১৯৪২ সালের ৩ জুন ব্যাটল অফ মিডওয়ে শুরু হয়। ২য় পর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এডমিরাল নাগুমোর মিডওয়ে স্ট্রাইক ফোর্স রওনা দিয়েছে খবর পেয়ে মার্কিনিরা প্রতিদিন তাদের PBY গোয়েন্দা বিমানগুলোকে এরিয়াল রিকনসিস মিশনে পাঠাতো। ৩ জুন সকাল ৯টার সময় পেট্রোল স্কোয়াড্রন VP-44 এর একটি PBY বিমান জাপানি নৌবহরকে মিডওয়ে দ্বীপের ৯৩০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে (west-southwest) অবস্থান শনাক্ত করে। কিন্তু তিনি ভুলবশত একে শত্রুর ‘Main Body‘ তথা মূল ক্যারিয়ার স্ট্রাইক ফোর্স হিসেবে রেডিওতে রিপোর্ট করেন। আসলে সেগুলো ছিল এডমিরাল তানাকার ট্রান্সপোর্ট গ্রুপের সৈনিক পরিবহনের বড় বড় জাহাজ যা এডমিরাল কন্ডোর ‘মিডওয়ে ইনভেশন ফোর্স’ এর অন্তর্ভুক্ত।
এডমিরাল নাগুমোর ক্যারিয়ার স্ট্রাইক ফোর্স মিডওয়ের রেডিও স্টেশন, কোস্টাল ডিফেন্স ব্যাটারি, মেশিনগান বাংকারগুলো ধ্বংস করার পর এই বাহিনী মিডওয়ে দখল করতে সৈন্য নামাবে। সেই বিমানের মেসেজ পেয়ে দুপুর সাড়ে বারোটায় ৯টি বি-১৭ বোম্বার টেকঅফ করে। তিন ঘন্টা পর তারা মিডওয়ে দ্বীপের ১,০৬০ কিলোমিটার পশ্চিমে ইনভেশন ফোর্সের উপর হামলা চালায়। প্রচন্ড জাপানি এন্টি-এয়ারক্রাফট গানের হামলার মুখে বিমানগুলো ঠিকমতো বোমা ফেলতে ব্যর্থ হয়। যদিও মার্কিন পাইলটরা দাবি করে যে তারা ৪টি জাহাজে আঘাত করেছে, কিন্তু তাদের এই দাবি মিথ্যা ছিল।
এডমিরাল ইয়ামামোতোর ধারণাই সঠিক, মার্কিন ল্যান্ডবেজড হেভি বোম্বারগুলো জাপানি ক্যারিয়ারের জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারবে না। কিন্তু এডমিরাল কন্ডো রেডিও সাইলেন্স বজায় রাখতে গিয়ে নাগুমোকে হামলার কথা জানাননি। ফলে তার ধারণাই ছিল না যে মার্কিনিরা সতর্ক হয়ে গেছে। এরই মধ্যে দুপুর একটার সময় আরেকটি PBY বিমান অরক্ষিত অবস্থায় পেয়ে Akebono Maru নামে একটি জাপানি অয়েল ট্যাংকারকে টর্পেডো হামলা করে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এটিই ছিল পুরো মিডওয়ে যুদ্ধে একমাত্র সফল আমেরিকান টর্পেডো হামলা।
শিডিউল অনুযায়ী পিছিয়ে থাকায় পরদিন ৪ জুন ভোর সাড়ে চারটায় এডমিরাল নাগুমো মিডওয়ে দ্বীপের উদ্দেশ্যে প্রথম হামলা শুরু করেন। জাপানি এয়ার গ্রুপের লেফটেন্যান্ট কমান্ডার গেন্দা নাগুমোকে পরামর্শ দেন তিনি যেন তরুণ অনভিজ্ঞ পাইলটদের মিডওয়ে দ্বীপে হামলা করতে পাঠিয়ে অভিজ্ঞদের মার্কিন ক্যারিয়ারে হামলা করতে রিজার্ভ রাখেন। কিন্তু তিনি চাচ্ছিলেন অভিজ্ঞ পাইলটদের দ্বারা মিডওয়ে নিখুঁতভাবে হামলা করে এর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গুঁড়িয়ে দিতে। ফলে এডমিরাল কন্ডোর মিডওয়ে ইনভেশন ফোর্স মার্কিন ক্যারিয়ার আসার দ্বীপে সৈন্য নামিয়ে দখল করে নেবে। মূলত আসন্ন মার্কিন হামলার সময় জাপানি সেনাদের নিরাপত্তার জন্য এডমিরাল নাগুমো এটা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পার্ল হারবার আক্রমণে নেতৃত্ব দেয়া অভিজ্ঞ পাইলট কমান্ডার গেন্দার পরামর্শ মেনে নিতে বাধ্য হলেন।
আইচি D3A ডাইভ বোম্বার, নাকাজিমা B5N টর্পেডো বোম্বার ও মিতসুবিসি A6M ‘জিরো’ ফাইটার- এই তিন ধরনের বিমান ৩৬টি করে মোট ১০৮টি বিমান চারটি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার থেকে টেকঅফ করে। একই সময়ে এডমিরাল নাগুমো ৮টি বিমানকে এরিয়াল রিকনসিস মিশনে চারপাশে অনুসন্ধানে পাঠান। কারণ জাপানিরা ততক্ষণে খবর পেয়েছে যে এডমিরাল ইয়ামামোতো অনুমান অনুযায়ী মার্কিন ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ পার্ল হারবার থেকে বেড়িয়ে পড়েছে। এই ৮টি বিমানের একটি বিমান কারিগরি জটিলতার কারণে ৩০ মিনিট পরে আকাশে ওড়ে। এই ৩০ মিনিট দেরি করার মাশুল জাপানিরা কতটা চরমভাবে দিতে বাধ্য হয়েছে যা পরবর্তীতে আলোচনা করা হবে।
জাপানিদের ক্যারিয়ারে এমনিতেই পর্যাপ্তের চেয়ে কম বিমান ছিল। তাই রিকনসিস মিশনে যথেষ্ট বিমান পাঠাতে পারেননি নাগুমো। যে ৮টি বিমান পাঠিয়েছেন তারাও খারাপ আবহাওয়ার কারণে উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিমে ঠিকমতো সার্চ করতে পারেনি। অন্যদিকে জাপানি সার্চ প্লেনগুলো যখন টেকঅফ করছিল তখন নতুন সার্চ প্যাটার্ন অনুযায়ী দ্বিতীয় দফা সার্চের জন্য ১১টি PBY বিমান আকাশে উড়েছিল মিডওয়ে থেকে। ফলে যুদ্ধে আবারও দুই পা এগিয়ে থাকার সুবিধা পায় মার্কিনিরা। ভোর সাড়ে পাঁচটায় একটি PBY বিমান জাপানি ক্যারিয়ার ফোর্সের অবস্থান শনাক্ত করে মার্কিন ক্যারিয়ারে রিপোর্ট প্রেরণ করে। ১০ মিনিট পরই আরেকটি PBY বিমান আগত জাপানি এয়ারস্ট্রাইক গ্রুপকে শনাক্ত করে মিডওয়ে ঘাঁটিকে সতর্ক করে।
মিডওয়ের রাডার স্টেশনও জাপানি বিমান বহর শনাক্ত করতেই মিডওয়ের ফাইটার ও বোম্বারগুলো স্ক্যাম্বল মিশন নিয়ে টেকঅফ করে। কিন্তু স্ক্যাম্বল মিশন তো শত্রু বিমান ধ্বংসের জন্য, এখানে বোমারু বিমান করবে কী? আসলে জাপানি আক্রমণের মুখে বি-১৭, বি-২৬ বোমারু বিমানগুলো গ্রাউন্ডে স্রেফ টার্গেট হিসেবে অযথা ধ্বংস হবে। তাই তাদের এস্কর্ট ফাইটারগুলোকে জাপানি এয়ার স্ট্রাইক ঠেকাতে এবং বোম্বারগুলোকে অরক্ষিত জাপানি ক্যারিয়ারে হামলা করতে পাঠানো হয়। এটি মন্দের ভালো হলেও কম বিপদজনক ছিল না। কেননা এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারে এস্কর্ট ফাইটার ছাড়া বোম্বারগুলোকে পাঠালে তারা ক্যারিয়ারের কমব্যাট এয়ার পেট্রোল (CAP) গ্রুপের (পর্যায়ক্রমে) সর্বক্ষণ আকাশে থাকা জিরো ফাইটারগুলোর সহজ শিকার হবে। তারপরও মার্কিনিরা ঝুঁকি নিয়েছিল, কেননা তাদের ক্যারিয়ার স্ট্রাইক ফোর্স এখনও মিডওয়েতে এসে পৌঁছায়নি।
