
১৯ আগস্ট, ২০০২। তখন দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধ চলছিল। উত্তর ককেশাসে অবস্থিত মুসলিম–অধ্যুষিত অ–রুশ প্রজাতন্ত্র চেচনিয়া সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর স্বাধীনতা ঘোষণা করে। কিন্তু রুশ কেন্দ্রীয় সরকার এটি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং চেচনিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য সৈন্য প্রেরণ করে। ১৯৯৪–১৯৯৬ সালের প্রথম চেচেন যুদ্ধে রুশ সৈন্যরা পরাজিত হয় এবং রুশ সরকার চেচনিয়ার স্বাধীনতার প্রশ্ন পাঁচ বছরের জন্য স্থগিত রাখতে সম্মত হয়। কিন্তু মাত্র তিন বছর পরেই ১৯৯৯ সালে রুশরা পুনরায় চেচনিয়ায় সৈন্য প্রেরণ করলে দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধ আরম্ভ হয়।
দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধে রুশ কেন্দ্রীয় সৈন্যরা এবং রুশপন্থী চেচেন যোদ্ধারা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিবিহীন ‘ইচকেরিয়া চেচেন প্রজাতন্ত্রে’র মুখোমুখি হয়। ইচকেরিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করে বিভিন্ন চেচেন মিলিট্যান্ট দল। উত্তর ককেশাসের অন্যান্য প্রজাতন্ত্র এবং বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগত কিছু মিলিট্যান্ট চেচেন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে যোগ দেয়। ২০০০ সাল নাগাদ রুশ ও রুশপন্থী চেচেন সৈন্যরা চেচনিয়ার রাজধানী গ্রোজনি দখল করে এবং চেচনিয়ায় একটি রুশপন্থী সরকার ক্ষমতাসীন হয়। চেচনিয়ার অধিকাংশ অঞ্চলের ওপর রুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়।
কিন্তু বিচ্ছিন্নতাবাদী চেচেন মিলিট্যান্টরা তখনো চেচনিয়া জুড়ে রুশ ও চেচেন সৈন্যদের ওপর গেরিলা পদ্ধতিতে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছিল। নিয়মিতই মিলিট্যান্টদের আক্রমণে রুশ ও রুশপন্থী চেচেন সৈন্যদের হতাহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া যাচ্ছিল। এককালের প্রচণ্ড ক্ষমতাধর রুশ সশস্ত্রবাহিনী তখন চেচনিয়ার পার্বত্য ভূমিতে নিজেদেরই এককালীন সহযোদ্ধাদের দ্বারা পরিচালিত মিলিট্যান্টদের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী এক সংঘর্ষে লিপ্ত ছিল। উল্লেখ্য, ইচকেরিয়ার রাষ্ট্রপতি আসলান মাসখাদভ ছিলেন সোভিয়েত সেনাবাহিনীর একজন কর্নেল এবং চেচেন মিলিট্যান্টদের আরেক নেতা শামিল বাসায়েভ ছিলেন সোভিয়েত সেনাবাহিনীর একজন দমকলকর্মী।

২০০২ সালের ১৯ আগস্ট চেচনিয়ার পশ্চিমে অবস্থিত উত্তর ওসেতিয়া–আলানিয়ার মোজদোক বিমানঘাঁটি থেকে একটি সৈন্যবাহী হেলিকপ্টার চেচনিয়ার রাজধানী গ্রোজনির পূর্বে অবস্থিত খানকালা বিমানঘাঁটির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। হেলিকপ্টারটি ছিল একটি সোভিয়েত–নির্মিত ‘মিল মি–২৬’ ভারী পরিবহন হেলিকপ্টার, যেটি ন্যাটো সদস্যদের কাছে ‘হ্যালো’ (Halo) নামে পরিচিত। ‘মিল মি–২৬’ হেলিকপ্টার সিরিজটির অন্তর্ভুক্ত হেলিকপ্টারগুলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় হেলিকপ্টার, এবং সামরিক কার্যক্রমের পাশাপাশি বেসামরিক যাত্রী পরিবহনের কাজেও এই হেলিকপ্টারটি ব্যবহৃত হয়। একেকটি মিল মি–২৬ হেলিকপ্টারের মূল্য প্রায় দুই থেকে আড়াই কোটি (বা ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন) মার্কিন ডলার। রুশ কোম্পানি ‘রাশান হেলিকপ্টার্সে’র অন্তর্গত ‘মিল মস্কো হেলিকপ্টার প্ল্যান্ট’ এই সিরিজের হেলিকপ্টারগুলো তৈরি করে থাকে।
