- জেরুজালেমের খ্রিস্টান চার্চের প্রধানরা চার্চ অব সেপলক্যার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
- ইজরায়েল সরকারের নতুন বিল পাশ ও শহরের ট্যাক্সের নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে গত রবিবার তা বন্ধ করা হয়।
- খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের কাছে এ চার্চটি অতি পবিত্র। এটিকে যীশুখ্রিস্টের ক্রুশবিদ্ধ ও সমাধিস্থল হিসেবে ধরা হয়।
রোমান ক্যাথলিক, গ্রিক অর্থোডক্স ও আর্মেনিয়ান অ্যাপস্টলিক চার্চের প্রধানরা জানান, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এটি বন্ধ থাকবে। তাদের এ পদক্ষেপের পরে, ইজরায়েলের মন্ত্রীসভার একটি কমিটি জেরুজালেমের চার্চগুলো বাজেয়াপ্ত করা সংক্রান্ত বিলের ব্যাপারটিও বিবেচনা করার জন্য স্থগিত করে।
এটি চার্চের নেতাদের নেওয়া এক বিরল পদক্ষেপ। প্রায় তিন দশক ধরে তাদেরকে এরকম কোনো সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায়নি। তারা ইজরায়েলকে ‘খ্রিস্টানদের পবিত্রভূমির বিরুদ্ধে সুশৃঙ্খল ও নজিরবিহীন আক্রমণ’ এর অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে।
চার্চগুলো শহরটির অধিকাংশ সম্পত্তির মালিক। তাদের মতে এ ধরনের আইনের কারণে চার্চের মালিকানায় থাকা জমিগুলোর ক্রেতা খোঁজা তাদের জন্য আরও কঠিন হয়ে যাবে যার মাধ্যমে তাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনার খরচ আসে। তারা জেরুজালেমের পৌরসভার কর নীতির বিরুদ্ধেও আন্দোলন করছেন। চার্চের নেতারা বলেন, “এটি আমাদের একই রকমের সেসব আইনের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে, যেগুলো ইউরোপের অন্ধকার যুগে ইহুদীদের বিরুদ্ধে বলবত করা হয়েছিলো’”
র্যাচেল আজারিয়া নামের একজন আইনজীবী, যিনি এ বিলের প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন তিনি জানান, তিনি কমিটির আলোচনা এক সপ্তাহ পেছাতে রাজি হয়েছেন। তারা চার্চের সাথে এই বাদানুবাদ মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা চালাবেন বলেন জানান তিনি। জেরুজালেমের মেয়র নির বরকত টুইটারে বলেন, চার্চের মালিকানায় থাকা হোটেল ও খুচরা ব্যবসাসহ বাণিজ্যিক সম্পত্তিগুলো ট্যাক্সবিহীন অবস্থানে থাকবে এটি মনে করা অযৌক্তিক।
জেরুজালেমের আইন অনুযায়ী এই বিলটি কিছুটা হলেও অস্বাভাবিক। কেননা এটি পাশ হলে সম্পত্তির উপর চার্চ ও ব্যক্তিগত মালিকানায় যারা জমিগুলো কিনেছেন তাদের ক্ষমতা হ্রাস পাবে। চার্চের নেতারা জানিয়েছেন যে, এটিকে তারা তাদের অধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করছেন এবং প্রয়োজনে তারা এর বিরুদ্ধে আইনি ও কূটনৈতিকভাবে লড়াই করবেন। চার্চ নেতারা ইতিমধ্যে মেয়র নির বরকতের উপর আন্তর্জাতিক চুক্তি ভঙ্গেরও অভিযোগ এনেছেন। কেননা পৌরসভা জানিয়েছে এর মাধ্যমে চার্চ ও শহরের সম্পত্তির সাথে জড়িত আন্তর্জাতিক মালিকানার থেকে ৬৫ কোটি স্যাকল আদায় করার পরিকল্পনা চলছে।
এদিকে হলি সেপলক্যারের বাইরে তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীরা এর দরজা বন্ধ দেখে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।
ফিচার ইমেজ: Holy Land Christian Ecumenical Foundation