Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

স্যোশাল মিডিয়া কাঁপানো দুই অমীমাংসিত ভূতুড়ে ঘটনা

আপনি কি ভূত বিশ্বাস করেন? প্রশ্নটি শুনে কেউ হয়তো রেগে যাবেন, আবার কেউবা হয়তো হেসে উড়িয়ে দেবেন। অনেক মানুষই ভূত বিশ্বাস করেন না। আবার এমন অনেক মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে যারা দিনের গনগনে রৌদ্রোজ্জ্বল আলোতে ভূতের অস্তিত্বকে অস্বীকার করলেও সন্ধ্যা-রাত্রি নেমে আসতে না আসতেই তাদের সেই অবিশ্বাসের বদ্ধমূল ধারণায় ভাটা পড়তে শুরু করে। ভূত বিশ্বাস করেন বা না-ই করেন, ভূতের গল্প ভালোবাসেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া সত্যিই দুষ্কর।

ভৌতিক পরিবেশের হাতছানি; Image Source: worth1000.com

ভয় পাওয়া খুব একটা খারাপ না! কি বলেন পাঠক বন্ধুরা? একবার ভাবুন তো, এক অমাবস্যার শীতের রাত। চারদিক যখন নিস্তব্ধ-নিশ্চুপ, আপনি তখন একাকী শুনশান রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। হঠাৎ বলা নেই, কওয়া নেই, কোথা থেকে একটা কালো বিড়াল পাশ দিয়ে চলে গেল, সাথে এক দমকা হাওয়ার ঝাপটা এসে আপনার চুল উড়িয়ে দিল। তার কিছুক্ষণ পর ভেসে আসা বিড়ালের চাপা কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলেন। দূর থেকে শুনে যেন মনে হচ্ছে কোনো বাচ্চা মেয়ে আপনাকে দেখে কাঁদছে!

সেসময় আপনি ভয়ে হয়তো সিঁটিয়ে যাচ্ছেন বা বুকের মধ্যে ঢিপঢিপ শব্দে কেঁপে উঠছে হৃদপিণ্ডটা, পেছন দিকে তাকাতেও সংশয়! এ ধরনের পরিস্থিতিতে আপনি কিংবা আমি কখনও কি পড়িনি? আর এভাবেই ভয়ের স্বাদটা পাওয়া যায় বটে।

আজ আপনাদের এমন দুটি ভৌতিক ঘটনার কথা জানাব যা বেশ কিছুদিন আগে বিদেশি বিভিন্ন নিউজ মিডিয়ায় আর সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সাড়া জাগিয়েছিল।

এক রাশিয়ান নববধূর কথা

গ্রাম্য বুড়ো-বুড়িদের কাছ থেকে একটি কথা প্রায়ই শোনা যায়, অপঘাতে কারো মৃত্যু হলে সেই মৃত আত্মা নাকি মুক্তি পায় না৷ অতৃপ্ত আত্মা হিসেবে সে ব্যক্তির যে স্থানে মৃত্যু হয়েছিল, সেই স্থানের আশপাশেই নাকি ঘুরে বেড়ায়। জেনে কিংবা না জেনে মানুষের ক্ষতি করে সে মৃত আত্মা। এমনই এক অতৃপ্ত আত্মার কথা শোনা যায় রাশিয়ার এক নববধূর ঘটনার অন্তরালে।

ঘটনাটি ১৯৮৯ সালের। এক রাশিয়ান নবদম্পতি বন্ধুদের সাথে তাদের বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল মস্কোর অভিজাত এক পার্কে।

রাশিয়ান নববধূর অতৃপ্ত আত্মার কল্পিত ছায়া

অনুষ্ঠানে যোগদানের উদ্দেশ্যে নববিবাহিত দম্পতি একটি সাজানো গাড়িতে করে যাত্রা করছিলেন। লুবার্টসি এবং লিকার্নিয়ো শহরের মাঝামাঝি স্থানে এসে তাদের গাড়ির সাথে একটি লরির তীব্র সংঘর্ষ হয়। এ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন দুজনই। স্বামী বেঁচে গেলেও স্ত্রী সেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। নববধূর সংসার করার স্বপ্ন রয়ে যায় অধরা৷ মৃত্যুর ২৭ বছর পরও নাকি সেই নববধূর আত্মার মুক্তি মেলেনি৷ আজও তার অতৃপ্ত আত্মা ঐ দুর্ঘটনাস্থলে দেখা যায়৷ সেই রাস্তায় আজও ঘুরে ফিরে বেড়ায় তার অশরীরী ছায়া!

কথিত রেকর্ডকৃত ভিডিওতে দেখা অশরীরী আত্মার চলাচল

শুধু দেখা দিয়েই কিন্তু মিলিয়ে যায় না এই অশরীরী আত্মা। অনিষ্টও করে সেই পথের যাত্রীদের৷ ঐ দুর্ঘটনার বেশ কিছুদিন পর ঠিক একই ঘটনাস্থলেই আরও ১০টি গাড়ি অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে৷ শুধু তা-ই নয়, ঐ পথ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ির চালকরা নানা ধরনের ভয়ঙ্কর ঘটনার সম্মুখীন হন। এই যেমন চলার পথে হঠাৎ করেই নাকি রাস্তা কুয়াশায় ঢেকে যাওয়া, ঐ পথ দিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা, কখনো আবার অদ্ভুত সব আওয়াজ শোনা, কখনোবা কোনো কিছুর সাথে ধাক্কা খেয়ে গাড়ির অ্যাকসিডেন্ট ