Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

কেকেকে: শ্বেত সন্ত্রাসের আদ্যোপান্ত

১৮৮৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসের কোনো একদিন হর্সহ্যামের বাসিন্দা জন ওপেন শ’র কাছে একটি চিঠি এসে পৌঁছলো। খাম খুলতেই কমলালেবুর পাঁচটি বিচি বেরিয়ে এলো, ভেতরে আর কিছু নেই। কিন্তু এই হাস্যকর চিঠিই ওপেন শ’র রাতের ঘুম হারাম করে দিলো। কারণ তিনি বুঝতে পেরেছেন, ‘কেকেকে’ তার পিছু লেগেছে, মৃত্যু অবধারিত। তারপরও নিজের জীবনের মায়া তিনি একেবারেই ছাড়তে পারলেন না। সোজা চলে গেলেন বেকার স্ট্রিটে শার্লক হোমসের কাছে। সব খুলে বললেন হোমসকে। আকুতি জানালেন, যেন তার কিছু না হয়।

কিন্তু পরদিন সকালের কাগজে জন ওপেন শ’র মৃত্যুর খবর ছাপা হলো। রাতের বেলা কোনোভাবে তিনি পা পিছলে টেমস নদীতে পড়ে মারা যান। সবাই ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা হিসেবেই ধরে নিলো। কিন্তু গোয়েন্দা হোমস বুঝতে পারলেন, কেকেকের ভয়ংকর থাবা থেকে তিনি ওপেন শ’কে রক্ষা করতে পারেননি।

১৯২২ সালে ইন্ডিয়ানায় একদল ক্ল্যান সদস্য; Image source: nybooks.com

উপরের ঘটনাটি স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের শার্লক হোমস সিরিজের ‘দ্য ফাইভ অরেঞ্জ পিপস’ থেকে নেয়া হয়েছে। কেকেকের ভয়ংকর কর্মকান্ডের কিছুটা আঁচ এই গল্পে ফুটিয়ে তুলেছেন ডয়েল সাহেব। কিন্তু পাঠক, কে বা কারা এই কেকেকে?

কু ক্লাক্স ক্ল্যান: কেকেকে

কু ক্লাক্স ক্ল্যান বা কেকেকে হচ্ছে আমেরিকার প্রথম সন্ত্রাসী সংগঠন। গৃহযুদ্ধের পর আমেরিকায় রিকনস্ট্রাকশন বা পুনঃনির্মাণ যুগ শুরু হয়। এ সময়ই কু ক্লাক্স ক্ল্যান আত্মপ্রকাশ করে। এই সংগঠনটির মূল উদ্দেশ্য ছিল কালোদের দমিয়ে রেখে সাদা চামড়ার মানুষগুলোর আধিপত্য বজায় রাখা। কেকেকের প্রাথমিক টার্গেট কালোরা থাকলেও পরবর্তী দফাগুলোতে তারা ইহুদি, মুসলিম, অভিবাসী, সমকামী ও ক্যাথলিকদেরও পীড়ন করে।

ক্ল্যান সদস্যরা, আনুমানিক ১৯২০ সাল; Image source: Daily Mail Online

নব্য নাৎসিবাদ, নব্য ফ্যাসিবাদ, ইসলাম বিরোধিতা, কম্যুনিজম বিরোধিতা, খ্রিস্টান সন্ত্রাসবাদ, ইউরোপিয়ান বিরোধিতা ইত্যাদি ছিল কু ক্লাক্স ক্ল্যানের প্রধান কিছু এজেন্ডা। রিকনস্ট্রাকশন যুগে ১৮৬৫ সালে কনফেডারেট আর্মির পাঁচজন প্রাক্তন সৈনিক একটি গুপ্ত সংগঠন তৈরির উদ্দেশে টেনেসি অঙ্গরাজ্যের পুলাস্কিতে একটি সাক্ষাৎকারের আয়োজন করে। মূলত এখান থেকেই সূচনা হয় কু ক্লাক্স ক্ল্যানের। গ্রিক শব্দ কাইক্লোস (kyklos) থেকে কু ক্লাক্স ক্ল্যান শব্দটি তৈরি হয়েছে। কিন্তু ঠিক কী কারণে সৃষ্টি হলো এরকম ভয়ংকর একটি সংগঠনের?

