Imagine there’s no countries
It isn’t hard to do
Nothing to kill or die for
And no religion too
Imagine all the people
Living life in peace…
– জন লেনন
১৯৪০ সালের ইংল্যান্ড। ইউরোপের আকাশে তখন নাৎসি ফাইটার আর বোম্বার বিমানের একচ্ছত্র আধিপত্য। প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের দক্ষ নেতৃত্ব ও পরিকল্পনায় ব্রিটেন তখনও ঠেকিয়ে রেখেছে জার্মান বাহিনীকে। চারদিকে শুধু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীভৎসতা। এই অন্ধকার সময়েই নিউক্যাসল রোডের নোংরা, অপরিচ্ছন্ন এক অ্যাপার্টমেন্টে শোনা যাচ্ছে এক নবজাতকের কান্না। ১৯৪০ সালের ৯ অক্টোবর লিভারপুল মাতৃসদন হাসপাতালে জন্ম নেয়া জুলিয়া লেনন তার শিশু সন্তানকে নিয়ে এসেছেন অ্যাপার্টমেন্টটির ছোট্ট এই কুঠুরীতে।
মা আদর করে সন্তানের নাম রাখলেন জন উইনস্টন লেনন। অবধারিতভাবে লেননের এই মাঝের নামটি জুলিয়ার দেশপ্রেমের সাক্ষ্য দেয়। ব্রিটেনের জাতীয় নেতা উইনস্টন চার্চিলের প্রথম নামটিই জুলিয়া তার পুত্রের জন্য বেছে নেন। জুলিয়া তখনও জানতেন না, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতার মাঝে জন্মেছে যে শিশু, একদিন সে গান গেয়ে সারা পৃথিবীর জনগণকে উদ্দীপ্ত করে তুলবে যুদ্ধের বিরুদ্ধে। গিটারের ঝংকারে গেয়ে উঠবে ‘ গিভ পিস আ চান্স’, ‘ইমাজিন’ বা ‘পাওয়ার টু দা পিপল’ এর মতো গান।
জনের বাবা ফ্রেডি লেনন ছিলেন জাহাজের এক নাবিক। পুত্রের জন্মের আগেই কর্মসূত্রে জাহাজে করে পিতাকে পাড়ি দিতে হয়েছিল অন্য দেশে। এরপর থেকেই তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। কুড়ি বছর পর হঠাৎই একদিন ছেলের সামনে উপস্থিত হন ফ্রেডি। শোনা যায়, যে জাহাজে করে তিনি যাচ্ছিলেন সেটি শত্রু দেশের হাতে পড়েছিল। ফলে তাকে কয়েক বছর কারাগারে কাটাতে হয়। জেল থেকে ছাড়া পেয়েই সন্তানের মুখ দেখতে ফিরে আসেন হতভাগ্য পিতা। এদিকে স্বামী নিরুদ্দেশ, একমাত্র সন্তানকে পালনে জুলিয়ার বিন্দুমাত্র উৎসাহ নেই। জনের যখন চার বছর বয়স, জুলিয়ার সাথে ফ্রেডির বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। জুলিয়া সংসার পাতেন অন্য এক পুরুষের সাথে।
জুলিয়ার বোন মিমি ও তার স্বামী জর্জের কোনো সন্তান ছিল না। মিমি বেশ আদরেই এই সদ্যজাত শিশুটিকে তার কাছে এনে রাখলেন। মিমির স্নেহ, ভালবাসা ও যত্নে দুরন্ত শিশুটি আস্তে আস্তে বেড়ে উঠতে থাকে। তাকে ভর্তি করে দেওয়া হলো ডোভডেল প্রাইমারি স্কুলে। ছোট্ট বয়স থেকেই জন ভীষণ দুরন্ত, সমবয়সী ছেলেদের সাথে সবসময় তার মারপিট লেগেই থাকে।
বারো বছর বয়সে ডোভডেল প্রাইমারি স্কুল ছেড়ে জনকে ভর্তি করানো হয় কেয়ারি ব্যাক স্কুলে। কিন্তু স্বভাবে তার খুব একটা পরিবর্তন ঘটেনি। আন্টি মিমিকে ছাড়া আর একজনকেই সে বেশ ভালবাসে। তিনি আর কেউ নন, জনের মা জুলিয়া লেনন।
