পহেলা জুন বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ডের ম্যাচের মধ্য দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির যাত্রা শুরু হয়েছে। র্যাংকিংয়ের প্রথম ৮টি দলকে নিয়ে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর বসেছে ইংল্যান্ডে।
১৯৯৮ সালে যখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির যাত্রা শুরু হয় তখন টুর্নামেন্টের নাম ছিলো ‘আইসিসি নক আউট টুর্নামেন্ট’। আইসিসি নক আউট টুর্নামেন্টের প্রথম আসর আয়োজন করে বাংলাদেশ। টেস্ট খেলুড়ে ৯টি দেশ ঐ আসরে অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ নিজে অংশগ্রহণ না করলেও সফলভাবেই টুর্নামেন্টটি আয়োজন করেছিল। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত আইসিসি নক আউট টুর্নামেন্টের প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে বারবার হোঁচট খেলেও দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম এবং একমাত্র আইসিসি ট্রফি জিতে ঐ আসরে।
প্রতি দুই বছর অন্তর এই আসর অনুষ্ঠিত হতো। ২০০৬ সালের পর ২০০৮ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে ঐ বছর আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অনুষ্ঠিত হয়নি। পরের বছর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন করা হয়। বর্তমানে প্রতি চার বছর অন্তর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম দুই আসরে ‘আইসিসি নক আউট টুর্নামেন্ট’ নামে অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ২০০২ সালে এর নামকরণ করা হয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বিগত সাতটি আসরের চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটারদেরকে নিয়ে আজকের এই লেখা। প্রথমেই শুরু করা যাক চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যানকে নিয়ে। এরপর আসবে সেরা পাঁচ বোলারের কথা।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যান
ক্রিস গেইল
ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই তারকা ব্যাটসম্যানকে একনামে সবাই চেনে। টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটের এই ফেরিওয়ালা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সর্বকালের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ক্রিস গেইল তার ক্যারিয়ারের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচ খেলেন ২০০২ সালে। ঐ আসরে তিনি দুই ম্যাচে ৪১.০০ ব্যাটিং গড়ে করেন ৮২ রান।
২০০৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জেতে। ক্রিস গেইল ঐ আসরে চার ম্যাচে ৩৪.৭৫ ব্যাটিং গড়ে করেন ১৩৯ রান। ২০০৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ রানার আপ হয়। ক্রিস গেইল ঐ আসরে আট ম্যাচে তিনটি শতকের সাহায্যে ৭৯.০০ ব্যাটিং গড়ে করেন ৪৭৪ রান। ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলেননি ক্রিস গেইল। ২০১৩ সালে নিজের শেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসরে তিন ম্যাচে ৩২.০০ ব্যাটিং গড়ে তিনি করেছেন ৯৬ রান। ক্রিস গেইল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ১৭ ম্যাচে ৫২.৭৩ ব্যাটিং গড়ে ৭৯১ রান করেছেন, যা এখনও পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।
মাহেলা জয়াবর্ধনে
শ্রীলঙ্কান ব্যাটিং কিংবদন্তী জয়াবর্ধনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন। ২০০০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দ্বিতীয় আসরে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচ খেলেন জয়াবর্ধনে। ঐ আসরে দুই ম্যাচে ৪১.৫০ ব্যাটিং গড়ে করেন ৮৩ রান।
২০০২ সালে শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চ্যাম্পিয়ন হয়। ঐ আসরে জয়াবর্ধনে নিজের স্বভাবজাত ব্যাটিং করতে পারেননি। পাঁচ ম্যাচের মধ্যে চার ইনিংস ব্যাটিং করে ৩৫.০০ ব্যাটিং গড়ে করেছেন ১০৫ রান। ২০০৬ সালে ছয় ম্যাচে ৩৭.৬০ ব্যাটিং গড়ে করেছেন ১৮৮ রান। ঐ আসরে তিনি সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় পঞ্চম স্থানে ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ষষ্ঠ আসরে তিনি তিন ম্যাচে ৫৪.৩৩ ব্যাটিং গড়ে ১৬৩ রান করেছিলেন। ২০১৩ সালে ক্যারিয়ারের শেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচে চার ম্যাচে ৫৬.০০ ব্যাটিং গড়ে করেছিলেন ১৬৮ রান। সব মিলিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ২২ ম্যাচে ৪১.২২ ব্যাটিং গড়ে করেছেন ৭৪২ রান। কোনো শতকের দেখা না পেলেও পাঁচটি অর্ধশতক হাঁকিয়েছিলেন তিনি।
কুমার সাঙ্গাকারা
মাহেলা জয়াবর্ধনের সাথে ২০০০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির যাত্রা শুরু করেন কুমার সাঙ্গাকারা। ২০০২ সালে শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে ভারতের সাথে চ্যাম্পিয়ন হয়। ঐ আসরে কুমার সাঙ্গাকারা পাঁচ ম্যাচে ৩৩.৮০ ব্যাটিং গড়ে ১৬৯ রান করেছিলেন।
কুমার সাঙ্গাকারার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সবচেয়ে সফল আসর ছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সপ্তম এবং তার ব্যক্তিগত ষষ্ঠ আসরটি। ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ১৩৪* রানের ইনিংস সহ চার ম্যাচে ৭৪.০০ ব্যাটিং গড়ে ২২২ রান করেছিলেন। কুমার সাঙ্গাকারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ২২ ম্যাচে ৩৭.৯৪ ব্যাটিং গড়ে করেছেন ৬৮৩ রান।
সৌরভ গাঙ্গুলী
‘প্রিন্স অফ কলকাতা’ এবং দাদা নামে পরিচিত এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম চার আসর খেলেছেন। প্রথম আসরে দুই ম্যাচে করেছিলেন ৮৪ রান। যার মধ্যে ৮৩ রানের একটি দৃষ্টিনন্দন ইনিংস খেলেছিলেন সৌরভ।
পরের আসরে ভারত প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ওঠার কৃতিত্ব অর্জন করে। ভারতকে ফাইনালে তোলার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা ছিলো অধিনায়ক সৌরভের। টুর্নামেন্টে চার ম্যাচে সর্বমোট ৩৪৮ রান করেছিলেন ১১৬.০০ ব্যাটিং গড়ে। ফাইনালে ১১৭ রানের ইনিংস খেলেও দলকে শিরোপা এনে দিতে পারেননি সৌরভ গাঙ্গুলী। ২০০২ সালে শ্রীলঙ্কার সাথে যৌথভাবে শিরোপা জিতে ভারত। সৌরভ গাঙ্গুলীও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজের ধারাবাহিক পারফরমেন্স বজায় রেখেছিলেন। তিন ইনিংস ব্যাটিং করে ৭১.৫০ ব্যাটিং গড়ে করেছিলেন ১৪৩ রান। সৌরভ গাঙ্গুলী চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ১১ ইনিংস ব্যাটিং করে ৭৩.৮৮ ব্যাটিং গড়ে করেছেন ৬৬৫ রান। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তিনি আছেন চতুর্থ স্থানে।
জ্যাক ক্যালিস
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের জয়ের নায়ক জ্যাক ক্যালিস। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত তৎকালীন আইসিসি নক আউট টুর্নামেন্টের প্রথম আসরের শিরোপা জেতে দক্ষিণ আফ্রিকা, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন জ্যাক ক্যালিস।
১৯৯৮ সালে তিনি ১টি শতক সহ ৮২.০০ ব্যাটিং গড়ে ১৬৪ রান করার পাশাপাশি ৮ উইকেট শিকার করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার ছিলেন তিনি। পরের আসরেও তিনি দুই ম্যাচে ৯৩.০০ ব্যাটিং গড়ে ৯৩ রান করেছিলেন। জ্যাক ক্যালিস চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যাটে-বলে বরাবরই ছিলেন দুর্দান্ত।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ১৭ ম্যাচে ৪৬.৬৪ ব্যাটিং গড়ে করেছেন ৬৫৩ রান। সেই সাথে বল হাতে শিকার করেছেন ২০টি উইকেট।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা পাঁচ বোলার
কাইল মিলস
নিউজিল্যান্ডের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেরা সাফল্য ২০০০ সালে শিরোপা জয় লাভ করা। এরপর তারা ২০০৯ সালে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে রানার আপ হয়। ঐ আসরে নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে উঠতে সাহায্য করেন কাইল মিলস।
নিউজিল্যান্ডের পেসার কাইল মিলস ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর খেলেননি। তার যাত্রা শুরু হয় ২০০২ সাল থেকে। নিজের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসরে দুই ম্যাচে শিকার করেন তিন উইকেট। ২০০৬ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অনুষ্ঠিত হয় ভারতের মাটিতে। সেখানে মাত্র চার ম্যাচে মিলস শিকার করেন ১০ উইকেট। ২০০৯ সালে পাঁচ ম্যাচে নয় উইকেট শিকার করে নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে উঠতে সাহায্য করেন তিনি। সর্বশেষ ২০১৩ সালে তিন ম্যাচে ছয় উইকেট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সর্বকালের সেরা উইকেট শিকারি বোলার হিসাবে নিজের নাম লেখান কাইল মিলস। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ১৫ ম্যাচে তার ঝুলিতে জমা পরেছে ২৮ জন ব্যাটসম্যানের উইকেট।
মুত্তিয়া মুরালিধরন
এই স্পিন জাদুকর ২০০৯ সালে যখন নিজের শেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচ খেলেন তখন তিনি ছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সর্বকালের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক। মুরালিধরন ১৯৯৮ সালে আইসিসি নক আউট টুর্নামেন্টে দুই ম্যাচ খেলে শিকার করেছিলেন চার উইকেট। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির তৃতীয় আসরে শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে শিরোপা জিতে। ঐ আসরে পাঁচ ম্যাচে ১০ উইকেট শিকার করেছিলেন এই স্পিন কিংবদন্তী।
মুত্তিয়া মুরালিধরন ২০০৬ সালে ছয় ম্যাচে নয় উইকেট শিকার করেছিলেন। ২০০৯ সালে নিজের শেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খুব একটা আলো ছড়াতে পারেননি তিনি। ১৭ ম্যাচে ২৪ উইকেট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি।
লাসিথ মালিঙ্গা
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যাটিংয়ের মতো বোলিংয়েও দুই শ্রীলঙ্কান আধিপত্য করেছেন। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিদের তালিকায় মুরালিধরনের পরের অবস্থানে আছেন ভিন্নধর্মী অ্যাকশনের বোলার লাসিথ মালিঙ্গা।
২০০৬ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর খেলেছেন মালিঙ্গা। নিজের প্রথম আসরে ছয় ম্যাচে শিকার করেছিলেন ১১ উইকেট। ২০০৯ সালে চার ম্যাচে সাত উইকেট এবং ২০১৩ সালে তিন ম্যাচে চার উইকেট শিকার করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ১৩ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে তৃতীয় সেরা বোলার লাসিথ মালিঙ্গা।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এই আসরেও তিনি খেলছেন।
ব্রেট লি
অস্ট্রেলিয়ার এই গতি তারকা ২০০০ সালে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচ খেলেন। ব্রেট লির কাছে গতিই শেষ কথা। গতির পাশাপাশি ভয়ংকর সব বাউন্সার এবং ইয়র্কার দেওয়াতেও বেশ পারদর্শী ছিলেন তিনি।
ক্যারিয়ারের শুরুতেই ব্যাটসম্যানদের সামনে ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক। ২০০০ সালে ব্রেট লি এক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। গতির ঝড় তুলে ঐ ম্যাচে শিকার করেছিলেন দুই উইকেট। এরপর নিয়মিত প্রতি আসরেই তিনি উইকেটের দেখা পেয়েছেন। ২০০২ সালে তিন ম্যাচে পাঁচ উইকেট। ২০০৬ এবং ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাঁচ ম্যাচ করে খেলে ছয়টি করে মোট ১২টি উইকেট শিকার করেছিলেন ব্রেট লি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্রেট লি ১৬ ম্যাচ খেলেছিলেন। এই ১৬ ম্যাচের ১৫ ইনিংস বোলিং করে ২২ উইকেট শিকার করে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিদের তালিকায় চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছেন তিনি।
গ্লেন ম্যাকগ্রা
তার বোলিংয়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল ভালো জায়গায় টানা বল করে যাওয়া। খুব বেশি গতিতে বল করতেন না। কিন্তু তার সুইংয়ে ঠিকই ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্তিতে ফেলতেন। ২০০০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচ খেলেন। ঐ ম্যাচে উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেননি।
পরের আসরে ঠিকই স্বরূপে ফিরেন তিনি। তিন ম্যাচে শিকার করেছিলেন আট উইকেট। ঐ আসরে একমাত্র বোলার হিসাবে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছিলেন ম্যাকগ্রা। ২০০৪ সালে আবারো নিষ্প্রভ ম্যাকগ্রা। তিন ম্যাচে তার ঝুলিতে মাত্র তিনটি উইকেট। ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়া প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ঘরে তোলে। সে আসরে ম্যাকগ্রা পাঁচ ম্যাচে শিকার করেছিলেন ১০ উইকেট। গ্লেন ম্যাকগ্রা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ১২ ম্যাচে ২১ উইকেট শিকার করে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিদের তালিকায় ৫ম স্থানে আছেন।
প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বিগত সাত আসরের মধ্যে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় আসর বাদে বাকি পাঁচ আসরে টুর্নামেন্ট সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত করে হয়েছিল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দ্বিতীয় এবং তৃতীয় আসরে প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্টের পুরস্কার দেওয়া হয়নি।
জ্যাক ক্যালিস (১৯৯৮)
আইসিসি নক আউট টুর্নামেন্টের প্রথম আসরে ব্যাটে বলে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথম এবং একমাত্র আইসিসি ট্রফি জেতান জ্যাক ক্যালিস।
সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১১৩* রানের ইনিংস খেলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ফাইনালে উঠান জ্যাক ক্যালিস। ফাইনালেও জ্যাক ক্যালিস দক্ষিণ আফ্রিকাকে জয় এনে দেন। এবার বল হাতে ৩০ রান খরচায় পাঁচ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম আইসিসি ট্রফি জয়ে বড় ভূমিকা পালন করেন তিনি। টুর্নামেন্টে তিন ইনিংসে ৮২.০০ ব্যাটিং গড়ে ১৬৪ রান করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। বল হাতেও দুর্দান্ত পারফরমেন্স ছিল তার। আট উইকেট শিকার করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার ছিলেন তিনিই।
রামনারেশ সারওয়ান (২০০৪)
আগের দুই আসরে টুর্নামেন্ট সেরা ক্রিকেটার নির্বাচন করা হয়নি। চতুর্থ আসরে টুর্নামেন্ট সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের রামনারেশ সারওয়ান।
ঐ আসরে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার দৌড়ে তার সাথে লড়াই করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু শেষপর্যন্ত তাকেই এই সম্মানে ভূষিত করা হয়। আসরে চার ম্যাচে ৮৩.০০ ব্যাটিং গড়ে করেছিলেন ১৬৬ রান। আর এতেই তিনি টুর্নামেন্ট সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন। তার সাথে এই পুরস্কারের জন্য টেক্কা দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের মার্কস ট্রেসকোথিক। তিনি চার ম্যাচে ৬৫.২৫ ব্যাটিং গড়ে করেছেন ২৬১ রান। এছাড়া রামনারেশ সারওয়ানের স্বদেশী ক্রিস গেইল ১৩৯ রানের পাশাপাশি সাত উইকেট শিকার করেছিলেন এই আসরে।
