
ব্রুটাস নামটি পশ্চিমা বিশ্বে একরকম বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক। বলা যায় পশ্চিমের মীর জাফর। খ্রিষ্টপূর্ব ৪৯ সালে দিগ্বিজয় করে জুলিয়াস সিজার যখন রোমে ফেরেন, উদার হস্তে বিলিয়ে দেন যুদ্ধে জয় করা বিপুল ঐশ্বর্য। সাধারণ মানুষ ও সৈন্যদের সমর্থনে হাতে নেন কিছু অতি প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ। আর তখনই কিছু স্বার্থান্বেষী সিনেটর হিংস্রভাবে সিনেট ফ্লোরে হত্যা করে সিজারকে। এই চক্রান্তে প্রায় ৪০ জন সিনেটর অংশ নিলেও এদের মধ্য থেকে ব্রুটাসের নাম কুখ্যাত হয়ে উঠার বড় কারণ, তিনি ছিলেন সিজারের বেশ আস্থাভাজন ও কাছের বন্ধু। এমনকি এক যুদ্ধে সিজারের বিরুদ্ধে লড়ে হারার পরও ব্রুটাসকে ক্ষমা করে দেন সিজার। এরপরও ক্ষমতার লোভে ও ঈর্ষায় অন্ধ হয়ে ব্রুটাস নির্দয়ভাবে ছুরি চালায় সিজারের বুকে। অন্তত প্রচলিত গল্পটা এরকমই।
ইন এবং ইয়াং
চাইনিজ ইন-ইয়াং প্রতীকটি বেশ অর্থবহ। এর একটি অর্থ হলো, সব খারাপের মধ্যে কিছুটা হলেও ভালো আছে (ইন), আর সব ভালোর মাঝে আছে খারাপ (ইয়াং)। মানুষ হিসেবে আমাদের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি সবকিছুর সরলীকরণ করা। মানুষ চায় সকল গল্পে থাকবে একজন শুভ্র, বীর নায়ক আর তার বিপরীতে ঘৃণ্য ও দুশ্চরিত্রের খলনায়ক। বাস্তবতা অবশ্য এ রকম নয়। ইতিহাসের সত্যিকার চরিত্রগুলোর অবস্থান বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাদা-কালোর মাঝে এক ধূসর স্থানে। নায়ক-খলনায়কের অতি সাধারণ ছকে তাদেরকে ফেলা যাবে না। সিজার-ব্রুটাসের এই গল্প এর এক বড় উদাহরণ।

ইয়াং
সিজারের বেশিরভাগ সংস্কার ইতিবাচক হলেও এদের মধ্যে একটি ‘সংস্কার’ ছিল রোমের রিপাবলিক ব্যবস্থা ধ্বংস করে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। দীর্ঘ গৃহযুদ্ধে সিনেট-অনুগত বাহিনীকে পরাজিত করে সিজার যখন ক্ষমতায় আসেন, রোমান গণতন্ত্রের বয়স ততদিনে প্রায় ৫০০ বছর। এত দিন ধরে একটা প্রথা চলে আসলে যা হয়, গণতন্ত্র শুধু নির্বাচনের বিষয় ছিল না, এটি ছিল রোমান সামজ জীবনের অংশ।
এই প্রেক্ষাপটে শুরু হয় সিজারের রাজনৈতিক সংস্কার। প্রাথমিকভাবে তিনি ছিলেন বেশ সতর্ক। ক্ষমতা তার হাতে পুরোপুরি কেন্দ্রীভূত হলেও বাহ্যিকভাবে রিপাবলিকান রীতিনীতি বজায় রাখেন। রোমে আগের মতোই নির্বাচন হতে থাকে, সিনেটে অধিবেশন বসতে থাকে। অনেকটা স্বাধীনভাবে কাজ করে যেতে থাকেন নির্বাচিত প্রতিনিধি ও গভর্নররা।
আদতে ক্ষমতা কার হাতে এ নিয়ে রোমান অভিজাতদের (Patrician) কোনো সন্দেহ থাকার কথা না। তবে এক দিক দিয়ে সামরিক বাহিনী ছিল পরিপূর্ণভাবে সিজারের অনুগত, অপরদিকে সাধারণ মানুষের বিপুল সমর্থন ছিল সিজারের পক্ষে। মূলত এটি তার অর্থনৈতিক সংস্কার আর প্রখর ব্যক্তিগত ক্যারিশমা, এই দুয়ের ফল। সব মিলিয়ে এই বিপজ্জনক রাজনৈতিক সংস্কার ধীর ধীরে এগিয়ে যেতে থাকে।

কিন্তু সিজার অসহিষ্ণু হয়ে উঠতে শুরু করেন। খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ সালে তিনি নিজেকে ১০ বছরের জন্য Dictator ঘোষণা করেন। Dictator শব্দটি বর্তমানে বেশ নেতিবাচক হলেও তখন এর মানে ছিল ভিন্ন। রোমের ক্রান্তিকালে, মূলত গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধের সময়ে, রোমানরা স্বেচ্ছায় সকল নির্বাহী ক্ষমতা ন্যস্ত করত একজন মানুষের হাতে- Dictator।
কিন্তু Dictator এর সময়কাল সাধারণত ছিল মাত্র ৬ মাস, এবং আগের সকল Dictator তাদের সময় শেষ হওয়া মাত্রই ক্ষমতা স্বেচ্ছায় নির্বাচনী প্রতিনিধিদের হাতে ফিরিয়ে দেন। উল্লেখ্য, এভাবে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করার রোমান রীতি বেশ অভাবনীয় একটা ব্যাপার। প্রাচীন বিশ্বে (এমনকি আধুনিক কালেও অনেক দেশে) ক্ষমতা হস্তান্তর ছিল রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক একটি মুহূর্ত, রাজার মৃত্যুর পর গৃহযুদ্ধ লাগাটা ছিল নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার। বেশ কিছু প্রাচীন সভ্যতার পতন ঘটে গৃহযুদ্ধের হাত ধরে।
এরকম প্রেক্ষাপটে রোমের রাজনৈতিক ব্যবস্থা, বিশেষ করে এর কয়েক শতাব্দী ব্যাপী অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেশীদের তুলনায় ছিল রোমের সবচেয়ে বড় অস্ত্র।
কিন্তু সিজার ছিলেন ভিন্ন ধাঁচের। ১০ বছরে ক্ষান্ত না হয়ে কিছু দিন পরই তিনি নিজেকে আজীবনের জন্য Dictator ঘোষণা করেন। একইসাথে ঔদ্ধত্য ও ‘রাজা’ সুলভ আচরণের প্রকাশ পেতে থাকে তার মধ্যে। প্রাচীন রোমানদের কাছে রাজা ছিল অত্যন্ত ঘৃণিত শব্দ। কেন সেই ব্যাখ্যায় পরে আসছি।
পরপর তিনটি ঘটনা ঘটে, যাতে সিজার নিজেকে রাজা ঘোষণা করতে চাইছেন সে গুজবের পালে হাওয়া লাগে। একদিন একদল সিনেটর দেখা করতে গেলে সিজার উঠে দাঁড়াননি, যেটা ছিল প্রথা বিরোধী। আরেকদিন সিজার রাস্তা দিয়ে যাবার সময় কিছু সাধারণ মানুষ চিৎকার করে তাকে রাজা (Rex) বলে ডাক দিলে উপস্থিত দুজন ট্রিবিউন তাদেরকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন। সিজার সে আদেশ বাতিল করেন, আর ট্রিবিউন দুজনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেন। ট্রিবিউনরা নির্বাচিত হতেন শুধুমাত্র Plebian বা সাধারণ মানুষদের ভোটে। আর রোমান গণতন্ত্রের একটা ধর্মীয় মাত্রা ছিল, প্রতিটি ট্রিবিউন ছিলেন পবিত্র বা অস্পৃশ্য। তাদের উপর সিজারের জবরদস্তি সাধারণ মানুষদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে, যাদের সমর্থন ছিল সিজারের ক্ষমতার অন্যতম স্তম্ভ।
তৃতীয় ঘটনাটি ঘটে লুপারকেলিয়া নামক এক উৎসবের দিনে। মঞ্চে সিজার ভাষণ দিচ্ছিলেন, খোশমেজাজী জনতা বারবার ফেটে পড়ছিল বিপুল করতালিতে। হঠাৎ করে সিজারের কাছের বন্ধু মার্ক এন্টোনি মঞ্চে উঠে সিজারের মাথায় একটি মুকুট পরিয়ে দেন। তৎক্ষণাৎ সম্পূর্ণ নিশ্চুপ হয়ে যায় উপস্থিত জনতা। সিজার মুকুটটি সরিয়ে দিলে সেটি আবার পরিয়ে দেন বেখেয়ালি এন্টোনি। আগের মতোই বিরাজ করতে থাকে পিনপতন নীরবতা। সিজারের চোখ এড়ায়নি এই ঘটনা। উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে ঘোষণা করেন, শুধুমাত্র জুপিটারই (দেবতা) হতে পারেন রোমের রাজা। এরপর মুকুটটি নিয়ে রাখেন পাশেই থাকা জুপিটারের মূর্তির পায়ের কাছে, মুহূর্তেই আবার করতালিতে ফেটে পড়ে উপস্থিত জনতা।
রোম জুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে এই ঘটনার কথা। অনেকের মতে পুরো ঘটনাটাই সিজারের সাজানো, উদ্দেশ্য নিজেকে তিনি আসলেই রাজা বলে ঘোষণা দিলে সাধারণ মানুষ তা সমর্থন করবে কিনা তা পরখ করা। মানুষ যে তা করবে না তার পরিষ্কার ইঙ্গিত মিললেও এতে সিজারের শেষ রক্ষা হয়নি। এ ঘটনার প্রায় এক মাস পর মৃত্যু ঘটে জুলিয়াস সিজারের।
সিজার এই ঘটনাগুলোকে যতটা হালকাভাবে নেন, তা থেকে বোঝা যায় রাজা হবার গুজবটি রোমানদের ভেতর কতটা তীব্র বিরূপ আবেগ সৃষ্টি করতে পারে তার মাত্রা বুঝতে তিনি ব্যর্থ হন। রাজতন্ত্র মানে শুধু মানুষের রাজনৈতিক ক্ষমতা কেড়ে নেয়া না, বরং Republicanism কে ঘিরে গড়ে উঠা শত বছরের প্রাচীন রীতিনীতি, প্রথা ও বিশ্বাস ব্যবস্থাকে উপড়ে ফেলা।
রোমান শাসনব্যবস্থা ছিল রোমানদের প্রচণ্ড গর্বের বিষয়, আশেপাশে থাকা বর্বরদের তুলনায় রোমান সভ্যতার উৎকর্ষতার বড় নিদর্শক। সিজার যতটা এগোতে থাকেন একনায়কতন্ত্রের দিকে, ততটা তার প্রতি মানুষের মনোভাব ভালোবাসা থেকে পরিণত হতে থাকে ঘৃণায়। এবং অন্য যে কারো চেয়ে, মার্কাস জুনিয়াস ব্রুটাসের জন্য এ কথা বিশেষভাবে প্রযোজ্য।
ইন
