খ্যাতিমান ইতিহাসবিদ উইলিয়াম ডেলরিম্পেল ১৯৯৮ সালে ‘দ্য ট্রাভেলস অব দীন মুহাম্মদ’ নামক একটি বিখ্যাত বইয়ের রিভিউ লিখেছিলেন। রিভিউয়ের শুরুতেই তিনি বইয়ের লেখকের নাম দিয়েছিলেন ‘ট্রিপল ফার্স্ট’। অর্থাৎ, তিনটি প্রথমের সাথে জড়িত ছিলেন ঐ বইয়ের লেখক। প্রথমত, তার লেখা বইটিই ছিল কোনো ভারতীয়র ইংরেজিতে লেখা প্রথম বই। দ্বিতীয়ত, তিনি প্রথম ভারতীয় ব্যক্তি হিসেবে লন্ডনে রেস্তোরাঁ ব্যবসা শুরু করেছিলেন। আর হ্যাটট্রিক করেছিলেন তার নাম দিয়ে। তিনিই প্রথম ভারতীয়, যার সম্মানে প্রথমবারের মতো কোনো ব্রিটিশ হোটেল/রিসোর্টের নামকরণ করা হয়েছিল ‘মাহোমেদ’ (তার নামের বিলাতি সংস্করণ)! তিন প্রথমের সে ব্যক্তির নাম শেখ দীন মুহাম্মদ।
দীন মুহাম্মদের জীবন ও তার কাজ সম্পর্কে আজ আমরা জানতে পারছি তার বইটির কল্যাণেই। অথচ এ বইটিও হয়তো আরো অনেক বইয়ের মতো পৃথিবীর বৃহত্তম গ্রন্থাগারগুলোর এক কোণে অখ্যাত হয়ে পড়ে থাকতো, যদি না এটি ওহাইয়োর ওবার্লিন কলেজের অধ্যাপক মাইকেল এইচ ফিশারের নজরে পড়তো। ১৯৯৬ সালে ফিশারের জোরাজুরিতেই বইটি পুনঃপ্রকাশ করেছিল ‘অক্সফোর্ড ইন্ডিয়া প্রেস’ এবং ‘ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস’। আর তাতেই যেন পুনরুজ্জীবিত হয়ে ওঠেন দেড়শো বছর পূর্বে মৃত্যুবরণ করা দীন মুহাম্মদ। অবশ্য তার পুনর্জীবন পাবার ব্যাপারটা সর্বত্র সত্য হলেও একটি শহরে কিন্তু সত্য নয়।
লন্ডনের ব্রাইটন শহরে দীন মুহাম্মদের কখনোই মৃত্যু হয়নি। আর এ কথা উপলব্ধি হবে সে শহরে গেলেই। ব্রাইটনের রাস্তায় দেখা যাবে ‘শেক দীন মোহামেদ’ (শেখ দীন মুহাম্মদের বিলাতি সংস্করণ) লেখা গণপরিবহণ, ব্রাইটনের সমুদ্র তীরে পাওয়া যাবে তার নামে নামকরণ করা রিসোর্ট, জাদুঘরে আছে তার ছবি ও কিছু ব্যবহার্য দ্রব্য-সামগ্রী, বিখ্যাত কুইন’স হোটেলে তার স্মারক চিহ্ন (কেননা এ হোটেলের স্থানটিতেই একসময় স্থাপিত হয়েছিল ‘মোহামেদ’স বাথ’) আর সংরক্ষিত সে বাড়িটি, যেখানে তিনি মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এতকিছুর পর ব্রাইটন শহরে অন্তত দীন মুহাম্মদ কোনোদিন বিস্মৃত হননি কিংবা হবেন না, সেটা নিশ্চিত করেই বলা যায়।
শেখ দীন মুহাম্মদ ১৭৫৯ সালে পাটনায় জন্মগ্রহণ করেন, যা বর্তমানে বিহারের রাজধানী। তার বাবা ছিলেন ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন সুবেদার, যিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্য যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন। উল্লেখ্য, সুবেদারই ছিল ভারতীয়দের জন্য বরাদ্দ সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ। যা-ই হোক, দীন মুহাম্মদের মা-ও তার কৈশোরে মৃত্যুবরণ করেন। জীবিকার তাগিদেই হোক, আর বাবার পরিচিতির খাতিরেই হোক, মাত্র ১৫ বছর বয়সেই তিনি ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তার প্লাটুন কমান্ডার ছিলেন গডফ্রে বেকার নামক এক আইরিশ ব্যক্তি। দীন মুহাম্মদ তার দক্ষতা আর অমায়িক আচরণের জন্য দ্রুত বেকারের প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠেন। এরপর বেকারের হাত ধরে ২৫ বছর বয়সে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে পাড়ি জমান আয়ারল্যান্ডে। তার জীবনের ভারতীয় অধ্যায়ে আর একটি বছরও যোগ হয়নি এরপর।
আয়ারল্যান্ডের বন্দরনগরী কর্কে স্থায়ী হন দীন মুহাম্মদ। সেখানে বেকার পরিবারের ভূ-সম্পত্তির দেখাশোনা করেন জীবনের পরবর্তী ২২টি বছর। কর্কের একটি স্থানীয় স্কুলেও ভর্তি হয়েছিলেন তিনি ইংরেজি শেখার জন্য। ইংরেজিটা যে তিনি বেশ চমৎকারভাবেই রপ্ত করতে পেরেছিলেন, তার প্রমাণ পাওয়া যায় তার বই ট্রাভেলসেই। বইটি তিনি কর্ক শহরে থাকাকালীনই লিখেছিলেন। বইটি সাহিত্যগুণে এতটা চমৎকার যে সমালোচকগণ আফসোস করেছেন তিনি কেন আরো লেখালেখি করলেন না।
বেকার পরিবারের জন্য কাজ করতে করতে একসময় হাঁপিয়ে উঠলেন দীন মুহাম্মদ। বেকারের সম্মতিতেই কাজ ছেড়ে ভাগ্যান্বেষণে লন্ডনের সবচেয়ে ধনী এলাকা ‘পোর্টম্যান স্কয়ারে’ চলে গেলেন। এ স্থানটির আরেকটি নিন্দাসূচক নাম ছিল ‘নাবুব স্কয়ার’ (নবাব এর বিলাতি সংস্করণ)। এ এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দাই ছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী, যারা নানারূপ দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যাপক অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছিলেন। এজন্য তাদেরকে নিন্দাসূচক ‘নাবুব’ নামকরণ করেছিল স্থানীয়রা। যা হোক, নাবুব স্কয়ারে প্রথম কয়েক বছর বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় কাজ করেন দীন মুহাম্মদ। আর তাতে এই ব্যবসাটা বেশ আয়ত্তে চলে আসে তার।
অবশেষে ১৮১০ সালে এলো সেই বিশেষ মূহুর্ত। পোর্টম্যান স্কয়ারের ৩৪ জর্জ স্ট্রিটে দীন মুহাম্মদ চালু করলেন ইউরোপের প্রথম ভারতীয় রেস্তোরাঁ ‘দ্য হিন্দুস্তান কফি হাউজ’। ব্রিটেনের প্রথম রেস্টুরেন্ট গাইড ‘ইপিকিউরাস অ্যালামনাক’ একে তখনকার সময়ের সবচেয়ে ভিন্নধর্মী রেস্তোরাঁ বলে অভিহিত করে। পুরো ব্রিটেনে এটি যেন ছিল এক টুকরো ভারত, যেখানে ভারতের সব ঐতিহ্যবাহী মশলাদার খাবার পাওয়া যেত, পাওয়া যেত হুঁকাও! তথাপি, শুরুর কয়েক মাসের সাফল্য বাদ দিলে এই রেস্তোরাঁ দিয়ে তেমন ব্যবসাই করতে পারেননি দীন মুহাম্মদ। ফলে ২ বছরের মাথায় তিনি এটি বন্ধ করতে বাধ্য হন।
এখন পোর্টম্যান স্ট্রিটে আর সেই নাবুবদের চিহ্ন নেই, নেই সেই বিলাসিতাও। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় এ এলাকার চেহারা এখন পাল্টে গেছে, অভিজাত থেকে মধ্যবিত্ত আর উচ্চ-মধ্যবিত্তের বসবাস বেড়েছে এখানে। তবুও একটি স্থান এখনো ধরে রেখেছে সেই নাবুব আমলের স্মৃতি। সেটি হলো ৩৪ জর্জ স্ট্রিট, যেখানে বিশাল সবুজ রঙের স্মৃতি ফলকে লেখা আছে, “লন্ডনের প্রথম ভারতীয় রেস্টুরেন্টের স্থান, যার মালিক ছিলেন শেখ দীন মুহাম্মদ”।
নিজের জন্মভূমির চেয়ে যে শহর দীন মুহাম্মদকে সবচেয়ে বেশি স্মরণ করে, সে ব্রাইটনে তিনি প্রথম গিয়েছিলেন ৫৫ বছর বয়সে! এটি ১৮১৪ সালের কথা, যখন জেন অস্টিনের কালজয়ী উপন্যাস ‘প্রাইড অ্যান্ড প্রিজুডিস’ প্রকাশিত হয়েছিল। এ বইয়ের মূল চরিত্র লিডিয়ার চোখে ব্রাইটন ছিল পৃথিবীতে এক টুকরো স্বর্গ। আর এই বই পড়েই ব্রাইটনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে সেখানে পাড়ি জমান দীন মুহাম্মদ! অবশ্য ব্রাইটনের আগে থেকেই একটা সুনাম ছিল স্বাস্থ্যকর শহর হিসেবে। আঠারো শতকের মধ্যভাগে পরিবেশবিদ রিচার্ড রাসেল একটি গবেষণা প্রবন্ধে দেখিয়েছিলেন যে ব্রাইটনের সমুদ্রতীরবর্তী বাতাস এবং সেখানকার সমুদ্রের পানি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। এমনকি, সে পানিতে গোসল বিভিন্ন রোগের জন্যও উপশমকারী হিসেবে কাজ করতো! এরপর থেকে এ শহরটি পর্যটনের জন্য খ্যাতি পেতে শুরু করে।
কিন্তু সমস্যা একটা ছিলই। স্বাস্থ্যকর সমুদ্রের পানিতে গোসল করতে হাজারো মানুষ অবসর যাপনে সেখানে গেলেও, সিংহভাগই জানতেন না সাঁতার। কিন্তু, অসুস্থ মানুষ যারা ভ্রমণে আসতেন, ব্রাইটনের সমুদ্রস্নান তাদের চাই। ফলে, সাঁতার না জানা পর্যটকদের গোসল করানোর জন্য উদ্ভাবিত হতে থাকলো নানাবিধ ফন্দি-ফিকির। তবে সেসব উপায়ে গোসল করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হতেন পর্যটকগণ। এ সমস্যাই দীন মুহাম্মদের মাথায় নতুন ব্যবসার বুদ্ধি দিল।
দীন মুহাম্মদের এ ব্যবসা অনেকটা ডাক্তারিই মনে করতো সাধারণ লোকজন। এটি ছিল একেবারে প্রাথমিক দিককার ‘অ্যারোমাথেরাপি’র ভারতীয় সংস্করণ। সমুদ্রের নিকটে একটি বড় ঘরের মধ্যে তিনি এমন ব্যবস্থা করলেন, যেখানে কনকনে ঠাণ্ডার বদলে আরামদায়ক ঠাণ্ডা পানিতে কোনো ধরনের ঝুঁকি ছাড়াই সুঘ্রাণের সাথে গোসল করতে পারতেন পর্যটকরা। প্রথমে সুগন্ধি মিশ্রিত পানির বাষ্পে রোগীকে বেশ কিছুক্ষণ বসিয়ে রাখা হতো। রোগী যথেষ্ট পরিমাণ ঘেমে গেলে তাকে ভারতীয় বিভিন্ন সুগন্ধি তেল ও ঔষধি বিরুৎ জাতীয় উদ্ভিদ মিশ্রিত পানিতে গোসল করতে দেয়া হতো।
প্রাথমিক সাফল্যের পর দীন মুহাম্মদ রোগীদের জন্য একটি গোপন কক্ষের ব্যবস্থা করেন, যেখানে রোগীর শরীরে পানির প্রবাহের পাশাপাশি থাকতো আরামদায়ক মাজন। বিভিন্ন যন্ত্রের সমন্বয়ে এ ব্যবস্থা তৈরি করেছিলেন তিনি, যা দিয়ে বাইরে থেকে বসে রোগীর দেহ মর্দন করে দিতে পারতেন। আর এ মর্দনের নাম দেন তিনি ‘শাম্পনা’। শীঘ্রই এটি ব্রাইটনবাসীর কাছে ‘শ্যাম্পু’ হয়ে গেল! এভাবেই উৎপত্তি হলো শ্যাম্পু শব্দটির, যদিও এর বর্তমান ব্যবহার (চুল ধোয়া বা ধোয়ার দ্রব্য) শুরু হয় আরো পরে। আর দীন মুহাম্মদকে সকলে বলতে লাগলেন, ‘দ্য শ্যাম্পুয়িং সার্জন’।
দীন মুহাম্মদের ‘মোহামেদ’স বাথ’ দ্রুত জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে গেলো। শ্যাম্পুয়িং সার্জন হিসেবে তার খ্যাতি ছড়িয়ে গেল পুরো ইউরোপেই! শত শত মানুষ প্রতিদিন তার বাথে গোসল করতে চলে আসতো। আর তিনি দ্বিগুণ উৎসাহে বাথের সংস্কার করতে থাকলেন। ধীরে ধীরে বাথ হাউজটি বিশালাকার ধারণ করলো, এর অপেক্ষমান রোগীদের জন্য তৈরি হলো সুদৃশ্য গ্রন্থাগার, পুরো ভবনের নিচে স্থাপন করা হলো বিশেষ একধরনের পাম্প যন্ত্র আর বাষ্প ইঞ্জিন, আর রোগীর গোসলের গোপন কক্ষটি তৈরি করা হলো চকচকে মার্বেল পাথরে। তার এই গোসল করানোর প্রক্রিয়া কতটুকু বিজ্ঞানসম্মত ছিল, সেটি বিতর্কের বিষয় হতে পারে, তবে সেখানে গোসল করে সুস্থ হওয়া মানুষের সংখ্যা অনেক! মজার ব্যাপার হলো, রোগীদের সুস্থতার প্রমাণ হিসেবে তাদের অসুস্থতায় ব্যবহৃত বিভিন্ন দ্রব্য-সামগ্রী রেখে দেয়া হতো তার গ্রন্থাগারের সামনেই, যেগুলো দেখে মানুষ জানতে পারতো দীন মুহাম্মদের বাথের কার্যকারিতার কথা!
