‘মানুষ মরণশীল’। এই চিরন্তন সত্যকে আলিঙ্গন করেই প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছেন। তবে প্রত্যেকেই স্বাভাবিক মৃত্যু কামনা করেন। কিন্তু স্বাভাবিক মৃত্যুর হার প্রতিনিয়ত কমেই চলেছে। সারা পৃথিবীতে বিভিন্নভাবে মানুষের মৃত্যু ঘটছে। কেউ বার্ধক্যজনিত কারণে, কেউ রোগে ভুগে, কেউবা অপমৃত্যুর শিকার হচ্ছেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যুদ্ধ বিগ্রহের কারণেও হাজার হাজার মানুষকে অকালেই প্রাণ দিতে হচ্ছে। আবার অনেক দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ত্রুটি থাকার কারণেও বিপুল সংখ্যক মানুষকে প্রাণ হারাতে হচ্ছে।
গত শতকেই বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের অন্যান্য অংশে চিকিৎসা ব্যবস্থা বেশ অনুন্নত ছিল। যার ফলে তখন এক কলেরা রোগই গ্রামের পর গ্রামকে জনশূন্য করে দিতো। তবে বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার ছোঁয়া চিকিৎসাসহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই লেগেছে। ফলে চিকিৎসা খাতে বড় ধরনের উন্নতি ঘটেছে। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার কারণে পৃথিবী জুড়ে মৃত্যুহার কমার পাশাপাশি বেড়েছে গড় আয়ু। ১৯৫০ সালে বিশ্বে মানুষের গড় আয়ু ছিল মাত্র ৪৬ বছর। কিন্তু গত ২০১৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, সেটি দাঁড়িয়েছে ৭১ বছরে। অর্থাৎ গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে ২৫ বছর, যেটি এক কথায় বিশ্ব স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বড় এক অর্জন।
বর্তমানে উত্তর আমেরিকার মানুষের গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি। এই অঞ্চলের মানুষের গড় আয়ু প্রায় ৮০ বছর। এরপরই রয়েছে ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকা। এই দুই মহাদেশের অধিবাসীদের গড় আয়ু যথাক্রমে ৭৭.৭ বছর ও ৭৫.১ বছর। তারপরের অবস্থানে রয়েছে এশিয়া মহাদেশ। এশিয়ার দেশগুলোতে বসবাসরত একজন মানুষের গড় আয়ু ৭২.৪ বছর। আর সবার নিচে রয়েছে সাব-সাহারা অঞ্চল। এখানকার মানুষদের গড় জীবনকাল ৫৯.৩ বছর।
সারা পৃথিবীতে মানুষের গড় আয়ু বাড়লেও, অনেক দেশের গড় আয়ু এখনো অনেক কম। আবার অনেক দেশকে রীতিমতো যুদ্ধ করে গড় আয়ু বাড়াতে হয়েছে। তাদের লড়তে হয়েছে সাধারণ অসুখ থেকে শুরু করে মহামারি রোগ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা যুদ্ধের মতো বিষয়গুলোর সাথে। বর্তমানে প্রতিবছর সারা পৃথিবীতে মোট মৃত্যুর ০.৫ শতাংশ ঘটে সন্ত্রাসী হামলা, যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে।
বিপরীতে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকার পরও এখনো বিপুল সংখ্যক মানুষ অল্প বয়সেই মারা যাচ্ছেন, এদের মধ্যে অনেকের আবার মৃত্যু ঘটছে নিরাময় যোগ্য রোগে! যখন একজন মানুষের মৃত্যু ঘটে, তখন সবাই জানতে চায় কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে। প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। আপনি কী জানেন এই মৃত্যুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ কোনটি?
