অধ্যবসায়ের রচনা লিখতে গিয়ে রবার্ট ব্রুসের উদাহরণ লেখেননি, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। রবার্ট ব্রুসকে জীবনে আদর্শ মেনে নিয়েছেন কি না, জানা নেই। তবে তারই মতো উদাহরণ স্থাপন করলেন জোসে ফন্ত। সার্জিও রামোসের ভাষ্যমতে, ফুটবলে নাকি কেবল ভালো কিংবা খারাপ খেলোয়াড় আছেন, তরুণ কিংবা বয়স্ক নয়। সেই কথার যদি কোনো বাস্তব প্রতিচ্ছবি দরকার পড়ে, তার একটা বেশ উৎকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারেন ৩৭ বছর বয়সী ফন্ত।
দৌরো রেললাইনের শহর পেনাফিলে জন্মগ্রহণ করেন ২২ ডিসেম্বর, ১৯৮৩ সালে। মাত্র সাড়ে বাইশ কিলোমিটারের শহরটির জনসংখ্যা পনেরো হাজারের একটু বেশি। এই শহরেরই বাসিন্দা আর্থুর ফন্ত এবং ডায়ানা রোচার সংসারের মুখ আলো করে আসেন হোসে মিগুয়েল ডা রোচা ফন্ত। বাবা আর্থুর নিজেও ছিলেন ফুটবলার, প্রফেশনাল ক্যারিয়ারে ১২ মৌসুম কাটানোর পরে বুটজোড়া তুলে রাখলেও ছেলের ফুটবলার হওয়ার পিছনে রাখেন মূল অবদান। ফন্ত এক সাক্ষাৎকারে বলেন,
“আমি আমার বাবার কাছ থেকে ফুটবল শিখেছি, এটি আমাদের পরিবারের মাঝে রয়েছে; আমার ছোট ভাইও ফুটবলার।”
নিজের শহরেরই ক্লাব পেনাফিলের হয়ে জুনিয়র ক্যারিয়ারের সূচনা করেন ফন্ত। ১০ বছর বয়সে ট্রায়াল দিতে যান পর্তুগিজ ক্লাব স্পোর্টিং সিপিতে, সেখানে সুযোগও মিলে যায় ফন্তের; ট্রেনিংয়ের সূচনাও সেখানে। ১৩ বছর বয়স অবধি কাটান স্পোর্টিং সিপিতে। সেখানে থাকাকালীন লোন পাঠানো হয় সাকাভেনেন্সে। সেখান থেকে ফিরে এসে যোগ দেন স্পোর্টিং সিপির ‘বি’ টিমে। ২০০৪ পর্যন্ত সেখানে থাকার পর যোগ দেন সালগুয়েরোজে; কিন্তু ক্লাবটির অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে তার চুক্তি বাতিল করে, সেখান থেকে ফন্ত চলে যান এফ.সি ফেলগুয়েইরাসে।
২০০৫ সালের সামারে প্রিমেরা লিগায় ভিটোরিয়ার হয়ে অভিষেক হয় ফন্তের। সিনিয়র ক্যারিয়ারের সূচনাও সেখানে। ভিটোরিয়ার হয়ে সে মৌসুমে অসাধারণ পারফরম্যান্স করেন ফন্ত, তার পুরস্কারও পেয়ে যান শীঘ্রই; ডাক পান পর্তুগালের অন্যতম সফল ক্লাব বেনফিকা থেকে। বেনফিকা তাকে কিনেই লোনে পাঠিয়ে দেয় এফ.সি পাকোসে, সেখানে ২৬টি ম্যাচ খেলেন এবং একটি গোল করেন। দুর্ভাগ্যবশত, নিজের জালেও দুইবার বল জড়িয়ে ফেলেন। পাকোসে লোনের মেয়াদ শেষ হলে আবার তাকে লোনে পাঠানো হয় আমাদোরাতে। আমাদোরায় লোন সিজন কাটিয়ে ২০০৭-০৮ সালে আবারও লোনে যোগ দেন ক্রিস্টাল প্যালেসে।
ঈগলসদের মাঠে নামার আগে দুর্ভাগ্যের খাতায় নতুন করে নাম লেখায় ইনজুরি সমস্যা। ইনজুরি-দুর্ভাগ্যকে পিছনে ফেলে ২০০৭-০৮ সিজনের শেষে পাকাপাকিভাবে যোগ দেন ক্রিস্টাল প্যালেসে, সে বছর প্রিমিয়ার লিগে পঞ্চম হয়ে শেষ করে দলটি। ২০১০ পর্যন্ত ঈগলসদের হয়ে লড়ে গিয়েছিলেন ফন্ত।
২০১০ সালের জানুয়ারিতে যোগ দেন আরেক ইংলিশ ক্লাব সাউদাম্পটনে, ১.২ মিলিয়ন ট্রান্সফার ফি দিয়ে তাকে দলে টেনে নেয় ক্লাবটি। সাউদাম্পটনে যখন যোগ দেন, দলটি তখন চ্যাম্পিয়নশিপেও জায়গা করে নিতে পারছে না। লিগ ওয়ানে নেমে যাওয়ার সাথে যোগ হলো অর্থনৈতিক দুরবস্থাও। তবুও তিনি আশা হারাননি দলটির প্রতি, তাদের হয়ে নিজের শতভাগ দিয়ে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েই দলটির হাল ধরেন। সাউদাম্পটনে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক সমালোচনা শুনলেও তা কখনোই কানে নেননি, বলেছিলেন নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজে খুশিই আছেন। এক সাক্ষাৎকারে বলেন,
“আমি এখানে এসেছি একটি লক্ষ্য নিয়ে, ক্লাবকে প্রিমিয়ার লিগে নিয়ে যাওয়াই আমার লক্ষ্য!”
দলে যোগ দেয়ার সপ্তাহখানেক পরেই মিলওয়ালের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সেইন্টসদের হয়ে মাঠে নামেন। আগস্টে দেখা মেলে সেইন্টদের হয়ে নিজের প্রথম গোলের, বিস্ট্রল রিভারের বিপক্ষে সেই ম্যাচে তার দলও জিতে নেয় ৪-০ গোলে। সেই বছর তার সাত গোলের নৈপুণ্যে দল প্রমোশন পায় সেকেন্ড ডিভিশনে, দলগতভাবে সেরা ডিফেন্সিভ রেকর্ডও গড়ে সাউদাম্পটন। আর এই কীর্তির পিছনে ফন্তের অবদান কতটুকু, তা তার পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যায়।
দলের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন ৪৮টি ম্যাচে, দলকে লিগ ওয়ান থেকে চ্যাম্পিয়নশিপে নিয়ে যাওয়ার পিছনে রাখেন মুখ্য ভূমিকা। তারই স্বীকৃতিস্বরূপ ব্যক্তিগতভাবে জায়গা করে নেন টিম অফ দ্য ইয়ারে, ফ্যানদের ভোটে নির্বাচিত হোন সাউদাম্পটন প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার, তাও আবার ৬৪ শতাংশ ভোট নিয়ে। পারফরম্যান্সের পুরস্কারও পেয়ে যান হাতেনাগাদে, দল চুক্তি বাড়ায় ২০১৫ পর্যন্ত।
২০১০ সালে যখন সেইন্টদের হয়ে চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে লিগ ওয়ানে নেমে যান, তখন ফন্ত বলেছিলেন, তিনি প্যালেসের আগে সেইন্টদের হয়ে প্রিমিয়ার লিগ খেলার স্বপ্ন দেখেন। ২০১২ সালে যখন সেইন্টরা প্রিমিয়ার লিগে ফিরে আসে, তখন হয়তো আকাশের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসেছিলেন ফন্ত, তার দেয়া প্রতিশ্রুতি তিনি রাখতে পেরেছিলেন। ২০১৫ এর সাক্ষাৎকারে আবারও সেই কথা মনে করিয়ে দেন,
“আমি বলেছিলাম আমার প্রথম ইন্টারভিউতে, আমি সেইন্টদের হয়ে প্যালেসের আগে প্রিমিয়ার লিগ খেলব।”
