দুই কোরিয়া চিরশত্রু দেশ হলেও দক্ষিণ কোরিয়া তুলনামূলক উদার মনোভাবের। তারা উত্তর কোরিয়ার আড়াই কোটি জনগণকে নিজেদের নাগরিক বলেই মনে করে। যে কারণে উত্তর কোরিয়া থেকে কোনো নাগরিক এখানে পালিয়ে আসলে সরাসরি দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকত্ব পেয়ে যান। ১৯৯৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩৩ হাজারেরও বেশি উত্তর কোরীয় নাগরিক বা ডিফেক্টর দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকত্ব পেয়েছেন।
কিন্তু উত্তর কোরিয়ার নাগরিকরা কি চাইলেই দক্ষিণ কোরিয়ায় চলে যেতে পারেন? অবশ্যই না। কারণ, উত্তর কোরিয়ার কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে কোনো নাগরিকেরই দেশ ত্যাগের সুযোগ নেই। কেউ অবৈধভাবে দেশ ত্যাগ করলে তাকে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানো থেকে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হতে পারে। তাই তাদের এ যাত্রাটা হয় খুব কষ্টের আর সংগ্রামের। আজ আমরা উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের সেই সংগ্রামের গল্পগুলোই জানব।
উত্তর কোরিয়ার নাগরিকরা যে কারণে দেশ থেকে পালিয়ে যান
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানিদের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে কোরিয়ার শাসন ক্ষমতায় আসেন জাতির পিতা কিম ইল সাং। ১৯৪৮ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তায় পত্তন করেন নতুন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ডেমোক্রেটিক পিপল’স রিপাবলিক অব কোরিয়া। পরবর্তীতে কোরীয় যুদ্ধ (১৯৫০-৫৩) শুরু হলে উপদ্বীপটি কমিউনিস্ট শাসিত উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবিত দক্ষিণ কোরিয়ায় ভাগ হয়ে যায়।
কিম ইল সাং যুদ্ধবিধ্বস্ত নতুন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে আত্মনির্ভরশীল করে তোলার উদ্যোগ নেন, যারা নিজেদের খাবারের ব্যবস্থা নিজেরাই করতে পারে। তার উচ্চাভিলাষী উদ্যোগ মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট মতবাদের মিশ্রণে সৃষ্ট জুচে মতবাদ দ্বারা প্রভাবিত, যেখানে আত্মনির্ভরশীলতার কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু পর্বতময় উত্তর কোরিয়ার অনুর্বর মাটি ও তীব্র শীতের আবহাওয়া থাকায় দেশটি কৃষিকাজের জন্য আদর্শ ছিল না। মাত্র ১৮ শতাংশ ভূমি কৃষি কাজের উপযোগী। ফলে কৃষিকাজের জন্য তাদেরকে রাসায়নিক সার, সেচ প্রক্রিয়া, বিদ্যুতের ওপর নির্ভর করতে হতো। আত্মনির্ভরশীল বলে প্রচার করলেও দেশটি আদতে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের ওপর নির্ভরশীল ছিল খাদ্য, কয়লা, তেল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হলে তাদের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা পাওয়া বন্ধ হয়ে যায় উত্তর কোরিয়ার। ফলে রাষ্ট্র থেকে জনগণের জন্য যে খাবারের ব্যবস্থা করা হতো, তাতে বিপর্যয় দেখা যায়। তার ওপর ১৯৯৩ সালের তীব্র শীত, ১৯৯৪ সালের শিলাবৃষ্টি ও ১৯৯৫ সালের বন্যা দেশটির ফসল ও পুরো কৃষিখাতকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর যৌথ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৮৯ সালের তুলনায় ১৯৯৫ সালের শস্য উৎপাদন ৩৪ শতাংশ কমে যায়। সরকারি বণ্টন ব্যবস্থার ভাঙন ও