Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

রোর বাংলার দৃষ্টিতে ইউরোর সেরা একাদশ

বহু ঘটনার ঘনঘটা শেষে ওয়েম্বলির ফাইনাল শেষে পর্দা নামলো ইউরো ২০২০ আসরের। বিগত এক মাস জুড়ে পারফরম্যান্সে কেউ কেউ চমক দেখিয়েছেন, কেউ বা করেছেন হতাশ। অনেকে আবার ব্যক্তিগতভাবে ভালো করেও দলগত ব্যর্থতায় বিদায় নিয়েছেন আগেভাগেই। এসব কিছু বিবেচনায় রেখেই এই ইউরোর সেরা একাদশ বাছাই করার চেষ্টা করেছে রোর বাংলা, আর সেটা নিয়েই আজকের এই আয়োজন। 

রক্ষণভাগ

আধুনিক ফুটবলের মূলমন্ত্র ‘আগে ঘর সামলাও’ ধরনের। ট্যাকটিক্যাল লড়াইয়ে সব কোচই চায় যাতে দল গোল হজম না করে। এই ইউরোও তার বিশেষ ব্যতিক্রম নয়। তবে উল্লেখযোগ্য রকমের ভালো করেছেন ইতালি ও ইংল্যান্ড ডিফেন্ডাররা। সেই কারণে রক্ষণ বিভাগে তাদের আধিপত্য থাকাটাই স্বাভাবিক। সেরা একাদশের সেন্টারব্যাকে তাই থাকছেন এই দুই দলের দুইজন; লিওনার্দো বোনুচ্চি ও হ্যারি ম্যাগুয়ের। অবশ্য থাকার যোগ্য ছিলেন কিয়েলিনি, স্টোনস, লাপোর্ত কিংবা কায়েররাও। আর অন্যদিকে ফুলব্যাকদের জয়জয়কারের ইউরোতে লেফটব্যাক হিসেবে থাকছেন ইংল্যান্ডের লুক শ। ইনজুরির কারণে সেমিফাইনাল আর ফাইনাল মিস না করলে হয়তো থাকতে পারতেন স্পিনাৎজোলা, শুরুটা সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছিল। আর অন্যদিকে রাইটব্যাকে থাকছেন এই ইউরোর চমক ডেনমার্কের জোয়াকিম মাহেলে। আর গোলবারের নিচে? সে নাম না বলে দিলেও পাঠকের ঠিকই বুঝে যাওয়ার কথা।

জিয়ানলুইজি ডোনারুমা (ইতালি)

Image Source : Marca

২০০৬ সাল থেকে ইতালির গোলবারের নিচে অতন্দ্র প্রহরী ছিলেন জিয়ানলুইজি বুফন। মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে ৭টি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। এর মধ্যে ইতালি খেলেছে ৬টি। কিন্তু জিজি বুফনকে সরাতে পারেননি কেউ। তবে বিধাতা ইতালির গোলরক্ষক-ভাগ্যকে দুহাত ভরে দিয়েছেন আরেকবার। বুফনের বেলা ফুরাবার আগেই আরেক জিয়ানলুইজির আগমন ঘটেছে, জিয়ানলুইজি ডোনারুমা। মাত্র ২২ বছর বয়সেই ইতালির জয়ের নায়ক। যেন ২০০৬ বিশ্বকাপের বুফনেরই প্রতিচ্ছবি। তবে একদিক থেকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন বুফনকেও। প্রথম গোলরক্ষক হিসেবে জিতেছেন ইউরো-সেরা পুরস্কার।

৭ ম্যাচ খেলে ডোনারুমা ইউরোতে গোল হজম করেছেন মাত্র চারটি। ক্যারিয়ারে ইতালির হয়ে কোনো ম্যাচেই একের অধিক গোল না খাওয়ার রেকর্ড রেখেছেন অক্ষুণ্ন। সর্বমোট সেভ করেছেন ১০টি শট। তবে ত্রাতা হয়ে উঠেছিলেন সেমিফাইনাল ও ফাইনালে। দুইটি ম্যাচের টাইব্রেকার ঠেকিয়ে দিয়েছেন দুইটি করে চারটি শট। আর তাতেই ইউরোর মুকুট ওঠে ইতালিয়ানদের মাথায়।

লুক শ (ইংল্যান্ড)

Image Source : Getty Image

অনেক সম্ভাবনা নিয়ে ফুটবলে আগমন ঘটেছিলো লুক শ’র। তবে মারাত্মক এক ইনজুরির পিছিয়ে দিয়েছিল অনেকখানিই। কিন্তু দমে যাননি শ; তার প্রমান এই ইউরোই। ইংল্যান্ড দলের সাফল্যের অনেকখানি কৃতিত্বই পাওয়ার দাবিদার তিনি। পুরো ইউরোজুড়ে খেলেছেন ৬টি ম্যাচ, তাতে ১ গোল আর ৩ অ্যাসিস্ট। গোলটিও এসেছে ওয়েম্বলির ফাইনালে। সাথে যোগ করুন ১০টি কী-পাস আর ১৩টি সুযোগ তৈরি। আর চার গোলে সরাসরি অবদান তো যেকোনো ফরোয়ার্ডের জন্যও ঈর্ষনীয় পরিসংখ্যান।

তবে শুধু আক্রমণভাগই নয়, নিজের মূল জায়গা রক্ষণেও সমানভাবে সাহায্য করেছেন দলকে। সফল তিনটি ট্যাকল ছাড়াও ক্লিয়ারেন্স ছিল ৪টি। তাই মূল একাদশের লেফটব্যাক হিসেবে থাকছেন লুক শ।

হ্যারি মাগুয়ের (ইংল্যান্ড)

Image Source : The times 

ইংল্যান্ডের রক্ষণভাগের নেতা ছিলেন। কাজটা করেছেন ঠিকঠাকভাবেই। তাই পুরো টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ড দল হজম করেছে সবচেয়ে কম গোল। যে দুইটি গোল হজম করেছে, সেগুলোও আবার সেটপিস থেকে। অর্থাৎ সরাসরি ওপেন-প্লে’তে ইংল্যান্ডকে গোল দিতে পারেনি কোনো দলই। তাতে বোঝা যায়, কতটা দুর্দান্ত ছিলেন ম্যাগুয়ের অ্যান্ড কোং।

কোয়ার্টার ফাইনালে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে একটি গোল করা ম্যাগুয়ের রক্ষণভাগে ছিলেন ইস্পাতকঠিন দৃঢ়। সব মিলিয়ে ৫ ম্যাচ খেলেছেন তিনি, তাতে সফল ট্যাকল করেছেন ২টি। দুইটি ক্লিয়ারেন্স ছাড়াও ম্যাগুয়েরের নামের পাশে রয়েছে ৯টি ইন্টারসেপশন। ফাইনালে টাইব্রেকারে গুরুত্বপূর্ণ এক শটে করেছেন গোলও। কিন্তু সতীর্থদের ব্যর্থতায় শিরোপা না জেতা হলেও ইউরোর সেরা একাদশে থাকছেন হ্যারি ম্যাগুয়ের।

লিওনার্দো বোনুচ্চি (ইতালি) – অধিনায়ক

Image Source : Planet football

মরিনহো বলেছিলেন,

“কিয়েলিনি আর বোনুচ্চির উচিৎ হার্ভার্ডে গিয়ে কীভাবে রক্ষণ সামলাতে হয়, তা নিয়ে লেকচার দেওয়া।”

তিনি যে এতটুকুও বাড়িয়ে বলেননি, তা এই ইউরোতে দেখিয়েছেন এই দুই ডিফেন্ডার। বুড়ো হাড়ের ভেলকিতে অবশ্য কিয়েলিনিকে ছাড়িয়ে বোনুচ্চির পারফরম্যান্সই ছিল বেশি নজরকাড়া। ফাইনালে গোল করে দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন টাইব্রেকারে। সেখানেও বেলোত্তির মিসের পর চাপে থাকা ইতালিকে স্বস্তি দিয়েছিলেন ঠাণ্ডা মাথার এক পেনাল্টি লক্ষ্যভেদে। তাই যোগ্যভাবেই ম্যান অফ দ্য ফাইনালের পুরষ্কার উঠে বোনুচ্চির হাতে।

শুধু ফাইনালই নয়, পুরো আসরজুড়েই বনুচ্চি ছিলেন দুর্ভেদ্য। সবগুলো ম্যাচেই মাঠে নেমেছিলেন তিনি, তাতে সব মিলিয়ে সফল ইন্টারসেপশন করেছেন ১২টি। ৪টি ক্লিয়ারেন্সও এসেছে বোনুচ্চির বুট থেকে। তাই হ্যারি ম্যাগুয়েরের যোগ্য সঙ্গী হিসেবে দলে থাকছেন লিওনার্দো বোনুচ্চিই।

জোয়াকিম মাহেলে (ডেনমার্ক)