দীন মুহাম্মদের বাথ দিনকে দিন এত জনপ্রিয় হয়ে উঠতে লাগলো যে সেখানে মানুষের স্থান সংকুলান করাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছিল। প্রথমদিকে অসুস্থ মানুষের আনাগোনা বেশি হলেও একসময় স্থানীয়, বহিরাগত, সুস্থ, অসুস্থ, ধনী, দরিদ্র, সম্ভ্রান্ত, নিম্নবিত্ত, সকল বর্ণ ও শ্রেণীর মানুষ মুহাম্মদের বাথে নিয়মিত আসতে লাগলো। তৎকালীন ব্রিটেনের সরকারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে রাজপরিবারের লোকজনও সেখানে গোসল করতে এলেন! এসেছিলেন পোল্যান্ডের রাজকুমারী পোনিয়াটোস্কিও, যিনি দীন মুহাম্মদকে খুশি হয়ে একটি রাজকীয় রৌপ্যপাত্র উপহার দিয়েছিলেন। এ পাত্রটি বর্তমানে ‘ডক্টর ব্রাইটন’ নামে ব্রাইটনের জাদুঘরে প্রদর্শিত হচ্ছে।
দীন মুহাম্মদের বাথ বিশ্বনন্দিত হয়ে ওঠে, যেদিন রাজা চতুর্থ জর্জ সেখানে গোসল করতে গেলেন। জর্জের মৃত্যুর পর ইংল্যান্ডের সিংহাসনে বসেন রাজা চতুর্থ উইলিয়াম। তিনি তো আরো এক ধাপ এগিয়ে দীন মুহাম্মদকে রাজকীয় ‘শ্যাম্পুয়িং সার্জন’ বানিয়ে দিলেন। তার বাথটি তখন আর তার নিজের চালাতে হতো না। সেটি পরিচালনা করতো এক ঝাঁক কর্মচারী। আর দীন মুহাম্মদ, যিনি কি না ব্রাইটনের সবচেয়ে সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি বনে যান, সময় দিতেন রাজকীয় কাজে। অর্থ-সম্পদ তার যত বৃদ্ধি পেয়েছিল, মানুষ হিসেবে তিনি ততই অমায়িক হয়েছিলেন। দানশীল হিসেবে তার সুনাম প্রতিষ্ঠিত ছিল। এমনও কথা প্রচলিত ছিল যে, দীন মুহাম্মদের কাছে গেলে কেউ নিরাশ হয়ে ফিরলে বুঝতে হবে পৃথিবীতে তার আর কোনো সাহায্যকারী অবশিষ্ট রইলো না!
শূন্য থেকে শুরু করে আকাশের তারকাদের উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছিলেন দীন মুহাম্মদ। শেষবেলায় আবার হলো ছন্দপতন। রানী ভিক্টোরিয়া ক্ষমতায় এসেও তার বাথে নিয়মিত যাতায়াত শুরু করেছিলেন। কিন্তু কিছুকাল পরই তিনি নানা ধরনের অভিযোগ জ্ঞাপন করে মুহাম্মদের বাথটিকে অপছন্দের তালিকায় যোগ করেন। ব্যস, এক টানে দীন মুহাম্মদের রাজকীয় পদ, তার বাথের জনপ্রিয়তা আর গ্রহণযোগ্যতা সবই তলানিতে ঠেকলো। এই ব্যর্থতার বিষণ্ণতা মনে নিয়েই ১৮৫১ সালে ব্রাইটনে মৃত্যুবরণ করেন দীন মুহাম্মদ। তার মৃত্যুতে ব্রাইটন সহ পুরো ব্রিটেনের সমস্ত পত্রিকা শোক প্রকাশ করেছিল। ব্রাইটনের পত্রিকাগুলো মনে করিয়ে দিয়েছিল যে এক বাথ দিয়েই ব্রাইটনের উন্নয়নে (পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে) কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তিনি পালন করে গেছেন। সে সময়কার প্রখ্যাত কবি এবং সমালোচক জেমস স্মিথ একটি ছোট গীতিকাব্য লিখেছিলেন তার স্মরণে। পাঠকের জ্ঞাতার্থে সেটি উল্লেখপূর্বক লেখাটি শেষ করছি।
Thou dark sage, whose vapour bath
Makes muscular as his of Gath,
Limbs erst relax’d and limber:
Whose herbs, like those of Jason’s mate,
The wither’d leg of seventy-eight
Convert to stout knee timber
While thus beneath thy flannel shades,
Fat dowagers and wrinkled maids
Re-bloom in adolescence,
I marvel not that friends tell friends
And Brighton every day extends
Its circuses and crescents.