কৃষিখাতে ব্যর্থতার কারণে ১৯৯৫ সালে ব্যাপক আকারে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের সময়ে ১৯৯৪ সালে কিম ইল সাংও মারা যান। ফলে সব মিলিয়ে খুব বাজে সময় পার করতে হয় তখন উত্তর কোরিয়াকে। তারা এই সময়কে ‘কষ্টকর যাত্রা’ বলে অভিহিত করে থাকে। জাতিসংঘ ধারণা করে, ১৯৯৫-৯৮ সালের দুর্ভিক্ষের সময়ে অন্তত ২০ লাখ মানুষ বা মোট জনসংখ্যার দশ শতাংশ মানুষ মারা যায়। তখন চলমান খাদ্য ও অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে কর্মসংস্থান ও খাবারের আশায় উত্তর কোরীয়রা স্রোতের মতো প্রতিবেশী দেশ চীনে পালাতে থাকে।
তাদের এ পালানোর প্রবণতা এখনো চলমান। খাদ্য সঙ্কটের পাশাপাশি শাসকদের স্বৈরতন্ত্রের কারণেও নাগরিকরা পালিয়ে থাকেন। যদিও কিম জং উন দেশটির ক্ষমতায় আসার পর থেকে সীমানায় কড়াকড়ি বেড়ে যাওয়ায় ও করোনা পরিস্থিতির কারণে সীমান্ত বন্ধ থাকায় গত কয়েক বছরে পালানোর অনুপাত অনেকটাই কমে এসেছে। বর্তমানে আনুমানিক ৩ লক্ষ উত্তর কোরীয় নাগরিক অবৈধভাবে চীনে বসবাস করছে।
উত্তর কোরিয়া থেকে পালানোর উপায়
উত্তর কোরিয়া থেকে পালানো বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর একটি। সেখান থেকে পালানোর বিভিন্ন রাস্তা থাকলেও প্রতিটির ক্ষেত্রেই ভৌগলিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে অনেক বৈরি আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে হয় ডিফেক্টরদের।
সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়া পুরো কোরিয়া উপদ্বীপের কর্তৃপক্ষ দাবি করে নিজেদের। তাই উত্তর কোরিয়ার জনগণদেরও নিজেদের নাগরিক হিসেবেই দেখে। তাই উত্তর কোরিয়ার কোনো নাগরিক এখানে আসলে সরাসরি দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক হয়ে যেতে পারেন।
কিন্তু উত্তর কোরিয়া থেকে সরাসরি দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যাওয়া একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে অসাধ্য কাজগুলোর একটি। কারণ দুই কোরিয়া সীমান্তে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সশস্ত্র সেনাবাহিনীর উপস্থিতি রয়েছে। দুই প্রান্তেই বিদ্যুৎযুক্ত কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া। এছাড়া দুই পক্ষেরই লক্ষ লক্ষ সৈনিকের উপস্থিতি আর মাটিতে পুঁতে রাখা লক্ষ লক্ষ মাইন এই সীমান্ত পার হওয়া অসম্ভব করে তুলেছে। এই সীমান্ত দিয়ে কাউকে পার হতে দেখলে দুই দেশের ক্ষেত্রেই সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দেওয়া আছে। সরাসরি এরকম বিপজ্জনক রাস্তায় সাধারণত কেউ পা মাড়ায় না।
দক্ষিণ দিকে দেশ ত্যাগ করা অসম্ভব হলেও পূর্ব-পশ্চিম দিকে উন্মুক্ত সমুদ্র পালানোর একটা উপায় হতে পারে। কিন্তু এদিকে পালাতে হলে একমাত্র উপায় সাঁতরে পার হয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়া। কিন্তু এতেও উত্তর কোরিয়ার পেট্রল বাহিনীর হাতে ধরা পড়তে হতে পারে। এক্ষেত্রে আরেকটি উপায় হচ্ছে তৃতীয় কোনো দেশ ঘুরে দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছানো।
উত্তর কোরিয়ার পূর্ব দিকে অবস্থিত জাপান। কিন্তু জাপানে যেতে হলে জাপান সাগর পাড়ি দিয়ে যেতে হবে। সেক্ষেত্রেও ছোট নৌকা অথবা সাঁতরে পাড়ি দিতে হবে। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের বেশিরভাগেরই নৌকা কেনা বা বানানোর সামর্থ্য নেই। তাছাড়া এতে ধরা পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। আর এই অঞ্চলে টাইফুনের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনাও আছে।
তারপর বাকি থাকে দেশটির উত্তরাঞ্চলের সীমান্ত। দক্ষিণ প্রান্তের তুলনায় এদিকটায় পালানো সহজ। এদিকে তাদের দুই প্রতিবেশি দেশ রাশিয়া ও চীনের সাথে সীমান্ত। কিন্তু এই দুই রাস্তাও খুব বেশি সুবিধার নয়। রাশিয়ার সাথে তুমেন নদী দিয়ে মাত্র ১৭ কিলোমিটারের সীমান্ত। দুই দিকেই সীমান্তরক্ষী টহল বাহিনী দিয়ে ঘেরা। এমনকি কেউ যদি রাশিয়ায় প্রবেশও করতে পারে, সেক্ষেত্রে রাশিয়ার সরকারি অবস্থান হচ্ছে পালিয়ে আসা নাগরিকদের ধরে উত্তর কোরিয়ায় ফেরত পাঠানো। তাত্ত্বিকভাবে ভ্লাদিভস্টকে থাকা দক্ষিণ কোরিয়ার কনস্যুলেটে হয়তো যাওয়া সম্ভব। কিন্তু রাশিয়ার পুলিশের নজর এড়িয়ে এখানে পৌঁছানো অসম্ভব।
সবশেষে বাকি থাকে চীন। চীনে পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় ঝুঁকি অনেক কম। চীনের সাথে সীমান্ত প্রায় ১,৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এদিকটায় নিরাপত্তা ব্যবস্থাও তুলনামূলক শিথিল। চীন সীমান্ত তাই ডিফেক্টরদের জন্য জনপ্রিয় অবলম্বন। সবচেয়ে উপযোগী হলো গ্রীষ্মের সময়, যখন সীমান্তের নদীর পানি তুলনামূলক কম থাকে। অথবা তীব্র শীতের সময়, যখন নদীর পানি বরফ হয়ে জমে থাকে। কিন্তু চীনেও সারাজীবন থাকার উপায় নেই। কারণ চীন সরকারের অবস্থানও রাশিয়ার মতোই। চীনা পুলিশ কোনো উত্তর কোরিয়ার নাগরিককে ধরে ফেলতে পারলে তাদেরকে আবার নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়।
তাই উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের দ্রুতই চীন ত্যাগ করার ব্যবস্থা নিতে হয়। অনেকে দালাল ধরে দক্ষিণ কোরিয়ায় চলে যায়। কিন্তু সেক্ষেত্রে অনেক মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করতে হয়। শেনইয়াং শহরে থাকা দক্ষিণ কোরিয়ার কনস্যুলেটে যোগাযোগ করতে পারলে বিনামূল্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছানো সম্ভব। কিন্তু কনস্যুলেট ভবনগুলোর কাছে চীনা পুলিশের কড়া নজরদারি থাকে, বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়ার কনস্যুলেট ভবনে। তাছাড়া চীন এত বিশাল দেশ যে, এখানে দীর্ঘ সময় পুলিশের নজরে না পড়ে লুকিয়ে থাকাও কঠিন।
তাই দক্ষিণ কোরিয়ার কনস্যুলেটে সম্ভব না হলে ভিয়েতনাম, লাওস, মিয়ানমার এসব দেশ হয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশ করতে হয়। এতে কখনো কখনো এক দশক সময় পর্যন্তও লেগে যেতে পারে। নারীদের অনেকেই চীনে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে যান। তাছাড়া করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে চীন সীমান্তও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই গত দুই বছরে উত্তর কোরিয়া থেকে পালানো ডিফেক্টরদের সংখ্যা অনেক কমে গেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক হওয়ার প্রক্রিয়া
