হযরত হারুন (আ) এর জন্য শোক পালনের পরপরই বনী ইসরাইল তাদের প্রথম যুদ্ধে জিতল। তাদের উপর আক্রমণ করে কাছের এক রাজ্যের বাদশাহ। কয়েকজনকে অপহরণ করে নিয়েও যায়। পরে প্রতিশোধপরায়ণ কাফেলা সেই রাজ্য আক্রমণ করে সবগুলো শহর আর গ্রাম জয় করে নেয়। এতে তাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়।
সেই আত্মবিশ্বাসে তারা আরও কিছু গ্রাম জয় করে নেয়।
কিন্তু আবার সেই স্থবিরতা তাদের ঘিরে ধরল। আর এদিকে মূসা (আ)-ও বুড়ো হয়ে পড়েছেন। ৪০ বছরের অভিশাপ এখনও ইসরাইলের উপর থেকে যায়নি। মূসা (আ) জানেন, তিনি দেখে যেতে পারবেন না প্রতিশ্রুত ভূমির বিজয়। এর আগেই তাঁকে চলে যেতে হবে ওপারে।
শেষ বয়সে এসে মূসা (আ) দেখলেন ইসরাইল জাতি জেরুজালেমের সবচেয়ে কাছের শক্তিশালী শহর জেরিকোর কাছে এসে পড়েছে। এই শহরের পতন ঘটলেই বলা যায় প্রায় পৌঁছে গেছে বনী ইসরাইল সেই প্রতিশ্রুত ভূমিতে। কিন্তু এটা কি তাঁর জীবন থাকতেই হবে?
জেরিকোর কাছে এসে শিবির গড়লো ইসরাইল জাতি। সুবিশাল তাদের শিবির, লক্ষ লক্ষ মানুষ সেখানে। ঠিক পাশ দিয়েই বয়ে যাচ্ছে পবিত্র জর্ডান নদী।
এত লোক দেখে কাছের নগরী মোয়াবের বাদশাহ ভয় পেয়ে গেলেন। তার নাম ছিল বালাক (בָּלָק)। সবাই মনে করতে লাগলো, এত লোকবলের চাপেই তারা পিষে যাবে।
নবী কেবল ইসরাইল বা ইসমাইল বংশেই আসেনি, সব সমাজেই এসেছিল বলে ইসলাম ও ইহুদী ধর্ম বলে থাকে। তেমনই, এই মোয়াব রাজ্যের জন্য নবী ছিলেন সেই সময়ের জন্য যিনি, তার নাম বালাম ইবনে বাউরা (بَلْعَم باعورا)। অবশ্য সেটা ইহুদী ধর্ম অনুযায়ী, ইসলামে তাকে নবী বলা হয়নি, দরবেশ বা আলেম বলা হয়েছে, যিনি পরবর্তীতে নাফরমানি করেন। কুরআনের ভাষায়, “আর আপনি তাদেরকে শুনিয়ে দিন, সে লোকের অবস্থা, যাকে আমি নিজের নিদর্শনসমূহ দান করেছিলাম, অথচ সে তা পরিহার করে বেরিয়ে গেছে। আর তার পেছনে লেগেছে শয়তান, ফলে সে পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়েছে।” (কুরআন ৭:১৭৫)
অন্যান্য রাজ্যের নবীদের কথা বেশি আসে না, কারণ তাদের ইতিহাস হয়তো তেমন ভালভাবে লিখিতভাবে সংরক্ষিত নেই। আসলে, বেশিরভাগ তাদেরকে না মানলেও, খুব সম্মান করতো নবীদেরকে ধর্মপ্রচারক হিসেবে। সাধুদের অভিশাপ যেন না লাগে সেজন্য সবাই তাদের না রাগিয়ে চলতো। অভিশাপের ভয় সবারই ছিল। সেই হিসেবে বালামকে সবাই মান্য করত।
