Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক বহুমাত্রিক সৌন্দর্যের দেশ স্কটল্যান্ড

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর স্থাপত্যের বিপুল ঐশ্বর্যে ভরপুর ইউরোপের এক অসাধারণ দেশ ‘ট্রেজার আইল্যান্ড’ খ্যাত স্টিভেনসনের স্কটল্যান্ড। স্কটল্যান্ড গ্রেট ব্রিটেন দ্বীপের এক-তৃতীয়াংশ জুড়ে বিস্তৃত। স্কটল্যান্ডের উত্তরে আটলান্টিক মহাসাগর, পূর্বে উত্তর সাগর, দক্ষিণ-পূর্বে ইংল্যান্ড এবং পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর ও নর্থ চ্যানেল অবস্থিত।

১৬০৩ সালে ব্রিটিশ রাজা প্রথম জ্যাকবের অধীনে স্কটল্যান্ড ইংল্যান্ডের সাথে একত্রিত হয়। বর্তমানে স্কটল্যান্ড যুক্তরাজ্যের একটি অংশ। ১৯৯৯ সাল থেকে স্কটল্যান্ডের নিজস্ব আইনসভা রয়েছে এবং তখন থেকেই দেশটি স্বায়ত্বশাসন ভোগ করে আসছে। তবে দেশটি বর্তমানে ইংল্যান্ড থেকে আলাদা একটা রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার দাবী জানাচ্ছে।

অসাধারণ ল্যান্ডস্কেপ, সুন্দর স্থাপত্যশৈলীর অপূর্ব নিদর্শন স্কটল্যান্ডকে ইউরোপের অন্য দেশগুলো থেকে আলাদা করে রেখেছে। প্রাকৃতিক এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে পরিপূর্ণ দেশটির দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে এডিনবরা, গ্লাসগো, লক নেস, ইভারনেস, বেন নেভিস, গ্লেনকো, আবেরডিন ও স্কটিশ হাইল্যান্ডস অন্যতম। স্কটল্যান্ডের প্রতিটি জায়গারই এই অদ্ভুত বৈচিত্র্য রয়েছে, কিন্তু সমস্ত বৈচিত্রই যেন কোনো এক অদৃশ্য সূত্রে গাঁথা।

এডিনবরা

স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবরা। এই শহরের একটা নিজস্ব ভাষা, রং ও রূপ রয়েছে, ইউরোপের অন্যান্য শহর  থেকে এই শহরকে চিনে নিতে অসুবিধা হয় না। লন্ডনের পর স্কটল্যান্ডের এই শহর ইউরোপের দ্বিতীয় জনপ্রিয় পর্যটন শহর। শহরটি এতটাই পরিষ্কার ও সুন্দর যে, পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। ইউরোপের অনেক শহরের মতোই এডিনবরা শহরটিও শুধু হেঁটেই দুই-তিন দিনের মধ্যে ঘুরে ফেলা যায়। এই হাঁটার মধ্য দিয়ে প্রাচীন এই শহরের ইতিহাসের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া যায়।

স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবরা; Image Source: travelmassive.com

ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ের নির্মিত নানা স্থাপত্যশিল্প এখনও সেভাবেই রয়ে গেছে। শহরের ওল্ড টাউন এলাকার বেশিরভাগ বাড়িই অষ্টাদশ শতকে নির্মিত। তাই এই শহরে ইতিহাস আর ঐতিহ্য যেন হাত ধরাধরি করে এগিয়ে চলেছে। প্রিন্সেস স্ট্রিটে প্রখ্যাত লেখক স্যার ওয়াল্টার স্কটের স্মরণে ২০০ ফুট উঁচু মনুমেন্ট দেখার মতো। শহরের সেন্ট গেইলস ক্যাথিড্রাল চতুর্দশ শতাব্দীতে নির্মিত। অসাধারণ গথিক স্ট্রাকচারে নির্মিত এই চার্চ দর্শক আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। স্কটিশ ব্যাগপাইপারদের কথা না বললেই নয়। বিশেষ পোশাকে সজ্জিত এই ব্যাগপাইপাররা স্কটিশদের নিজস্ব পরিচয় বহন করে। এডিনবরাতেই তাদের একমাত্র দেখা মেলে।

