
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসস্তুপ থেকে যে সোভিয়েত ইউনিয়ন গড়ে উঠেছিল তা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম শক্তিশালী এক দেশ। গত শতকের প্রায় পুরোটা সময় সমান তালে দেশটি পাল্লা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে, যা থেকে জন্ম হয়েছিল এক স্নায়ুযুদ্ধের। গত শতকের শেষভাগে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ার আগে নয়জন নেতা এই দেশটিকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন

লেনিনের জন্ম ১৮৭০ সালে রাশিয়ার সিমবির্স্কে। তিনি রাশিয়াতে কমিউনিস্ট আন্দোলনকে সংগঠিত করেন এবং বিদেশে নির্বাসনে থাকাবস্থাতেই বিভিন্নভাবে রাশিয়ার জারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে সংগঠিত করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলার মাঝেই ১৯১৭ সালের ফ্রেব্রুয়ারি বিপ্লবের মাধ্যমে রাশিয়ায় জারকে উৎখাত করে রাজতন্ত্রকে বিলোপ করা হয়। সে বছরেই লেনিন সুইজারল্যান্ড থেকে জার্মানির সহায়তায় রাশিয়া ফিরে আসেন এবং অক্টোবর বিপ্লবে নেতৃত্ব দানের মাধ্যমে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করেন। ১৯১৭ থেকে ১৯২২ পর্যন্ত চলা রাশিয়ান গৃহযুদ্ধে লেনিন প্রতিপক্ষকে দমন করে ক্ষমতা সুসংহত করেন। ১৯২৪ সালের ২১ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে তার মৃতদেহকে মমি করে রাখা হয় এবং এখনও তার মরদেহের মমি সর্বসাধারণের প্রদর্শনের জন্য উন্মুক্ত অবস্থায় জাদুঘরে রাখা আছে। তিনি যেসব সংস্কার কর্মসূচীর কাজ শুরু করেছিলেন তার প্রভাব রাশিয়ায় আজও অনুভূত হয়।
জোসেফ স্ট্যালিন

জীবনের শেষের দিকে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যদের অনিয়ন্ত্রিত বিপুল ক্ষমতাকে জবাবদিহিতার বাইরে রাখার বিপদ সর্ম্পকে লেনিন তার সহকর্মীদের বারবার সর্তক করেছিলেন। তার মৃত্যুর পর নেতৃত্ব নিয়ে পার্টির সদস্যরা বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। বিবাদমান পক্ষগুলোর ভেতর জোসেফ স্ট্যালিনের পক্ষটি শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং ক্ষমতা দখল করে। জোসেফ স্ট্যালিন হয়ে ওঠেন সোভিয়েত ইউনিয়নের একচ্ছত্র নেতা।
লেনিন ও অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক নেতাদের সাথে বিভিন্ন আদর্শ, নীতি ও পরিচালন প্রশ্নে স্ট্যালিনের মতপার্থক্য আগে থেকেই ছিল। লেনিনের দীর্ঘ অসুস্থতাকালীন সময়ে স্ট্যালিন তার অনুগতদের সরকার ও সামরিক বাহিনীর গূরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দলের ভেতরে তার ক্ষমতাকে পোক্ত করছিলেন।
স্ট্যালিন জার শাসিত রাশিয়ার জর্জিয়াতে ১৮৭৮ সালে জন্মগ্রহন করেন। দীর্ঘদিনের নির্বাসন সময়ে স্ট্যালিন জারের পতনের জন্য আন্দোলন করেছেন। পরবর্তীতে সদ্য জন্ম নেয়া সোভিয়েত ইউনিয়নকে রক্ষার জন্য রাশিয়ান গৃহযুদ্ধ, পোলিশ-সোভিয়েত যুদ্ধসহ অন্যান্য যুদ্ধে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন।