রাজা বালাক ডেকে পাঠালেন বালামকে, বললেন, “আপনি ঐ জাতির বিরুদ্ধে অভিশাপ দিন, যেন তারা ধ্বংস হয়ে যায়।”
কিন্তু বালাম সেটা করলেন না। রাজা বালাক এতে রেগে গেলেন আবার ভীতও হয়ে উঠলেন ইসরাইলের ব্যাপারে। কখন না জানি আক্রমণ করে বসে তাদের উপর ইসরাইল।
কিন্তু, ইসরাইলিদের মাথায় ছিল না তখন পবিত্র ভূমি জয়ের চিন্তাভাবনা। তখন তারা মত্ত সুন্দরী নারী নিয়ে। আশাপাশের এলাকার সুন্দরী পৌত্তলিক নারীদের সাথে তারা ব্যভিচার করা শুরু করল। কীসের রাজ্য? কীসের ভূমি? নারীতেই তাদের সব ভুলে থাকা। অনেকে সেই নারীদের খুশি করার জন্য সেই দেবতাদের মূর্তিতে পূজা দিতে লাগল।
তখন গজব হিসেবে আল্লাহ্ মহামারী প্রেরণ করলেন ইসরাইল জাতির জন্য। চব্বিশ হাজার ধর্মত্যাগী মারা যায় সেই গজবে। এ গজবের পর থেকে ইসরাইল একটু রয়ে সয়ে চলতে লাগলো।
মহামারী শেষ হলে দ্বিতীয় আদমশুমারি করা হলো, এবার বিশের বেশি বয়সের জনসংখ্যা হলো ৬,০১,৭৩০; লেবীয় পুরুষদের আলাদাভাবে গোনা হলো- ২৩ হাজার।
এটা ছিল মূসা (আ) এর করে যাওয়া শেষ বড় কাজ। আল্লাহ্ তাকে জানালেন, “তোমার ভাই হারুন যেমন চলে গেছে, তেমন তোমাকেও চলে যেতে হবে।”
মূসা (আ) বললেন, “মাবুদ, এমন একজন লোককে বনি ইসরাইলের জন্য নিযুক্ত করুন যে কি না এদের নেতা হয়ে পরিচালনা করতে পারবে। যেন এরা রাখালহীন ভেড়ার মতো না হয়ে পড়ে।”
আল্লাহ্ বললেন, “ইউশা ইবনে নুন এর উপর ওহী আসবে। তুমি তাকে ডেকে তোমার স্থলাভিষিক্ত কর। তার উপর তোমার হাত রাখ।”
মূসা (আ) তা-ই করতে প্রস্তুত হলেন।
অবীরাম পর্বতমালার একটি উচু পাহাড়ে উঠলেন তিনি ইউশাকে নিয়ে। চোখ মেলে তাকালেন চারদিকে। (তাওরাত, দ্বিতীয় বিবরণ 34)
আল্লাহ্ বললেন, “তাকাও, দেখ… এ দেশটাই আমি বনি ইসরাইলকে দিব।”
মূসা (আ) ইউশাকে তখন ডেকে দেখালেন। বললেন এ দেশ নিয়ে তাঁর কী কী স্বপ্ন ছিল। নবী ইব্রাহিম (আ)-কে আল্লাহ্ ওয়াদা করেছিলেন, এ দেশ তিনি ইসরাইলকে দেবেন। ভেবেছিলেন, তিনি হয়তো দেখে যেতে পারবেন, কিন্তু সে আর হলো না।
ইউশা যেন ঠিকঠাক মতো এদের পৌঁছে দেয় জেরুজালেমে, পবিত্র প্রতিশ্রুত ভূমিতে। পারবে তো ইউশা?
ইউশা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লেন। সেই ছোট থেকে মূসা (আ) এর সাহচার্যে বড় হয়েছেন। বুঝতে পারছেন, তিনি চলে যাবেন কিছুদিনের মধ্যেই এ দুনিয়া ছেড়ে। কত জায়গায় গিয়েছেন তারা একসাথে। একসাথে গিয়েছিলেন খিজির (আ) এর সাথে দেখা করতে। কত স্মৃতি আছে একত্রে!
