Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ব্রায়ান ফ্লিন: ওয়েলসের ফুটবলের ত্রাণকর্তা

অতিব্যবহারের ফলে ‘রূপকথা’ শব্দটাকে ক্লিশে মনে হতে পারে, তবে ওয়েলস ফুটবল দল যা করে দেখিয়েছে, তাকে রূপকথা না বলে উপায় নেই। নিজেদের ইতিহাসে কখনো ইউরোতে খেলার যোগ্যতা অর্জন না করা দলটা কি না খেলে ফেলল সর্বশেষ দুটো ইউরো! ব্যাপারটার মহিমা আরো বেড়ে যাচ্ছে, যখন এর সাথে যোগ করা হয় প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করার গল্প।

ব্রায়ান ফ্লিন; Image Source: Sky Sports

ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাস নিয়ে পড়ালেখা করে থাকলে অবশ্য ‘প্রথম’ শব্দটায় তীব্র আপত্তি আসবে। ১৯৫৮ বিশ্বকাপে তো ওয়েলস খেলেছে, ব্রাজিলের কাছে হেরে বিদায় নেওয়ার আগে পৌঁছেছিল কোয়ার্টার ফাইনাল অবধি। প্রথম বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করার বিবৃতিটা কি তবে মিথ্যা? না, পুরোপুরি মিথ্যা নয়। ১৯৫৮ বিশ্বকাপে ওয়েলস খেললেও সেই বিশ্বকাপে ‘কোয়ালিফাই’ করতে হয়নি তাদের।

ইউরোপ মহাদেশ থেকে বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ার খেলার পদ্ধতিটা ছিল অনেকটা এখনকার মতোই। কয়েকটা গ্রুপে ভাগ করে দেওয়া হতো দলগুলোকে, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন সরাসরি কোয়ালিফাই করত বিশ্বকাপে। বাকি দলগুলো বাদ। ১৯৫৮ বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ারের ক্ষেত্রে যখন গ্রুপ ভাগ করা হলো, গ্রুপ ফোর-এ পড়ল চেকোস্লোভাকিয়া, পূর্ব জার্মানি আর ওয়েলস। ডাবল রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে হওয়া ম্যাচগুলো শেষে ৪ ম্যাচে ৩ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান দখলে নেয় চেকোস্লোভাকিয়া। সমানসংখ্যক ম্যাচে যথাক্রমে দুটো ও একটি করে জয় পায় ওয়েলস ও পূর্ব জার্মানি। হিসাব অনুযায়ী তাই চেকোস্লোভাকিয়ার সরাসরি বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করার কথা, বিদায় নেওয়ার কথা ওয়েলস আর পূর্ব জার্মানির। এই অবস্থা থেকে ওয়েলসের বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার গল্প বলতে হলে আগে একটু এশিয়া আর আফ্রিকা থেকে ঘুরে আসতে হবে।

১৯৫৮ সালের ১৬ দলের বিশ্বকাপে একটা স্থান নির্ধারিত ছিল আফ্রিকা আর এশিয়া মহাদেশের জন্য। কিন্তু এই মহাদেশগুলোর আরব দেশগুলো ইসরাইলের বিপক্ষে খেলতে আপত্তি জানিয়ে খেলা থেকে বিরত থাকে। ফলাফল হিসেবে বিশ্বকাপের ঐ একটা স্থানের জন্য ইসরাইলই ছিল একমাত্র প্রতিযোগী দল। কিন্তু ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, বাছাইপর্বে কোনো ম্যাচ না খেলে কোনো দল সরাসরি বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে পারবে না। বাছাইপর্বের প্লে-অফে ইসরাইলের প্রতিপক্ষ হিসেবে তাই অন্য মহাদেশের কোন একটি দলকে দাঁড় করানো হয়। আর ঐ দলটি খোঁজার জন্য ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা এবং উত্তর ও মধ্য আমেরিকার বাছাইপর্বের গ্রুপ রানার্সআপ দলগুলোর মধ্যে ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে উরুগুয়ে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়, উত্তর আয়ারল্যান্ড আর ইতালির একটা করে ম্যাচ খেলা বাকি ছিল বলে তাদেরও ড্রয়ের বাইরে রাখা হয়। বাকি থাকে বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, ওয়েলস, নেদারল্যান্ড, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, স্পেন, বলিভিয়া, পেরু আর কোস্টারিকা।

