Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

About

Brand Partnerships

Content Policy

Contact

English

EN

Sinhala

SIN

Tamil

TA

Bangla

BAN

ইউএসএস লাফি বনাম ৫২ কামিকাযে পাইলট: একটি আত্মঘাতী প্রচেষ্টার গল্প

Abdullah Al Masud ইতিহাস মে 13, 2022
article

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে একের পর এক পরাজয়ে যখন জাপানের যখন দেয়ালে পিঠ থেকে গিয়েছিল, তখন তারা নতুন এক আত্মঘাতী কৌশল নিয়ে হাজির হয়। অনভিজ্ঞ, তরুণ জাপানি পাইলটরা যুদ্ধবিমান নিয়ে সরাসরি মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলোর উপর আছড়ে পড়ে নিজেদের শেষ করে দেয়ার বিনিময়ে হলেও শত্রুর ক্ষয়ক্ষতির চেষ্টা করত। কামিকাযে নামে পরিচিত এ ধরনের পাইলটদের নিয়ে বিস্তারিত পড়ুন:

কামিকাযে: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আত্মঘাতী জাপানি পাইলট

উক্ত আর্টিকেলে বলেছিলাম, কামিকাযে হামলা ঠেকানোর কৌশল হিসেবে মার্কিনীরা মূল নৌবহর থেকে ৮০ কি.মি. দূরে দূরে তাদের রাডারবাহী যুদ্ধজাহাজগুলো মোতায়েন করত। এভাবে স্বল্প পাল্লার রাডারগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার সম্ভব হতো। জাপানিরাও মার্কিন নৌবহরে বড় ধরনের কামিকাযে হামলার শুরুতেই একাকী অপারেশন চালানো এসব রাডারবাহী জাহাজকে প্রথমেই অচল করে দেয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাত। এতে মূল নৌবহরে আক্রমণের সময় তারা শত্রুর যুদ্ধবিমানের তরফ থেকে কম বাধা পেত, এবং সাফল্যের হার বেড়ে যেত। এই লেখা এমন এক যুদ্ধজাহাজকে নিয়ে যে কিনা একক জাহাজ হিসেবে সর্বোচ্চ সংখ্যক কামিকাযে হামলা ঠেকিয়ে বেঁচে যাওয়া একমাত্র উদাহরণ সৃষ্টি করে ‘The Ship That Would Not Die’ ডাকনাম পেয়েছিল। 

শত্রুকে ধোঁকা দিতে ড্যাজেল ক্যামোফ্লেজে ইউএসএস লাফি; Image Source : medium.com

ইউএসএস লাফি

USS Laffey ছিল অ্যালেন সামার ক্লাস এর ডেস্ট্রয়ার টাইপ যুদ্ধজাহাজ, যার হাল নাম্বার DD-724। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগ দেয়ার পর পরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের শক্তিশালী ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে অবিশ্বাস্য গতিতে যুদ্ধজাহাজ, বিমান, ট্যাংকসহ বিভিন্ন সমরাস্ত্র বানানো শুরু করে। ফলে তারা নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়েও মিত্রবাহিনীর কাছে এসব যুদ্ধাস্ত্র বিক্রি করেছে। ১৯৪৩ সালের ২৮ জুন বানানো শুরু করে সেই বছরের ২১ নভেম্বর ইউএসএস লাফির নির্মাণকাজ শেষ হয়। অর্থাৎ ছয় মাসেরও কম সময়ে ২,২০০ টন ডিসপ্লেসমেন্ট ও ৩৭৬.৬ ফুট লম্বা একটি যুদ্ধজাহাজ বানিয়ে ফেলেছে তারা, যা স্বাভাবিক সময়ে গড়ে এক বছর সময় লাগত। এর ফলে দেখা যেত- প্রতি মাসেই লাফির মতো ৫-৬টি জাহাজ তৈরি হয়ে যুদ্ধে যোগ দিচ্ছে। ফলে বেশ দ্রুতগতিতে পরাজয় ঘটে অক্ষশক্তির। 