সাধারণভাবে একটি মিল মি–২৬ হেলিকপ্টার ৮০ জন সৈন্য পরিবহন করতে পারে। কিন্তু সেদিন হেলিকপ্টারটিতে মোট ১৪৭ জন যাত্রী ছিল, যাদের মধ্যে পাঁচজন ছিল হেলিকপ্টারের ক্রু এবং বাকিরা চেচনিয়ায় মোতায়েনকৃত রুশ সৈন্যদলের বিভিন্ন ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত সৈনিক ও অফিসার। ১৯৯৭ সালে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত একটি নিয়ম অনুসারে, মিল মি–২৬ হেলিকপ্টারে যাত্রী বহন করাই নিষিদ্ধ ছিল, এবং কেবল সামরিক সরঞ্জাম ও রসদপত্র সরবরাহের জন্যই এগুলো ব্যবহারের অনুমতি ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও হেলিকপ্টারটি যাত্রী বহন করছিল, এবং তা ছিল ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি। অবশ্য এটি কোনো ব্যতিক্রম ঘটনা ছিল না। চেচনিয়ায় রুশরা প্রায়ই আনুষ্ঠানিক নিয়ম উপেক্ষা করে হেলিকপ্টারে সৈন্য বহন করত, এবং অনেক ক্ষেত্রেই তারা হেলিকপ্টারের ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী পরিবহন করত।
চেচেন সাংবাদিক তিমুর আলিয়েভের মতে, রুশ সৈন্যরা স্থলপথে চেচনিয়ায় যাতায়াত করতে অনিচ্ছুক ছিল, কারণ প্রায়ই চেচেন মিলিট্যান্টরা রুশ কনভয়গুলোর ওপর চোরাগোপ্তা আক্রমণ (ambush) চালাত। উদাহরণস্বরূপ, ২০০০ সালের মার্চে চেচনিয়ার ঝানি–ভেদেনোতে একটি রুশ কনভয়ের ওপর আক্রমণ চালিয়ে মিলিট্যান্টরা কমপক্ষে ৪৩ জন রুশ সৈন্যকে খুন করে এবং ১১ জনকে বন্দি করে, যাদের মধ্যে ৯ জনকে পরবর্তীতে খুন করা হয়। এমতাবস্থায় চেচনিয়ার অভ্যন্তরে স্থলপথে যাতায়াত করা ছিল অত্যন্ত বিপজ্জনক। এজন্য রুশ সৈন্যরা চেচনিয়ায় যাতায়াতের জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে বেশি আগ্রহী ছিল। কিন্তু তাদের কাছে পর্যাপ্ত সংখ্যক হেলিকপ্টার ছিল না, ফলে তাদেরকে বাধ্য হয়ে হেলিকপ্টারে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি সংখ্যক যাত্রী তুলতে হতো।

কিন্তু হেলিকপ্টারও যে পুরোপুরি নিরাপদ নয়, সেটি রুশ সৈন্যরা সেদিন ভালোভাবেই টের পেয়েছিল। মোজদোক বিমানঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর হেলিকপ্টারটি খানকালার দিকে অগ্রসর হয়। খানকালার অধিকাংশ বহুতল ভবনই যুদ্ধের ফলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। এরকমই একটি বিধ্বস্ত দোতলা ভবনে পাঁচ সদস্যের একটি চেচেন মিলিট্যান্ট দল অবস্থান করছিল। দলটির নেতা ছিল সুলতান মাৎসিয়েভ। বাকি সদস্যদের মধ্যে ছিল শামসুৎদিন সালাভাতভ, ভিসখান খাবিবুলায়েভ এবং গ্রোজনির অধিবাসী ২৭ বছর বয়সী দোকু ঝান্তেমিরভ। দলটির পঞ্চম সদস্যের পরিচয় জানা যায়নি।
এই দলটিকে চেচেন মিলিট্যান্টদের অন্যতম নেতা এবং ‘রাশিয়ার ওসামা বিন লাদেন’ নামে খ্যাত শামিল বাসায়েভ ৮টি সোভিয়েত–নির্মিত মানুষ কর্তৃক বহনযোগ্য ‘৯কে৩৮ ইগ্লা’ সারফেস–টু–এয়ার মিসাইল সরবরাহ করেছিলেন। দলটির দায়িত্ব ছিল মোজদোক থেকে খানকালা বিমানঘাঁটির উদ্দেশ্যে আগত যেকোনো রুশ হেলিকপ্টারকে ভূপাতিত করা। সেদিন বিকাল ৪টা ৫৪ মিনিটে তারা মিল মি–২৬ হেলিকপ্টারটিকে খানকালার দিকে আসতে দেখে। ঝান্তেমিরভ বিমান–বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রস্তুত করে এবং হেলিকপ্টারটি নিকটবর্তী হওয়ার পর মাৎসিয়েভ ক্ষেপণাস্ত্রটি সেটির দিকে নিক্ষেপ করে।
পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে ১৮০ থেকে ২০০ মিটার উচ্চতায় ক্ষেপণাস্ত্রটি হেলিকপ্টারের একটি ইঞ্জিনে আঘাত করে এবং সেটি বিধ্বস্ত হয়। ঝান্তেমিরভ হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার চিত্র ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ করে। হেলিকপ্টারটিতে আঘাত করার পরপরই বিস্ফোরণের ফলে হেলিকপ্টারটির বহুসংখ্যক যাত্রী নিহত হয়। এর ক্রুরা কোনোক্রমে হেলিকপ্টারটিকে (বা হেলিকপ্টারের অবশিষ্টাংশকে) খানকালা বিমানঘাঁটির নিকটে ক্র্যাশ–ল্যান্ড করাতে সক্ষম হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে হেলিকপ্টারটি অবতরণ করেছিল বিমানঘাঁটির নিকটবর্তী মাইনক্ষেত্রে। মিলিট্যান্টদের আক্রমণ থেকে ঘাঁটিটিকে সুরক্ষিত করার জন্য এই মাইনক্ষেত্রটি স্থাপন করা হয়েছিল। জীবিত যাত্রীদের মধ্যে কেউ কেউ সেখান থেকে নেমে পড়ে, কিন্তু অ্যান্টি–পার্সোনেল মাইন বিস্ফোরিত হয়ে নিহত হয়। কেবল হেলিকপ্টারের ৫ জন ক্রু ও ২৯ জন যাত্রী গুরুতর আহত ও দগ্ধ অবস্থায় মাইনক্ষেত্রটি অতিক্রম করতে সক্ষম হয়। এদের মধ্যে ১৪ জন পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে।

খানকালা হেলিকপ্টার শুটডাউনের ফলে মোট ১২৭ জন রুশ সৈন্য নিহত হয়। হেলিকপ্টারটির ১৪৭ জন যাত্রীর মধ্যে মাত্র ২০ জন প্রাণে বাঁচতে সক্ষম হয়। কেবল রুশ সশস্ত্রবাহিনীর ইতিহাসে নয়, সমগ্র বিশ্বের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা। ১৯৯৯ সালের পর থেকে এটি ছিল রুশ সশস্ত্রবাহিনীর জন্য সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন। এই ঘটনার প্রায় ২ বছর আগে রুশ নৌবাহিনীর পারমাণবিক সাবমেরিন ‘কুরস্ক’ ব্যারেন্টস সাগরে ডুবে যায় এবং এর ফলে ১১৮ জন নাবিকের সলিলসমাধি ঘটে। কুরস্ক দুর্ঘটনার মাত্র দুই বছরের মধ্যে সংঘটিত খানকালা হেলিকপ্টার শুটডাউন রুশ জনসাধারণের মধ্যে তীব্র বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। রুশ প্রচারমাধ্যম এই ঘটনাটিকে ‘দ্বিতীয় কুরস্ক’ হিসেবে আখ্যায়িত করে, এবং হেলিকপ্টারটি ভূপাতিত হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে রুশ সরকার কর্তৃক ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেয়ার প্রচেষ্টা তাদের তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হয়।
রুশ সরকার এই ঘটনার জন্য ২১ আগস্টকে ‘জাতীয় শোক দিবস’ হিসেবে পালন করে। রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন এই ঘটনার জন্য রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেন। ৭ সেপ্টেম্বর রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ‘অর্ডার নং ৫৯’ জারি করে, এবং খানকালার হেলিকপ্টার শুটডাউনের কারণে ১৯ জন সামরিক কর্মকর্তাকে ‘দায়িত্বহীন’ আচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত করে, যাদের মধ্যে ১২ জন ছিলেন জেনারেল পদমর্যাদার কর্মকর্তা। এদের মধ্যে ছিলেন রুশ সেনাবাহিনীর কমান্ডার ও উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী কর্নেল জেনারেল নিকোলাই কর্মিলৎসেভ এবং ‘উত্তর ককেশাস সামরিক জেলা’র কমান্ডার কর্নেল জেনারেল গেন্নাদি ত্রোশেভ। তদুপরি, রুশ সেনাবাহিনীর আর্মি এভিয়েশনের কমান্ডার জেনারেল ভিতালি পাভলভকে এই ঘটনার জন্য পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। ২০০৩ সালে হেলিকপ্টারটির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলেক্সান্দর কুদিয়াকভকে একটি রুশ আদালত ‘দায়িত্ব পালনে অবহেলা’ ও ‘ফ্লাইট রেগুলেশন লঙ্ঘনে’র দায়ে অভিযুক্ত করে এবং শাস্তি প্রদান করে।
