ভালোবাসা এমনই এক অনুভূতি যার দাবিকে অগ্রাহ্য করার শক্তি নেই কারো। বিশেষ করে বলতে গেলে প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যবর্তী ভালোবাসাকে কেন্দ্র করে পৃথিবীতে যত ঘটনা অতীতে ঘটে গেছে, বর্তমানে ঘটছে আর ভবিষ্যতে ঘটতে যাচ্ছে, তা সত্যিই বিস্ময়কর। একটিমাত্র অনুভূতি; তারও শত-সহস্র রঙ, অসীম সংখ্যক গল্প!
ইতিহাস ঘেঁটে এমন অনেক প্রেমিক-প্রেমিকার সন্ধান পাওয়া যায়, যাদের প্রেমকাহিনী আলোড়ন তুলেছিলো গোটা সাম্রাজ্য জুড়েই। শুধু তা-ই নয়, তাদের কাল পেরিয়ে শত-সহস্র বছর ধরেও টিকে রয়েছে সেসব প্রেমকাহিনী। অমর সেসব প্রেমকাহিনী আজও মানুষকে ভাবায়, হাসায়, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে কাঁদিয়েও থাকে! ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পাওয়া এমনই কিছু অসাধারণ প্রেমকাহিনী নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের এই লেখাটি।
অ্যান্টনি ও ক্লিওপেট্রা
রুপালি পর্দায় বিভিন্ন সময়ই ক্লিওপেট্রাকে বেশ সুন্দরী হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও প্রাচীন বিভিন্ন সূত্রমতে, তিনি দেখতে সাদামাটা একজন মহিলার মতোই ছিলেন। তবে তার ছিলো আকর্ষণীয় এক ব্যক্তিত্ব যা মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতো আশেপাশের সবাইকে। খ্রিস্টপূর্ব ৪৪ অব্দে আততায়ীর হাতে জুলিয়াস সিজার যখন নিহত হন, তখন ক্লিওপেট্রা ছিলেন তার উপপত্নী।
পরবর্তী সময়ে গাইয়াস অক্টেভিয়ান (সিজারের প্রপৌত্র), মার্কাস লেপিডাস (একজন আর্মি জেনারেল) এবং মার্ক অ্যান্টনি (একজন জেনারেল ও রোমান রাজনীতিবিদ) একত্রে রোম শাসন করতে থাকেন। অ্যান্টনি চেয়েছিলেন একইসাথে ক্লিওপেট্রা ও মিশরের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে। তবে ক্লিওপেট্রার সাথে সাক্ষাতের পর সবকিছু গোলমাল হয়ে গেলো। আস্তে আস্তে তিনি তার প্রতি দুর্বল হয়ে গেলেন, সাড়া দিলেন ক্লিওপেট্রাও; এভাবেই শুরু হয় ইতিহাসে সাড়া জাগানো এক প্রেম কাহিনীর।
তাদের এ প্রেম রাজনৈতিক নানা ক্ষেত্রেও সুফল বয়ে এনেছিলো। ক্লিওপেট্রার ছিলো অর্থ, অ্যান্টনির ছিলো ক্ষমতা। রোম থেকে যেন মিশরে কোনো সামরিক অভিযান চালানো না হয়, সেই দিকটা দেখতেন অ্যান্টনি। আবার অ্যান্টনির সেনাবাহিনীর জন্য অর্থের যোগান দিতেন ক্লিওপেট্রা। ওদিকে রোমের শাসকত্রয়ীর মাঝে প্রায় সময়ই যুদ্ধ লেগে থাকতো। পারস্পরিক শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অ্যান্টনি আগেই অক্টেভিয়ানের বোনকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু অ্যান্টনির সাথে ক্লিওপেট্রার প্রণয়কে তার বর্তমান স্ত্রী কিংবা অক্টেভিয়ানের কেউই মেনে নিতে পারছিলেন না। তাই অক্টেভিয়ান সরাসরি অভিযোগ করে বসেন রোমান সিনেটে, জানান অ্যান্টনিকে হাতের পুতুল বানিয়ে শাসনকার্য আসলে পরিচালনা করছেন ক্লিওপেট্রাই।
এমন অভিযোগ মেনে নিতে পারেন নি মার্ক অ্যান্টনি। তিনিও মুখের উপর জানিয়ে দেন অক্টেভিয়ানের বোনকে তালাক দিয়ে তাহলে তিনি ক্লিওপেট্রাকেই বিয়ে করতে যাচ্ছেন। বোন জামাইয়ের এমন কথায় যেন মাথায় রক্ত চড়ে যায় অক্টেভিয়ানের। সাথে সাথেই তিনি যুদ্ধ ঘোষণা করে বসেন এ যুগলের বিরুদ্ধে।
৩১ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কথা, পশ্চিম গ্রীসে সে বছর সংঘটিত হলো অ্যাক্টিয়ামের যুদ্ধ। অক্টেভিয়ানের নৌবহরের কাছে হেরে যায় অ্যান্টনি-ক্লিওপেট্রার সম্মিলিত বাহিনী। এরপর তারা পালিয়ে চলে যান মিশরে। সেখানে চূড়ান্তভাবে মুখোমুখি হয় দুই বাহিনী। যুদ্ধের এক পর্যায়ে কেউ একজন মিথ্যে সংবাদ নিয়ে আসে অ্যান্টনির কাছে। তাকে জানানো হয় আত্মহত্যা করেছেন ক্লিওপেট্রা। প্রেয়সীর এমন মৃত্যু সংবাদে একেবারেই ভেঙে পড়েন তিনি। যার জন্য এতকিছু করা, সে-ই যখন নেই, তখন বেঁচে থেকেই আর কী লাভ? এই ভেবে নিজের তলপেটে তলোয়ার ঢুকিয়ে আত্মহত্যা করেন রোমান জেনারেল মার্ক অ্যান্টনি।
প্রকৃত সত্য হলো ক্লিওপেট্রাকে তখন বন্দী করা হয়েছিলো। প্রেমিক আত্মহত্যা করেছে শুনে তিনি নিজেও ভেঙে পড়েন মারাত্মকভাবে। এরপর তার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিলো তা নিয়ে প্রচলিত আছে নানা কিংবদন্তী। এর মাঝে বিষাক্ত মলম কিংবা গোখরা সাপ ব্যবহার করে আত্মহত্যার কথাই বেশি এসেছে। তবে সাপের সংখ্যা কখনো বলা হয়েছে একটি, কখনোবা দুটি। তাকে খুন করা হয়েছিলো- এমন কথাও বলেছেন কেউ কেউ। ২০১০ সালে জার্মান ইতিহাসবিদ ক্রিস্টোফ শ্যাফার জানান বিষ পান করিয়েই খুন করা হয়েছিলো মার্ক অ্যান্টনির এই প্রেয়সীকে।
নেপোলিয়ন ও জোসেফিন
নেপোলিয়ন ও জোসেফিনের প্রেম কাহিনীকে আসলে যে কোন বিশেষণে বিশেষায়িত করা যাবে তা আমার ঠিক জানা নেই। কেন? এটা বুঝতে হলে জানতে হবে তাদের ভালোবাসার আদ্যোপান্ত।
প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর বেশ কয়েকজনের সাথেই প্রণয়াবদ্ধ হয়েছিলেন জোসেফিন। অবশেষে তরুণ নেপোলিয়ন যখন তার প্রেমে পড়েন, ততদিনে তিনি দুই সন্তানের জননী, বয়সও হয়ে গেছে ৩২। কারো কারো মতে, নেপোলিয়নের সাথে সম্পর্ক স্থায়ী করার দিকে তেমন আগ্রহ ছিলো না জোসেফিনের। বরঞ্চ আর কোনো সুযোগ্য পাত্র না পেয়েই অবশেষে নেপোলিয়নের প্রস্তাব গ্রহণ করতে বাধ্য হন তিনি।
বিয়ের দিন তিনি নেপোলিয়নের কাছ থেকে পাওয়া একটি চমৎকার মেডেল গলায় ঝুলিয়ে এসেছিলেন। ওদিকে অভিযানের ব্যস্ততায় বিয়ের সময়ের কথা একেবারেই ভুলে যাওয়ায় নেপোলিয়ন আসেন কয়েক ঘণ্টা দেরি করে।
বিয়ের দুদিন পরই ইতালিতে চলে যান নেপোলিয়ন। সেখানে গিয়েও জোসেফিনকে ভোলেন নি তিনি। নিয়মিতই প্রেমাবেগে পরিপূর্ণ সব চিঠি লিখতেন তিনি স্ত্রীকে। কিন্তু জোসেফিনের কাছে যেন আবেগ অতটা পাত্তা পেত না। তাই তিনি নিয়মিতভাবে চিঠিগুলোর জবাব দিতেন না। ওদিকে স্বামীর অনুপস্থিতিতে পুরনো অভ্যাস যেন মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে তার। তাই এক লেফট্যানেন্টের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
স্ত্রীর এমন পরকীয়ার সংবাদ পাওয়ামাত্রই তাদের সম্পর্কের গতিপথ বদলে যায়, সেটাই স্বাভাবিক। এরপর নেপোলিয়ন নিজেও বিভিন্ন নারীর সাথে সম্পর্কে জড়ানো শুরু করেন। সেসব নারীর মাঝে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিলেন পলিন ফরেস, যাকে অনেক সময় ‘নেপোলিয়নের ক্লিওপেট্রা’ও বলা হয়ে থাকে। নেপোলিয়ন বলতেন, “ক্ষমতাই আমার উপপত্নী”।
১৮০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে অবশেষে জোসেফিনের সাথে বিবাহবিচ্ছেদের ব্যাপারে পাকাপাকি সিদ্ধান্ত নেন নেপোলিয়ন।
অষ্টম হেনরি ও অ্যান বলেইন
ইংল্যান্ডের রাজা অষ্টম হেনরির নারীপ্রীতি ইতিহাসে বিখ্যাত (কিংবা কুখ্যাত) হয়ে আছে। ১৫০৯ সালে তিনি বিয়ে করেন আপন ভাইয়ের বিধবা স্ত্রী ক্যাথেরিনকে। ছয়বার গর্ভধারণ করলেও মাত্র একবারই সুস্থ-সবল সন্তান জন্মদানে সক্ষম হন ক্যাথেরিন। কিন্তু কন্যাসন্তানের জন্ম হওয়ায় ক্যাথেরিনের উপর থেকে মন উঠে যাওয়া শুরু করে হেনরির।
এরপর রাজার নজর পড়ে ক্যাথেরিনের সহচরী ম্যারি বলেইনের দিকে। কিছুদিন পর তার প্রতিও বিতৃষ্ণা ধরে যায় তার, নজর পড়ে ম্যারির ছোট বোন অ্যান বলেইনের দিকে। তার প্রাণোচ্ছলতা ও শিশুসুলভ আচরণই হেনরিকে আকর্ষণ করেছিলো। শুরুতে সেই আকর্ষণকে এড়িয়ে গেলেও বিয়ের প্রস্তাবে মানা করার দুঃসাহস দেখান নি অ্যান। অবশেষে ক্যাথেরিনের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে রাজার, নতুন রানী হিসেবে প্রাসাদে আগমন ঘটে অ্যানের।
তবে রাজার স্বভাব এরপরও পাল্টায় নি। কিছুদিনের মাঝে অ্যানকেও আর আগের মতো ভালো লাগতো না তার। অ্যানের রসিকতাগুলো তার কাছে নিরস মনে হতো। অ্যানও স্বামীর সাথে সবার সামনে তর্ক জুড়ে দিতো নানা বিষয়ে। রাজার উপপত্নীদের সাথেও তার ছিলো ঝামেলা। হেনরি অনেকদিন ধরেই চাইছিলেন তার যেন একটি পুত্রসন্তান হয়। কিন্তু অ্যানও একটি কন্যাসন্তান জন্ম দিলে আবারো মুষরে পড়েন রাজা। পরবর্তীতে বেশ কয়েকবার মিসক্যারিজের শিকার হন অ্যান।
এরপরই রাজা মন দেন নতুন রানীর দিকে, প্রাসাদে আনেন জেন সীমূরকে। এটাই যেন সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েছিলো যে, রাজপ্রাসাদে অ্যানের শেষ সময় ঘনিয়ে এসেছে। অবশেষে ব্যাভিচার, ইনসেস্ট ও ডাকিনীবিদ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় অ্যান বলেইনকে। টাওয়ার অফ লন্ডনেই মৃত্যু ঘটে তার।
কিছু কিছু ইতিহাসবিদ বলে থাকেন, রাজা অষ্টম হেনরি আসলে অ্যানকেই সত্যিকার অর্থে ভালোবেসেছিলেন! তবে এ তো রাজকীয় ভালোবাসা। তাই অ্যানের মৃত্যুর মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় তিনি বিয়ে করেন জেনকে। পরবর্তীতে রাজপ্রাসাদে আসেন আরো কয়েকজন রানী, বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চলতে থাকে তাদের শিরশ্ছেদও।
পেদ্রো ও আইনেস দ্য ক্যাস্ত্রো
রাজনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করার নিমিত্তে পর্তুগালের যুবরাজ পেদ্রোর সাথে বিয়ে হয়েছিলো লেডি কন্সট্যানযা ম্যানুয়েলের। কিন্তু পেদ্রোর মন তার নববিবাহিতা স্ত্রীর দিকে ছিলো না। বরং তার মন আটকে গিয়েছিলো হবু রানীর সহচরী আইনেস দ্য ক্যাস্ত্রোর প্রতি।
সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান আইনেস দেখতেও ছিলেন বেশ চমৎকার। বলা হয়ে থাকে, আইনেস এতটাই সুন্দরী আর ফর্সা ছিলেন যে তিনি যখন ওয়াইন পান করতেন, তখন তার গলা দিয়ে নাকি সেটি নামতে দেখা যেত!
তাদের এমন খোলামেলা সম্পর্ক ভালোভাবে নেন নি পেদ্রোর বাবা রাজা চতুর্থ আলফন্সো। তাই তিনি অ্যালবাকার্কির এক দুর্গে আইনেসকে নির্বাসনে পাঠান। ১৩৪৫ সাল পর্যন্ত তিনি সেখানেই ছিলেন। সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে কনস্ট্যানযার মৃত্যু হলে পেদ্রোর সামনে আর কোনো বাধা রইলো না। আইনেসকে প্রাসাদে নিয়ে আসেন তিনি, সেরে ফেলেন শুভ বিবাহের কাজটাও। কিন্তু আইনেসের ভবিষ্যতে রানী হওয়াটা কিছুতেই মানতে পারছিলেন না আলফন্সো।
১৩৫৫ সালের ৭ জানুয়ারি এক কাজে প্রাসাদের বাইরে ছিলেন পেদ্রো। সেদিনই মোক্ষম সুযোগ পেয়ে যান আলফন্সো। তার পাঠানো আততায়ীত্রয়ীর হাতে নিজের সন্তানের সামনে শিরশ্ছেদের মাধ্যমে খুন হন আইনেস। পেদ্রো এসে যখন এ ঘটনাটি জানতে পারলেন, তখন রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে যান তিনি, ঘোষণা করেন বাবার বিরুদ্ধে যুদ্ধ। এভাবেই পর্তুগালে শুরু হয়ে যায় গৃহযুদ্ধ।
১৩৫৭ সালে অবশেষে নিহত হন আলফন্সো, সিংহাসনে বসেন নতুন রাজা পেদ্রো। সিংহাসনে বসেই স্ত্রীর হত্যাকারীদের খুঁজে বের করেন তিনি। জীবন্ত অবস্থায় তাদের দেহ থেকে হৃৎপিণ্ড কেটে বের করা হয়। এরপর স্ত্রীর মৃতদেহ কবর থেকে তুলে সামনে আরেকটি সিংহাসনে বসিয়ে শাসনকার্য শুরু করেন তিনি।
শাহজাহান ও মমতাজ মহল
আপনি কি ‘শাহানশাহ আল-সুলতান আল-‘আজম ওয়াল খাক্বান আল-মুকাররাম, মালিক-উল-সালতানাত, আলা হযরত আবুল-মুজাফফার শাহাব উদ-দীন মুহাম্মাদ শাহ জাহান, সাহিব-ই-কিরান-ই-সানী, পাদশাহ গাজী জিল্লুল্লাহ, ফিরদাউস-আশিয়ানী, শাহানশাহ-ই-সালতানাত উল হিন্দিয়া ওয়াল মুঘলিয়া’-কে চেনেন? সম্রাট হিসেবে এটাই ছিলো শাহজাহানের উপাধি!
শাহজাহান মোট ৭টি বিয়ে করেছিলেন। এর মাঝে ৪র্থ স্ত্রী মমতাজের প্রতি তার ভালোবাসার নিদর্শনস্বরুপ নির্মিত তাজমহলের খ্যাতি জগতজোড়া। মমতাজের প্রকৃত নাম ছিলো আরজুমান বানু বেগম। তার প্রতি সম্রাটের ছিলো অগাধ ভালোবাসা। এজন্য সিংহাসনে আরোহন করে তিনি আরজুমানকে ‘মমতাজ মহল’ উপাধিতে ভূষিত করেন, যার অর্থ ‘প্রাসাদের রত্ন’।
স্ত্রীদের মাঝে তিনিই ছিলেন শাহজাহানের সর্বাধিক প্রিয়। কিন্তু ঘন ঘন সন্তান জন্মদানের ফলে স্বাস্থ্য খারাপ হতে শুরু করে তার। অবশেষে চতুর্দশতম সন্তান জন্মদানের সময় পরপারে পাড়ি জমান মমতাজ। স্ত্রীর মৃত্যুতে শাহজাহান এতটাই ভেঙে পড়েন যে, টানা দুই বছর ধরে সাম্রাজ্যে শোক পালনকাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
পরবর্তীতে মমতাজের স্মৃতিকে চির স্মরণীয় করে রাখতেই তিনি জগদ্বিখ্যাত স্থাপনা ‘তাজমহল’ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। প্রায় ২৩ বছর সময় নিয়ে বানানো এ ভবনটি আজও বিশ্বের বুকে মোঘল স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন হিসেবে সগর্বে নিজের অস্তিত্ব জানান দিয়ে চলেছে। প্রতিদিনই হাজার হাজার দর্শনার্থী ছুটে যান সেখানে, ছুটে যান অমর এক ভালোবাসার সাক্ষী হতে। সেখানেই চিরনিদ্রায় পাশাপাশি শায়িত আছেন সম্রাট শাহজাহান ও সম্রাজ্ঞী মমতাজ।