দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ ছিল মানব সভ্যতার ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক ঘটনা। বিভীষিকায় এই মহাযুদ্ধ ছাড়িয়ে গেছে এখন পর্যন্ত সংগঠিত যেকোনো যুদ্ধকে। এর প্রভাব পৃথিবীর প্রতিটি জাতি, দেশ ও রাষ্ট্র প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে অনুভব করেছে। পুরো পৃথিবী জুড়ে ছিল এই মহাযুদ্ধের প্রলয়ঙ্করী প্রভাব; কোথাও কম, কোথাও বেশি। মানবতার চরম অবক্ষয় ঘটিয়ে ইতিহাসের ধূসর অ্যালবামে অতীত হয়ে আছে এই মহাযুদ্ধ; কিন্তু তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব আজও অনুভূত হয়। অধিকাংশ ইতিহাসবিদের মতে, এই মহাযুদ্ধ শুরু হয় জার্মানির পোল্যান্ড আক্রমণের মাধ্যমে, ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর ভোরবেলায়। ধীরে ধীরে এতে জড়িয়ে পড়ে ইউরোপের দেশগুলোসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশও।
১১ অক্টোবর স্তালিন ফিনল্যান্ডের মাটিতে একটি বিমানঘাঁটি স্থাপনসহ ফিনল্যান্ডকে বেশ খানিকটা অঞ্চল সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছে ছেড়ে দিতে বলে। স্বভাবতই ফিনল্যান্ড এমন অন্যায় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন তার বাল্টিক অঞ্চলের নিরাপত্তার খাতিরে ফিনল্যান্ডকে দ্বিগুণ পরিমাণ জমি বিনিময় করবে, এমন আশ্বাস দেয়। কিন্তু ফিনিশরা কারেলিয়ান ইস্থমাসের ম্যানারহেইম লাইন থেকে পিছু হটার বিপক্ষে ছিল। ১৮ অক্টোবর তিন স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ- ফিনল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইডেনের রাষ্ট্রপ্রধানেরা মিলিত হন ফিনল্যান্ডে সম্ভাব্য সোভিয়েত আগ্রাসনের আশংকায়। বার্লিন স্তালিনের ফিনল্যান্ড আক্রমণের কথা জানতো। এ কারণেই তারা সুইডেনকে এ ব্যাপারে নাক না গলানোর পরামর্শ দেয়। আর্কটিকের বরফে জমতে শুরু করে যুদ্ধের দুশ্চিন্তা। সোভিয়েতের যুক্তি ছিল, ফিনল্যান্ডের সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ মাইল দূরত্বে থাকা লেনিনগ্রাদ শহরের নিরাপত্তা ঝুঁকির সমস্যা। ¹‚ ²
অক্টোবর মাস চলে যায় যুদ্ধের দুশ্চিন্তায়। ৮ নভেম্বর ফিনল্যান্ড সোভিয়েতের ভূমি বিনিময় প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়। ৯ নভেম্বর ফিনল্যান্ড থেকে কূটনীতিকদের একটি দল সোভিয়েত ইউনিয়নে যায় প্রেসিডেন্ট স্তালিন ও মলোটোভের সাথে দেখা করার জন্যে; উদ্দেশ্য- যাতে যুদ্ধ এড়ানো যায়। কিন্তু ১৩ নভেম্বর তারা ব্যর্থ মনোরথে ফেরত আসে ফিনল্যান্ডে। ম্যানারহেইম লাইনের দু’প্রান্তে টানটান উত্তেজনা।
ফিনল্যান্ড ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যবর্তী ম্যানারহেইম লাইন; source: Wikimedia Commons