Image Source : Hampshire live

এই ইউরোর চমক যদি হয় ডেনমার্ক, তাহলে ডেনমার্কের চমক বলতে পারেন জোয়াকিম মাহেলে। ডেনমার্কের রূপকথার মতো এই আসরে নিজেকে উজাড় করে খেলেছেন মাহেলে। ২৪ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় খেলতে পারেন রাইটব্যাক, লেফটব্যাক, এমনকি মাঝমাঠেও। তাই কোচ ক্যাসপার মাহেলেকে খেলিয়েছেন উইংব্যাক হিসেবে; পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে। আর সেই স্বাধীনতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করেছেন তিনি। যেমন আক্রমণে উঠেছেন, তেমনই নিচে নেমে রক্ষণেও সাহায্য করেছেন।

৬ ম্যাচ খেলে মাহেলে করেছেন ২টি গোল এবং ১টি অ্যাসিস্ট। কী-পাস দিয়েছেন ৭টি, সতীর্থদের জন্য সুযোগ তৈরিও করেছেন আটটি। আর রক্ষণে ৫টি সফল ট্যাকলসহ ৮টি ইন্টারসেপশন ও ১টি ক্লিয়ারেন্সও করেছেন মাহেলে। আর প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করে করেছেন ১২টি সফল ড্রিবলিংয়ে। তাই ইউরো-সেরা একাদশে থাকছেন জোয়াকিম মাহেলেও।

মধ্যভাগ

মাঝমাঠে থাকার যোগ্যতা রয়েছে বেশ কিছু খেলোয়াড়েরই। ডিফেন্সিভ মিডে ভালো করেছেন ইংল্যান্ডের ক্যালভিন ফিলিপস ও ইতালির জর্জিনহো দুইজনই। তবে জর্জিনহো ছিলেন ইতালির ইঞ্জিন হয়ে; তাই কিছুটা হলেও তিনিই এগিয়ে থাকবেন। আর বল উইনিংয়ে তার সঙ্গী হবেন ডেনমার্কের পিয়ের এমিল হইবিয়ে। ডেনমার্কের সেমিফাইনালে ওঠার ক্ষেত্রে হইবিয়ের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। আর অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে থাকবেন স্পেনের পেদ্রি। ১৮ বছর বয়সী পেদ্রি কাটিয়েছেন এক দুর্দান্ত ইউরো। অবশ্য সুইডেন ও ফ্রান্সের বিদায় এতটা আগে না হলে এইখানে থাকতে পারতেন এমিল ফর্সবার্গ কিংবা পল পগবাও।

জর্জিনহো (ইতালি)

Image Source : Getty Image

ইতালির মাঝমাঠের প্রাণ ছিলেন পুরো ইউরোজুড়ে। ইতালিয়ানদের মনে করিয়ে দিয়েছেন পিরলোর কথা। মাঠে বল ডিস্ট্রিবিউশনেও নিজের মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। স্পেনের বিপক্ষে ঠাণ্ডা মাথার এক টাইব্রেকারে দলকে নিয়ে গেছেন ফাইনালে। এর চেয়ে ভালো ইউরো মনে হয় না কাটাতে পারতেন জর্জিনহো। ক্লাব ক্যারিয়ারে সদ্যই জিতেছিলেন চ্যাম্পিয়নস লিগ। সেই জয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই ইউরো জয়। আর তাতে নিজের অবদানও অসামান্য। জর্জিনহো নিশ্চয়ই এখন আকাশে উড়ছেন।

৭ ম্যাচ জর্জিনহো ৯৩ শতাংশ হারে সফল পাস দিয়েছেন ৪৮৪টি। ৭টি করে কী-পাস ও সুযোগ তৈরিও এসেছে জর্জিনহোর বুট থেকে। মাঝমাঠে ইন্টারসেপশন করেছেন সর্বোচ্চ ২৫টি। চারটি সফল ট্যাকল কিংবা ৭টি সফল ড্রিবলিংও সাথে যোগ করতে পারেন। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত এক প্যাকেজ হিসেবে ছিলেন জর্জিনহো। তাই দলে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে থাকছেন তিনিই। 

পিয়ের এমিল হইবিয়ে (ডেনমার্ক)

Image Source : Goal.com

টটেনহ্যামে নিজেকে চিনিয়েছিলেন হইবিয়ে। কিন্তু দেশের জার্সিতে প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন তিনি। ৬ ম্যাচ খেলে করেছেন তিনটি অ্যাসিস্ট ছাড়িয়েও মাঝমাঠে তিনিই হয়ে উঠেছিলেন ড্যানিশদের ত্রাতা। এরিকসেনের হঠাৎ করে ইউরো থেকে ছিটকে যাওয়ায় হইবিয়ের দায়িত্ব বেড়ে গিয়েছিল অনেকখানিই। সেসব সামাল দিয়েছেন, দলকে নিয়ে গিয়েছেন সেমিফাইনালেও।

ডেনমার্কের হয়ে সর্বোচ্চ ১১টি কী-পাস ও ১৪টি সুযোগ তৈরি করতে পেরেছেন হইবিয়ে। সফল ট্যাকল করেছেন ৮টি, সফল ড্রিবলিং ১০টি। তাই এই দলে মাঝমাঠে জর্জিনহোর সাথে জায়গা করে নিয়েছেন হইবিয়ে।

পেদ্রি (স্পেন)

Image Source : Be soccer

গত মৌসুমেই সবে ফুটবলবিশ্বে আবির্ভাব পেদ্রির। সেই পেদ্রিই কি না এক বছর পর আলো কেড়ে নিলেন ইউরোর মতো বড় মঞ্চে, বগলদাবা করলেন টুর্নামেন্টের সেরা তরুন খেলোয়াড়ের পুরস্কার! পেদ্রি স্বপ্ন দেখছেন না তো?

নাহ। আপনিও একবার চোখ কচলিয়ে নিতে পারেন। স্পেনের ফ্লুইড পাসিং ও ফাইনাল থার্ডে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার পিছনের কলকাঠি যে নেড়েছেন ১৮ বছর বয়সের পেদ্রিই!

পুরো ইউরোতে স্পেনের হয়ে মাত্র ১ মিনিটই মাঠে ছিলেন না তিনি। বাকি ৫৬৮ মিনিট মাঠ দাপিয়ে পেদ্রি সফল পাস দিয়েছেন ৪২১টি। ১১টি করে কী-পাস ও সুযোগ তৈরি করেছেন তিনি। এমনকি পুরো ইউরোতে সবচেয়ে বেশি থ্রু বল (৪টি) ও সবচেয়ে বেশি বিগ চান্স (৫টি) তৈরি করেছেন তিনি। তাই এই দলের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে তার বিকল্প নেই।

আক্রমণভাগ

নামিদামি ফরোয়ার্ডরা খেলেছেন ইউরোজুড়ে। তাদের মধ্যে এমবাপে কিংবা মুলারদের মতো তারকারা হতাশ করেছেন। আবার বেনজেমা, রোনালদো কিংবা লুকাকুরা ভালো খেললেও দলগতভাবে বাদ পড়েছেন অনেক আগেই। তবে কোয়ার্টার ফাইনাল পেরোতে না পারলেও এই দলে প্যাট্রিক শিক থাকাটা অনুমিতই। যৌথভাবে সর্বোচ্চ ৫ গোল ছাড়াও চেক প্রজাতন্ত্রের মতো দলকে বয়ে নিয়েছেন নিজের কাঁধে। তার সাথে বাকি দুইজন থাকবেন দুই ফাইনালিস্ট দলের রাহিম স্টারলিং ও ফেদেরিকো কিয়েসা।

ফেদেরিকো কিয়েসা (ইতালি)

Image Source : Goal.com

মানচিনি শুরুতে ২২ বছরের তরুন কিয়েসাকে ভরসা করতে পারেননি বোধহয়। প্রথম তিন ম্যাচে বেরার্দির বদলি হিসেবে খেলেছেন অল্প কিছু সময়। কিন্তু নকআউটের ম্যাচে বদলি নেমে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে দুর্দান্ত এক গোলে দলকে জেতানোর পর তাকে আর উপেক্ষা করতে পারেননি মানচিনি। ফলাফল, সেমিফাইনালে স্পেনের বিপক্ষে গোলসহ জিতে নেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। ফাইনালেও বারবার উইংয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলেন কিয়েসা। শেষ অবধি অবশ্য মাঠে থাকতে পারেননি, চোটকে সঙ্গী করে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল আগেভাগেই।

টুর্নামেন্টে ৪ ম্যাচে শুরু থেকে খেললেও মাঠে নেমেছেন সবগুলো ম্যাচেই। করেছেন ২টি গোল। সফল ড্রিবলিং করেছেন ৯টি, সাথে দলের হয়ে সুযোগ তৈরি করেছেন ৬টি। ইতালির আক্রমণভাগে ইনসিনিয়ের যোগ্য সঙ্গী হয়ে ত্রাস ছড়িয়েছেন প্রতিপক্ষের ফাইনাল থার্ডে। তাই তর্কাতীতভাবেই ইউরোর সেরা একাদশে রাইট উইঙ্গার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন ফেদেরিকো কিয়েসা।

প্যাট্রিক শিক (চেক প্রজাতন্ত্র)