স্ট্যালিন ছিলেন একজন অত্যন্ত কঠোর ও নির্মম শাসক। ১৯২৯ সালের মধ্যে পার্টির ভেতর তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের দমন করার মাধ্যমে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়েনের একচ্ছত্র নেতায় পরিণত হন। স্ট্যালিন অত্যন্ত নিয়ন্ত্রনমূলক সরকার পরিচালনা করতেন। যে কাউকে ভিন্ন মতাবলম্বী মনে হলেই তাকে হয় হত্যা করা হতো নতুবা সাইবেরিয়ার ক্যাম্পগুলোতে নির্বাসনে পাঠানো হত। কমিউনিস্ট পার্টির বহু সিনিয়র নেতাও স্ট্যালিনের হাত থেকে রেহাই পাননি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর পূর্ব পর্যন্ত স্ট্যালিন রাশিয়ায় শিল্পায়ন করার প্রতি বেশি মনোযোগ দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিকে তিনি হিটলারের সাথে অনাক্রমণ চুক্তি সই করেন, যে চুক্তিতে পূর্ব ইউরোপকে সোভিয়েত ও জার্মানির ভাগ করে নেয়ার কথা বলা হয়। পরবর্তীতে হিটলার চুক্তি ভঙ্গ করে সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করলে স্ট্যালিন মিত্রপক্ষে যোগ দেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জয়লাভের পর স্ট্যালিন পূর্ব ইউরোপের উপর সোভিয়েত কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৭ সাল নাগাদ পশ্চিমা বিশ্বের সাথে স্ট্যালিনের সর্ম্পক আবারও খারাপ হয়ে পড়ে, যা থেকে জন্ম হয় স্নায়ুযুদ্ধের। ১৯৫৩ সালের ৫ মার্চ স্ট্যালিনের মৃত্যু হয়।
গিওর্গি মেলেনকোভ

মেলেনকোভের জন্ম ১৯০২ সালে। কমিউনিস্ট পার্টিতে তার উত্থানের পেছনে লেনিনের সাথে তার পরিবারিক সর্ম্পক এবং স্ট্যালিনের সমর্থন বিশেষভাবে কাজ করেছে। ১৯৩০ এর দশকে স্ট্যালিন যে দমন কার্যক্রম পরিচালনা করেন তাতে মেলেনকোভ সক্রিয় অংশগ্রহণ করে স্ট্যালিনের পছন্দের মানুষে পরিণত হন। স্ট্যালিনের মৃত্যুর পর কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব মেলেনকোভের কাছে অর্পিত হয়।
সেনাবাহিনীর ব্যয় হ্রাসসহ বেশ কিছু ইস্যুতে তিনি পার্টির অন্যান্য সদস্যদের বিরোধিতার মুখে পড়েন। পরবর্তীতে পার্টির কট্টরপন্থীদের সহযোগিতায় নিকিতা ক্রুশ্চেভ মেলেনকোভের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেন। ১৯৫৭ সালে মেলেনকোভ ক্রুশ্চেভের বিরুদ্ধে এক ব্যর্থ বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পার্টি থেকে বহিষ্কৃত হন। পরবর্তীতে মেলেনকোভকে কাজাখস্তানের এক জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ম্যানেজার হিসেবে একপ্রকার নির্বাসনে পাঠানো হয়। ১৯৮৮ সালে মেলেনকোভ মৃত্যুবরণ করেন।
নিকিতা ক্রুশ্চেভ