অন্যদিকে, চেচেন মিলিট্যান্টরা খানকালা হেলিকপ্টার শুটডাউনকে তাদের জন্য একটি বড় বিজয় হিসেবে বিবেচনা করে। চেচেন মিলিট্যান্টদের বার্তা সংস্থা ‘কাভকাজ সেন্টারে’র মতে, দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধের প্রথম দুই বছরের মধ্যে এটি ছিল চেচেন মিলিট্যান্টদের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য। মিলিট্যান্টরা হেলিকপ্টারটি ধ্বংস হওয়ার ভিডিও একটি তুর্কি বার্তা সংস্থাকে প্রদান করে। ২৪ সেপ্টেম্বর অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস এই ভিডিওটির পাশাপাশি বিচ্ছিন্নতাবাদী ‘ইচকেরিয়া চেচেন প্রজাতন্ত্রে’র রাষ্ট্রপতি আসলান মাসখাদভের একটি বক্তব্যও প্রচার করে, যেটিতে তিনি খানকালা হেলিকপ্টার শুটডাউনকে তার ‘মুজাহিদ’দের কাজ হিসেবে বর্ণনা করেন। এই কৃতিত্বের জন্য মাসখাদভ মাৎসিয়েভকে একটি হ্যান্ডগান উপহার হিসেবে প্রদান করেন।

খানকালার একটি দোতলা ভবন থেকে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপনাস্ত্রের আঘাতে মিল মি–২৬ হেলিকপ্টারটি ধ্বংস হয়েছিল। এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেজন্য রুশ সৈন্যরা খানকালার আবাসিক এলাকার বাকি ভবনগুলোও ধ্বংস করে ফেলে এবং এর ফলে প্রায় ১০০টি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। রুশ সামরিক মুখপাত্র মেজর জেনারেল ইলিয়া শাবালকিনের মতে, অঞ্চলটির অধিবাসীরা মিলিট্যান্টদের আক্রমণ চালানোর প্রস্তুতি নিতে দেখেছিল, কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীদের বিষয়টি অবগত করেনি। এজন্য তারাও কার্যত এই অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। রুশ আইনসভার নিম্নকক্ষ ‘রাষ্ট্রীয় দুমা’র চেচেন সদস্য আসলামবেক আসলাখানভ এই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি।
হেলিকপ্টারটি শুটডাউনের সাথে সাথেই রুশ সৈন্যরা আক্রমণকারীদের খোঁজ করতে শুরু করে, কিন্তু ঘটনাস্থলে তারা ব্যবহৃত ইগ্লা মিসাইলের টিউব ছাড়া আর কিছু খুঁজে পায়নি। কিন্তু রুশরা আক্রমণকারীদের খোঁজ অব্যাহত রাখে। ২০০৪ সালে ঝান্তেমিরভ রুশদের হাতে গ্রেপ্তার হয় এবং একই বছরের এপ্রিলে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ শহরের একটি আদালতে তার বিচার হয়। বিচারে তাকে খুন, সন্ত্রাসবাদ, দস্যুবৃত্তি ও অন্যান্য অপরাধে জড়িত থাকার দায়ে অভিযুক্ত করা হয় এবং আজীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। ২০০৮ সালে মাৎসিয়েভ, সালাভাতভ ও খাবিবুলায়েভ চেচেনদের হাতে বন্দি হয় এবং চেচনিয়ার একটি আদালতে তাদের বিচার অনুষ্ঠিত হয়। ৩ সেপ্টেম্বর তাদেরকেও আজীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এর মধ্য দিয়ে রুশ বিমানবাহিনীর ইতিহাসের এক বিপর্যয়কর অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে।