Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

হাম্মুরাবি কোড: ইতিহাসের পাতায় অমলিন ব্যাবিলনের ঐতিহাসিক নীতিমালা

“যদি একজন পুরুষ কোনো সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির একটি চোখ নষ্ট করে ফেলে, তাহলে তার শাস্তি হিসেবে চোখ তুলে ফেলা হবে। যদি সে সাধারণ কোনো জনগণের চোখ নষ্ট করে ফেলে, তাহলে এক মিনা পরিমাণ রূপা জরিমানা দিতে হবে। আর যদি সে কোনো সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির দাসের চোখ নষ্ট করে ফেলে, সেক্ষেত্রে সেই দাসের অর্ধেক ক্রয়মূল্য পরিমাণ জরিমানা ধার্য করা হবে।” 

এভাবে একের পর এক নীতিমালা খোঁদাই করে চলছে ব্যাবিলনের কারিগররা। এসব খোঁদাই করা কথার মাঝে কী উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে তা সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানে না তারা। কিন্তু হুকুম মতো তারা বিশাল পাথরের বুকে এরূপ বহু বাক্য লিপিবদ্ধ করে চলেছেন। তৎকালীন মেসোপটেমিয়ার প্রভাবশালী রাজা হাম্মুরাবির নির্দেশ বলে কথা! হাম্মুরাবি রাজা হিসেবে অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ ছিলেন। তিনি যখন ব্যাবিলনের সিংহাসনে অভিষিক্ত হন, তখন তার সাম্রাজ্যের ক্ষেত্রফল ছিল মাত্র ৫০ বর্গ মাইল। কিন্তু এই ক্ষুদ্র সাম্রাজ্যে রাজত্ব করার জন্য তিনি রাজা হননি। তাই একদিন সৈন্যসামন্ত নিয়ে রাজ্য জয়ে বের হলেন। একের পর এক যুদ্ধ জয় করে তিনি হয়ে গেলেন বিশাল সাম্রাজ্যের একচ্ছত্র অধিকারী।

কিন্তু কথায় আছে- ‘মুকুট জয় করার চেয়ে রক্ষা করা কঠিন।’ সে কথার সত্যতা হাড়ে হাড়ে টের পেলেন হাম্মুরাবি। কিন্তু এভাবে লাগাম ছেড়ে দিলে চলবে না। খুব দ্রুত একটা উপায় বের করা চাই। তিনি অতিসত্বর সভাসদদের সাথে পরামর্শ করতে বসলেন। শেষপর্যন্ত হাম্মুরাবি সিদ্ধান্ত নিলেন, তার দখলকৃত বিশাল সাম্রাজ্য রক্ষার্থে এদের এক সুতায় বাঁধতে হবে। কিন্তু নানা বৈচিত্র্যে বিচিত্র এই রাজ্যগুলোর কোনোকিছুতেই মিল ছিল না। তাই তিনি এক নতুন উপায় বের করলেন। সকল রাজ্যের জন্য বেশ কিছু সাধারণ আইন প্রণয়ন করলেন। এখন থেকে ব্যাবিলন এবং তার ক্ষুদ্র রাষ্ট্রসমূহ রাজা হাম্মুরাবি কর্তৃক প্রণীত নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হবে। হাম্মুরাবি দ্রুত ফরমান জারি করলেন। রাজ্যে রাজ্যে ঢোল পিটিয়ে সেই ফরমান জনসাধারণের নিকট প্রচার হতে থাকলো। ব্যাবিলনবাসী বেশ কৌতূহল নিয়ে সেই ফরমান শুনতে লাগলো। আর এদিকে ‘ঠক ঠক’ ধাতব শব্দে খোঁদাই হতে থাকলো সেই নীতিমালার স্থায়ী দলিল। গড়ে উঠতে থাকলো পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন আইন ‘হাম্মুরাবি কোড’।

কে ছিলেন রাজা হাম্মুরাবি?

রাজা হাম্মুরাবি; Source: History

হাম্মুরাবির ঐতিহাসিক নীতিমালা সম্পর্কে জানার পূর্বে চলুন জেনে আসা যাক রাজা হাম্মুরাবি সম্পর্কে। ব্যাবিলন সাম্রাজ্যের ষষ্ঠ রাজা হাম্মুরাবি খ্রিস্টপূর্ব ১৭৯২-৫০ সালের মাঝামাঝি সময়ে মেসোপটেমিয়া শাসন করেছিলেন। হাম্মুরাবি নামটি আমোরাইত শব্দ ‘হাম্মু‘, যার অর্থ পরিবার এবং আকাদিয়ান শব্দ ‘রাপি‘, যার অর্থ দাঁড়ায় মহান; এই দুটি শব্দ থেকে আবির্ভূত হয়েছে। বিখ্যাত দজলা এবং ফোরাত নদীর মোহনা বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে হাম্মুরাবির শাসন কায়েম ছিল। প্রায় ত্রিশ বছর ধরে দাপটের সাথে তিনি আসেরিয়, লারসা, এশোনা এবং মারি সাম্রাজ্যকে পরাজিত করে নিজের সাম্রাজ্যের সীমানা বৃদ্ধি করতে থাকেন। হাম্মুরাবির আমলে ব্যাবিলনের কৃষিকাজে ব্যাপক উন্নয়ন হয়। তার নির্দেশে কৃষকদের জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি সেচ দেয়া হয়।