এটি যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের বীর নৌসেনা বার্টলেট লাফির নামে নামকরণকৃত দ্বিতীয় যুদ্ধজাহাজ। প্রথমটি ছিল বেনসন ক্লাস ডেস্ট্রয়ার (DD-459), যা গুয়াডালক্যানাল নৌযুদ্ধে ডুবে গিয়েছিল। দ্বিতীয় ইউএসএস লাফি ৩৩৬ জন নাবিক নিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩৪ নট (৬৩ কি.মি.) গতিতে ১২,০০০ কি.মি. দূরে গিয়ে অপারেশন চালাতে পারত। অস্ত্রশস্ত্র হিসেবে এতে ছিল ৬টি ১২৭ মিলিমিটার ব্যাসের ডুয়েল পারপাজ কামান, যা একইসাথে ভূমি ও আকাশের টার্গেটের বিরুদ্ধে গোলা ছুড়তে পারত। যুদ্ধবিমানের হামলা ঠেকানোর জন্য মোট ১২টি ৪০ মিলিমিটার ক্যানন ও ১১টি ২০ মিলিমিটার এন্টি-এয়ারক্রাফট মেশিনগান। অন্যান্য অস্ত্র হিসেবে এতে ১০টি টর্পেডো টিউব এবং ৬টি ডেপথ চার্জ লঞ্চার ছিল, যা যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যবহৃত হতো। তৎকালীন ডেস্ট্রয়ার শ্রেণীর যুদ্ধজাহাজগুলোর তুলনায় অস্ত্রশস্ত্রের দিক দিয়ে ইউএসএস লাফি ছিল বেশ শক্তিশালী।

কমান্ডার ফ্রেডেরিক জুলিয়ান বেক্টন নামের একজন ক্যাপ্টেনের নেতৃত্বে ১৯৪৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জাহাজটিকে মার্কিন নৌবাহিনীতে অফিসিয়ালি যুক্ত করা হয়। কিছুদিন নতুন নাবিকদের স্কুল শিপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে সেই বছরের মে মাসে তাকে আটলান্টিক ফ্লিটে যুদ্ধের জন্য পাঠানো হয়। লাফির প্রথম মিশন ছিল রসদবাহী জাহাজের একটি বড় কনভয়কে নিরাপত্তা দিয়ে ইংল্যান্ডে পৌঁছে দেয়া। এসব বেসামরিক কনভয়কে নিয়মিত আক্রমণ করত জার্মান ইউবোট সাবমেরিন। সে যাত্রায় কোনো বিপদ না ঘটায় লাফিকে এবার আরো বড় দায়িত্ব দেয়া হয়। ১৯৪৪ সালের ৬ জুন ফ্রান্সের নরম্যান্ডিতে বিপুল সংখ্যক সেনা অবতরণ করায় মিত্রবাহিনী, যা ইতিহাসে D-Day নামে পরিচিত। ইউএসএস লাফি এ সময় বেশ কয়েকটি টাগবোট, সেনা বহনকারী জাহাজ ও দুটো ডাচ গানবোটকে নিরাপত্তা দিয়ে নরম্যান্ডি পৌঁছে দেয়। সেখানকার বেশ কিছু জার্মান মেশিনগান পোস্ট লাফির গোলাবর্ষণে ধ্বংস হয়। কয়েকদিন পর (১২ জুন) ইউএসএস নেলসন নামে একটি ডেস্ট্রয়ারকে কয়েকটি জার্মান সাবমেরিন মিলে টর্পেডো মেরে ক্ষতিগ্রস্থ করে। জাহাজটি যখন ডুবে যাওয়ার উপক্রম, তখন ত্রাতা হয়ে আসে ইউএসএস লাফি। তার ডেপথ চার্জ হামলায় সাবমেরিনগুলো পিছু হটতে বাধ্য হয়। ২৫ জুন আরেকটি অপারেশনে ফ্রান্সের Cherbourg-Octeville উপকূলে একটি জার্মান নেভাল বাঙ্কার ধ্বংস করতে গিয়ে তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে ইউএসএস লাফি। একটি জার্মান শেল এসে জাহাজটির ওয়াটার লাইনের নিচে আঘাত করলেও বিস্ফোরিত হয়নি। ফলে অল্পের জন্য বেঁচে যায় লাফি। তার সঙ্গী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস ও’ব্রায়েন ও বারটন বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পরে জাহাজ তিনটিকে যুক্তরাষ্ট্রে মেরামতের জন্য ফিরিয়ে এনে নতুন রাডার বসানো হয়। মেরামত ও আপগ্রেড শেষে ইউএসএস লাফিকে এবার প্যাসিফিক ফ্লিটে যোগ দিতে পাঠানো হয়।

কমান্ডার ফ্রেডেরিক জুলিয়ান বেক্টন পরবর্তীতে রিয়ার অ্যাডমিরাল হন; Image Source: laffey.org