ড্র-তে ইসরাইলের প্রতিপক্ষ হিসেবে প্রথমে নাম ওঠে বেলজিয়ামের, কিন্তু বেলজিয়াম নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়। ফলাফল হিসেবে আবার ড্র হয়, এবার নাম ওঠে ওয়েলসের। এরপর অনুষ্ঠিত প্লে-অফের দুই লেগেই ইসরাইলকে ২-০ গোলে পরাজিত করে ওয়েলস পেয়ে যায় বিশ্বকাপের টিকেট। তবে বিশ্বকাপের টিকেট পেলেও এই পুরো প্রক্রিয়ায় সাধারণ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে, ‘কোয়ালিফাই’ শব্দটি ব্যবহারে তাই দ্বিমত থাকাই স্বাভাবিক।

১৯৫৮ বিশ্বকাপে ওয়েলস দল; Image Source: UEFA

১৯৫৮ সালের গল্প বলতে গিয়ে মূল আলোচনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। ছোটখাট অনেক বিষয়ই রয়েছে, তবে ওয়েলসের ফুটবলের সাম্প্রতিক উত্থানের পেছনের কারিগরকে নিয়েই আজকের গল্প, আর সেই কারিগরের নাম ব্রায়ান ফ্লিন। ‘বার্নলি আর লিডসের সাবেক এই মিডফিল্ডার ওয়েলসের ফুটবলকে রক্ষা করেছিলেন অনিবার্য পতন থেকে’ – কথাটা বিস্ময়কর হলেও সত্য।

১৯৭৪-৭৫ সাল। ব্রায়ান ফ্লিন ওয়েলস দলে মাত্রই জায়গা করে নিয়েছেন। ওয়েলস দলের তখন বেশ সুসময় চলছে। পরের বছরে অনুষ্ঠিতব্য ইউরোর বাছাইপর্বে নিজেদের গ্রুপের শীর্ষস্থানও দখলে নিয়েছে তারা, পেছনে ফেলেছে অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি আর লুক্সেমবার্গকে। আটটি গ্রুপের সেরা দলগুলোকে নিয়ে অনুষ্ঠিত কোয়ার্টার ফাইনালেও উঠে গিয়েছিল তারা, কিন্তু যুগোস্লাভিয়ার কাছে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ ব্যবধানে পরাজিত হয়ে জলাঞ্জলি দিতে হয়েছিল ইউরোতে খেলার স্বপ্ন, ১৯৮০ এর আগ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে মাত্র চারটা দলই যে ইউরো খেলার সুযোগ পেত!

ওয়েলসের জার্সি গায়ে ফ্লিনের প্রথম পুরো নব্বই মিনিটের ম্যাচ খেলার সুযোগ আসে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। উনিশ বছর বয়সী এই তরুণ মিডফিল্ডার ঐ ম্যাচে অসাধারণ একটা গোল করেন, যেটা পেশাদার ফুটবলেই তার প্রথম গোল। অবশ্য গোল না পেলেও এর আগে বার্নলির হয়ে নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে প্রথম নজর কাড়েন ফ্লিন। কোচ হিসেবেও তখন তিনি পেয়েছিলেন জিমি অ্যাডামসনকে, যাকে অনেকেই বিবেচনা করে থাকেন কখনো ইংল্যাড দলের জার্সি গায়ে না চাপানো সেরা ফুটবলার হিসেবে। অ্যাডামসন সবসময়ই ফিজিক্যালিটির চেয়ে স্কিলকে বেশি গুরুত্ব দিতেন, তার অধীনে পাঁচ ফুট চার ইঞ্চির ফ্লিন তাই নিজের স্কিলকে আরো শাণিত করে নিতে পেরেছিলেন। মিডফিল্ডার হিসেবে ফ্লিন ছিলেন অত্যন্ত ক্ষিপ্র, প্রতিপক্ষকে বল পায়ে সময় দিতে চাইতেন না একদমই; আবার নিজের পায়ে বল থাকাকালীন নিতে পারতেন সঠিক সিদ্ধান্ত। মিডফিল্ডার হয়েও গোলের রাস্তাটা মোটামুটি চেনা ছিল তার, জাতীয় দলের হয়ে ৬৬ ম্যাচে করেছিলেন ৭ গোল। এর মধ্যে ১৯৮৩ সালে ব্রাজিলের বিপক্ষেও গোল আছে তার।

