Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ইলভারমর্নি স্কুল অভ উইচক্র্যাফট অ্যান্ড উইজার্ড্রি: হগওয়ার্টসের আমেরিকান সংস্করণ

ইলভারমর্নি স্কুল অভ উইচক্র্যাফট অ্যান্ড উইজার্ড্রিকে অভিহিত করা যেতে পারে হগওয়ার্টসের আমেরিকান সংস্করণ। এতে অতিশয় কোনো ভুল হবে না, কারণ এই জাদুর স্কুল ইলভারমর্নি জে. কে. রোলিংয়ের সৃষ্ট উইজার্ডিং ওয়ার্ল্ডেরই অংশ, যেটার গোড়াপত্তন ঘটে সালাজার স্লিদারিনের বংশধর ইসল্ট সায়ারের হাত ধরে। কালের বিবর্তনে এখানে ঠাঁই পেয়েছে জাদু শিখতে আসা সমগ্র উত্তর আমেরিকার জাদুকর পরিবারের শিক্ষার্থীরা। হগওয়ার্টসের খ্যাতনামা জাদুকর নিউট স্ক্যামান্ডার ১৯২০ এর দশকে যখন নিউ ইয়র্কে ভ্রমণে বের হন, তখন ইলভারমর্নি থেকে গ্র‍্যাজুয়েট বেশ কিছু জাদুকরের সাথে তার দেখা হয়।

ইলভারমর্নি স্কুল অভ উইচক্র্যাফট অ্যান্ড উইজার্ড্রি; Image Source: Warner Bros.

ইতিহাস

ইলভারমর্নি স্কুল অভ উইচক্র্যাফট অ্যান্ড উইজার্ড্রি নির্মাণের ইতিহাস জানতে হলে আমাদের একটু পেছনে ফিরে যেতে হবে। ঘেঁটে দেখতে হবে হগওয়ার্টস এবং হাউজ স্লিদারিনের প্রতিষ্ঠাতা সালাজার স্লিদারিনের পারিবারিক ইতিহাস। জাদুকর করভাস গন্ট ছিলেন সালাজার স্লিদারিনের একজন বংশধর। তার ঘরে জন্ম নিয়েছিল গর্মলেইথ গন্ট এবং রিয়োনাচ গন্ট নামে দুই মেয়ে জাদুকর। স্বভাব-চরিত্রে একজন ছিল অপরজনের সম্পূর্ণ বিপরীত।

গর্মলেইথ তার বিশুদ্ধ রক্তের গরিমা দেখিয়ে মাগলদের প্রচণ্ড ঘৃণা করলেও রিয়োনাচ ছিল কোমল হৃদয়ের অধিকারী। ১৬০৩ সালে রিয়োনাচ উইলিয়াম সায়ার নামে এক পিওর ব্লাড জাদুকরকে বিয়ে করলে তাদের কোল আলো করে জন্ম নেয় ইসল্ট সায়ার নামে এক মেয়ে। তারা আয়ারল্যান্ডের ‘ইলভারমর্নি কটেজ’ নামক জায়গায় বসবাস শুরু করে। তারা প্রতিবেশী মাগলদের প্রতি ছিল ভীষণ সদয়। জাদুর মাধ্যমে তারা বিভিন্ন প্রাণীর রোগবালাই এবং ক্ষত সারিয়ে তুলত।

পড়তে পারেন – স্লিদারিন বংশের অজানা ইতিহাস

মহামতি সালাজার স্লিদারিন; Image Source: Wizarding World.