হাম্মুরাবি তার শাসনামলের একপর্যায়ে বুঝতে পেরেছিলেন, তার শাসনাধীন বিভিন্ন পেশা, বর্ণ, ধর্মের মানুষকে একতাবদ্ধ না করতে পারলে অচিরেই শত্রুর থাবায় হারিয়ে যাবে এই বিশাল সাম্রাজ্য। তাই ব্যাবিলনের অধীনস্ত সকল রাষ্ট্রকে একীভূত করতে রাজা হাম্মুরাবি ন্যায়ের তুলাদণ্ড হাতে তুলে নেন। রাজ দরবারের উজিরকে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রচলিত আইনের দলিল সংগ্রহের আদেশ দেন। হাম্মুরাবির নির্দেশ অনুযায়ী রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আইন-কানুন সংগ্রহ করা হতে থাকে। হাম্মুরাবি তার সভাসদদের সহযোগিতায় সেসব আইন-কানুনে সামান্য পরিমার্জন করে সকলের জন্য এক আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেন। চূড়ান্তভাবে প্রায় ২৮২টি আইন লিপিবদ্ধ করে রাজার উদ্দেশ্যে পেশ করেন সভাসদরা। হাম্মুরাবি নতুন প্রণীত আইন পর্যালোচনার পর চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে ব্যাবিলন জুড়ে কার্যকর হয় ইতিহাসের অন্যতম প্রাচীন আইন ‘হাম্মুরাবি কোড’। পূর্বে ধারণা করা হতো, হাম্মুরাবি কোড পৃথিবীর ইতিহাসের প্রাচীনতম আইন ব্যবস্থা। কিন্তু সম্প্রতি এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। নতুন তথ্যানুযায়ী, ইবলা নামক একটি প্রাচীন নগরীতে হাম্মুরাবি কোড প্রণীত হওয়ার আরো পূর্বে আনুমানিক ২,৪০০ খ্রিস্টপূর্বে প্রায় কয়েকশত আইন সম্বলিত নীতিমালা প্রণীত হয়েছিলো। ইবলা কোড হাম্মুরাবি কোড থেকেও প্রায় ৬০০ বছর পুরাতন বলে দাবি করেন ইতিহাসবিদগণ।

ব্যাবিলনকে একতাবদ্ধ করতে ন্যায়ের তুলাদণ্ড হাতে তুলে নেন রাজা হাম্মুরাবি; Source: History

বর্তমানে হাম্মুরাবির শাসনামলের বেশ কিছু নিদর্শন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামকরা জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। তবে অন্যান্য নিদর্শনের তুলনায় হাম্মুরাবির ঐতিহাসিক আইনের পাণ্ডুলিপিগুলো ইতিহাসবিদগণের নিকট অধিক সমাদৃত হয়েছে।

হাম্মুরাবি কোড কী?

রাজা হাম্মুরাবির ২৮২টি নীতিমালা রাজ-আজ্ঞানুযায়ী একটি বিশাল কালো পাথর খণ্ডে খোঁদাই করে হয়েছিল। প্রায় চার টন ওজনের ডাইওরাইট পাথরের খণ্ডটি বিভিন্ন প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে যুগ যুগ ধরে টিকে আছে। ডাইওরাইট পাথর খোঁদাই করা যথেষ্ট শ্রমসাধ্য হলেও বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ক্ষয় না হয়ে টিকে থাকতে পারে বছরের পর বছর। অত্যন্ত দক্ষ কারিগর ব্যতীত অন্যান্যদের জন্য এই পাথরে কাজ করা অত্যন্ত কঠিন ছিল।

হাম্মুরাবি কোডের শুরুতে দেবতা শামাসের সাথে রাজা হাম্মুরাবি; Source: J for Journey

কোডের শুরুতে রাজা হাম্মুরাবি এবং ন্যায়ের দেবতা শামাসের একটি চিত্রকর্ম রয়েছে। চিত্রটিতে দেবতা শামাস হাম্মুরাবিকে ন্যায়ের স্বর্গীয় দণ্ড হস্তান্তর করছেন। এর মাধ্যমে পুরো নীতিমালার সারমর্ম সম্বন্ধে ধারণা লাভ করা যায়। চিত্রকর্ম বাদে বাকি নীতিমালাটুকু ৭ ফুট দীর্ঘ পাথরের সৌধে বেশ কয়েকটি কলামে কিউনিফর্ম লিপির সাহায্যে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।

