‘স্যাক্রেড গেমস’ ছিল ভারতীয় ওয়েব স্ট্রিমিং জগতের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী সিরিজ। নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া ক্রাইম থ্রিলার জনরার ওই সিরিজটি এতটাই উন্মাদনা সৃষ্টি করেছিল যে, এরপর থেকে যখনই ভারতীয় টিভি কিংবা ওয়েব প্ল্যাটফর্মে একই ধরনের কোনো সিরিজের আবির্ভাব ঘটেছে, সকলে হামলে পড়েছে ‘স্যাক্রেড গেমস’-এর সাথে সেটির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করতে।
ঠিক একই দৃশ্যপট দেখা যাচ্ছে অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর নতুন সিরিজ ‘পাতাল লোক’-এর ক্ষেত্রেও। শুধু সাধারণ দর্শকই তো নয়, এমনকি সমালোচকদের লেখনীতেও বারবার উঠে আসছে ‘স্যাক্রেড গেমস’-এর প্রসঙ্গ।
হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, ‘পাতাল লোক’ হলো অ্যামাজনের পক্ষ থেকে ‘স্যাক্রেড গেমস’-এর প্রতি সাহসী জবাব। এনডিটিভির মতে, এটি প্রাইম ভিডিওর ‘স্যাক্রেড গেমস’ নয়, আরো বেশি কিছু। এদিকে দ্য প্রিন্টের দৃষ্টিতে ‘পাতাল লোক’-এ দিল্লির উপস্থাপন ঠিক সেভাবে হয়েছে, যেভাবে ‘স্যাক্রেড গেমস’-এ হয়েছে মুম্বাইয়ের উপস্থাপন।
সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, ১৫ মে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াই পাওয়া যাচ্ছে সিরিজটির, যে কারণে ‘স্যাক্রেড গেমস’-এর সাথে তুলনাটা এবার বেশ জোরেশোরেই হচ্ছে। অনেকের রায়ে তো ‘স্যাক্রেড গেমস’-এর থেকেও এগিয়ে থাকছে ‘পাতাল লোক’।
তবে এরপরও যদি কারো মনে কোনো সন্দেহ থাকে, কেউ যদি উপরের লেখাগুলো পড়ে নাক সিঁটকে থাকেন, পরবর্তী তথ্যটি জানার পর তারাও শান্ত হয়ে যেতে বাধ্য। কারণ ‘পাতাল লোক’-কে প্রশংসার বৃষ্টিতে ভিজিয়েছেন স্বয়ং অনুরাগ কাশ্যপ। হ্যাঁ, সেই ব্যক্তি, যার হাত ধরেই দর্শকের পরিচয় ঘটেছে ‘গ্যাংস অফ ওয়াসিপুর’-এর মতো মাস্টারপিসের সাথে, এবং যিনি এতক্ষণ ধরে বারবার বলে চলা ‘স্যাক্রেড গেমস’-এরও অন্যতম পরিচালক। তিনি টুইটারে লিখেছেন:
“আমার চলচ্চিত্র নির্মাতা হৃদয় আজ আনন্দে পরিপূর্ণ। আমি মাত্রই ‘পাতাল লোক’ দেখলাম। আমার দেখা দীর্ঘ সময়ের মধ্যে এ দেশ থেকে বেরোনো সেরা ক্রাইম থ্রিলার, কিংবা হয়তো সর্বকালের সেরা।”
অনুরাগ কাশ্যপ যখন কোনো চলচ্চিত্র বা সিরিজ নিয়ে এমন মন্তব্য করেন, তখন আর সেটির গুণগতমান নিয়ে সন্দেহের অবকাশ থাকে না। কেবল তার প্রশংসাতেই যে একটি চলচ্চিত্র বা সিরিজ বিশাল বড় ভক্তগোষ্ঠী পেয়ে যেতে পারে, সে উদাহরণ আমরা ইতোপূর্বে একাধিকবার দেখেছি। অসমীয়া ভাষায় ভাস্কর হাজারিকার ‘আমিষ’ তো একদমই সাম্প্রতিক উদাহরণ।
“এই যে দুনিয়া না, এটা আসলে একটা নয়, তিনটে দুনিয়া। সবার উপরে স্বর্গ লোক, যেখানে দেবতারা থাকে। মাঝখানে ধার্তি লোক, যেখানে মানুষ থাকে। আর সবার নিচে হলো পাতাল লোক, যেখানে পোকামাকড় থাকে। এমনিতে তো এগুলো শাস্ত্রে লেখা আছে, তবে আমি হোয়াটসঅ্যাপে পড়েছি।”
এই সংলাপের মাধ্যমেই শুরু হয় সিরিজটি। যে লোক কথাগুলো বলে, সে হলো ইন্সপেক্টর হাথিরাম চৌধুরী। জুনিয়র ইমরান আনসারিকে কথাগুলো বলছিল সে। আরো বলছিল, তারা যে পুলিশ স্টেশনে কাজ করে, আউটার যমুনা পার, সেটি হলো পাতাল লোক। পোকামাকড় সদৃশ অপরাধীদের নিয়েই কারবার তাদের। ফলে তাদের জীবনে খুব বেশি উচ্চাশা করে লাভ নেই। পাতাল লোকেই পচে মরতে হবে। না পাওয়া যাবে সম্মান, না প্রমোশন।
