Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বিশ্বকাপ উঠবে কার হাতে? | শেষ পর্ব

ভারতের মাটিতে ৫ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্ব ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। পঞ্চাশ ওভারের এই বিশ্বকাপে শিরোপার জন্য লড়বে দশটি দল। শেষ পর্যন্ত শিরোপাটা উঠবে কোন দলের হাতে? দশ দলের ধারাবাহিক পর্যালোচনার শেষ পর্বে আজ থাকছে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ দলের প্রিভিউ।

ভাস্বর ভারত

এক যুগ পর ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ, ভারতের বিশ্বজয়ের ক্ষুধাটাও ঐ ঠিক বারো বছরেরই। সদ্য এশিয়া কাপজয়ী দুর্দান্ত ভারতের সামনে এবার বারো বছরের আক্ষেপ মেটানোর সুযোগ। এমনিতেই বিশ্বকাপের গত তিন আসরে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছে স্বাগতিকরাই, তার ওপর ভারতের বর্তমান ফর্ম, সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের ট্রফিটা ভারতীয় দলের হাতেই দেখছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা।

Image Source: Associated Press

স্কোয়াড

রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), হার্দিক পান্ডিয়া, শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুল, রবীন্দ্র জাদেজা, শার্দূল ঠাকুর, জসপ্রীত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ, কুলদীপ যাদব, মোহাম্মদ শামি, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ইশান কিষাণ, সুর্যকুমার যাদব।

শক্তিমত্তা

রোহিত ‘হিটম্যান’ শর্মা, শুবমান ‘প্রিন্স’ গিল আর বিরাট ‘কিং’ কোহলি রয়েছেন যে লাইনআপে, তাদের ব্যাটিং নিয়ে খুব একটা চিন্তার কিছু না থাকারই কথা। গিল তো নিজের সেরা ফর্মে রয়েছেন এই মুহূর্তে, এশিয়া কাপে হয়েছেন সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। চলতি বছরে সর্বোচ্চ রান করেছেন সব ফরম্যাট মিলিয়ে, আইপিএলেও করেছিলেন তিনটা সেঞ্চুরি। কোহলিও সেঞ্চুরি পাচ্ছেন নিয়মিত, নিজের সেঞ্চুরি-খরা কাটিয়ে গত এক বছরে সব মিলিয়ে তুলেছেন সাতটি সেঞ্চুরি। রোহিতের পারফরম্যান্স আর ফিটনেস নিয়ে একটু প্রশ্ন থাকতে পারে, তবে বড় মঞ্চে রোহিত বরাবরই অতুলনীয়।

Image Source: Getty Images

দুর্বলতা

লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাটিং। হার্দিক পান্ডিয়া আর রবীন্দ্র জাদেজা খুব ভালো ফর্মে নেই। মোহাম্মদ শামি নাকি শার্দূল ঠাকুর, এই প্রশের উত্তরে শার্দূল একটু এগিয়ে থাকেন তার ব্যাটিংয়ের কারণে। তবে সেই ব্যাটিংটা তিনি আদৌ কতটুকু ভালো করবেন, প্রশ্ন থাকে সেটা নিয়েও। আর নম্বর এইট ব্যাটসম্যানের মূল কাজ যেটা, সেই বোলিংয়েও আবার শার্দূল একটু পিছিয়েই থাকবেন হয়তো। বিশেষ করে শামি-বুমরাহ-সিরাজকে নিয়ে গড়া পেস আক্রমণ যেই দলের, সেখানে শার্দূলকে খেলাতে হলে এই তিনজনের একজনকে বসাতে হবে। আবার এই তিনজনকেই খেলালে টেইল এতই লম্বা হয় যে ভারতের হোম অ্যাডভান্টেজও সেই অর্থে সাহস যোগাতে পারে না। সব মিলিয়ে লোয়ার অর্ডারটাই ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের একমাত্র চিন্তার কারণ।

