Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

রোম সাম্রাজ্যের উত্থান (৭ম পর্ব): আঞ্চলিক শক্তির সাথে সংঘর্ষ এবং একক পরাশক্তি হিসেবে রোমের আত্মপ্রকাশ

রাজতন্ত্রের পতনের পরবর্তী সময়ে রোমান রিপাবলিক ছিল টিবের নদীর দক্ষিণে ৩৫০ বর্গ মাইল জুড়ে বিস্তৃত বর্ধিষ্ণু একটি রাজ্য। কিন্তু প্রজাতন্ত্রের মধ্যে চলা অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন শক্তি রোমকে পরাজিত করার জন্য একে সুবর্ণ সময় বলে চিহ্নিত করতে পেরেছিল। এরকম এক শক্তি ইট্রুস্কান রাজ্য ক্লুসিয়াম। তাদের বাহিনী রোমের দিকে অগ্রসর হয় এবং টিবের নদীর অপরপারে জ্যানিকুলাম পাহাড়ে হানা দিয়ে রোমান বাহিনীকে পরাজিত করে।

রোম ও ক্লুসিয়ামের সংঘাত

তৎকালীন ঐতিহাসিকদের মতে, এই হামলা ঘটেছিল ৫০৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কাছাকাছি সময়ে, রোমের সর্বশেষ রাজা টার্কুইনাস সুপারবাসের মদদে। সিংহাসনচ্যুত টার্কুইনাস তার ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় নিজ ইট্রুস্কান পরিচয়কে পুঁজি করে ক্লুসিয়ামের রাজা পোরসেনার সাথে হাত মেলান। আপাতদৃষ্টিতে পোরসেনা টার্কুইনাসকে রোমের সিংহাসন ফিরিয়ে দিতে অভিযান চালানোর কথা দিলেও তার লক্ষ্য ছিল ক্রমবর্ধমান রোমান ক্ষমতার রাশ টেনে ধরে তার নিজ রাজ্য বিস্তারের অভিলাষের পথ সুগম করা। টার্কুইনাস ক্ষমতা ফিরে পান কি না তা নিয়ে পোরসেনার বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা ছিল না।

ছত্রভঙ্গ রোমানরা ক্লুসিয়াম সেনাবাহিনীর হামলায় টিবের নদীর উপর নির্মিত পন্স সাব্লিকাস সেতু ধরে পালাতে থাকলে পোরসেনার সেনারা তাদের ধাওয়া করে। রোমান সেনাদের রক্ষা করতে এবং শত্রুবাহিনী যাতে সেতু পার হয়ে রোম আক্রমণ করতে না পারে, তিন রোমান সেনানায়ক লারশিয়াস, অ্যাকুইলিনাস এবং হোরাশিয়াস জ্যানিকুলামের ধারে সেতুর প্রান্তে দাঁড়িয়ে প্রাণপণে তাদের বাধা দিতে থাকেন। এদিকে শত্রুরা যাতে নদী পার না হতে পারে, এজন্য তাদের পেছনে রোমান সেনারা সেতু ধ্বংস করে দিতে থাকে।

তখন হোরাশিয়াসের অনুরোধে লারশিয়াস ও অ্যাকুইলিনাস দ্রুত নদী পার হয়ে যান, কিন্তু হোরাশিয়াস সেতুর সর্বশেষ তক্তাটিও গুঁড়িয়ে দেওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান। সেতু সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেলে তিনি পানিতে ঝাঁপিয়ে সাঁতরে এপারে চলে আসেন।

সেতু রক্ষায় বদ্ধপরিকর হোরাশিয়াস; Image Source: eclecticlight.co

এরপর কী হয়েছিল, তা নিয়ে মতাভেদ আছে। রোমান ঐতিহাসিকদের বর্ণনা মতে, রোমানদের বীরত্ব দেখে পোরসেনা অনুধাবন করেন, এদের বশীভূত করে রাখা সম্ভব নয়। এখানে রোমান ঐতিহাসিকরা আরও কিছু ঘটনার অবতারণা করেছিলেন।

আততায়ী স্ক্যাভিওলা

পোরসেনার বাহিনী রোম জ্যানিকুলামে ঘাঁটি করে রোম অবরোধ করে রাখলে রোমবাসীদের অবস্থা সঙ্গীন হয়ে পড়ে। অবরোধ ভাঙতে অসমসাহসী এক রোমান যুবক, গাইয়াস মুসিয়াস স্ক্যাভিওলা ঘোষণা করেন যে, তিনি পোরসেনাকে হত্যা করবেন। পোরসেনা না থাকলে তার বাহিনী অবরোধ তুলে নিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হবে। সেই মোতাবেক স্ক্যাভিওলা নদী পার হয়ে চুপিসারে ইট্রুস্কান শিবিরে প্রবেশ করেন। কিন্তু তিনি পোরসেনাকে কখনো দেখেননি, তাই দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাকে না মেরে তিনি তার পাশে বসে থাকা উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তাকে ছুরির আঘাতে হত্যা করেন।

তাকে ধরে পোরসেনার সামনে হাজির করা হলে তিনি নির্ভয়ে নিজের উদ্দেশ্য ব্যক্ত করেন। তিনি পোরসেনাকে হুমকি দেন যে, তিনি ব্যর্থ হলেও তিনশো’র অধিক রোমান তাকে হত্যা করার জন্য প্রস্তুত আছে এবং তারা সফল না হওয়া পর্যন্ত বারবার চেষ্টা চালিয়ে যাবে। ঐতিহাসিকদের মতে, তার সাহসিকতা পোরসেনার মনে ভাবান্তর জাগিয়ে তোলে।

পোরসেনার সামনে যখন স্ক্যাভিওলাকে আনা হয়; Image Source: eonimages.com

সাহসী ক্লোয়েলা

পোরসেনার তৎকালীন রীতি অনুযায়ী, রোমানদের কাছে জিম্মি দাবি করলে তারা এক বড় সংখ্যক রোমান বালক-বালিকাকে ইট্রুস্কান ঘাঁটিতে পাঠাতে বাধ্য হয়। এদের একজন, কুমারী ক্লোয়েলা তার সাথে থাকা আরো কিছু কুমারী তরুণীকে নিয়ে নদী সাঁতরে সেখান থেকে পালিয়ে আসে। রাগান্বিত পোরসেনা তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য রোমকে হুঁশিয়ার করলে রোমানরা ক্লোয়েলা ও তার সঙ্গীদের আবার ইট্রুস্কানদের হাতে তুলে দেয়।

ক্লোয়েলাকে পোরসেনার সামনে নিয়ে আসা হলে পোরসেনা তার নির্ভীকতায় মুগ্ধ হন এবং তাকে মুক্ত করে দেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি ক্লোয়েলাকে তার পছন্দ অনুযায়ী জিম্মিদের একাংশকে তার সাথে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করেন। কিংবদন্তি মতে, ক্লোয়েলা রোমান বালকদের মুক্ত করেছিল, যাতে তারা শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। তার বীরত্বে রোমানরা শহরে ক্লোয়েলার অশ্বারোহী মূর্তি স্থাপন করে, এই মর্যাদা এর আগপর্যন্ত শুধু রোমান পুরুষরাই পেয়ে আসছিল।

অশ্বারোহী ক্লোয়েলা; Image Source: collections.artsmia.org

একুই ও ভলসিদের সাথে বিবাদ

ল্যাটিন জাতিগুলো তাদের বর্ধিত জনসংখ্যার আবাসন চাহিদা মেটানোর জন্য পঞ্চম খ্রিস্টপূর্বাব্দের শুরুতে প্রতিবেশী ভলসি ও একুইদের অঞ্চলে প্রবেশ করতে শুরু করে। তারা সেখানে সিগনিয়া, নরবা ও স্যাট্রিকাম নামে তিনটি সেটলমেন্ট গড়ে তোলে। কিন্তু ভলসি ও একুইদের প্রতিরোধের মুখে শতাব্দীর মাঝামাঝি তারা ক্ষান্ত দিতে বাধ্য হয়। এ সময় ভলসিদের অঞ্চল উত্তরে অ্যান্টিয়ামের সীমানা এবং একুইদের রাজ্য ল্যাটিয়ামের ভূমিতে পশ্চিমে টাস্কুলাম ও অ্যালজিডেস পর্যন্ত প্রসারিত ছিল। কিন্তু রোমের সাথে চুক্তির পর তাদের নেতৃত্বে ল্যাটিন লিগ শেষ পর্যন্ত একুই ও ভলসিদের পরাজিত করে তাদের অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে।

ভেই দখল

ইট্রুস্কান শহর ভেইয়ের সাথে রোমের বিবাদ রাজাদের আমল থেকেই ছিলে। রোমের মাত্র ১২ মাইল উত্তরে টিবেরের অপর প্রান্তে অবস্থিত ভেই ও রোমে বিভিন্ন সময় লড়াই করেছে এবং দুই পক্ষই নানা যুদ্ধে জয়ী হয়েছে। কিন্তু পাকাপাকিভাবে ভেই অধিকার রোম করতে পারেনি। ৪০২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে টিবের নদীর ধারে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ফিডেনি শহর রোম অধিকার করে নিলে ভেই নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়ে। এর ফলে নতুন করে রোমের সাথে যুদ্ধ শুরু হয়।

রোমান বাহিনী প্রায় ১২ বছর ভেই অবরোধ করে রাখে। এ সময় সেনাদের দৈনন্দিন খরচা মেটাতে সৈন্যদের রোমান সিনেট বেতন প্রদানের সূচনা করে। এর আগে বেতনভুক্ত সেনাদল ছিল না, যুদ্ধে লুণ্ঠিত দ্রব্য ভাগাভাগির মাধ্যমেই সেনাবাহিনীর অর্থ প্রদান করা হতো। ১২ বছরের অবরোধ শেষে ভেইয়ের পতন ঘটে। এবার রোমান সেনাবাহিনী শহর সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে এবং বাসিন্দাদের দাস হিসেবে বিক্রি করে দেয়।

ভেই শহর; Image Source: periodpaper.com

বর্বর গল জাতির অনুপ্রবেশ

ভেইয়ের সাথে যুদ্ধ শেষ হতে না হতেই এক নতুন উপদ্রব দেখা দেয়। পঞ্চম খ্রিস্টপূর্বাব্দের শেষ দিকে বিভিন্ন সেল্টিক জাতি আল্পস পার হয়ে পো নদীর অববাহিকাতে প্রবেশ করে। তারা সেখান থেকে স্থানীয় ইট্রুস্কান বাসিন্দাদের তাড়িয়ে দিয়ে টিসিনাস ও ম্যাগিওর লেক থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে অ্যাড্রিয়াটিক পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় বসতি স্থাপন করে। এদেরকেই গল বলা হয়।

গল জাতি মূলত সাতটি উপজাতিতে বিভক্ত ছিল, যাদের মধ্যে নিয়মিত বিবাদ লেগে থাকত। এছাড়াও প্রত্যেকটি উপজাতির মধ্যে ছিল অনেক গোত্র, যারা আবার একে অপরের সাথে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত ছিল। গলরা প্রত্যেকেই ছিল খুব লম্বা ও শক্তিশালী। নরম লোহায় তৈরি তরবারি ও ঢাল নিয়ে তারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ত। এদের বাহিনীতে নিয়মকানুনের কোনো বালাই ছিল না, যা তারা পুষিয়ে নিত তাদের গতি ও উন্মত্ততা দিয়ে। বিশাল গল বাহিনী যখন বিশৃঙ্খলভাবে গর্জন ছেড়ে শত্রুদের দিকে তেড়ে যেত, তখন তাদের দেখে অভিজ্ঞ সেনাদের বুক কাঁপত। কিন্তু এটাও ঠিক যে, লম্বা সময় ধরে তাদের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো মানসিক ও সামরিক প্রস্তুতির অভাব ছিল। তাই সাময়িকভাবে যুদ্ধে জয় পেলেও আধিপত্য ধরে রাখার সক্ষমতা তাদের ছিল না।

স্যাক অভ রোম

৩৮৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গলরা ক্লুসিয়ামে আক্রমণ চালায়। এ সময় রোমান রাষ্ট্রদূতদের আচরণে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। অনেকে বলেন, রোমান রাষ্ট্রদূতরা প্রচলিত বিধির বিরুদ্ধে গিয়ে ক্লুসিয়ামে গলদের প্রেরিত দূতদের হত্যা করায় তারা রোমে অভিযান চালায়। তাদের মোকাবেলা করতে রোমান বাহিনী শহর থেকে বেরিয়ে আসে এবং ফিডেনির উপকণ্ঠে টিবের নদীর শাখা নদী আলিয়ার ধারে তাদের মুখোমুখি হয়। গল যোদ্ধাদের তীব্র আঘাতে রোমানরা দিশেহারা হয়ে যায়। প্রচুর সেনা নিহত হয়, অবশিষ্টরা ভেই শহরের ধ্বংসস্তুপে আশ্রয় নেয়।

আলিয়ার যুদ্ধ; Image Source: learning-history.com

গলরা রোমের দিকে এগিয়ে আসলে পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করে সিনেট। কেবল ফোরামের মধ্যে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলো রক্ষার জন্য ছোট একটি সেনাদল রেখে বাকি শহর খালি করে দেয়। গলরা শহরে ঢুকে ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও ফোরামের আলাদা প্রাচীর ভেদ করে তার মধ্যে থাকা সেনাদের পরাজিত করতে পারেনি।

রোমে থেকে যাওয়ার কোনো ইচ্ছাই গলদের ছিল না। প্রায় সাত মাস তারা রোম ও আশেপাশের এলাকা জুড়ে তাদের লুণ্ঠন চালিয়ে যায়। এদিকে পো নদীর অববাহিকায় তাদের বসতিতে ভেনেশিদের আক্রমণের খবর আসলে তারা ১,০০০ পাউন্ড সোনার বিপরীতে রোম ছেড়ে চলে যেতে সম্মত হয়। কিংবদন্তি মোতাবেক, যখন সোনা ওজন করা হচ্ছিল, তখন গল নেতা তার ভারি তরবারিটি নিক্তির ওজনের পাল্লায় চাপিয়ে দেয়। রোমানরা প্রতিবাদ করলে সে জবাব দেয় “পরাজিতদের কপালে দুঃখই থাকে”। গলরা শহর ছেড়ে চলে গেলে দ্রুত রোমানরা শহর মেরামত করে প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করে।

রোম থেকে গলদের স্বর্ণ লুণ্ঠন; Image Source: history.com

৩৬৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আরেকবার গল জাতি অভিযান চালিয়ে অ্যালবা শহর পর্যন্ত চলে আসে। এসময় রোমানরা তাদের সাথে সরাসরি সংঘর্ষে যাওয়া থেকে বিরত ছিল। ৩৪৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গলরা আরেকবার অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। এবার রোম প্রস্তুত ছিল। তারা ল্যাটিন জাতিগুলোকে সাথে নিয়ে গলদের রাস্তা বন্ধ করে বসে থাকে। পরাজয়ের আশঙ্কায় গলরা পিছু হঠে যায়। অবশেষে ৩৩৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গল জাতি ও রোমের মধ্যে শান্তিচুক্তি সম্পাদিত হয়, যা চতুর্থ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত বজায় ছিল।

প্রথম রোম-স্যামনাইট যুদ্ধ (৩৪৩-৩৪১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)

স্যামনাইটরা ছিল মধ্য ও দক্ষিণ ইটালিতে বসবাসরত পাহাড়ি জাতি। কুশলী যোদ্ধা ও দক্ষ সেনাপতি দ্বারা চালিত স্যামনাইট বাহিনী ছিল তখনকার সময় রোমের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। দক্ষিণ ইতালির ক্যাম্পানিয়া অঞ্চলের দিকে তাদের দু’পক্ষেরই চোখ ছিল, তবে নিকটবর্তিতার জন্য স্যামনাইটরা ক্যাম্পানিয়াকে তাদের বৈধ অধিকার বলে মনে করত।

৩৪১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ক্যাম্পানিয়ার প্রধান শহর কাপুয়া স্যামনাইটদের বারংবার আক্রমণে ভীত হয়ে রোমের সাহায্য প্রার্থনা করলে রোম তা লুফে নেয়। তারা দুটি বাহিনী প্রেরণ করে, কন্সাল ভ্যালেরিয়াস কর্ভাসের নেতৃত্বে একটি বাহিনী ক্যাম্পানিয়ার দিকে যাত্রা করে, অন্য দিকে কন্সাল কসাসের বাহিনী স্যামনিয়াম, স্যামনাইটদের নিজস্ব অঞ্চলে প্রবেশ করে।

প্রাচীন স্যামনাইট যোদ্ধা: Image Source: pinterest.ca

কর্ভাস ৩৪২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মাউন্ট গ্যারিসের যুদ্ধে স্যামনাইট বাহিনীকে পরাজিত করেন। এদিকে কসাস স্যামনিয়ামে দুই পাহাড়ের মাঝে সংকীর্ণ স্থানে আটকে পড়লে ডেসিয়াস নামে এক সাহসী ট্রিবিউন অসমসাহসিকতার সাথে স্যামনাইটদের উপর অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে রোমান বাহিনীর বের হয়ে আসার রাস্তা করে দেন। এই লড়াইয়ে রোমানরা অন্তত ত্রিশ হাজার স্যামনাইট যোদ্ধাকে হত্যা করেছিল বলে দাবি করা হয়। তৃতীয় যুদ্ধ হয় কাপুয়ার দক্ষিণপূর্বে সুয়েসালাতে, যেখানে কর্ভাসের সেনারা স্যামনাইট ক্যাম্প ছারখার করে শত্রুর অন্তত ৪০,০০০ ঢাল এবং ১৭০টি প্রতীক অধিকার করে নেয়।

রোম-স্যামনাইট যুদ্ধ; Image Source: pinterest.ca

যদিও রোম নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হচ্ছিল, কিন্তু এই সময় দুটি ঘটনায় তারা স্যামনাইটদের সাথে সন্ধি করতে বাধ্য হয়। প্রথমত, দীর্ঘদিন নিজেদের ঘরবাড়ি থেকে দূরে থাকায় রোমান সেনাদের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমে ক্রমে বাড়ছিল এবং তাদের অনেকেই যুদ্ধ করতে চাইছিল না। দ্বিতীয়ত, এই সময় ল্যাটিন লিগে রোমের বিরুদ্ধে অসন্তোষের বিস্ফোরণ ঘটে। অন্যান্য ল্যাটিন জাতি রোমের সাথে চুক্তি মোতাবেক যুদ্ধের জন্য সেনা সরবরাহ করত, কিন্তু বিজয়ী হবার পর লুণ্ঠিত মালামাল বেশিরভাগই চলে যেত রোমের কাছে, যা চুক্তির শর্তের বিপরীত ছিল। তাই তারা লুণ্ঠিত মালামালের সমান অংশ দাবি করে আল্টিমেটাম জারি করে।

ল্যাটিন ওয়ারস (৩৪০-৩৩৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)

রোমান বাহিনী ফিরে আসলে সিনেট ল্যাটিন রাজ্যগুলির যৌথ আল্টিমেটাম প্রত্যাখ্যান করে। ল্যাটিন রাজ্যগুলো তখন রোমের বিরোধী অন্যান্য জাতি, যেমন- ভলসি ও সমমনা ক্যাম্পানিয়ান শাসকদের সাথে সামরিক মৈত্রীতে আবদ্ধ হয় এবং তাদের যৌথ বাহিনী ক্যাম্পানিয়াতে প্রবেশ করে।

এদিকে রোমান সিনেট ও স্যামনাইট দু’পক্ষই যৌথ বাহিনীর মোকাবেলার জন্য একত্র হয়। সুয়েসা আরুঙ্কার যুদ্ধে ল্যাটিন ও ক্যাম্পানিয়ান বাহিনী পরাজিত হয়। এদিকে ল্যাটিন বাহিনী স্যামনিয়ামে ঢুকে পড়ে এবং মাউন্ট ভিসুভিয়াসের সন্নিকটে রোমের মূল বাহিনীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। রোমান বাহিনীর প্রধান ছিলেন কন্সাল ম্যানলিয়াস টর্কুয়াটাস ও পাব্লিকাস দেসিয়াস। দুই কন্সালই আগের রাতে স্বপ্ন দেখেছিলেন, রোমের বিজয়ের জন্য তাদের একজনকে আত্মাহুতি দিতে হবে। যুদ্ধ শুরুর আগে তারা চুক্তি করেন, যার সেনাদল আগে ভেঙে পড়ার লক্ষণ দেখাবে, তিনিই আত্মাহুতি দেবেন।

ল্যাটিন যুদ্ধ; Image Source: sites.psu.edu

যুদ্ধ শুরু হলে দেসিয়াসের নেতৃত্বে থাকা বাহু প্রথমে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। দেসিয়াস তখন শত্রুদলের মধ্যে ঝাঁপ দেন। তার বীরত্বে সেনারা নতুন করে উদ্দীপ্ত হয়ে প্রবল বিক্রমে আক্রমণ চালায়। ল্যাটিন বাহিনী পিছু হটে। রোমের সাথে সুবিধাজনক শর্তের ভিত্তিতে ক্যাম্পানিয়ান মিত্ররা ল্যাটিন জোট ত্যাগ করে। ৩৩৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ম্যানলিয়াস ব্যাটল অভ ট্রাইফেনামে আবার ল্যাটিনদের পরাজিত করেন।

সর্বশেষ ৩৩৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আস্তুরা নদীর তীরে ব্যাটল অভ অ্যান্টিয়ামে গাইয়াস মেনিয়াসের নেতৃত্বে প্রথম রোমান নৌবাহিনী সফলভাবে অ্যান্টিয়াম, ল্যানুভিয়াম, অ্যারিসিয়া ও ভেলিত্রার ল্যাটিন বাহিনীকে স্থায়ীভাবে পরাস্ত করতে সক্ষম হয়। রোম ল্যাটিন জাতিগুলোকে আত্মীকৃত করে নেয় এবং ভলসিদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়।  

দ্বিতীয় রোম-স্যামনাইট যুদ্ধ (৩২৫-৩০৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)

ল্যাটিয়ামের সমস্ত এলাকার অধিগ্রহণ এবং অন্যান্য রাজ্যের সাথে চুক্তির মাধ্যমে রোম তার সীমানা প্রসারিত করে ইতালির বিস্তীর্ণ ভূখণ্ডে। সিনেটের দৃষ্টি ছিল পুরো ইতালিকেই রোমের আজ্ঞাবহ করে ফেলা। রোমের দ্রুত প্রসারে স্যামনাইটরা দেখতে পায়, তারা ধীরে ধীরে রোমে বা তার করদ রাজ্য দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে যাচ্ছে, যা তাদেরকে সম্পদশালী অঞ্চল ও উর্বর উপকূলীয় এলাকা থেকে তাদের আদি পাহাড়ি বাসস্থানের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে স্যামনাইটদের প্রতিবাদ সত্ত্বেও রোম নেপলস দখল করলে যুদ্ধের সূচনা হয়। এ যুদ্ধ মূলত ক্যাম্পানিয়াতেই সংঘটিত হয়। ৩১৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে কন্সাল ক্যাল্ভিনাস ও পস্টুমাসের নেতৃত্বাধীন রোমান বাহিনী ক্যাম্পানিয়া থেকে স্যামনিয়ামে ঢুকতে চাইলে সংকীর্ণ কডাইন উপত্যকায় পন্টিয়াসের পরিচালিত স্যামনাইটদের প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। রাত পর্যন্ত প্রচণ্ড যুদ্ধ চলে। সকালে রোমান বাহিনী দেখতে পায়, স্যামনাইটরা তাদের সম্পূর্ণভাবে ঘিরে ফেলেছে। রোমান বাহিনী আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। স্যামনাইটরা শান্তিচুক্তির বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দেয়।

তারা দুটি বর্শা মাটিতে গেঁথে তার উপর তৃতীয় আরেকটি বর্শা রেখে জোয়ালের মতো একটি কাঠামো তৈরি করে। প্রত্যেক রোমান সেনাকে এক বস্ত্রে এর নিচ দিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। ক্যাম্পানিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল এই পরাজয়ের ফলে রোম স্যামনাইটদের কাছে সমর্পণ করতে বাধ্য হয়।  

পরাস্ত রোমান সেনাদল;  Image source: pinterest.ca

এদিকে সেনাদের অপমানের কথা রোমে পৌঁছালে পুরো শহর ক্ষোভে ফেটে পড়ে। রোমান সিনেট স্যামনাইটদের সাথে শান্তিচুক্তি উড়িয়ে দিয়ে নতুন করে সৈন্যসমাবেশ করে। ৩১৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ফ্যাবিয়াসে ম্যাক্সিমাসের অধীনে ৩৫,০০০ সৈন্যের বাহিনী ব্যাটল অভ লুটেলাতে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হলে সাময়িকভাবে পুরো ক্যাম্পানিয়া স্যামনাইটদের অধীনে চলে আসে। কিন্তু দ্রুতই রোম আবার হামলা করে এবং ব্যাটল অফ সিওনাতে স্যামনাইটরা পরাজিত হলে আবার ক্যাম্পানিয়ার বড় অংশ রোমের হাতে চলে যায়।

Source: artstation.com

৩১৪-৩১১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত রোম ক্যাম্পানিয়াতে তার ঘাঁটি শক্তিশালী করতে থাকে এবং স্যামনিয়ামের চতুর্দিকে করদ রাজাদের মাধ্যমে এবং নতুন নতুন রাজ্যের সাথে চুক্তির সাহায্যে নিজের অবস্থান জোরদার করে তোলে। এই সময়ের মধ্যে রোমে থেকে কাপুয়া পর্যন্ত অ্যাপিয়ান রাস্তা তৈরি করে। এ রাস্তা দিয়ে রোমের বাহিনী খুব সহজে এবং অল্প সময়ের মধ্যে রোম থেকে ক্যাম্পানিয়তে যাতায়াত করতে পারত। অ্যাপিয়ান রাস্তা ব্যবহার করে রোমান বাহিনী ৩১০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে স্যামনিয়ামের ভেতরে ঢুকে ক্রমাগত হামলা চালাতে থাকে।

অ্যাপিয়ান রাস্তা; Image Source: reddit.com

যুদ্ধ খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যেত, যদি না ইট্রুস্কানরা নতুন করে রোমের সাথে সংঘর্ষে জড়িত না হত। রোম স্যামনাইটদের নিয়ে ব্যস্ত থাকার সুযোগ নিয়ে তারা রোমান ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। সিনেটের নির্দেশে রোমান বাহিনীর একাংশ তখন আম্ব্রিয়ার মধ্য দিয়ে উত্তর ইট্রুরিয়াতে অভিযান পরিচালনা করে এবং ৩০৯-৩০৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে শত্রুদের শান্তিচুক্তি করতে বাধ্য করে।

ইট্রুস্কান হামলাকারীদের নিয়ন্ত্রণের পর রোম আবার স্যামনাইটদের প্রতি পরিপূর্ণ মনোযোগ দেয়। ৩০৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দের শেষদিকে তারা স্যামনাইটদের রাজধানী বোভিয়ানাম অবরোধ করে। স্ট্যাটিয়াস গেলিয়াস স্যামনাইট যোদ্ধাদের নিয়ে অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করেন। সংঘর্ষে রোমান কমান্ডার মিনুসিয়াস নিহত হলেও রোমান বাহিনী অবরোধ বজায় রাখে। শেষ পর্যন্ত আর কোনো রাস্তা না দেখে স্যামনাইটরা পরাজয় স্বীকার করে রোমের সাথে চুক্তিতে আসে। তারা ক্যাম্পানিয়াসহ বিস্তীর্ণ ভূখন্ড রোমের হাতে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।

তৃতীয় রোম-স্যামনাইট যুদ্ধ (২৯৮-২৯৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)

লুসেনিয়ানরা রোমের জোট ছেড়ে স্যামনাইটদের সাথে যোগ দিলে নতুন করে যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। এবার স্যামনাইটরা ইট্রুস্কান ও গলদের সাথে সামরিক জোট গঠন করে। ২৯৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গেলিয়াস ইকুইটাসের নেতৃত্বাধীন স্যামনাইট ও গলদের বাহিনীর সম্মিলন রুখতে লুসিয়াস সিপিও দুটি রোমান লিজিওন নিয়ে অ্যাপেনাইন পর্বতের ক্যামেরিনাম পাসে অবস্থান নেন। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন এবং ব্যাটল অভ ক্যামেরিনামে রোমান বাহিনী গল ও স্যামনাইট যৌথ বাহিনীর সামনে ধূলিস্যাৎ হয়ে যায়।

সিনেট দ্রুত নতুন করে সেনাবিন্যাস করে। নতুন লিজিয়ন গড়ে তুলতে অপেক্ষাকৃত বয়স্ক এবং মুক্তিপ্রাপ্ত দাসদেরও যোগ দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। এভাবে পাঁচটি লিজিয়ন, আনুমানিক ৩৫,০০০ সেনা নিয়ে ফ্যাবিয়াস ম্যাক্সিমাস ও পাব্লিয়াস ডেসিয়াস ২৯৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দের গ্রীষ্মের ঠিক আগে আম্ব্রিয়া ও পিসেনামের সীমান্তবর্তী সেন্টিয়ামে এসে শিবির ফেলেন। শত্রুবাহিনীর সেনাসংখ্যা ছিল রোমান বাহিনীর থেকে অনেক বেশি। সেজন্য রোমানরা তাদের বাহিনীর একাংশকে পাঠাল ইট্রুরিয়া আক্রমণ করতে, এ আশায় যে, সে খবর পেলে ইট্রুস্কান সেনারা স্যামনাইট জোট ছেড়ে নিজেদের ঘরবাড়ি রক্ষার্থে সেদিকে চলে যাবে।

রোমানদের কৌশলে কাজ হলো। ইট্রুস্কানদের ছাড়াই গল ও স্যামনাইটরা রোমানদের মুখোমুখি হলো। তাদের বাঁ বাহুতে ছিল গল বাহিনী, যাদের বিরুদ্ধে রোমান বাহুর সেনাপতি ডেসিয়াস। ডান বাহুতে স্যামনাইট সেনাদের মোকাবেলা করেন ফ্যাবিয়াস। ফ্যাবিয়াস ছিলেন ডেসিয়াসের তুলনায় বিচক্ষণ ও অভিজ্ঞ সেনাপতি। তিনি রোমান বাহিনীকে প্রতিরক্ষামূলক লড়াইয়ের আদলে সাজান। তার পরিকল্পনা ছিল, রোমানরা যদি নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়, তাহলে শত্রুরা হতোদ্যম হয়ে পড়বে এবং তখন তাদের সহজেই পরাজিত করা সম্ভব হবে।

সেন্টিনামের যুদ্ধ; Image Source: pinterest.ca

কিন্তু যুদ্ধ শুরু হলে ডেসিয়াস অতি উৎসাহের সাথে গলদের আক্রমণ করে বসেন। গল সেনারা সে আক্রমণ প্রতিহত করলে তিনি অশ্বারোহী বাহিনী নিয়ে এগিয়ে যান। গলরা পাল্টা তাদের অশ্বারোহী সেনা ও যুদ্ধরথের সমন্বয়ে তাদের পরাস্ত করে। রোমান ডান বাহুর অবস্থা সঙ্গীন হয়ে ওঠে। ডেসিয়াস নিজের ঘোড়া নিয়ে শত্রুসেনাদের মধ্যে লাফিয়ে পড়ে মারা যান।

ফ্যাবিয়াস ওদিকে স্যামনাইটদের বিরুদ্ধে রোমান বাহিনীর বাম বাহু সফলভাবে ধরে রেখেছিলেন। ডান বাহুর বিপর্যয় টের পেয়ে তিনি তার সেনাদলের একাংশ সেদিকে প্রেরণ করেন। নতুন সেনাদের আগমনে ডান বাহুর সৈন্যরা এবার পাল্টা হামলা চালিয়ে গলদের হঠিয়ে দেয়। গল সেনারা প্রতিরক্ষামূলক অবস্থায় চলে যায়।

ইতোমধ্যে স্যামনাইট সেনাদের মাঝে দুর্বলতার চিহ্ন ফুটে উঠলে ফ্যাবিয়াস পদাতিক বাহিনীকে অগ্রসর হওয়ার নির্দেশ দেন এবং অশ্বারোহীদের নিয়ে পাশ থেকে তাদের আক্রমণ করেন। স্যামনাইট ব্যূহ ভেঙে পড়ে এবং সেনারা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালাতে থাকে। গলরা হঠাৎ করে আবিষ্কার করে, তারা শত্রুসেনা দিয়ে ঘিরে আছে। প্রায় ২৫,০০০ গল ও স্যামনাইট সৈন্য এই যুদ্ধে নিহত হয়; আরো ৮,০০০ বন্দি হয়। রোমান বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতিও কম ছিল না; তারাও ৯,০০০ সেনা হারায়।

স্যামনাইটদের ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। রোম তাদের আত্মীকৃত করে নেয় এবং ইতালির একক পরাশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তবে গল ও ইট্রুস্কানদের সাথে আরো ১৫ বছর যুদ্ধ চলতে থাকে এবং ২৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ইট্রুস্কানদের অধীনে থাকা সর্বশেষ শহর রোমের পদানত হলে তার বিজয় সম্পূর্ণ হয়।

Related Articles