Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ট্যাংক ব্যাটল অফ নরম্যান্ডি: মিত্রবাহিনীর ইউরোপে অগ্রযাত্রার শুরু (পর্ব-১)

১৯৪৪ সালের ৬ জুন মিত্রবাহিনী ইউরোপের অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে অলআউট এটাক হিসেবে ফ্রান্সের নরম্যান্ডির ৫টি সি-বিচে ৫ হাজার নৌযান ও ১ লাখ ৬০ হাজার সৈনিকের বিশাল দল নিয়ে একযোগে আক্রমণ করে। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই এমফিবিয়াস অপারেশনটি সামরিক পরিভাষায় অপারেশন নেপচুন বা D-Day নামে পরিচিত। এটি ছিল মিত্রবাহিনীর ইউরোপ পুনরুদ্ধারের মিশন অপারেশন ওভারলর্ড-এর প্রথম ধাপ যা দিয়েই মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি শুরু হয়। এরপরই ক্রমাগত হারতে হারতে জার্মানি চূড়ান্ত পরাজয় বরণ করে।

cutewallpaper.org
D-Day’র দিন ওহামা বিচে মার্কিন সেনাদের ল্যান্ডিং; Image source: cutewallpaper.org

আজকে আলোচনা করবো শুধুমাত্র নরম্যান্ডির ট্যাংক যুদ্ধ নিয়ে। উল্লেখ্য সেদিন মিত্রবাহিনীতে প্রায় ১১টি দেশ থাকলেও প্রথম দিনে নরম্যান্ডি বিচে ট্যাংক নামিয়েছিল ব্রিটেন, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র। কারণ এদের কাছেই তখন লিজেন্ডারি এম-৪ শেরম্যান ট্যাংকের এমফিবিয়াস ভ্যারিয়েন্ট বা উভচর ট্যাংক ছিল। ইংলিশ চ্যানেল এমফিবিয়াস ল্যান্ডিং ক্রাফট দিয়ে পাড়ি দিয়ে নরম্যান্ডি বিচের কাছে ট্যাংকগুলো জাহাজ থেকে পানিতে নেমে পড়ে। শেষ ৫ কিলোমিটার সাগর ট্যাংকের বিশেষভাবে নির্মিত প্রপেলার দিয়ে পাড়ি দিয়ে নরম্যান্ডি সৈকতে পৌঁছায়। এ ধরনের ট্যাংক ডুপ্লেক্স ড্রাইভ ট্যাংক বা DD ট্যাংক নামে পরিচিত ছিল। হাঁসের মতো দেখতে বিধায় সৈনিকদের কাছে এটি পরিচিত ছিল বিখ্যাত কার্টুন ক্যারেক্টার Donald Duck এর নামে।

wikipedia.org
ডুপ্লেক্স ড্রাইভ ট্যাংক; Image source: wikipedia.org

উল্লেখ্য নরম্যান্ডিসহ জার্মানির দখলকৃত আটলান্টিক উপকূলের ২৪০০ মাইল এলাকা জুড়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম মোতায়েন রেখেছিল জার্মানি। এটিই ইতিহাসে বিখ্যাত ‘আটলান্টিক ওয়াল’ নামে পরিচিত। সবচেয়ে হেভিলি ডিফেন্ড করার অবস্থায় ছিল ফ্রান্সের উপকূলীয় অঞ্চল। কারণ হিটলার ও তার জেনারেলদের ধারণা ছিল ব্রিটেন থেকে হামলা হলে এখান দিয়েই হবে। এ কারণে দুর্ধর্ষ জার্মান ফিল্ড মার্শাল রোমেল শুধুমাত্র এই অঞ্চলেই ৪ মিলিয়ন এন্টি ট্যাংক-এন্টি পার্সোনেল মাইন স্থাপনসহ আরও অনেক ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলেন।

https://www.warhistoryonline.com/war-articles/20atlantic-wallimages.html
আটলান্টিক ওয়াল জুড়ে এ রকম অনেক শক্তিশালী ও ভারী কামান মোতায়েন করা ছিল; Image source: warhistoryonline.com