Image Source : Hindustan times

ক্রোয়েশিয়া, ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের সাথে একই গ্রুপের সঙ্গী চেক প্রজাতন্ত্র হয়তো কোনোভাবে গ্রুপপর্ব পার হওয়াকেই সাফল্য হিসেবে ধরে নিত। তবে একজন বোধহয় কিছুতেই মানতে পারতেন না, প্যাট্রিক শিক; তিনি যে চেয়েছিলেন অন্য কিছু! একা হাতেই দলকে দ্বিতীয় রাউন্ডে তুললেন, স্কটল্যান্ডের সাথে মাঝমাঠ থেকে করলেন দুর্দান্ত এক গোল। ইউরোর সেরা গোল বললেও ভুল হবে না বোধহয়। দ্বিতীয় রাউন্ডে নেদারল্যান্ডকে হারানো ম্যাচেও করেছেন এক গোল। কোয়ার্টার ফাইনালেও লড়েছেন একাই। নিজে এক গোল করলেও ডেনমার্কের সাথে দল হেরে যায় ২-১ গোলে।

দল বিদায় নিলেও প্যাট্রিক শিক নিজেকে চিনিয়েছেন জাত স্ট্রাইকার হিসেবেই। গোলমুখে শট নিয়েছেন ৯ বার; ৫ গোল করে সিলভার বুটও জিতে নিয়েছেন তিনি। তাই এই একাদশের স্ট্রাইকার হিসেবে থাকছেন তিনিই।

রাহিম স্টার্লিং (ইংল্যান্ড)

Image Source : Telegraph

সাঞ্চো, রাশফোর্ড, ফোডেন, গ্রিলিশ – সাউথগেটের হাতে তারকার কমতি ছিল না। কিন্তু তিনি আস্থা রেখেছিলেন পুরনো যোদ্ধা স্টারলিংয়ের উপরই। কোচকে হতাশ করেননি, বরং ছাড়িয়ে গিয়েছেন সবাইকেই। ইংল্যান্ডের সেরা পারফর্মার বললে একটুও বাড়াবাড়ি মনে হবে না বোধহয়। গ্রুপপর্বের ইংল্যান্ডের করা দুইটি গোলই এসেছে স্টারলিংয়ের পা থেকে। দ্বিতীয় রাউন্ডেও জার্মানির সাথে করেছেন একটি গোল। ইউক্রেনের সাথে কোয়ার্টার ফাইনালে ছিল এক অ্যাসিস্ট। আর ডেনমার্কের সাথে সেমিফাইনালে দুইটি গোলেই তার অবদান; আত্মঘাতী গোল এবং পেনাল্টি আদায় দুইটির সাথেই যে জড়িয়ে ছিল স্টারলিংয়ের নাম! 

শুধু গোলেই নয়, স্টারলিং আদতে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন পুরো মাঠজুড়েই। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ২০টি সফল ড্রিবলিং করেছেন তিনি, সুযোগ তৈরিও করেছেন ৪টি। গোলমুখে শট নিয়েছেন ৮ বার। তাই ইউরোর সেরা একাদশের লেফট উইঙ্গার হিসেবে থাকছেন রাহিম স্টারলিং।

বেঞ্চে যারা 

মূল দলে জায়গা না পেলেও দারুণ খেলেছেন এমন ৫ জন নিয়ে গড়া বেঞ্চ লাইনআপ হচ্ছে অনেকটা এরকম – ইয়ান সমার (সুইজারল্যান্ড), লিওনার্দো স্পিনাৎজোলা (ইতালি), মার্কো ভেরাত্তি (ইতালি), এমিল ফর্সবার্গ (সুইডেন), ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো (পর্তুগাল)। 

কোচ – রবার্তো মানচিনি (ইতালি)

Image Source : Football espana

কোনো তর্ক ছাড়াই এই দলের কোচ হবেন রবার্তো মানচিনি। টালমাটাল ইতালির খোলনলচে পাল্টে দেওয়া মানচিনি কেবল ফলাফলের জন্যই বাহবার দাবিদার নন, বরং ইতালির বদলে যাওয়া খেলার ধরন ও ধ্রুপদী ফুটবলের জন্যও কৃতিত্বও তারই। টানা ৩৪ ম্যাচ ধরে অপরাজেয় ইতালিকে ইউরো জেতানো রবার্তো মানচিনি থাকছেন তাই ডাগআউটে।

আপনার একাদশের সঙ্গে রোর বাংলার একাদশটা আদৌ মিলল কি? 

This Bangla article is about the best eleven of the euro 2020. 

Feature Image : Times of India 

Related Articles