পাহাড়ের চূড়ায় দুজন দাঁড়িয়েই রইলেন অনেকক্ষণ। ইউশা (আ) নবুয়ত লাভ করলেন ইসরাইলের নতুন নবী হিসেবে।
মূসার (আ) শেষ দিনগুলো ছিল স্বাভাবিক। আল্লাহ্ ওহী নাজিল করে প্রতিশ্রুত পবিত্র ভূমি (Promised Land) এর সীমা দিয়ে দিলেন। [গণনাপুস্তুক 34:1-12]
লিখিত আকারে সে সীমানা হয়তো পাঠক বুঝতে পারবেন না, তাই আগ্রহীদের জন্য নিচের মানচিত্র দেখানো হচ্ছে। লাল রেখা দিয়ে ঘেরা অংশটাই হলো সেই দেশের সীমানা।
মিসর থেকে ফেরাউনের তাড়া খেয়ে বেরিয়ে আসার সুদীর্ঘ ৪০ বছর পর, ১১তম মাসের প্রথম দিন, মূসা (আ) শরীয়তের সকল বিষয় সবাইকে পরিষ্কার করে দিলেন। তিনি জীবনের শেষ দিনগুলোতে তিনটি দীর্ঘ ভাষণ দেন, যেগুলো ইহুদীরা মেনে চলে।
মুসার শেষ ভাষণের কিছুদিন পর তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে যান। এরপর এক পাহাড়ে আরোহণ করেন আর পবিত্র ভূমির অপরূপ দৃশ্য দেখতে লাগলেন। আল্লাহ্ তাঁকে শেষবারের মতো চারপাশ দেখে নিতে বলেন। তিনি কীভাবে মারা যান সেটা কেউ দেখেনি। তার কবরও কোনো মানুষ দেয়নি। বলা হয়, ফেরেশতারা তাঁকে কবর দেন। তাওরাত মতে, “আর মাবুদ মোয়াব দেশে বৈৎ-পিয়োরের সম্মুখস্থ উপত্যকাতে তাঁকে কবর দিলেন; কিন্তু তাঁর কবরস্থান কোথায় আজও কেউ জানে না। মৃত্যুর সময়ে মূসার বয়স একশত বিশ বছর হয়েছিল। তাঁর চোখ ক্ষীণ হয়নি ও তাঁর তেজও হ্রাস পায়নি। পরে বনী ইসরাইল মূসার জন্য মোয়াবের উপত্যকায় ত্রিশ দিন কান্নাকাটি করলো; এভাবে মূসার শোক-প্রকাশের দিন সম্পূর্ণ হলো।” (তাওরাত, দ্বিতীয় বিবরণ ৩৪)
তখন সালটা ছিল খ্রিস্টপূর্ব ১২৭২। এর মানে, ঠিক ১২৬৮ বছর পর যীশু খ্রিস্টের জন্ম।
ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী, জেরিকো নগরীর ১১ কিলোমিটার এবং জেরুজালেমের ২০ কিলোমিটার দূরে ‘মাকাম এল-নাবি মূসা’-তেই মূসা (আ) এর কবর। আবূ হুরায়রা (রা) বলেন, মহানবী মুহাম্মাদ (স) বলেছেন, “আমি যদি সেখানে থাকতাম তাহলে অবশ্যই আমি তোমাদেরকে রাস্তার পার্শ্বে লাল টিলার নীচে কবরটি দেখিয়ে দিতাম।”
ওদিকে মূসার (আ) মৃত্যুর পর ১ মাস ধরে ইসরাইল জাতি শোক করল। আর তাদের নতুন নেতা হলেন হযরত ইউশা ইবনে নুন (আ)। আর ইসরাইল জাতি তখন জেরিকো নগরীর বাইরে।
ইউশার (আ) হাতে ইসরাইলের উত্থান শুরু হয়। এরপর বেশ কয়েকজন নবী আসেন আর ইসরাইলের হাল ধরেন।
ইউশার (আ) সামনে বিশাল কাজ। তাকে এই বিশাল জাতিকে পৌঁছে দিতে হবে জেরুজালেমে। অথচ এখনও জেরিকো নগরী জয় করা হয়নি। কী করবেন তিনি?
এ দুর্গের মতো নগরী কীভাবে তিনি ভেদ করবেন? কীভাবে এ পুরু প্রাচীর ভেঙে ফেলবেন?
কিন্তু আল্লাহ্ বলেছেন, এ নগরী ইসরাইলের হাতে আসবেই, তিনি কথা দিয়েছেন। কিন্তু কীভাবে সম্ভব এটা? তাছাড়া ইসরাইলের কোনো প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী পর্যন্ত নেই!