কিন্তু তাদের এই জনহিতকর কর্মকাণ্ড ক্রমশ ফুসলিয়ে তুলছিল গর্মলেইথ গন্টকে। ইসল্টের বয়স যখন পাঁচ বছর, তখন গর্মলেইথ তাদের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। সেই আগুনে ইসল্টের বাবা-মা দুজনেই মারা যান। কিন্তু গর্মলেইথ ইসল্টকে আগুনের হাত থেকে বাঁচিয়ে সাথে করে নিয়ে আসে। বিশুদ্ধ রক্তের গরিমা দেখিয়ে মগজ ধোলাইয়ের পাশাপাশি সে কালো জাদুও শেখাতে লাগল নিজ ভাগ্নিকে। ১৬১৪ সালে ইসল্ট ১১ বছরে পা দেওয়ার পর তার জন্য হগওয়ার্টস থেকে চিঠি আসতে থাকে। কিন্তু নিষ্ঠুর গর্মলিথ তা আগুনে পুড়িয়ে ফেলত। ইসল্টকে হগওয়ার্টসে যেতে দেওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই তার গর্মলেইথ। গর্মলেইথ যে ছড়ি ব্যবহার করত সেটা ছিল মূলত সালাজার স্লিদারিনের। সতের বছর বয়সে পা রাখার পর ইসল্ট একদিন সর্প-কাঠের তৈরি সেই ছড়ি চুরি করে গর্মলেইথের কব্জা থেকে পালিয়ে যায়।

ইসল্ট সায়ার; Image Source: Irontree.

স্লিদারিনের বংশধর হিসেবে গর্মলেইথের ট্র‍্যাকিং স্কিল বা খুঁজে বের করার ক্ষমতা ছিল প্রবল। তাই গর্মলেইথের হাত থেকে বাঁচতে মেফ্লাওয়ার নামের এক জাহাজে করে নিউ ওয়ার্ল্ড (যুক্তরাষ্ট্র) নামক দেশে চলে আসে ইসল্ট। নিউ ওয়ার্ল্ডে আসার কয়েক সপ্তাহ পর হঠাৎ হাইডবিহাইন্ড নামে জংলী পশু সম্মুখীন হলো তার। ভাগ্যক্রমে, তখন গবলিনসদৃশ এক পাকবুজি হাজির হয় সেখানে। দুজন মিলে তখন সেই জানোয়ারের দফারফা করে ফেলে। কিন্তু, লড়াইয়ে পাকবুজি গুরুতর আহত হয়। মানুষের জন্য পাকবুজি হাইডবিহাইন্ডের চেয়ে ভয়ংকর হওয়া সত্ত্বেও অসুস্থ পাকবুজিকে সেবা-শুশ্রূষা দিয়ে সুস্থ করে তুলল ইসল্ট। পাকবুজি তখন প্রতিজ্ঞা করে, এই ঋণ সে নিজের প্রাণ দিয়ে হলেও শোধ করবে। এরপর দুজনের মাঝে ভালো বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। পাকবুজিকে তার আসল নাম না বলায় ইসল্ট তার বাবার নামের সাথে মিল রেখে পাকবুজির নাম ‘উইলিয়াম’ রেখে দেয়।

পাকবুজি; Image Source: Maryquize.

কয়েকবছর পর এক অভিযানে গেলে দুজন আবারও এক হাইডবিহাইন্ড দেখতে পেল। তাদের দেখে পালিয়ে যায় হাইডবিহাইন্ডটি। ওখানে দুটো ফুটফুটে বাচ্চা চোখে পড়ে তাদের। তাদের মধ্যে একজন ছিল চ্যাডউইক বুট, অপরজন ওয়েবস্টার বুট। কিছুদিন পর নিরুদ্দেশ হয়ে গেল উইলিয়াম। এরপর ইসল্ট খোঁজ নিয়ে জানতে পারল- বাচ্চা দুটো জাদুকর বংশের। তাদের বাবা-মাকে হাইডবিহাইন্ড মেরে ফেলেছে। তখন তাদের বাবা-মাকে দাফন করার সময় জেমস স্টুয়ার্ট নামে সুদর্শন এক মাগল যুবকের সাথে পরিচয় হয় ইসল্টের। একসময় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলো তারা।

ইসল্ট এবং জেমস স্টুয়ার্ট; Image Source: Warner Bros.

