Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন লিগে শততম গোলের মাইলফলক ছুঁলেন মেসি

রাউল গঞ্জালেসের ৭৭ গোলের রেকর্ড ভেঙে এগিয়ে যাওয়া লিওনেল মেসিকেও পেছনে ফেলে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো সেই কবেই উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শততম গোল করে ফেলেছেন। তবে মেসি কবে করবেন! এই প্রশ্নটা যে বার্সেলোনা ও আর্জেন্টাইন সুপারস্টারের ফ্যানদের মাথা থেকেই যাচ্ছিল না। আর ব্যাপারটা তো একেবারে ভয় হয়ে চেপে বসছিল, কারণ এবার যে চ্যাম্পিয়নস লিগে মেসি গোলই পাচ্ছিলেন না।

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্ব উৎরানোর সময় বার্সেলোনা অনেকটা আত্নঘাতী গোলের উপর ভর করে চলেছে, সেখানে মেসি গোলের ক্ষেত্রে তেমন অবদান রাখতে পারেননি বলা চলে। শেষ ষোলর ড্র সমাপ্তির পর যখন বার্সেলোনা চেলসিকে পেল, অনেকেই ভেবেছিল, এবার আর শততম গোলের মাইলফলক মেসির ছোঁয়া হচ্ছে না। কারণ, মেসির যে চেলসির বিপক্ষে কোনো গোলই নেই। কিন্ত সেই বার্সেলোনা চেলসিকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পদাপর্ণ করল মেসিরই অবদানে।

প্রথম গোল করার পর মেসির উযযাপন; Source: gettyimages.com

প্রথম লেগে বার্সেলোনা স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে চেলসিকে হারাতে না পারলেও, মেসির কল্যাণে ছিনিয়ে এনেছিল মহা মূল্যবান অ্যাওয়ে গোল। কিন্ত এখানে এগিয়ে থাকলেও পুরনো একটা স্মৃতি যেন বারবার জেগে উঠছিল। এই ন্যু ক্যাম্পেই রামিরেজ আর টরেসের জন্য সেবার বার্সেলোনার উয়েফা জয়ের স্বপ্নের সমাপ্তি হয়েছিল। আর মহা গুরুত্বপূর্ণ সেই ম্যাচে পেনাল্টি মিস করেছিলেন স্বয়ং লিওনেল মেসি।

চেলসির বিপক্ষে মেসির পেনাল্টি মিস; Source: The Telegraph

ন্যু ক্যাম্পে ম্যাচ শুরুর পর তখন মাত্র ৩ মিনিট গড়িয়েছে। আসলে ৩ মিনিটও পূর্ণ হয়নি। সুয়ারেজের পাস পেয়ে দুরূহ কোনা থেকে চেলসি গোলকিপারকে নাটমেগ করে গোলের খাতা খুলেন মেসি। দুই মিনিট আট সেকেন্ডে করা এ গোলটি ছিল মেসির জীবনে সবথেকে দ্রুত সময়ে করা গোল।

মূলত ৯০ মিনিটের হাই ভোল্টেজ ম্যাচ অনেকটা শান্ত হয়ে গেল তখনই। সেটিও একদম নিষ্প্রভ হয়ে গেল যখন মেসির বাড়ানো বল থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এ মৌসুমেই রেকর্ড পরিমাণ ট্রান্সফার ফি দিয়ে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে আসা উসমান দেম্বেলে। এ গোলটি ছিল আবার দেম্বেলের বার্সেলোনার হয়ে করা প্রথম গোল।