উৎপত্তি

আমেরিকার গৃহযুদ্ধ সমাপ্তির পর জনজীবনে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তন অনেকে মেনে নিতে পারেনি। ব্যক্তিগত আক্রোশ ও প্রতিশোধলিপ্সা কিছু মানুষকে প্রভাবিত করেছে কু ক্লাক্স ক্ল্যানে যোগ দেয়ার জন্য। বিশেষত দরিদ্র ও অশিক্ষিত আমেরিকানরা ব্যাপক হারে কেকেকে-তে যোগ দেয়।

দাসপ্রথার বিলুপ্তি ও দাসদের মুক্তি দক্ষিণের অনেক শ্বেতাঙ্গের কাছে প্রকারান্তরে তেতো পরাজয়ই মনে হয়েছিল। কালো দাসরা মুক্ত হয়ে যাওয়ায় অনেক শ্বেতাঙ্গ দাস মালিকের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রতিপত্তি কমে যায়। প্রায় কয়েকযুগ ধরে চলে আসা বিতর্কের কারণে মার্কিন শ্বেতাঙ্গ দাস মালিকদের মনে ভয় ঢুকে গিয়েছিল, লিংকনের শাসনামালে যেকোনো সময় দাসপ্রথা বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। শ্বেতাঙ্গরা এই কালো চামড়ার দাসদের নিজেদের পাশাপাশি সম-অধিকার নিয়ে বাস করার চিন্তাও করতে পারতো না। ফলস্বরূপ এই বিশাল সংখ্যক মুক্ত দাস শ্বেতাঙ্গদের কাছে তাদের জীবন ও সম্পদের হুমকি হিসেবেই আবির্ভূত হয়েছিল। এভাবে কালো দাসদের প্রতি শ্বেতাঙ্গদের ঘৃণিত মনোভাব, গৃহযুদ্ধের ফলাফল এবং এর ফলে সৃষ্ট পুঞ্জীভূত ক্ষোভই পরবর্তীতে কু ক্লাক্স ক্ল্যানের মতো কৃষ্ণাঙ্গ বিরোধী সংগঠন সৃষ্টির অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।

প্রাথমিক কর্মকান্ড

প্রথমদিকে সাদা আলখাল্লা পরে, মাথা ঢেকে, উদ্ভট মুখোশ পরে ক্ল্যান সদস্যরা রাতের বেলা কোনো কৃষ্ণাঙ্গের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে পানি পান করতে চাইতেন। পানি দেয়া হলে সেই পানি ঢকঢক করে গিলে ফেলতেন এবং আরও পানি চাইতেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, তারা পানি পান করতেন না, বরং একটি রবারের নলের মধ্য দিয়ে পোশাকের ভেতর লুকানো একটি চামড়ার ব্যাগে গোপনে সেই পানি চালান করে দিতেন। কয়েক বালতি পানি এভাবে ‘পান’ করে ফেলার পর ক্ল্যানসম্যান জানাতেন, গৃহযুদ্ধের সময় তিনি যুদ্ধে মারা যান এবং এরপর আর তিনি পানি পান করতে পারেননি। পরক্ষণেই সেই ক্ল্যান সদস্য সহসা অদৃশ্য হয়ে যেতেন। ফলে ঐ বাড়ির বাসিন্দারা মনে করতো, কনফেডারেট আর্মির মৃত সৈনিকরা ভূত হয়ে চারদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