সম্ভাবনা

Image Source: Getty Images

অক্ষর প্যাটেলের চোটের কারণে কুলদীপ যাদব আর রবীন্দ্র জাদেজার সাথে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে ঘিরেই ভারত সাজাবে তাদের স্পিন আক্রমণের পরিকল্পনা। বাঁহাতি চায়নাম্যান বোলার কুলদীপ যাদব ছিলেন গত এশিয়া কাপের সেরা খেলোয়াড়, প্রয়োজনের সময়ে উইকেট এনে দিয়ে বারবার ভারতকে ম্যাচের চালকের আসনে বসিয়েছেন তিনি। সাথে জাদেজার ইকোনমিক্যাল বোলিং, প্রয়োজনে অশ্বিনের বৈচিত্র্যময় বোলিংটা ভারতের স্পিন আক্রমণকে যথেষ্ট শক্তিশালী করেছে, যদিও এ নিয়ে খুব বেশি কথা হয় না।

শঙ্কা

নিজের দেশে বিশ্বকাপ, তার ওপর নয় ম্যাচের প্রথম পর্ব বলে নিতান্ত বিরাট কোনো অঘটন না ঘটলে সেমিফাইনালের আগে ভারতের বাদ পড়ার কথা না। তবে গত কয়েকটা আইসিসি টুর্নামেন্টে যেমনটা দেখা গেছে, নকআউট পর্বের ম্যাচে চাপের মুখে ভেঙে পড়ে ভারত দল। ব্যাটিং-বোলিং কোনো কিছুই যেন ঠিকঠাক চলে না, অথবা কোনো এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে হাতছাড়া হয়ে যায় ম্যাচ। এই শঙ্কাটাকে তাই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

বাড়তি নজরে রাখবেন যাকে

Image Source: BCCI

শুবমান গিল। ভারতীয় ক্রিকেটের বর্তমান রাজপুত্র তিনি, ভবিষ্যতের রাজমুকুটটা তার মাথাতেই দেখছেন সবাই। সব ফরম্যাট মিলিয়ে চলতি বছরে তার রান বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ, এশিয়া কাপেও ছুটিয়েছেন রানের বন্যা। ২০২৩ সালে ২০টা ওয়ানডে ইনিংসে ৭২.৩৫ গড় আর ১০৫ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ১২৩০, যার মধ্যে রয়েছে ৫টা ফিফটি আর ৫টা একশ। ৫টা শতকের মধ্যে একটি আবার দ্বিশতক। সব মিলিয়ে, শুধু ভারতীয় দল নয়, গিল সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকই হয়ে যেতে পারেন এবারের বিশ্বকাপের।

স্বপ্নবাজ শ্রীলঙ্কা

বাছাইপর্ব উতরে বিশ্বকাপে খেলছে বলে যে শ্রীলঙ্কাকে অবহেলা করা যাবে, এই ভুল ধারণা ভেঙে দিতেই যেন বাংলাদেশ-পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মতো দলকে পেছনে ফেলে এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা। দাসুন শানাকার নেতৃত্বে তরুণ দলটা এখন স্বপ্ন দেখছে বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার, আর সেজন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে ১৯৯৬ সাল তো সামনে রয়েছেই!

Image Source: Associated Press

স্কোয়াড

দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), কুশল মেন্ডিস, কুশল পেরেরা, পাথুম নিশাঙ্কা, দিমুথ করুণারত্নে, সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিথ আসালঙ্কা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, দুশান হেমন্ত, মাহিশ থিকসানা, দুনিথ ভেল্লালাগে, কাসুন রাজিথা, মাথিশা পাথিরানা, লাহিরু কুমারা, দিলশান মাদুশাঙ্কা।

শক্তিমত্তা

বৈচিত্র্যময় বোলিং আক্রমণ। স্পিন আক্রমণে রহস্যময় স্পিনার মাহিশ থিকসানার সাথে দুনিথ ভেল্লালাগে রয়েছেন, হাত ঘোরাতে পারবেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা আর চারিথ আসালঙ্কাও। চলতি বছরে ১৫ ইনিংস বল করে ৩১ উইকেট তুলে নিয়েছেন অফ স্পিনার থিকসানা, বাঁহাতি স্পিনার ভেল্লালাগে ৮ ইনিংসে পেয়েছেন ১০ উইকেট, যার মধ্যে রয়েছে ভারতের বিপক্ষে ফাইফারও। এই দু’জনের ওপরেই থাকবে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার অভাব পূরণের দায়িত্ব। আর পেসারদের মধ্যে দায়িত্বটা ভাগ করে নেবেন রাজিথা-পাথিরানা-মাদুশঙ্কা-কুমারা। বাছাইপর্বের সবগুলো ম্যাচ, এরপর এশিয়া কাপের ৬ ম্যাচের মধ্যে ৪ ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে অলআউট করেছে শ্রীলঙ্কা, তাদের বোলিং আক্রমণকে তাই হেলাফেলার সুযোগ নেই।

দুর্বলতা

টপ অর্ডার ব্যাটিং। ২০২৩ সালটা পাথুম নিশাঙ্কার চমৎকার কাটছে, শ্রীলঙ্কার পক্ষে সর্বোচ্চ ওয়ানডে রান সংগ্রাহকও তিনি, তবে এশিয়া কাপটা একেবারেই ভালো কাটেনি তার, যদিও বাংলাদেশের বিপক্ষে গা গরমের ম্যাচে ফিফটি করে রানে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। মুদ্রার উল্টো পিঠে, এশিয়া কাপটা অসাধারণ কেটেছে কুশল মেন্ডিসের। অপর দুই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান দিমুথ করুণারত্নে ও কুশল পেরেরা এখনো নিজেদের চেনা ছন্দ খুঁজে পাননি। রানের জন্য তাই নিশাঙ্কা-মেন্ডিসের ওপর বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে শ্রীলঙ্কাকে, কেননা টপ অর্ডারের ভেঙে পড়ার লক্ষণটা এশিয়া কাপে দেখা গেছে বারবার।

Image Source: Getty Images

সম্ভাবনা

টপ অর্ডার ব্যাটিং যদি শ্রীলঙ্কার চিন্তার কারণ হয়, সেই চিন্তা দূর করতে পারে তাদের মিডল অর্ডার। সাদিরা সামারাবিক্রমা রয়েছেন চমৎকার ফর্মে, এশিয়া কাপে রান পেয়েছেন চারিথ আসালঙ্কাও। ধনঞ্জয়া ডি সিলভা বরাবরই কার্যকরী ব্যাটিং করেন মিডল অর্ডারে। অধিনায়ক দাসুন শানাকা ফর্মে ফিরলেই শ্রীলঙ্কার মিডল অর্ডার পুরোপুরি প্রস্তুত।

শঙ্কা

হুটহাট ব্যাটিং বিপর্যয়। এশিয়া কাপের ফাইনালের কথা তো মনে আছে নিশ্চয়ই। মোহাম্মদ সিরাজের এক স্পেলেই গুটিয়ে গেল শ্রীলঙ্কার ইনিংস। এই ব্যাপারটা নতুন নয়, এশিয়া কাপে বেশ কয়েকবারই দেখা গেছে এমনটা। বাংলাদেশের বিপক্ষে ঘটেছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘটেছে, ভারতের বিপক্ষে তো ঘটেছে দুইবার। হুট করে নেমে আসা ব্যাটিং বিপর্যয়ে এলোমেলো হয়ে পড়ে লঙ্কানদের ইনিংস। বড় সংগ্রহের বদলে তখন সন্তুষ্ট থাকতে হয় সম্মানজনক স্কোর নিয়ে।

বাড়তি নজরে রাখবেন যাকে

Image Source: Getty Images

মাহিশ থিকসানা। বাছাইপর্বের প্রতিটা ম্যাচেই ইকোনমিক্যাল বোলিংয়ের সাথে পেয়েছেন তিন-চারটি করে উইকেট। এশিয়া কাপে উইকেট সংখ্যা কমেছে ম্যাচ প্রতি, একটু খরুচেও হয়েছেন, তবে তার বোলিংয়ের বৈচিত্র্য দেখা গেছে দারুণভাবে। বিশ্বকাপেও তার বোলিংয়ের দিকে তাকিয়ে থাকবে শ্রীলঙ্কা, বিশেষত মূল বোলার, লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার চোটজনিত অনুপস্থিতিতে।