সকাল সোয়া ছয়টায় জাপানি আক্রমণ আরম্ভ হয়। তারা মিডওয়ের আকাশ প্রতিরক্ষার মেশিনগান-কামানগুলোকে প্রথমে টার্গেট করে। তীব্র বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় রানওয়ে, বিমানঘাঁটি, এন্টি এয়ারক্রাফট কামান ও মেশিনগান বাংকার। মেজর ফ্লয়েড পার্কসের ২৬টি F4F ও F2A যুদ্ধবিমান শত্রু বিমানবহরকে বাধা দিতে এসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। চারটি জাপানি টর্পেডো বোম্বার ও ১টি জিরো ফাইটার ধ্বংস করার বিনিময়ে মার্কিনিদের ১৫টি বিমান আকাশযুদ্ধে ধ্বংস হয়ে। বাকি যা ছিল সেগুলো এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে মাত্র দুটো আকাশে উড়বার মতো অবস্থায় ছিল। অর্থাৎ হামলা ঠেকাতে গিয়ে ২৬ বিমানের মধ্যে দুই ডজন বিমান হয় ধ্বংস নয়তো বাতিল হয়ে গেছে!
মূলত জাপানি A6M বিমান ওরফে জিরো ফাইটারগুলোর ক্ষিপ্রগতি ও ম্যানুভারিটির কারণে মার্কিনিরা প্রথমেই এত বড় ক্ষতির শিকার হয়। অন্যদিকে জাপানি ক্যারিয়ারের উপর হামলা করতে যাওয়া মার্কিন বিমানবহর ৩টি জাপানি ফাইটার ভূপাতিত করার বিনিময়ে এন্টি এয়ারক্রাফট মেশিনগানের গুলিতে ৪ ধরনের ১৭টি বিমান হারায়। ফলে মার্কিনিরা তাদের এক্সট্রা ফোর্সের ১২৬টি বিমানের উল্লেখযোগ্য অংশ যুদ্ধের শুরুতেই হারায়।
অপরদিকে মিডওয়ে দ্বীপে হামলার সময় ৫টি জাপানি বিমান ছাড়া ভূমিতে থাকা মার্কিন এন্টি-এয়ারক্রাফট গানের গুলিতে আরো জাপানি তিনটি ভূপাতিত হয় এবং বেশ কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ফেরার পথে সাগরে ক্রাশ করে। অর্থাৎ মোট ১০৮ টি জাপানি বিমানের মধ্যে ১১টি ধ্বংস, ১৪টি মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, ২৯টি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এডমিরাল নাগুমো তার প্রত্যাশামত মিডওয়ে ঘাঁটির ক্ষয়ক্ষতি করতে পারেননি। বিমান বিধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এখনও শক্তিশালী। যেকোনো মার্কিন বিমান এই ঘাঁটিতে নেমে রিফুয়েলিং করতে সক্ষম। এমন অবস্থায় ৭ জুন প্রত্যাশিত ইনভেশন সফল করতে চাইলে আরেকবার বিমান হামলা করা অবশ্যই প্রয়োজন — এই মর্মে রিপোর্ট দেন জাপানি পাইলটগণ। কিন্তু এডমিরাল ইয়ামামোতোর নির্দেশ ছিল অবশিষ্ট দুই স্কোয়াড্রন বিমানসহ মিডওয়ে থেকে ফিরে আসা জাপানি বিমানগুলোকে এন্টিশিপ অপারেশনের জন্য তৈরি রাখতে হবে যেন আমেরিকান ক্যারিয়ার শনাক্ত হওয়া মাত্রই আক্রমণ শুরু করতে পারে। কিন্তু একটি বিশেষ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এডমিরাল নাগুমো ইয়ামামোতোর নির্দেশ অমান্য করেন।