যেসব রোগের কারণে অধিক সংখ্যক মানুষের মৃত্যু ঘটছে
২০১৭ সালে সারাবিশ্বে প্রায় ৫৬ মিলিয়ন মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। যা ১৯৯০ সালের চেয়ে ১০ মিলিয়ন বেশি। তবে বেশি হওয়ার পেছনে বড় কারণ হচ্ছে নব্বইয়ের দশকের চেয়ে বর্তমান বিশ্বের জনসংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু ৫৬ মিলিয়নের মধ্যে ৭০ শতাংশ মানুষেরই মৃত্যু হয়েছে অসংক্রামক ও দুরারোগ্য রোগে। এই রোগগুলো সাধারণত একজন থেকে আরেকজনের দেহে ছড়িয়ে পড়ে না। কিন্তু এগুলো খুব ধীরে ধীরে মানবদেহে বাসা বাঁধে।
বর্তমানে মানুষের মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ হৃদরোগ। এই রোগের কারণেই সারাবিশ্বে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ মৃত্যুবরণ করছেন। হৃদরোগের কারণে সাধারণত হৃদপিণ্ড ও ধমনী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে এই রোগের কারণে। ২০১৬ সালে ইনস্টিটিউট ফর হেলথ ম্যাট্রিকস অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন (আইএইচএমই) এর গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ রিপোর্ট অনুযায়ী, সারাবিশ্বে শতকরা ৩২.৩ ভাগ মানুষের মৃত্যুর কারণ হৃদরোগ।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ক্যান্সার। শতকরা ১৬.৩ ভাগ মানুষের মৃত্যুর কারণ ক্যান্সার। ফুসফুস জনিত রোগে মানুষের মৃত্যুর হার শতকরা ৬.৫ ভাগ। এর পরের অবস্থানেই রয়েছে ডায়াবেটিস। সারাবিশ্বের ৫.৮ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিসের কারণে মৃত্যুবরণ করছেন। এছাড়া ডিমেনশিয়া বা মস্তিষ্কের রক্তনালীর রোগ, ডায়রিয়া জনিত রোগ ও লিভার জনিত রোগে যথাক্রমে ৪.৪ শতাংশ, ৩ শতাংশ ও ২.৩ শতাংশ মানুষ মারা যাচ্ছে। মানুষের মৃত্যুর আরেকটি কারণ হলো সড়ক দুর্ঘটনা। সারাবিশ্বে ২.৫ শতাংশ মানুষ সড়ক দুর্ঘটনা থেকে পাওয়া চোটে মৃত্যুবরণ করেন।
নিরাময় যোগ্য রোগে মৃত্যুর পরিমাণও কম নয়
হৃদরোগ বা ক্যান্সারের কারণে সারাবিশ্বে বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর কারণ এর জটিল চিকিৎসা পদ্ধতি ও আরোগ্য লাভের অনিশ্চয়তা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, এখনো অনেক নিরাময় যোগ্য রোগেও প্রচুর সংখ্যক মানুষ মারা যাচ্ছেন। ২০১৭ সালে শুধুমাত্র ডায়রিয়ার কারণেই সারাবিশ্বে ১৬ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এবং এখনো এই রোগটি মানুষের মৃত্যুর ১০টি বড় কারণের মধ্যে একটি।
এমনকি কোনো কোনো দেশে ডায়রিয়া জনিত রোগেই সর্বোচ্চ পরিমাণ মানুষ মারা যায়। ডায়রিয়ার পাশাপাশি শিশুমৃত্যুর হার এখনো অনেক বেশি। সাধারণত জন্মের ২৮ দিনের মধ্যে কোনো নবজাতক মারা গেলে, তাদের এই হিসাবের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১৭ সালে সারাবিশ্বে মোট ১৮ লাখ নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় প্রতিবছরই এই পরিমাণ শিশু মারা যাচ্ছে, যেটা খুবই হতাশাজনক।
তবে দেশভেদে শিশুমৃত্যুর হার ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। উন্নত দেশের তুলনায় অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিশুমৃত্যুর হার অনেক বেশি। যেমন জাপানে প্রতি এক হাজার নবজাতকের মধ্যে মাত্র একজনের মৃত্যু হয়ে থাকে, যেখানে গরীব দেশগুলোর প্রতি ২০ জন নবজাতকের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়। তবে অসুখের বাইরে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। এটি অবশ্য ধনী-গরীব সকল রাষ্ট্রেই সমান তালে হয়ে থাকে।
