‘রোমের পতন’ বলতে মূলত পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের পতনকেই বোঝানো হয়ে থাকে। ঐতিহাসিকগণ এর পেছনে বহিঃশক্তির আক্রমণ, অর্থনৈতিক বিপর্যয়, নৈতিক অবক্ষয়, আবহাওয়ার বিপর্যয়, অত্যাধিক বিস্তৃত সাম্রাজ্য, ধর্মীয় সংস্কার, প্রশাসনিক দুর্বলতা ইত্যাদি নানাবিধ বিষয়কে চিহ্নিত করে থাকেন। কেউ কেউ আবার ৪৭৬ খ্রিষ্টাব্দে পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের পতনকে পুরো রোমান সাম্রাজ্যের পতন বলে মানতে নারাজ। তাদের যুক্তি হলো- যেহেতু বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য নাম নিয়ে পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য ১৪৫৩ সাল পর্যন্ত টিকে ছিলো (ওসমানীয় সাম্রাজ্যের হাতে কনস্টান্টিনোপলের পতনের আগপর্যন্ত), সেহেতু রোমান সাম্রাজ্যের পতন আসলে ঘটে ১৪৫৩ সালেই, ৪৭৬ সালে নয়।
তবে প্রসিদ্ধ মত হিসেবে যেহেতু পশ্চিম রোমের পতনকেই রোমের পতন হিসেবে ধরা হয়ে থাকে, তাই আমরাও সেই একই পথে হাঁটছি। সেই পথেই হাঁটতে হাঁটতে চলুন রোমের পতনের মূল কারণগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
বর্বর গোত্রের আক্রমণ
রোমের পতনের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয়ে থাকে বিভিন্ন বর্বর গোত্রের একের পর এক আক্রমণকে। বিভিন্ন জার্মানীয় গোত্রের সাথে অনেক আগে থেকেই রোমান সাম্রাজ্যের ঝামেলা চলছিলো। তবে তৃতীয় শতকে এসে গথদের মতো বর্বর গোত্র রোমের সীমানার একেবারে ভেতরে প্রবেশ করে তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলা শুরু করে দিয়েছিলো।
চতুর্থ শতাব্দীর শেষের দিকে এসে রোমানরা জার্মানীয় সেই গোত্রগুলোর উত্থানের বিষয়টা বেশ ভালোমতোই টের পায়। অবশেষে ৪১০ খ্রিষ্টাব্দে ভিজিগথ রাজা আলারিকের হাতে পতন ঘটে রোম শহরের। এরপর কয়েক দশক ধরে ক্রমাগত শত্রুর হাতে আক্রান্ত হবার আতঙ্কের মাঝেই দিনাতিপাত করতে হয়েছিলো রোমের অধিবাসীদের। ৪৫৫ সালে ‘চিরন্তন শহর’ বলে পরিচিত রোম আবারো আক্রান্ত হয়, এবার শত্রুর ভূমিকায় ছিলো ভ্যান্ডালরা।
অবশেষে আসে ৪৭৬ খ্রিষ্টাব্দ। জার্মানীয় নেতা ওদোয়াচারের নেতৃত্বে সংঘটিত বিদ্রোহে ক্ষমতাচ্যুত হন সম্রাট রমুলাস অগাস্টাস। অনেকের মতে ৪৭৬ খ্রিষ্টাব্দের সেই আঘাতই পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দিয়েছিলো।
অর্থনৈতিক দৈন্য
বহিঃশত্রুর আক্রমণের পাশাপাশি আগুন লেগেছিলো রোমের অন্দরমহলেও। ক্ষয়িষ্ণু অর্থনীতি ধীরে ধীরে গ্রাস করে ফেলছিলো সাম্রাজ্যকে। দিনের পর দিন চলতে থাকা যুদ্ধ ও অতিরিক্ত ব্যয় নিঃশেষ করে ফেলেছিলো রাজ কোষাগার। অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান করের বোঝা ও মুদ্রাস্ফীতি দিন দিন ধনী-দরিদ্রের মধ্যকার ব্যবধান বাড়িয়েই চলেছিলো। শুনতে হাস্যকর লাগলেও এ কথা সত্য যে, কর সংগ্রাহকদের এড়াতে অনেক ধনী ব্যক্তি পর্যন্ত সপরিবারে পালিয়ে গিয়েছিলেন রোমের গ্রামাঞ্চলগুলোতে। সেখানে গিয়ে তারা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্বাধীন জায়গীরদারি।
দক্ষ শ্রমিকের অভাব