জাপানি বিমান হামলা থেকে বোম্বারগুলোকে বাঁচাতে তাদেরকে ক্যারিয়ারের আক্রমণ করতে পাঠানো হয়েছিল তা আগেই বলা হয়েছে। এদের সাথে পর্যাপ্ত এস্কর্ট বিমান ছিল না। তাই এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার ইউএসএস হরনেট থেকে ৬টি টিবিএফ অ্যাভেঞ্জার ফাইটার জরুরি ভিত্তিতে পাঠানো হয় যার পাঁচটিই ধ্বংস হয়। লেফটেন্যান্ট জেমস মুরি এর বি-২৬ বোম্বারটি জিরো ফাইটারের গুলি থেকে বাঁচতে খুবই নিচে নেমে আসেন এবং জাপানি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার আকাগির দিকে ছুটে যেতে শুরু করেন। এ সময় বোম্বারটি আকাগির এন্টি এয়ারক্রাফট গানের গুলিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সোজা ব্রিজ (যেখান থেকে জাহাজ চালান ক্যাপ্টেন) এর দিকে ছুটে যায়।
এ সময় ব্রিজে থাকা এডমিরাল নাগুমো ও তার স্টাফরা অল্পের জন্য বেঁচে যান। তিনি ধরে নেন যে মার্কিনিরাও এখন জাপানিদের মতো কামিকাজি হামলা করতে চাচ্ছে! আকাগির উপর লেফটেন্যান্ট জেমস মুরির অনিচ্ছাকৃত হামলায় ক্যারিয়ারের দুজন জাপানি নিহত হন। নাগুমো এবার মার্কিন বোমারু বিমানগুলোকে হুমকি হিসেবে দেখতে শুরু করেন। তার জানা ছিল না গতকাল এডমিরাল কন্ডোর উপর হামলায় তার কোনো ক্ষতিই হয়নি। তবে ভারী বোমারু বিমান দিয়ে এভাবে কামিকাজি হামলা করলে এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারের বারোটা বেজে যাবে।
এদিকে সেই ৮টি রিকনসিস বিমানের ৭টি ফিরে এসেছে কিন্তু মার্কিন এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারের খোঁজ পায়নি তারা। ৮ম বিমানটি এখনও রিপোর্ট পাঠায়নি। তাই নাগুমো দ্বিতীয়বার মিডওয়ে দ্বীপে হামলার সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য সকাল সোয়া সাতটায় নিজেদের রিজার্ভ বিমানগুলোতে জাহাজ বিধ্বংসী অস্ত্র খুলে গ্রাউন্ড অ্যাটাকের অস্ত্র লাগানোর নির্দেশ দেন এডমিরাল নাগুমো। একশোর বেশি বিমানে অস্ত্র লাগানোর কাজ যখন মাঝামাঝি পর্যায়ে, তখন পৌনে আটটার সময় খবর আসলো ৮ম বিমান থেকে। এই রিকনসিস বিমানটি কারিগরি সমস্যার কারণে ৩০ মিনিট দেরিতে টেকঅফ করেছিল। সেটিই খুঁজে পেয়েছে টাস্কফোর্স ১৭ এর একমাত্র মার্কিন ক্যারিয়ার ইয়র্কটাউনকে!