এক অনন্য দৃষ্টান্ত

রাজা হাম্মুরাবি কর্তৃক প্রণীত ঐতিহাসিক নীতিমালায় ন্যায়বিচারের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। যদিও বর্তমান যুগের দৃষ্টিকোণ থেকে অনেকের নিকট বেশ কিছু আইন বেমানান লাগতে পারে। তবে সমসাময়িক যেকোনো দেশের আইনের তুলনায় হাম্মুরাবি আইন যথেষ্ট সমতা বিধান করতে সক্ষম হয়েছে। হাম্মুরাবি আইনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে দেখা যায়, অপরাধী এবং নির্যাতিতের পরিচয় ভেদে আইনের ভিন্নতা রয়েছে। যেমন- হাম্মুরাবি আইন মোতাবেক, যদি কোনো ব্যক্তি অপর একজন ব্যক্তির একটি দাঁত আঘাত করে ভেঙে ফেলে, সেক্ষেত্রে আঘাতকারীরও দাঁত ভেঙে ফেলতে হবে। কিন্তু যদি এই অপরাধটি কোনো নিচু শ্রেণীর প্রজার উপর করা হতো, সেক্ষেত্রে অপরাধের দণ্ড হিসেবে নির্দিষ্ট অংকের মুদ্রা জরিমানা ধার্য করা হতো। এভাবে বিভিন্ন পেশা এবং মর্যাদার মানুষের জন্য অপরাধের শাস্তির মাত্রা ভিন্ন ছিল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অমানবিক অপরাধের সাজা হিসেবে স্রেফ পদমর্যাদার বদৌলতে লঘু শাস্তি প্রদান করা হতো। কোনো দাসীকে যদি গর্ভবতী অবস্থায় হত্যা করা হতো, তাহলে শাস্তি হিসেবে আর্থিক জরিমানা ধার্য করা ছিল। অপরদিকে কোনো সম্ভ্রান্ত গর্ভবতী নারীকে হত্যার শাস্তিস্বরূপ হত্যাকারীর সন্তানকেও মেরে ফেলার আদেশ দেয়া হতো। প্রাচীন সমাজে পুরুষদের মাঝে বহুবিবাহের রীতি প্রচলিত ছিল। হাম্মুরাবিও তার আইন দ্বারা এরূপ সম্পর্কের বৈধতা প্রদান করেছিলেন। কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে এধরনের সম্পর্ক নিষিদ্ধ ছিল।

হাম্মুরাবি আইনের দাসদের ন্যূনতম পারিশ্রমিকের বিধান প্রচলতি হয়; Source: Mosaic Magazine

এভাবে হাম্মুরাবি আইনের বিভিন্ন অসম বিধানের কথা জানতে গিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, এই আইন কীভাবে ইতিহাসের পাতায় ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে স্থান লাভ করেছিল? এর উত্তর হিসেবে বলা যায়, হাম্মুরাবি আইন মূলত প্রাচীনকালের জোর-জবরদস্তিমূলক সমাজ ব্যবস্থায় প্রথম লাগাম বাঁধতে সক্ষম হয়েছে। এর পূর্বে নিচু শ্রেণীর মানুষদের জন্য কোনো ধরনের আইন প্রণীত ছিল না। তাছাড়া, হাম্মুরাবি কোড বিস্ময়করভাবে তালাকপ্রথা, ব্যক্তি মালিকানা সংক্রান্ত আইন, অবৈধ সম্পর্ক নিষিদ্ধকরণ আইনসহ বিবিধ বিষয় সম্পর্কিত বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করে। কারণ অন্যান্য সভ্যতার নীতিমালায় এসব বিষয় সম্পর্কিত আইনের প্রচলন হয় হাম্মুরাবি কোডেরও কয়েক শতাব্দী পরে। তবে হাম্মুরাবি কোডের সবচেয়ে বড় অবদান ছিল দাসদের জন্য ন্যূনতম পারিশ্রমিকের বিধান চালু করা। ক্ষেতে কাজ করা শ্রমিকদের জন্য বার্ষিক ৮ গুর (প্রাচীন ব্যাবিলনীয় একক) পরিমাণ শস্য বরাদ্দ ছিল। আর চিকিৎসকদের জন্য রোগীর হিসেবে জনপ্রতি ৫ শেকেল মুদ্রা বরাদ্দ করা হয়। তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থায় এ ধরনের আইন বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত দুরূহ ছিল।

