জুন, ১৯৯৯ সাল। বলকান জুড়ে তখন যুদ্ধের দামামা। বর্তমান সার্বিয়া তখন যুগোস্লাভিয়া ফেডারেশনের অংশ। বর্তমান সময়ের রোহিঙ্গা নিধনের মতোই সার্বিয়ান সৈন্যরা মেতে উঠেছিল আলবেনিয়ান বংশোদ্ভূত মুসলিম নিধনে। কসোভো যুদ্ধে সার্বিয়ার সৈন্যরা যেভাবে আলবেনিয়ান মুসলিম নিধন করছিল তাতে করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক দৃশ্যপট ফুটে উঠছিল। যুক্তরাষ্ট্রে তখন বিল ক্লিনটনের শাসন চলছিল। ক্লিনটন যেকোনো মূল্যে কসোভো যুদ্ধ বন্ধ করা এবং আলবেনিয়ান বংশোদ্ভূত মুসলমানদের রক্ষা করার জন্য তৎপর হয়ে ওঠেন।
১৯৯৯ সালের ১১ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভে ২১৯-১৯১ ভোটে কসোভোতে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য পাঠানোর প্রস্তাব পাশ হয়। এরপর ক্লিনটন প্রশাসন এবং ন্যাটো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে পাশ কাটিয়ে সার্বিয়ার বিপক্ষে যুদ্ধ শুরু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। নিরাপত্তা পরিষদকে পাশ কাটানোর কারণ হলো রাশিয়া ও চীনের ভেটো প্রদানের সম্ভাবনা ছিল। এরপর ন্যাটো জোট তার ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো যুদ্ধে অংশগ্রহণের সকল প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে। এর আগে ন্যাটো বসনিয়া ও হার্জেগোবিনায় অপারেশন পরিচালনা করেছিল।
সার্বিয়া অভিযানে ন্যাটো প্রায় ১০০০ যুদ্ধ বিমান ব্যবহার করেছিল। যেগুলো ইতালি ও জার্মানির বিমান ঘাঁটি থেকে পরিচালনা করা হয়েছিল। পাশাপাশি আড্রিয়াটিক সাগরে ইউএসএস থিওডোর রুজভেল্ট বিমানবাহী রণতরী নোঙর করে রাখা হয়েছিল৷ ন্যাটো একইসাথে সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেড এবং কসোভোর রাজধানী প্রিস্টিনায় সার্বিয়ান সৈন্যদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
সার্বিয়ার রাজধানীতে প্রথম বিমান হামলা চালানো হয় ২৪ মার্চ। এরপর প্রায় ৩৮,০০০ বার হামলার জন্য আকাশে ছুটে গিয়েছিল ন্যাটোর ভয়ঙ্কর সব যুদ্ধবিমান। ইউএস নেভির যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্রুজ মিসাইল দিয়ে বেলগ্রেডে হামলা করা হয়। এরপর জুনের ১২ তারিখে ন্যাটোর সেনারা মেসিডোনিয়া থেকে কসোভো প্রবেশ করে। একই দিনে রাশিয়ার সেনারা প্রিস্টিনাতে পৌঁছায়। তবে মুখোমুখি কোনো লড়াইয়ের জন্য নয়, বরং কসোভোতে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য তারা ন্যাটোর সাথে যোগ দেয়।