রোমের জন্ম হয় ৭৫৩ খ্রিষ্টপূর্বে। প্রথম ২৫০ বছর আর সবার মতোই রোম থাকে রাজাদের অধীনে। ৫১০ খ্রিষ্টপূর্বে পার্শ্ববর্তী এক রাজ্যের সাথে যুদ্ধে জড়ায় রোম। রোমের নেতৃত্বে তখন টারকুইনাস সুপারবাস নামক অত্যন্ত অজনপ্রিয় এক রাজা। এক সন্ধ্যায়, রোম তখন প্রায় ফাঁকা, সব সামর্থ্যবান পুরুষ যুদ্ধক্ষেত্রে, এমতাবস্থায় রাজপুত্র সেক্সটাস এক রোমান সিনেটরের বাড়িতে কোনো এক কাজে উপস্থিত হন। সিনেটরের স্ত্রী লুক্রেশিয়া রাজপুত্রকে অভ্যর্থনা জানান, কিন্তু তাকে দেখামাত্রই লালসা জেগে উঠে রাজপুত্রের মনে। সে রাতে লুক্রেশিয়ার শয়নকক্ষে উপস্থিত হন সেক্সটাস, লুক্রেশিয়া জেগে উঠলে তাকে জানান- হয় নিজেকে সমর্পন করতে হবে সেক্সটাসের কাছে, নয়তো সেক্সটাস লুক্রেশিয়া ও তার এক পুরুষ দাসকে হত্যা করবে। তাদের লাশকে নগ্ন করে আলিঙ্গনাবদ্ধ অবস্থায় রেখে দেবে এবং পুরো রোমকে লুক্রেশিয়ার দুশ্চরিত্রের কথা জানিয়ে দেবে।
পরদিন সকালে নিজের বাবা, স্বামী এবং সাক্ষী হিসেবে লুশাস নামক একজন অভিজাত সিনেটরকে বাসায় ডাকেন লুক্রেশিয়া। শান্তভাবে তাদের কাছে বর্ণনা করেন আগের রাতের ঘটনা, এবং বলা শেষ হবা মাত্র পাশের টেবিল থেকে ছুড়ি নিয়ে নিজের বুকে চালিয়ে দেন। শোকে স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনজন, কিছুক্ষণের মাঝেই যা প্রচণ্ড ক্ষোভে পরিণত হয়।
লুক্রেশিয়ার লাশের পাশে দাড়িয়ে তিন নাগরিক শপথ করেন রোমের বুক থেকে চিরতরে স্বৈরশাসক বিদায় করবেন তারা। এই বিপ্লবের নেতৃত্ব দেন লুশাস। এর অংশ হিসেবে একদিন রোমান ফোরামে রোমের সকল নাগরিককে জড় করে এক বিখ্যাত ভাষণ দেন তিনি- শুরু করেন যুবরাজের কাণ্ড দিয়ে, বর্ণনা করেন রোমান রাজাদের এবং সামগ্রিক রাজতন্ত্রীয় শাসনব্যবস্থার দুর্বলতা, এবং শেষ করেন রাজতন্ত্র পুরোপুরি বিলুপ্ত করার অনুরোধ করে।
রাজার উপর এমনিতেই রাগ জমে ছিল সাধারণ মানুষের, তার উপর লুক্রেশিয়ার এই করুণ পরিণতি তাদেরকে বিশেষভাবে নাড়া দেয়। প্রচণ্ড চিৎকার এবং হই-হল্লার মধ্যে দিয়ে লুশাসের প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানায় সাধারণ মানুষ। লুশাস তখন নেতৃত্ব দেন এক ঐতিহাসিক ঘটনার, পুরো রোম সেই ফোরামে দাঁড়িয়ে একসাথে শপথ করে যে রোমের বুকে কখনোই কোন স্বৈরশাসককে মেনে নেয়া হবে না।

সে বছরই রোমে অনুষ্ঠিত হয় রোমের ইতিহাসের প্রথম নির্বাচন। রিপাবলিকের সর্বোচ্চ পদ, কনসাল হিসেবে নির্বাচিত করা হয় দুজনকে (কোন একজন নাগরিকের হাতে যেন অতিরিক্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত না হয়)। এদের একজন হলেন লুক্রেশিয়ার স্বামী, আর আরেকজন সেই সিনেটর লুশাস। লুশাস জুনিয়াস ব্রুটাস।