এবারের কারণটাও বেশ বিস্ময়কর। রোমের পতনের অন্যতম কারণ ছিলো পর্যাপ্ত দক্ষ শ্রমিকের অভাব। রাজ্যটির অর্থনীতি অনেকাংশেই ক্রীতদাসদের শ্রমের উপর নির্ভরশীল ছিলো। আর রাজ্য জয় করে বিজিত অঞ্চলগুলোর লোকজনদের সেনাবাহিনী সেসব কাজেই লাগাতো। কিন্তু দ্বিতীয় শতকে রাজ্যের সম্প্রসারণ বন্ধ হয়ে গেলে থেমে যায় ক্রীতদাসদের সরবরাহ, বন্ধ হয়ে যায় যুদ্ধ জয় থেকে সম্পদ লাভের প্রক্রিয়া। ওদিকে পঞ্চম শতাব্দীতে ভ্যান্ডালরা উত্তর আফ্রিকা দাবি করে বসে, ভূমধ্যসাগরে চালাতে শুরু করে দস্যুপনা।
এভাবে ধীরে ধীরে বাণিজ্যিক ও কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল অর্থনীতির বারোটা বেজে যাওয়ায় ভেঙে যেতে শুরু করে রোমান সাম্রাজ্যের অর্থনীতির কোমর, হাতছাড়া হতে থাকে ইউরোপের উপর তার নিয়ন্ত্রণ।
পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যের উত্থান
শাসনকার্যে সুবিধার জন্য সম্রাট ডায়োক্লেটিয়ান রোমকে পূর্ব ও পশ্চিম এ দুই অংশে ভাগ করেছিলেন। বিভক্তিকরণের এ উদ্দেশ্য সাময়িকভাবে সফলতার মুখ দেখলেও দিনকে দিন রাজ্য দুটির মাঝে দূরত্ব বাড়তেই থাকে। বহিঃশত্রুর আক্রমণ একসাথে ঠেকানোর পরিবর্তে সম্পদ ও সেনাবাহিনী নিয়ে প্রায় সময়ই তাদের গন্ডগোল বেঁধে যেত।
এভাবে গ্রীকভাষী পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য দিন দিন সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলতে থাকে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক অনটন ঘিরে ধরতে শুরু করে ল্যাটিনভাষী পশ্চিম ভাগকে। এমনকি পূর্ব সাম্রাজ্য তাদের আক্রমণ করা বর্বরদের লেলিয়ে দিতো পশ্চিমের দিকে! কনস্টান্টিন ও তার উত্তরসূরিরা নিশ্চিত করেছিলেন যেন পূর্ব রোমকে শত্রুর আক্রমণ থেকে সর্বোচ্চ সুরক্ষা দেয়া যায়। কিন্তু পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের ব্যাপারে এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় নি। এভাবে ধীরে ধীরে পঞ্চম শতাব্দীতে পশ্চিম সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক কাঠামো একপ্রকার ভেঙেই পড়েছিলো। অন্যদিকে ওসমানীয় সাম্রাজ্যের হাতে পতনের আগ পর্যন্ত টিকে ছিলো বাইজন্টাইন তথা পূর্ব সাম্রাজ্য।
অতিকায় সাম্রাজ্য ও বৃহদাকার সেনাবাহিনী
স্বর্ণশিখরে থাকাকালে আটলান্টিক সমুদ্র থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যে ইউফ্রেতিস নদী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলো রোমান সাম্রাজ্যের সীমানা। কিন্তু এই বৃহৎ আকারই আসলে এর পতনের পেছনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। এত বড় রাজ্যের প্রশাসনিক কার্যক্রম সঠিকভাবে চালানো ছিলো আসলেই বেশ দুরুহ এক কাজ।
চমৎকার যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও রাজ্যের বিভিন্ন অংশ ঠিকমতো ও কার্যকরভাবে শাসন করতে পারছিলো না তারা। স্থানীয় বিদ্রোহ ও বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রাজ্যকে বাঁচাতে প্রয়োজনীয় সেনাবাহিনী যোগাড় করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছিলো তাদের। সেনাবাহিনীকে জিইয়ে রাখতে গিয়ে গবেষণামূলক কাজে অর্থের সংস্থান অনেক কমে গিয়েছিলো। ফলে প্রযুক্তিগত অনগ্রসরতা তাদের পতনের পেছনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলো।
দূর্নীতি ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা
বৃহদাকার সাম্রাজ্যের পাশাপাশি অদক্ষ ও অপরিণামদর্শী নেতৃত্ব রোমের পতনের পেছনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলো। রোমের শাসনভার নিজের কাঁধে তুলে নেয়া সবসময়ই একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ বলে বিবেচিত ছিলো। কিন্তু দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতকে তা যেন ছিলো নিজের গলায় নিজেই ফাঁসির দড়ি লাগানোর নামান্তর।
গৃহযুদ্ধ পুরো রাজ্যকে করে তুলেছিলো অস্থিতিশীল। মাত্র ৭৫ বছর সময়ের ব্যবধানে ২০ জন শাসকের আগমন থেকেই বোঝা যায় তখন কতটা টালমাটাল ছিলো রোমের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। ‘রক্ষক যখন ভক্ষক’ প্রবাদটির মতো সম্রাট হন্তারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলো সম্রাটের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী বাহিনী হিসেবে পরিচিত ‘প্রিটোরিয়ান গার্ড’। তারা তাদের ইচ্ছেমতো সম্রাটকে খুন করতো, আবার ক্ষমতায় বসাতো। এমনকি একবার তারা কাকে পরবর্তীতে সিংহাসনে বসাবে তা নিয়ে নিলাম পর্যন্ত হয়েছিলো! এভাবে ক্রমাগত রাজনৈতিক অস্থিরতা জনগণকে তাদের নেতাদের উপর থেকে ভরসা হারিয়ে ফেলতে বাধ্য করেছিলো।
হানদের আক্রমণ ও বর্বর গোত্রগুলোর রোমে আগমন
এখন যে কারণটার কথা বলতে যাচ্ছি, তা যেন ‘যেমন কর্ম, তেমন ফল’ প্রবাদ বাক্যটির সার্থক রুপায়ন।
চতুর্থ শতাব্দীর শেষের দিকে ইউরোপে হানদের আক্রমণ শুরু হয়। তারা যখন উত্তর ইউরোপে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করে, তখন অনেক জার্মানীয় গোত্র রোম সাম্রাজ্যের সীমান্তে জান বাঁচাতে ছুটে আসে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও দানিয়ুব নদীর দক্ষিণ তীর দিয়ে রোমানরা ভিজিগথ গোত্রের দুর্ভাগা মানুষগুলোকে রোমে প্রবেশের অনুমতি দেয়। কিন্তু এরপরই শুরু হয় তাদের উপর রোমানদের নির্যাতন। ঐতিহাসিক অ্যামিয়ানাস মার্সেলিনাসের মতে, অনেক রোমান অফিসার মানবতাবোধ বিসর্জন দিয়ে কয়েক টুকরো কুকুরের মাংসের বিনিময়ে সেসব ভিজিগথদের সন্তানদের ছিনিয়ে নিয়ে ক্রীতদাস হিসেবে কাজে লাগাতো।
রোমানদের নির্যাতন সইতে না পেরে অবশেষে বিদ্রোহ করে বসে ভিজিগথরা। ৩৭৮ খ্রিষ্টাব্দে তাদের প্রবল আক্রমণের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় রোমান বাহিনী, নিহত হন পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যের অধিপতি ভ্যালেন্স। সেইবার কোনোমতে একটা শান্তিচুক্তি করে পার পেলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয় নি রোমানদের জন্য। ৪১০ খ্রিষ্টাব্দে ভিজিগথ রাজা আলারিক পশ্চিম পানে অগ্রসর হয়ে পতন ঘটান রোম শহরের। পশ্চিম রোমের এহেন দুর্বলাবস্থায় উত্থান ঘটে ভ্যান্ডাল ও স্যাক্সনদের। তারা তখন ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বেড়াতে থাকে রোম সাম্রাজ্যের সীমানা ধরে, দখল করে নিতে থাকে ব্রিটেন, স্পেন ও উত্তর আফ্রিকা।
ক্ষয়িষ্ণু শক্তির রোমান সেনাবাহিনী