ওয়েলসের হয়ে ৬৬টা ম্যাচ খেলা, ক্লাব ক্যারিয়ারে বার্নলি, লিডস, কার্ডিফ সিটি, রেক্সহ্যামের মতো দলে খেলেও পাঁচবার প্রিমিয়ার লিগের সেরা দশে থাকা, ফ্লিনের ক্যারিয়ারের পরিসংখ্যানের পাতাটাও নিতান্ত মন্দ নয়। খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারের শেষ দিকে ১৯৮৮ সালে তিনি যোগ দেন রেক্সহ্যামে। পরের বছরে, খেলোয়াড়ি জীবন চলাকালীনই তিনি রেক্সহ্যামের কোচিংয়ের দায়িত্বও নেন। এরপর ১৯৯৩ সালে জার্সি-বুট তুলে রাখলেও রেক্সহ্যামের কোচিংটা চালিয়ে যান ২০০১ পর্যন্ত। পরের তিন বছর কোচিং করান সোয়ানসি সিটিতে, আর এরপরই দায়িত্ব নেন ওয়েলসের ‘ইন্টারমিডিয়েট’ দলের। নামে ‘ইন্টারমিডিয়েট’ দল হলেও, দায়িত্বটা ছিল মূলত ওয়েলসের বয়সভিত্তিক দল তথা অনূর্ধ্ব-১৭, অনূর্ধ্ব-১৯ ও অনূর্ধ্ব-২১ দলের কোচিংয়ের। একই সময়ে ওয়েলসের মূল দলের কোচ ছিলেন জন টোশাক, যিনি ছিলেন ওয়েলসের ‘কখনো মেজর টুর্নামেন্টে না খেলা‘ খেলোয়াড়দের লম্বা তালিকার একজন। ঐ তালিকায় আছেন ওয়েলসের বিখ্যাত ফুটবলার জন চার্লস, মেলভিন চার্লস, জ্যাক কেসলি, ক্লিফ জোনস, মাইক ইংল্যান্ড, লেইটন জেমস, নেভিল সাউথহল, ইয়ান রাশ, মার্ক হিউজেস, কেভিন র‍্যাটক্লিফ, গ্যারি স্পিড, রায়ান গিগস, ক্রেইগ বেলামি প্রমুখ।

জন টোশাক; Image Credit: Getty Images

তবে ২০০৪ সালে যখন ব্রায়ান ফ্লিন দায়িত্ব নেন, ওয়েলস দলের পাইপলাইনের অবস্থা তখন খুবই খারাপ। এতটাই খারাপ যে, ক্রেইগ বেলামি, সাইমন ডেভিস আর মার্ক পেমব্রিজের ইনজুরির কারণে ইউরোর বাছাইপর্বের প্রথম চার ম্যাচ জেতা দলটা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয় ইউরোতে কোয়ালিফাই করতে। আরও বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে, ১৯৯৭ থেকে ২০০২, এই পাঁচ বছরে ওয়েলসের অনূর্ধ্ব-২১ দল জেতেনি একটা ম্যাচও। আর পাইপলাইনের এই বাজে অবস্থা চলছিল বহুদিন ধরে, শীঘ্রই এর থেকে পরিত্রাণের কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছিল না। অবস্থার গুরুত্ব বোঝাতে ১৯৮১ সালে ম্যানেজার মাইক ইংল্যান্ড বলেছিলেন,

