আমি শুনেছি তোমরা নাকি এখনো স্বপ্ন দেখো
এখনো গল্প লেখো গান গাও প্রাণ ভরে
মানুষের বাঁচা মরা এখনো ভাবিয়ে তোলে
তোমাদের ভালোবাসা এখনো গোলাপে ফোটে
আস্থা হারানো এই মন নিয়ে আমি আজ
তোমাদের কাছে এসে দু হাত পেতেছি
আমি দুচোখের গহ্বরে শূন্যতা দেখি শুধু
রাত ঘুমে আমি কোনো স্বপ্ন দেখি না
তাই স্বপ্ন দেখব বলে
আমি দুচোখ পেতেছি
তাই তোমাদের কাছে এসে আমি দু হাত পেতেছি
তাই স্বপ্ন দেখব বলে আমি দুচোখ মেলেছি
গানটি যারা শুনেছেন তারা জানেন, কী তীব্র এক বিষাদ, বেদনা ও একাকিত্ব লেপ্টে আছে এই গানের প্রতিটি শব্দে, প্রতিটি সুরে, প্রতি ঝংকারে। এমনই একটি গান, যা শ্রোতার মনে তীব্র হাহাকার সৃষ্টি করে, হৃদয়ের গভীরে ঘামটি মেরে থাকা কষ্টের ঝাঁপি খুলে দেয়। এমনই একটি গান, যা মনে প্রবল আকুতির জন্ম দেয়, যাবতীয় মানবিক অভিমানকে পেছনে ফেলে নতুনের কাছে হাত পাতার কথা বলে।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত গানটি আর শুধু দুঃখবোধের খতিয়ান হয়ে থাকে না, হয়ে ওঠে এক স্বপ্নসারথি। গানটি স্বপ্ন দেখতে শেখায়, স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে শেখায়। শূন্যতার কথা বলে শুরু করা একটি গান যে শেষ পর্যন্ত কোনো এক ফাঁকে শ্রোতার মনের ক্যানভাসে পূর্ণতার আঁচড় দিয়ে যেতে পারে, এ গানটি না শুনলে হয়তো বিশ্বাসই হতো না।
তাই তো গানটি শুধু একবার শুনে মন ভরে না। হয়তো কোনো নিশুতি রাতে, চারিদিক যখন নীরব-নিস্তব্ধ, নিজের ভেতরের একাকীত্ব মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে, তখন অনেকেই শান্তি খুঁজে নেয় এই গানে। প্লে-লিস্টে বারবার ঘুরেফিরে বাজতে থাকে এই একটি গান।
একই রকম একাকিত্বের দেখা মেলে ‘এক একটা দিন বড় একা লাগে’ গানটিতেও। বলা যেতে পারে একাকিত্বের প্রকৃত স্বরূপ আরো প্রচ্ছন্নভাবে ফুটে উঠেছে এই গানে। কিন্তু এই গানটি বড় কষ্টের। কারণ শেষে গিয়েও যে কোনো আশার আলো চোখে পড়ে না। দিন গিয়ে রাত আসে, কিন্তু একলা জীবন রয়ে যায় একলাই।
এক একটা রাত বড় একা লাগে
পাশ ফিরে শুলে খাট কঁকিয়ে উঠে
কান পেতে থাকি হাওয়া জেগে ওঠে না
কান পেতে থাকি কেউ জেগে ওঠে না।
সেই অতৃপ্তি অবশ্য ঘুচিয়ে দেয় ‘চিঠি’। সম্পর্কের অবয়বগত দূরত্ব, সময়ের আপনমনে ছুটে চলা, প্রকৃতির স্বনিয়ম প্রবাহমনতা, এই সবকিছু মিলিয়ে বিষণ্ণতা যখন নিমজ্জিত হতে থাকে কষ্টের সাগরে, ঠিক তখনই পাওয়া যায় একটু সুখবর, এক চিলতে স্বস্তি, আর অনেকখানি প্রকৃতিলব্ধ প্রণোদনা।
বলতে ভুলেছি সেই যে গাছটা
আধমরা সেই ফুলের গাছটা
সেই গাছটাতে নতুন কুঁড়িতে
নতুন প্রাণের ছন্দ
বাঁচার সেকি আনন্দ।
এভাবেই মৌসুমি ভৌমিকের প্রতিটি গানেই প্রতিফলিত হয়েছে গভীর জীবনদর্শন। তিনি নিজে জীবনকে দেখেছেন অনেক বেশি তলিয়ে, তাই তার গানের কথার গভীরতাও যেন অতল। এই অতলান্তিক সব অনুভূতিই মৌসুমীকে পৌঁছে দেয় শ্রোতার অন্তরে, যেখানে ঠাঁই পাওয়ার সৌভাগ্য খুব বেশি শিল্পীর হয় না।
তবে নির্দিষ্ট কোনো নিয়মের বেড়াজালে আটকা পড়তে মৌসুমীর বড্ড আপত্তি। কিংবা বলা যায় নিজের সন্তানতুল্য সৃষ্টির প্রতি তিনি একটু বেশিই দখলপ্রবণ। তাই একবাক্যে সেগুলোকে কোনো বিশেষণে বিশেষায়িত করতে চান না। আধুনিক কিংবা জীবনমুখী গান, কিংবা কবিতাও নয়, তিনি চান তাঁর গানগুলো পরিচিতি পাক ‘মৌসুমী ভৌমিকের গান’ হিসেবেই।
মৌসুমীর নিজের পরিচয়ও কিন্তু এক নয়, একাধিক। তিনি একাধারে গীতিকার, শিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক, সংগ্রাহক এবং গবেষক। তিনি যেন গানেরই সাথে বেঁধেছেন তাঁর প্রাণ, সুরের বাঁধনে। এবং এই বাঁধন সত্যি সত্যিই হয়েছে অজানা সাধনে। তাঁর নিজেরই ভাষ্যে, “অজান্তেই গানের সুর কানে ঢুকে গেছে!”
বাংলাদেশের সাথে মৌসুমীর শেকড়ের টান রয়েছে, সে দাবি করা যেতেই পারে। কারণ তাঁর বাবা ও মায়ের পূর্বপুরুষদের বাড়ি যে ছিল অধুনা বাংলাদেশেরই পাবনা ও বরিশালে। তবে সাতচল্লিশে দেশভাগের আগেই তাঁদের পরিবার চাকরিসূত্রে স্থিত হয় ভারতে। মৌসুমীর জন্মও ভারতের জলপাইগুঁড়িত। বেড়ে ওঠা মেঘালয়ের শিলংয়ে।
মৌসুমীর আগে তাঁর পরিবারের অন্য কারো সরাসরি যোগ ছিল না গানের সাথে। তবে সৃজনশীলতার আবহ অবশ্যই ছিল। তাঁর বাবার লেখার হাত ছিল চমৎকার। মা-ও সুন্দর লিখতেন। দিদি ম্যাথমেটিশিয়ান ও বহুভাষাবিদ। তাই তাঁর পরিবারে যে গুণের কদর করা হতো, সে কথা বলাই বাহুল্য।
গানের প্রতি মৌসুমীর ভালোবাসা প্রকৃতিগতভাবেই জন্মেছে। যে স্কুলে তিনি পড়তেন, সেটি ছিল ইংলিশ মিডিয়াম, আর গান ছিল সেখানকার প্রাত্যহিক জীবনেরই একটি অঙ্গ। তাঁরা প্রতিদিন মার্চ করে অ্যাসেম্বলিতে যেতেন। সকালবেলা বাজত পিয়ানো, সুগট। তাই সুরের সাথে তাঁর সখ্য আপনার থেকেই তৈরি হয়ে গেছে। তাছাড়া বছরশেষে স্কুলে কনসার্টও হতো, যেখানে গিটার বাজিয়ে ইংরেজি গান গাইতেন তাঁরা। অনুপ্রেরণা হিসেবে বিটলস, কার্পেন্টার্স, বব ডিলানরা তো ছিলেনই।
গানের প্রতি ভালোবাসা দেখে মৌসুমীর বাবা-মাও প্রচুর অনুপ্রেরণা দিতেন মেয়েকে। গান শিখতে পাঠিয়েছিলেন মাস্টারমশাইদের কাছে। মাস্টারমশাইদের কাছে রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে অতুলপ্রসাদ, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়সহ ক্লাসিক্যাল, সেমি-ক্লাসিক্যাল সব ধরনের গানই টুকটাক শিখেছিলেন তিনি। তাছাড়া প্রতিবছর তাঁদের শহরে একটি গুরুত্বপূর্ণ গানের প্রতিযোগিতা হতো। সেই প্রতিযোগিতা ছিল নিজেকে ঝালিয়ে নেয়ার, যাচাই করে নেয়ার মঞ্চ। পাশাপাশি গানের সাথে জড়িত আরো অনেকের সাথে একটি বার্ষিক মিলনমেলাও। সেখানে ভালো করার বাসনাও বিশেষ উদ্দীপক ছিল মৌসুমীর সঙ্গীতশিক্ষার পেছনে।
আশির দশকের শেষ থেকে মৌসুমীর বৃহৎ পরিসরে আত্মপ্রকাশের সূচনা। সেই সময়টা বাংলা গানের জগতে ছিল এক সঙ্কটকাল। বিশ্বায়নের সুবাদে ইংরেজি-হিন্দি গান সহজলভ্য হয়ে উঠেছে, বিবেচিত হচ্ছে উন্নত রুচির পরিচায়ক হিসেবেও। তাই বাঙালিরা নিজ ভাষার গানকে ভুলে আলিঙ্গন করে নিচ্ছে বিদেশী ভাষার সেসব গান। এমন একটি সময়ে, প্রতিযোগিতা যখন অতীতের চেয়েও বহুগুণ বেশি, বাংলায় বাঁধা বাংলায় গাওয়া গানের মাধ্যমে শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নেয়া সহজ বিষয় ছিল না। কিন্তু সেটি করতে পেরেছিলেন মৌসুমী।
১৯৯৪ সালে প্রকাশিত হয় মৌসুমীর প্রথম অ্যালবাম ‘তুমি চিল হও’। মানবমনের লুকানো আবেগ-অনুভূতিগুলো তাঁর অসাধারণ লেখনী ও জাদুকরি গায়কিতে ব্যঞ্জনাময় হয়ে ধরা দিয়েছিল শ্রোতাদের কণ্ঠে। তবে তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছিল যে গানটি, সেটির নাম ‘যশোর রোড’।
শত শত মুখ হায় একাত্তর
যশোর রোড যে কত কথা বলে,
এত মরা মুখ আধমরা পায়ে
পূর্ব বাংলা কলকাতা চলে।
অ্যালেন গিন্সবার্গের লেখা সেই বিখ্যাত কবিতা ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লেখা হয়েছিল এই গানের কথা। কিন্তু কোনোভাবেই একে মূল কবিতার অনুবাদ বলা যাবে না। এই গান সৃষ্টির পেছনে যে মানুষটির ভূমিকা ছিল সর্বাধিক, তিনি অকালপ্রয়াত তারেক মাসুদ। ‘মুক্তির কথা’ বানাচ্ছিলেন মাসুদ। তখনই মৌসুমীকে বলেন, গিন্সবার্গের কবিতাটি অবলম্বনে বাংলায় একটি গান তৈরি করতে, যেটি ব্যবহার করা যাবে ‘মুক্তির কথা’য়। আর তাঁর কথাতেই ১৯৯৯ সালে মৌসুমী সৃষ্টি করেছিলেন ‘যশোর রোড’ গানটি।
কোনো একটি গানের মাধ্যমে যদি গোটা একাত্তরের ইতিহাসকে ফুটিয়ে তুলতে বলা হয়, এই গানটিই হবে সবচেয়ে বেশি প্রণিধানযোগ্য। স্বাধীনতা লাভের ৪৮ বছর পর, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে একাত্তর বিষয়ক সাহিত্যকর্মে গিন্সবার্গের কবিতাটি যতটা মূল্যবান, মৌসুমীর লেখা গানটিও ঠিক ততটাই তাৎপর্যপূর্ণ। কিংবা এ-ও বলা যেতে পারে, ভিনদেশী ভাষায় লেখা কবিতাটি দেশের মানুষকে যে অনুভূতির সাথে সাক্ষাৎ করাতে পারেনি, মৌসুমীর গানটি তা-ই করে দেখিয়েছে।
