Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

যুদ্ধের ধারণাকে রাতারাতি বদলে দিয়েছে যে প্রযুক্তিগুলো

মানব সভ্যতা আর যুদ্ধবিগ্রহের ইতিহাস খুব সম্ভবত একইসাথে শুরু হয়েছিল। মানুষে মানুষে হানাহানি আর জবরদখলের এই সংস্কৃতি হাজার হাজার বছর ধরেই মানব সমাজে বিরাজ করছে। আর এই বিকৃত সংস্কৃতিতে পরাক্রম দেখাবার জন্য মানুষ আবিষ্কার করেছে অসংখ্য প্রযুক্তি। ঘোড়ায় টানা যুদ্ধরথ আর বিরাটকায় ধনুক থেকে শুরু করে আধুনিক যুগের ৩য় প্রজন্মের ট্যাংক আর ৫ম প্রজন্মের মাল্টিরোল জেট ফাইটার ইত্যাদি সবই এই নিরন্তর প্রচেষ্টার ফল।

যুদ্ধ-বিগ্রহের ধরন আর রকমফের অনেকটা মানব সভ্যতার বদলের সাথে তাল মিলিয়ে চলে। এর মধ্যে কোনো কোনোটি যুদ্ধের ফল নির্ণয়ে গুরুতর সহায়ক হয়ে দাঁড়ায়। যেমন: ট্যাংক চলে আসার পর ঘোড়ায় চড়া সেনাদলের আর কোনো দাম রইলো না। এরকম বেশ কিছু প্রযুক্তি আছে যেগুলোর উপস্থিতি যুদ্ধের চেহারাই পাল্টে দিয়েছে। এরকম কিছু প্রযুক্তি নিয়েই আলোচনা হবে এখানে।

ড্রোন

ছোট আকারের দূরনিয়ন্ত্রিত বিমান বিশেষ। নজরদারি, অস্ত্র মোতায়েন বা বেসামরিক কাজে এদের ব্যবহার করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ভারত, ইরান, ইতালিসহ অনেক দেশে ক্ষেপণাস্ত্র সজ্জিত ড্রোন আছে। ড্রোনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এগুলোর নির্মাণ বা পরিচালনা ব্যয় আধুনিক যুদ্ধবিমানের তুলনায় অনেক কম। তাছাড়া ড্রোন নিয়ন্ত্রণ যারা করেন, তাদের জীবন কখনোই ঝুঁকির মধ্যে থাকে না। সাধারণত বহু দূরে নিরাপদ প্রহরায় রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ড্রোন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অনেক ড্রোনে আবার নিজস্ব কম্পিউটার ব্যবস্থাও থাকে।

ইয়েমেন, ইরাক, পাকিস্তান থেকে শুরু করে বিশ্বের বহু দেশে মার্কিন ড্রোন হামলায় সন্ত্রাসবাদী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ মারা গিয়েছে এবং যাচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে ড্রোনই হয়তো বিমানবাহিনীর মূল অস্ত্র হয়ে দাঁড়াবে।

মার্কিন ড্রোন; Source: democracynow.org

ফ্লাই বাই ওয়্যার

বিমান চালানো একটা সময় পর্যন্ত খুব কঠিন কাজ ছিল। সে সময় বৈমানিকদেরকে বাতাসের চাপ সামলে স্রেফ গায়ের জোরে আর কৌশলের সাহায্যে বিমান নিয়ন্ত্রণ করতে হতো। ম্যানুয়াল কন্ট্রোল পরবর্তী সময়কার জেট ইঞ্জিন বা শক্তিশালী ও দ্রুতগামী প্রপেলার চালিত বিমানগুলোর জন্য বড় এক সমস্যা হয়ে দেখা দিলো। এসব বড় বড় বিমানকে স্রেফ ম্যানুয়াল কন্ট্রোলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করাই বাতুলতা। কাজেই উদ্ভাবিত হলো ফ্লাই বাই ওয়্যার প্রযুক্তি।

