Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

পাঁচ পয়েন্টে বিশ্বকাপ!

বিশ্ব মেতে উঠেছে ফুটবল জগতের মহাযজ্ঞে। কেউ কেউ আদর করে বলেন ‘গ্রেটেস্ট শো অন দ্য আর্থ’।

কেউ লিওনেল মেসি, কেউ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, আবার কেউ নেইমারের হয়ে গলা ফাটাচ্ছেন কেউ আর্জেন্টিনা, কেউ ব্রাজিলের হয়ে যুদ্ধ করছেন। এই সময়টা যুদ্ধে নামার আগে বিশ্বকাপের খুটিনাটি সবকিছু হাতের কাছে থাকা চাই বৈকি!

বিশ্বকাপের ৩২ দলের খেলোয়াড়দের নাম এরই মধ্যে সবাই জেনে ফেলেছেন। কে কোন জার্সি পরে খেলবেন, কে কী পছন্দ করেন; সবই এতক্ষণে সবার মুখস্ত হয়ে যাওয়ার কথা। তারপরও স্কোয়াডগুলোতে বাকি রয়ে গেছে কিছু মজার তথ্য।

স্কোয়াডগুলোতে একবার চোখ বুলিয়েই আপনি জানতে পারবেন না কোন দেশের লিগের খেলোয়াড় এবার বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশী। সবচেয়ে বেশী বয়সী স্কোয়াড কোনটি? কিংবা কোন লিগের খেলোয়াড় এবার বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশী? এরকম সব তথ্য নিয়েই সাজানো হয়েছে এই আয়োজন।

স্কোয়াডের গড় বয়স

লোকে বলে ফুটবলে নাকি ২৮ পার হলেই বুড়ো। সে হিসেবে এবার বিশ্বকাপে বুড়োদের ছড়াছড়ি। বিশেষ করে বুড়ো দলের কোনো অভাব নেই। প্রায় গড়ে তিরিশ বছর বয়সী দলও আছে বিশ্বকাপে। এবার বিশ্বকাপে ৫টি দল আছে, যাদের খেলোয়াড়দের গড় বয়স ২৯ বা তার চেয়ে বেশী।  

‘জি’ গ্রুপের দল পানামা এবার বিশ্বকাপে এসেছে সবচেয়ে বেশী বয়সী স্কোয়াড নিয়ে। তাদের ২৩ খেলোয়াড়ের গড় বয়স ২৯ বছর ২৩৬ দিন। তাদের খুব কাছাকাছি আছে বিশ্বকাপে চমকে দেওয়ার ক্ষমতা নিয়ে আসা কোস্টারিকা। তিন নম্বরে আছে এই তালিকায় মেক্সিকো।

এবার বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের চতুর্থ বয়স্ক দল নিয়ে এসেছে। তাদের গড় বয়স ২৯.৩ বছর। মিসরের খেলোয়াড়দের গড় বয়স ঠিক ২৯। ব্রাজিলও খুব একটা পিছিয়ে নেই। তাদের খেলোয়াড়দের গড় বয়স ২৮.৬।

পিরামিডের উল্টো দিকে আছে নাইজেরিয়া। তারা এবার বিশ্বকাপে সবচেয়ে কম বয়সী স্কোয়াড নিয়ে খেলতে এসেছে। নাইজেরিয়ার ২৩ খেলোয়াড়ের গড় বয়স মাত্র ২৫.৯। এরপরই ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়রা আছে। তাদের গড় বয়স ২৬। ২৭ বছরের কম গড় বয়স আছে আরও দুটি দলের। সার্বিয়ার খেলোয়াড়দের গড় বয়স ২৬.৮। তিউনিশিয়ার খেলোয়াড়দের গড় বয়স ২৬.৫।

