তিথির চোখে চশমা উঠেছে সেই ছোট্ট বয়সেই, ক্লাস ফাইভে ছিল তখন সে। দিন দিন চশমার পাওয়ার বেড়েছে, ভারী লেন্সের চশমা পড়া শুরু হয়েছে তার ক্লাস নাইন থেকেই। এই চশমা পড়া চোখ নিয়ে স্কুলে তার সবচেয়ে বেশি সমস্যা হতো যেখানে, সেটা হলো ক্লাস। প্রায়ই এমন হতো, মাঝের সারিতে বা পেছনে বসলেই তার জন্য ব্ল্যাকবোর্ডের লেখা দেখা কষ্ট হয়ে যেত। সবসময় তো আর আগে এসে ফার্স্ট বেঞ্চে বসাও যায় না! নতুন কলেজে ভর্তি হবার সময় তিথি ভাবছিল, আবারও বুঝি শুরু হবে সেই ঝাপসা বোর্ডের লেখা বোঝার কষ্টকর সময়গুলো।
কিন্তু প্রথম দিন ক্লাসে ঢুকে চারপাশ দেখে খুশিতে প্রায় লাফই দিয়ে ফেলল তিথি। এ কেমন ক্লাসরুম! ব্ল্যাকবোর্ড নয়, হোয়াইটবোর্ডও নয়, এখানে যেটা আছে তার নাম স্মার্টবোর্ড। এই বোর্ডে শিক্ষক যা লিখেন, তা দেখার জন্য পেছনের বেঞ্চে বসা শিক্ষার্থীকেও কোনো কসরত করতে হয় না। অবশ্য ক্লাসে শিক্ষার্থীর সংখ্যা থাকে সর্বোচ্চ ৪০ জন, সেকারণে কাউকে যে খুব পেছনে বসতে হয়, সেটাও না।
ক্যামব্রিয়ান কলেজে ভর্তি হয়ে ক্লাসরুম নিয়ে তিথির ধারণাটাই যেন পাল্টে গেল। গরমে ঘেমে-নেয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ার কোনো ব্যাপার এখানে নেই, কারণ প্রতিটি ক্লাসরুমই থাকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ব্যবহার করে ক্লাসের মধ্যেই শিক্ষক যা পড়াচ্ছেন সেটা নিয়ে নানারকম ভিডিও দেখান। শিক্ষার্থীরা কম্পিউটারের বহুবিধ ব্যবহারের সাথে পরিচিত হয় এখানে। ক্যামব্রিয়ান শুরু থেকেই যেটা অনুসরণ করছে, সেই ‘Supervisory Study Program’ বা SSP পদ্ধতিতে পড়ানো হয় এই আধুনিক ক্লাসরুমগুলোতে। ফিডব্যাক ক্লাস আর মোটিভেশনাল ক্লাসের ব্যবস্থা তো আছেই।
বাবা-মায়েরা যখন ভাবতেন, মোবাইল-ল্যাপটপ দিয়ে এই প্রজন্ম বুঝি নষ্ট হতে চলল; সেই সময়ে ক্যামব্রিয়ান শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিয়েছে ল্যাপটপ। স্মার্ট ক্লাসরুমে প্রতিটি শিক্ষার্থীর সামনে থাকে একটি করে ল্যাপটপ। শিক্ষক যখন স্মার্ট বোর্ডে কিছু দেখান, সেটা সব শিক্ষার্থী দেখতে পারে তাদের ল্যাপটপে। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীরা তাদের ল্যাপটপ থেকে বিভিন্ন প্রশ্নও করতে পারে, যা মূল স্মার্ট বোর্ডে সবাই দেখতে পায়।
প্রযুক্তির যে ভালো দিক আছে, জাতি গড়ার কাজেই যে একে সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করা যায়, সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছে কলেজটি। শিক্ষার্থীদের মাঝ থেকে প্রতি বছর ১০০ জনকে প্রোগ্রামার হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে তারা। পড়া, লেখা, এমনকি পরীক্ষা দেওয়ার জন্যও যে আধুনিক প্রযুক্তির এত সুবিধা ব্যবহার করা যায়, সেটা প্রথম দেখিয়েছে এই কলেজ। একারণেই দেশের প্রথম ডিজিটাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে খ্যাতিলাভের গৌরব অর্জন করেছে ক্যামব্রিয়ান। তিথিদের মতো হাজারও শিক্ষার্থীকে আধুনিক সময়ের সবচেয়ে অগ্রগামী প্রযুক্তি দিয়ে শেখানোর আয়োজন করে এখনও তারা সেই গৌরবের পথেই ধরে রেখেছে নিজেদের।
ফিচার ইমেজ © Cambrian Education Group
This article is brought to you by Cambrian College