Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

আর্নেস্ট রাদারফোর্ড এবং পারমাণবিক রসায়নের গতিপথ পাল্টে দেওয়া স্বর্ণপাত পরীক্ষা

“আমি রাদারফোর্ডের মতো উদ্যোগী এবং মৌলিক গবেষণার জন্য আগ্রহী, দ্বিতীয় কাউকে দেখিনি!”

– জে.জে থমসন

২৪ বছর বয়সী আর্নেস্ট রাদারফোর্ড, ১৮৯৫ সালে ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজ পৌঁছেন বিখ্যাত পদার্থবিদ জে. জে থমসনের ল্যাবরেটরিতে কাজ করতে। পি.এইচডি ডিগ্রির জন্য থমসনের সাথে গবেষণা চালানোর পাশাপাশি তিনি বেতার তরঙ্গের গ্রাহক যন্ত্র (যা পরবর্তীতে রেডিও নামে পরিচিত হয়) তৈরির কাজ শুরু করেন। সে সময়টাতে আরো অনেকেই গ্রাহক যন্ত্র তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন। এরই মাঝে রাদারফোর্ড বিশ্বকে তাক লাগিয়ে, আধা মাইল পর্যন্ত দূরত্বে বেতার তরঙ্গ ধরতে সক্ষম এক গ্রাহক যন্ত্র তৈরি করে ফেলেন। তবে তার এই সাফল্যের মাত্র কয়েক মাসের মাথায়ই, রেডিও সংক্রান্ত সবটুকু আলো নিজের দিকে টেনে নেন গুগলিয়েলমো মার্কনি। আর রেডিও তৈরির প্রতিযোগিতা থেকে আরো অনেকের মতোই ছিটকে পড়েন রাদারফোর্ড।

রাদারফোর্ডের গ্রাহক যন্ত্র; source: huntsearch.gla.ac.uk

রেডিও তৈরির প্রতিযোগিতায় হারের ক্ষতটা দগদগে থাকতেই নিজের গবেষণায় পূর্ণ মনোযোগ দেন রাদারফোর্ড। থমসনের সাথে গবেষণা শেষ করেছিলেন ১৮৯৬ সালের মাঝামাঝি নাগাদ। থমসন এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অন্যান্য গবেষকগণ, সকলেই বিস্ময়াভিভূত হয়েছিলেন তার অসাধারণ এক গবেষণায়। এই গবেষণার জন্য ভূয়সী প্রশংসার পাশাপাশি মন্ট্রিয়লের ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হবারও সুযোগ হয়েছিল তার। তবে, জীবনে প্রথমবারের মতো আবিষ্কারের নেশায় মত্ত হয়ে হেরে যাওয়ার কষ্ট ভোলানোর জন্য তো আরো বড় কিছু করা চাই। কী করা যায়?

১৮৯৮ সালে ইউরেনিয়ামের বিকিরণ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন রাদারফোর্ড। সিদ্ধান্ত নিলেন, তেজস্ক্রিয়তা নিয়েই মৌলিক কাজ করবেন। যেই ভাবা সেই কাজ। ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারই হয়ে গেল তার ঘর। ক্লাস থেকে গবেষণাগার, গবেষণাগার থেকে ক্লাস, এই রুটিনেই কাটতে থাকে তার দিনকাল। আর এভাবে পরিশ্রম করলে, সাফল্য কি না ধরা দিয়ে পারে?

রাদারফোর্ডের আলফা বিটা রশ্মি পার্থক্যকরণ পরীক্ষা; source: slideplayer.com

১৮৯৮ সালেরই শেষ নাগাদ, ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয় বিকিরণে দুটি ভিন্ন রশ্মি লক্ষ্য করেন রাদারফোর্ড। বিভিন্ন উপায়ে পর্যবেক্ষণ করে রশ্মি দুটির কিছু মৌলিক পার্থক্য নির্ণয় করে তিনি এদের নাম দেন আলফা এবং বিটা রশ্মি। প্রথমে একাধিক পাতলা ধাতুর পাতের মধ্য দিয়ে ইউরেনিয়ামের বিকিরণ চালিত করেন তিনি। এতে দেখা যায়, বিটা রশ্মির ভেদন ক্ষমতা আলফা রশ্মির চেয়ে বেশি। আবার চৌম্বকক্ষেত্রে এদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় যে, আলফা রশ্মি ধনাত্মক চার্জবিশিষ্ট আর বিটা রশ্মি ঋণাত্মক। অন্যদিকে চার্জের বিপরীতে ভরের অনুপাত হিসাব করে দেখা যায়, আলফা রশ্মি মূলত ২+ চার্জবিশিষ্ট হিলিয়াম পরমাণু। সহজ ভাষায় বললে, হিলিয়াম পরমাণুর নিউক্লিয়াসে দুটি নিউট্রন এবং দুটি প্রোটন থাকে, আর নিউক্লিয়াসের বাইরে দুটি ইলেকট্রন আবর্তন করে। আর একটি আলফা রশ্মি হচ্ছে কেবল একটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস, যার চারদিকে আবর্তনকারী ইলেকট্রনদ্বয় থাকে না। আর এজন্যই এটি ধনাত্মক চার্জবিশিষ্ট হয়। তবে তখনও নিউক্লিয়াস আবিষ্কৃত না হওয়ায় এই ব্যাপারটি পুরোপুরি নিশ্চিত করতে পারেননি রাদারফোর্ড। তার এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের দু’বছর পর, পল ভিলার্ড গামা রশ্মি আবিষ্কার করেছিলেন।

“আমি শেষ পর্যন্ত তার (রাদারফোর্ডের) সাথে কাজ করা ছেড়ে দিলাম। তার সাথে দু’বছর কাজ করে আমি ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন এবং পরিশ্রমী সময় ছিল সেটা!” –

১৯২১ সালে রসায়নে নোবেল জয়ী বিজ্ঞানী ফ্রেডরিখ সোডি

আলফা ও বিটা রশ্মি নিয়ে আরো বিস্তর গবেষণা চালিয়ে যান আর্নেস্ট রাদারফোর্ড। আর তার সাথে সহযোগী হিসেবে যোগ দেন সোডি। কিন্তু রাদারফোর্ডের অমানুষিক পরিশ্রমের সাথে তাল মেলাতে না পেরে, মাঝপথে গবেষণা থামিয়ে দিয়েছিলেন সোডি! তবে রাদারফোর্ড ছিলেন অবিচল। গবেষণা করতে গিয়ে তিনি আলফা কণা বিষয়ক তিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করে ফেলেন।

আলফা কণা; source: slideplayer.com

  • আলফা কণা একটি পারমাণবিক কণা।
  • যেহেতু পরমাণুর ভাঙনেই আলফা কণার সৃষ্টি হয়, তাই পরমাণু অবিনাশী, এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়।
  • যখন কোনো বড় পরমাণু আলফা রশ্মি নির্গত করে, তখন এদের আকৃতি হ্রাস পায়। এই ঘটনা থেকে সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থ বিকিরণ করতে করতে, ভিন্ন পদার্থে পরিণত হয়।

১৯০৭ সালে রাদারফোর্ড আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেন। তিনি ইউরেনিয়াম নিয়ে গবেষণা করে তেজস্ক্রিয় পদার্থের অর্ধায়ু (হাফ লাইফ) আবিষ্কার করেন। কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থের অর্ধেক পরমাণু ক্ষয় হতে যে সময় লাগে, তাকে এর অর্ধায়ু বলে। এই আবিষ্কারের এক বছর পর, ১৯০৮ সালে, রাদারফোর্ড রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিয়ে গবেষণার জন্য তাকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়; source: englishuknorth.com

১৮৯৮-১৯০৭ সাল পর্যন্ত, ৯ বছর ম্যাকগিলে শিক্ষকতা এবং গবেষণা করেন আর্নেস্ট রাদারফোর্ড। এ সময়ের গবেষণাই তাকে এনে দিয়েছিল নোবেল পুরস্কার। ১৯০৮ সালে তিনি চলে আসেন ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত হন। ম্যানচেস্টারে শুরু হয় তার গবেষণা জীবনের দ্বিতীয় পর্ব। ম্যানচেস্টারে তিনি পৃথিবীর ‘রেডিওম্যাট্রিক’ বয়স নির্ণয় নিয়ে গবেষণা আরম্ভ করেন। রাদারফোর্ড অনুধাবন করতে পারেন যে, পৃথিবীতে উপস্থিত হিলিয়ামের অধিকাংশই আসে তেজস্ক্রিয় পদার্থের ক্ষয় থেকে।

এদিকে, তার এই গবেষণা শুরুর কয়েক বছর আগেই পৃথিবীর বয়স সম্পর্কিত একটি তত্ত্ব দিয়েছিলেন লর্ড কেলভিন। তিনি বলেন যে, পৃথিবীর বয়স ৪০০ মিলিয়ন বছরের বেশি হবে না। কারণ, পৃথিবী এখনো আগ্নেয়ভাবে সক্রিয় আছে। আর তার ব্যাখ্যা হচ্ছে, পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ এই উত্তপ্ত অবস্থা আরো অধিক পুরনো হতে হলে, পৃথিবীতে অতিরিক্ত শক্তি যোগানের জন্য কোনো নতুন শক্তির উৎসের প্রয়োজন। কেলভিনের এই সীমাবদ্ধতা দূর করেন রাদারফোর্ড। তিনি পদার্থের তেজস্ক্রিয় ক্ষয়কেই অতিরিক্ত শক্তির উৎস হিসেবে অভিহিত করেন। আর এর মধ্য দিয়ে তিনি পাথরের বয়স নির্ণয়ের পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। পাথরের মধ্যে উপস্থিত হিলিয়ামের পরিমাণ নির্ণয় করে রেডিওমেট্রিক পদ্ধতিতে বয়স নির্ণয় করা হয়।