ফ্লাই বা ওয়্যার প্রযুক্তি কাজ করে বিদ্যুতের মাধ্যমে। পাইলট কর্তৃক ইয়োক বা সাইড স্টিক (সোজা বাংলায় বিমান চালাবার হাতল) নাড়াবার সাথে সাথে সেই তথ্য চলে যায় কম্পিউটার বা সেরকম কোনো ক্যালকুলেটিং মেশিনের কাছে। তারপর সেটি সেই মতো নির্দেশ পাঠায় বিমানের অন্যান্য অংশের সেন্সরের কাছে। পুরো কাজটাই তার বা ওয়্যার নিয়ন্ত্রিত বলে এই নাম। এই প্রযুক্তির সবথেকে বড় সুবিধা হলো এটা ঝড়ঝাপ্টা বা আকাশযুদ্ধের সময়ে বৈমানিকদেরকে নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা এনে দেয়।

তাছাড়া প্রয়োজনীয় তথ্য প্রবেশ করিয়ে অনেক বিমানকে স্রেফ কম্পিউটারের হাতেই ছেড়ে দেওয়া চলে। আধুনিক মাল্টিরোল যুদ্ধবিমানের পাইলটদের যেহেতু একইসাথে অনেক কাজ সমাধা করতে হয়, তাই ফ্লাই বাই ওয়্যার প্রযুক্তি এসব বিমানে অপরিহার্য।

ফ্লাই বাই ওয়্যার প্রযুক্তিসম্পন্ন সুখোই-২৭ বিমানের ককপিট; Source: Pinterest

তবে এই পদ্ধতির একটা বড় সমস্যা হচ্ছে, কোনো কারণে যদি এই সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ হারায়, বিমান নিশ্চিতভাবে বিধ্বস্ত হবে। এ জন্য অনেক বিমানে দুই বা তিন স্তরের ব্যাকআপ সিস্টেম থাকে।

সাবমেরিন

আজকের দিনে সাবমেরিনের কথা জানে না এমন কাউকে পাওয়া যাবে না। পানির নীচে ডুবে থাকতে পারা এই জলযানগুলো সামরিক-বেসামরিক সব কাজেই ব্যবহৃত হয়। সিলিণ্ডার আকৃতির এই জাহাজগুলোর মাঝে একটি উঁচু অংশ থাকে, একে বলে ফিন বা সেইল। পেরিস্কোপ নামক বিশেষ আয়নার মাধ্যমে সাবমেরিনের ভেতরে থেকেই পানির উপরের আশপাশটা নজর করা যায়।

সাবমেরিনের ব্যবহার অবশ্য অনেক প্রাচীন। সেই মার্কিন গৃহযুদ্ধের সময়, ১৮৬৪ সালে প্রথম কনফেডারেটরা সাবমেরিন ব্যবহার করে একটা জাহাজ ডুবিয়ে দেয়। বিগত বিশ্বযুদ্ধ দুটিতে জার্মানের সাবমেরিন বহর অতিষ্ঠ করে ছেড়েছে প্রতিপক্ষকে। সে আমলে সাবমেরিন থেকে টর্পেডো মিসাইল ছোঁড়া হতো।

সাবমেরিন থেকে ছোঁড়া মিসাইল; Source: rt.com

স্নায়ুযুদ্ধের সময় সামরিক সাবমেরিনের গুরুত্ব বহু বেড়ে গেল। পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে ডিজেল চালিত সাবমেরিনের জায়গা করে নিল পরমাণু শক্তি চালিত সাবমেরিন। পরমাণু শক্তি ব্যবহারের সেরা সুবিধাটা হলো, এতে করে বিপুল জ্বালানী নেয়া লাগে না। একেক দফায় কয়েক বছর একটানা চলে। এই সময়টাতেই যুক্তরাষ্ট্র আর সোভিয়েত ইউনিয়ন যথাক্রমে জর্জ ওয়াশিংটন ক্লাস  আর গলফ ক্লাস  সাবমেরিন পানিতে নামায়। এরা দূর পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করতে পারত।

বিশাল মহাসাগরের বুকে দুই শিবিরের সাবমেরিন ঘুরে বেড়াত। এর মূল কারণ ছিল, স্নায়ুযুদ্ধের সময়টাতে দুই পক্ষই চাইতো, আচমকা পরমাণু হামলার শিকার হলে যেন পাল্টা আঘাত হানবার একটা ব্যবস্থা তাদের থাকে। এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য সাবমেরিনের থেকে আদর্শ অস্ত্র আর কী হতে পারে? মহাসাগরের বুকে বা উত্তর মেরুর হিম বরফের চাদরের নীচে লুকিয়ে থাকা সাবমেরিন ছিল এক ভয়ংকর আতংকের নাম।