মা জুলিয়া স্বভাবে ছিলেন একেবারেই মিমের উলটো পিঠ। মিমি স্নেহশীলা হলেও কঠোর নিয়মানুবর্তী। জুলিয়া হাশিখুশি, আমোদ প্রমোদে থাকতে ভালবাসেন। কোনো নিয়মশৃঙ্খলায় বাঁধা থাকতে পছন্দ করেন না। দ্বিতীয় বিয়ে করলেও জনের সাথে কখনোই তার সম্পর্কের ছেদ ঘটেনি। প্রায় সময় তিনি জনকে দেখতে মিমির বাড়িতে আসতেন। ছেলের আবদার মেটাতেন খুশি মনেই।
জনের মা-বাবা দুজনেই ভালো ব্যাঞ্জো বাজাতে পারতেন। জুলিয়া ছেলেকে খুব অল্প বয়সেই ব্যাঞ্জো বাজাতে শেখান। কিন্ত ছেলের নেশা অন্য একটি যন্ত্রে। মা জুলিয়ার কাছে সেটি কেনার আবদার করেন জন। জুলিয়া ছেলের সেই আবদার রেখেছিলেন। মায়ের কাছে আবদার করা মিউজিক ইন্সট্রুমেন্টটি ছিলো একটি গিটার।লেননের জীবনের প্রথম গিটার কিনে দিয়েছিলেন তার মা জুলিয়া।
জুলিয়া জনকে একটা জিন্স প্যান্ট কিনে দিয়েছিলেন। সেই প্যান্টের ওপর জুলিয়ার দেওয়া স্যুট পরতেন, তারপর কাছাকাছি বাস-স্টপে এসেই স্যুটটা খুলে নিতেন। স্যুট পরার এই আভিজাত্য জনের একেবারেই পছন্দ ছিল না। তিনি ভালবাসেন গান গাইতে। কোনো শিক্ষকের কাছে তার প্রাতিষ্ঠানিক গান শেখা হয়নি। জন মাউথ অর্গান বাজাতে পারতেন অসাধারণ। প্রতি বছর গ্রীষ্মের ছুটিতে তিনি এডিনবরাতে তার মাসির বাড়ি যেতেন। তখন লিভারপুল থেকে এডিনবরা গোটা রাস্তা তিনি বাসের জানালার ধারে বসে মনের আনন্দে মাউথ অর্গান বাজাতেন।
ছোট বয়স থেকে আঁকাআঁকিতে ঝোঁক ছিল জনের। স্কুলের শিক্ষকরাও তার আর্ট দেখে মুগ্ধ বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকতেন। আর তাই সতেরো বছর বয়সে লিভারপুল আর্ট কলেজে ভর্তি হতে দু’বার চিন্তা করেননি জন। তখন তিনি এলভিস প্রিসলের গানের ভক্ত। বন্ধুদের নিয়ে একটা গানের দল খুলেছেন, ম্যাথু স্ট্রিটের ক্যাভার্ন ক্লাবে তখন জন আর তার বন্ধুরা গান করতেন।
কিন্তু এই সময়েই জনের জীবনে ঘটলো এক মর্মান্তিক ঘটনা। এক পুলিশ অফিসারের গাড়ি পথচলতি জুলিয়াকে আচমকা ধাক্কা মারলো। মাত্র ১৮ বছর বয়সে মাতৃহারা হন জন। এই দুঃসহ পরিস্থিতিতে গানকেই বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন করে নিলেন তিনি। সাথে ছিল তার দুই অন্তরের বন্ধু পল ম্যাককার্টনি আর জর্জ হ্যারিসন। তারাও লিভারপুলের ছেলে। জন পড়তেন কেয়ার ব্যাক স্কুলে, অন্য দুজন লিভারপুল ইনস্টিটিউটে।
জর্জ গিটার বাজান, পল আর জন দুজন মিলে গান লেখেন। ড্রাম বাজায় জনি হাচ বলে আর একটি ছেলে। কয়েক মাসের মধ্যে এই চারজন কিশোর তৈরি করল এক গানের দল, নাম ‘কোয়ারিম্যান’; লেনন, ম্যাককার্টনি আর জর্জ হ্যারিসনের তৈরি প্রথম গ্রুপ।
দু’বছর পর এই কোয়ারিম্যান দল গান গাইতে গেল জার্মানির হ্যামবুর্গে। ততদিনে ড্রামার হিসেবে হ্যাচ আর নেই, দলে এসেছে রিঙ্গো স্টার নামের এক তরুণ। সময়ের সাথে সাথে কোয়ারিম্যান নামটাও পালটে গেছে। ১৯৬০ সালেই কোয়ারিম্যান নাম বদলে দলের নাম রাখা হলো ‘বিটলস্’।
হ্যামবুর্গের সফলতার পরে আর তাদেরকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ক্যাভার্ন ক্লাব থেকে শুরু করে বিবিসি রেডিও, পার্লোফোন রেকর্ড, টেলিভিশন- সর্বত্র শুধু বিটলস্ আর বিটলস্। স্কাউজ উচ্চারণে গান গাওয়া লিভারপুলের সেই অদম্য তরুণ। ‘টপ টেন চার্ট’ মানেই বিটলস্।