২৬ নভেম্বর সোভিয়েত সৈন্যরা সাতটি মর্টার শেল ছোঁড়ে তাদেরই দেশের একটি গ্রাম মাইনিলাতে। উদ্দেশ্য, যাতে ফিনিশদের উপর দোষ চাপানো যায় যে, এই আক্রমণ ফিনল্যান্ড থেকে হয়েছে! এই ঘটনার পর মস্কো সোভিয়েতস্থ ফিনিশ রাষ্ট্রদূত কসকিনেনকে ডেকে বলে দেয়, তার দেশের (ফিনল্যান্ড) সেনাবাহিনী যেন সীমান্ত থেকে বিশ-পঁচিশ কিলোমিটার পেছনে সরে অবস্থান নেয়! পরের দিন হেলসিঙ্কি থেকে দাবি করা হয় যে, তাদের দেশের কোনো সৈন্য মর্টার শেল ছোঁড়েনি। বরং সোভিয়েতের দাবি অনুযায়ী, ফিনল্যান্ড তাদের সেনাবাহিনীকে সীমান্ত থেকে বিশ-পঁচিশ কিলোমিটার দূরে সরিয়ে নেয়।³ একই কাজ সোভিয়েত ইউনিয়নকে করার জন্য ফিনল্যান্ড পরামর্শ দেয়। কিন্তু কীসের কী! আসলে সোভিয়েত ইউনিয়ন পায়তারা করছিল, কীভাবে ফিনল্যান্ডের বিশাল অঞ্চল এমনকি সম্ভব হলে পুরো ফিনল্যান্ড দখল করে নেওয়া যায়। আর তাই ৩০ নভেম্বর গভীর রাতে সোভিয়েতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মলোটোভ স্তালিনের আদেশ মোতাবেক ফিনল্যান্ড আক্রমণের নির্দেশ দেয়। ১৯৩২ সালের ২১ জানুয়ারি হেলসিঙ্কিতে হওয়া সোভিয়েত-ফিনল্যান্ড অনাক্রমণ চুক্তি ভঙ্গ করে ৩০ নভেম্বরের সকালবেলায় সোভিয়েত ইউনিয়ন তার ২১ ডিভিশন (প্রায় সাড়ে চার লক্ষ) সৈন্য নিয়ে ফিনল্যান্ড আক্রমণ করে বসে। শুরু হয় বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনীর সাথে ইউরোপের অন্যতম কম জনবসতির, কম সম্পদ ও অপেক্ষাকৃত কম শক্তির এক অসম, অন্যায় যুদ্ধ। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে যোগ হয় এক নতুন মাত্রা। 4, 5
১৯৩২ সালের ২১ জানুয়ারি- সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ফিনল্যান্ডের মধ্যকার অনাক্রমণ চুক্তি স্বাক্ষর হচ্ছে; দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে এই চুক্তি ভঙ্গ করেই সোভিয়েত ইউনিয়ন ফিনল্যান্ড আক্রমণ করে বসে; source: WSOY picture archieve
ভাবা হয়েছিল যে, যুদ্ধটা একতরফা হবে। কিন্তু ফিনল্যান্ডের সৈন্যরা দারুণভাবে সোভিয়েত সেনাদের প্রতিরোধ করতে থাকে। ৩ ডিসেম্বর ফিনল্যান্ড তাদের ম্যানারহেইম লাইন থেকে পিছু হটে। যুদ্ধ এগোতে থাকে প্রায় সমানে সমানে। সোভিয়েত সৈন্যদের অনেকেই ফিনল্যান্ডের শীতে কাবু হয়ে পড়ে! বিভিন্ন জায়গায় ফিনল্যান্ডের স্কি যোদ্ধারা সোভিয়েতের অগ্রযাত্রা রুখে দিতে থাকে। ৩০ ডিসেম্বর পিছু হটতে থাকা সোভিয়েতের ১৬৩তম ডিভিশন ফিনল্যান্ডের ৯ম ডিভিশনের আক্রমণের মুখে পড়ে ধ্বংস হয়ে যায়। ফিনল্যান্ডের যোদ্ধাদের একটি শক্তিশালী দিক ছিল, তাদের স্কি যোদ্ধাগণ। Winter War-এ তাদের অবদান অনস্বীকার্য। এক অচিন্ত্য প্রতিকূল পরিবেশে পড়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন শান্তি আলোচনার কথা ভাবতে শুরু করে।
৫ ফেব্রুয়ারি মিত্রপক্ষের সুপ্রিম ওয়ার কাউন্সিল ফিনল্যান্ডে দুই ডিভিশন ব্রিটিশ সৈন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তবে ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নের আক্রমণের তীব্রতা ক্রমশ সফল হতে শুরু করে কিছু কিছু জায়গায়। ধীরে ধীরে ফিনল্যান্ডের বিভিন্ন এলাকা সোভিয়েত সৈন্যদের দখলে চলে যেতে থাকে। লিপ ইয়ারের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিনে শুরু হয় এই Winter War সমাপ্তির আলোচনা। অবশেষে ১৩ মার্চ সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ফিনল্যান্ডের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় মস্কো শান্তি চুক্তি। চুক্তি অনুযায়ী, ফিনল্যান্ড সোভিয়েত ইউনিয়নকে তার দেশের ১১ শতাংশ ভূমি ছেড়ে দেয়। শেষ হয় ৩ মাস ১ সপ্তাহ ৫ দিনের Winter War।