শহরের ওল্ড টাউন এলাকা; Image Source: viator.com

এডিনবরার রয়্যাল বোটানিক্যাল গার্ডেন পৃথিবীর অন্যতম পুরনো ও সুন্দর রক গার্ডেন। অসাধারণ ল্যান্ডস্কেপ, সুন্দর স্থাপত্যের আর্ক, ভিক্টোরিয়ান গ্লাস হাউজ, রডোডেনড্রন ও আজালিয়া ফুলের সমাহারে শুধু সুন্দর নয়, বর্ণময়ও। অনেক দুষ্প্রাপ্য গাছ দেখার সুযোগ আছে এখানে। বায়োডাইভার্সিটির অনেক বিভাগ রয়েছে।

এডিনবরার রয়্যাল বোটানিক্যাল গার্ডেন; Image Source: VisitScotland

ইতিহাস ও ঐতিহ্য ছাড়াও এডিনবরা শহরটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক গন্তব্যস্থল। এডিনবরা শহর বিভিন্ন রকম উৎসবের জন্য বিখ্যাত। সারাবছরই অনেক জনপ্রিয় উৎসব এখানে আয়োজিত হয়। বিশ্বের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক আর্টস উৎসব এখানেই পালিত হয়। এই আর্ট ফেস্টিভ্যালে দেশ-বিদেশের অনেক শিল্পীর আনাগোনা ঘটে। এছাড়া এডিনবরা ইন্টারন্যাশনাল বুক ফেস্টিভাল এবং রয়েল এডিনবরা মিলিটারি ট্যাটু ফেসিটভ্যালও বেশ জাঁকজমকের সাথেই পালিত হয়ে থাকে।

এডিনবরা ক্যাসেল

ওল্ড টাউন হয়ে ভ্রমণার্থীরা ঘুরে আসেন রয়্যাল মাইল ও এডিনবরা ক্যাসেল। এডিনবরা শহরের প্রধান আকর্ষণ এডিনবরা ক্যাসেল। শহরের একবারে কেন্দ্রে অবস্থিত দর্শনীয় এক দুর্গ। পাথুরে পাহাড়ের উপর অবস্থিত দুর্গটি ইংল্যান্ড ও সেন্ট্রাল স্কটল্যান্ডের মাঝে থাকা পাহাড়ি পথের উপর তৈরি করা হয়েছিল। মূলত দ্বিতীয় শতাব্দীতে, রোমান সাম্রাজ্যের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য এই দুর্গ নির্মিত হয়। গ্রেট হলের নীচে ক্যাসল ভল্টগুলো নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। সেগুলোও সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতকের তৈরি। এই ক্যাসেল পুরনো জিনিস সংরক্ষণের জাদুঘর। এর একদিকে রয়েছে রয়্যাল প্যালেস এবং অন্যদিকে স্কটিশ ক্রাউন জুয়েলস।

এডিনবরা ক্যাসেল; Image Source: getyourguide.com

ক্যাসেলের বিভিন্ন অংশ পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে দেখতে একেবারে ১৭-১৮ শতকের মতো লাগে। এখানে ইউরোপের সবচেয়ে পুরনো রত্নগুলোর এক সংগ্রহ রয়েছে। এছাড়া ইতিহাসসমৃদ্ধ রাজা-রাজড়াদের গুপ্তকক্ষ, বাসনকোসন বা পোশাক-আশাক ছাড়াও সে সময়ে ব্যবহৃত বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্রও এই দুর্গের সংগ্রহশালাতে রয়েছে।

গ্লাসগো

স্কটল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শহর গ্লাসগো। পশ্চিম উপকূলে ক্লাইড নদীর তীরে শহরটি অবস্থিত। একে চার্চের শহর হিসেবেও অভিহিত করা হয়। গথিক স্থাপত্যে নির্মিত গ্লাসগো ক্যাথিড্রাল দেখলে মনে হবে সময় এখানে থমকে আছে। ক্যাথিড্রালটি দেশটির অন্য ক্যাথিড্রালগুলো থেকে কিছুটা ভিন্ন। 