নরম্যান্ডিতে সবচেয়ে দুর্দান্ত ট্যাংক যুদ্ধ হয়েছিল ব্রিটিশ-কানাডিয়ান আর্মার্ড ব্রিগেডের সাথে জার্মান ট্যাংক ডিভিশনের। তবে এই লেখায় আমি কানাডিয়ানদের কথাই কেবল বলবো কারণ ওরাই সবার শেষে (সকাল সাড়ে সাতটায়) ট্যাংক নামিয়েছিল নরম্যান্ডিতে। অর্থাৎ ভয়ংকর ট্যাংক যুদ্ধের শুরুটা হয়েছিল কানাডিয়ানদের হাতে। তাহলে সাড়ে ৬টায় নরম্যান্ডির বিচে হিট করা মার্কিন বাহিনীর DD ট্যাংকগুলোর কি হয়েছিল? এখন আপনাদের যে ঘটনাটি বলবো সেটি আপনাকে যুদ্ধক্ষেত্রে ‘সময়ের গুরুত্ব’ কে ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে।

weaponsandwarfare.com
ডি-ডে ল্যান্ডিং অপারেশন ম্যাপ; Image source : weaponsandwarfare.com

বিশাল মিত্রবাহিনীর সৈনিক দল একেক ভাগে ভাগ করে এক একটি বিচে ল্যান্ডিং করানো হয়েছিল যাতে পারস্পরিক সহযোগিতার কোনো ঘাটতি না থাকে। ওমাহা ও উটাহ বিচে যুক্তরাষ্ট্র, জুনো বিচে কানাডিয়ান ফোর্স, গোল্ড ও সোর্ড বিচে যুক্তরাজ্য সৈন্য নামিয়েছিল। এছাড়া ফ্রান্স-পোল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়াসহ মিত্রবাহিনীর অন্যান্য সহযোগী দেশও তাদের বাহিনী নামিয়েছিল নরম্যান্ডি উপকূলে। সবার আগে ওমাহা বিচে মার্কিন সেনারা ল্যান্ডিং শুরু, উটাহ বিচে সৈন্য ও ট্যাংক প্রায় যুগপৎভাবে ল্যান্ডিং শুরু করে। কিন্তু কথা ছিল ঠিক সাড়ে ৬ টায় মিত্রবাহিনীর বোমারু বিমান ও সাগরে থাকা ব্যাটলশিপ ও অন্যান্য যুদ্ধজাহাজগুলো একযোগে জার্মান ডিফেন্সিভ লাইনে হামলা শুরু করবে এবং এই হামলার সুযোগে ল্যান্ডিং ক্র্যাফটগুলো উপকূলে সৈন্যদের পৌঁছে দিবে।

শুধুমাত্র জাহাজে নয়, বিমানে করে প্যারাট্রুপারদেরও নরম্যান্ডিতে এয়ার ড্রপ করা হয়েছিল; Image source : warhistoryonline.com

তাই দূরত্বের উপর নির্ভর করে লঞ্চ আওয়ার সাড়ে ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে করা হয়, একেক বাহিনী একেক সময়ে যাত্রা শুরু করে। যেমন ল্যান্ডিং ক্র্যাফটগুলোর কাজ ছিল আগে মেরিন ও ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেডের সৈনিকদের বিচে নামিয়ে দেয়া। তাই তাদেরকে একদম তীর পর্যন্ত পৌঁছাতে হতো। আবার উভচর ট্যাংকগুলো তীর থেকে প্রায় ৫ কিঃমিঃ দূর থেকে লঞ্চ করা হয়েছিল। কিন্তু জোয়ার ভাটার তারতম্যের কারণে নির্ধারিত সময়ের ৫ মিনিট আগে উটাহ বিচের কাছাকাছি পৌঁছে যায় মার্কিন উভচর ট্যাংক। ফলে স্থলে থাকা বিশাল বিশাল জার্মান আর্টিলারিগুলো সাগরে থাকতেই ট্যাংকগুলোর উপর হামলা শুরু করে। ৩২টি ট্যাংকের মধ্যে ২৯টিই ধ্বংস হয়ে যায়। বেশিরভাগ সাগরেই ধ্বংস হয়ে ডুবে যায়, বাকিরা কোনোমতে তীরে পৌঁছালেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি।

https://en.wikipedia.org/wiki/DD_tank
DD ট্যাংকগুলো স্বল্প গভীরতার পানিতে চলতে পারতো Image source : wikipedia.org

জার্মান আর্টিলারির আঘাতে অচল হয়ে যাওয়া ট্যাংকগুলো গোলা শেষ হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত পদাতিক সেনাদের যথাসাধ্য কাভারিং ফায়ার সাপোর্ট দিয়েছিল। ওমাহা বিচে মার্কিন সেনারা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এন্টি ট্যাংক ও এন্টি পার্সোনেল মাইন ও অন্যান্য কৃত্রিম বাধা (অবস্ট্যাকল) থাকায় ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেডের সোলজারদের পথ পরিষ্কার করতে আগে পাঠানো হয়। ব্রিটিশ কানাডিয়ানরাও একই পদ্ধতি অবলম্বন করে। উল্লেখ্য ডি-ডে এর দিন কানাডিয়ান ট্যাংকের সাথেই জার্মান ট্যাংকের লড়াই হয়েছিল। যেহেতু এই লেখার বিষয়বস্তু ট্যাংক বনাম ট্যাংক যুদ্ধ তাই ব্রিটিশ-আমেরিকানদের বাদ দিয়ে কানাডিয়ানদের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি। তাদের ট্যাংক জার্মানদের যেমন মেরেছিল তেমনি তাদের হাতে মারা পড়েছিল।

https://www.warhistoryonline.com/war-articles/20atlantic-wallimages.html
পুরো নরম্যান্ডি বিচ জুড়ে মাইনসহ বিভিন্ন রকমের বাঁধা বসানোর কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন ফিল্ড মার্শাল রোমেল; warhistoryonline.com

সেকেন্ড কানাডিয়ান আর্মার্ড ব্রিগেডের উভচর ট্যাংকগুলোকে পানিতে নামানোর পর তারা প্রপেলারের সাহায্যে তীরের দিকে এগুতে শুরু করে। উপকূলীয় এলাকায় থাকা ব্রিটিশ ব্যাটলশিপ ও হেভি ক্রুজারগুলো পানিতে মাত্র ৪ নট গতিতে সাঁতরে তীরের দিকে আসা কানাডিয়ান ট্যাংকগুলোকে কাভারিং ফায়ার সাপোর্ট দিচ্ছিল। তারপরও লঞ্চ করা ৬৭টি ট্যাংকের মধ্যে ১১টি ধ্বংস হয় জার্মানদের নেভাল মাইন ও উপকূলে পেতে রাখা এন্টি ট্যাংক মাইনের আঘাতে। সুরক্ষিত কংক্রিট বাঙ্কারে থাকা কোস্টাল ডিফেন্স গানগুলোর ফায়ারিংয়ে বেশ কিছু ট্যাংক ডুবে যায় । প্রথম ১ ঘন্টার যুদ্ধেই কানাডিয়ানরা মোট ১৯টি ট্যাংক ও প্রায় ১০০ সৈনিক হারায়। উল্লেখ্য ব্রিটিশ ফিল্ড মার্শাল মন্টেগোমারির ডিসিশন অনুযায়ী ব্রিটিশ ট্যাংক কানাডিয়ানদের পরে ল্যান্ড করেছিল। এর পেছনে কৌশলগত কারণ রয়েছে।

www.flickr.com
ওমাহা বিচে হিট করার আগ মুহূর্তে মার্কিন সেনাদের ল্যান্ডিং ক্রাফট Image source: flickr.com

মিত্রবাহিনীর সেকেন্ড ওয়েভের এটাকে প্রচুর কানাডিয়ান ও ব্রিটিশ ইনফেন্ট্রি সোলজার ল্যান্ড করার কথা ছিল। তাই কানাডিয়ান আর্মার্ড ব্রিগেডকে প্রথম ঝড়ঝাপটা সামাল দিতে পাঠানো হয়েছিল। বিচে ল্যান্ড করার পরই হামলা শুরু করে কানাডিয়ান ট্যাংক বহর। জার্মান কোস্টাল ডিফেন্স ব্যাটারিসহ মেশিনগান বাংকারগুলোর একাংশ কানাডিয়ান ট্যাংকের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে ইনফেন্ট্রি সৈনিকদের ল্যান্ডিং তুলনামূলক সহজ হয়। অন্যান্য বিচে মার্কিন বাহিনী আগে সৈনিক নামাতে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়। তবে জুনো-গোল্ড-সোর্ড বিচে ব্রিটিশ-কানাডিয়ান প্রাণহানিও কিন্তু কম নয়। নরম্যান্ডি আক্রমণের এই ঘটনা ভালোভাবে বুঝতে Saving Private Ryan সহ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বেশ কিছু সিনেমা আপনার দেখা উচিত।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যতগুলো ফ্রন্টে ট্যাংক ব্যাটল হয়েছিল তার মধ্যে ফরাসি টেরাইন ছিল সবচেয়ে ব্যতিক্রম। উত্তর আফ্রিকা মরুভূমি কিংবা রাশিয়ার বরফভূমির তুলনায় ফরাসি ভূমি ছিল অনেক সবুজ গাছপালায় ঢাকা। বাংলাদেশের মতো সবুজ গাছপালা আচ্ছাদিত নরম মাটির ভূমিতে ট্যাংক ব্যাটল কেমন কঠিন তা বুঝেছিল ব্রিটিশ-কানাডিয়ান ও জার্মানরা।