২০১২ এর আগস্টে প্রিমিয়ার লিগের জমজমাট মঞ্চে অভিষেক হয় ফন্তের; ম্যানচেস্টার সিটির সাথে অভিষেক ম্যাচে তার দল হেরে যায় ২-৩ গোলের ব্যবধানে। দলের প্রয়োজনে নিজের সবটুকু নিংড়ে দেন তিনি। শেষ বাঁশি না বাজা পর্যন্ত তার যে লড়ে যাওয়ার মানসিকতা, সেটাই তাকে টিকিয়ে রেখেছিলো ফুটবলে; তারই প্রমাণ আবারও দেন ফুলহামের সাথে ম্যাচে। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ফন্ত, সেই গোলেই ম্যাচ ২-২ সমতায় শেষ হয়।
ততদিনে ফ্যানদের প্রিয় পাত্রে পরিণত হয়েছেন ফন্ত, ম্যানেজমেন্টও বেজায় খুশি তার উপর। নতুন করে চুক্তি বাড়ান সেইন্টসদের সাথে। সাউদাম্পটনের সাথে যেন আত্মার বন্ধন ছিল ফন্তের, নিজের সেরা মৌসুমও কাটান সেইন্টসদের হয়ে। পচেত্তিনোর অধীনে একাডেমি খেলোয়াড়দের সাথে নিয়ে একটি তারুণ্যনির্ভর দলকে নিয়ে প্রিমিয়ার লিগে অষ্টম হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। ২০১৪ সালের আগস্টে দলটির ক্যাপ্টেন ক্যালভিন ডেভিস থেকে ক্যাপ্টেনের আর্মব্যান্ডটিও পেয়ে যান ফন্ত। সেই সময় দলটি ট্রানজিশন পিরিয়ড পার করছিল, পচেত্তিনোসহ অ্যাডাম লালানা, রিকি ল্যাম্বার্ট, লুক শ, লভরেনরা যখন একের পর এক দল ছাড়ছিলেন, তখনও দলের পাশেই থেকে যান ফন্ত।
দলের বিপদে পাশে ছিলেন সবসময়ই। কোচ রোনাল্ড ক্যোমানের অধীনে সেইন্টদের হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্সও করেন ফন্ত; সেই মৌসুমে উড়তে থাকা সাউদাম্পটনের হয়ে অসাধারণ সাফল্যের নেতৃত্ব দেয়া ফন্তর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন কোচ রোনাল্ড ক্যোমান; তার ভাষ্যমতে, ফন্ত ছিলেন শান্ত এবং মানসিকভাবে ভীষণ শক্তিশালী।
অসাধারণ পারফরম্যান্স করার পরও ডাক পেলেন না পাওলো বেন্তোর ২০১৪ বিশ্বকাপ দলে। বয়স ততদিনে ৩১-এর কাছাকাছি, ভেবেছিলেন আর কখনো ডাক পাবেন না জাতীয় দল থেকে। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ানো হবে না, এই ভেবে হতাশও হয়ে পড়েছিলেন একসময়। তবুও লড়াই করে যেতে থাকেন ফন্ত। ব্রাজিল বিশ্বকাপ দেখলেন ঘরে বসেই, দলও বাদ পড়ল গ্রুপপর্ব থেকেই।
ব্রাজিল বিশ্বকাপে দলের ভরাডুবি পারফরম্যান্সের পরে কপাল খুলে যায় ফন্তের। সেইন্টদের হয়ে উড়তে থাকা ফন্ত তার একত্রিশতম জন্মদিনের কিছুদিন আগে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলার ডাক পান ফন্ত। ততদিনেও জানতেন না, এই ম্যাচটিই তার কপাল খুলে দেবে। ফার্নান্দো সান্তোস পর্তুগালের দায়িত্ব নেয়ার পরে সেডরিক, আন্দ্রে সিলভার পাশাপাশি দলের নতুন নিয়মিত মুখ হন ফন্ত। দলে সুযোগ পাওয়ার পর বলেন,
“আমি এই দিনটির জন্যই কঠোর পরিশ্রম করে এসেছি। এখন আমার সামনে সুযোগ এসেছে আমার সামর্থ্য প্রমাণ করার; আমি আমার জায়গা ধরে রাখার জন্য সবটুকু দিয়ে লড়াই করে যাব।”
স্তাদে ডি ফ্রান্সে সেদিন মাঠে না নামলেও তার অভিষেক হয় এর কিছুদিন পর লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার বিপক্ষে; ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে সেদিন দলকে ক্লিনশিট রাখতে দারুণ ভূমিকা পালন করেন ফন্ত। তারই সাথে জানান দিয়েছিলেন তার আগমনী বার্তা। দুর্ভাগ্য সঙ্গী সেখানেও; কোচ সান্তোস সেখানে পেপের সাথে রিকার্ডো কার্ভালহোকে খেলান। গ্রুপপর্বের ম্যাচগুলোতে দলের একের পর এক ড্র দেখেন বেঞ্চে বসে।
রাউন্ড অফ সিক্সটিনে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সান্তোস মাঠে নামান ফন্তকে; আগের ম্যাচ এই হাঙ্গেরির বিপক্ষে তিন গোল খেয়ে বসা দলের ডিফেন্সে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসেন ফন্ত। অতিরিক্ত সময়ে রিকার্ডো কোয়ারেসমার গোলে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে কোয়ার্টারে পৌছে যায় পর্তুগাল। পোল্যান্ডের বিপক্ষে টাইব্রেকারে জিতে সেমিফাইনালে গেলে ওয়েলসের বিরুদ্ধে মাঠে নামে ফার্নান্দো সান্তোসের দল। সেমিফাইনালে মাত্র তিনটি শট অন টার্গেটে রাখতে পেরেছিল ওয়েলস; গ্যারেথ বেলের ওয়েলসের বিরুদ্ধে ক্রিস্টিয়ানো এবং নানির করা গোলে ২০০৪ এর পর আবারও ইউরোর ফাইনালে পৌছে যায় পর্তুগাল।
ফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ফন্ত-পেপে জুটির পারফরম্যান্স নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে তুমুল কোনো আলোচনা না হলেও তার করা পারফরম্যান্স পর্তুগালের ইতিহাসের প্রথমবারের মতো কোনো ট্রফি জিততে যে দারুণ সাহায্য করে, তা নিয়ে নিন্দুকেরও বিশেষ সন্দেহ থাকার কথা নয়। সেবার ইউরোর নকআউট পর্বে সবচেয়ে কম গোল হজম করেছিল পর্তুগিজরা, এর পিছনে সবচেয়ে বেশি অবদান দুই সেন্টারহাফ জুটির। দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা ফন্ত বলেন,
“এতদূর পর্যন্ত আসার পিছনে রয়েছে অনেক ত্যাগ এবং পরিশ্রমের গল্প, যা নিয়ে আমি গর্বিত।”
স্তাদে দে ফ্রান্স সেদিন রাতে এডারের গোলের পর ক্যামেরার আলো সবটুকুই ছিল এডারের উপর; খবরের কাগজে শিরোনাম হয়েছিলেন পর্তুগিজ কিংবদন্তি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও। পাদপ্রদীপের আলোয় হারিয়ে যাওয়া জোসে ফন্তের দারুণ অবদান নিয়ে খুব একটা আলোচনা না হলেও তা নিয়ে কখনোই মাথাব্যথা ছিল না তার। তার কাজটাই যে নন-গ্ল্যামারাস!
সেইন্টসদের অসাধারণ পারফরম্যান্স করার পর এবার যোগ দেন আরেক ইংলিশ ক্লাব ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেডে। দল পাল্টালেও সঙ্গে করে নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে যেতে পারেননি ফন্ত। দুই সিজনে হ্যামার্সদের হয়ে মাত্র ২৪ ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন, এবং পারফরম্যান্সের গ্রাফও হয়ে গিয়েছিল নিম্নমুখী। বারবার ইনজুরি বাধা হয়ে পড়ছিল তার সামনে। বাধ্য হয়েই হ্যামার্সরা বিক্রি করে দেয় চাইনিজ ক্লাব দালিয়ানের কাছে।
ক্রিস্টাল প্যালেস, সাউদাম্পটন, ওয়েস্টহ্যাম থেকে দালিয়ান ঘুরে এসে এই পর্তুগিজ এবার ক্যারিয়ারের পুনরোত্থান ঘটালেন লিলের হয়ে। ২০১৮ সালে দলে যখন এসেছেন, এর আগে দল রেলিগেশন এড়ানোর জন্যে লড়াই করছিল। সে মৌসুমে মার্সেলো বিয়েলসার থেকে দায়িত্ব নেন ক্রিস্তোভ গালতিয়ে। রেলিগেশন জোন এড়ানোর পরের মৌসুমে দলে যোগ দেন ফন্ত।
এসেই দলের হাল ধরলেন, লিলকে নিয়ে হলেন দ্বিতীয়। লিলকে নিয়ে দ্বিতীয় হওয়ার পথে মাঠে নেমেছেন ৩৬টি ম্যাচে; ৩,২৪০ মিনিটের মধ্যে মাঠে ছিলেন ৩,১১২ মিনিটই। বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ২০১৯-২০ সালেও করেছেন অসাধারণ পারফরম্যান্স, মাঠে নেমেছিলেন ২৫ ম্যাচে। ২০২০-২১ সিজনের লিলের হয়ে লিগ ওয়ানের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে মাঠে নেমেছেন ৩৬টি ম্যাচেই; ৯৫ শতাংশ ম্যাচে ছিলেন শুরুর একাদশে, শতকরা ৯৩ ভাগ মিনিট খেলেছেন দলের হয়ে। ৩৭ বছর বয়সে এসেও যে ফুরিয়ে যাননি, তার হয়ে তার পরিসংখ্যানই কথা বলবে।
দশ বছর পর লিগ ওয়ানের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে দলকে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন। কোচ গালতিয়ের দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে নিজেকে তৈরি করেছেন। এই মৌসুমে ইউরোপের শীর্ষ ৫ লীগের হয়ে সবচেয়ে কম গোল হজম করেছে লিল, তার পিছনে রেখেছেন অসামান্য অবদান। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে, লিলের এই টিম গড় বয়সের দিক দিয়ে ইউরোপের চতুর্থ সর্বকনিষ্ঠ।দলে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড় ছিলেন মাত্র তিন-চারজন। সিএনএনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ফন্ত বলেন,
“দলে তিন-চারজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আমাদের দলে বাড়তি সুবিধা এনে দিয়েছে, দলের মাঝের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যও দলের খেলোয়াড়দের ঐক্যবদ্ধ হতে সাহায্য করেছে।”
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে দলের হয়ে ৪৩ ম্যাচের মধ্যে ৪২ ম্যাচেই মাঠে নেমেছিলেন ফন্ত। ফন্তকে এই দলে নিয়ে আসার পিছনে অন্যতম কারণ ছিল তারুণ্যনির্ভর এই দলকে গাইড করা; সেটা তিনি যে সঠিকভাবেই করেছেন, তা তো বলাই বাহুল্য!