ন্যাটোর টানা ১০ সপ্তাহের বিমান হামলার পর সার্বিয়া হার মানে। তারা ন্যাটোর সাথে শান্তি চুক্তি করতে সম্মত হয়। চুক্তি অনুসারে কসোভো থেকে সার্বিয়া তার সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়। তাদের জায়গায় ন্যাটোর শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এই হামলায় ন্যাটোর কোনো সৈন্য মারা যায়নি। তবে কসোভো এবং সার্বিয়ার প্রায় দুই হাজার বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারান। বেলগ্রেডের গুরুত্বপূর্ণ অনেক ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে অনেক ভবন ছিল বেসামরিক লোকজনের।
বেলগ্রেডে ন্যাটোর এই হামলায় আক্রান্ত হয়েছিল বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা টেনিস তারকা নোভাক জোকোভিচদের এলাকা। ১৯৯৯ সালের মার্চে বেলগ্রেডে যখন ন্যাটোর বোমা হামলা শুরু হয়, জোকোভিচের বয়স তখন মাত্র ১২ বছর। জোকোভিচের পরিবার যেখানে থাকতো সেই এলাকার নাম বানজিকা। বেলগ্রেড থেকে ৭ কিলোমিটার দূরের এক গড়পড়তা শহরতলী। বানজিকায় যারা বাস করতেন তাদের প্রায় সবাই শ্রমিক শ্রেণীর। তারা নিকটবর্তী কোনো কলকারখানায় চাকরি করতেন। বানজিকায় স্বল্পমূল্যের ফ্ল্যাট কিনে সেখানে বাস করতেন তারা।
জোকোভিচের দাদা ভ্লাদা বানজিকায় একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। ২০১২ সালে মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি সেখানেই ছিলেন। দাদা ভ্লাদার সাথে জোকোভিচের ছোটবেলা থেকেই অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। কারণ তার বাবা সার্জান ও মা ডিয়ানা কোপাওনিকে নিজেদের পিজ্জার দোকানে কাজ করতেন। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তারা দুজন বিরামহীনভাবে কাজ করতেন, যার ফলে বানজিকায় নিয়মিত আসতে পারতেন না। বেলগ্রেড থেকে কোপাওনিক প্রায় চার ঘণ্টার গাড়ির পথ। ফলে বছরের অধিকাংশ সময় জোকোভিচ ও তার দুই ছোট ভাই মার্কো ও জর্জকে বাবা-মাকে ছাড়াই থাকতো হতো। সে সময় দাদা ভ্লাদা তাদের দেখাশোনা করতেন।
বেলগ্রেডে ন্যাটোর বোমা হামলা শুরু হলে জোকোভিচদের বাড়ির আশেপাশে অনেক পরিবার একসাথে কোনো ভবনের বেসমেন্ট অথবা সিঁড়ির নিচে আশ্রয় নেন। প্রায় প্রতিরাতেই তারা বোমা হামলার শব্দে জেগে থাকতেন। ন্যাটোর বোমা হামলা বেলগ্রেডের অনেকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। অনেকের কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু অল্প বয়সী জোকোভিচ ছিলেন চিন্তা ও ভয়ডরহীন। ন্যাটোর সেই হামলার সময়ও তিনি তার অনুশীলন চালিয়ে যান পুরোদমে। যেখানে অনেকে ভয়ে ঘরের বাইরে বের হতেন না।
জোকোভিচের স্বপ্ন ছিল কোনো একদিন উইম্বলডনের সবুজ কোর্টে শিরোপা জিতবেন। তার সেই স্বপ্ন পূরণের পথে বড় ভূমিকা রাখেন বোগডান অভ্রাডোভিচ। অভ্রাডোভিচ নিজেও টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন। কিন্তু মাত্র ১৮ বছর বয়সেই তিনি কোচিংয়ে নেমে পড়েন। পরবর্তীতে অভ্রাডোভিচ সার্বিয়ার ডেভিস কাপ দলের অধিনায়ক হন।
২০১০ সালে অভ্রাডোভিচ ও জোকোভিচ এবং তার অন্যান্য সতীর্থরা সার্বিয়াকে ডেভিস কাপের শিরোপা এনে দেন। বর্তমানে অভ্রাডোভিচের বয়স ৫২। টেনিস ছেড়ে এখন তিনি পুরোদস্তুর রাজনীতিবিদ। নোভাক জোকোভিচের সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি ২০ বছর আগের দিনগুলোতে ফিরে যান।
নোভাকের বাবা ও আমার কয়েকজন পারস্পরিক বন্ধু ছিল। তারা আমাকে বলে, তুমি ভালো কোচ, তুমি নোভাককে সাহায্য করতে পারো। এরপর আমি তার সাথে মাত্র একটি অনুশীলন ম্যাচ খেলার পরই হতবাক হয়ে যাই। সে পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল। পেশাদার খেলোয়াড়দের মতো এক বোতল পানি, একটি কলা ও একটি তোয়ালে নিয়ে অনুশীলনে নেমে পড়তো। আমি এর আগে তার বয়সী এমন কোনো ছেলেকে দেখিনি।
অভ্রাডোভিচ বুঝতে পেরেছিলেন নোভাক একদিন টেনিসের শীর্ষ পর্যায়ে যাবেন। বেলগ্রেডে বোমা হামলা চলাকালীন সময়ে তারা দুজন একসাথে অনুশীলন করতেন। প্রতিদিন তারা ফ্রি টেনিস কোর্টের সন্ধানে বের হতেন। বেলগ্রেডে জোকোভিচ তখন বেশ পরিচিত। সবাই তাকে সাহায্য করতেন। সেই সময় জোকোভিচ ও অভ্রাডোভিচ অসংখ্য ক্লাবে অনুশীলন করেছিলেন। সেই সময়ের অনুশীলনের কথা উল্লেখ করে অভ্রাডোভিচ বলেন,
বোমা হামলার সময় আমরা ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম। আপনি বোমা হামলার শব্দ শুনতে পাচ্ছেন, পরের দিন সংবাদপত্রে মানুষের মৃত্যুর খবর পাচ্ছেন এবং সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু আপনার কিছুই করার নেই। এ কারণে আমরা কীভাবে মজা করা যায় সেই পথ খুঁজতাম। আমি সবসময় নোভাকের সাথে থাকতাম। একসাথে অনুশীলন করতাম। আমাদের প্রতিটা দিনই ছিল স্বাভাবিক। তার লক্ষ্য ছিল সুনির্দিষ্ট। বোমা হামলার দিনগুলোতেও সে প্রচুর মজা করতো। প্রচুর হাসাহাসি করতো।
জোকোভিচ একসময় সার্বিয়ার পার্টিজান টেনিস ক্লাবে অনুশীলন করতেন। এই ক্লাবটি সার্বিয়ার জাতীয় ফুটবল লিগের ২৭ বারের চ্যাম্পিয়ন। সেই সাথে বাস্কেটবল, ভলিবল ও ওয়াটার পোলোতে তাদের সাফল্য রয়েছে। তবে ক্লাবের সভাপতি দুসান গ্রুজিচ টেনিস নিয়ে সবচেয়ে বেশি গর্ববোধ করেন। গ্রুজিচ ২২ বছর ধরে ক্লাবের সভাপতি পদে রয়েছেন। তার ভাষ্যমতে পার্টিজান ক্লাব জোকোভিচের হৃদয়ের এক বিশেষ স্থানে আজীবন জায়গা পাবে। তিনি বলেন,
যখন আপনি জোকোভিচের মতো এখানে ১১ বছর কাটাবেন, আমি জানি না তখন আপনি এই ক্লাবকে ভুলতে পারবেন কি না। নোভাকের টেনিসের যাত্রা শুরু হয়েছিল কোপাওনিকে। কিন্তু সেটা ছিল অল্প সময়ের জন্য। ছয় বছর বয়সে সে এখানে এসেছিল। আমরা তার চাহিদার সর্বোচ্চটুকু পূরণ করার চেষ্টা করতাম।