কিছু একটা করতে হবে। আগে বের করতে হবে শত্রুপক্ষের সেনাবাহিনী কেমন।
ইউশা (আ) তাঁর বিশ্বস্ত দুজন গুপ্তচরকে ডেকে পাঠালেন। বললেন তাদের কী করতে হবে, তিনি অপেক্ষা করবেন তাদের জন্য। তারা যেন ছদ্মবেশ নিয়ে জেরিকো নগরীতে ঢুকে পড়ে। আর যে তথ্যগুলো দরকার যোগাড় করে আনে।
গুপ্তচর দুজন চলে গেল জেরিকোর উদ্দেশ্যে।
আর ক্যাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলেন ইউশা (আ)। তাঁর চেহারায় দুশ্চিন্তা। প্রার্থনা করতে লাগলেন তিনি।
ওদিকে গুপ্তচর দুজন দক্ষতার সাথে ঢুকে পড়ল জেরিকোতে। সেনা ঘাটি নিয়ে যা যা তথ্য দরকার সব যোগাড় করা শেষ তাদের, এমন সময় হঠাৎ তাদেরকে সন্দেহ করল কেউ কেউ।
পরিস্থিতি সঙ্গিন বুঝতে পেরেই তারা দৌড় দিল সেখান থেকে। তাদের পিছন পিছন তাড়া করল অনেক সৈন্য।
এত বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগালো গুপ্তচর দুজন। শহরের একদম প্রাচীরের কাছে এসে ওরা প্রায় সৈন্যদের চোখের আড়াল হয়েই গেল। তারপরও তারা একটা নিরাপদ লুকানোর জায়গা খুঁজছিল ছুটতে ছুটতে। শহরের কিনারার দিকে বাজারের কাছে আসতেই ছুটন্ত দুজনকে দেখে অবাক হলো লোকজন।
কিন্তু সেগুলো অগ্রাহ্য করে তারা খেয়াল করল অন্য জিনিস। এইমাত্র বাজার থেকে চলে যাচ্ছে এক নারী, বেশ সুন্দরী বলা চলে। হাতে ঝুড়ি।
ঝটপট এগিয়ে গেল তারা তার দিকে।
মেয়েটা টের পেতেই তাকালো। এতক্ষণ যতটা না আগ্রহী ছিল লোকজন এখন তার চেয়েও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠল আশপাশের লোকজন গুপ্তচর দুজনের দিকে চেয়ে। যেন মেয়েটির জন্যই তারা তাকিয়েছে ওদের দিকে।
মেয়েটির চেহারাও করুণ হয়ে গেল। সবার চাহনি খেয়াল করে, যেন সে জানে এমনটা হবে।
গুপ্তচর দুজন অনুরোধ করল তাদের যেন ওর বাসায় নিয়ে যায় মেয়েটা। মেয়েটা এক ঝলক তাকালো তাদের চেহারার দিকে,
নীরবে সায় দিল।
আর পেছনের লোকগুলো যেন টিটকারি দিয়ে উঠল। ওদেরকে চলে যেতে দেখে একসাথে।
“কী নাম তোমার?”
– “রাহাব। তোমরা?”
– “আমরা ইজরায়েলের দুজন গুপ্তচর। তোমার সাহায্য দরকার আমাদের।” সত্যিটা বলেই দিল তারা।
মেয়েটি অবাক হয়ে তাকাল। কিন্তু যে ঘৃণা বা ভয় ওরা ভেবেছিল তার চেহারায় দেখবে তা পেল না তারা! মেয়েটির চোখে মুখে যেন খুশির ঝলকানি।
“এসো, আমার ঘরে এসো।”
অবাক হয়ে ঘরে ঢুকল তারা।
“আমি তোমাদের কথা অনেক শুনেছি। অনেক অনেক শুনেছি। আমি জানি তোমরা কীভাবে মিসর থেকে বেরিয়ে এসেছ, কীভাবে তোমাদের জন্য সাগর দু’ভাগ হয়ে গিয়েছিল।” মেয়েটির চোখে মুখে বিস্ময়; সে যেন বিশ্বাস করতে পারছে না, দুজন ইসরাইলি তার সাথে কথা বলছে।
কিন্তু হঠাৎ করে তার মুখ করুণ হয়ে গেল, “তোমরা কি এখন আমাদের আক্রমণ করবে? আমি এই শহরের খুব দরিদ্র একটা মেয়ে। এই বড় সংসার আমি একা চালাই। আমার বুড়ো বাপ-মা, ছোট ছোট ভাই-বোন। এতগুলো মুখ খাওয়াতে হয়। সামান্য ফল বিক্রি করে উপার্জন করি আমি। অথচ বাজারের লোকজন আমাকে দেখতে পারে না। আমাকে… আমাকে পতিতা বলে!” বলতে বলতে কেঁদে ফেলল রাহাব।
কী বলবে বুঝতে পারল না তারা দুজন, খারাপ লাগছে তাদের। এজন্যই বাজারের লোকজন এভাবে তাকাচ্ছিল। তারা কি জানত রাহাব কে? কেন ইসরায়েলের ইতিহাসে রাহাবের নাম লেখা থাকবে? না, জানত না।
“তোমরা আমার একটা অনুরোধ রাখবে?” রাহাব বলল।
“কী?”