১৯৬৪ সালেই বিটলস্ মন জয় করে নেয় আমেরিকার শ্রোতাদের। ১৯৬৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছলো বিটলস। জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে ব্যান্ডের সদস্যরা পেলো বিশাল সম্বর্ধনা। দু’দিন পর টিভি শো। ৭৪ মিলিয়ন দর্শক দেখেছিল সেই শো। আমেরিকার সবচেয়ে বেশি বিক্রির রেকর্ড সেবার ‘আই ওয়ান্ট টু হোল্ড ইউর হ্যান্ড’, লেনন-ম্যাককার্টনির অমর সৃষ্টি। হিথ্রো বা ফ্রাঙ্কফুর্ট, সর্বত্র এয়ারপোর্টে এই তরুণদের জন্য দাঁড়িয়ে থাকে কাতারে কাতারে উৎসুক জনতা।
বিটলস্ মানেই লেনন, লেনন মানেই একটা যুগ। সঙ্গীতের সব আগল ভেঙে দিয়েছেন পঁচিশ বছরের এক যুবক। ১৯৬৫ সালের ১২ জুন। তখনও লেননের বয়স পুরোপুরি পঁচিশ হয়নি। মহারানীর তরফ থেকে বিটলসের সদস্যদের দেওয়া হয় এমবিই মেডেল। ভিয়েতনামের যুদ্ধে আমেরিকাকে ব্রিটেনের সমর্থনের প্রতিবাদে চার বছর পরে লেনন তার মেডেল মহারানীকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
যেখানেই যুদ্ধ, দাঙ্গা, বর্ণবিদ্বেষ সেখানেই প্রতিবাদ করেছেন লেনন। প্রতিবাদী তরুণদের তিনিই তখন মুখপাত্র। ছাড়েননি নিজের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য। নিউ ইয়র্কের প্রাসাদোপম বাড়ি ছেড়ে কখনো কখনো বাস করেছেন বিট কবিদের আস্তানা গ্রিনউইচ ভিলেজে। জ্যাক কেরুয়াক, অ্যালেন গিনসবার্গ বা গ্রেগরি করসোর মতো তিনিও তখন কবিতা লিখছেন, তাতে সুর বাঁধছেন।
বিটলসের এই যাত্রাপথ ১৯৭০-এ এসে থেমে যায়। বিটলসের সদস্যদের মধ্যে ব্যক্তিত্বের সংঘাত দেখা দেয়। লেনন নিজের মতো করে কাজ করার লক্ষ্যে বিটলস থেকে বের হয় যাওয়া পর থেকেই এই দলটির ভাঙন শুরু হয়। তার আগে পপুলার মিউজিকের ইতিহাসে সবচেয়ে বাণিজ্য সফল ব্যান্ড হয়ে উঠেছিল বিটলস। সারা ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়াতে তাদের জয়জয়কার। ‘অল ইউ নিড ইজ লাভ’; ‘স্ট্রবেরি ফিল্ডস ফরএভার’ গানগুলো তখন মানুষের মুখে মুখে।
১৯৬২ সালের আগস্ট মাসে সিনথিয়া পাওয়েলের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন জন। ১৯৬৩ সালে তাদের প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। জন তার মায়ের নামে সন্তানের নাম রাখেন জুলিয়ান লেনন। কিন্তু সিনথিয়ার সাথে জনের বিবাহ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ১৯৬৯ সালের ২০ মার্চ জন দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন ধনী জাপানি পরিবারের মেয়ে ওকো ওনো-কে। ওকো ওনো ছিলেন মূলত আভা গার্ড পেইন্টার এবং মানবতাবাদী পলিটিক্যাল অ্যাকটিভিস্ট। তাই লেননের সাথে সম্পর্কে জড়াতে খুব একটা দেরী হয়নি ওকো ওনোর।