পার্টিজান ক্লাবে এখনো দেখাশোনার কাজ করেন ৭৫ বছর বয়সী দ্রাগান গাভরিলোভিচ। জোকোভিচকে তিনি খুব কাছে থেকে দেখেছেন। সার্বিয়ান মহাতারকা সম্পর্কে গাভরিলোভিচ বলেন,
যখন সে খুব ছোট, ১২-১৫ বছর বয়স হবে। তখন প্রায়ই এখানে খেলতে আসতো। তখন শহরের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজন তার খেলা দেখার জন্য ভিড় জমাতো। তারা জানতো, আমরাও জানতাম সে বড় কিছু অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সবাই তাকে সেই অবস্থানে দেখতে চেয়েছিল।
জোকোভিচ তাদের সেই প্রত্যাশা অনেক আগেই পূরণ করেছেন। দৃপ্ত পায়ে একের পর এক ইতিহাস রচনা করে যাচ্ছেন। তবে এই ইতিহাস রচনার পেছনে বেলগ্রেডে ন্যাটোর বোমা হামলা তাকে বড় সহায়তা করেছে এবং করে যাচ্ছে। যুদ্ধের সেই দিনগুলোতে তার ও অভ্রাডোভিচের অনুশীলন ম্যাচগুলো তাকে মানসিকভাবে এখনো শক্তি জোগান দেয়। তিনি সহজে হাল ছাড়েন না। সহজেই ভেঙে পড়েন না। জোকেভিচের বিপক্ষে খেলা প্রত্যেক টেনিস খেলোয়াড়ই জানেন তিনি কতটা দৃঢ় মানসিকতার অধিকারী, যার প্রমাণ সর্বশেষ উইম্বলডন ফাইনাল।
ফেদেরারের সাথে ৪ ঘণ্টা ৫৭ মিনিটের দীর্ঘ এক লড়াই করে ১৬ তম গ্র্যান্ডস্লাম জয় করেন তিনি। এই ম্যাচের পাঁচ সেটের তিনটি সেটের ফলাফল নির্ধারিত হয় টাইব্রেকারে। এমন লড়াকু জয়ের পাশাপাশি জোকোভিচের বীরত্বপূর্ণ হারও রয়েছে। এর উদাহরণ হিসেবে ২০১২ সালে ইউএস ওপেনের ফাইনালের কথা বলা যায়।
বেলগ্রেড বোম্বিং জোকোভিচের মধ্যে প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকা এবং শেষ পর্যন্ত লড়াই চালানোর মানসিকতা গড়ে দিলেও ব্যক্তি হিসেবে তিনি অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি প্রাণোচ্ছ্বল। হাস্যরসের ক্ষেত্রে তিনি সবার চেয়ে এগিয়ে। এ কারণেই তো তার আরেক নাম ‘জোকার’।
জোকোভিচ তার পেশাদার টেনিস ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০০৩ সালে। ক্যারিয়ারে প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম জয় করেন ২০০৮ সালে। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ছিল তার ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম৷ এরপর তিনি গুনে গুনে আরো ১৫টি গ্র্যান্ডস্লাম জিতেছেন। তার মোট ১৬টি গ্র্যান্ডস্লামের মধ্যে ৭টি এসেছে অস্ট্রেলিয়া থেকে। এর মধ্যে ২০১১ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি তিনবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে হ্যাটট্রিক করেন। সাফল্যের দিক থেকে এরপরই রয়েছে উইম্বলডন। উইম্বলডনের ঘাসের কোর্টে শিরোপার ছোঁয়া পেয়েছেন ৫ বার। ৩ বার জয় করেছেন মার্কিন মুলুকের ইউএস ওপেন। তবে ফ্রেঞ্চ ওপেনের ক্লে কোর্টে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি তিনি। ক্যারিয়ারে মাত্র একবার ফ্রেঞ্চ ওপেনের শিরোপা জিতেছেন তিনি।