বুট ভাইয়েরা তাদের সাথেই সন্তান হিসেবে রয়ে গেল। হগওয়ার্টসের কথা শুনে শুনে দারুণ রোমাঞ্চিত হয় তারা। বড় ভাই এগারো বছর পা রাখলে তাদের জাদু চর্চার কথা ভাবেন ইসল্ট। যেহেতু আমেরিকায় তখন জাদু শিক্ষার কোনো প্রতিষ্ঠান ছিল না, তাই ইসল্ট ও জেমস ‘ইলভারমর্নি স্কুল অব উইচক্র্যাফট অ্যান্ড উইজার্ড্রি’ নামক এক স্কুল প্রতিষ্ঠা করে। ইলভারমর্নি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল হগওয়ার্টস স্থাপনার ৬৩৭ বছর পর, ১৬২৭ খ্রিষ্টাব্দে।

প্রথমে ইলভারমর্নি ছিল মূলত ইসল্ট সায়ার এবং তার স্বামী জেমস স্টুয়ার্ডের নির্মিত পাথরের বাড়ি সদৃশ এক স্থাপনা। জেমস এর নকশা প্রস্তুত করে দিলে এক বিকেলের ব্যবধানেই মাউন্ট গ্রেলকের চূড়ায় জাদুর মাধ্যমে একটি পাথরের ঘর নির্মাণ করেন ইসল্ট। এই বাড়িকেই পরবর্তীতে জাদু স্কুলে পরিণত করা হয়। স্কুলের শিক্ষক হন ইসল্ট-স্টুয়ার্ট দম্পতি, আর প্রথম শিক্ষার্থী হিসেবে যোগদান করেন তাদের দত্তক চ্যাডউইক এবং ওয়েবস্টার বুট। মজার ব্যাপার হলো, বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা জাদুর স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল জাদু না জানা একজন মানুষের সহযোগিতায়। আমেরিকান জাদু সম্প্রদায়ের জাদু না জানা সাধারণ মানুষ ‘নো-ম্যাজ’ নামে পরিচিত, হগওয়ার্টসের ভাষায় যাদের মাগল বলা হয়। সে হিসেবে জেমস স্টুয়ার্ট ছিলেন একজন নো-ম্যাজ।

ইলভারমর্নি প্রতিষ্ঠা করছেন ইসল্ট এবং জেমস; Image Source: Warner Bros.

স্কুলের প্রথম ছাত্র চ্যাডউইক বুটের জন্য সাপের শিং থেকে ‘হর্নড সার্পেন্ট’ নামে এক জাদুর ছড়ি তৈরি করেন ইসল্ট। এজন্য ইসল্টকে বলা হয় জাদু জগতের প্রথম নারী জাদুছড়ি নির্মাতা। ক্রমে ক্রমে স্কুলের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়তে থাকে আমেরিকার স্থানীয় জাদু সম্প্রদায়ের মধ্যে। এই দৌড়ে বিশেষভাবে এগিয়ে ‘ওয়াম্প্যানোয়াগ’ এবং ‘ন্যারাগানসেট’ সম্প্রদায়, যারা জাদুবিদ্যা চর্চায় মেধা সাক্ষর রেখে আসছিল প্রাচীনকাল থেকেই। শুরুর দিকে সপ্তাহে শুধু একদিন ক্লাসের ব্যবস্থা থাকলেও সময় গড়িয়ে যাওয়ার সাথে সাথে স্কুলটিতে হগওয়ার্টসের আদলে আরও নানা উপকরণ যোগ করা হয়। ১৬৩৪ সালে শুরু হয় ইন্টার হাউজ প্রতিযোগিতা। গর্মলিথের কানে এই খবর পৌঁছানোর পর রক্ত মাথায় উঠে যায় তার। সে আমেরিকা এসে ইলভারমর্নি স্কুল ধ্বংস করে তার মেয়েদের অপহরণ করে।

ইলভারমর্নি স্কুল ধ্বংস করছে গর্মলেইথ গন্ট; Image Source: Warner Bros.

ইসল্ট আর গর্মলেইথ একে অন্যের মুখোমুখি হবার পর দ্বন্দ্বযুদ্ধের জন্য তৈরি হয় তারা। ইসল্ট ছড়ি উঠিয়ে দেখল তার ছড়ি কাজ করছে না। কারণ, এই ছড়ি সে তার খালা গর্মলেইথের কাছ থেকে বাগিয়ে এনেছিল, যার আসল মালিক ছিল খোদ সালাজার স্লিদারিন। গর্মলেইথ সর্প-ভাষার মাধ্যমে সেই ছড়িকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছিল। সর্প-ভাষা না জানায় ইসল্ট ছড়িকে জাগাতে পারছিল না। তখনই পুরো শক্তি দিয়ে ইসল্টের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল গর্মলেইথ। প্রাণ যাবে যাবে অবস্থা, এমন সময় নিজ বাবা উইলিয়ামকে চিৎকার করে ডাকতে লাগল ইসল্ট। ঠিক তখনই উইলিয়াম নামক সেই পাকবুজির বিষ মাখানো তীরের ফলা গিয়ে বিঁধল গর্মলিথের বুকে। সাথে সাথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো সর্বকালের অন্যতম কুখ্যাত এই জাদুকর। এরপর থেকে উইলিয়াম তাদের পরিবারের সাথেই থাকতে শুরু করল।