সত্তরের দশক জন লেননের এক কর্মমুখর সময়। নিজের সলো অ্যালবাম, সাম্রাজ্যবাদী সরকারের বিরুদ্ধে গণ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়া, ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ- সব জায়গায় ছিলো তার বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর। তার প্রথম সলো এলবাম ‘John Lennon/Plastic Ono Band’ এর একটি গান ‘ইমাজিন’ রোলিং স্টোন ম্যাগাজিন পত্রিকায় সর্বকালে সেরা গানের স্বীকৃতি পায়।
১৯৭৩ সালে ওকো ওনোর সাথে জনের সম্পর্কের ছেদ পড়লে তারা কিছুদিন আলাদাভাবে থাকতে শুরু করেন। ১৯৭৫ এ এসে তারা নিজেদের মধ্যকার দূরত্ব কমিয়ে আনতে সক্ষম হন, আবার একত্রে বসবাস করতে থাকেন। এ সময় জন্ম নেয় তাদের একমাত্র সন্তান সিন লেনন। এ সময় লেনন পরিবার স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে থাকেন। ওয়েস্ট বাহাত্তর নম্বর রাস্তার পাশে ‘ডাকোটা’ নামের রাজপ্রাসাদের মতো বিশাল এক বিলাসবহুল বহুতল বাড়িতে থাকত লেনন পরিবার।
১৯৮০ সালের ৮ ডিসেম্বর। গানের জগতে অভিশপ্ত এক রাত। রাত তখন এগারোটা। পয়েন্ট থার্টি এইট স্মিথ অ্যান্ড ওয়েসন রিভালভারটি পকেটে নিয়ে ড্রাইভওয়ের অন্ধকারে অপেক্ষা করছিল মার্ক চ্যাপম্যান। ড্রাইভওয়ের বুক চিরে দুটো উজ্জল আলো ক্রমশ এগিয়ে আসছে। মার্ক চ্যাপম্যান অস্থির হয়ে উঠল। এই লিমুজিনটা সে ভালভাবেই চেনে।
ডাকোটায় ঢোকার মুখে একটি পাথরের আর্চওয়ে, লিমুজিনটা তার কয়েক হাত আগেই থেমে গেল। তারপরেই গাড়ির দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন লেনন। মাত্র এক হাতের ব্যবধানে রক্তমাংসের সেই জীবন্ত কিংবদন্তী! “জন লেনন!” চ্যাপম্যান ফিস ফিস করে ডাকলেন। পরমুহূর্তেই নিস্তব্ধ সেই ড্রাইভওয়ে কাঁপিয়ে শোনা গেল গুলির আওয়াজ। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে গুলি চালাচ্ছেন চ্যাম্পম্যান। একবার নয়, বারবার। রাত শেষ না হতেই দাবানলের মতো দুঃসংবাদ ছড়িয়ে পড়ল সর্বত্র। আততায়ীর গুলিতে জন লেনন নিহত হয়েছেন।
মার্ক চ্যাপম্যানকে যখন মার্কিন পুলিশ গ্রেফতার করছিল, তখনও তার হাতে ধরা ছিল লেননের এল পি রেকর্ড। সেদিন বিকেলেই চ্যাপম্যান লেননের অটোগ্রাফ চেয়েছিলেন, লেনন তাতে সইও দিয়েছিলেন। ডেইলি মিরর বড় করে হেডলাইন ছাপালো ‘ডেথ অব আ হিরো‘। টাইম পত্রিকা লেননকে বর্ণনা করলো কবি বলে।
নিয় ইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কে বেরোল ১০,০০০ মানুষের এক মৌন মিছিল। লন্ডনের হাউড পার্ক, ট্রাফালগার স্কোয়ার সর্বত্র বেজেছে ‘গিভ পিস আ চান্স’। বরফ ঝরা সেই শীতের রাতে টরন্টো শহরে লেননের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ৩৫,০০০ যুবক-যুবতী মোমবাতি জ্বালালেন।
শরীরের মৃত্যু ঘটলেও এই সঙ্গীত প্রতিভার আজও মৃত্যু ঘটেনি। পৃথিবীকে আজও জন লেনন মাতিয়ে রেখেছেন তার সুরের মূর্চ্ছনায়। কারণ জন লেনন মানেই একটা যুগ, বিটলস এর স্বর্ণযুগ। লেনন, ম্যাককার্টনি, জর্জ হ্যারিসন আর রিঙ্গো স্টার এর সেই যুগ। বিটলস এর সেই যুগ। গানের সুরে ভেসে যাওয়ার সেই দিন।
ফিচার ইমেজ- fanpop.com