কেকেকে’র সদস্যরা ক্রস পোড়াচ্ছে; Image source: britannica.com

কু ক্লাক্স ক্ল্যান প্রাথমিকভাবে এই ধরনের বেশ কিছু অসার কাজকর্ম করে জনসমাজে বেশ পরিচিতি ও সমীহ লাভ করে। তাছাড়া অশিক্ষিত ও কুসংস্কারাচ্ছান্ন তৎকালীন মার্কিন সমাজকে, বিশেষত কৃষ্ণাঙ্গ সমাজকে, বোকা বানানোর জন্য এরকম ভাঁড়ামিই যথেষ্ট ছিল। অবশ্য পরবর্তীতে এই ধরনের ছেলেখেলাই নৃশংসতায় পর্যবসিত হয়।

কেকেকে’র সদস্যরা রাতের বেলা সশস্ত্র হয়ে ঘোরাফেরা করতে থাকে। এই ধরনের রাত্রিকালীন পেট্রোলে তারা অনেক কৃষ্ণাঙ্গ ও কালো-অধিকারের সমর্থক শ্বেতাঙ্গকে হত্যা করে। তাদের বেশকিছু নৈমিত্তিক কর্মকান্ড ছিল। যেমন- ক্রুশ পোড়ানো, প্যারেড, মার্চিং, রাত্রিকালীন চৌকি, লিঞ্চিং (জনতার রায়ে দোষীসাব্যস্ত ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া) ইত্যাদি। লিঞ্চিং তখন ছিল খুব স্বাভাবিক বিষয়। তারা একসময় নিজেদের একধরনের নজরদারি গোষ্ঠী হিসেবে প্রকাশ করে। এই সময় তারা জনসমক্ষে অনেক কৃষ্ণাঙ্গকে দোষীসাব্যস্ত করে হত্যা করে। এর সদস্যরা নিজেদের মধ্যেও গোপনীয়তা বজায় রাখতেন। তারা গোপনে দেখা করতেন আর মুখোশ পরে থাকতেন। তাদের বেশ কিছু আচার এবং দীক্ষাব্রত পালন করতে হতো। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য তারা বিভিন্ন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতেন। এছাড়া তারা অনেক উদ্ভট উপাধি, যেমন- ইম্পেরিয়াল উইজার্ড, গ্র্যান্ড ড্রাগন ইত্যাদি ব্যবহার করতেন।

নতুন করে শুরু

তিন দফায় কু ক্লাক্স ক্ল্যানের কার্যকলাপ পরিচালিত হয়। ১৯ শতকের শেষদিকে, ১৯২০-এর দশকে এবং ১৯৫০-এর দশক থেকে ১৯৭০-এর দশক পর্যন্ত।

জিম ক্রো আইনের ফলে কু ক্লাক্স ক্ল্যানের প্রাথমিক যুগের অবসান ঘটে। দ্বিতীয় দফায়, তথা বিশ শতকে ক্ল্যানের সৃষ্টির পেছনে দুটো জিনিস বিশেষ ভূমিকা রাখে। এগুলো হচ্ছে থমাস ডিক্সনের বই ‘দ্য ক্ল্যানসম্যান’ (১৯০৫) এবং ডি. ডব্লিউ গ্রিফিথ পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘দ্য বার্থ অভ আ নেশন’ (১৯১৫)। এই সময় উইলিয়াম জে. সিমন্স ১৯১৫ সালে জর্জিয়ায় দলটি পুনর্গঠন করেন। ১৯২৫ সালের মধ্যেই কেকেকে প্রায় চল্লিশ লক্ষাধিক সদস্যের সংগঠনে পরিণত হয়। দক্ষিণের বেশ কিছু রাজ্যে এ সময় ক্ল্যানের হাতে বলার মতো রাজনৈতিক ক্ষমতা পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু পাশাপাশি এই সময় সংগঠনটির নেতাদের বেশ কিছু যৌন কেলেঙ্কারি’র ঘটনা ও ক্ষমতা নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলে এর প্রভাব কিছুটা ক্ষুণ্ণ হয়। ফলাফল হিসেবে ১৯৩০ এর দশকে ক্ল্যানের সদস্য সংখ্যা বহুলাংশে কমে যায় এবং সংগঠনটি অস্থায়ীভাবে অকার্যকর হয়ে পড়ে।