“তোমরা যখন এ শহর জয় করে নেবে, তখন অনুগ্রহ করে আমার পরিবারকে কিছু করো না। আমি এ পুরো জায়গার উপর অতিষ্ঠ। কেউ আমাকে চায় না এখানে,” রাহাব বলল, “তোমাদের প্রভুর কথাগুলো শোনার পরই আমি বিশ্বাস করে ফেলেছি। আমাদের ক্ষতি করো না।”
খুশি হয়ে উঠল ওরা দুজন, “অবশ্যই। আমরা কথা দিচ্ছি। এই নাও, এই লাল ফিতাটা… এটা তোমার দরজার উপর ঝুলিয়ে রাখবে। অবস্থা যদি খারাপও হয়, তারপরেও এটা দেখলে কেউ তোমাদের কিছু করবে না, কথা দিচ্ছি আমরা। বিশ্বাস কর আমার কথায়।”
অশ্রু মুছে হাসি মুখ করে বলল রাহাব, “বিশ্বাস করলাম।”
ঠিক সেই মুহূর্তে দরজার উপর কড়া আঘাত পড়ল, “দরজা খোল! না হলে দরজা ভেঙে ঢোকা হবে!”
রাহাব চাপাস্বরে আর্তনাদ করে উঠল, “ওরা জেনে গেছে!”
করুণ চোখে তাকিয়ে রইলো ওরা তিন জন দরজার দিকে। বাইরে সৈন্যরা ধাক্কা দিতেই আছে দরজায় ক্রমাগত।
আর দূরে, বেশ দূরে, শহরের বাইরে, রাতের আঁধারে ক্যাম্পের সীমানায় দাঁড়িয়ে জেরিকো নগরীর দিকে তাকিয়ে আছেন ইউশা (আ)। তাঁর মনে দুশ্চিন্তা, এতক্ষণ লাগছে কেন তাদের? তিনি তখনও জানতেন না, জেরিকোর উপর এমন একটা অলৌকিক কিছু হতে যাচ্ছে যেটা আগে কোনো দিন হয়নি।
ভবিষ্যতেও হবে না।
এ সিরিজের আগের পর্বগুলো-
প্রথম পর্ব: ইহুদী জাতির ইতিহাস: সূচনা পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব: মিশরে যাবার আগে কেমন ছিল বনি ইসরাইল?
তৃতীয় পর্ব: হযরত ইউসুফ (আ): দাসবালক থেকে মিসরের উজির- ইহুদী জাতির ইতিহাস
চতুর্থ পর্ব: ইউসুফ-জুলেখার কাহিনীর জানা অজানা অধ্যায়
জানতে চান মসজিদুল আকসা আর বাইতুল মুকাদ্দাসের পার্থক্য কী? তবে ক্লিক করুন পড়তে-
পঞ্চম পর্ব: মসজিদুল আকসা আর বাইতুল মুকাদ্দাসের ইতিবৃত্ত
ষষ্ঠ পর্ব: দাসবন্দী বনী ইসরাইল এবং হযরত মুসা (আ:) এর জন্ম
সপ্তম পর্ব: মিসরের রাজপ্রাসাদ থেকে সিনাই পর্বত
অষ্টম পর্ব: সিনাই পর্বত থেকে ফারাওয়ের রাজদরবার
নবম পর্ব: মিসরের অভিশাপ
দশম পর্ব: দ্বিখণ্ডিত লোহিত সাগর, এক্সোডাসের সূচনা
একাদশ পর্ব: মরিস বুকাইলি আর ফিরাউনের সেই মমি
দ্বাদশ পর্ব: তূর পর্বতে ঐশ্বরিক সঙ্গ এবং তাওরাত লাভ
ত্রয়োদশ পর্ব: ইসরাইলের বাছুর পূজা এবং একজন সামেরির ইতিবৃত্ত
চতুর্দশ পর্ব: জীবন সায়াহ্নে দুই নবী