Winter War দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের এক বিশাল মোড় ঘোরানো যুদ্ধ ছিল। এই যুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের দুর্বল সমরনীতি ও ফিনল্যান্ডের মাটিতে তাদের সৈন্যদের দিশেহারা হয়ে পড়ার ঘটনা হিটলারকে পরবর্তীতে সোভিয়েত আগ্রাসনে উদ্বুদ্ধ করেছিল। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ এই যুদ্ধের পরে আরো ক্ষুরধার রূপ লাভ করে। চলুন, ছবিতে ছবিতে দেখে নেয়া যাক দুই অসম শক্তির Winter War।
Winter War: দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের দুই অসম শক্তির যুদ্ধ
অন্যায় দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সম্ভাব্য যুদ্ধ এড়াতে ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ও পার্লামেন্ট স্পিকার হেলসিঙ্কির রেল স্টেশনে। ৯ অক্টোবর সোভিয়েত ইউনিয়নের পথে তাদের এই যাত্রা; source: ww2db.com
দু’দেশের সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে ফিনল্যান্ডের সৈন্যরা; source: ww2db.com
৩০ নভেম্বর- হেলসিঙ্কির আকাশে সোভিয়েতের দ্রুতগতির টুপোলেভ এসবি-২ বোমারু বিমান; source: Wikimedia Commons
উপরে- ৩০ সেপ্টেম্বর, সোভিয়েত আগ্রাসনের উপক্রমণিকা। বিমান হামলায় বিধ্বস্ত ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কির একটি বাড়ি, জ্বলছে গাড়ি।
নিচে ডানে- বিধ্বস্ত ভবন থেকে বেসামরিক ফিনিশদের বের করে আনা হচ্ছে; নিচে বামে- তারপরও আহত হয়েছে অনেক নিরপরাধ নিরীহ নাগরিক; source: ww2db.com । Edited by writer
৩০ নভেম্বর- সীমান্তসকাশের একটি নদী পার হচ্ছে সোভিয়েত পদাতিক বাহিনীর সৈন্যরা; source: waralbum.ru
২ ডিসেম্বর- হেলসিঙ্কির বোম্ব শেল্টারে আশ্রয় নেওয়া কয়েকজন ফিনিশ নারী; source: ww2db.com
হানাদার সোভিয়েতের ট্যাংক ও আর্মার্ড ট্র্যাক্টর ফিনল্যান্ডের বরফ কেটে এগিয়ে যাচ্ছে; source: ww2db.com
২ ডিসেম্বর- অন্যদিকে হেলসিঙ্কির বাইরে সুভিলাথি বিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংস করে বেরিয়ে আসছে কিছু ফিনিশ যোদ্ধা; source: ww2db.com
হুরসুলা গ্রামের কাছাকাছি কোন এক স্থান, পিছু হটে যাচ্ছে ফিনল্যান্ডের স্কি যোদ্ধারা; source: ww2db.com
‘kasapanos’ তথা স্যাচেল চার্জ (বাঁয়ে) এবং ‘Molotivin koktaili’ অর্থাৎ মলোটভ ককটেল (ডানে)- মূলত এই দুটি ছিল সোভিয়েত ট্যাংকের বিপক্ষে ফিনল্যান্ডের প্রধান অস্ত্র; source: pinterest.com
প্রথম দেখায় হয়তো মনে হবে, পুরাতন আমলের কোন বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানের ছবি। কিন্তু এটা কোনো সুখের ছবি নয়; যুদ্ধের দামামা বেজে উঠা ফিনল্যান্ডের শান্ত জনপদ এটি। অশান্ত ফিনল্যান্ডের ডিসেম্বরের শীতের রাতও তাই সোভিয়েত শত্রু বিমান খোঁজার জন্যে ট্রেসারের আলোয় আলোকিত হয়ে আছে; source: Valitut Palat OY, 1973 (Finnish version of US Reader’s Digest magazine)
ফিনিশ সেনাবাহিনীর আর্দালিরা আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে তুলছেন; source: waralbum.ru
১১ ডিসেম্বর, ১৯৩৯- সোভিয়েত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় তৎকালীন লীগ অব নেশনসের সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রাখছেন ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুডলফ হোলস্টি; source: ww2db.com
হেলসিঙ্কিতে অবস্থিত সুইডিশ দূতাবাসের সামনে বেসামরিক ফিনিশ নাগরিকেরা। তারা চায় যেন এই যুদ্ধে সুইডেন ফিনল্যান্ডের পাশে থাকে; source: ww2db.com
১৭ ডিসেম্বর- সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্তরাঞ্চল; বরফ হয়ে যাওয়া কল্লা নদীর কাছে সোভিয়েত বাহিনীর একটি টি-২৬ হালকা ট্যাংক; source: ww2db.com
১৭ ডিসেম্বর- কল্লা নদীর পূর্ব প্রান্ত। গোলাবারুদের বাক্স টেনে নিয়ে যাচ্ছে এক ফিনিশ যোদ্ধা; source: ww2db.com
২৭ ডিসেম্বর, ১৯৩৯- সোভিয়েতের বিমান হামলায় পুড়ছে দক্ষিণ-পশ্চিম ফিনল্যান্ডের বন্দর নগরী তুর্কু-এর একটি বাড়ি; source: AP Photo/theatlantic.com
ফিনল্যান্ডের তুর্কু পোতাশ্রয়ে নোঙ্গর করা ফিনল্যান্ডের একটি প্রতিরক্ষা জাহাজ; source: ww2db.com
২৮ ডিসেম্বর, ১৯৩৯- সম্ভাব্য সোভিয়েত বিমান হামলা রুখে দেওয়ার জন্য রেঞ্জ-ফাইন্ডারে চোখ রেখে নিমগ্ন এক ফিনিশ যোদ্ধা; source: AP Photo/theatlantic.com
১৯৪০-এর উত্তর ফিনল্যান্ড, মাতৃভূমিকে রক্ষায় এগিয়ে এলো নারীরাও। লোটা ভার্ড (Lotta Svärd) প্যারামিলিটারি বাহিনীর এক ফিনিশ নারী যোদ্ধার অতন্দ্র দৃষ্টি নিবদ্ধ শত্রুপক্ষের হানাদার বিমানের খোঁজে; source: SA-kuva (Finnish Army Pictures)
প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করলেও অনেকেই এই ফিনিশ নারীর মতো যুদ্ধে সোভিয়েত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সহায়তা করেছে। এই নারী যেমন তার আংটিটি যুদ্ধ তহবিলে জমা দিচ্ছেন; source: ww2db.com
পিছিয়ে ছিল না ফিনল্যান্ডের শিশুরাও। তারাও বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুরাতন শীতের কাপড় সংগ্রহ করেছিল যুদ্ধরত ফিনিশ যোদ্ধাদের জন্য; source: SA-kuva
সোভিয়েত ইউনিয়নের আগ্রাসন মোকাবেলায় ফিনল্যান্ডের ম্যানারহেইম লাইন- ফিনিশ ফিল্ড মার্শাল ব্যারন কার্ল গুস্তাফ এমিল ম্যানারহেইমের নামানুসারে তৈরি এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বড় বড় পাথরের খণ্ড ও কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বাধার সৃষ্টি করা হয়েছে; source: Mannerheim Line – The Legend of the Winter War by U. Antero & GC Fredrik; page. 170
১২ জানুয়ারি ১৯৪০ সালের উত্তর ফিনল্যান্ড- বরফাবৃত জঙ্গলে পরিখা খনন করে শত্রুহননের অপেক্ষায় ফিনিশ সৈন্যরা; source: Imperial War Museums
ওদিকে বসে নেই সোভিয়েত সৈন্যরাও। তারাও হিসাব কষছে কীভাবে আগ্রাসন দিয়ে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে জয়লাভ করা যায়; source: ww2db.com
ধ্বংস হয়ে স্থির দাঁড়িয়ে ধ্বংসের হাতিয়ার। এটি সোভিয়েত ইউনিয়নের টি-২৬ টাইপের একটি ট্যাংক; source: ww2db.com
১৭ জানুয়ারি, ১৯৪০- ফিনল্যান্ডের যোদ্ধাদের কব্জায় আসা কিছু সোভিয়েত ট্যাংক ও যুদ্ধযান; source: theatlantic.com