Image Source: pbs.org

পরবর্তী বিশ বছর বলতে গেলে সংগঠনটি নিষ্ক্রিয় ছিল। কিন্তু গত শতকের ষাটের দশকে কেকেকে’র তৃতীয়বারের মতো সূচনা হয় নাগরিক অধিকার আন্দোলনকে রুখে দেয়ার জন্য। এই সময়ই বোমাবাজি, খুনোখুনি, বন্দুকবাজি ইত্যাদি কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে সংগঠনটি। এই দফায় ক্ল্যানের মধ্যে বিভেদের সৃষ্টি হয়। সংগঠনের একটি অংশ গতানুগতিক বর্ণবাদ ও সামরিক কর্মকান্ড বজায় রাখে। অপর একটি অংশ তাদের বর্ণবাদকে ‘সাদাদের নাগরিক অধিকার’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস চালায়।

ভয়ংকর যত অপরাধ

১৯২১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কু ক্লাক্স ক্ল্যান বেশ কিছু অপরাধ সংগঠন করে নিজেদের নৃশংসতাকে জানান দিয়েছে। এদের কয়েকটি অপরাধের চিত্র এখানে তুলে ধরা হলো।

১) জনৈক কৃষ্ণাঙ্গ কর্তৃক একজন শ্বেতাঙ্গ নারী ধর্ষিত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৯২১ সালে ওকলাহোমার টুলসাতে দাঙ্গা শুরু হয়। দাঙ্গায় প্রায় ২১-২০০ জনের মতো কৃষ্ণাঙ্গ নিহত হন। টুলসা কেকেকে’র প্রতিষ্ঠাতা ডব্লিউ. ট্রেট ব্র্যাডি সরাসরি এই দাঙ্গায় অংশ নেন।

২) এক শ্বেতাঙ্গ মহিলাকে ‘ইভ টিজিং’ করার অভিযোগে এমেট টিল নামের চৌদ্দ বছর বয়সী এক কৃষ্ণাঙ্গ বালককে বেদম প্রহার করে দুই ক্ল্যান সদস্য। ঘটনাটি ঘটে মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যের মানি শহরে, ১৯৫৫ সালে। এমেটকে এত নৃশংসভাবে মারা হয়েছিল যে তার চোয়াল স্থানচ্যুত হয়, একটি চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসে। পরে হতভাগ্য ছেলেটিকে গুলি করে নদীতে ফেলে দেয়া হয়।

৩) ১৯৫৭ সালে এডওয়ার্ড অ্যারন নামক এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে অপহরণ করে কু ক্লাক্স ক্ল্যান। পরে তাকে মারাত্মক মারধরের পর রেজর দিয়ে খোজা করে দেয়া হয় এবং একটি খাঁড়িতে ফেলে রাখা হয়। সেখানেই মৃত্যু ঘটে অ্যারনের।

৪) আলাবামায় ১৯৫৭ সালে আরেকটি অপহরণের ঘটনা ঘটে। উইলি এডওয়ার্ডকে অপহরণের পর বেদম পেটায় ক্ল্যানসম্যানরা। পরে তাকে বন্দুকের মুখে রেখে আলাবামা নদীর ওপর একটি ১২৫ ফুট উঁচু ব্রিজ থেকে লাফ দিতে বাধ্য করা হয়।

৫) বার্মিংহামের ১৬ তম সড়কে অবস্থিত কৃষ্ণাঙ্গদের একটি ব্যাপ্টিস্ট চার্চে বোমা লুকিয়ে রাখে কু ক্লাক্স ক্ল্যান। পরে সেই বোমা বিস্ফোরিত হলে ১২-১৪ বছর বয়সী চারজন কৃষ্ণাঙ্গ স্কুল ছাত্রী নিহত হয়। এই ঘটনাটি ঘটে ১৯৬৩ সালে।

Image Source: timeline.com

৬) মেডগার এভার্স ছিলেন একজন নাগরিক অধিকার কর্মী। কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পর বায়রন ডে লা ব্যাকউইথ নামক একজন ক্ল্যানসম্যানের হাতে খুন হন তিনি। এটিও ১৯৬৩ সালের ঘটনা।