ক্রিস গেইল (২০০৬)
আগের আসরে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার অন্যতম দাবিদার ছিলেন ক্রিস গেইল। কিন্তু শেষপর্যন্ত তারই স্বদেশী রামনারেশ সারওয়ানের হাতে টুর্নামেন্ট সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার ওঠে।
ঐ আসরে না পারলেও পরের আসরে ঠিকই টুর্নামেন্ট সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জিতে নেন ক্রিস গেইল। আট ম্যাচে তিনটি শতকের সাহায্যে ৭৯.০০ ব্যাটিং গড়ে ৪৭৪ রান করেছিলেন তিনি। সেই সাথে অফ স্পিন বল করে শিকার করেছিলেন আট উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে গেলেও টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার ক্রিস গেইলের হাতেই ওঠে।
রিকি পন্টিং (২০০৯)
এই আসরে দ্বিতীয় বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ঘরে তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। পুরো আসরেই অধিনায়ক রিকি পন্টিং ব্যাট হাতে ধারাবাহিক সাফল্য পেয়েছিলেন।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালে অপরাজিত ১১১* রান করে অস্ট্রেলিয়াকে ফাইনালে উঠতে সাহায্য করেন পন্টিং। দুর্দান্ত ক্যাপ্টেন্সি এবং পাঁচ ম্যাচে ৭২.০০ ব্যাটিং গড়ে ২৮৮ রান করার কারণে টুর্নামেন্ট সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত করা হয়েছিল অধিনায়ককে। টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার দৌড়ে তার সাথে সমানে সমানে লড়াই করেছিলেন ঐ আসরের ফাইনাল এবং সেমিফাইনালে শতক হাঁকানো শেন ওয়াটসন।
শিখর ধাওয়ান (২০১৩)
উপমহাদেশের ব্যাটসম্যান হয়েও ইংলিশ কন্ডিশনে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। আসরের ফাইনাল ম্যাচটি বৃষ্টির কবলে না পড়লে তার ৩১ রানের ইনিংসটিকে আরও বড় করতে পারতেন। বৃষ্টি বিঘ্নিত ফাইনালে তার ৩১ রানের ইনিংসটির গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।
বৃষ্টির কারণে দুই দল ২০ ওভারের ম্যাচ খেলে। সেখানে ভারত প্রথম ব্যাট করে ১২৯ রান সংগ্রহ করে। যার মধ্যে শিখর ধাওয়ান করেছিলেন ৩১ রান। টুর্নামেন্টে শিখর ধাওয়ান পাঁচ ম্যাচে ৯০.৭৫ ব্যাটিং গড়ে ৩৬৩ রান করে টুর্নামেন্ট সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন।
প্লেয়ার অব দ্য ফাইনাল
২০০২ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ভারত এবং শ্রীলঙ্কা দু’দল ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন। বৃষ্টির কারণে দু’দিনেও কোনো ফলাফল আসেনি। ঐ আসরের কোনো ফাইনাল ম্যাচ না হওয়াতে প্লেয়ার অব দ্য ফাইনালও নির্বাচন করা যায়নি। এছাড়া বাকি ছয় আসরেই প্লেয়ার অব দ্য ফাইনাল নির্বাচিত হয়েছিল, যাদের অসাধারণ নৈপুণ্যে তাদের দেশ শিরোপা ঘরে তুলেছিল।
জ্যাক ক্যালিস (১৯৯৮)
ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে টসে জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাটিং পাঠান দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক হ্যানসি ক্রনিয়ে। টসে হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে শুরুটা বেশ ভালোভাবেই করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওপেনার ফিলো ওয়ালেসের ১০৩ রানের ইনিংসের উপর ভর করে একপর্যায়ে তিন উইকেটে ১৮০ রান ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর বোর্ডে।
সেখান থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের উপর ধ্বংসলীলা চালান জ্যাক ক্যালিস। ৭.৩ ওভার বল করে ৩০ রানের বিনিময়ে পাঁচ উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি। তার বোলিং তোপের মুখে পড়ে ২৪৫ রানে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেওয়া ২৪৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা চার উইকেট হাতে রেখেই জয় তুলে নেয়। ব্যাট হাতেও ৩৭ রান করেছিলেন ক্যালিস। তার অসাধারণ নৈপুণ্যের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম আইসিসি শিরোপা জিতে এবং তিনি প্লেয়ার অব দ্য ফাইনাল নির্বাচিত হন।