ব্যাটল অফ ফ্রান্সের যুদ্ধ থেকেই তা মিলিটারি একাডেমির সিলেবাসে নতুন কৌশল নিয়ে স্থান পেয়েছে যে কীভাবে সবুজ, নরম কাদামাটির টেরাইনে ট্যাংক যুদ্ধ চালাতে হবে। এখানে জার্মান প্যানজার ও হেভি ট্যাংক টাইগারের তুলনায় সুবিধা পেয়েছিল ৩৪ টনি শেরম্যান মিডিয়াম ট্যাংক। তাই যুদ্ধের প্রথম দিকে জার্মান প্যানজার সিরিজের ট্যাংকগুলো শেরম্যানের হাতে ব্যাপক মার খায় নরম সবুজ অঞ্চলের দ্রুত মুভমেন্ট করতে না পারায়। তবে এখানে শেরম্যানকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। শক্তিশালী আর্মারের কারণে প্যানজার মার্ক ফোর ও ফাইভ সিরিজের ট্যাংক বহরকে সামনে থেকে না পারলেও পাশ থেকে আক্রমণ করে ধ্বংস করতে সক্ষম ছিল।

wall.alphacoders.com
প্যানজার মার্ক ফোর ট্যাংক Image source : wall.alphacoders.com

ক্যান সিটির প্রথম ট্যাংক যুদ্ধ

D-Day এর পরের দিন অর্থাৎ ৭ জুন এই যুদ্ধ হয়। Caen নামে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এক ফরাসি শহর তিন দিনের মধ্যে দখল করতে পাঠানো হয়েছে কানাডিয়ান সেকেন্ড আর্মার্ড ব্রিগেডকে। (উল্লেখ্য চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য বিখ্যাত Cannes সিটি ও Caen এর মধ্যে মধ্যে ১২০০ কিঃ মিঃ দূরত্ব)। ঘাসের জমিন ঠেলে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলছে একটি ইউনিটের ৮টি শেরম্যান ট্যাংক। আগেই পাঠানো স্কাউট টিমের মাধ্যমে রেডিওতে খবর পেয়েছে ঐদিক দিয়ে ৯টি জার্মান ট্যাংকের বহর কোথাও যাচ্ছে। কিন্তু সঠিক রুট কানাডিয়ানদের জানা ছিল না। তাই অফরোড ধরে গাছপালা-ঝোপঝাড় ভেঙে যখন তারা ঘাসের জমিন পাড়ি দিচ্ছিলেন তখনই জার্মান কনভয়টি সামনের রাস্তায় দেখা যায়। ফলাফল আকস্মিক আক্রমণ শুরু হওয়ার আগে জার্মানরা টেরই পায়নি কানাডিয়ান ট্যাংকের উপস্থিতি! আর এলিমেন্ট অব সারপ্রাইজ ছিল তাদের জয়ের কারণ।

warhistoryonline.com
প্যানজার মার্ক ফাইভ বা প্যান্থার ট্যাংক; Image source : warhistoryonline.com

ঐ ৯টি ট্যাংক ছিল ৪৪ টনি প্যানজার মার্ক ফাইভ ট্যাংক। একে ‘প্যান্থার’ ট্যাংক নামেও ডাকা হত। এটি ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম বহুল ব্যবহৃত ট্যাংক। এই ট্যাংক প্রায় ৬০০০ ইউনিট উৎপাদন করা হয়েছিল যা ইউরোপের প্রায় সব ফ্রন্টে দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। এতে ছিল ৭৫ মিলিমিটার ব্যাসের কামান। যার ব্যারেল তুলনামূলক লম্বা হওয়ায় এর গোলার গতি ও ভেদন ক্ষমতা বেশি ছিল। ফলে অনায়াসে শেরম্যান ট্যাংককে ভর্তা বানাতে পারতো প্যান্থার ট্যাংক।