উল্লেখযোগ্য কিছু আইন

জাদুঘরে সংরক্ষিত রাজা হাম্মুরাবির বিখ্যাত স্তম্ভ; Source: University of Chicago

হাম্মুরাবি কোড রাজা হাম্মুরাবির মৃত্যুর পরেও কয়েক যুগ ধরে প্রচলিত ছিল। এমনকি হিট্টাইটরা ব্যাবিলন জয়ের পরেও হাম্মুরাবি আইনের কোনো রদবদল করা হয়নি। কিন্তু পরবর্তীকালে বিভিন্ন কারণে ইতিহাসের পাতা থেকে হারিয়ে যায় হাম্মুরাবি কোড। প্রায় কয়েক শতাব্দী ধরে নিখোঁজ থাকার পর একদল উৎসাহী অভিযাত্রী ১৯০১ সালে ইরানের প্রাচীন সুসা নগরী থেকে হাম্মুরাবি কোডকে পুনরুদ্ধার করে। ইতিহাসবিদগণ মনে করেন, খ্রিস্টপূর্ব ১২ শতাব্দীতে ব্যাবিলন দখলের সময় রাজা শুতুর্ক নাহুন্তে কর্তৃক হাম্মুরাবি কোড স্তম্ভটি লুট করে এই শহরে নিয়ে আসেন। অনেকে ধারণা করেন, রাজা শুতুর্ক নাহুন্তে হাম্মুরাবি কোডের অনেক আইন মুছে ফেলেন। বর্তমানে ফ্রান্সের বিখ্যাত ল্যুভর জাদুঘরে পুরো স্তম্ভটি সংরক্ষিত রয়েছে। হাম্মুরাবি কোড পর্যবেক্ষণের পর ইতিহাসবিদগণ ২৮২টি আইনের একটি দীর্ঘ তালিকা তৈরি করেন। এর মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু আইন তুলে ধরা হলো:

  •  যদি কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে অপরাধের অভিযোগ করা হয়, সেক্ষেত্রে আসামি পবিত্র নদীর জলে ঝাঁপ দিবে। যদি সে বেঁচে ফিরে আসতে পারে, তাহলে তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হবে। সেক্ষেত্রে মিথ্যা অভিযোগকারীকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হবে। সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি আভিযোগকারীর সম্পত্তির দখল লাভ করবে।
  • যেকোনো ধরনের মিথ্যা অভিযোগকারীকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হবে।
  • যদি কোনো ব্যক্তি অন্য মালিকের অধীনস্ত দাসকে শহরের বাইরে নিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে সেই ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হবে।
  • যদি কোনো ব্যক্তি কোনো পলাতক দাসকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় কিন্তু তাকে বিচারকদের নিকট সোপর্দ করতে অপারগ হয়, সেক্ষেত্রে তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হবে।
  • যদি কোনো নাপিত তার মালিককে অবগত না করে কোনো দাসের পরিচয় চিহ্ন কর্তন করে, তাহলে নাপিতের দুই হাত কেটে দেয়া হবে।
  • যদি ঝগড়া করা অবস্থায় কোনো ব্যক্তি অপর ব্যক্তির শরীরে আঘাত করে জখম সৃষ্টি করে, সেক্ষেত্রে আঘাতকারী আহত ব্যক্তির সম্পূর্ণ চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে বাধ্য থাকবে।
  • যদি বিনা কারণে কোনো ব্যক্তি অন্য সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিকে আঘাত করে, তাহলে তার জন্য ১০ শেকেল মুদ্রা জরিমানা ধার্য করা হবে।
  • যদি কেউ একটি নৌকা ভাড়া করে, সেক্ষেত্রে পারিশ্রমিক হিসেবে মাঝিকে ৩ গেরাহ পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হবে।
  • যদি কোনো নাবিক নিজের দোষে কোনো জাহাজ ডুবিয়ে দেয়, কিন্তু পরবর্তীতে যাত্রীদের উদ্ধার করতে সফল হয়, সেক্ষেত্রে তাকে পুরো জাহাজের অর্ধেক মূল্য পরিশোধ করতে হবে।
  • যদি কেউ একজন নাবিক ভাড়া করে, সেক্ষেত্রে তাকে ১০ গুর পরিমাণ শস্য পারিশ্রমিক প্রদান করতে হবে।

    হাম্মুরাবি কোড; Source: DeAgostini/Getty Images

এভাবে সূক্ষ্ম বিশ্লেষণসহ কয়েক কলামে সংকলিত হাম্মুরাবি কোড বছরের পর বছর ধরে ব্যাবিলনের প্রজাদের বিচারকার্য পরিচালনায় মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। হাম্মুরাবি কোডের স্বচ্ছতা সমসাময়িক অন্যান্য আইনের তুলনায় যথেষ্ট উন্নত ছিল, যার প্রতিফলন আমরা আধুনিক যুগের বিভিন্ন আইনের মাঝে দেখতে পাই।

ফিচার ইমেজ: Robert Thom

Related Articles