“জাতীয় দলে খেলানোর মতো আমার হাতে ২৪ জন খেলোয়াড় আছে। এর মধ্যে একজনও যদি ইনজুরিতে পড়ে, তার বদলে খেলানোর মতো কোনো খেলোয়াড় নেই আমার হাতে।”

১৯৯৫ সালে স্কোয়াড ডেপথের ব্যাপারে ইয়ান রাশ বলেন,

“ওয়েলসের মতো ছোট্ট দেশ থেকে পর্যাপ্তসংখ্যক মানসম্পন্ন খেলোয়াড় পাওয়াটা কঠিন। জাতীয় দলের সঠিক ভারসাম্য খুঁজে পাওয়াটাও তাই দুষ্কর।”

২০০১ সালে ক্রেইগ বেলামি বলেছিলেন,

“সবাই ফিট থাকলে ওয়েলসের মূল জাতীয় দলটা বেশ শক্তিশালী, কিন্তু কেউ ইনজুরিতে পড়লে তাঁর যথাযথ রিপ্লেসমেন্ট পাওয়া যায় না। এটা কোন আদর্শ সিস্টেম হতে পারে না।”

ফ্লিনের সামনে মূল চ্যালেঞ্জ ছিল, দুর্বিষহ এই অবস্থা থেকে তুলে এনে ওয়েলসকে একটা শক্ত পাইপলাইন তৈরি করে দেওয়া। ‘ক্ষমতা, মনোভাব আর বুদ্ধিমত্তা’ ছিল তার মূলমন্ত্র, আর নিজের কম বয়সে দলে সুযোগ পাওয়ার অভিজ্ঞতা থাকায়, কম বয়সীদের সুযোগ দিতে কার্পণ্য ছিল না তার। অনেক প্রতিভাবান ফুটবলারের সাথে কাজ করেছিলেন তিনি, ক্রিস আর্মস্ট্রং, কার্ল কোনোলি, লিওন ব্রিটন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। খেলোয়াড়দের পুল তৈরির জন্য ফ্লিন প্রতি সপ্তাহে গড়ে ১২টা করে লিগ ম্যাচে উপস্থিত থাকতে শুরু করেন, ক্লাব কোচদের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলেন আর ওয়েলসের নতুন খেলোয়াড়দের সম্পর্কে খোঁজখবর রাখতে শুরু করেন। তার এই পরিশ্রম মধুর ফলাফল এনে দিয়েছিল। ওয়েলসের ফুটবল ইতিহাসের সেরা অর্জন, ২০১৬ সালের ইউরোর সেমিফাইনাল খেলার পথে কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে যে তিনজন খেলোয়াড় গোল পেয়েছিলেন, সেই অ্যাশলে উইলিয়ামস, হাল রবসন-কানু আর স্যাম ভোকস, তিনজনই জন্মেছেন ইংল্যান্ডে, তিনজনের পূর্বপুরুষই ওয়েলসের, আর তিনজনই ওয়েলসের ফুটবলে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছিলেন ব্রায়ান ফ্লিনের হাত ধরে।

ওয়েলসের দায়িত্ব নেওয়ার আগে সোয়ানসি সিটির ম্যানেজার ছিলেন ফ্লিন; Image Source: Sky Sports