যুদ্ধে প্যান্থারের হাতে অসংখ্য শেরম্যান ধ্বংস হয়েছে। মূলত শেরম্যান ট্যাংকের আর্মার ছিল তুলনামূলক দুর্বল। এর সামনে ছিল মাত্র ৫১ মিলিমিটার ফ্রন্টাল আর্মার, সাইড আর্মার আরও কম। অপরদিকে প্যান্থার ট্যাংকের ছিল ১০০ মিলিমিটারের বেশি ফ্রন্টাল আর্মার, সাইড আর্মার ছিল প্রায় ৫০ মিলিমিটার। ফলে মুখোমুখি যুদ্ধ হলে শেরম্যানের একাধিক আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা ছিল প্যান্থার ট্যাংকের। কিন্তু সেদিন শেরম্যান ট্যাংকের তুলনামূলক দুর্বল ৭৫ মিলিমিটার শর্ট ব্যারেল ক্যাননের ফায়ারিং সামনে ৯টি প্যানজার ফাইভ ‘প্যান্থার’ ট্যাংক স্রেফ উড়ে গিয়েছিল।

ফিউরি মুভিতে ব্যবহৃত এম-৪ শেরম্যান ট্যাংক; Image source : wall.alphacoders.com

তারা রাস্তা ধরে এক কলামে এগিয়ে যাচ্ছিল, হঠাৎ করেই পাশের ক্ষেতের উপর পজিশন নেয়া ৮টি শেরম্যান ট্যাংক একযোগে হামলা শুরু করে। প্রত্যেক ট্যাংকের কমান্ডার নিজেদের টার্গেট আগে থেকেই বাছাই করে নিয়ে ছিলেন। ফলে কিছু বুঝে উঠার আগেই শেষ হয়ে যায় জার্মান ট্যাংক বহর। এটি ছিল এম-৪ শেরম্যান ট্যাংকের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির একমাত্র পরাজয় যেখানে তারা প্রায় দেড় মিনিটের ব্যবধানে ৯টি ট্যাংক হারায়। একজন জার্মান ট্যাংক কমান্ডার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে প্যান্থার ট্যাংক হাতে থাকলে মুখোমুখি যুদ্ধে শেরম্যানকে তারা গোনায় ধরতেন না!

reddit.com
battle of Prokhorovka (July of 1943) সালে ধ্বংস হওয়া প্যান্থার ট্যাংক; Colorized by Monte PythonImage, source : reddit.com

এটি ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর অন্যতম একতরফা এবং ভাগ্যের ট্যাংক যুদ্ধ। উল্লেখ্য প্যান্থার ছিল একটি ট্যাংক কিলার ট্যাংক, এর কিল রেশিও ছিল ৩:১। অর্থাৎ প্রতি তিনটি শেরম্যান মারতে একটি প্যান্থার খরচ হবে। কেউ কেউ এই অনুপাতকে ৫:১-ও বলেছেন।
অপরদিকে শেরম্যানের কিল রেশিও ছিল ৩:১ তাও জার্মান আর্মার্ড ফাইটিং ভেহিকেল (যেসব সুরক্ষিত যানে সৈনিক পরিবহন করা হয়) এর বিরুদ্ধে। জার্মান ট্যাংকের বিরুদ্ধে শেরম্যানের কিল রেশিও কত সেটা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি। এই যুদ্ধ ছিল পুরোটাই লাকি শট যেখানে একসাথে ৯টি প্যান্থার ট্যাংককে পাশ থেকে আক্রমণ করে ধ্বংস করে দিয়েছিল ৮টি শেরম্যান ট্যাংক।

প্যান্থার ট্যাংক ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ট্যাংক। আর্নেস্ট বার্কম্যান নামের একজন প্যান্থার কমান্ডারের ৮০টি ট্যাংক কনফার্ম কিল রেকর্ড আছে। তবে রাজত্বের শেষ দিকে এসে এটি প্রচণ্ড মার খেতে থাকে। শুধুমাত্র ১৯৪৪ এর সেপ্টেম্বর মাসেই ৬৯২টি প্যান্থার ট্যাংক ধ্বংস হয়েছিল! আর এর পেছনে হাত রয়েছে মিত্রবাহিনীর ট্যাংক আপগ্রেড প্রোগ্রাম। জার্মান ট্যাংককে সহজে ধ্বংস করতে ব্রিটিশরা ফায়ারফ্লাই ও একিলিস নামে শেরম্যানের আপগ্রেড ভ্যারিয়েন্টকে সার্ভিসে এনেছিল। মার্কিনীরা এম-১০, এম-১৮ হেলক্যাট, এম-৩৬, এম-২৬ ট্যাংক ডেস্ট্রয়ার আর সোভিয়েতরা আইএস-১/২ ইত্যাদি হেভি ট্যাংক ডেস্ট্রয়ার ট্যাংক সার্ভিসে এনেছিল। এসব কারণে প্যান্থারসহ প্যানজার সিরিজের ট্যাংকগুলো যুদ্ধের শেষ দিকে ব্যাপক মার খেতে শুরু করে।

wikipedia.org
যুক্তরাষ্ট্রের এম-১৮ হেলক্যাট ট্যাংক ডেস্ট্রয়ার Image source : wikipedia.org