কিন্তু আকস্মিকভাবেই, হাথিরামের অতীব সাধারণ ক্যারিয়ারে আগমন ঘটে একটি হাই-প্রোফাইল কেসের। দেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক সঞ্জীব মেহরাকে হত্যার চেষ্টারত চার সন্ত্রাসী ধরা পড়ে। তাদের অপরাধেরই তদন্ত করতে হবে হাথিরামকে। অতীতে এমন কোনো কেসের তদন্ত করার সুযোগ হয়নি তার। তাই এটি শুধু তার জন্য একটি রহস্যের উন্মোচনের সুযোগই নয়, সুযোগ নিজেকে প্রমাণেরও।
“অর্ধেক জীবন বাবার চোখে দেখে এসেছি তার ছেলে একটা অকর্মা, এখন বাকি জীবন ছেলের চোখে দেখতে পারব না যে ওর বাবা একটা অকর্মা।”
তাই নিজের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করতে শুরু করে হাথিরাম এই কেসের সুরাহা করার। কিন্তু আক্ষরিক অর্থেই, কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হওয়ার উপক্রম হয়। এমন সব সত্য বের হয়ে আসতে থাকে, যেগুলোর সাথে হাথিরামের পূর্বপরিচয় নেই। ধীরে ধীরে অপরাধজর্জর এক সত্যিকারের পাতাল লোকে তলিয়ে যেতে শুরু করে সে। শেষ পর্যন্ত রহস্যের মীমাংসার চেয়েও তার কাছে বড় হয়ে যায় আত্মানুসন্ধান, অথবা জীবনের প্রকৃত অর্থোদ্ঘাটন।
বুঝতেই পারছেন, ‘স্যাক্রেড গেমস’ কিংবা মার্চে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অসুর’-এর সাথে বেশ মিল আছে ‘পাতাল লোক’-এর। অপরাধের আন্ডারওয়ার্ল্ডের সাথে হিন্দু পৌরাণিক বিষয়াবলির যোগসূত্র স্থাপন করে ক্রাইম থ্রিলারের প্লট সাজানো পরিণত হয়েছে অতি পরিচিত একটি বিষয়ে। কিন্তু তারপরও ‘পাতাল লোক’-এর কাহিনী একেবারে মৌলিক, সম্পূর্ণ তাজা।
ভারতের কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল রাজনীতি, ধর্মীয় জাতীয়তাবাদ, গণমাধ্যমের বাণিজ্যিকীকরণের মতো বিষয়গুলো যেমন উঠে এসেছে, তেমনই এই সিরিজ একটি বড়সড় ‘স্টেটমেন্ট’ সৃষ্টির চেষ্টা করেছে লিঙ্গান্তর কিংবা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর প্রতিনিয়ত হয়ে চলা অন্যায়-অবিচারের ব্যাপারেও।
হালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম কিংবা বিনোদন মাধ্যম, দুই জায়গাতেই যেভাবে যেকোনো অপরাধকে ‘জঙ্গীবাদ’ হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোও সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করে, সে বিষয়টিকেও একহাত নেয়া হয়েছে ‘পাতাল লোক’-এ।
মনস্তত্ত্ব একটা বড় ভূমিকা পালন করেছে কাহিনীতে। চার অপরাধীর অপরাধের প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার লক্ষ্যে হাথিরাম ও তার সহযোগী ইমরান শুধু বর্তমানেই পড়ে থাকেনি, ডুব মেরেছে সুদূর অতীতেও। সেসব অতীত খুঁড়ে তারা বোঝার চেষ্টা করেছে, ঠিক কোন কারণে অপরাধজগতে জড়িয়ে পড়েছে তারা, আর তাদের সর্বশেষ অপরাধের পেছনেই বা ছিল কী মোটিভ। তাদের এই অতীতমন্থনকে পর্দায় জীবন্ত করে তোলার ক্ষেত্রে নির্মাতারাও চেষ্টায় কোনো ত্রুটি রাখেননি। দিল্লিকে এক নতুন আঙ্গিকে চিত্রায়িত করার পাশাপাশি এ সিরিজের শুটিং হয়েছে ভারতের ছয়টি শহরের ১১০টি লোকেশনে, যার মধ্যে প্রধান ছিল উত্তর প্রদেশের সীমান্তঘেঁষা পবিত্র শহর চিত্রকূট। নির্মাতারা চেয়েছেন প্রতিটি দৃশ্য যেন ঠিক সেখানেই দৃশ্যায়িত হয়, যেখানের কথা কাহিনীতে বলা হচ্ছে।
নয় পর্বের সিরিজটির নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে ছিলেন আনুশকা শর্মা। প্রযোজক আনুশকার রুচি বরাবরই উচ্চমানের। নিজের ডিজিটাল অভিষেকেও তিনি তার সেই উচ্চরুচির পরিচয় দিয়েছেন, এবং এক্ষেত্রে তিনি কাজ করেছেন মূলত তার পরিচিত সহযোদ্ধাদের সাথেই।
‘পাতাল লোক’-এর সৃষ্টিকর্তা (ক্রিয়েটর) ‘এনএইচ-১০’-এর লেখক সুদীপ শর্মা, আর পরিচালক হিসেবে ছিলেন অবিনাশ অরুণ ও প্রসিত রয় (পরী)। চিত্রনাট্য উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন ‘এনএইচ-১০’-এর পরিচালক নবদীপ সিং। এছাড়া লেখক হিসেবে সুদীপ শর্মাকে সঙ্গ দিয়েছেন সাগর হাভেলি, হার্দিক মেহতা ও গুণজিৎ চোপড়া।
দারুণ মেধাবী কিন্তু অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত এই দলটি ভারতীয় দর্শকের জন্য অভিনব কিছু সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন, কেননা অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর বদৌলতে সিরিজটি যে বৈশ্বিক দর্শকের কাছে পৌঁছে যাবে। তবে পশ্চিমা চিন্তাচেতনার প্রভাব থাকলেও সিরিজটির প্রায় প্রতিটি দৃশ্যই অতিমাত্রায় ভারতীয়। বলা চলে, নামের মতোই, সিরিজের যাবতীয় কনটেন্টও, আত্মিকভাবে বহন করতে পেরেছে ভারতীয়তাকে। তাই পশ্চিমা দর্শকও এ সিরিজের মাধ্যমে ভারতকে আবিষ্কার করতে পারবে এক নতুন রূপে, যে রূপে তারা আগে কখনো দেখেনি।
এই সিরিজের আরেকটি প্রাণ হলো এর সংলাপ। প্রয়োজনে যেমন ইংরেজি এসেছে টুকটাক, তেমনই প্রকৃত ভারতীয় মাটির ঘ্রাণ দিতে সমৃদ্ধ হিন্দি সংলাপের সংযোজনেও কোনো কার্পণ্য রাখা হয়নি। সাহসী সংলাপের মাধ্যমে সরকারবিরোধী (দেশবিরোধী নয়) চেতনাকে যেমন উসকে দেয়া হয়েছে, তেমনই জোরদার করা হয়েছে সিরিজের ডার্ক কমেডি স্বাদকেও।
“অবশেষে আমরা এমন একটি সরকার এবং এমন একজন প্রধানমন্ত্রীকে পেয়েছি, যারা দেশের জন্য কিছু করছে।”
এই সংলাপটি যেমন আপাতদৃষ্টিতে ভারতের বর্তমান সরকারের প্রশংসাই করছে, অথচ একটু তলিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে, কী বলা হচ্ছে, তারচেয়েও বেশি জরুরি কথাটি আসলে কে বলছে।
আবার ভারতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাংবাদিক নিধনের বিষয়টিও এসেছে গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স হিসেবে:
“আমরা (সাংবাদিকরা) আগে ছিলাম হিরো। এখন আমাদের নিয়ে মজা করা হচ্ছে। আমরা খুন হচ্ছি, চাকরি থেকে বহিষ্কার হচ্ছি। আমরা সবাই এখন গৌরী লঙ্কেশের মতোই অপ্রয়োজনীয়।”
অভিনয়ের দিক থেকে এই সিরিজের সবটুকু আলো নিজের দিকে টেনে নিয়েছেন জয়দীপ আহলাওয়াত। তার হাথিরাম চৌধুরী চরিত্রটি দেখে অনেকের মনে পড়ে যেতে পারে সারতাজ সিংয়ের কথা। কিন্তু ‘স্যাক্রেড গেমস’-এর মাধ্যমে সাইফ আলি খান যতটা না দর্শকমনে জায়গা করে নিতে পেরেছেন, তারচেয়ে হাথিরামের মাধ্যমে হয়তো একটু বেশিই সফল হবেন জয়দীপ।
নিঃসন্দেহে একটি কারণ এই যে এ সিরিজে গণেশ গাইতোণ্ডের মতো কোনো খলনায়ক নেই। তবে জয়দীপ যে নয়টি পর্ব জুড়ে পুরোপুরি হাথিরামে পরিণত হয়েছেন, নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন, সে কথাও ভুলে গেলে চলবে না। জয়দীপের মুখে প্রতিটি সংলাপ, প্রতিটি অভিব্যক্তি (বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য স্ত্রীর হাতে চড় খাওয়ার দৃশ্যটি), এবং সামগ্রিক শরীরী ভাষা আপনাকে পর্দার হাথিরামের সাথে একাত্ম অনুভব করাবে।
