনা।
৪২
এ ছবিতে দেখা যাচ্ছে লুইসের অবস্থা চিন্তা করে কান্নায় ভেঙে পড়েছে মার্থা।
৪৩
বড়দের মাঝে জগতের কলুষতা যেভাবে ছড়ায়, তা থেকে মুক্ত শিশুরা। তাই এখানে নিজেদের আফ্রিকান-আমেরিকান বান্ধবীদের সাথে কতটা সহজভাবেই না মিশছে অন্যরা!
৪৪
এ ছবিটি ১৯৭৩ নর্থ ক্যারোলাইনার শার্লট থেকে তোলা। ফার্স্ট গ্রেডের শিক্ষার্থীরা গায়ের রঙের ভেদাভেদ ভুলে একসাথে পড়ালেখা করছে। আফ্রিকান-আমেরিকানদের দুনিয়াটা যেন ততদিনে বদলাতে শুরু করেছিলো।
দৈহিক আকৃতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ মানুষকে মানুষ হিসেবে মর্যাদা দিতে শিখুক, এ কামনায় আজকের ফটোব্লগের ইতি টানছি এখানেই।