সোভিয়েত আকুলা সাবমেরিন; Source: nationalinterest.org

আশির দশকের বিখ্যাত টাইফুন ক্লাস সাবমেরিনের কথা না বললেই নয়। আকুলা (হাঙ্গর) নামের এই সোভিয়েত সাবমেরিনগুলোতে থাকতো দুটি পারমাণবিক চুল্লী। দেড়শো মানুষ নিয়ে টানা ছয় মাস ডুবে থাকতে পারতো আকারে প্রায় চার তলা বাড়ির সমান উচুঁ এই সাবমেরিনটি। এতে থাকতো অনেকগুলো পরমাণু বোমাবাহী নিউক্লিয়ার ব্যালিস্টিক মিসাইল। পৃথিবীতে এর চেয়ে বড় সাবমেরিন আর নেই। এক আঘাতেই নিউ ইয়র্কের মতো বিশাল শহর নিশ্চিহ্ন করে দেবার মতো ক্ষমতা ছিল এর।

টমাহক মিসাইল বা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র

অত্যাধুনিক মার্কিন টমাহক মিসাইল হচ্ছে একধরনের ক্রুজ মিসাইল। এগুলো খুব নীচ দিয়ে, রাডারের নজর ফাঁকি দিয়ে দ্রুতগতিতে উড়ে আঘাত হানতে সক্ষম। ঘণ্টায় প্রায় ৫৫০ মাইল বেগে উড়তে সক্ষম এই মিসাইলগুলো নিজস্ব জিপিএস সিস্টেমের মাধ্যমে নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে পারে। ১৯৯১ এর উপসাগরীয় যুদ্ধে ইরাকী সেনাবাহিনীকে মাত্র ১০০ দিনে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত করবার পেছনে এই মিসাইলগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে সিরীয় বাহিনীর ওপরে পঞ্চাশটিরও বেশি টমাহক মিসাইল ছোঁড়া হয়েছে।

টমাহক মিসাইল; source: nationalinterest.org

স্টিলথ যুদ্ধবিমান

সাধারণত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এবং ইনফ্রারেড রশ্মি ব্যবহার করে শত্রুপক্ষের যুদ্ধবিমানের অবস্থান সম্বন্ধে জানা যায়। এমন কোনো যুদ্ধবিমান যদি বানানো হয় যেটা রাডার বা অন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করেও শনাক্ত করা যাবে না, তাহলে কেমন হবে? এই ভাবনা থেকেই স্টিলথ বিমানের উৎপত্তি। বাস্তবে অবশ্য পুরোপুরি গায়েব হয়ে ওড়া কোনো বিমানের পক্ষেই সম্ভব না। কিন্তু স্টিলথ বিমান নানারকম জটিল প্রযুক্তির ব্যবহার করে নিজেদের অস্তিত্বকে অন্য বিমানের তুলনায় অনেক ভালোভাবে লুকিয়ে রাখতে পারে।

মার্কিন বি-২ স্পিরিট বোমারু বিমান; source: youtube

এরই মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বি-২ স্পিরিট, এফ-২২ র‍্যাপ্টর কিংবা এফ-৩৫ লাইটনিং ২ এর মতো স্টিলথ বিমান তৈরি করেছে। এগুলো অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আকাশযুদ্ধে এদের দক্ষতা তেমন পরীক্ষিত না হলেও যুদ্ধবিমানের ইতিহাসে স্টিলথ বিমান রীতিমতো বিপ্লব এনেছে বলা চলে। রাশিয়াও নিজস্ব স্টিলথ বিমান সুখোই সু-৫৭ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছে। ৫ম প্রজন্মের এই যুদ্ধবিমান সামনের কয়েক বছরের মধ্যে বিমান বাহিনীগুলোর মূল অস্ত্র হয়ে দাঁড়াবে।

