“একই ধরনের চরিত্র নির্লিপ্তভাবে বাছাই করার সময় শেষ। এখনই সময়! আপনি যা খুশি সে চরিত্রে অভিনয় করতে পারবেন। যে কেউই নিজের ইচ্ছামত যেকোনো চরিত্রে অভিনয় করতে পারবে!”
– অ্যান্ডি সার্কিস
সময়ের পরিক্রমায় প্রযুক্তির সাথে সমানতালে এগিয়ে চলেছে সিনেমা তৈরির ধারণাগুলোও। উন্নতির সোপানে চড়ে ছোটবেলায় পড়া দ্য জাঙ্গল বুক অথবা টিভিতে দেখানো ডিজনির বিউটি এন্ড দ্য বিস্ট এখন রূপ নিয়েছে মোশন ছবিতে! বিশেষ উপায়ে এসব চলচ্চিত্র নির্মাণ করা মোশন ক্যাপচারের মাধ্যমে।
নিশ্চয়ই ভাবছেন, মোশন ক্যাপচার আসলে কী? কোনো বস্তু বা মানুষকে বিশেষভাবে ক্যামেরায় ধারণ করে, সেটি দুই কিংবা তিন মাত্রার অ্যানিমেশনে রূপান্তর করার নামই মোশন ক্যাপচার। সিনেমার এই প্রযুক্তি বর্তমানে এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, যেকোনো অভিনেতার পারফরম্যান্স বিশেষভাবে ধারণ করে, পরবর্তীতে বিশেষ জীবন্ত এক রূপ দেয়া যায়। আর অভিনেতার অভিনয়কে ডিজিটাল রূপ দেয়াকে বলা হয় পারফরম্যান্স ক্যাপচার।
আর আমাদের আজকের লেখার অবতারণা যাকে নিয়ে, সেই অভিনেতা পারফরম্যান্স ক্যাপচারের বিষয়টাকে নিয়ে গেছেন ভিন্ন এক উচ্চতায়। তাকে ডাকা হয় গডফাদার বা কিং অফ দ্য মোশন ক্যাপচার নামে! পুরো নাম, অ্যান্ড্রু ক্লেমেন্ট সার্কিস, তবে তিনি অ্যান্ডি সার্কিস হিসেবেই আমাদের কাছে পরিচিত। তিনি একাধারে একজন ব্রিটিশ অভিনেতা, পরিচালক এবং চিত্রনাট্যকার। কষ্টের কথা হলো, তার অভিনয় করা বেশ কিছু দর্শকপ্রিয় চরিত্রের নেপথ্যে তার অবদানের কথা অনেকেরই অজানা।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি থিয়েটারের সাথে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন সেখানে কাজ করার ফলে মেথড অভিনয়ের কলা-কৌশল খুব ভালোভাবেই নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসেন। ১৯৯৯ সনের দিকে তিনি টিভি মুভি, থিয়েটার নিয়মিত কাজ করা শুরু করেন। এর কিছুদিনের মধ্যেই হঠাৎ একদিন তার এজেন্ট তাকে ফোন দিয়ে জানতে চান যে, লর্ড অফ দ্য রিংস নামে একটা মুভি হচ্ছে আর তাতে গলাম নামে এক চরিত্রে তিনি অভিনয় করতে পারবেন কি না।
অ্যান্ডি সার্কিস লর্ড অফ দ্য রিংসের ভক্ত ছিলেন সেই ছোটবেলা থেকে। প্রথম কথাতেই রাজি হয়ে গেলেও, তিনি চিন্তায় পড়ে যান তার চরিত্রটি নিয়ে। কারণ, এই চরিত্রকে পরিপূর্ণতা দেয়া চাট্টিখানি কথা নয়, এজন্য প্রয়োজন ভিন্ন কণ্ঠস্বর, অঙ্গভঙ্গি কিংবা চালচলন। মজার ব্যাপার হলো, সেসব চিন্তা করতে করতেই তার চোখ যায় বিড়ালের দিকে। তিনি লক্ষ্য করলেন, তার বিড়ালটি নিজের মুখ থেকে উলের বল বের করার সময় বারবার অদ্ভুত এক ধরনের শব্দ করতে থাকে। ব্যাপারটি মনে ধরে যায় তার। শুরুতে সেই শব্দটি নিয়ে আরো অনুশীলন করেন এবং এর দুদিনের মাথায় গলামের কণ্ঠস্বরের ব্যাপারটা গুছিয়ে নেন।
শেষমেশ অডিশনের দিন এলো। পরিচালক পিটার জ্যাকসনের তার ধারণাটি খুব পছন্দ হয়। সাথে সাথেই চরিত্রটি অ্যান্ডিকে দিয়ে করানোর সিদ্ধান্ত নেন। শুরু হয় অ্যান্ডির পারফরম্যান্স ক্যাপচারের জগতে পথচলা।