অপর ক্যারিয়ার কোথায় জানতে চেয়ে পুনরায় রেডিও মেসেজ পাঠান নাগুমো। তবে সেখানে একটিই ক্যারিয়ার ছিল, বিমানটি খবর নিশ্চিত করে আরো বিশ মিনিট পর। কিন্তু নাগুমোর হাতে তখন যথেষ্ট বিমান প্রস্তুত অবস্থায় ছিল না। তাই সকাল আটটার মিডওয়ে দ্বীপে পুনরায় হামলার সিদ্ধান্ত নিয়ে গ্রাউন্ড অ্যাটাকের জন্য জাহাজ বিধ্বংসী অস্ত্র লাগানোর নির্দেশ দেন নাগুমো। বিমানগুলোকে এন্টিশিপ অপারেশনের জন্য উপযোগী করতে ও মিডওয়ে হামলা করে ফিরে আসা বিমানগুলোকে ল্যান্ড করার কাজ শেষ করতে আনুমানিক আরো ৪০ মিনিট সময় লাগবে।
জাপানি সেকেন্ড ক্যারিয়ার ডিভিশনের রিয়ার এডমিরাল ইয়ামাগুচি হাতে এখন যা বিমান আছে তা দিয়েই কোনোরকমে হামলা করতে পরামর্শ দেন যা জাপানি ক্যারিয়ার যুদ্ধের মূলনীতির বিপরীত। শত্রুর উপর নিজের সমস্ত বিমান শক্তি ব্যবহার করে একবারে একটিমাত্র হামলা করাটাই জাপানের নিয়ম। কিন্তু এডমিরাল নাগুমো পড়েছেন মস্ত বড় সংকটে। মিডওয়ে হামলা থেকে ফেরত আসা বিমানগুলো একের পর ল্যান্ড করছে। অন্যদিকে যেসব রিজার্ভ বিমানে মিডওয়েতে আবার হামলার জন্য গ্রাউন্ড অ্যাটাকের অস্ত্র লাগানো হয়েছিল তারাও টেকঅফ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তাছাড়া কমব্যাট এয়ার পেট্রোল (CAP) ও রিকনসিস গ্রুপের গোয়েন্দা বিমানগুলো তো আকাশে একটু পর পর ওঠানামা করছেই। ফলে জাপানি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারগুলোর ফ্লাইট ডেকে প্রচন্ড ব্যস্ততা।
এরই মধ্যে মার্কিন বোমারু বিমানগুলো আরেক দফা হামলা চালায়। এতে ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বটে, তবে যুদ্ধ প্রস্তুতির ব্যাঘাত ঘটে। দ্বিতীয় হামলা ইঙ্গিত করে যে আবারও মিডওয়েতে হামলা করা অতিমাত্রায় আবশ্যক। তবে এডমিরাল নাগুমো এবার তাদের ক্যারিয়ার যুদ্ধের মূলনীতি অনুসরণ করেন। তিনি মিডওয়ে বা মার্কিন ক্যারিয়ার কোনোটায় হামলা করতে ঐ মুহূর্তে বিমান পাঠাননি। বরং তৃতীয় অপশন হিসেবে অপর মার্কিন ক্যারিয়ারগুলোকে খুঁজতে দ্বিতীয় দফা রিকনসিস বিমান প্রেরণ করেন এবং সবগুলো বিমানকে এন্টিশিপ অপারেশনের জন্য প্রস্তুত করেন। এরই মধ্যে মিডওয়ে থেকে আসা PBY গোয়েন্দা বিমান জাপানিদের অবস্থান মার্কিন ক্যারিয়ারের কাছে প্রেরণ করে। ফলে সকাল আটটার মধ্যেই মার্কিন বিমানগুলো আকাশে উঠে গেছে! অন্যদিকে এখনও বেকায়দায় পড়ে আছে জাপানিরা!
(চলবে)
এই সিরিজের পূর্ববর্তী পর্বসমূহ
১) ব্যাটল অফ মিডওয়ে (পর্ব-১): যে কারণে মার্কিন বিমানঘাঁটিতে আক্রমণ করেছিল জাপান
২) ব্যাটল অফ মিডওয়ে (পর্ব-২): জাপান-যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ প্রস্তুতি