পাকবুজিসহ ইসল্ট সায়ারের পরিবার; Image Source: Wizarding World.

ধ্বংসস্তূপ থেকে আবারও ফিনিক্স পাখির মতো পুনর্জন্ম নেয় ইলভারমর্নি। শিক্ষার্থীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার সাথে পাল্লা দিতে নিযুক্ত করা হয় নতুন শিক্ষকও। ক্রমশ বিশ্বজোড়া খ্যাতি ও প্রশংসা নিজ ঝুলিতে পুরে নিতে থাকে ইলভারমর্নি। হগওয়ার্টসের মতো এই স্কুলকেও প্রতিষ্ঠাতারা শক্তিশালী এক মন্ত্র দিয়ে ঢেকে রেখেছিলেন, যাতে নো-ম্যাজদের চোখ থেকে স্কুল আড়ালে রাখা যায়। আঠারো শতাব্দীতে, ইলভারমর্নির একজন প্রাক্তন ছাত্র ডরকাস টুয়েলভেট্রিস, বার্থলোমিউ বারবোন নামের একজন নো-ম্যাজের কাছে জাদুকর সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব এবং ইলভারমর্নির গোপন অবস্থানের কথা ফাঁস করে দেয়। বার্থলোমিউ ছিল একজন স্কোয়ারের (১৭ শতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আবির্ভাব ঘটা ভাড়াটে দুর্বৃত্ত জাদুকরদের একটি দল) বংশধর। সে ইলভারমর্নির ঠিকানাসহ ডরকাস থেকে পাওয়া সমস্ত তথ্য নো-মাজ সম্প্রদায়ের কাছে প্রকাশ করে দেয়, যা ছিল ‘International Statute of Secrecy’র সরাসরি নীতিবিরুদ্ধ।

The International Statute of Wizarding Secrecy Image Source: Wizarding World.

পরবর্তীতে Rappaport’s Law এর মাধ্যমে জাদুকর সম্প্রদায় এবং নো-ম্যাজ সম্প্রদায়ের মধ্যে মোটা দাগে বিভক্তি তৈরি করে আন্তর্জাতিক জাদু সংঘের নীতিনির্ধারকেরা।

হগওয়ার্টসের মতো তাদের স্কুলের একটি নিজস্ব গান রচনা করা হয়েছিল। তাদের হাউজ পয়েন্ট এবং পুরষ্কার সম্পর্কে নিয়মিত হালনাগাদ পাওয়া যায় ‘দ্য নিউ ইয়র্ক ঘোস্ট’ নামক জাদু পত্রিকায়। যাদের মা-বাবা ফরাসি জাদু মন্ত্রণালয়ে কর্মরত, সেসব শিক্ষার্থীর জন্য ১৯২৭ সালে ইলভারমর্নিতে স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম’ নামে একটি প্রক্রিয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

দ্য নিউ ইয়র্ক পোস্ট; Image Source: Warner Bros.

হাউজ

হগওয়ার্টসের মতো ইলভারমর্নিও মোট চার হাউজে বিভক্ত ছিল। তা হলো –

হর্নড সার্পেন্ট

এই হাউজের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ইলভারমর্নির প্রতিষ্ঠাতা ইসল্ট সায়ার নিজে। এই হাউজ প্রাধান্য দেয় সাহসিকতাকে। এই হাউজের প্রসিদ্ধ শিক্ষার্থী হলেন সেরাফিনা পিকোইরি (প্রেসিডেন্ট, ম্যাজিক্যাল কংগ্রেস অভ দ্য ইউনাইটেড স্টেটস অভ আমেরিকা, ১৯২০-১৯২৮)।

সেরাফিনা পিকোইরি; Image Source: Warner Bros.