‘যশোর রোড’ গানটি তৈরির পরের বছর, অর্থাৎ ২০০০ সালে প্রকাশিত হয় মৌসুমীর দ্বিতীয় অ্যালবাম, ‘এখনো গল্প লেখো’। এই অ্যালবামেই ছিল তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত ‘আমি শুনেছি সেদিন তুমি’ গানটি। অবশ্য তিনি গানটি লিখেছিলেন সেই ১৯৯৬ সালেই। এই গানটির মাধ্যমে দুই বাংলা জুড়েই অবিশ্বাস্য জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন তিনি। সব শ্রেণী-পেশার মানুষকেই যেন আজও সমান মোহনীয়তার জালে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে গানটি।
২০০১ সালে প্রকাশিত হয় মৌসুমীর আরো একটি অ্যালবাম, ‘আমি ঘর বাহির করি’। এই অ্যালবামের গানগুলোও মানুষ সাদরে গ্রহণ করেছিল। এছাড়া একই সময়কালে তাঁর আরেকটি অসামান্য সৃষ্টি বলা যেতে পারে তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’ ছবির সঙ্গীতকে। ছবিটি ২০০২ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে সমালোচক পুরস্কার পায়। ভূয়সী প্রশংসা জোটে মৌসুমীর করা সঙ্গীত পরিচালনারও। আর ২০০৩ সালে করাচির কারা চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা সঙ্গীতের জন্য পুরস্কৃত হয় ছবিটি।
২০০২ সালে মৌসুমীর সঙ্গীতজীবনে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ যাত্রার শুরু হয়। তিনি কলকাতা ও লণ্ডনের বেশ কিছু সদস্যকে নিয়ে ‘পারাপার’ নামক গানের দল গঠন করেন, যার উদ্দেশ্য ছিল সঙ্গীতের পারাপার করার একটি ক্ষেত্র তৈরি করা এবং প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সঙ্গীতের মধ্যে একটি মেলবন্ধন গড়ে তোলা।
২০০৩ সালের শেষদিক থেকে তিনি সংগ্রহ ও গবেষণার কাজ শুরু করেন। লোকগানের মানুষ নন তিনি। তবুও বিচ্ছেদের গানের প্রতি প্রবল আসক্তি তাঁকে আগ্রহী করে তুলেছিল দুই বাংলার বিচ্ছেদ-নির্ভর লোকগানগুলোর ব্যাপারে। তাছাড়া বিচ্ছেদের সংজ্ঞা তাঁর কাছে কেবল সম্পর্কের সমাপ্তিতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। তিনি দেশ, দেশভাগ, অস্তিত্ব, ভূখণ্ড ইত্যাদিকেও দিয়েছেন সমান গুরুত্ব। তাঁর লোকগান সংগ্রহ ও গবেষণার দুটি বড় ক্ষেত্র হলো বাংলাদেশের বৃহত্তর ফরিদপুর ও সিলেট অঞ্চল।