১৯ জানুয়ারি, ১৯৪০- মাথার উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে শত্রু বিমান। নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে শুভ্র বরফের উপর দিয়ে দিগ্বিদিক ছুটছে কিছু ফিনিশ যোদ্ধা; source: theatlantic.com
মহাযুদ্ধের ধ্বংসলীলা ফিনল্যান্ডের হাভি কোয়ার্টারে; source: ww2db.com
মহাযুদ্ধের বিভীষিকা- ফ্রস্টবাইটে আক্রান্ত হয়ে ঠিক এভাবেই মারা গেছে এই সোভিয়েত সৈন্য। ছবিটি ১৯৪০ সালের ৩১ জানুয়ারি তোলা হয়েছিল; source: theatlantic.com
স্তালিনের আদেশে ঠিকই ফিনল্যান্ডে এসেছিল তারা, কিন্তু জীবিত ফিরে যাওয়ার সৌভাগ্য লিখা ছিল না এই অভাগা দুই সৈনিকের কপালে। বরফে জমে বসে বসেই ওপারেতে চলে গেলো তারা; source: rarehistoricalphotos.com
ফিনল্যান্ডের লুথেরান গির্জা; বা থেকে ডানে- ২ ফেব্রুয়ারি সোভিয়েতের বিমান হামলার আগে, সময় ও পরে; source: ww2db.com । edited by writer
ফিনল্যান্ডের স্কি যোদ্ধাদের পাশে যে বিশাল শিংওয়ালা প্রাণীটাকে দেখছেন, এর নাম রেইনডিয়ার; source: ww2db.com
উত্তর ফিনল্যান্ডের বরফের রাজ্যে এক ‘মৃত্যুদূত’- আর্কটিকের হাড় কাঁপানো মাইনাস তাপমাত্রায় সোভিয়েত প্রতিপক্ষের অপেক্ষায় সিমো হায়হা। সিমো দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ তো বটেই, ইতিহাসের অন্যতম ভয়ংকর একজন স্নাইপার। কেবলমাত্র সে তার বন্দুকের নিজস্ব Iron Sights দিয়ে Winter War-এর সময় কমপক্ষে ৫০৫ জন শত্রুকে ঘায়েল করেছিল। এর বাইরেও তার আছে সাবমেশিন গান দিয়ে আরো ২০০ শত্রুকে ঘায়েল করার রেকর্ড। ইতিহাসে সিমো হায়হা White Death নামে পরিচিত; source: simohayha.com
খুব সাধারণ পরিবারের সন্তান সিমো হায়হা হয়ে ওঠেন অসাধারণ, যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন তার জন্মভূমিকে আক্রমণ করে বসে। Battle of Kollaa-তে মাইনাস ৪০ ডিগ্রীর হিম ঠাণ্ডায়ও শত্রু হননে অবিচল ছিল এই ফিনিশ বীরযোদ্ধা। তার মারণাস্ত্রে থাকতো না কোনো Telescopic Sights, তার বন্দুকের সীমানায় আসামাত্রই যেন মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়ে যেত শত্রুপক্ষের সোভিয়েত সেনাদের; source: Airsoft Action Magazine
১৯৪০ সালের ৬ মার্চ সোভিয়েত স্নাইপারের গুলি গিয়ে লাগে হায়হার বাম চোয়ালে। ১৩ মার্চ তার জ্ঞান ফেরে। কিন্তু সেদিনই মস্কো শান্তিচুক্তি সই হয়ে যায় সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ফিনল্যান্ডের মধ্যে। বাঁয়ে- গুলিবিদ্ধ হবার পর সিমো হায়হা; ডানে- রাইফেল দিয়ে সম্মানিত করার মুহূর্তে হাস্যজ্জ্বল সিমো হায়হা; source: rarehistoricalphotos.com
ফিচার ইমেজ- Edited by writer
ফুটনোটঃ
-
Trotter, W. R. (2002). The winter war: The Russo-Finnish war of 1939-40. Aurum Press. p. 15.
-
Edwards, R. (2006). White Death: Russia’s War on Finland 1939–40. RUSI Journal, 151(5), p. 18 & 28-29.
-
Tanner, V. (1957). The winter war: Finland against Russia, 1939-1940 (Vol. 312). Stanford University Press. p. 85-86.
-
Ries, T. (1988). Cold will: The defence of Finland, 1st edition. London. p. 77-78.
-
Jowett, P., & Snodgrass, B. (2006). Finland at War 1939–45. Bloomsbury Publishing. p. 6.