ক্রুশ্চেভের জন্ম ১৮৯৪ সালে রাশিয়ায়। ১৯১৮ সালে ক্রুশ্চেভ কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন এবং রেড আর্মির সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৩০ ও ১৯৪০ এর দশকে তিনি দ্রুত পার্টির উচ্চতর পদগুলোতে আসীন হতে থাকেন। মেলেনকোভের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে ক্রুশ্চেভ স্ট্যালিন যুগের লৌহ কঠিন শাসনের শক্ত নিয়ন্ত্রণকে অনেকটা হ্রাস করেন। তিনি মত প্রকাশের কিছুটা সুযোগ দেন। ভিন্ন মতাবলম্বী কমিউনিস্ট নেতা ও ভিন্নপন্থী অনেক নেতাকে তিনি জেল থেকে মুক্তি দেন। তিনি কৃষিকাজের প্রতি ভীষণ আগ্রহী ছিলেন। তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের সামনে অবাস্তব কৃষি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেন, যা অধিকাংশ পার্টি সদস্য ভালভাবে গ্রহণ করেনি।
ক্রুশ্চেভ তার শাসনামলের বেশিরভাগ সময় পশ্চিমের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নীতি গ্রহণ করেছিলেন। তবে তার শাসনামলেই কিউবা মিসাইল সংকট দেখা দেয়। তার সময়েই নির্মিত হয় বার্লিন প্রাচীর। অতি দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, চীনের সাথে অত্যন্ত নাজুক সম্পর্কসহ বেশ কিছু কারণে কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ক্রুশ্চেভের উপর আস্থা হারিয়ে ফেললে ১৯৬৪ সালের ১৪ অক্টোবর ক্রুশ্চেভ পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের পর তার প্রতি তৎকালীন সোভিয়েত সরকার প্রসন্ন আচরণ করেননি। ১৯৭১ সালে ক্রুশ্চেভ মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে সোভিয়েত সরকার কোনো রাষ্ট্রীয় সৌজন্য প্রদর্শন করেনি।
লিওনিদ ব্রেজনেভ

ব্রেজনেভ ইউক্রেনে ১৯০৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯২৩ সালে যুব সংগঠনে যোগদানের মাধ্যমে তিনি রাজনীতি শুরু করেন এবং ১৯২৯ সালে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহন করেন এবং পরবর্তীতে মেজর জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৫২ সালে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সেন্ট্রাল কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ক্রুশ্চেভের নিকট থেকে ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি ক্রুশ্চেভের উদার সংস্কার কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। তিনি রাশিয়ান গুপ্ত পুলিশ ও কেজিবিকে স্ট্যালিন যুগের কিছু ক্ষমতা, যা ক্রুশ্চেভ বন্ধ করে দিয়েছিলেন, তা পুনরায় প্রদান করেন। তার আমলের শুরুর দিকে সোভিয়েত অর্থনীতিতে গতি আসে। তবে সত্তরের দশকের মাঝামাঝিতে অর্থনীতির গতি স্থবির হয়ে যায় এবং এ স্থবিরতা আর কখনোই কাটেনি।
তিনি সোভিয়েত সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকায়ন করেন। এজন্য সোভিয়েত অর্থনীতিকে চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। তিনি সত্তরের দশকে পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে চলমান উত্তেজনা হ্রাসের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন, কিন্তু ১৯৭৯ সালে সোভিয়েত সেনাবাহিনী আফগানিস্তানে অনুপ্রবেশ করলে পরিকল্পনাটি ব্যর্থ হয়ে যায়। আফগান যুদ্ধের চড়া মূল্য সোভিয়েত ইউনিয়নের অর্থনীতিতে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। তার জীবনের শেষের দিনগুলোতে স্বাস্থ্যের ক্রমাগত অবনতি ঘটে। এ সময় তিনি নামে মাত্র সর্বোচ্চ নেতা থাকলেও সরকার ও পার্টির উপর তার নিয়ন্ত্রণ ছিল না বললেই চলে। ১৯৮২ সালে তার মৃত্যু হয়।
ইউরি আন্দ্রোপভ

ইউরি আন্দ্রোপভের জন্ম ১৯১৪ সালে। ১৯৩৯ সালে তিনি কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৬৭ সালে তিনি কেজিবির প্রধান নিযুক্ত হন। ব্রেজনেভের মৃত্যুর পর তিনি ক্ষমতাগ্রহণ করেন। তিনি মন্ত্রী ও পার্টির অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে এক দূর্নীতি দমন অভিযান পরিচালনা করেন। ফলে বহু মন্ত্রী মন্ত্রীত্ব হারান। তিনি আফগানিস্তানে সোভিয়েত দখলদারিত্ব বজায় রাখেন। তার শাসনামল সংক্ষিপ্ত। ১৯৮৩ সালের আগস্টে তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। ১৯৮৪ সালে তার মৃত্যু ঘটে।
কনস্তান্তিন চেরনেঙ্কো