প্রথম হাফেই দুই গোল হজম করার পরও আন্তেনিও কন্তের চেলসি রক্ষণ বাঁচিয়ে খেলার চেষ্টা করেনি। বারবার উইলিয়ান, হ্যাজার্ডরা দারুণ সব সলো রান এবং স্ট্যামিনার নমুনা দেখিয়ে বার্সেলোনার ডি বক্সে ঢুকে পড়ছিলেন। তবে কোনোভাবেই পিকে, উমতিতি আর স্টেগানকে পেরিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি ব্লুজবাহিনীর। তাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার জন্য বার্সেলোনার যখন আরেকটি গোল খুব প্রয়োজন, সেকেন্ড হাফে সে কাঙ্ক্ষিত মুহূর্তটি বার্সাকে এনে দিলেন মেসি। এবং এটিই ছিল তার ক্যারিয়ারের আরেকটি মাইলফলক, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন লিগের শততম গোল।

কর্তোয়াকে দ্বিতীয়বারের মতো পরাস্ত করার পর মেসির চিরচেনা সেলিব্রেশন; Source: Express.co.uk

সুয়ারেজের পাসে মেসি দ্বিতীয় গোলটি করেন খানিকটা ড্রিবল করে চেলসির ডিফেন্ডারকে বোকা বানানোর মাধ্যমে। কিন্ত এই গোলটিও সেই প্রথম গোলের মতো কিছু বুঝে ওঠার আগেই কর্তোয়ার দু’পায়ের মাঝ দিয়ে চলে যায়। এক ম্যাচে পরপর দুবার নাটমেগড হবার কারণে ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দুয়ো কম খাননি চেলসির এই বেলজিয়ান গোলরক্ষক। যদিও ম্যাচ শেষে প্রথম গোল খাবার কারণ দেখিয়ে গেছেন কর্তোয়া। প্রেস কনফারেন্সে তিনি বলেন, “আমি কখনো আশা করিনি মেসি ঐ কোনা থেকে এমন শ্যুট করবে, তাই আমি পা সামলানোর কথা ভাবিনি।” তবে মাঠে চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে এলে মেসি বরাবরই যে অতিমানবীয় পারফর্মেন্স করেন, সেটি সম্ভবত থিবো কর্তোয়া ভুলে গিয়েছিলেন।

মেসির প্রথম নাটমেগ গোল; Source: Indian Express

২০০৫ সালে প্যানাথিনাইকসের বিপক্ষে অভিষেক গোল করা মেসি গোলের হাফ সেঞ্চুরি পুরণ করেন ২০১২ সালে। এসি মিলানের বিপক্ষে তার গোলের সেঞ্চুরির স্মৃতি তো এখনো বেশ টাটকা। ১০০ গোলের মাঝে ১৬টি তিনি করেছেন ডান পা দিয়ে, ৮০টি বাম পায়ের সাহায্যে এবং বাকি ৪টি হেড এ। ১১২ ম্যাচ খেলে ১০০ গোলের মাইলফলক ছুঁতে মেসি হ্যাটট্রিক করেছেন মোট ৭টি, ওদিকে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর হ্যাটট্রিকও সমান সংখ্যক। এই হ্যাটট্রিকগুলোর ভেতর মেসির দুটি সুপার হ্যাটট্রিক আছে, যেখানে তিনি আর্সেনালের বিপক্ষে চারটি আর বায়ার লেভারকুজেনের বিপক্ষে পাঁচটি গোল করেছিলেন।

ইউরোপীয় ফুটবলে মেসির সবচেয়ে প্রিয় প্রতিপক্ষ আর্সেনাল। লন্ডনের ক্লাবটির বিপরীতে মেসি সর্বোচ্চ ৯ গোল করেছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আটটি গোল করেছেন এসি মিলান ও সেলট্রিকের বিপক্ষে। তবে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন লিগে মেসি যেমন দ্বিতীয় খেলোয়াড় হয়ে এ মাইলফলক স্পর্শ করলেন, তেমনি গোলের পরিসংখ্যানেও তাকে দ্বিতীয় অবস্থানেই থাকতে হচ্ছে। কারণ, গত ফেব্রুয়ারিতে পিএসজির বিপরীতে গোল করে ১০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করার পর পর্তুগীজ সুপারস্টার রোনালদোর গোলসংখ্যা এখন ১১৭।

ফিচার ইমেজ: National Accord Newspaper

Related Articles