প্যাসিফিক ফ্লিট

টাস্কফোর্স ৩৮-এ যোগ দিয়ে লাফি ফিলিপাইন, লেইতে গালফসহ একাধিক মিশনে অংশ নেয়। তার মূল কাজ ছিল জাপানি সাবমেরিন হামলা থেকে মার্কিন এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারগুলোকে নিরাপত্তা দেয়া। ১১ নভেম্বর ইউএসএস এন্টারপ্রাইজে হামলা করতে আসা এক গুরুতর আহত জাপানি পাইলটকে উদ্ধার করে লাফি। যুদ্ধজাহাজটির ডি-ডে এর দিনের সফল ভূমিকার কারণে পরবর্তীতে মিত্রবাহিনীর কয়েকটি সেনা অবতরণ মিশনে তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে ১৯৪৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আইয়ো জিমা যুদ্ধে মেরিন সেনাদের ফায়ার সাপোর্ট দেয়ার পর পরই তাকে জাপানি যুদ্ধজাহাজের উপর নজরদারির একটি গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা মিশনে পাঠানো হয়। সংগৃহীত তথ্যগুলো এতই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে সেগুলো ফাঁস হয়ে যাবার ভয়ে রেডিও মারফত প্রেরণ না করে ১ মার্চ গুয়াম দ্বীপে ফ্লিট অ্যাডমিরাল চেষ্টার ডব্লিউ নিমিটজের কাছে ফিরে আসে ইউএসএস লাফি। পরবর্তীতে ২১ মার্চ ওকিনওয়া দ্বীপ দখলের মিশনে পাঠানো নৌবহরে তাকে আবারও দায়িত্ব দেয়া হয়। তার দেয়া তথ্য মোতাবেক জাপানি নৌবহরকে আটকে দিয়ে দ্বীপে সেনা নামায় মিত্রবাহিনী।

মূল প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে প্রথমেই একটি বিষয় বলে নেয়া যাক। কামিকাযে অ্যাটাকের কৌশলগুলো কেমন ছিল, বিমানগুলো কোন দিক থেকে এসে কীভাবে হামলা করহতো তা পাঠককে বোঝানোর জন্য ঘড়ির ঘণ্টার কাঁটার পজিশনগুলোকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে এই লেখায়। তাই এখন থেকে ঘটনার দিকপ্রবাহ বুঝতে কষ্ট হলে শুধু একবার আপনার অ্যানালগ ঘড়ির দিকে তাকাবেন। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইউএসএস লাফি; Image Source : U.S. Naval History and Heritage Command

ব্যাটল অব ওকিনওয়া

জাপানের প্রতিরক্ষার শেষ লাইন ছিল এই দ্বীপ। এটি হাতছাড়া হলেই দেশটির মূল ভূখন্ডতে সেনা অবতরণ করার সুযোগ পাবে মিত্রবাহিনী– এই ভয়ে জাপানিরা সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করেছিল। এই যুদ্ধে এত ব্যাপক হারে আত্মঘাতী বিমান হামলা শুরু হয় যা আগে দেখা যায়নি। এজন্য নিজেদের রাডার সংযুক্ত জাহাজগুলোকে খানিকটা দূরে দূরে মোতায়েন করা হয় যেন জাপানিরা মূল নৌবহরের নিকটবর্তী হওয়ার আগেই সতর্ক হওয়া যায়। ইউএসএস লাফির দায়িত্ব ছিল ১ নং পিকেট স্টেশনে। এটি ওকিনওয়া দ্বীপ থেকে ৪৮ কি.মি. উত্তরে অবস্থিত এবং জাপানের সবচেয়ে কাছের পয়েন্ট। জাপানি বিমানবাহিনী তখন মূল ভূখণ্ড থেকে উড়ে এসে ওকিনওয়ার আশেপাশে হামলা চালাত। এসব হামলার বেশিরভাগই ছিল আত্মঘাতী তথা কামিকাযে অ্যাটাক। ১৫ এপ্রিল, ১৯৪৫ সালে তেমনি এক হামলা নস্যাৎ করে দেয়া ইউএসএস লাফি। তার দেয়া তথ্যের কারণে জাপান ১৩টি বিমান হারায়। ফলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জাহাজটিকে ডুবানোর জন্য উঠেপড়ে লাগে জাপানিরা। পরদিন তারা প্রায় দু’শ কামিকাযে বিমান নিয়ে ওকিনওয়াতে হামলা করতে যায়। 