ক্রিস কেয়ার্নস (২০০০)
পুরো আসর জুড়েই সৌরভ গাঙ্গুলী ফর্মে ছিলেন। শচীন, দ্রাবিড়ও দলকে ফাইনালের জন্য কোয়ালিফাই করতে অবদান রাখেন। ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। নক আউট পর্বে তাদেরও পূর্বের রেকর্ড খুব বেশি আহামরি না। গত আসরে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের শিরোপার আক্ষেপ ঘুচিয়েছে। এবার নিউজিল্যান্ডের পালা।
কিউই অধিনায়ক স্টেফিন ফ্লেমিং টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান। শুরুতে ব্যাটিং করার সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগাচ্ছিল ভারত। উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে শচীন-সৌরভ ১৪১ রান যোগ করেছিলেন। সৌরভ যখন ১১৭ রান করে আউট হন তখন ভারতের সংগ্রহ ছিল তিন উইকেটে ২২০ রানে। শেষপর্যন্ত কিউই বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ছয় উইকেটে ২৬৪ রান করে নিউজিল্যান্ড। ক্রিস কেয়ার্নস উইকেট শূন্য থাকলেও ১০ ওভার বল করে মাত্র ৪০ রান দিয়েছিলেন। জবাবে ক্রিস কেয়ার্নসের ১০২* রানের অসাধারণ ইনিংসের উপর ভর করে দুই বল এবং চার উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড। একপর্যায়ে নিউজিল্যান্ডের রান ছিল পাঁচ উইকেটে ১৩২। সেখান থেকে দলকে একাই টেনে নিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছিয়ে দেন কেয়ার্নস। অনবদ্য ইনিংস খেলে প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার জিতে নেন তিনি।
ইয়ান বার্ডশ্ (২০০৪)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ব্রায়ান লারা টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। শুরুতেই ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপে আঘাত হানেন পেসার বার্ডশ্। ফিরিয়ে দেন ওপেনার সোলাংকি এবং ইংলিশ অধিনায়ক ভনকে। কিন্তু তখনো অবিচল ছিলেন আরেক ওপেনার মার্কস ট্রেসকোথিক। ইনিংসের ৪৮ তম ওভারে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার আগে ১০৪ রান করেন তিনি।
শেষপর্যন্ত ইংল্যান্ড ২১৭ রানে অল আউট হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয়ের জন্য ২১৮ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয়। কলিংউডের বলে ৮ম ব্যাটসম্যান হিসাবে যখন চন্দরপল আউট হন তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ মাত্র ১৪৭ রান। এমতাবস্থায় ইংল্যান্ডের জয় পাওয়া সময়ের ব্যাপার ছিল। কিন্তু সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ান বার্ডশ্ এবং ব্রাউন। ৯ম উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন ৭১* রান যোগ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম এবং একমাত্র চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জেতান এই দুই ক্রিকেটার। ম্যাচে দুই উইকেট এবং ১০ম ব্যাটসম্যান হিসাবে ব্যাট করতে নেমে ম্যাচজয়ী ৩৪* রানের ইনিংস খেলার কারণে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন ইয়ান বার্ডশ্।
শেন ওয়াটসন (২০০৬)