লোকজ সংগীতের সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ এ সম্পদগুলোকে রেকর্ডিং ও প্রামান্যচিত্রে ধারণের প্রচেষ্টা চালান তিনি। এ কাজে তিনি অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন ডাচ সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ আর্নল্ড ব্লেকের থেকে, যিনি ১৯২৫ সালে শান্তিনিকেতনে গিয়েছিলেন, এবং চার বছর সেখানে থেকেই পিএইচডি করেছিলেন। এরপর নিজে থেকেই মৌসুমির সাথে যুক্ত হন সাউন্ড রেকর্ডিস্ট সুকান্ত মজুমদারও। তাদের গোটা যাত্রার গল্পটাই যেন ধারণ করে ‘দি ট্র্যাভেলিং আর্কাইভ’। ২০১১ সালে এই নামেই খোলা একটি ওয়েবসাইটে তাঁরা সংরক্ষণ করে রাখছেন দুই বাংলার লোকগানের অমূল্য উপাদানসমূহকে।
মৌসুমীর বিশেষ অবদান রয়েছে কলকাতার যাদবপুরের শক্তিগড় ক্লাবের মাঠে আয়োজিত বার্ষিক বাউল-ফকির উৎসবেও। এই উৎসবের অন্যতম উদ্যোক্তা যে তিনিই। শক্তিগড় ক্লাবের ওই মাঠে বন্ধুদের আড্ডাতেই কেউ একজন কথাপ্রসঙ্গে বলেছিলেন, “সব সময় তো গ্রামে গিয়ে (বাউল) গান শোনা হয়, এবার এখানে একটা অনুষ্ঠান করলে কেমন হয়?” সেই প্রস্তাবনাকেই বাস্তবে রূপ দিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মৌসুমীসহ আরো কয়েকজন। তাঁদের প্রচেষ্টায় কলকাতার শহরতলীতে শুরু হয় ভিন্নধর্মী এক সঙ্গীত উৎসব।
২০১৭ সালে প্রকাশিত হয়েছে মৌসুমীর চতুর্থ অ্যালবাম, ‘সংস ফ্রম টোয়েন্টিসিক্স-এইচ’ (Songs from 26H)। পাশাপাশি সমান উদ্যমে তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন ট্র্যাভেলিং আর্কাইভের কাজও। নিজের সৃষ্ট গানে মৌসুমী প্রাধান্য দেন ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যে। কিন্তু সংগ্রহ ও গবেষণায় মুখ্য হয়ে ওঠে গণমানুষ কিংবা প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। তিনি নিজেই দাবি করেন, “আমার কাজে মুখ্য হলো মানুষ।”
মৌসুমীর আরো একটি ব্যতিক্রমী জীবনদর্শন হলো, তিনি তাঁর জীবনকে কোনো সীমানা বা গণ্ডিতে আটকে রাখতে চান না। তিনি মনে করেন, তাঁর জীবন তাঁর নিজের। নিজ হাতেই রচিত হবে তাঁর পথচলার গতিপথ।
আমি কোনো পূর্বপুরুষের জন্য এখানকার (বাংলাদেশের) নই। আমি আমার জন্য এখানকার। আমার জীবন কোনো দেশেই আটকে নেই। আমিই এই জীবনটা তৈরি করেছি, হাতে করেই। উত্তরাধিকার সূত্রে পাইনি। এটা আমার কষ্টার্জিত জীবন। আমি ভালোবেসে বিশ্বাস করে রাজনৈতিকভাবে একটা বর্ডারকে অতিক্রম করে এক ধরনের জীবনযাপন করছি। আমি মনে করি এটাই একমাত্র পথ বাঁচার। এটাই আমার জীবন।
চমৎকার সব বিষয়ে রোর বাংলায় লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কেঃ roar.media/contribute/