তৃতীয় বা চতুর্থ কোনো দেশ কিংবা কনস্যুলেটের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় এসে পৌঁছানো মাত্রই যে সরাসরি কেউ মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারবেন, এমনটা ভাবার সুযোগ নেই। উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে আসা নাগরিকরা আসলেই সাধারণ নাগরিক, নাকি উত্তর কোরিয়া থেকে পাঠানো কোনো গুপ্তচর, সেটা আগে নিশ্চিত করতে হয় দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষকে। তাছাড়া দুই দেশের সংস্কৃতি, সমাজ কাঠামো, শাসন ব্যবস্থা, কর্মক্ষেত্রে অনেক ভিন্নতা থাকায় তাদেরকে গণতান্ত্রিক পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থার মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা দিতে হয়।
প্রথমে তাদেরকে গোয়েন্দা সংস্থা জিজ্ঞাসাবাদ করে পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নেয়। তারপর তাদেরকে তিন মাসের জন্য হানাওনে পাঠানো হয়। হানাওন হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের এক পুনর্বাসন শিক্ষাকেন্দ্র। এখানে তিন মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার সমাজ ব্যবস্থার বিভিন্ন বিষয় শেখানো হয়। এগুলোর মধ্যে আছে এটিএম মেশিন ব্যবহার করা, দক্ষিণ কোরিয়ার আধুনিক যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা, চাকরি খোঁজার উপায় সম্পর্কে ধারণা ইত্যাদি। তাদেরকে দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকত্ব, গণতন্ত্র ও উত্তর কোরিয়ার সাথে তাদের পার্থক্য সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়।
হানাওন পর্ব শেষ হলে তাদের সরকারি ভাড়া বাসার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। তাদেরকে কয়েক দিন চলার মতো খাবারও দেওয়া হয়। শুরুতে ইতোমধ্যে সেখানে স্থায়ী হয়ে যাওয়া অন্য কোনো ডিফেক্টর এসে বাসা পরিষ্কার করা কিংবা প্রয়োজনীয় সাহায্যের দরকার হলে এসে করে দিয়ে যায়। এরপর তাদেরকে নিজেদের ব্যবস্থা নিজেদেরই করে নিতে হয়। তাদের ওপর নজর রাখার জন্য একজন পুলিশ অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা সাধারণত খোঁজখবর নিতে আসে।
মুদ্রার উল্টো পিঠ
পরিসংখ্যান দেখে কাগজে-কলমে দক্ষিণ কোরিয়ায় উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধার সম্ভাবনা দেখলেও বাস্তবে এখানে তাদের টিকে থাকা অনেক চ্যালেঞ্জিং। তারা সারা জীবন জেনে আসে কিম পরিবার আর সমাজতন্ত্রের গুণগান। কিন্তু দক্ষিণের পুঁজিবাদী দেশে এসে তারা পুরো বিপরীত চিত্র দেখে মানিয়ে নিতে পারে না।
দুই কোরিয়ার শিক্ষাব্যবস্থাও পুরোপুরি আলাদা। এখানে এসে শিক্ষিত হয়ে চাকরির জন্য প্রস্তুত হতেও অনেক সংগ্রাম করতে হয় তাদের। তাছাড়া কর্মক্ষেত্রে যোগদানের ব্যবস্থাও অনেক ভিন্ন। তাই উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের সহজে কেউ চাকরিতে নিতে চায় না। তাদেরকে কোরিয়ান হলেও অনেকটা বাইরের লোক হিসাবেই থাকতে হয়।
তারা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও অনেক জটিলতায় ভোগেন। এক জরিপে দেখা যায়, উত্তর কোরিয়ার শরণার্থীদের ১৫ শতাংশ স্বীকার করে নিয়েছেন যে তারা আত্মঘাতী চিন্তাভাবনা করেন, যা দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের গড় হারের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি। তারা দক্ষিণ কোরিয়ায় এসেও সুবিধাজনক অবস্থানে যেতে পারেন না, আবার নিজ দেশে ফিরে গেলেও দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি পেতে পারেন। তাই তাদের জন্য নিজ দেশে কিংবা দেশের বাইরে সব জায়গাতেই জীবনযাপন করা অনেক কষ্টের।