রাদারফোর্ডের স্বর্ণপাত পরীক্ষা; source: socratic.org

রাদার্ফোর্ডের বিখ্যাত স্বর্ণপাত পরীক্ষার কথা কে না জানে! ১৯০৯ সালে ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে তার দুই ছাত্র হ্যানস গিগার ও আর্নেস্ট মার্সডেনের সহায়তায় এই প্রসিদ্ধ পরীক্ষাটি চালান রাদারফোর্ড। এই পরীক্ষাটি তিনি করেছিলেন আলফা কণার বিচ্যুতি সংক্রান্ত বিভ্রান্তি দূর করতে। তার গবেষণাগারে একটি নতুন ডিটেক্টর স্থাপন করার পর, তিনি রেডিয়ামের তেজস্ক্রিয় বিকিরণ নির্ণয়ের জন্য আলফা রশ্মি নির্গত করেন। দেখা গেল যে, প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম পরিমাণ আলফা রশ্মি ডিটেক্টর পর্যন্ত পৌঁছেছে। অথচ ডিটেক্টর এবং রেডিয়াম নমুনার মাঝে কোনো প্রতিবন্ধক ছিল না (বাতাস ছাড়া)।

কম পরিমাণ আলফা কণা ডিটেক্টরে পৌঁছানোয় তিনি স্পষ্টত অনুমান করেন যে, কিছু পরিমাণ আলফা কণা নিশ্চিতভাবে বিচ্যুত হয়েছে। তার ছাত্র গিগার এবং মার্সডেনকে তিনি একটি অত্যন্ত পাতলা স্বর্ণপাতের মধ্য দিয়ে আলফা কণা চালিত করে পর্যবেক্ষণ করার নির্দেশনা দেন। গিগার এবং মার্সডেন একটি পাতলা স্বর্ণপাতের মধ্য দিয়ে রেডিয়াম থেকে কৃত্রিম আলফা কণার প্রবাহ তৈরি করেন। আর স্বর্ণপাত ভেদ করে আলফা কণাগুলো কোথায় যায়, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেকর্ড করার ব্যবস্থা করা হয়। পরীক্ষার ফলাফল ছিল চমকপ্রদ এবং পরমাণু সংক্রান্ত ভবিষ্যৎ গবেষণার জন্য বৈপ্লবিক।

রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল; source: byjus.com

আলফা কণা চালিত করার পর দেখা গেল যে, অধিকাংশ আলফা কণাই স্বর্ণপাত ভেদ করে সোজা চলে যায়। অল্প পরিমাণ আলফা কণা, গতিপথ থেকে সামান্য বেঁকে যায়। আর কিছু কণা স্বর্ণপাত ভেদই করে না, বরং স্বর্ণপাতে প্রতিফলিত হয়ে পেছনে ফিরে আসে! আলফা কণার এই অস্বাভাবিক আচরণ থেকেই রাদারফোর্ড তার নতুন পরমাণু মডেল তৈরি করেন। আর আবিষ্কার করে ফেলেন পরমাণুর নিউক্লিয়াস। নতুন পরমাণু মডেলে তিনি বলেন যে, পরমাণুর প্রায় সম্পূর্ণ ভরই এর কেন্দ্রে অত্যন্ত ক্ষুদ্র, পুঞ্জীভূত নিউক্লিয়াসের মধ্যে আবদ্ধ থাকে।

পরীক্ষাটির ব্যাখ্যা এরকম যে, যেহেতু অধিকাংশ আলফা কণাই স্বর্ণপাত ভেদ করে যায়, সেহেতু পরমাণুর অধিকাংশ স্থানই ফাঁকা। আর ফাঁকা বলেই আলফা কণা বিনা বাধায় স্বর্ণপাত ভেদ করে যেতে পারে। অন্যদিকে কিছু পরিমাণ আলফা কণা পরমাণুর ইলেকট্রনের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে গতিপথ থেকে বিচ্যুত হয়। আর সবশেষ, অল্প কিছু আলফা কণা, পরমাণুতে উপস্থিত কোনো ভারি, অত্যন্ত ক্ষুদ্র এবং ঘন ‘কিছু একটা’য় বাধাপ্রাপ্ত হয়ে পেছনে ফিরে আসে। রাদারফোর্ড এই ঘন এবং ক্ষুদ্র ‘কিছু একটা’র নাম দেন নিউক্লিয়াস। স্বর্ণপাত পরীক্ষার দু’বছর পর, ১৯১১ সালে তিনি এই ব্যাখ্যা দেন। ফলে ১৯১১ সালকেই ইতিহাসে পরমাণুর নিউক্লিয়াস আবিষ্কারের বছর হিসেবে গণ্য করা হয়।