ক্যান সিটির দ্বিতীয় ট্যাংক যুদ্ধ 

এই শহরে ঢোকার আগে নরম্যান্ডিতে ঐ কানাডা-জার্মানির ট্যাংক যুদ্ধ বাদে আর তেমন কোনো যুদ্ধ হয়নি। ব্রিটিশ-মার্কিন ট্যাংকগুলো পদাতিক বাহিনীকে ফায়ার সাপোর্ট দিতে ব্যস্ত ছিল। ৭/৮টির মতো ট্যাংক বনাম ট্যাংক এনগেজমেন্টের ইতিহাস জানা যায়। কিন্তু সেখানে বর্ণনা করার মতো ইতিহাস তেমন একটি নেই। এ সময় ট্যাংকগুলো শক্তিশালী জার্মান ডিফেন্সিভ লাইন ভেদ করতে ব্যবহৃত হয়। বড় বড় কোস্টাল ডিফেন্স গান ও মেশিনগান বাংকার ধ্বংস করতে পারায় সাগরে থাকা যুদ্ধজাহাজ ও পদাতিক সৈন্যরা সুবিধা পায়। তবে ডি ডে’র ল্যান্ডিংয়ের সময় মিত্রবাহিনীর ১০ হাজারের বেশি সৈনিক নিহত হয়। প্রবল আক্রমণে জার্মানরা পেছানো শুরু করলে পরবর্তী ল্যান্ডিংগুলো তুলনামূলক সহজ হয়ে যায়।

www.buzzfeed.com
ওমাহা বিচে মার্কিন ল্যান্ডিং ও উটাহ বিচে ট্যাংক ল্যান্ডিং (ডানে)। এবার স্মোক গ্রেনেড দিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করায় জার্মান কামান সুবিধা করতে পারেনি। ফলে ২৮টির মধ্যে মাত্র ১টি ট্যাংক ধ্বংস হয়েছিল; Image source: buzzfeed.com

মিত্রবাহিনীর টার্গেট ছিল নরম্যান্ডিতে সফলভাবে ল্যান্ড করতে পারলে সেখান থেকে সবচেয়ে কাছে এবং ট্যাংক ও আর্টিলারি যুদ্ধের জন্য কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ ফরাসী শহর ক্যান এর দখল ৩ দিনের মধ্যে নিতে হবে। কিন্তু ফিল্ড মার্শাল রোমেল এ সময় টুয়েলভ এসএস প্যানজার ডিভিশনকে নেদারল্যান্ড থেকে জরুরি ভিত্তিতে ক্যান সিটির প্রতিরক্ষার জন্য পাঠান। শহরের দখল যেকোনো মূল্যে ধরে রাখতে স্বয়ং হিটলার নিজে এই ডিভিশনের কমান্ডার কুর্ট মায়ারকে নির্দেশ দেন। উল্লেখ্য ঐ অঞ্চলে ফিল্ড মার্শাল রোমেলের পর যদি আর কোনো ট্যাংক যুদ্ধের ট্যাকটিশিয়ানের এর নাম নিতে হয় তবে তিনি হচ্ছেন ব্রিগেডিয়ার কুর্ট মায়ার।

তার ক্রুরা এই নির্দয়, নির্মম ও দুর্ধর্ষ ট্যাংক কমান্ডারকে আদর করে নাম দিয়েছিল ‘প্যানজার মায়ার’ বা ‘সন অভ প্যানজার’। তিনি যুদ্ধের পর যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত (পরে ক্ষমাপ্রাপ্ত) হয়েছিলেন কারণ তিনি যুদ্ধবন্দীদের নির্দয়ভাবে হত্যা করতেন। বিশেষত মিত্রবাহিনীর ট্যাংক ক্রুদের কোনোভাবেই বাঁচিয়ে রাখতেন না। জার্মানির কিংবদন্তি ট্যাংক কমান্ডার অটো ক্যারিয়াসের মতো কোনো ট্যাংক ক্রু যদি ৪টি গুলি খেয়েও বেঁচে যায় এবং পরবর্তীতে একাই ১৫০ ট্যাংক মেরে রেকর্ড গড়ে, এই ভয়ে তিনি ধরা পড়া ট্যাংক ক্রুদের মেরে ফেলতেন।