২০১২ সালে ‘গ্যাংস অফ ওয়াসিপুর’ ছবিতে অসাধারণ অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শক-সমালোচকদের প্রশস্তি কুড়িয়েছিলেন জয়দীপ। কিন্তু ওই ছবি তাকে দীর্ঘস্থায়ী তারকাখ্যাতি দিতে পারেনি। এতদিনে মানুষ ভুলে গেছে তার কথা। কিন্তু ‘পাতাল লোক’-এর পর হয়তো আর ভুলবে না। তবে আশা থাকবে, দর্শকমনে তিনি যেন শুধু হাথিরাম হয়েই না থাকেন, বরং ভবিষ্যতে যথাযথ রোল পেয়ে আবারো ছক্কার পর ছক্কা হাঁকাতে পারেন, যেমনটি ইদানীং করতে দেখা যাচ্ছে ‘বাধাই হো’ খ্যাত নীনা গুপ্তাকে।
এদিকে সঞ্জীব মেহরা চরিত্রে অভিনয় করেছেন ওয়েব জগতের পরিচিত মুখ নীরাজ কবি। জয়দীপের চেয়েও দর্শক তাকেই বেশি চেনে। তারপরও এ সিরিজে এমন মুখ্য একটি চরিত্র পেয়েও আবেগের আতিশয্যে ভেসে না গিয়ে তিনি যে সংযত ও পরিমিত অভিনয় করেছেন, তা থেকে পুনরায় প্রমাণিত হয়ে যায় তিনি অভিনেতা হিসেবে আসলেই কতটা দক্ষ। সব আলো নিজের দিকে টেনে নেয়ার পরিবর্তে তার এই যথাযোগ্য সমর্থনই এ সিরিজকে আরো বেশি মনোগ্রাহী করে তুলেছে।
এছাড়া আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন নীহারিকা লিরা দত্ত (সারা ম্যাথিউস) এবং ইশওয়াক সিং (ইমরান আনসারি)। একদিকে সারা উচ্চাকাঙ্ক্ষী সাংবাদিক, তবে নিজের আত্মাকে বিকিয়ে দিতে নারাজ। অন্যদিকে মেধাবী ইমরান আইপিএসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে-ও জীবন নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখে, কিন্তু মুসলিম হবার দরুন সমাজে বারবার তাকে অপদস্থ হতে হয়। দুটি চরিত্রই এই সিরিজের সার্বিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল, এবং দুজন অভিনেতাই চরিত্র দুটোকে বাস্তবসম্মত করে তুলেছেন।
চার অভিযুক্ত অপরাধী হিসেবে অভিষেক ব্যানার্জী (বিশাল ত্যাগী), জগজিৎ সান্ধু (তোপ সিং চাকু), আসিফ খান (কবির এম) এবং রোনালদো সিং (চিনি)-ও দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। বিশেষত অভিষেক তার ভীতিপ্রদ চাহনি দিয়ে দর্শকের হাড় কাঁপিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া ভোলা যাবে না টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জীর কথাও। সঞ্জীব মেহরার স্ত্রী ডলি মেহরা হিসেবে একজন একাকিত্ব ও উদ্বেগে ভোগা চরিত্রটি তিনি মোটামুটি ভালোভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন। শুরুর দিকে তার চরিত্রটিকে অপ্রয়োজনীয় মনে হলেও, কাহিনীর অন্যতম প্রধান বাঁকবদলে পরোক্ষ ভূমিকা ছিল তারই।
অভিনব কাহিনী, দারুণ অভিনয়, অসাধারণ নির্মাণ, সব মিলিয়ে ‘পাতাল লোক’ এমন একটি সিরিজ, যা না দেখলেই নয়। ইতোপূর্বে ‘ব্রিদ’, ‘মির্জাপুর’, ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’, ‘ইনসাইড এজ’, ‘মেড ইন হেভেন’, ‘আফসোস’, ‘পঞ্চায়েত’-এর মতো সব সিরিজ মুক্তি পেয়েছে প্রাইম ভিডিওতে। সেই ধারাবাহিকতায় তাদের অসাধারণত্বের মুকুটে নতুন পালক হিসেবে যুক্ত হলো ‘পাতাল লোক’।
তবে আসলেই এটি ‘স্যাক্রেড গেমস’-এর চেয়ে ভালো কি না, সে বিচার করতে হবে আপনাদেরকেই। আর সেজন্য দেরি না করে দেখে ফেলতে হবে সিরিজটি।