রোমান রাজনীতি ছিল পরিবার কেন্দ্রিক। অভিজাত পরিবারগুলোর মধ্যে প্রতিনিয়ত চলত প্রভাব-প্রতিপত্তি আদায়ের শীতল লড়াই। শুধু ক্ষমতা আর অর্থই নয়, একটি রোমান অভিজাত পরিবারের সামাজিক অবস্থান অনেকাংশে নির্ভর করতো তাদের অতীতের উপর; পরিবারটি কতটা পুরোনো, পরিবারের উৎপত্তি কোথা থেকে, পূর্বপুরুষদের তালিকায় কতজন কনসাল বা জুদ্ধজয়ী সেনাপতি আছেন ইত্যাদি।
সমাজের একদম উপরের দিকে অবস্থান ছিল ব্রুটাস পরিবারের। আর দশটা পরিবার যেখানে কাদের কতজন কনসাল তা নিয়ে প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত, ব্রুটাস পরিবারের পূর্বপুরুষের তালিকায় তখন স্বয়ং রোমান গণতন্ত্রের জনক। শুধু লুশাসই নন, আরও বেশ কয়েকজন ব্রুটাস রোমের বিভিন্ন ক্রান্তিকালে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। রোমের অনেকের দৃষ্টিতে ব্রুটাস পরিবার ছিল রিপাবলিকের রক্ষক।
সিজারের জনপ্রিয়তা যত কমতে থাকে, মানুষের নজর ততটাই বাড়তে থাকে ব্রুটাস পরিবারের তৎকালীন কর্ণধার মার্কাস জুনিয়াস ব্রুটাসের উপর, পাবলিকলি এবং প্রাইভেটলি তিনি তখনও সিজারের মিত্র। ব্যক্তিগত অর্জন তেমন না হলেও, বর্ণিল পারিবারিক ইতিহাস ব্রুটাসকে নিয়ে আসে স্পটলাইটে। কুসংস্কারাচ্ছন্ন রোমানদের ভেতর এই ধারণা বদ্ধমূল হতে শুরু করে যে লুশাস জুনিয়াস ব্রুটাসের উত্তরসূরির পক্ষেই শুধু সম্ভব রোমকে তার এই নতুন রাজার হাত থেকে রক্ষা করা।
রোমের বিভিন্ন প্রান্তে হঠাৎ ব্রুটাসদের প্রশংসাসূচক গ্রাফিতি ভেসে উঠতে শুরু করে। সিজার বিরোধী গোষ্ঠী বার বার চেষ্টা করতে থাকে ব্রুটাসকে দলে টানার। চাপ বাড়তে থাকে ব্রুটাসের উপর। বেশ কিছু প্রভাবশালী সিনেটর সিজার-বিরোধী চক্রান্তকারীদের জানিয়ে দেন যে শুধুমাত্র ব্রুটাস যোগ দিলেই তারা এই চক্রান্তে যোগ দেবেন। এক প্রভাবশালী এক্স-কনসাল সিসারো ব্রুটাসকে চিঠি লিখেন সিজারের বলয় থেকে বেড়িয়ে আসতে। রোমে লুশাস ব্রুটাসের মূর্তির নিচে প্রতি রাতে কেউ একজন লিখে যেতে থাকে ‘ব্রুটাস পরিবার কি হারিয়ে গেছে?’
অবশেষে চক্রান্তে সম্মত হন ব্রুটাস। ভাগ্য লিখিত হয়ে যায় জুলিয়াস সিজারের।
উপসংহার
ব্রুটাসকে নির্দোষ প্রমাণ করা এ লেখার উদ্দেশ্য নয়। এখানে কোন নায়ক বা খলনায়ক নেই। তবে শুধু সিজার-ব্রুটাসই নয়, রোমান রিপাবলিকের পতনের এই সময়টা ছিল বর্ণিল ঐতিহাসিক চরিত্রে ভরপুর। সিসারো, ক্যাটো, পম্পেই, অগাস্টাস, ক্লিওপেট্রা, মার্ক এন্থনি- যাদের সবার জন্য এ কথা সমানভাবে প্রযোজ্য।