মহাকাশ অস্ত্র

স্নায়ুযুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে বিখ্যাত স্পেস রেস চালু ছিল, মহাকাশ অস্ত্র সেটারই ফসল। আশির দশকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের স্ট্র্যাটেজিক ডিফেন্স ইনিশিয়েটিভ  বাস্টার ওয়ার্স  নামক পরিকল্পনার আওতায় মহাকাশ অস্ত্র নির্মাণ শুরু হয়। কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইট ধ্বংস করার জন্য হোক কিংবা প্রতিপক্ষের ওপরে গোপন নজরদারির জন্য হোক, মহাকাশ অস্ত্রের গবেষণায় প্রচুর অর্থ ঢেলেছে চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিশালী দেশগুলো।

যুক্তরাষ্ট্র ২০০০ সালের দিকে মহাকাশ থেকে নিক্ষেপযোগ্য লেজার রশ্মি নিয়েও গবেষণা চালিয়েছে। সল্ট ২ এর মতো চুক্তি তো আছেই, পাশাপাশি অত্যাধিক ব্যয়বহুল হবার কারণে বর্তমানে কোনো দেশই মহাকাশ অস্ত্র নিয়ে খুব বেশি কাজ করছে বলে জানা যায় না। তবে দেশগুলো যে পৃথিবীর কক্ষপথে পরমাণু অস্ত্র পর্যন্ত স্থাপন করতে সক্ষম এটাই যথেষ্ঠ ভয়ের কথা।

পারমাণবিক বোমা

পৃথিবীর ইতিহাসে পারমাণবিক বোমার মতো বিদ্ধ্বংসী অস্ত্র এর আগে কখনো বানানো হয়নি। পরমাণুর ফিশন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন বিপুল শক্তিকে সামরিক ক্ষেত্রে ব্যবহার করার লক্ষ্যেই শুরু হয়েছিল ম্যানহাটন প্রজেক্ট। আধুনিক বিশ্বে প্রচলিত সমরাস্ত্রের গুরুত্ব অনেকখানি তুচ্ছ করে দিয়েছে এই পরমাণু বোমা।

পারমাণবিক বোমা; source: abc.net.au

প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে পরমাণু বোমার আকার ছোট হয়েছে। ওজন কমেছে। আর বিস্ফোরক ক্ষমতাও বেড়েছে বহু গুণে। জাপানের নাগাসাকিতে ফেলা ফ্যাট ম্যান এর ওজন ছিল ৪ হাজার ৬০০ কেজির মতো। বিস্ফোরণ ক্ষমতা ছিল ২১ কিলোটন টিএনটির সমান। ওদিকে ১৯৬১ সালের জার বোম্বার ওজন ছিল ২৭ হাজার কেজি। আর বিস্ফোরণ ক্ষমতা? ৫০ হাজার কিলোটন! দূর পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল, সাবমেরিন, যুদ্ধবিমান এমনকি কামান ব্যবহার করেও নিক্ষেপ করা যায় এই মারণাস্ত্র। বিস্ফোরণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে মারাত্মক তেজষ্ক্রিয়তা। বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে বহু বছরের জন্য। অসংখ্য মানুষ মারা যায় তো বটেই, যারা বেঁচে থাকে তারা সহ তাদের উত্তর প্রজন্ম ধরে বয়ে চলতে হয় তেজষ্ক্রিয়তার ফলে সৃষ্ট নানা শারীরিক জটিলতা।

এই বিমান থেকেই জাপানে পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়েছিল; source: pinterest

কেন এই ভয়ানক অস্ত্র অর্জন করতে চায় দেশগুলো? এর অনেক উত্তর হতে পারে। রাষ্ট্রীয় বা জাতীয় অহংবোধ, শত্রুকে ভয় দেখানো বা নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবার লক্ষ্যে অনেক দেশই এই ব্রক্ষ্মাস্ত্র চায়। চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, উত্তর কোরিয়া, ভারত আর পাকিস্তানের পাশাপাশি পরমাণু বোমা অর্জনের চেষ্টা চালিয়েছে আলজেরিয়া, লিবিয়া, ইরান, ইরাক, ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনা। অনেকের ধারণা ইজরায়েলের হাতেও পরমাণু বোমা আছে।

যুদ্ধের বাস্তবতায় তাহলে কী হতে যাচ্ছে ভবিষ্যৎ পৃথিবী?

ফিচার ইমেজ- pinterest

Related Articles