রাদারফোর্ডের নিউক্লিয়াস; source: thoughtco.com

এক পদার্থকে অন্য পদার্থে রূপান্তর করা যায়? ১৯১৯ সাল পর্যন্ত উত্তর ছিল না। রাদারফোর্ডের কল্যাণে সে বছর বিশ্ব জানতে পারলো এক অদ্ভুত কথা, এক পদার্থকে অন্য একটি পদার্থে রূপান্তর করে ফেলা সম্ভব! নাইট্রোজেনের পরমাণুর উপর উচ্চগতির আলফা কণা নিক্ষেপ করে তিনি নাইট্রোজেনকে অক্সিজেনে রূপান্তর করেন। এর পরের বছরই আরো একটি বড় সাফল্যের মুখ দেখেন তিনি। ১৯২০ সালে নিউক্লিয়াসে অবস্থিত ধনাত্মক কণা প্রোটন আবিষ্কার করেন। পাশাপাশি, নিউক্লিয়াসে যে প্রোটন ছাড়াও আরো একটি কণা (নিউট্রন) আছে সে ব্যাপারেও ভবিষ্যদ্বাণী করেন। রাদারফোর্ড বলেন,

“নিউক্লিয়াসের মধ্যে কোনো নিরপেক্ষ কণার উপস্থিতি না থাকলে, ধনাত্মক (প্রোটন) কণাগুলো পরস্পরকে বিকর্ষণ করতো এবং নিউক্লিয়াস ভেঙে যেত।”

তেজস্ক্রিয় রসায়নের গতিপথ পাল্টে দেয়া, অমিত প্রতিভার অধিকারী আর্নেস্ট রাদারফোর্ড ১৮৭১ সালের ৩০ আগস্ট, নিউজিল্যান্ডের ব্রাইটওয়াটার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা জেমস রাদারফোর্ড ছিলেন স্কটিশ, আর মা মার্থা ব্রিটিশ। কিন্তু রাদারফোর্ডের জন্মের পূর্বে জেমস নিউজিল্যান্ড চলে গেলে রাদারফোর্ড হন নিউজিল্যান্ডের নাগরিক। শৈশবে রাগবিতে অতি আকর্ষণের জন্য তাকে রাগবি খেলোয়াড় বানানোরই স্বপ্ন দেখতেন তার বাবা জেমস।

নেলসন কলেজে পড়ালেখা শেষ করে রাদারফোর্ড ভর্তি হন ক্রাইস্টচার্চের ক্যান্টারবুরি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৮৯৩ সালে গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৮৯৫ সালে স্নাতকোত্তর শেষ করেন এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য স্কলারশীপ লাভ করেন। ১৯০০ সালে রাদারফোর্ড জর্জিনা নিউটনকে বিয়ে করেন। তাদের একমাত্র সন্তান এলিনের জন্ম হয় ১৯০১ সালে।

আর্নেস্ট রাদারফোর্ড (১৮৭১-১৯৩৭); source: Bio.com

প্রতিভাধর এই বিজ্ঞানীকে জীবনে কখনোই আর্থিক সংকটের মুখে পড়তে হয়নি। কিন্তু সাদামাটা জীবনধারা এবং অনাড়ম্বর পোশাক পরিচ্ছদের জন্য তার সুখ্যাতি আছে। এ ব্যাপারে একটি মজার ঘটনাও রয়েছে। একবার রাদারফোর্ড তার কোনো এক সহকারী বিজ্ঞানীর বাড়িতে পার্টিতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। তার পোশাক দেখে দারোয়ান তাকে গেট দিয়ে ঢুকতে বাধা দিয়ে বলে, “এই পার্টি কৃষকদের জন্য নয়!”

যদিও রাদারফোর্ড নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন তেজস্ক্রিয় রসায়ন সংক্রান্ত গবেষণার জন্য। তবে আক্ষরিক অর্থে তার জীবনের শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার ছিল পরমাণুর নিউক্লিয়াস আবিষ্কার। এই আবিষ্কারের সূত্রেই ১৯১৪ সালে তিনি নাইট খেতাবে ভূষিত হন। ১৯৩৭ সালের ১৯ অক্টোবর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রাদারফোর্ড। ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে, নিউটন, ডারউইন আর কেলভিনের মতো বিজ্ঞানীদের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

ফিচার ছবি: Team Roar (Edited)

Related Articles