তৎকালীন তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম চার আসরের একটিতেও ফাইনাল অবধি পৌঁছুতে পারেনি। ২০০৬ সালে প্রথমবারের ফাইনালে ওঠে অজিরা। তাদের প্রতিপক্ষ গত আসরের চ্যাম্পিয়ন এবং প্রথম আসরের রানার্সআপ ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক এবার টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ক্রিস গেইল এবং শিবনারায়ণ চন্দরপল উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে ৫.১ ওভারে যোগ করেন ৪৯ রান। চন্দরপল ১৮ বলে ২৭ এবং গেইল ২৭ বলে ৩৭ রান করে ফিরে গেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আসা-যাওয়ার মিছিলে নেমেছিলেন। মাত্র ১৩৮ রানেই গুটিয়ে যায় ক্যারিবিয়ানরা। জবাবে মাত্র ১৩ রানে দুই উইকেট হারানোর পর ওপেনার শেন ওয়াটসনের অপরাজিত ৫৭* এবং ড্যামিয়েন মার্টিনের অপরাজিত ৪৭* রানের উপর ভর করে ৮ উইকেটের জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। বল হাতে ২ উইকেট এবং ৫৭* রানের কার্যকরী ইনিংস খেলার কারণে প্লেয়ার অব দ্য ফাইনাল নির্বাচিত হন শেন ওয়াটসন।
শেন ওয়াটসন (২০০৯)
গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচের মধ্যে দুই ম্যাচেই শেন ওয়াটসন শূন্য রানে ফিরে গিয়েছিলেন। হঠাৎ করেই সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জ্বলে উঠলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়ানে তিনি খেললেন ১৩২ বলে ১৩৬* রানের ইনিংস। তার এই ইনিংসের সুবাদে অস্ট্রেলিয়া ফাইনালে উঠে। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল নিউজিল্যান্ড।
প্রথম দল হিসেবে দু’বার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামে দুই প্রতিবেশী দেশ। দিনের শুরুতেই বোঝা যাচ্ছিলো নিউজিল্যান্ডের জন্য খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে। বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ফিরে গেলেন কোনো রান না করেই। ক্রিজে ১৪ বল থাকার পরেও ব্রেন্ডনকে ফিরতে হলো খালি হাতে। এরপর ব্রুম, গাপটিল, ফ্রাঙ্কলিনদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রয়াসে স্কোরবোর্ডে ২০০ রান জমা করে কিউইরা। নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ২০১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৬ রানেই পেইন এবং পন্টিংয়ের উইকেট খুইয়ে বসে অস্ট্রেলিয়া। এরপর ক্যামেরন হোয়াইটকে সঙ্গে নিয়ে ১২৮ রানের জুটি গড়েন শেন ওয়াটসন। শেষপর্যন্ত ১০৫* রানে অপরাজিত থেকে অস্ট্রেলিয়ার ৬ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন শেন ওয়াটসন। দায়িত্বশীল ইনিংসের সুবাদে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেন তিনি।
রবীন্দ্র জাদেজা (২০১৩):
ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম শিরোপা জিতে ২০০২ সালে। সেইবার বৃষ্টির কারণে ফাইনাল হতে পারেনি। তাই শ্রীলঙ্কার সাথে শিরোপা ভাগাভাগি করে নেয় ভারত। ঐ আসরেই আইসিসি নক আউট টুর্নামেন্টের নাম পরিবর্তন করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দেওয়া হয়।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ৭ম আসরে ভারত আবারো ফাইনালে ওঠে। এবার তাদের প্রতিপক্ষ ছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ড। বৃষ্টি এবারও ভারতের পিছু ছাড়েনি। শেষপর্যন্ত ২০ ওভারের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারত ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। ১৩ ওভার শেষে ৬৬ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে ধোনি বাহিনী। সেখান থেকে বিরাট কোহলির ৪৩ এবং জাদেজার ২৫ বলে অপরাজিত ৩৫* রানের ইনিংসের সুবাদে সাত উইকেটে ১২৯ রানের লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করায় ভারত। এই রানকেই ইংল্যান্ডের জন্য কঠিন করে তুলে ভারতীয় বোলাররা। আশ্বিন ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ২ উইকেট এবং জাদেজা ২৪ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন। শেষপর্যন্ত ভারত ৫ রানের জয় তুলে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পুনরুদ্ধার করে। ভারতের এই জয়ে ব্যাটে বলে সমান অবদান রাখার কারণে প্লেয়ার অব দ্য ফাইনাল নির্বাচিত হয় রবীন্দ্র জাদেজা।