ww2gravestone.com
কুর্ট মায়ার; Image source : ww2gravestone.com

ব্রিগেডিয়ার কুর্ট মায়ারের বাহিনীতে ছিল ৪৮টি প্যানজার ফাইভ ‘প্যান্থার’ ট্যাংক, প্রায় ১০০টি প্যানজার ফোর সিরিজের ট্যাংক ও কয়েক ডজন এন্টি-ট্যাংক আর্টিলারি গান। তিনি এবার কানাডিয়ানদের হাতে ৯ প্যান্থার ট্যাংক হারানোর প্রতিশোধ নিতে প্যান্থার ট্যাংক দিয়েই ক্যান শহরে মিত্রবাহিনীর জন্য এম্বুশ পেতেছিলেন! ঐ শহরের সবচেয়ে উঁচু ভবন ছিল একটি ১৬ শতকের গির্জা (প্যালেইস দেস দস বা চার্চ অব এটেইনি ) যার বেল টাওয়ার ২৬ মিটার উঁচু। কুর্ট মায়ার এখানেই অবজারভেশন পোস্ট স্থাপন করেন। এছাড়া আশেপাশে জঙ্গলের অভাব নেই। সেখানেই ট্যাংকগুলো লুকিয়ে পজিশন নিয়েছিল। তিনি টাওয়ারের উপর থেকে শক্তিশালী বাইনোকুলারে দেখতে পান মূল রাস্তা ধরে মিত্রবাহিনীর ট্যাংক বহর একাধিক কলামে বিভক্ত হয়ে ধেয়ে আসছে। তারা কামানের রেঞ্জে আসামাত্রই তিনি অর্ডার দিতেই ফায়ার শুরু করে প্যান্থার ট্যাংকগুলো। অতর্কিত হামলায় সেদিন কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই প্রথম স্কোয়াড্রনের শেরম্যান ট্যাংকের একটি কলাম পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়! (সাধারণত একটি কলামে ৮ থেকে ১২টি ট্যাংক থাকে)।

ট্রেনের উপর প্যান্থার ট্যাংকের সারি; Image source: wikipedia.org

এই আক্রমণে কতটি ট্যাংক ব্যবহার করা হয়েছিল তা জানা যায় নি। সম্ভবত জার্মানরা ১৪-১৬টি ট্যাংক নিয়ে আক্রমণ করেছিল এবং প্রত্যেকে যার যার টার্গেট ভাগ করে নিয়েছিল। নাহলে এত কম সময়ে এমন ভয়ংকর এম্বুশ করা সম্ভব নয়। জার্মান ট্যাংকগুলো তাদের লুকানো পজিশন ছেড়ে সামনে এগিয়ে আসছে দেখে কানাডিয়ান ট্যাংক বহরের কমান্ডার সেকেন্ড স্কোয়াড্রনের আরো ৯টি ট্যাংককে সামনে এগিয়ে আসতে নির্দেশ দেন যাতে তারা প্রথম স্কোয়াড্রনকে সাহায্য করতে পারে। একটু পড়ে সেকেন্ড স্কোয়াড্রনের কমান্ডার দেখেন ঐ ৯ ট্যাংকের কাছ থেকে আর কোনো সাড়াশব্দ নেই!

www.warhistoryonline.com
জ্বলন্ত শেরম্যান ট্যাংক; Image source : warhistoryonline.com

সেকেন্ড স্কোয়াড্রনের ট্যাংকগুলো আক্রমণ শুরুর আগে শত্রু ট্যাংককে ধোঁকা দেয়ার স্মোকস্ক্রিন সৃষ্টির জন্য বিশেষ কিছু ফসফরাস শেল ফায়ার করে। ফলে পুরো ব্যাটলফিল্ড পোড়া ট্যাংক ও স্মোকস্ক্রিনের ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। একারণে ঐ নয়টি ট্যাংকের কি অবস্থা হয়েছে তা পেছন থেকে বুঝা যাচ্ছিল না। সেকেন্ড স্কোয়াড্রনের ট্যাংক কমান্ডার তাদের বা দিক থেকে কয়েকটি প্যানজার ৪ সিরিজের ট্যাংক আসতে দেখে পজিশন বদলানোর নির্দেশ দেন নিজের গ্রুপের ট্যাংকগুলোকে। মোটামুটি রকমের দূরত্ব থাকলে গতি ও ম্যানুভারিটি দিয়ে প্যানজার ফোর ট্যাংককে সহজেই টেক্কা দিতে পারতো শেরম্যান। তাদের আশা ছিল ঐ ৯ ট্যাংক তাদের সাথে যোগ দেবে। কিন্তু ধোঁয়ার পর্দা ভেদ করে দেখা গেলো এগিয়ে আসছে প্যানজার ফাইভ ‘প্যান্থার’ ট্যাংক! এর মানে সামনে থাকা ৯টি শেরম্যানের একটিও আস্ত নেই! সবাই ধ্বংস হয়েছে প্যান্থারের ভয়ংকর আক্রমণে।