ওয়াম্পাস

এই হাউজ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ওয়েবস্টার বুটের হাত ধরে। এই হাউজ যোদ্ধাদের বেশি প্রাধান্য দেয়।

ওয়েবস্টার বুট; Image Source: Wizarding World.

থান্ডারবার্ড

এই হাউজের প্রতিষ্ঠাতা চ্যাডউইক বুট। যারা অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়, তাদের এই হাউজে প্রাধান্য দেওয়া হয়। প্রসিদ্ধ শিক্ষার্থীরা হলেন টিনা গোল্ডস্টেইন (অরোর, ম্যাজিক্যাল কংগ্রেস অভ দ্য উইনাইটেড স্টেটস অভ আমেরিকা), হলি ব্ল্যাকবার্ড (কর্মকর্তা, ম্যাজিক্যাল কংগ্রেস অভ দ্য ইউনাইটেড স্টেটস অভ আমেরিকা)।

টিনা গোল্ডস্টেইন; Image Source: Warner Bros.

পাকবুজি

জাদু জগতে এই হাউজই একমাত্র ব্যতিক্রমী হাউজ, যেটা প্রতিষ্ঠা হয়েছে, জাদু না জানা একজন নো-ম্যাজের হাত ধরে। এই হাউজ বেছে নেয় সেসব জাদুকরকে, যারা আরোগ্য জ্ঞানে পটু। এই হাউজের প্রসিদ্ধ শিক্ষার্থী হলেন কুইনি গোল্ডস্টেইন (কর্মকর্তা, ম্যাজিক্যাল কংগ্রেস অভ দ্য ইউনাইটেড স্টেটস অভ আমেরিকা)।

কুইনি গোল্ডস্টেইন; Image Source: Warner Bros.

হাউজ সর্টিং

হগওয়ার্টসে সর্টিং হ্যাটের মাধ্যমে হাউজ নির্বাচন করা হলেও ইলভারমর্নিতে নির্ধারণ করা হতো গর্ডিয়ান নট দিয়ে। স্কুলের এন্ট্রান্স হলের মেঝেতে অঙ্কন করা হতো গর্ডিয়ান নট। সেখানে শিক্ষার্থীরা গিয়ে দাঁড়াত। তখন হর্নড সার্পেন্ট তার কপালে অবস্থিত মনি জ্বলজ্বল করার মাধ্যমে, থান্ডারবার্ড ডানা ঝাঁপটে, ওয়াম্পাস গর্জনের মাধ্যমে, এবং পাকবুজি বিষাক্ত তীর প্রদর্শনীর মাধ্যমে নিজ নিজ হাউজে শিক্ষার্থী নির্বাচন করত। শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্মেও রয়েছে গর্ডিয়ান নটের উপস্থিতি। গর্ডিয়ান নটকে এত প্রাধান্য দেওয়ার কারণ হতে পারে, এর মাধ্যমে ইসল্ট নিজ মায়ের স্মৃতি ধরে রাখার পাশাপাশি, ঐতিহাসিক দিককেও গুরুত্ব দিয়েছিলেন। গ্রিক কিংবদন্তি অনুসারে, গর্ডিয়ান নট ছিল এমন এক গিঁট, যেটা শুধুমাত্র খুলতে পেরেছিলেন আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট। এই সর্টিংয়ের পর তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হতো বৃহৎ এক হল রুমে। সেখানে আবারও নির্বাচন প্রক্রিয়া চলত, এবং তা জাদু ছড়ি নির্বাচন।

ইলভারমর্নির চার হাউজ; Image Source: Wizarding World.