২০১৭ সালে সবমিলিয়ে ১২ লাখ মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ দিয়েছেন। গত কয়েক দশকে উন্নত দেশগুলোতে সড়কে দুর্ঘটনার হার অনেক কমলেও, অন্যান্য দেশে অবস্থার খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। তবে অবাক করা বিষয় হলো, অপমৃত্যুর দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আত্মহত্যা। খুনের চেয়েও সারাবিশ্বে আত্মহত্যার পরিমাণ অনেক বেশি। এক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে যুক্তরাজ্য। এখানে অন্যান্য দেশের তুলনায় আত্মহত্যার পরিমাণ ১৬ গুণ বেশি। আর যুক্তরাজ্যে যারা আত্মঘাতী হচ্ছেন তাদের গড় বয়স ২০-৪০ বছর।
মৃত্যুর ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক প্রভাব
কোনো একটি দেশের মৃত্যু হার হ্রাস পাওয়ার সাথে সেই দেশের উন্নতির একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আগে সংক্রামক রোগগুলো মৃত্যুর জন্য সবচেয়ে দায়ী ছিল। ১৯৯০ সালের দিকেও প্রতি তিনজন মানুষের মধ্যে একজনের মৃত্যু হতো ছোয়াঁচে ও সংক্রামক ব্যাধির কারণে। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে এই হার পাঁচজনের মধ্যে একজনে এসে দাঁড়িয়েছে।
ঊনিশ শতকে সংক্রামক রোগে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ছোট বাচ্চাদের। সেই সময় প্রতি তিনজন শিশুর মধ্যে একজন বয়স পাঁচ বছর হওয়ার আগেই কোনো না কোনো সংক্রামক রোগে আক্রাক্ত হয়ে মারা যেতো। তবে বর্তমান সময়ে এসে এই হার অনেক কমে গিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিনের আবিষ্কার শিশুমৃত্যু হার অনেকাংশে কমিয়ে দিয়েছে। সেই সাথে পুষ্টি, নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নতির কারণেও বাচ্চাদের মৃত্যুর পরিমাণ এখন অনেক কম।
তবে স্বাস্থ্যখাতের উন্নতির জন্য প্রতিটি রাষ্ট্রের সরকারকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দিতে হয়। উন্নত দেশগুলোতে সেটা সম্ভব হলেও অনুন্নত তথা গরীব দেশগুলোতে এখনো সেটা সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণেই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা জাপানে নবজাতক শিশুর মৃত্যুর ঘটনা নেই বললেই চলে।
বিপরীতে আফ্রিকা মহাদেশের সিয়েরা লিওন, নাইজেরিয়া ও কঙ্গোর মতো দেশগুলোর বর্তমান শিশুমৃত্যু হার গত শতকের প্রথম দিকে যুক্তরাজ্য ও সুইডেনের শিশুমৃত্যু হারের সমান। পৃথিবীর দুই অংশে এই বিরাট পার্থক্যের পেছনে বড় কারণ অর্থনীতি। যুক্তরাজ্য কিংবা সুইডেন স্বাস্থ্যখাতে প্রচুর পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে পারলেও, সিয়েরা লিওন বা কঙ্গোর পক্ষে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে এখনো আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে শিশুমৃত্যু হার সর্বাধিক।
স্বাস্থ্যখাতের উন্নতিকে ম্লান করে দিচ্ছে মাদক
স্বাস্থ্যসেবায় সারা পৃথিবী জুড়েই অভাবনীয় উন্নতি ঘটেছে। কিন্তু এই উন্নতিকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে মাদক। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই মাদকের ভয়াবহতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। মাদকের কারণে উন্নত দেশ থেকে শুরু করে অনুন্নত, সবখানেই সামাজিক, অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যখাতে বেশ বাজে প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের বড় একটি অংশ মাদকের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলার খুব বেশি সুযোগ নেই। কিন্তু গত কয়েক বছরে সেখানকার গড় আয়ু কিছুটা কমেছে। আর এর জন্য দায়ী মাদক। মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অনেক নারী মা হওয়ার পরপরই মারা যাচ্ছে। যেটি মার্কিন প্রশাসনকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে।
