- স্পেসএক্স তাদের তৈরি প্রথম দানব মহাকাশযান ফ্যালকন হেভি উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছে। যানটি মঙ্গল গ্রহের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।
- যদি এটি ঠিকমত কাজ করে তবে ফ্যালকন হেভি হবে বর্তমানকালে ব্যবহৃত সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট সিস্টেম।
- এলন মাস্ক মঙ্গলের কক্ষপথের জন্য নিজের চকচকে লাল ২০০৮ টেসলা রোডস্টার গাড়িটি ফ্যালকন হেভির মাধ্যমে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
- এলন মাস্কের ভাষ্যমতে, এটি একটি টেস্ট ফ্লাইট। আর তাই এটি বিস্ফোরিত হতে পারে, আবার ঠিকমত কাজও করতে পারে, উভয়েরই সমান সম্ভাবনা আছে।
২০১১ সালে মাস্ক ঘোষণা দেন এমন একটি মহাকাশযান মঙ্গলে পাঠানোর। সাত বছর অপেক্ষার পালা শেষ করে তাই ৬ই ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে যানটি যাত্রা শুরু করবে। ফ্লোরিডার স্থানীয় সময় অনুযায়ী দুপুর ১.৩০ এর পর উৎক্ষেপণ করা হতে পারে মহাকাশযানটি। অর্থাৎ বাংলাদেশ সময় ৭ই ফেব্রুয়ারি রাত ১২.৩০ এর পর। কিন্তু উৎক্ষেপণে দেরি হবার সম্ভাবনাই বেশি।
রকেটটিতে তিনি তার লাল ২০০৮ টেসলা রোডস্টারটি পাঠাবেন। এটি মঙ্গলের কক্ষপথে আবর্তন করবে। এই রঙিন স্টান্ট প্রকাশের মাধ্যমে বোঝা যায় কীভাবে কোম্পানিটি একদিনে মানুষকে এবং অন্য পেলোডগুলো স্থানান্তর করতে সহায়তা করবে। ডিসেম্বরের মাস্ক তার টুইটার একাউন্টে জানান ‘লাল গ্রহের জন্য লাল গাড়ি‘।
স্পেসএক্সের ফ্যালকন হেভি রকেটটি মঙ্গলের জন্য একবারে ৩৭,০০০ পাউন্ডের ভার বহন করতে পারবে, যা প্রায় ১৪টি টেসলা রোডস্টারের ভরের সমান। ভবিষ্যতে যেকোনো সময় পৃথিবী থেকে লাল গ্রহে উপনিবেশ স্থাপনের জন্য মানুষকে পাঠাতে পরিচালিত হবে ফ্যালকন হেভির মিশন।
২৩০ ফুট দীর্ঘ লম্বা ফ্যালকন হেভি রকেটটি তিনটি পুনর্ব্যবহারযোগ্য বুস্টারের উপর নির্ভর করে, যার প্রতিটি নয়টি ইঞ্জিন দ্বারা তৈরি। অন্যসব বুস্টার সিস্টেমের থেকে ভিন্ন এই রকেট একাধিকবার ব্যবহারযোগ্য। সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা গেলে যখন আকাশে পৌঁছাবে মহাকাশযানটি তখন বুস্টারগুলো মূল যানটিতে একটি ধাক্কা দিয়ে আলাদা হয়ে যাবে এবং পুনরায় পৃথিবীতে ফেরত এসে মাটিতে ল্যান্ড করবে। ফলে এগুলো পরবর্তী মিশনের জন্য ব্যবহারযোগ্য হবে। অন্যসব বুস্টার মাটিতে আছড়ে পড়ে বা সাগরে গিয়ে পতিত হয়, কখনোবা বায়ুমণ্ডলেই জ্বলে যায়। এর আগে ফ্যালকন ৯ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য রকেটের ইতিহাস রচনা করে স্পেসএক্স।
তবে মাস্ক বলেন, এই যাত্রা সফল হবার সম্ভাবনা কম। তিনি বলেন,
“এটি বিস্ফোরিত হলে আমাদের অনেক বড় ক্ষতি হবে। কিন্তু এর থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারব। এটা একটি টেস্ট মিশন; তাই এই মিশনে অনেক কিছুই ভুলভাবে পরিচালিত হতে পারে। আমরা কোনো প্রকার আশা রাখতে চাই না। তবে শুধু এটুকু চাই, যেন এটি লঞ্চপ্যাড থেকে নিরাপদ দূরত্বে যেতে পারে লঞ্চপ্যাডটিতেই বিস্ফোরিত না হয়।”
মাস্ক আরো জানান, যদি এই মিশনটিতে তারা সফল হন, তবে আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে পুনরায় তারা আরেকটি মিশন পরিচালনা করবেন।
ফিচার ইমেজ: NASASpaceFlight