পঠিতব্য বিষয়সমূহ:

  • ডিফেন্স এগেইন্সট ডার্ক আর্টস: এখানে শেখানো হয় কালো জাদুর আগ্রাসন প্রতিহত করার নিয়ম। ১৭ শতক থেকে এই বিষয়ের যাত্রা শুরু হয় ইলভারমর্নিতে। এই বিষয়ের প্রফেসর একজন ছিলেন ইসল্ট এবং জেমসের কন্যা রিয়োনাচ স্টেওয়ার্ড।
  • চার্মস: বিভিন্ন জাদুমন্ত্র শিক্ষা দেওয়া হয় এই বিষয়ে। চ্যাকউইক বুটের লেখা চ্যাকউইক’স চার্মস (খণ্ড ১-৭) ইলভারমর্নিতে পাঠ্যবই হিসেবে নিযুক্ত করা হয় তার আমলে। এই বিষয়ে দক্ষ শিক্ষার্থীদেরকে ‘The Charms Chalice’ পুরষ্কার দেওয়া হতো।
  • ট্রান্সফিগারেশন: ট্রান্সফিগারেশন শিক্ষায় বেশ দক্ষ ছিল ইলভারমর্নি। ১৯২৬ সালে ২৫৭৮ তম সংস্করণে জনপ্রিয় জাদু সাময়িকী ‘ট্রান্সফিগারেশন টুডে’-তে ইলভারমর্নি স্কলার’স ভ্যানিশমেন্ট রিপোর্ট থেকে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল।
  • পোশন: জাদু জগতের বিভিন্ন গাছ-গাছড়া ব্যবহার করে জাদুকরী ক্ষমতাসম্পন্ন ঔষধ পোশন বানানো শেখানো হতো এখানে।
  • জাইলোম্যান্সি: জাদুশক্তির মাধ্যমে অলৌকিক উপায়ে ভবিষ্যদ্বাণীর একটি প্রক্রিয়া এটি। ১৯২৬ সালে, ইলভারমর্নিতে পাঠ্যক্রম বহির্ভূত জাইলোম্যানসি যুক্ত করা হয়।
  • অ্যারিথম্যান্সি: অ্যারিথম্যান্সি হলো একপ্রকার জাদুকরী গাণিতিক বিদ্যা, যেখানে সংখ্যার জাদুকরী মাহাত্ম্য নিয়ে গবেষণা করা হয়।
  • স্টাডি অভ অ্যানসিয়েন্ট রুন্স: প্রাচীন রুনিক ভাষার পাণ্ডুলিপি নিয়ে আলোচনা এই বিষয়ের মুখ্য উদ্দেশ্য। পুরোটাই ছিল তাত্ত্বিক।
  • ক্রিয়েচার কেয়ার: ১৯২৬ সালে নিউ ইয়র্কে নিউট স্ক্যামান্ডারের উপর হামলার পর ১৯২৭ সালে এটি পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যেখানে বিভিন্ন জাদুকরী জীবের নিয়ন্ত্রণ শেখানো হতো।
মানচিত্রে ইলভারমর্নি; Image Source: Warner Bros.

প্রায় তিন শতাব্দী ধরে তিলে তিলে গড়ে ওঠা এই প্রতিষ্ঠানকে ১৯২০ সালের দিকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জাদু প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হত। ইলভারমর্নির শিক্ষার্থীরা জাদুর ছড়ি ব্যবহারে অন্য যেকোনো জাদু স্কুল থেকে ছিল এক কাঠি সরেস। ইলভারমর্নির মূলে প্রোথিত আছে স্লিদারিন বংশের সরল-জটিল ইতিহাস। এই স্কুল থেকে জাদুশিক্ষা নিয়ে জাদু জগত কাঁপিয়েছে সেরাফিনা পিকোইরি, টিনা গোল্ডস্টেইন, কুইনি গোল্ডস্টেইন, ল্যালি হিকস, হলি ব্ল্যাকবার্ডের মতো জাদুকরেরা। 

হ্যারি পটার ইউনিভার্স তথা উইজার্ডিং ওয়ার্ল্ডের অজানা জিনিস জানতে – হ্যারি পটারের জাদুর জগতে

Language: Bangla

Topic: A historical introduction to Ilvermorny School of Witchcraft and Wizardry

References

1. Ilvermorny School of Witchcraft and Wizardry - Wizarding World.

2. Everything you need to know about Ilvermorny - Wizarding World.

3. Ilvermorny School of Witchcraft and Wizardry - Harry Potter Fandom.

4. Everything You Need To Know About Ilvermorny, The American Hogwarts - MTV.

Feature Image: Wizarding World

Related Articles