আল হিদারি: সবচেয়ে বয়ষ্ক ফুটবলার; সোর্স: গেটি ইমেজ

প্রবীণ ও নবীন খেলোয়াড়

৪৫ বছর বয়সে মানুষ নিজের ছেলের খেলা দেখতে মাঠে যায়। এই বয়সে কী আর নিজে খেলা চলে? সকলে সেটা না পারলেও এসাম আল হাদারি পারেন। শুধু পারেন তা-ই নয়; তিনি ৪৫ বছর বয়সে বিশ্বকাপ খেলতে চলে গেছেন।

এবার বিশ্বকাপের সবচেয়ে প্রবীণ খেলোয়াড় হলেন মিসরের গোলরক্ষক এসাম আল হাদারি। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশী বয়সে মাঠে নামার রেকর্ডটা একসময় ছিলো ক্যামেরুনের রজার মিলার। গত বিশ্বকাপে ব্রাজিলে সেই রেকর্ড ভেঙে দেন কলম্বিয়ার ফারিদ মনড্রাগন। ৪৩ বছর ৩ দিন বয়সে তিনি মাঠে নেমেছিলেন। এবার মনড্রাগনের রেকর্ডটাও হুমকির মুখে আছে।

মিসরের এসাম আল-হাদারি মাঠে নামতে পারলেই রেকর্ডটা নিজের করে নেবেন। উরুগুয়ের বিপক্ষে মিসরের যেদিন ম্যাচ, সেদিন আল-হাদারির বয়স হবে ৪৫ বছর ৫ মাস। তিনি মাঠে নামলে অনেক পেছনে পড়ে যাবেন মনড্রাগন। শুধু খেলোয়াড়রা নয়, এবার বিশ্বকাপে আল হাদারির চেয়ে বয়সে ছোট তিনজন কোচও আছেন। সেনেগালের কোচ আলিওেই সিসের বয়স ৪২ বছর, সার্বিয়ার কোচ ম্লাডেন কির্স্টাজিসের বয়স ৪৪ বছর এবং বেলজিয়ামের কোচ রবার্তো মার্টিনেজের বয়স ৪৪ বছর!

বিশ্বকাপের সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড় অস্ট্রেলিয়ার ড্যানিয়েল আরজানি। তিনি এবার বিশ্বকাপে যাওয়া একমাত্র ফুটবলার যার জন্ম ১৯৯৯ সালের পর। এ ছাড়া টিনএজ আরও যারা বিশ্বকাপে যাচ্ছেন, তারা হলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আরনল্ড, আচরাফ হাকিমি, ফ্রান্সিস উজোহো, হোসে লুইস রদ্রিগেজ ও মুসা ওয়াগে।

ইংল্যান্ড দল খেলবে সব এমন ঘরের খেলোয়াড় নিয়ে; সোর্স: টেলিগ্রাফ

ঘরের ফুটবলার

ইংল্যান্ড তাদের একমাত্র বিশ্বকাপ ট্রফিটা জিতেছে সেই ১৯৬৬ সালে। নিকট ভবিষ্যতে আবার জিতবে, সে কথা গ্যারান্টি দিয়ে বলা চলে না। কিন্তু একটা জায়গায় এরই মধ্যে তারা সেরা।

এবার বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড একমাত্র দল, যাদের স্কোয়াডের সব খেলোয়াড় নিজেদের দেশের লিগে খেলে। ইংল্যান্ডের ২৩ জন খেলোয়াড়ই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড়। এই হিসেবে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে কাছে আছে রাশিয়া। তাদের ২৩ জনের মধ্যে ২১ জনই নিজেদের দেশে লিগ খেলে। সৌদি আরব ও স্পেন আছে এরপর। সৌদি আরবের ২০ জন ও স্পেনের ১৯ জন যার যার দেশের লিগ খেলা খেলোয়াড়। দূর থেকে মনে জয় জার্মানির এই সংখ্যাটা অনেক বেশী। কিন্তু জার্মানির ১৫ জন খেলোয়াড় আছেন, যারা জার্মান লিগ খেলেন।

আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের স্কোয়াডে মাত্র ৩ জন করে খেলোয়াড় আছেন যারা নিজেদের ঘরোয়া লিগকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। সুইজারল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নাইজেরিয়া ও বেলজিয়ামের দলে একজন করে খেলোয়াড় আছেন নিজেদের দেশে লিগ খেলা। আর সেনেগাল ও সুইডেনের স্কোয়াডে কোনো খেলোয়াড় নেই, যারা নিজেদের দেশে লিগ খেলেন!