১৬ এপ্রিল, ১৯৪৫ সাল। ঘড়িতে সময় তখন সকাল সাড়ে আটটা। ইউএসএস লাফির রাডার অফিসারের তখন পাগল হওয়ার দশা। স্ক্রিনে দেখা যাচ্ছে ১৬৫টি বিন্দু। লাফির ক্যাপ্টেন নিজেও ফ্রেডেরিক বেক্টন এতগুলো শত্রু বিমানকে রাডারের চোখে আগে কখনো ধেয়ে আসতে দেখেননি। পরে তিনি এই ঘটনাকে ‘চিকেন পক্স’ রোগের সাথে তুলনা করেন। সাথে সাথে ইঞ্জিন চালু করে ফুল স্পিড তোলার নির্দেশ দেন তিনি। উত্তর-পশ্চিমে এগিয়ে যাওয়ার ফাঁকে তার ক্রুরা সবাই যার যার ব্যাটল স্টেশনে পজিশন নেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে লাফিকে প্রটেকশন দেয়ার কাজে নিয়োজিত কমব্যাট এয়ার পেট্রোল গ্রুপের ছয়টি বিমানের সাথে ক্যাপ্টেন যোগাযোগ করতে পারছিলেন না।

 ওকিনওয়া দ্বীপে সেনা নামাচ্ছে মিত্রবাহিনী। আশেপাশের ৫৭৮টি জাহাজের কিছু অংশ ছবিতে দেখা যাচ্ছে;  Image Source: history.navy.mil

তার আগের অবস্থানের উপর দিয়ে বিমানগুলো ওকিনওয়ার আশেপাশের বিভিন্ন টার্গেটের দিকে উড়ে যায়। এর মধ্যে ‘ভ্যাল’ নামে পরিচিত ছয়টি আইচি ডি-৩এ ডাইভ বোম্বার ইউএসএস লাফিকে টার্গেট করে আক্রমণে আসে। এরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে স্ট্যান্ডার্ড কামিকাযে ফরমেশন গঠন করে। একটি বিমান বার বার ডাইভ দেয়ার ভঙ্গি করে ফিরে যায়, অন্য বিমানগুলো তখন জাহাজের অপরপাশের আকাশে পজিশন নেয়। অর্থাৎ জাপানিরা এমনভাবে এগিয়ে আসছিল যেন যুদ্ধজাহাজটির সবগুলো এন্টি এয়ারক্রাফট মেশিনগান ও কামান একইদিকে একবারে ফায়ারের কাজে ব্যবহার করা না যায়। ক্যাপ্টেন ফ্রেডেরিক তাই মেশিনগান অপারেটরদের সুবিধার জন্য বার বার জাহাজ ডানে-বামে ঘোরাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত প্রথম দুটো ভ্যাল ডাইভ বোম্বার এমনভাবে (ঘড়ির কাঁটা অনুযায়ী ১টার দিক থেকে) ফাইনাল অ্যাটাক শুরু করেছিল যেখানে লাফির ১২৭ মিলিমিটার কামানগুলো গোলাবর্ষণ করার সুযোগ পায়। ফলে বিমান দুটো যথাক্রমে ৫ ও ১.৫ মাইল দূরে থাকতেই ভূপাতিত হয়।

একই সময় তৃতীয়-চতুর্থ বিমানটি একদম পেছন থেকে (ছয়টা) এবং পঞ্চম বিমানটি পিছনে-ডান থেকে (পাঁচটা) আক্রমণ করেছিল। কিন্তু এরা সবাই ২০ মিলিমিটার বিমান বিধ্বংসী মেশিনগানের গুলিতে ভূপাতিত হয়। জাপানি আত্মঘাতী হামলা ঠেকানোর জন্য মিত্রবাহিনী এ ধরনের মেশিনগানের ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছিল। পঞ্চম বিমানটি যেদিক থেকে এসেছিল, ঠিক তার মিরর পজিশন (ঘড়ির কাঁটা অনুযায়ী ৭টার দিক থেকে) ফাইনাল অ্যাটাক শুরু করে। ধারণা করা হয়, পঞ্চম ও ষষ্ঠ বিমানটি একত্রে আক্রমণের কথা থাকলেও কোনো কারণে সময় বিভ্রাট হয়েছিল। এবার কামিকাযে পাইলট প্রথমেই তার মেশিনগান ব্যবহার করে লাফির ব্রিজে (যেখান থেকে ক্যাপ্টেন নির্দেশনা দেন) হামলা চালায়। কিন্তু কমান্ডার ফ্রেডেরিক জাহাজটিকে সামান্য বামে সরাতে সক্ষম হন। ফলে বামপাশের সবগুলো মেশিনগান শত্রুকে সুবিধামতো অ্যাঙ্গেলে (ঘড়ির কাঁটার ৯টা বরাবর) পেয়ে আছড়ে পড়ার ১৫০ ফুট দূরে থাকতেই ভূপাতিত করতে সক্ষম হন। ক্রুরা আহত হলেও আনন্দে নেচে উঠে। তাদের জানা ছিল না, আক্রমণ কেবলমাত্র শুরু।

সাত মিনিট পর, ঘড়ির কাঁটার ১১টার দিক থেকে ধেয়ে আসে একটি ডি-৪ওয়াই জুডি ডাইভ বোম্বার। দূরের টার্গেট মোকাবেলার জন্য ছয়টি ১২৭ মিলিমিটার কামান একটানা পালাক্রমে গোলা ছুড়ত। এভাবেই প্রথম দুটি বিমান ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়। কিন্তু এই হামলার সময় পেছনের কামান টারেটের একটি কামান জ্যাম হয়ে যায়। গান ক্যাপ্টেন লরেন্স ডেলুস্কি সাথে সাথে হাতুড়ি নিয়ে সেটি মেরামত করতে কামানের ভেতর ঢুকে যান। ফলে ঐ টারেটের অপর কামানটিও ফায়ার করা থেকে বিরত ছিল। অন্যদিকে জাহাজের সামনের দুই টারেটের চারটি কামান কামিকাযে বিমানটি ভূপাতিত করতে ব্যর্থ হয়। একেবারে শেষ মুহূর্তে কয়েকটি মেশিনগান কোনোরকমে গুলি লাগাতে সক্ষম হয়। বিমানটি ডেলুস্কির কামানের সাথে সংঘর্ষ ঘটিয়ে সাগরে পতিত হয়। তবে এ যাত্রায়ও তেমন ক্ষতি হয়নি।

ক্ষতিগ্রস্থ ইউএসএস লাফির ব্রিজ টাওয়ার ও ক্রুদের থাকার কোয়ার্টার; Image Source : history.navy.mil

পাঁচ মিনিট পর, সকাল ৮:৪৫ এর সময় আরেকটি ডাইভ বোম্বার ঘড়ির কাঁটা অনুযায়ী ১টার দিক থেকে হামলা শুরু করে। এটি ষষ্ঠ বিমানের মতো মেশিনগান ব্যবহার করে জাহাজের রাডার ক্ষতিগ্রস্ত করে। কেননা মার্কিনীরা প্রযুক্তিগত সুবিধা নিয়ে এতক্ষণ সাফল্য লাভ করছিল। কমান্ডার ফ্রেডেরিক আগের কৌশলের পুনরাবৃত্তি করেন। এবারও জাহাজটিকে পোর্টসাইডে (বামে) ঘোরান। তবে এবার টার্গেট ডানপাশে (স্টারবোর্ড সাইড) থাকায় ডানের সবগুলো মেশিনগান শত্রুকে সুবিধামতো অ্যাঙ্গেলে পেয়ে একযোগে গর্জে ওঠে। এটিও অল্পের জন্য ইউএসএস লাফিকে আঘাত করতে ব্যর্থ হয়।

ক্যাপ্টেন এবার জাহাজকে উত্তর দিকে ঘুরিয়ে নেন। এর কয়েক মিনিট পরেই আরেকটি জুডি ডাইভ বোম্বার লাফির পোর্টসাইডে হামলার জন্য কয়েকবার দিক পরিবর্তন করে এগিয়ে আসে। উপায় না দেখে ক্যাপ্টেন এবার পূর্ব দিকে জাহাজ ঘুরিয়ে ওকিনওয়া দ্বীপের দিকে ফুল স্পিডে এগোতে শুরু করেন। ৪০ মিলিমিটার হেভি মেশিনগানগুলোর বেশ কয়েকবার টার্গেটে গুলি লাগাতে সক্ষম হয়। কিন্তু সেই কামিকাযে পাইলট ছিলেন নাছোড়বান্দা। তবে শেষ মুহূর্তে ক্যাপ্টেন দক্ষিণ-পূর্ব দিকে জাহাজ ঘুরিয়ে ফেলায় বিমানটি একটি মেশিনগান টারেটের সাথে সংঘর্ষ ঘটিয়ে সাগরে পতিত হয়। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়, জাহাজের ডেকে বিমানের জ্বালানির কারণে আগুন ধরে যায়।

ক্রুরা বিস্ফোরণ থেকে বাঁচতে অতিরিক্ত গোলাবারুদ, সাবমেরিন বিধ্বংসী বোমাগুলো (ডেপথ চার্জ) পানিতে ফেলে দেন। ততক্ষণে ক্যাপ্টেন আবারও জাহাজকে পশ্চিমে ঘোরান। এই কাজ করতে গিয়ে ক্রুরা খেয়াল করেনি যে, আরেকটি ভ্যাল ডাইভ বোম্বার উত্তর-পূর্ব দিক থেকে হামলার জন্য ধেয়ে আসছে। জাহাজের পেছনের গান ক্যাপ্টেন লরেন্স ডেলুস্কির টিম যতক্ষণে গুলি শুরু করে, ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। কামিকাযে বিমানটি পেছনের টারেটে তার বোমাসহ আছড়ে পড়ে। ডেলুস্কি ১৫ ফুট দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ায় প্রাণে বেঁচে যান। কেননা তার ত্রিশ সেকেন্ড পর আরেকটি ডাইভ বোম্বার প্রায় বিনা বাধায় এক হাজার পাউন্ডের একটি বোমা ফেলে যা কয়েক ডেক ভেদ করে বিস্ফোরিত হয়। দুটো হামলায় অচল হয়ে যায় পেছনের কামান ও মেশিনগান। মারা যায় বেশ কয়েকজন ক্রু। ক্যাপ্টেন ফ্রেডেরিক বেক্টন সাথে সাথে জাহাজের পেছনের দিকের হ্যাচ খুলে কামানের ম্যাগাজিন রুম ডুবিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। জাহাজকে ডুবে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে ইচ্ছাকৃতভাবে ভেতরে পানি ঢোকানোর এই কৌশলকে নৌ যুদ্ধের পরিভাষায় বলে ‘কাউন্টার ফ্লাডিং’। এতে ক্রুদের কেউ ডুবে মারা গেলেও ক্যাপ্টেনের কিছু করার নেই।

পানির কারণে পেছনের দিক ভারী হয়ে যাওয়ায় পেছন থেকে আসা পরের বিমানের আক্রমণে সরে যাওয়ার সুযোগ পায়নি ইউএসএস লাফি। তবে অনভিজ্ঞ কামিকাযে পাইলট বোমা ফেলতে তাড়াহুড়ো করায় বোমাটি জাহাজের ঠিক পেছনের পানিতে বিস্ফোরিত হয়। এতে ইউএসএস লাফির হাইড্রোলিক স্টিয়ারিং ও ডানপাশের স্টারবোর্ড র‍্যাডার (জাহাজ ডানে-বায়ে ঘুরানোর বিশেষ যন্ত্রাংশ) ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে জাহাজটি ২৬ ডিগ্রী কোণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ঘুরতে থাকে।

জাহাজের ক্ষতিগ্রস্ত পেছনের অংশ; Image Source : navytimes.com
ক্ষতিগ্রস্ত লরেন্স ডেলুস্কির গান টারেট; Image Source : navytimes.com

আধা ঘন্টা পর, সকাল সোয়া নয়টায়, আগুন যখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তখনই আক্রমণে আসে আরো কয়েকটি বিমান। এ সময় পেছনের আছড়ে পড়ে আরেক কামিকাযে পাইলট! বিমানটির ডানা থেকে খুলে যাওয়া বোমাটি ডেকের উপর বাউন্স করে অপরপাশের ডেপথ চার্জ র‍্যাকের কাছে গিয়ে পড়ে। লাফির ভাগ্য ভালো যে, জাপানি বোমা বা জাহাজের সাবমেরিন বিধ্বংসী জলবোমাগুলোর কোনোটাই সাথে সাথে বিস্ফোরিত হয়নি। কয়েকজন নাবিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগুনের মধ্য দিয়ে ডেকের পেছনে যান এবং বোমাটি ধরাধরি করে পানিতে ফেলে দেন। এর পরের ঘটনা, জাহাজের সেকেন্ড ইন কমান্ড লেফটেন্যান্ট ফ্র্যাংক ম্যানসনের ভাষায় নাহয় বলি। তিনি বলেন,

“আকাশে তাকিয়ে আমার মনে হয়েছিল একদল শকুন আমাদের জাহাজ কেন্দ্র করে ঘুরছে।”