৭) ভায়োলা লুইজো, একজন শ্বেতাঙ্গ নাগরিক অধিকার কর্মী এবং একইসাথে একজন মা ও স্ত্রী। জনৈক কৃষ্ণাঙ্গ অধিকারকর্মীর সাথে তাকে এক গাড়িতে চড়তে দেখে রুষ্ট হয় ক্ল্যান সদস্যরা। পরে তার মাথায় দুবার গুলি করে খুন করা হয়। এটি ঘটেছিল আলাবামার সেলমায়, ১৯৬৫ সালে।

৮) একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশকে হত্যার সন্দেহে মাইকেল ডোনাল্ডকে খুন করে ক্ল্যান সদস্যরা। কৃষ্ণাঙ্গ ডোনাল্ডকে গাছের ডাল দিয়ে বেদম প্রহার করা হয়। তার গলায় দড়ি আটকিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় এবং গলা চিরে ফেলা হয়। পরে তার লাশ গাছ থেকে ঝুলিয়ে রাখা হয়। অবশ্য এই ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তি হয়েছিল।

৯) চৌদ্দ বছর বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ ছাত্র জেসন স্মিথের লাশ পাওয়া যায় স্থানীয় একটি হ্রদে। তার দেহের কিছু অঙ্গ খুঁজে পাওয়া যায়নি। যদিও তার মৃত্যুকে ‘দুর্ঘটনাবশত ডুবে মরা’ বলে চালানো হয়, কিন্তু তার বাবা ও পরিবারের মতে, এই হত্যাকান্ডটি স্থানীয় কু ক্লাক্স ক্ল্যান দ্বারা সংগঠিত হয়েছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে মাত্র কয়েকবছর আগে, ২০১১ সালে, লুইজিয়ানার ইরোস শহরে।

১০) কু ক্লাক্স ক্ল্যান কর্তৃক সর্বশেষ আক্রমণের ঘটনাটি ঘটে ২০১৬ সালে। ক্যালিফোর্নিয়ায় কেকেকে বিরোধী মিছিলে ক্ল্যান সদস্য ও সমর্থকরা হামলা করে তিনজনকে ছুরিকাঘাত করে।

অধুনা কেকেকে

যদিও বর্তমানে চিরাচরিত কু ক্লাক্স ক্ল্যান বিলুপ্ত, তবুও এখনো অনেক সংগঠন আছে যেগুলো নানা নামে, নানা ঢংয়ে পরিচালিত হলেও মূলত কেকেকে মতবাদে বিশ্বাসী এবং এই সংগঠনগুলো মূল কেকেকে’র মতোই ভয়ংকর। বর্তমানে তাদের পাঁচ থেকে আট হাজার সদস্য রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এই সদস্যরা কয়েক ডজন বিভিন্ন গ্রুপে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

আধুনিক কেকেকে সদস্য; Image source: ibtimes.co.uk

বর্তমান জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো ঠিক যেভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে, কু ক্লাক্স ক্ল্যানও ঠিক সেভাবেই পরিচালিত হতো। বর্তমানে সন্ত্রাসবাদ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়লেও ট্রিপল কে শুধু আমেরিকাতেই সক্রিয় ছিল। এখনো এই সংগঠনটির ছড়ানো বিষবাষ্প মার্কিন সমাজ থেকে পুরোপুরি মুছে যায়নি। হেট-ক্রাইমের যে ধারার আজ থেকে প্রায় দেড়শ বছর আগে সূচনা হয়েছিল মার্কিন সমাজে, তা আজও বহাল তবিয়তেই চলছে ট্রাম্পের গ্রেট আমেরিকায়।

This article is in Bangla language. It discusses about the American hate group Ku Klux Klan. All the necessary references are given.

References:

শার্লক হোমস সমগ্র ২, অনুবাদ অদ্রীশ বর্ধন (২০১২), লালমাটি, পৃ. ৬০

Featured Image: monovisions.com

Related Articles