Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বুগাটি: আভিজাত্য ও গতির এক অনন্য মিশেল

স্পোর্টস্‌ কার সম্পর্কে যারা টুকটাক খোঁজখবর রাখের তাদেরকে ‘বুগাটি’ নামটির সাথে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছুই নেই। গাড়ির দুনিয়ায় ফেরারি, ল্যাম্বরগিনি, মার্সিডিজ, ম্যাকলারেন, কোনিগসেগের মতো বাঘা বাঘা সব নামের ভিড়েও ‘বুগাটি’ নামটিই যেন সব চেয়ে উজ্জ্বল। পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী, যারা কি না মোট জনসংখ্যার মাত্র ১%, তাদেরকে টার্গেট করে তৈরি বুগাটির একেকটি গাড়ি যে বিলাসিতার চূড়ান্ত উদাহরণ হবে, তা আর না বললেও চলে। এর সাথে যুক্ত হওয়া অবিশ্বাস্য গতি গাড়ির দুনিয়ায় বুগাটিকে নিয়ে গেছে এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী স্থানে। 

বুগাটি কোম্পানির উত্থান এবং এর বিভিন্ন মডেলের অসাধারণ গাড়িগুলোর পেছনের কথা নিয়েই সাজানো হয়েছে আজকের এই লেখা।

বুগাটির উত্থান সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে ইতালির মিলান শহরে। সেখানে ১৮৮১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরে এক শিল্পানুরাগী পরিবারে জন্ম হয় একটি শিশুর। তার নাম রাখা হয় এত্তোরে বুগাটি। তার পিতা কার্লো বুগাটি ছিলেন একজন জুয়েলারি ডিজাইনার।

এত্তোরে বুগাটি; Image Source: BabaMail

কিশোর বয়সে পৌঁছালে পিতার আগ্রহে মিলানের একটি মোটর কারখানায় কাজ শুরু করেন এত্তোরে। দ্রুতই মোটর গাড়ি তৈরির খুঁটিনাটি বিষয় শিখে ফেলেন তিনি। কাজের প্রতি তীব্র মনোযোগী এত্তোরে মাত্র ১৭ বছর বয়সে নিজেই একটি চার ইঞ্জিন যুক্ত মোটর গাড়ি তৈরি করে ফেলেন। সেটি ১৮৯৮ সালের কথা। নতুন তৈরি সেই মোটর গাড়ির নাম রাখা হয় Type – 1।

Type – 1 তৈরির কিছু দিন পেরোতে না পেরোতেই এত্তোরে তৈরি করেন নতুন আরেকটি গাড়ি- Type – II। এই গাড়িটি ১৯০১ সালে মিলানের ট্রেড ফেয়ারে পুরষ্কার জিতে নেয়। এত্তোরের প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে মিলানের ধনকুবের ডেইট্রিখ তাকে নিজের ফ্যাক্টরিতে গাড়ির ডিজাইন করার প্রস্তাব দেন। সেই প্রস্তাব লুফে নেন এত্তোরে।

বুগাটি Type – II; Image Source: BabaMail

ডেইট্রিখের কারখানায় অবিলম্বে কাজে নেমে পরেন এত্তোরে। ফলস্বরূপ ১৯০২ থেকে ১৯০৪ সালের মধ্যে একে একে তৈরি করে ফেলেন Type – 3, 4, 5, 6 ও 7 মডেলের পাঁচটি গাড়ি। প্রতিটি গাড়িতেই লোগো হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল ‘ডেইট্রিখ-বুগাটি’ নাম দুটি।

ডেইট্রিখ-বুগাটি; Image Source: BabaMail

একসময় অন্যের কোম্পানিতে নিজের সব প্রতিভা ঢেলে দেয়ার ব্যাপারে সংশয় জাগে বুগাটির মনে। নিজেই একটি গাড়ি কোম্পানি খোলার কথা ভাবতে থাকেন তিনি। সুযোগও এসে যায় দ্রুতই। গাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে বুগাটির প্রতিভা দেখে একজন ফরাসি ব্যবসায়ী তাকে নিজের কোম্পানি দাঁড় করাতে উৎসাহিত করেন এবং তিনি সেই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে আশ্বাস দেন।

এত্তোরে তাই ডেইট্রিখের কারখানার চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজের কোম্পানি গঠনের দিকে মনোনিবেশ করেন। কিন্তু মাত্র দুই বছরের মাথায় সেই ফরাসি ব্যবসায়ী এত্তোরের সাথে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেন। ফলে কোম্পানির আশা বাদ দিয়ে ১৯০৭ সালে তিনি ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গ শহরে একটি রিসার্চ সেন্টার গড়ে তোলেন। সেখানে তিনি বিভিন্ন মডেলের বেশ কিছু প্রোটোটাইপ গাড়ি তৈরি করেন।

পরবর্তীতে তিনি ‘ড্যেৎজ’ নামক প্রখ্যাত ইঞ্জিন তৈরির কোম্পানিতে যোগ দেন। সেখানেও তিনি নিজের প্রতিভা দিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। ড্যেৎজে থাকাকালীন তিনি ডিজাইন করেন Type – 8, 9 ও 10 মডেলের তিনটি গাড়ি।

বুগাটি Type – 10; Image Source: BabaMail

নিজের রিসার্চ সেন্টার এবং ড্যেৎজ কোম্পানিতে কাজ করে বুগাটির হাতে নিজের একটি গাড়ি কোম্পানি খোলার মত যথেষ্ট অর্থ চলে আসে। তাই দিয়ে তিনি ফ্রান্সের মোলশেইম শহরে নিজের নামে গড়ে তোলেন তার স্বপ্নের কোম্পানি– বুগাটি। যাত্রা শুরু হয় এক অসাধারণ অধ্যায়ের।

এরই মধ্যে শুরু হয়ে যায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। বাধ্য হয়ে মোলশেইম ছেড়ে ইতালিতে পালিয়ে যান এত্তোরে। সেখান থেকে পাড়ি জমান প্যারিসে। বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে আবার ফিরে আসেন মোলশেইমে তার প্রিয় ‘বুগাটি’ কারখানায়।

যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে নতুন গাড়ি তৈরির প্রতি তিনি মনোনিবেশ করেন। ফলে ১৯১৯ সালে অনুষ্ঠিত ‘প্যারিস মোটর শো’তে বুগাটি কোম্পানি তিনটি নতুন গাড়ি প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়। এদের মধ্যে একটি ছিল Type – 13। এটিই বুগাটি কোম্পানির প্রথম গাড়ি হিসেবে পরিচিতি পায়।

বুগাটি Type – 13 ব্রেসিয়া; Image Source: BabaMail

Type – 13 এর নাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ১৯২১ সালে। কারণ ঐ বছর অনুষ্ঠিত ‘ব্রেসিয়া গ্রাঁ প্রিঁ’–তে Type – 13 মডেলের চারটি গাড়ি একাধারে ১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ স্থান দখল করে নেয়। গাড়িটির এই অবিশ্বাস্য সাফল্যের ফলে বিভিন্ন দেশ থেকে কোম্পানিতে এর অর্ডার আসতে থাকে। ফলে অল্প দিনেই কোম্পানির আয় বেড়ে যায় কয়েক গুণ!

আয় বৃদ্ধির সাথে সাথে বুগাটি কোম্পানির উৎপাদনও বাড়তে থাকে সমান তালে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯২৪ সালে তৈরি হয় Type – 35। তৈরির পর থেকে তর্কযোগ্যভাবে এটিই ইতিহাসের সেরা রেসিং কারের মর্যাদা পেয়ে আসছে। ১৯২৫ থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত প্রায় ১০০০টি ভিন্ন ভিন্ন রেসিং প্রতিযোগিতা জয়ের কৃতিত্ব রয়েছে এই Type – 35 এর ঝুলিতে।

বুগাটি Type – 35; Image Source: Hemmings Motor News

১৯২৯ সালে প্রথমবারের মতো বুগাটির একটি গাড়ি ‘মোনাকো গ্রাঁ প্রিঁ’ জিতে নেয়। পরবর্তীতে ১৯৩৭ এবং ১৯৩৯ সালে অনুষ্ঠিত ‘Le Mans’ রেসও জিতে নেয় বুগাটি।

চারদিক থেকে যখন দু’হাত ভরা সাফল্য আসছিল ঠিক তখনই বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো একটি ঘটনা ঘটে যায় এত্তোরের জীবনে। তার বড় ছেলে জিন বুগাটি, যিনি কোম্পানির অন্যতম নির্বাহী এবং ডিজাইনার ছিলেন, ১৯৩৯ সালে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মাত্র ৩০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

জিন বুগাটির মৃত্যু বুগাটি কোম্পানির জন্য ছিল বিরাট ধাক্কা। কারন এত্তোরের বয়স হয়ে যাওয়ায় জিনকেই ভাবা হচ্ছিল কোম্পানির পরবর্তী প্রধান। সেভাবেই তৈরি করা হচ্ছিল তাকে। তাই তার মৃত্যুর ফলে কোম্পানিতে নেতৃত্বশূন্যতা দেখা দেয়।

জিন বুগাটি; Image Source: Find A Grave

মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ হিসেবে শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। সেই যুদ্ধে মোলশেইমে অবস্থিত বুগাটির কারখানা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। যুদ্ধ শেষে আবার নতুন করে শুরু করতে হয় কারখানার কাজ। এর মধ্যেই নতুন মডেলের গাড়ির ডিজাইন শুরু করেন এত্তোরে। সেটির নাম ছিল 375cc supercharged। কিন্তু তা আর শেষ করে উঠতে পারেননি তিনি। তার আগেই ১৯৪৭ সালে এই অসাধারণ প্রতিভা চির বিদায় নেন পৃথিবী থেকে।

এত্তোরের মৃত্যুর পর বুগাটি কোম্পানি আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। নতুন মডেলের গাড়ির অভাবে বিক্রিও কমে যেতে থাকে। ফলে বাধ্য হয়েই ১৯৫২ সালে বুগাটি তার গাড়ি উৎপাদন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

পরবর্তীতে এত্তোরের আরেক ছেলে রোনাল্ড বুগাটি কোম্পানিকে পুনরায় সচল করার চেষ্টা করেন। তিনি ১৯৫৫ সালে Type – 251 মডেলের নতুন একটি গাড়ি বাজারে ছাড়েন। কিন্তু তা চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়। ফলে আবার গাড়ির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় বুগাটির। পরবর্তী বছরগুলোয় শুধুমাত্র বিমানের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরির মধ্যেই সীমিত থাকে বুগাটির কার্যক্রম।

বুগাটি Type – 251; Image Source: Motorised Images LTD

বুগাটি কোম্পানির পুনর্জন্ম হয় ১৯৮৭ সালে। ঐ বছর একজন ইতালিয়ান উদ্যোক্তা বুগাটি কোম্পানি কিনে নেন। তিনি ইতালির মোদেনা শহরে কোম্পানির নতুন কারখানা গড়ে তোলেন। পুনরায় শুরু হয় বুগাটির গাড়ি তৈরির কাজ।

এরই ধারাবাহিকতায় বুগাটি ১৯৮৯ সালে বিশ্ববাসীকে পরিচয় করিয়ে দেয় তাদের নতুন মডেলের গাড়ি EB110 GT এর সাথে। এই গাড়িটির ডিজাইন করেছিলেন ল্যাম্বরগিনির আইকনিক মডেল ‘মিউরা’র  প্রখ্যাত ডিজাইনার পাওলো স্ট্যানজি এবং মার্সেলো গানদিনি।

EB110 GT এর সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘন্টায় ২০৯ মাইল/ঘন্টা। এতে ব্যবহার করা হয়েছিল ৩.৫ লিটারের V12 ইঞ্জিন। কিন্তু সেসময় ইউরোপে অর্থনৈতিক সঙ্কট চলার কারণে এই গাড়িটি বাজারে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি।

বুগাটি EB110 GT; Image Source: BabaMail

নতুন করে জন্ম নেয়া বুগাটি ১৯৯৩ সালে বাজারে নিয়ে আসে নতুন আরেকটি মডেল– EB112। এতে ছিল ৪৫০ হর্সপাওয়ারের একটি V12 ইঞ্জিন। কিন্তু এই মডেলটিও বাজারে সুবিধা করতে পারেনি। পর পর দুটি মডেলের গাড়ি ফ্লপ হওয়ায় কোম্পনির আয় তলানিতে গিয়ে ঠেকে। ফলে ১৯৯৫ সালে দ্বিতীয়বারের মতো বন্ধ হয়ে যায় বুগাটি কোম্পানি।

বুগাটি EB112; Image Source: BabaMail

১৯৯৮ সালে দৃশ্যপটে আসে ভক্সওয়াগন। ঐ বছর তারা বুগাটি ব্র্যান্ডটি কিনে নেয়। ভক্সওয়াগনের অধীনে বুগাটির এরপরের গল্পটা শুধুই সাফল্যের। 

বুগাটির মালিকানা লাভের পর পরই  ভক্সওয়াগন গ্রুপ নজর দেয় পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুতগামী গাড়ি তৈরির দিকে। ২০০১ সাল থেকে তারা কাজ শুরু করে দেয়। এই ধরনের গাড়ি তৈরির জন্য যে মানের কারখানা দরকার তা তখন ছিল না বুগাটির। ফলে ভক্সওয়াগন গ্রুপ বুগাটির মোলশেইমের কারখানাটিকে নতুন করে গড়ে তোলা শুরু করে। এর কাজ শেষ হয় ২০০৫ সালে। ঐ বছরেই বুগাটি প্রথমবারের মতো বাজারে আনে তাদের অন্যতম সফল সুপার কার– বুগাটি ভেরন।

বুগাটি ভেরন; Image Source: BabaMail

বুগাটি ভেরন বাজারে আসা মাত্র চারদিকে হৈ-চৈ ফেলে দেয়। ২৬৭.৮ মাইল/ঘন্টা গতি তুলে নতুন গিনেজ রেকর্ড গড়ে ভেরন। শুধু গতিতেই নয়, বরং এর আভিজাত্য এবং চোখ ধাঁধাঁনো ডিজাইন দিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয় এই গাড়ি। ব্রিটিশ টিভি শো ‘টপ গিয়ার’ বুগাটি ভেরনকে পৃথিবীর বুকে মানুষের তৈরি শ্রেষ্ঠ গাড়ির মর্যাদায় ভূষিত করে।

১.১ মিলিয়ন ডলার মূল্যের এক একটি বুগাটি ভেরনে ছিল ৮ লিটারের একটি W16 ইঞ্জিন যা সর্বোচ্চ ৯৮৭ হর্সপাওয়ার উৎপন্ন করতে সক্ষম। পরবর্তী বছরগুলোতে ভেরনের আরও বেশ কয়েকটি স্পেশাল সংস্করণ বাজারে এনেছিল বুগাটি। ২০১৫ সালে এর উৎপাদন বন্ধের আগ পর্যন্ত সর্বমোট ৪৫০টি ভেরন তৈরি করে কোম্পানিটি।

বুগাটি ভেরন সুপার স্পোর্ট; Image Source: BabaMail

ভেরনের তুমুল সাফল্য বুগাটির ওপর বিশ্ববাসীর প্রত্যাশাকে বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। তারপরও ভেরনের সমমানের আরেকটি সুপারকার তৈরি প্রায় অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছিল সবার কাছে। কিন্তু সবার ধারণা ভুল প্রমাণিত করে ভেরনের উত্তরসূরী হিসেবে ২০১৬ সালে ‘চিরন’ এর সাথে বিশ্ববাসীকে পরিচয় করিয়ে দেয় বুগাটি। ভেরনের মতো চিরনেরও নামকরণ করা হয়েছিল বুগাটির একজন সাবেক রেসিং ড্রাইভারের নামানুসারে।

বুগাটি চিরনকে দেখার পর সবাই স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে, এটি আসলেই ভেরনের যোগ্য উত্তরসূরী। নতুন মডেলের এই গাড়িটিতে ভেরনের ইঞ্জিন ব্যবহার করা হলেও তা অনেকাংশেই আরও উন্নত করা হয়েছে। ফলে চিরনের ইঞ্জিন সর্বোচ্চ ১৪৭৯ হর্সপাওয়ার উৎপন্ন করতে পারে যা ভেরনের তুলনায় অনেক বেশি। গতির দিক দিয়েও চিরন ছাড়িয়ে গেছে তার পূর্বসুরিকে। এটি সর্বোচ্চ গতি ২৮৮ মাইল/ঘন্টা। একটি বুগাটি চিরন কিনতে হলে আপনাকে খরচ করতে হবে প্রায় ২.৭ মিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ২২ কোটি টাকার সমান!

বুগাটি চিরন; Image Source: BabaMail

চিরনের নতুন একটি প্রোটোটাইপ মডেল ‘Chiron Super Sport 300+’ সম্প্রতি ৩০৪ মাইল/ঘন্টা গতি তুলতে সক্ষম হয়, যা একটি বিশ্ব রেকর্ড। এতদিন ধরে বিভিন্ন গাড়ি কোম্পানি ৩০০ মাইলের ম্যাজিক সংখ্যাটি অতিক্রম করার চেষ্টা করে আসছিল। কিন্তু সফল হয়নি। বুগাটি চিরনই প্রথম পৃথিবীর বুকে এটি করে দেখালো।

শুধু চিরনেই থেমে নেই বুগাটি কোম্পানি। তারা ইতোমধ্যে ‘বুগাটি ডিভো’ নামের আরেকটি নতুন মডেল উপহার দিয়েছে গাড়িপ্রেমীদেরকে। প্রাথমিকভাবে এই মডেলের মাত্র ৪০টি গাড়ি তৈরির ঘোষণা দেয় বুগাটি এবং শুধুমাত্র যাদের ন্যূনতম একটি চিরন রয়েছে তারাই কিনতে পারবেন নতুন এই মডেলের গাড়িটি। অবশ্য ঘোষণার সাথে সাথে ৪০টি গাড়িই বিক্রি হয়ে গিয়েছে! একেকটির মূল্য প্রায় ৫ মিলিয়ন ইউরো!

বুগাটি ডিভো; Image Source: Bugatti

এছাড়াও কোম্পানির ১১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বুগাটি ‘লা ভইচু নোয়াঁ’ নামের আরেকটি প্রোটোটাইপ গাড়ি তৈরি করেছে যেটি রেকর্ড ১৮ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়! অবশ্য এই মডেলের মাত্র একটি গাড়িই তৈরি করেছে বুগাটি।

বুগাটি লা ভইচু নোয়াঁ; Image Source: Automobile Magazine

বুগাটির শীঘ্রই থামার কোনো লক্ষণ নেই। একেকটি চোখ ধাঁধাঁনো গাড়ি দিয়ে তারা যেন বিশ্ববাসীকে সম্মোহন করে রাখার পণ করেছে। অবশ্য তাতে কারোরই আপত্তি থাকার কথা নয়। উচ্চ মূল্যের কারণে কিনতে না পারলেও এসব গাড়ি দেখাও তো চোখের প্রশান্তি!

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে আরও জানতে আজই পড়ুন এই বইগুলো

১) মাথায় যত প্রশ্ন ঘোরে

২) বরণীয় বিজ্ঞানীদের স্মরণীয় আবিষ্কার

৩) The Wright Brothers: The Dramatic Story-Behind-the-Story

This article is in Bengali language. It is about the story of Bugatti cars. Necessary links are hyperlinked.

Feature image: Bugatti

Related Articles