মঙ্গোলদের নিয়ে মানুষের জানার আগ্রহের কোনো কমতি নেই। হঠাৎ করে বৃক্ষহীন তৃণাবৃত সমতল প্রান্তর থেকে তাদের জেগে ওঠা, একের পর এক রাজ্য জয়ের অভিযানে নামা এবং সফলভাবে সেগুলোকে পদানত করে বিশ্বের বুকে মঙ্গোল সাম্রাজ্যকে একটি ত্রাস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করাকে অনেকেই একটি অবিশ্বাস্য ঘটনা হিসেবে দেখে থাকেন।
অবিশ্বাস্য, অতুলনীয়, অকল্পনীয় ইত্যাদি যত বিশেষণেই বিশেষায়িত করা হোক না কেন, বাস্তবতা হলো এমন সফলতা অর্জনের পেছনে মঙ্গোল বাহিনীর সুপরিকল্পিত প্রশিক্ষণ, সুবিন্যস্ত রণকৌশল, শৃঙ্খলাবোধ, শত্রুপক্ষের ব্যাপারে বিস্তর জ্ঞানার্জনের মতো বিষয়গুলো মূল নিয়ামকের ভূমিকা রেখেছিলো। তৎকালে মঙ্গোল বাহিনীর একের পর এক যুদ্ধজয়ের রহস্যোদ্ধার নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।
১) প্রশিক্ষণ
খুব অল্প বয়স থেকেই মঙ্গোল শিশুরা অশ্বচালনার প্রশিক্ষণ নেয়া শুরু করতো। এরপর যখন তারা একটি ধনুক ঠিকমতো তুলে ধরার মতো শক্তি অর্জন করতো, তখন থেকেই শুরু হতো তাদের শিকারের প্রশিক্ষণ পর্ব। এ শিকারই তাদেরকে পরবর্তী জীবনের যুদ্ধ-বিগ্রহের জন্য অতি অল্প বয়স থেকে প্রস্তুত করে তুলতো। এগুলোর মধ্য দিয়ে তাদের সহ্য ক্ষমতা, শারীরিক সক্ষমতা, ক্ষিপ্রতা সবই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেত।
ছোটবেলা পেরিয়ে এবার বড়বেলায় অর্থাৎ সরাসরি সেনাবাহিনীর দিকেই নজর দেয়া যাক। মঙ্গোল সেনাবাহিনীকে পর্যায়বৃত্তক্রমে বিভিন্ন ফর্মেশন ও কৌশলে নিয়মিতভাবেই প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে কখন কোন পরিস্থিতির উদ্ভব হয় তা অনুমান করা বেশ কষ্টকর। তাই মাথায় আসা সম্ভাব্য সবরকম পরিস্থিতি মোকাবেলা করতেই তাদের প্রস্তুত করা হতো, যেন প্রতিপক্ষের যেকোনো আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতেই দাঁতভাঙা জবাব দেয়া যায়।
২) তীরন্দাজ বাহিনী
মঙ্গোল সেনাবাহিনীর মূল শক্তিই ছিলো তাদের অশ্বারোহী তীরন্দাজ বাহিনী। তাদের ধনুকগুলো বানানো হতো পশুর শিং, কাঠ ও পেশীতন্তু একত্রে ব্যবহার করে। সেগুলো এতটাই চমৎকার ও কার্যকর ছিলো যে, প্রতিপক্ষ কোনো বাহিনীই পাল্লা ও দৃঢ়তার দিক দিয়ে এত অসাধারণ ধনুক বানাতে পারতো না। মঙ্গোল তীরন্দাজদের কথাই বা বাদ যাবে কেন? তাদের তীরন্দাজ বাহিনীও ছিলো বেশ দক্ষ। বলা হয়ে থাকে, পেছনের দিকেও মঙ্গোল তীরন্দাজরা দক্ষতার সাথে তীর ছুঁড়তে পারতো!