কেননা, ধোঁয়া উঠতে থাকা ইউএসএস লাফিকে দূর থেকে দেখতে পেয়ে এবার আক্রমণে এসেছে আনুমানিক ২০টি ভ্যাল ডাইভ বোম্বার। উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিকের দূরের আকাশে দেখা যাচ্ছে আরো ১৬টি বিমান। নাবিকরা ধরে নিয়েছে, আজকেই তাদের জীবনের শেষ দিন। কিন্তু না, পেছনের বিমানগুলো ছিল মিত্রবাহিনীর। হলিউড সিনেমার মতো একেবারে শেষ মুহূর্তে হাজির হয়েছে মার্কিন পাইলটরা। শুরু হয় ভয়াবহ ডগফাইট (আকাশযুদ্ধ)। এ সময় মার্কিন পাইলটরা বেশ কয়েকটি কামিকাযে বিমান ধ্বংস করতে সক্ষম হয়। তারা নিজেদের বিমানের গুলি শেষ হয়ে গেলেও তাড়া করে জাপানি বিমানগুলোকে লাফির আশেপাশ থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে থাকে। ক্যাপ্টেন ফ্রেডেরিক বেক্টন এই সুযোগে জাহাজ আবার পূর্ব দিকে ঘুরিয়ে নেন। এ সময় একটি কামিকাযে বিমানকে ভূপাতিত করার চেষ্টা করছিল এক মার্কিন পাইলট। আর জাপানি পাইলট বুলেট ফাঁকি দিয়ে কোনো জাহাজে আছড়ে পড়ার চেষ্টা করছিল। শত্রু বিমানের পেছনেই নিজেদের পাইলট থাকায় নাবিকরা ঠিকমতো গুলি ছুড়তে পারছিল না। শেষপর্যন্ত দুটো বিমানই লাফির মাস্তুলের সংঘর্ষ ঘটিয়ে সাগরে পতিত হয়। মার্কিন পাইলটকে পরে উদ্ধার করে আরেক জাহাজ। আকাশযুদ্ধে মার্কিন পাইলটরা শেষপর্যন্ত জয়ী হলেও এক ফাঁক দিয়ে আরেকটি ডাইভ বোম্বার লাফির পেছনের অংশে তৃতীয়বারের মতো আঘাত হানতে সক্ষম হয়। লেফটেন্যান্ট ফ্র্যাংক ম্যানসন জাহাজ পরিত্যাগের অর্ডার দেবেন কিনা জানতে চান। রাগত ক্যাপ্টেন ফ্রেডেরিক বেক্টনের জবাব ছিল,

“No! I’ll never abandon ship as long as a single gun will fire.”

উল্লেখ্য, তিনি এর আগে ইউএসএস অ্যারন নামে একটি জাহাজের নেতৃত্বে ছিলেন যা জাপানি বিমান হামলায় ডুবে যায়। ফলে শেষপর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার স্পৃহা তার মধ্যে ছিল। কিন্তু মিনিট দুয়েক পরে সামনে থেকে শেষবারের মতো আক্রমণে আসে ভ্যাল ও জুডি ডাইভ বোম্বার। প্রথম বিমানের বোমাটি জাহাজের সামনে আঘাত করে, ধ্বংস হয় দুটি মেশিনগান পোস্ট। সামনে গিয়ে আত্মঘাতী হামলার জন্য ঘুরে আসতেই সেটি মার্কিন পাইলটের গুলিতে ভূপাতিত হয়। জুডি সরাসরি লাফির ব্রিজের দিকে ধেয়ে আসছিল। আছড়ে পড়ার কয়েক সেকেন্ড আগে বিমানটিকে একপশলা গুলিতে ধ্বংস করে আরেক মার্কিন পাইলট। এতে সরাসরি আঘাত না পেলেও কামিকাযে বিমানটির ধ্বংসাবশেষ আঘাত করে জাহাজের ডেকে। এর মধ্য দিয়ে ৫২টি মধ্যে ২২টি বিমান ইউএসএস লাফির উপর হামলার অদম্য চেষ্টার সমাপ্তি হয়। এর মধ্যে ছয়টি বিমান ও চারটি বোমা জাহাজে আঘাত করে। সব মিলিয়ে ৩২ জন নিহত ও ৭১ জন আহত হয়েছিল।

সামনে-পেছনে আঘাত করা বোমাগুলোর ক্ষয়ক্ষতি; Image Source : U.S. Naval History and Heritage Command

মেরামত ও অবসর

পরদিন ইউএসএস লাফিকে টেনে সাইপান ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে হাওয়াই দ্বীপে নিয়ে কোনোরকমে মেরামত করে কিছুদিন ফেলে রাখা হয়। পরবর্তীতে ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে নিয়ে ড্রাইডকে জাহাজটি মেরামত করা হয়। ৬ সেপ্টেম্বর যুদ্ধ শেষ হবার কয়েকদিন আগে লাফি আবার পানিতে নামে। তবে কুয়াশার কারণে অন্য জাহাজের সাথে সংঘর্ষ ঘটে। এসব কারণে ১১ অক্টোবরের পর আবার প্রশান্ত মহাসাগরে ফিরে যায় জাহাজটি। ১ জুলাই, ১৯৪৬ সালে বিকিনি আইল্যান্ডে পরমাণু বোমার পরীক্ষা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এই মিশনে ইউএসএস লাফি বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ডাটা সংগ্রহে কাজ করে। পরের বছরের ৩০ জুন জাহাজটি অবসরে পাঠানো হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক রিজার্ভ ফ্লিটে অন্তর্ভুক্ত রাখায় অনেকেই ভেবেছিল দরকার হলে আবারও যুদ্ধে নামানো হবে ইউএসএস লাফিকে। পরবর্তীতে কোরিয়া যুদ্ধ শুরু হলে জাহাজটিকে আবারও যুদ্ধে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালের ৯ মার্চ ইউএসএস লাফিকে চূড়ান্তভাবে অবসরে পাঠানো হয়। বর্তমানে এটি জাদুঘর হিসেবে সাউথ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের মাউন্ট প্লেজেন্টের প্যাট্রিয়ট পয়েন্ট নামক স্থানে সংরক্ষিত আছে।