শুধু পাইপলাইন শক্ত করাই নয়, সাথে সাথে দলটার মানসিকতায় জয়ের মন্ত্রটাও গেঁথে দিয়েছিলেন ফ্লিন। ২০০৭ এর গ্রীষ্মে সুইডেনের অনূর্ধ্ব-২১ দলকে ৪-৩ ব্যবধানে হারানো তার দলের আটজন খেলোয়াড়, ডেভিড এডওয়ার্ডস, স্যাম ভোকস, ডেভিড কটেরিল, সাইমন চার্চ, নিল টেইলর, ওয়েইন ফন উইলিয়ামস, জো অ্যালেন, আর অ্যারন রামসি নয় বছর পরে, ২০১৬ এর ইউরোর দলেও জায়গা করে নিয়েছিলেন।

ঐ ম্যাচের তিন মাস পরে ইউরোর কোয়ালিফায়ারে ফ্রান্সের বিপক্ষে ৪-২ ব্যবধানে জয় পায় ওয়েলস অনূর্ধ্ব-২১ দল। ওয়েলসের কার্ডিফের নিনিয়ান পার্কের ঐ ম্যাচে মাত্র ৭০০ দর্শক উপস্থিত থাকলেও, জো অ্যালেন আর অ্যার রামসির পারফরম্যান্স দেখার পর তারা নিজেদের ভাগ্যবান মনে করতেই পারেন। ইউরোর বাছাইপর্বের নিজেদের গ্রুপের শীর্ষে থাকলেও নিয়ম অনুযায়ী তাদের প্লে-অফ খেলতে হয় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, বয়সভিত্তিক পর্যায়ে যারা ইউরোপের অন্যতম সেরা দল। অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল নিয়েও অসাধারণ লড়াই করে শেষ পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগের তারকা জেমস মিলনার আর মার্ক নোবেলের অভিজ্ঞতার কাছে ৩-২ ব্যবধানে হেরে যায় ওয়েলস।

পরের ইউরোর বাছাইপর্বেও ওয়েলসের সামনে সুযোগ ছিল বড় কিছু করার। কিন্তু হাঙ্গেরি, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, আর লুক্সেমবার্গকে পেছনে ফেললেও ইতালিকে পেছনে ফেলতে পারেনি ওয়েলস। ডাবল রাউন্ড-রবিন লিগ পদ্ধতিতে হওয়া গ্রুপপর্বের খেলায় প্রথম লেগে ইতালিকে ২-১ এ পরাজিত করা ওয়েলস দ্বিতীয় লেগে হেরে যায় ১-০ ব্যবধানে। ইতালির সাথে সমান ১৬ পয়েন্ট নিয়ে, পারস্পরিক লড়াইয়ে অ্যাগ্রিগেটে ২-২ ড্র থাকার পরও, অ্যাওয়ে গোলের হিসাবে বিদায় নিতে হয় ওয়েলসকে।

গ্যারেথ বেল, অ্যারন রামসি আর জো অ্যালেন; ওয়েলশ ফুটবলের ত্রিরত্ন; Image Source: Getty Images

এই ‘এত কাছে তব এত দূর’ এর গল্পগুলোতে অন্য কোচ-ম্যানেজাররা হতাশায় ভেঙে পড়তে পারেন, কিন্তু ফ্লিন তেমন মানুষই নন। ২০১২ সালে ওয়েলসের ফুটবলের দায়িত্ব ছাড়ার সময়েও ফ্লিনের চোখ তাই সুদূর স্বপ্নীল ভবিষ্যতে, মূল জাতীয় দলের জন্য খেলোয়াড় তৈরি করে দেওয়ার ক্ষেত্রে তার অবদানটা যে সবার চেয়ে বেশি! আর সেই ফলটা তো ওয়েলস এখন হাতে হাতে পাচ্ছেই, পরপর দুটো ইউরোর পর বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেওয়ার মাধ্যমে। আর ওয়েলসের সেই সাফল্যের নেপথ্য নায়কের নাম ব্রায়ান ফ্লিন, যার সম্পর্কে ওয়েলসের সাবেক ফুটবলার ওয়েইন জোনস বলেছিলেন,

“ফ্লিনের আট বছরের কোচিংই গড়ে দিয়েছে ওয়েলসের পরের ১৫ বছরের ভবিষ্যৎ।”

Related Articles