গথিক স্থাপত্যে নির্মিত গ্লাসগো ক্যাথিড্রাল; Image Source: planetware.com

পনের শতকের নানা উত্থান পতনের মধ্যেও যে ক্যাথিড্রালগুলো নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পেরেছিল, এটি তার মধ্যে অন্যতম। গ্লাসগো শহরটি গত কয়েক দশক ধরে ইউরোপীয় দেশগুলোর অন্যতম সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে নিজের আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য রয়েছে চমৎকার জাদুঘর, আর্ট গ্যালারি এবং সারা বছর ধরে পালিত হওয়া নানা উৎসব।

গ্লাসগো সিটি সেন্টার; Image Source: VisitScotland

প্রতি বছরই এখানে নানা সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। গ্লাসগো আধুনিক এক শহর হলেও সে তার পুরনো ইতিহাসকে মুছে ফেলেনি। শহরের প্রাচীন কিং থিয়েটারে নাটক, রয়্যাল থিয়েটারে স্কটিশ অপেরা এবং কনসার্ট হলে রয়্যাল স্কটিশ অর্কেস্ট্রার অনবদ্য পরিবেশনা দেখতে পাওয়া পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার। 

গ্লাসগো মিউজিয়াম; Image Source: handluggageonly.co.uk

গ্লাসগো সায়েন্স সেন্টারটিও কম আকর্ষণীয় নয়। অত্যাধুনিক সায়েন্স মিউজিয়ামটি পর্যটকদের বিস্মিত করার জন্য যথেষ্ট। বিশাল আইম্যাক্স থিয়েটার, ১২৭ মি. উচ্চতার আবজারভেশন টাওয়ার, প্ল্যানেটোরিয়াম ও একটি সায়েন্স থিয়েটার রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সরাসরি দেখানো হয়।

রিভারসাইড মিউজিয়াম

গ্লাসগোর রিভারসাইড মিউজিয়ামটিও অনবদ্য। গ্লাসগো বন্দরের পাশে নির্মিত এই জাদুঘরটি ব্রিটিশ ও ইরাকি স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন। এটি একটি পরিবহন মিউজিয়াম। সংগ্রহশালায় রেলওয়ে লোকো, ট্রাম,বাইক, বাষ্প ইঞ্জিন চালিত রেল, এমনকি ১৮৪৭ সালের পেডাল পাওয়ারড বাইসাইকেলও এখানে সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে অদ্ভুত ধরনের কিছু জাহাজ। এই জাদুঘর থেকে কিছুটা দূরত্বে কাঠ ও ধাতুর অদ্ভুত শিল্পকর্মের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছে ম্যাকিন্টোস হাউজটি। কেলটিক স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন ম্যাকিন্টোস হাউজটি অবশ্যই দর্শনীয়।

গ্লাসগোর রিভারসাইড মিউজিয়াম; Image Source: archilovers.com

লক নেস

লক নেস স্কটল্যান্ডের সবচেয়ে বিখ্যাত লেক। প্রায় ২৩ মাইল বিস্তৃত এই লেকটি পশ্চিমে স্কটিশ হাইল্যান্ড ও উত্তরে ইনভারনেস পর্যন্ত বিস্তৃত। লক নেস না দেখলে স্কটল্যান্ড ভ্রমণই বৃথা। লেক নেসে পর্যটকদের জন্য ক্রুজের ব্যবস্থা রয়েছে। ক্রুজে করে অজানা নেসির সন্ধানে বেরিয়ে পড়া যায়। স্থানটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার মতো। লেক নেসের নির্মল আবহাওয়া, শান্ত, নিরিবিলি প্রকৃতি মনকে আপনাআপনি ভারমুক্ত করে দেয়।