ম্যানচেস্টার সিটি: সবচেয়ে বেশী ফুটবলার তাদের বিশ্বকাপে; সোর্স: গোল ডট কম

ক্লাবের প্রতিনিধি

লড়াইটা সারা বছর চলে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মধ্যে। কিন্তু এক্ষেত্রে এই দুই দলকে টেক্কা দিয়ে দিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। মাঝখান থেকে এসে তারাই এক নম্বর হয়ে উঠেছে বিশ্বকাপে।

হ্যাঁ, খেলাটা ক্লাবের নয়। তারপরও ক্লাব হিসেবে এবারের বিশ্বকাপের সেরা ম্যানচেস্টার সিটি।

পেপ গার্দিওলা এবার বিশ্বকাপটা নিয়ে সবচেয়ে বেশী গর্ব করতে পারেন। এবার বিশ্বকাপে তার দল থেকে সর্বোচ্চ ১৬ জন খেলোয়াড় অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন দেশের হয়ে। এটা বিশ্বকাপের ইতিহাসেরই এক ক্লাবের অন্যতম সর্বোচ্চ প্রতিনিধিত্ব।

রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা খুব একটা পিছিয়ে নেই। রিয়াল থেকে ১৫ জন ও বার্সেলোনা থেকে ১৪ জন খেলোয়াড় বিশ্বকাপে বিভিন্ন দলের হয়ে খেলবেন। এ ছাড়া পিএসজি, টটেনহাম ও চেলসির ১২ জন করে খেলোয়াড় এবার রাশিয়া বিশ্বকাপে অংশ নেবেন। সৌদি অ্যারাবিয়ান লিগের আল হিলাল ও আল আহলি ক্লাব থেকে ৯ জন করে খেলোয়াড় যাচ্ছেন এবার বিশ্বকাপে। এই তালিকায় তারা চলে এসেছে ১০ নম্বরে।

বায়ার্ন মিউনিখ, জুভেন্টাস ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ১১ জন করে খেলোয়াড় আছেন এবার বিশ্বকাপে। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের আছেন ৯ জন খেলোয়াড়।

প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে বেশী ফুটবলার খেলবে বিশ্বকাপে; সোর্স: টেলিগ্রাফ

লিগের প্রতিনিধি

ইংল্যান্ড এখানে সবাইকে ছাপিয়ে গেছে। এক ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ থেকে ১২৪ জন খেলোয়াড় এবার বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছেন। সাউথগেটের ইংল্যান্ড দলের পুরোটা এবং বেলজিয়াম দলের প্রায় পুরোটা এই ইংলিশ লিগ থেকে এসেছে। কোস্টারিকা, ইরান, পানামা, রাশিয়া, সৌদি আরব ও উরুগুয়ের কোনো খেলোয়াড় ইংলিশ লিগে খেলে না!

স্প্যানিশ লিগ থেকে বিশ্বকাপে গেছে ৮১ জন খেলোয়াড়, জার্মান লিগ থেকে এসেছে ৬৭ জন খেলোয়াড়। এরপরের নামটা দুঃখজনক। ইতালি নিজে এবার বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব পার হতে পারেনি। কিন্তু ইতালিয়ান লিগে খেলা ৫৮ জন খেলোয়াড় আছে এবার বিশ্বকাপে। এরপর ফ্রান্সের লিগে খেলা খেলোয়াড় আছে ৪৯ জন। রাশিয়ার লিগের ৩৬ জন ও সৌদি আরবের লিগের ৩০ জন খেলোয়াড় আছে বিশ্বকাপে।

Related Articles