মঙ্গোল বাহিনীর যুদ্ধ কৌশলের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ জুড়েই থাকতো এই তীরন্দাজ বাহিনী। দ্রুতগতি সম্পন্ন ঘোড়ার পিঠে ছুটে গিয়ে তারা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলতো প্রতিপক্ষকে। এরপরই বৃষ্টির মতো ছুটে যেত অগণিত তীর। এ তীরের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়তো প্রতিপক্ষের অজস্র সেনা ও বহনকারী ঘোড়াগুলো।
৩) নিয়মানুবর্তিতা
যেকোনো কাজে সফলতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো কঠোর নিয়মানুবর্তিতা। আর এ বিষয়টি অনুসরণের ব্যাপারে মঙ্গোল সেনাবাহিনীতে কোনো শৈথিল্যই গ্রহণযোগ্য ছিলো না। জেনারেল থেকে শুরু করে সাধারণ সেনা, সবাইকেই বাহিনীর নানা নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলতে হতো।
বিভিন্ন যুদ্ধে বিজয় শেষে প্রাপ্ত মালামাল তারা সমানভাবে ভাগাভাগি করে নিত। প্রশিক্ষণের সময় অত্যন্ত কার্যকরী নানা ব্যায়াম, শৃঙ্খলাবোধ, নেতৃত্ব ও প্রখর বুদ্ধিমত্তা তাদেরকে করে তুলেছিল অজেয় এক বাহিনী।
৪) গোত্রপ্রীতি থেকে জাতিপ্রীতির দ্বার উন্মুক্তকরণ
মঙ্গোলরা ছিলো নানা গোত্রে বিভক্ত। কিন্তু এতসব গোত্রে বিভক্ত থাকলে যে সমষ্টিগতভাবে বিজয়ের পথ বাধাগ্রস্ত হবে, তা চেঙ্গিস খান বেশ ভালোভাবেই অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। তাই দ্য গ্রেট খান চেয়েছিলেন যেন তার অধীনস্ত মঙ্গোলরা শুধু তারই আনুগত্য প্রদর্শন করে, কোনো গোত্রপতির না। এজন্য মঙ্গোলদেরকে গোত্রের বাঁধন থেকে মুক্ত করতে উদ্যোগী হন তিনি। বিভিন্ন গোত্র থেকে সেনাদের নিয়ে মিশ্রণের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর একেকটি ইউনিট গড়ে তোলা হতো। প্রতিটি ইউনিটের সৈন্যরা সেই ইউনিটের অধিপতির পাশাপাশি আনুগত্য প্রদর্শন করতো চেঙ্গিসের প্রতি।
সেনাবাহিনীকে সাজানো হতো ১০ এর গুণীতক আকারে।
- ১০ জন সেনা = ১টি আর্বাতু (নেতা: আর্বান-উ দর্গা)
- ১০০ জন সেনা = ১০টি আর্বাতু = ১টি জাগুন (নেতা: জাগুতু-ঈন দর্গা)
- ১,০০০ জন সেনা = ১০০টি আর্বাতু = ১০টি জাগুন = ১টি মিঙ্গাত (নেতা: মিঙ্গান-ই নয়ান)
- ১০,০০০ জন সেনা = ১,০০০টি আর্বাতু = ১০০টি জাগুন = ১০টি মিঙ্গাত = ১টি তুমেন (নেতা: তুমেতু-ঈন নয়ান)
- তিন থেকে শুরু করে দশ বা ততোধিক তুমেন নিয়ে গঠিত হতো একেকটি অর্দু। এতে সৈন্য সংখ্যা ৩০,০০০ থেকে শুরু করে ১,০০,০০০ এমনকি এর চেয়েও বেশি হতে পারতো।
একইরকম চমৎকার বিন্যাস দেখা যেত শাসক সমাজের মাঝে ক্ষমতা বন্টনেও।
- খাগান -> এর অর্থ সম্রাট। তিনি একটি খাগানাত তথা সাম্রাজ্য শাসন করতেন।
- খান -> খাগানের অধীনস্ত কোনো রাজা। তাকে একজন ভয়ঙ্কর বিজেতাও হতে হতো।
- ইলখান -> খানের অধীনস্ত শাসক। তার শাসন করা ছোট ছোট এলাকাগুলোকে বলা হতো ইলখানাত।
- বয়ান -> খানের জেনারেল, নেতৃত্ব দিতেন একটি অর্দুকে।
এভাবেই বিভিন্ন স্তরে সুন্দর করে সাজানো হয়েছিলো মঙ্গোল শাসক সমাজ ও সেনাবাহিনীকে, যাতে করে তাদের মাঝে গোত্রপ্রীতির চেয়ে মঙ্গোলবোধটিই বেশি গাঢ় হয়ে দেখা দেয়।
৫) শত্রুপক্ষের সম্পর্কে জানাশোনা
যুদ্ধজয়ের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত হলো প্রতিপক্ষ সম্পর্কে সঠিক ও যথাসাধ্য জ্ঞানার্জন করা। আপনি শুধু আপনার বাহিনীর সম্পর্কে শতকরা একশভাগ নিশ্চিত থাকলেন, ওদিকে প্রতিপক্ষ সম্পর্কে থেকে গেলেন একেবারে অন্ধকারে, তবে আসন্ন যুদ্ধে যে আপনার পরাজয় অনেকটাই সুনিশ্চিত, তা বোধহয় না বললেও চলে। এ সত্যটা বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছিলেন চেঙ্গিস খান। তাই তো যেকোনো যুদ্ধের আগে প্রতিপক্ষ সম্পর্কে বিস্তর তথ্য সংগ্রহে সবিশেষ নজর দিতেন তিনি।