লর্ড অফ দ্য রিংসে গলামের দুটো সত্ত্বা থাকে। গলামকে এজন্যই নিজের সাথে কথা বলতে দেখা যায়। তার অন্য সত্ত্বাটার সাথে কথা বলে সে। এই দুটি চরিত্র করতে গিয়েই দক্ষতার পরিচয় দেন তিনি। ফলে পরিচালক পিটার জ্যাকসনের পছন্দের ব্যক্তিদের কাতারে এসে পড়েন অ্যান্ডি। লর্ড অফ দ্য রিংসের অসংখ্য চরিত্রের মধ্যে এজন্য অ্যান্ডি আরো কিছু ছোটখাট চরিত্রে কন্ঠ দেবার সুযোগ পান।
এই ট্রিলজির জন্য তিনি নিউজিল্যান্ডে যান সিনেমার শুটিংয়ে। তিনটি সিনেমাতে এই চরিত্রটির জন্য প্রায় ২ বছর পরিবার ছাড়া নিউজিল্যান্ডে ছিলেন তিনি। তখনো এই প্রযুক্তি এতটা সহজলভ্য আর অগ্রসর ছিলো না। মোশন ক্যাপচার ব্যাপারটিই তখন নতুন এসেছিল। এজন্যই মোশন ক্যাপচার সম্পূর্ণভাবে ধারণ করতে কয়েকবার বেশ কয়েকভাবে শট নেয়া লাগতো।
লর্ড অফ দ্য রিংস ট্রিলজির বিশাল সাফল্যের পর অ্যান্ডিও ধীরে ধীরে মানুষের কাছে পরিচিতি পেতে লাগলেন। তিনি আবার সাধারণ চরিত্রগুলো করা শুরু করলেন। তিনি ভাবেনওনি যে, আবার তাকে পারফরম্যান্স ক্যাপচারের জগতে ফিরে যেতে হবে।
কিন্তু লর্ড অফ দ্য রিংসের পরিচালক পিটার জ্যাকসনের যে তাকে মনে ধরে গিয়েছিল! অ্যান্ডিকে তিনি তার পরবর্তী সিনেমা কিং কং এ অভিনয় করার প্রস্তাব দিলেন কিং কং চরিত্রটি করার জন্য।
অ্যান্ডি ভাবলেন, ভালোই তো! ৩ ফুট গলাম থেকে ২৫ ফিট গরিলার চরিত্র করতে হবে! কী মনে করে তিনি রাজি হয়ে গেলেন, চরিত্রটিতে তিনিই অভিনয় করবেন। ২০০৫ সালে কিং কং যখন মুক্তি পেলো, চারিদিকে সাড়া ফেলে দিলেন অ্যান্ডি সার্কিস। একটি গরিলা কীভাবে হাঁটে, কীভাবে তার অনুভূতি প্রকাশ করে সবকিছু দর্শকদের কাছে একদম নতুন লাগলো। এমন কেউ তো করেনি আগে!
তিনি চরিত্রটি ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য শ্রম দেন অনেক। গরিলাদের মতো হাঁটাচলা, ওদের আবেগ প্রকাশ করার ধরন- এসব শিখতে প্রচুর সময় ব্যয় করেন। তিনি এক সাক্ষাতকারে বলেন, গরিলাদের নিয়ে সকল ফিচার দেখেছিলেন তখন। দিনের পর দিন লন্ডন চিড়িয়াখানাতে গিয়ে বসে থাকতেন। গরিলাদের চলাফেরা দেখতেন। ঐখানে একটা ছেলে গরিলার সাথে তার খুব ভাবও হয়ে যায়।
এত এত পরিশ্রমের ফলে কিং কং চরিত্রটি খুবই ভালো হয়। কিং কং মুভিতে তিনি ২টি চরিত্র করেন- কিং কং আর লাম্পি দ্য কুক।
কিং কং এ অসাধারণ অভিনয়ের জন্য ২টি অ্যাওয়ার্ড জেতেন তিনি: Toronto Film Critics Association Award (2005) এবং Visual Effects Society Award (2006) for Outstanding Animated Character in a Live Action Motion Picture। এরপর তিনি আবারও সাধারণ ভূমিকা করতে লাগলেন, সাথে তার লেখালেখিও চালু থাকলো। বেশ সফলও হচ্ছিলেন অন্যান্য চরিত্রে।
২০০৯ এর দিকে আবারও তিনি পারফরম্যান্স অ্যাক্টিংয়ের একটি অফার পান স্টিভেন স্পিলবার্গের সিনেমাতে। স্পিলবার্গের চিন্তাভাবনা ছিলো টিনটিন কমিক্সের উপরে একটি ট্রিলজি তৈরি করবেন, যার প্রথম সিনেমা হবে দ্য এডভেঞ্চার অফ টিনটিন, এই ছবিতে অ্যান্ডি সার্কিস ক্যাপ্টেন হ্যাডকের চরিত্রটি করেন। ২০০৯ সালে সিনেমাটির শুটিং হয় এবং ২০১১ সালে মুক্তি পায়। এই চরিত্রটিও ভক্তদের অনেক পছন্দ হয়।
২০১১ সালে তিনি আর প্রযোজক জোনাথন ক্যাভেন্ডিস একটি মোশন ক্যাপচার স্টুডিও প্রতিষ্ঠা করেন, যার নাম দ্য ইমাজিনিরিয়াম স্টুডিও। বিভিন্ন গেমস, সিনেমাতে মোশন ক্যাপচারের কাজ করে থাকে এই স্টুডিও। তারা অল্প সময়ের মধ্যে বেশ কিছু বড় বাজেটের কাজ করে ফেলে। যেখানে Rise of the Planet of the Apes (2011), Avengers: Age of Ultron (2015), Star Wars: Episode VII – The Force Awakens এর মতো ছবিও রয়েছে।
অ্যান্ডি ২০১১ সালে রাইজ অফ দ্য প্ল্যানেট অফ দ্য এপস ছবিতে সিজার নামে একটি জিনগতভাবে উন্নত এপের চরিত্র করেন। এই চরিত্রটি তার ফিল্ম ক্যারিয়ারের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। গরিলাদের নিয়ে আগের জ্ঞান এবং এপরা কীভাবে নিজেদের সাথে ভাব আদানপ্রদান করে, এপদের হাঁটার ধরনসহ আরো বেশ কিছু জিনিস নিয়ে নতুন পড়াশোনা আর তার মেধার ফল হচ্ছে সিজার চরিত্রটি। সিনেমাটি মুক্তি পাবার পর ব্লকব্লাস্টার হিট হয়।
প্ল্যানেট অফ দ্য এপস সিরিযে প্রাথমিকভাবে তিনটি সিনেমা রাখার কথা ভাবে টোয়েন্টিথ সেঞ্চুরি ফক্স স্টুডিও। এই ট্রিলজিতে অ্যান্ডি সার্কিস অসাধারণ অভিনয় করেন, যা সমালোচকদেরও নজর কাড়তে বাধ্য করে। তিনটি সিনেমার প্রতিটিতে তিনি নিজেকে আগেরবার থেকে ছাড়িয়ে যাবার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করেন। যার কারণে সিরিজটি দর্শকপ্রিয়তা পায় অনেক।
২য় সিনেমায় সিজারের চরিত্রে একটি নতুন দিক থাকে। জিনগতভাবে অনেক উন্নত থাকায় এপটি এই মুভিতে কথা বলতে পারে। তিনি এই ব্যাপারটি নিয়েও আলাদা করে ভেবেছেন।
একটি জেনেটিকভাবে উন্নত এপ কথা বলতে পারলে তা কীরকম শোনাবে তা নিয়ে অনেক পরীক্ষা করেছেন। ম্যাট রিভসের পরিচালনায় ২য় মুভি ডন অফ দ্য প্ল্যানেট অফ দ্য এপস (২০১৪)-ও ব্যবসাসফল হয়।
২৩৫ মিলিয়নের বাজেটের এই সিনেমাটি বক্স অফিসে ৭১১ মিলিয়ন ইউএস ডলার আয় করে।
২০১৭ সালে সিরিজের তৃতীয় মুভি ম্যাট রিভসের পরিচালনায় ওয়ার ফর দ্য প্ল্যানেট অফ দ্য এপস বের হলো, যা আগের সিনেমাগুলো থেকে আরো জীবন্ত, আরো আবেগপ্রবণ।
১৫০ মিলিয়ন ডলার বাজেটের এই সিনেমাটি বক্স অফিসে ৪৯১ মিলিয়ন ডলার আয় করে নিতে সক্ষম হয়। এই সিনেমার মাধ্যমেই সিজারের তিন সিনেমাব্যাপী কাহিনীর শেষ দেখা যায়।
এই মুভিটি সমালোচকদের কাছ থেকে ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছে। এই তিনটি সিনেমাতে অভিনয় করে তিনি নিজের মোশন পিকচার টেকনোলজিতে কাজ করার ক্ষমতাকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন।
২০১২ সালে পিটার জ্যাকসনের করা দ্য হবিটের প্রথম দুটি মুভিতে দর্শকপ্রিয় গলাম চরিত্রে আবার ফিরে আসেন তিনি।
লর্ড অফ দ্য রিংসের জনপ্রিয়তার কারণে এই সিরিজটিও তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে, যা ছবিগুলোর বক্স অফিস নাম্বার দেখলেই বোঝা যায়।
আবার ২০১৫ সালে অ্যান্ডি সার্কিস আরেকটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি স্টার ওয়ার্স এর সাথে কাজ করেন। Star Wars: Episode VII – The Force Awakens(2015) এ তিনি সুপ্রিম লিডার স্নোকের চরিত্রে অভিনয় করেন।
এই সিনেমাটি এতটাই জনপ্রিয় হয় যে সর্বকালের সেরা আয় করা সেরা তিনটি সিনেমার ছোট তালিকায় জায়গা করে নেয়। ২৫৮ মিলিয়ন ডলার বাজেটের এই সিনেমা সর্বমোট ২.০৬৮ বিলিয়ন ডলার আয় করে বক্স অফিস থেকে!