বাংলাদেশে যে রোগগুলোতে বেশি মৃত্যু ঘটে
সারাবিশ্বে হৃদরোগের কারণে সর্বোচ্চ পরিমাণ মৃত্যু ঘটলেও বাংলাদেশে মস্তিষ্কের রক্তনালীর রোগ বা সেরিব্রোভাসকুলার ডিজিজ (স্টোক, ডিমেনশিয়া ইত্যাদি) রোগের কারণে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ ম্যাট্রিকস অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন, বিশ্বব্যাংক ও ল্যানসেট কর্তৃক প্রকাশিত এক রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে।
২০১৫ সালে দেশে বিভিন্ন রোগে যতজন মৃত্যুবরণ করেছেন তার মধ্যে ১৬ শতাংশ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে মস্তিষ্কের রক্তনালীর রোগে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে হৃদরোগ। এই রোগে দেশে শতকরা ১৪.৩ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়। এর পরের তিনটি অবস্থানে রয়েছে দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসতন্ত্রের রোগ (সিওপিডি), ডায়াবেটিস ও শ্বাসতন্ত্রের নিচের অংশের সংক্রমণ (লোয়ার রেসপিরেটরি ইনফেকশন)।
বর্তমানে দেশে পুরুষের গড় আয়ু ৬৯ বছর এবং নারীদের গড় আয়ু ৭৩ বছর। তবে গড় আয়ু বাড়ার সাথে সাথে বেড়ে চলছে মস্তিষ্কের রক্তনালীর রোগ। বিশেষ বয়স যখন ৬০ বছর পার হয় তখনই এর ঝুঁকি বাড়ছে। বাংলাদেশে যে পাঁচটি রোগের কারণে সর্বাধিক মানুষ মারা যাচ্ছে, সে রোগগুলো হওয়ার পেছনে উচ্চ রক্তচাপ, বায়ুদূষণ, বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্র বস্তুকণা, রক্তে অতিরিক্ত শর্করা এবং ধূমপান দায়ী।
বিশেষ করে সেরিব্রোভাসকুলার ডিজিজ (বিশেষ করে স্ট্রোক) হওয়ার পেছনে সবচেয়ে দায়ী ধূমপান। এছাড়া উল্লেখিত পাঁচটি রোগের সবগুলো দীর্ঘস্থায়ী এবং চিকিৎসার ব্যয়ও অনেক বেশি। সে কারণে এই রোগগুলো প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আর এর জন্য ধূমপান ও বায়ুদূষণের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা জরুরী। এর বাইরে ব্যক্তিগত সচেতনতা প্রয়োজন। তবে আশার কথা হলো বাংলাদেশে গড় আয়ু বাড়ার সাথে সাথে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু রোধে দারুণ অগ্রগতি হয়েছে।
পরিশেষে যেটা বলা যায়, সকল জীবকেই তার মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। বর্তমানে একটি পশু পাখির করুণ মৃত্যুও গ্রহণযোগ্য নয়। সেখানে মানুষ হিসেবে আমরা অবশ্যই ভালোভাবে মৃত্যুবরণ করতে চাইবো, সেটাই স্বাভাবিক। তবে জীবনকে উপভোগ্য করার পাশাপাশি সুস্থ সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য চাই সুশৃঙ্খল জীবন।
যে সকল রোগে সারাবিশ্বে সর্বাধিক মানুষের মৃত্যু ঘটছে, সেগুলো সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি নিজেকে সজাগ থাকতে হবে। এগুলোর প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধের উপর জোর দিতে হবে। কারণ বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে হৃদরোগ বা ক্যান্সার আক্রান্ত একজন ব্যক্তির চিকিৎসা ব্যয় বহন করা বেশ কষ্টসাধ্য। যদি কোনো পরিবারের পক্ষে সেটা সম্ভবও হয় তবু সেই রোগীকে বাঁচানো যাবে এমন নিশ্চয়তা খুবই কম পাওয়া যায়। ফলে হৃদরোগ বা ক্যান্সার একজন মানুষের জীবনকে কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারকে করে দিচ্ছে একেবারে নিঃস্ব।