এককালে রোমান সেনাবাহিনী ছিলো প্রতিপক্ষের কাছে একইসাথে ঈর্ষা ও আতঙ্কের সংমিশ্রণে গঠিত একটি নাম। কিন্তু কালক্রমে অতীতের ঐতিহ্য ও শৌর্যবীর্য হারিয়ে ফেলে রোমান বাহিনী। তাদের সৈন্য নিয়োগ ও পরিচালনা প্রক্রিয়াতেও আসে বিস্তর পরিবর্তন। রোমান জনগণ একসময় তাদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করতে আরম্ভ করে। ফলে ডায়োক্লেটিয়ান ও কনস্টান্টিনের মতো সম্রাটেরা বাধ্য্য হয়েই বিদেশী ভাড়াটে সেনাদের দিয়ে তাদের সেনাবাহিনী ভর্তি করতে বাধ্য হন। তখন সেনাবাহিনীতে প্রচুর গথ ও অন্যান্য বর্বর গোত্রের সেনাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। সেসব বর্বর সেনার সংখ্যা এতই অধিক হয়ে গিয়েছিলো যে, রোমানরা তখন ল্যাটিন শব্দ ‘Soldier’ এর পরিবর্তে ‘Barbarus’ ব্যবহার করতো তাদের সেনাদলকে বোঝাতে।
বর্বর সেই সেনারা যুদ্ধক্ষেত্রে মারাত্মক কার্যকর হলেও রোমান সম্রাটদের প্রতি তাদের আনুগত্য ছিলো শূন্যের কোঠায়। তাদের অফিসাররা প্রায়সময়ই রোমান উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করতো। পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্য পতন ঘটানোর পেছনে দায়ী বর্বর সেনাদের অনেকেই এককালে কাজ করেছে রোমান সেনাবাহিনীতেই।
সিনেট ও সম্রাটের দ্বন্দ্ব
রোমের পতনের অন্যতম কারণ হিসেবে অনেকেই সিনেট ও সম্রাটের দ্বন্দ্বকে দায়ী করে থাকেন। সেখানকার ধর্মীয়, সামাজিক ও সামরিক বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্ণ ক্ষমতা ছিলো একজন সম্রাটের। সিনেট সেখানে কাজ করতো পরামর্শক সংস্থা হিসেবে। অতিরিক্ত ক্ষমতার অধিকারী সম্রাটগণ নিজেদেরকে আইনের উর্ধ্বে ভেবে জড়িয়ে পড়তে থাকেন নানা দুর্নীতিতে, শুরু করে দেন অত্যাধিক আয়েসী জীবনযাপন। এসব নানা বিষয়ের উপর ভিত্তি করেই সিনেটের সাথে সম্রাটদের তৈরি হতো দূরত্ব ও দ্বন্দ্ব।
নৈতিক অবক্ষয়
চরিত্র মানুষের অমূল্য সম্পদ। এই সম্পদটি হারালে অন্য সকল সম্পদই মূল্যহীন হয়ে যায়। রোমের পতনের পেছনে এই অমূল্য সম্পদটির হারিয়ে যাওয়াও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলো।
সম্রাট থেকে শুরু করে সমাজের উঁচু শ্রেণীর মাঝে সচ্চরিত্র নামক জিনিসটির খুব অভাব দেখা যাচ্ছিলো। অবাধ যৌনাচার ছেয়ে ফেলেছিলো পুরো সমাজ ব্যবস্থাকেই। সম্রাট টাইবেরিয়াস একদল তরুণ ছেলে রেখেছিলেন পরিতৃপ্তি লাভের আকাঙ্ক্ষায়, ইনসেস্টে লিপ্ত সম্রাট নিরো এক দাসকে খোজা করে দিয়েছিলেন তার সাথে মিলিত হবার অভিপ্রায়ে। সম্রাট কমোডাস থিয়েটার কিংবা খেলাধুলায় তার হারেমের উপপত্নীদের সাথে নিয়ে নারীদের পোষাক পরে হাজির হয়ে ক্ষেপিয়ে তুলেছিলেন রোমান জনগণকে।
সমাজের উচুস্তরের এই ক্ষয় রোগ ধীরে ধীরে এসেছিলো নিচু স্তরেও। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অশালীন কাজকর্ম ও অবাধ যৌনাচার দেখা যেতে শুরু করে। পশুর সাথে যৌনাচার সহ আরো নানা অশালীন কাজকারবার কলোসিয়ামে দেখানো হতো শুধুমাত্র উপস্থিত জনতাকে বিনোদন দেয়ার জন্য। পতিতালয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিলো বহুগুণে। অশ্বরথের রেস ও গ্ল্যাডিয়েটরদের খেলা নিয়ে জুয়া খেলাও ছড়িয়ে পড়েছিলো।
এভাবেই নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ইতিহাসের পাতায় ঠাই খুঁজে নিয়েছিলো এককালের প্রবল পরাক্রমশালী রোমান সাম্রাজ্য। তাদের এ পতনের ঘটনা আমাদের জন্যও শিক্ষণীয় অনেক নিদর্শন রেখে গেছে। তাই আমি-আপনি সেই কারণগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে নিয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত ও জাতীয় জীবনকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারলে সেটাই হবে প্রকৃত জ্ঞানের পরিচায়ক।