স্কটল্যান্ডের বিখ্যাত লেক লক নেস; Image Source: touropia.com

ক্রজে করে ভ্রমণ করতে করতে চোখে পড়বে দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশির উপর দিয়ে নির্মিত ব্রিটিশ স্থাপত্যের নিদর্শন বহনকারী সুন্দর ব্রিজ, নৈসর্গিক দৃশ্যাবলী ও সেই সাথে ছোট ছোট অনেক টুকরো ইতিহাস। লক নেস বললে লক নেস মনস্টার বা নেসির কথাও না বললেই নয়। স্কটিশদের ধারণা, এই প্রাণীটি এখনও বিলুপ্ত নয়, এখানেই তার দেখা মিলতে পারে।

উর্কহার্ট ক্যাসেল

লক নেস থেকেই দেখা যায় উর্কহার্ট ক্যাসেল। ১৩ শতাব্দীতে নির্মিত এই কেল্লা স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা যুদ্ধে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল। ১৭ শতাব্দীতে এটি পরিত্যক্ত হয় এবং ততদিনে অনেকটা ধ্বংস হয়ে যায়। এই কেল্লা পর্যটকদের প্রিয় জায়গা। এখান থেকেই ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ পাহাড়চূড়া বেন নেভিস দেখা যায়।

উর্কহার্ট ক্যাসেল; Image Source: Visit Scotland

গ্লেনকো

গ্লেন অর্থাৎ উপত্যকা । যেহেতু কো নদীর ‍তীরে এই উপত্যকা তাই এই জায়গার নাম গ্লেনকো। গ্লেনকোর প্রান্তরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানা ঐতিহাসিক গল্প। ক্যাম্পবেল আর ম্যাকডোনাল্ড উপজাতির নৃশংস ইতিহাসের কথা। উইলিয়াম ওয়ালেস এবং স্টার্লিং ব্রিজের ইতিহাস মনে করিয়ে দেয় সেসব আখ্যান।

হাজারো ইতিহাসের সাক্ষ্য গ্লেনকো উপত্যকা; Image Source: touropia.com

চোখের সামনে ইতিহাস যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। ১৯৬২ সালে ম্যাকডোনাল্ড সম্প্রদায়ের ৩৮ জনকে রাজা তৃতীয় উইলিয়ামের আদেশে এখানে হত্যা করা হয়। তারপরও এ সম্প্রদায়ের মানুষরা রাজার বশ্যতা স্বীকার করে নেয়নি। এরকম আরও অনেক হত্যাযজ্ঞের গল্প ছড়িয়ে রয়েছে উপত্যকা জুড়ে।

স্কটিশ হাইল্যান্ডস

স্কটল্যান্ডের সবচেয়ে রোমান্টিক জায়গাগুলোর একটি এই স্কটিশ হাইল্যান্ড। পুরো হাইল্যান্ড জুড়ে ছড়িয়ে আছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নানা নিদর্শন। নির্মল নীল আকাশ, পাথুরে পাহাড়, ঘন নীল জলের লক, সুনসান সবুজ উপত্যকা, কখনও লাল হরিণ আবার কখনও পরিযায়ী পাখির আনাগোনা- সব মিলিয়ে হাইল্যান্ড অঞ্চলের তুলনা মেলা ভার।  

স্কটিশ হাইল্যান্ড স্কটল্যান্ডের সবচেয়ে রোমান্টিক জায়গাগুলোর একটি; Image Source: planetware.com

ঘন ঘন আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে হাইল্যান্ডও নিজের নিজের রহস্যময়তা আরও বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে। রৌদ্রোজ্জ্বল দিন থেকে মেঘের ছায়ায় ঢেকে যাওয়া পাহাড়ের ছবি চিরচেনা মুহূর্ত যেন পট পরিবর্তিত হয়ে অন্য এক রূপ ধারণ করে। উপত্যকায় এক অদ্ভুত ধরনের প্রাণী, হ্যামিশ এখানকার বড় আকর্ষণ।

ইনভারনেস

ইনভারনেস হচ্ছে নেস নদীর উৎসমুখ। স্কটিশ হাইল্যান্ডের এই শহরটি গ্রেট ব্রিটেনের উত্তর প্রান্তে অবস্থিত। হাইল্যান্ড কাউন্সিল এরিয়ার এটি একটি প্রশাসনিক কেন্দ্র। ইভারনেস স্কটল্যান্ডের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। শহরটি স্কটল্যান্ডের কঠিনতম যুদ্ধগুলোর স্মৃতিচিহ্ন বহন করে চলেছে।