চেরনেঙ্কোর জন্ম ১৯১১ সালে। ১৯৩১ সালে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির পূর্ণ সদস্য হন। তিনি প্রোপাগান্ডা বিভাগে কাজ করার সময় ১৯৪৮ সালে ব্রেজনেভের সুনজরে আসেন। ব্রেজনেভ চেরনেঙ্কোর উত্থানে সহায়তা করেন। ১৯৭১ সালে চেরনেঙ্কো সেন্ট্রাল কমিটির সদস্য মনোনীত হন। নিজের ভগ্নস্বাস্থ্য হওয়া সত্ত্বেও চেরনেঙ্কো আন্দ্রোপভের পর সবোর্চ্চ ক্ষমতা গ্রহণ করেন। তিনি শ্রমিক সংগঠন ও শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক সংস্কার করেন। চীনের সাথে বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন করেন, তবে তিনিও আফগানিস্তানে সোভিয়েত দখলদারিত্ব বজায় রাখেন। তিনি ১৯৮৪ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক বয়কট করেন। ১৯৮৪ এর মাঝামাঝিতে তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। ১৯৮৫ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মিখাইল গর্বাচেভ

মিখাইল গর্বাচেভ ১৯৩১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। মস্কো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়ার সময় তিনি কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন। চেরনেঙ্কোর মৃত্যুর পর তিনি ১৯৮৫ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ক্ষমতার শীর্ষে আরোহন করেন। পশ্চিমাদের সাথে তিনি মহাকাশে অস্ত্র বিস্তারের এক অত্যন্ত ব্যয়বহুল প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন, যা সোভিয়েত অর্থনীতিকে চাপে ফেলে দেয়। তিনি ১৯৮৭ সালে আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের অভিযানের সমাপ্তি টানেন।
তিনি প্রচুর উদারবাদী সংস্কার করেন। দেশ শাসনে কমিউনিস্ট পার্টির সাংবিধানিক ক্ষমতাকে অপসারণ করেন। ১৯৯০ সাল সোভিয়েত ইউনিয়েনের অর্থনীতি বেশ ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। এর বিভিন্ন অংশ স্বাধীনতা ও অধিকতর ক্ষমতা দাবী করতে থাকে। ১৯৯১ এর ডিসেম্বরে সোভিয়েত ইউনিয়ন সম্পূর্নরুপে ভেঙে পড়ে এবং গর্বাচেভ রাশিয়ান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলিৎসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সরে দাঁড়ান।

সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বশেষ নেতা ছিলেন গর্বাচেভ। গেন্নাডি যানায়েভ ১৯৯১ এর আগস্টে গর্বাচেভকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্ব দখল করতে চেয়েছিলেন। তিনি ছিলেন গর্বাচেভের ডেপুটি। অবশ্য তিনদিনের মধ্যে তার অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে যায় এবং তাকে গ্রেফতার হয়। পরবর্তীতে তাকে ক্ষমাও করে দেওয়া হয়।
যে সংস্কার বহু আগে করা দরকার ছিল, তা অনেক দেরিতে শুরু করেছিলেন গর্বাচেভ। সমরাস্ত্র প্রতিযোগিতা, আফগান যুদ্ধ যে চাপ সোভিয়েত অর্থনীতির উপর ফেলেছিল, তা সোভিয়েত ইউনিয়নকে যথেষ্ট দুর্বল করে ফেলে।
যে স্বপ্ন নিয়ে রাশিয়ানরা সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে ফেলেছিল তা শেষপর্যন্ত পূরণ হয়নি। পরবর্তী বহু বছর ধরে এক সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা রাশিয়া ও সোভিয়েত ব্লকভূক্ত দেশগুলোকে গ্রাস করে, যা এখনও চলছে।