শুধু চেঙ্গিস খানের কথাই বা বলছি কেন, তার বংশধররাও তো ঠিক একই কাজ করতো, যার ফলশ্রুতিতে প্রতিপক্ষের চোখে মঙ্গোল বাহিনী হয়ে উঠেছিলো অজেয় এক দুর্গের সমতুল্য। যেকোনো যুদ্ধের আগে সেই অঞ্চলে স্কাউট (শত্রুর গতিবিধি, শক্তি-সামর্থ্য ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রেরিত ব্যক্তি, কিন্তু সে গুপ্তচর নয়) ও গুপ্তচর পাঠাতো তারা। তাদের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের রাস্তাঘাট, ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যবহৃত রাস্তা, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, শহর, জনসংখ্যা, পাহাড়-পর্বতের অবস্থান, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ইত্যাদি সম্পর্কে বিশদভাবে ঘাটিয়ে নিত মঙ্গোল সেনাপতিরা। যখন সবকিছু মিলিয়ে দুইয়ে দুইয়ে চার হয়ে যেত, তখনই সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তো তারা।
উদাহরণস্বরুপ, মঙ্গোলদের ইতিহাসের অন্যতম সেরা জেনারেল সুবুতাইয়ের পরিকল্পনার কথা না বললেই নয়। পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরিতে আক্রমণের ১০ বছর আগে থেকে তিনি সেই অঞ্চলে গুপ্তচর নিয়োগ করে রেখেছিলেন সেখানকার খুঁটিনাটি সকল বিষয়ে সম্যক জ্ঞানার্জনের আশায়। এতদিন আগে থেকে এমন সুদূরপ্রসারী চিন্তা-ভাবনা যে কারো মাথায় আসতে পারে, তা ভাবলে অবাক না হয়ে উপায় থাকে না। কোনো জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে থেকেই তারা এমনটা করে থাকতো।
৬) অবরোধ বিষয়ক যুদ্ধকৌশল
উত্তর চীনে রাজ্য বিস্তার অভিযানে নেমে এক অদ্ভুত সমস্যার মুখোমুখি হলো মঙ্গোলরা। সেখানে এক রাজ্যে আক্রমণ করতে গিয়ে তারা দেখতে পেলো, পুরো রাজ্যটাই উঁচু, শক্তিশালী দেয়ালে ঘেরা। এর আগে এমন কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয় নি তারা। শুরুতে কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়ে গিয়েছিলো সেনাপতিদের। কারণ সহসাই তারা বুঝতে পারলো যে, তাদের শক্তিশালী অশ্বারোহী বাহিনীও এমন দেয়ালের কাছে হার মানতে বাধ্য। শুরুতে হতোদ্যম হয়ে গেলেও হার মানলো না মঙ্গোলরা।
অবশেষে সিদ্ধান্ত হলো, দেয়ালগুলো গুড়িয়েই শত্রুর উপর আক্রমণ করা হবে। কিন্তু দেয়াল ভাঙার মতো দক্ষ কারিগর যে তাদের ছিলো না! এজন্য সন্ধান চালানো হলো বন্দীদের মাঝে, শেষপর্যন্ত পাওয়াও গেলো কাঙ্ক্ষিত কারিগরদের সন্ধান। সেই কারিগরদের দিয়ে বানিয়ে নেয়া হলো বিভিন্ন ক্যাটাপুল্ট ও সিজ টাওয়ার, যাতে করে প্রতিপক্ষের দেয়ালের মতো অবরোধ সৃষ্টিকারী স্থাপনাগুলো ধুলোয় মিশিয়ে দেয়া যায়। এরপর থেকে মঙ্গোলদের প্রতিটি অভিযানেই সঙ্গী হতো সেসব কারিগররা, যাদের কাজই হতো বিভিন্ন রকম দেয়াল বিধ্বংসী যুদ্ধযান ও যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করা। এমনকি কোনো শহরে আক্রমণ করার আগে সেখানকার জনগণদের মাঝে যারা কারিগরি নানা বিষয়ে জ্ঞান রাখতো, তাদেরকে আলাদা করে এরপরই অন্যান্য জনগণের উপর গণহত্যা চালাতো মঙ্গোলরা। কারণ যুদ্ধাভিযানে কারিগরদের গুরুত্ব তারা বেশ ভালোভাবেই অনুধাবন করতে পেরেছিলো।
একসময় অবস্থা এতটাই ভয়াবহ পর্যায়ে চলে গিয়েছিলো যে, মঙ্গোলদের সামনে প্রতিপক্ষের দেয়ালগুলো কোনোরুপ বাঁধাই তৈরি করতে পারতো না। সবকিছু ধ্বংস করেই সামনে এগিয়ে যেত তারা। প্রতিপক্ষকে শেষ করে দিতে নদীর গতিপথ পাল্টে দেয়ার মতো কাজ পর্যন্ত তারা করেছে!