ইনভারনেস স্কটল্যান্ডের হাইল্যান্ড এরিয়ার প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত; Image Source: touropia.com

ইনভারনেস মনে করিয়ে দেবে শেক্সপিয়রের ট্র্যাজিক হিরো ম্যাকবেথের কথা। এখানেই রচিত হয়েছিল রাজা ডানকানকে মারার কুটিল ষড়যন্ত্র। গেলিক রাজা ম্যাকবেথ এবং ডানকানের যুদ্ধ এই ইনভারনেস ক্যাসেলেই হয়েছিল বলে শোনা যায়। ইনভারনেস ক্যাসেল ও বন্দর ছাড়াও অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নর্থ সি-র সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এক উপযুক্ত জায়গা।

আবেরডিন

স্কটিশদের কাছে আবেরডিন হচ্ছে সিলভার সিটি উইথ দ্য গোল্ডেন স্যান্ড। ডি আর ডন এই দুটি নদীর উৎসমুখে অবস্থিত এই শহরকে ঘিরে আছে এক দীর্ঘ বালুময় উপকূল অঞ্চল। নর্থ সি-তে তেলের খনির সন্ধান পাওয়ার পর থেকেই অয়েল অফ দ্য ওয়ার্ল্ড বা এনার্জি ক্যাপিটাল অফ দ্য ওয়ার্ল্ড হিসেবে শহরটি বর্তমানে পরিচিতি পাচ্ছে।

দীর্ঘ বালুকাময় সমুদ্র উপকূল বেষ্টিত আবেরডিন শহর; Image Source: VisitScotland

এছাড়া স্কটল্যান্ডের আরও বেশ কিছু জায়গা আছে যা না দেখলে হয়তো মনে হতে পারে দেশটি দেখা অসম্পূর্ণই রয়ে গেল। যেমন, স্কটল্যান্ডের উচ্চতম পাহাড় বেন নেভিস। হাইল্যান্ডসের মনোরম পরিবেশের রহস্যময়তা আরও বাড়িয়ে দেয়ার জন্য সেখানে রয়েছে বেশ কিছু প্রাচীন দুর্গ যার সাথে জড়িয়ে রয়েছে বহু রক্তপাত ও যুদ্ধের ঘটনা। 

স্কটল্যান্ডের উচ্চতম পাহাড় বেন নেভিস; Image Source: visitfortwilliam.co.uk

অনেকে আবার ছোট্ট বন্দর শহর ওবানের লোমন্ড লেকটিও ঘুরে আসেন। লেকটি ভারি সুন্দর। মূলত মাছধরার জন্য বিখ্যাত এই লেক বা হ্রদ। 

ওবানের লোমন্ড লেক; Image Source: planetware.com

কেউ আবার বিশ্বের সবচেয়ে বড় গল্ফ ডেস্টিনেশন সেইন্ট অ্যান্ডুজও দেখতে যান। এছাড়া ইতিহাসের শহর হিসেবে পরিচিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ স্টারলিং শহরটিও কম আকর্ষণীয় নয়। গ্লাসগো বা এডিনবরা থেকে বিভিন্ন স্কটিশ লেক ও হাইল্যান্ডে একসাথে ভ্রমণ করা যায়।

ইউরোপের অসংখ্য সুন্দর দেশের ভিড়ে কোথায় যেন হারিয়ে যায় স্কটল্যান্ড। অথচ এত বৈচিত্রময় নিসর্গ, ইতিহাস ও শিল্প দেশটিকে এক বহুমাত্রিক সৌন্দর্য নিয়ে পর্যটকদের কাছে প্রতিনিয়ত উপস্থাপিত হয়।

This article is a Bengali article. This story is about Scotland a land of legends and romance, from Robert the Bruce and Macbeth to lake monsters and the tragic Mary Queen of Scots. This article is an overview of the best places to visit in Scotland.

All the sources are hyperlinked into the article.

Featured Image:sprudge.com

Related Articles