সময়মত পিছিয়ে যাওয়ায় বামপাশ দিয়ে আসা প্যানজার ৪ ট্যাংকের আক্রমণ থেকে বেঁচে যান। একই সাথে সামনে এগিয়ে আসা প্যান্থার ট্যাংককে আক্রমন করার সুযোগ পান। এ সময় বীরত্ব দেখান কানাডা তো বটেই মিত্রবাহিনীর সবচেয়ে সেরা ট্যাংক এইস স্যার র‍্যাডলি ওয়াল্টার যার কিল রেকর্ড ১৮টি। তিনি একের পর এক ফায়ার করতে শুরু করেন, এ সময় তিনি একটি প্যান্থার ট্যাংকে সামনে থেকেই আঘাত করে ঘায়েল করতে সক্ষম হন। আরেকটি ট্যাংক চাকা অচল করে দেন। তার কাভারিং ফায়ারের মুখে পুরো সেকেন্ড স্কোয়াড্রন পিছিয়ে যায়। তাছাড়া ব্রিটিশ ট্যাংক নিয়ে গঠিত থার্ড স্কোয়াড্রনে এর সবাই বেঁচে যান।

www.warhistoryonline.com
ধ্বংস হওয়া শেরম্যান ট্যাংক Image source : warhistoryonline.com

এই যুদ্ধে কানাডিয়ানরা সব মিলিয়ে ২৮টি ট্যাংক হারায়! ব্রিগেডিয়ার কুর্ট মায়ার ৯ প্যান্থারের বদলে ৩ গুণ মিত্রবাহিনীর ট্যাংক মেরে প্রতিশোধ নেন। সব বর্ণনার হিসাব মিলিয়ে ঐ অপারেশনে জার্মানদের ৮-১৫টি ট্যাংক হারানোর খবর পাওয়া যায়। ক্যান সিটির অপর প্রান্ত দিয়ে এটাক করে ব্রিটিশরাও তেমন সুবিধা করতে পারেননি। কানাডিয়ান শেরম্যান ব্যাপক মার খেলে ব্রিটিশ শেরম্যান খাবে না- এমনটা ভাবা ঠিক হবে না। তাদের অপারেশন চার্মউড সফল হয়েছিল বটে। ব্রিটিশরা ৮০টি ট্যাংক, ৩,৮১৭ জন সোলজারের হতাহতের বিনিময়ে Orne ও Orden নদীর তীরবর্তী অঞ্চল দখল করে নিয়েছিল। ফলে জার্মান সাপ্লাই ইউনিট আর নদী ব্যবহার করে ক্যান সিটিতে রসদ সরবরাহ করতে পারেনি। 

Orne নদীর দখল নিতে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত বেইলি ব্রিজের উপর দিয়ে যাচ্ছে ব্রিটিশ ট্যাংক; Image source : wikipedia.org
মিত্রবাহিনীর নির্বিচারে বোমা ফেলে পুরো শহর ধ্বংসস্তুপ বানিয়ে দেয়। ছবিতে ধ্বংসপ্রাপ্ত টাইগার ট্যাংক; Image source : warhistoryonline.com

এছাড়া জার্মানির সব মিলিয়ে প্রায় ১৮-৩১টি ট্যাংক, ২০০০ হাজার সোলজার নিহত হয়েছিল। প্রায় নিরীহ ৩০০-৪০০ ফরাসি বেসামরিক লোকজন দুই পক্ষের এই যুদ্ধের মাঝখানে পড়ে গিয়ে নিহত হয়েছিল। পরবর্তীতে তাদেরকে ক্যান সিটি ছেড়ে পালানোর নির্দেশ দেয়া হয়। এসব কারণে ৩ দিনের মধ্যে মিত্রবাহিনী ক্যান শহরের পতন ঘটানোর প্ল্যান করলেও বাস্তবে শহরের দখল নিতে তাদের ৩৪ দিন সময় লেগেছিল। এ সময় জার্মান ট্যাংক, এন্টি ট্যাংক বহরের সাথে পেরে উঠতে না পেরে মিত্রবাহিনীর ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ারফোর্স নির্বিচারে বোমা ফেলে পুরো শহর ধ্বংসস্তুপ বানিয়ে দেয়।

Related Articles