জোকোভিচের সিঙ্গেলস রেকর্ড অনুসারে সার্বিয়ান তারকা তার ক্যারিয়ারে ৮৭৭টি জয়ের বিপরীতে হেরেছেন ১৮৪টি ম্যাচে। সিঙ্গেলস শিরোপা জিতেছেন ৭৫টি। এর মধ্যে মাস্টার্স ৩৩টি, গ্র্যান্ডস্লাম ১৬টি। এছাড়াও তার ঝুলিতে রয়েছে ডাবলস, ডেভিস কাপ ও অলিম্পিক মেডেলের মতো পুরস্কার। বেলগ্রেডের পার্টিজান ক্লাব থেকে উঠে আসা জোকোভিচ এখন টেনিস বিশ্ব শাসন করছেন। টেনিসের এক নম্বর তারকা ন্যাটোর বোমা হামলাকে বুড়ো আঙুল দেখানো সেই জোকোভিচ।
জোকোভিচ বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। কিন্তু মনের দিক থেকে তিনি এখনো খুবই সহজ সরল এবং নিরহংকারী এক মানুষ। পেশাগত সুবিধার জন্য মোনাকোতে থাকলেও নিয়মিত সার্বিয়ায় যাতায়াত রয়েছে তার। সার্বিয়াতে গেলে এখনো তিনি তার শৈশবের বানজিকা শহর থেকে ঘুরে আসেন। বানজিকার যে বাসায় জোকোভিচের পরিবার থাকতো সেটা এখন পরিত্যক্তভাবে পড়ে আছে। তার এক চাচা সেই ফ্ল্যাটের মালিক হলেও তিনি থাকেন সুইজারল্যান্ডে।
বানজিকার সেই পুরনো ফ্ল্যাটের আশেপাশে অনেক ভবনের দেয়ালে জোকোভিচের ম্যুরাল আঁকা রয়েছে৷ জোকোভিচের একসময়ের প্রতিবেশীরা তাকে নিয়ে গর্ব করেন। তাকে নিয়ে তার প্রতিবেশীদের উচ্ছ্বাসের বড় কারণ জোকোভিচের বিনয়ী ব্যবহার। জোকোভিচের এক পুরনো প্রতিবেশী নারী তার সম্পর্কে বলেন,
জোকোভিচ বিখ্যাত হয়েছেন ঠিক। কিন্তু তিনি এখনো সময় পেলে এখানে আসেন। হোক সেটা পাঁচ মিনিটের জন্য অথবা এক দিনের জন্য।
সার্বিয়ায় পরিবারের একতাকে খুবই গুরুত্ব দেওয়া হয়। সার্বিয়ানরা পরিবারের সকল সদস্য একসাথে থাকতে পছন্দ করেন। একইভাবে তারা ব্যক্তিগত কোনো খেলার চেয়ে দলগত খেলাকে পছন্দ করেন। এই কারণে ফুটবল, ভলিবল, বাস্কেটবল কিংবা ওয়াটাল বল সার্বিয়াতে খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু সার্বিয়ার মানুষের কাছে এখন সবচেয়ে বড় তারকা জোকোভিচ। সার্বিয়াতে তার মতো আরো অনেক বড় বড় তারকা রয়েছেন। যেমন- বাস্কেটবল তারকা ভ্লাদ ডিভাচ। বেলগ্রেডে বোমা হামলার সময় যুক্তরাষ্ট্রের এনএফএলে বাস্কেটবল খেলতেন। সার্বিয়াতে তারও বিপুল জনপ্রিয়তা রয়েছে৷ কিন্তু জোকোভিচ সবার উপরে। কারণ জোকোভিচের মতো অনুপ্রেরণা দেওয়ার ক্ষমতা আর কোনো সার্বিয়ান অ্যাথলেটের নেই। খেলার দিক থেকে সার্বিয়ায় ফুটবল ও বাস্কেটবলের পরে টেনিসের অবস্থান। কিন্তু খেলোয়াড় হিসেবে নোভাক জোকোভিচ আছেন সকল সার্বিয়ান নাগরিকের হৃদয়ে সর্বোচ্চ ভালোবাসার স্থানে।
পড়ে নিন নোভাক জোকোভিচ রচিত এই বইটি-
১) Serve to Win: The 14-Day Gluten-Free Plan for Physical and Mental Excellence