বিশ্বাসী বাংলাদেশ

মাঠের বাইরের বিতর্ক, সাবেক আর বর্তমান অধিনায়কের ‘দ্বন্দ্ব’, মাঠের অধারাবাহিক পারফরম্যান্স, সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট জেরবার। তবুও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান দলের কানে পড়ে দিচ্ছেন বিশ্বাসের মন্ত্রটা। ওয়ানডে সুপার লিগে তৃতীয় হওয়া দলটা বিশ্বকাপেও ভালো কিছু করবে, ছাপিয়ে যাবে প্রতি আসরে ঠিক তিন ম্যাচ জয়ের ‘রীতি’কে, এই স্বপ্নটাও দেখছেন ক্রিকেটভক্তরা। বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দাপুটে পারফরম্যান্সটা আরেকবার আশার পালে হাওয়া লাগাচ্ছে বাংলাদেশের। তরুণ আর অভিজ্ঞ পারফরমারদের বাংলাদেশ দল এবার বিশ্বকাপে যাচ্ছে একটা নতুন বিশ্বাসকে বুকে নিয়ে।

Image Source: BCB/facebook

স্কোয়াড

সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), নাজমুল হোসেন শান্ত, তানজিদ হাসান তামিম, লিটন দাস, তাওহীদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান তামিম।

শক্তিমত্তা

নিশ্চিতভাবেই বোলিং। পেস ও স্পিন, দুই আক্রমণেই বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর অন্যতম সেরা দল। এবাদত হোসেনের অভাব বোধ করবে বাংলাদেশ, তবে তাসকিন-হাসান-শরিফুল-মোস্তাফিজ-তানজিমের বাংলাদেশের পেস আক্রমণ তবুও যথেষ্ট ‘বিষধর’। আর তাসকিন-হাসান-শরীফুল ত্রয়ী নিশ্চিত করেছেন যে মোস্তাফিজুর রহমানও এখন আর ‘অটোচয়েস’ নন; যদিও ডেথ ওভারে এখনো যে তিনি যথেষ্ট ক্ষুরধার, তার প্রমাণ পাওয়া যায় ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপের শেষ ম্যাচে — যে ম্যাচে আবার নিজের অভিষেকেই ঝলক দেখালেন তরুণ তানজিম হাসান সাকিব। এর বাইরে, লাহোরের মরা পিচেও ঝড় তুলেছিলেন বাংলাদেশী পেসাররা, তাই বাংলাদেশের স্বপ্নের অনেক অংশ জুড়েই থাকবেন তারা। স্পিনারদের থাকতে হবে পর্দার একটু আড়ালে, সাকিব-মিরাজ-নাসুম-মাহেদীর কাজ হবে মূলত রান আটকে পেসারদের আক্রমণে সাহায্য করা। সে কাজটা তারা এশিয়া কাপেও করেছেন চমৎকারভাবে।

Image Source: AFP

দুর্বলতা

নিয়মিত ব্যাটিং ব্যর্থতা। পঞ্চাশ ওভার খেলা হচ্ছে না নিয়মিত, ভালো বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে দলের রান দুইশ পার করতেই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সব ব্যাটসম্যান একই সাথে জ্বলে উঠতে পারছেন না, একজন-দুজন যা জ্বলে উঠছেন, তাতে মূলত ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’-এর কাজটাই হচ্ছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে ওপেনার আর টেলএন্ডারদের নিয়মিত ব্যর্থতা। সাত নম্বরের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় দলে ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ। ভরসার জায়গা শুধু তিন থেকে ছয়ের ব্যাটসম্যানরা, অর্থাৎ শান্ত-সাকিব-হৃদয়-মুশফিক, কিন্তু বাকিদের অসহযোগিতায় তাদের চেষ্টাও ভেস্তে যাচ্ছে।

সম্ভাবনা

বাংলাদেশের তারুণ্য। ২০২০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের চারজন সদস্য এবার রয়েছেন জাতীয় দলে, তানজিদ হাসান তামিম, তাওহীদ হৃদয়, শরিফুল ইসলাম এবং তানজিম হাসান সাকিব। বিশ্বজয়ের স্বাদ একবার পেয়ে গেছেন বিধায় তাদের মানসিকতা অন্যদের চেয়ে ভিন্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। এর বাইরে ফিল্ডিংয়েও যে বাংলাদেশ এখন তর্কসাপেক্ষে এশিয়ার সেরা, এর পেছনেও এই হৃদয়-তানজিদ-শান্তদের ভূমিকা রয়েছে। শান্ত আর হৃদয় তো বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের দুই স্তম্ভ হয়ে গেছেন এখন, বোলিংয়ে অনেক উন্নতি এনেছেন শরিফুল ইসলাম।

Image Source: Associated Press

শঙ্কা

চারটা বিশ্বকাপ খেলেও মাত্র চারটা ফিফটি, গড় মাত্র ২৪, তবুও তামিম ইকবালই হয়তো হতে পারতেন এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের টপ অর্ডারের ভরসার নাম। গত বছরটা চমৎকার কাটানো লিটন এ বছরে নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন, তরুণ তানজিদ হাসান তামিম ঝলক দেখিয়েই নিভে যাচ্ছেন প্রতিটা ম্যাচেই। গা গরমের ম্যাচে দু’জনের পঞ্চাশ পেরোনো সংগ্রহটা সাময়িক স্বস্তি দিলেও মূল টুর্নামেন্টে সেই পারফরম্যান্স ধরে রাখার ব্যাপারে সন্দিহান অনেকেই। আর দলের এই নিয়মিত ব্যাটিং বিপর্যয়ে কোনোদিন নাজমুল হোসেন শান্ত, কোনোদিন সাকিব আল হাসান, কোনোদিন মুশফিকুর রহিম বা তাওহীদ হৃদয়কে করতে হচ্ছে দলের ইনিংসকে এগিয়ে নেওয়ার কাজটা। অনিয়মিত ওপেনার হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজ যথেষ্ট ভালো করেছেন এশিয়া কাপে, বিশ্বকাপেও হয়তো তার ওপর আরেকবার ভরসা করতে হবে সাকিবের দলকে।

বাড়তি নজরে রাখবেন যাকে

Image Source: Associated Press

নাজমুল হোসেন শান্ত। চলতি বছরে ১৪টা ওয়ানডে ইনিংস খেলে ৪৯.৮৫ গড় আর প্রায় ৮৭ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ৬৯৮। মোট সাতবার পেরিয়েছেন পঞ্চাশ, যার মধ্যে রয়েছে দুটো একশও। এশিয়া কাপের প্রথম দুটো ম্যাচ খেলে চোটের জন্য ছিটকে গিয়েছিলেন, ফিরেছেন নিউজিল্যান্ড সিরিজের শেষ ম্যাচ দিয়ে। এই সর্বশেষ তিন ম্যাচে শান্তর মোট রান ২৬৯, প্রতিটা ম্যাচেই রান করেছেন দলের বিপর্যয়ের মুখে। বিশ্বকাপে তাই নিজের সেরা ফর্মটা নিয়েই যাচ্ছেন দলের সহ-অধিনায়ক শান্ত, ব্যাটিং অর্ডারের বর্তমানের সবচেয়ে বড় ভরসার দিকে তাকিয়েই তাই স্বপ্নের জাল বুনতে হবে বাংলাদেশ দলকে।

This article is in Bangla language. It is about the preview of the three teams, India, Sri Lanka and Bangladesh for the upcoming ICC Cricket World Cup 2023. Necessary photos are inserted inside.

Featured Image: Getty Image

Related Articles