২০০৮ সালে ১০০ এর বেশি পুরনো ক্ষতি মরিচার কারণে বড় হয়ে তা দিয়ে পানি ঢুকে জাহাজটি ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। পরে ৯ মিলিয়ন ডলার খরচ করে একে পুনরায় মেরামত করা হয়। ২০১২ সালে জাহাজটি পুনরায় জাদুঘরে ফিরিয়ে আনা হয়। এ সময় ইউএসএস লাফির প্রাক্তন নাবিকরা আপ্লুত হয়ে পড়েন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন একজন ভেটেরান বলেন,

“This means a lot of years of fighting to get her saved again. The Germans tried to sink her. The Japanese tried to sink her and then she tried to sink herself sitting here. She’s whipped them all and she’s back again”

জাদুঘরে ইউএসএস লাফি Image Source: laffey.org

হিস্ট্রি চ্যানেলের ডগফাইট নামক ডকুমেন্টারি সিরিজে জাহাজটির উপর হামলা ও মার্কিন পাইলটদের প্রতিরোধ অ্যানিমেশন আকারে দেখানো হয়। এছাড়া ইউএসএস লাফির পুরো ঘটনা নিয়ে ২০১৮ সালে ‘Destroyer’ নামে একটি মুভি নির্মাণের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। ১৯৮৪ সালে ‘ফিলাডেলফিয়া এক্সপেরিমেন্ট’ নামক সায়েন্স ফিকশন মুভিতে জাহাজটি দেখানো হয়। পাঠকের জ্ঞাতার্থে জানিয়ে রাখছি, ১৯৪৩ সালে যুদ্ধজাহাজ অদৃশ্য করে দেয়ার একটি টপ সিক্রেট এক্সপেরিমেন্ট চালানো হয়েছিল বলে শোনা যায়। বিস্তারিত পড়ুন Roar বাংলায়।

This is a Bangla article about USS Laffey who successfully withstood the most unrelenting kamikaze air attack in history. 

Reference :

1) Battered beyond belief: The story of the destroyer Laffey

2) HOW USS LAFFEY SURVIVED A VICIOUS KAMIKAZE ATTACK OFF OKINAWA

3) The Ship That Wouldn’t Die - USS Laffey (DD-724)

4) THE MORNING THAT HELL CAME FROM THE HEAVENS

5) USS Laffey DD724 in World War II

6) The destroyer that took on WWII kamikazes is coming to the big screen

 

Related Articles

  • ডুলিটল রেইড: পার্ল হারবার হামলার জবাব ও চাইনিজ ভুক্তভোগীদের করুণ কাহিনি

    article
    ইতিহাস
    জুন 22, 2021
  • অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের কিছু সুস্পষ্ট কারণ

    article
    ইতিহাস
    ফেব্রুয়ারি 27, 2020
  • প্রাক-মুঘল যুগে হিন্দুস্তানে মুসলিমদের রাজনৈতিক অবস্থা

    article
    ইতিহাস
    ডিসেম্বর 13, 2017
  • শৈশবেই রাজা হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন যারা

    article
    ইতিহাস
    মার্চ 28, 2019
  • একজন আর্চডিউককে গুপ্তহত্যা এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শুরু

    article
    ইতিহাস
    মে 20, 2018
  • দেশে দেশে হোয়াইট টেরর: গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী স্পেনে সুপরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় নৈরাজ্য

    article
    ইতিহাস
    অক্টোবর 10, 2021
  • কিংবদন্তির খনা: যার প্রজ্ঞায় হেরে জিহ্বা কেটে নিয়েছিল স্বামী ও শ্বশুর

    article
    ইতিহাস
    জানুয়ারি 31, 2018
  • দ্য লস্ট লাইব্রেরি অব আলেক্সান্দ্রিয়া: হারিয়ে যাওয়া জ্ঞানের অমূল্য গুপ্ত ভাণ্ডার

    article
    ইতিহাস
    মার্চ 23, 2018
Roar logo

Roar Media is a global storytelling platform.

  • About
  • Brand Partnerships
  • Content Policy
  • Contact

Copyright © 2025 Roar Media. A Roar Global Company.