Star Wars : Episode VIII – The Last Jedi (2017)-তেও তিনি একই চরিত্রে অভিনয় করেছেন। লাস্ট জেডাই সিনেমাতে সুপ্রিম লিডার স্নোকের ভরাট কণ্ঠের সাথে তার অতুলনীয় অভিনয়ে দর্শকদের মন জয় করে নেন অ্যান্ডি সার্কিস।
এরপর তিনি প্রথম পূর্ণাঙ্গ সিনেমা পরিচালনা করলেন, যার নাম Breath (2017)। এই সিনেমাতেও সমালোচকদের মন জয় করে নেন পরিচালনার দিক দিয়ে নতুন অ্যান্ডি সার্কিস। অ্যান্ডি আরো একটি সিনেমা পরিচালনা করেছেন, যা গত বছর নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে তার স্টুডিও থেকে, নাম Mowgli। এই সিনেমাটি সম্পূর্ণ মোশন ক্যাপচারের সাহায্যে করা হয়েছে।
পরিচালক হিসেবে তিনি অন্যান্য অভিনেতাদেরও সেরাটা বের করে আনার চেষ্টা করেন। ক্রিশ্চিয়ান বেল, বেনডিক্ট কাম্বারব্যাচদের মতো অভিনেতা দেরও তিনি গুরু হিসেবে কাজ করেন মোশন ক্যাপচারের ক্ষেত্রে। এজন্যই অ্যান্ডি সার্কিসকে পারফর্মেন্স ক্যাপচারের রাজকুমার বলা হয়। অন্যান্য অভিনেতাদেরও মোশন ক্যাপচারের অসাধারণ দুনিয়ায় পথপদর্শক হিসেবে কাজ করেন সার্কিস।
এক সাক্ষাতকারে অ্যান্ডিকে জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনার অনেক ভক্তের বিশ্বাস যে, আপনি অস্কার পাওয়ার যোগ্য, তো এতসব ভালো ভালো পারফরম্যান্স অ্যাক্টিংয়ের জন্য কি একটা অস্কার ক্যাটাগরি থাকা উচিত কি না! অ্যান্ডি সার্কিস উত্তর দেন, “আসলে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির অনেক পরিবর্তন হয়েছে আগের থেকে। কিছুদিন আগেও অনেকে মনে করতো এই মোশন ক্যাপচারের কাজগুলো শুধু ভয়েস, বাকি যা মুভমেন্ট সব কম্পিউটারে তৈরি করা হয়! এখনো অনেকে এটাই মনে করে। পারফরম্যান্স ক্যাপচারটা আপনার কাছে কী? আপনারই অভিনয়, যার উপর একটা ডিজিটাল মেক আপ থাকে। তো ডিজিটাল মেক আপ থাকা মানে তো এই না যে আপনার করা চরিত্রটির পারফর্মেন্স, মুভমেন্ট, ইমোশন সব কৃত্রিম! না, সব একজন অভিনেতার নিজের করা। সামনে হয়তো কোনো একদিন আসবে একাডেমি অ্যাওয়ার্ডেও এরকম কোনো ক্যাটাগরি থাকবে।”
এতগুলো মোশন ক্যাপচার চরিত্র এত সুন্দর আর সহজভাবে নিজের গন্ডির করে নেয়ার মতো কাজ আর কোনো অভিনেতা করে দেখাতে পারেননি। সবার কাছ থেকে দ্য গডফাদার অফ মোশন পিকচার নামটা এভাবেই পেয়েছেন অ্যান্ডি সার্কিস।