৭) মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধকৌশল
মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধকৌশলে বেশ পারদর্শী ছিলো মঙ্গোলরা। অনেক সময়ই দেখা যেত যে, প্রতিপক্ষের সৈন্য সংখ্যা মঙ্গোলদের তুলনায় অনেক বেশি। তবুও শত্রুর মনে মঙ্গোলরা এমনই ভীতির সঞ্চার করতে সক্ষম হয়েছিলো যে, সেই সংখ্যাধিক্য ভুলে মঙ্গোলদের ভয়ে থরথর করে কাঁপত প্রতিপক্ষের সেনারা। আর এতেই যেন অর্ধেক বিজয় পেয়ে যেত মঙ্গোল সেনারা!
যদি কোনো রাজ্য মঙ্গোলদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিত, তবে তাদের আর রক্ষে থাকতো না। সেই রাজ্যটিকে একেবারে ধুলোয় মিশিয়ে দিত মঙ্গোলরা। বাড়ি-ঘরে লুন্ঠন, অগ্নি সংযোগ, শ্লীলতাহানি তো চলতোই, সেই সাথে চলতো নির্বিচারে গণহত্যা। নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধ কেউই বাদ যেত না নিহতের তালিকা থেকে। এরপর নিহতদের খুলি দিয়ে পিরামিড বানাত তারা!
অবশ্য সবাইকে মারতো না তারা, বাঁচিয়ে রাখতো অল্প কয়েকজনকে। তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখার পেছনে উদ্দেশ্য ছিলো বেশ বিচিত্র। এই মানুষগুলো জান বাঁচাতে পালিয়ে যেত পার্শ্ববর্তী অন্য কোনো রাজ্যে। সেখানে আশ্রয় পেয়ে তারা জানাতো তাদের সাথে কেমন আচরণ করেছে মঙ্গোলরা। এমন নারকীয় হত্যাকাণ্ডের কথা জানতে পেরে ঐ রাজ্যের অধিবাসীরাও মারাত্মক ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে উঠতো। মঙ্গোলদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণের সাহস বা ইচ্ছা কোনোটাই তাদের থাকতো না। আর ঠিক এটাই চাইতো মঙ্গোল বাহিনী। কিছুদিন পর তাই তারা যখন সেই রাজ্যে আক্রমণ চালাতো, তখন সেখানকার অধিবাসীরা বিনা প্রতিরোধে আত্মসমর্পণ করে নিতো। বিজিত অঞ্চলগুলো থেকে নিয়মিত কর এবং প্রয়োজনে সেনাসদস্য পাঠাতে হবে- এমন চুক্তি করে তবেই সেখান থেকে চলে যেত মঙ্গোল বাহিনী।
এভাবেই নিয়মানুবর্তিতা, গোয়েন্দাবাহিনী, নৃশংসতা, প্রশিক্ষণ, যুগোপযোগী যুদ্ধকৌশলের মতো বিষয়গুলো কাজে লাগিয়ে দীর্ঘকাল ধরে বিশ্বের বুকে নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালিয়ে গিয়েছে দুর্ধর্ষ মঙ্গোল সেনাবাহিনী।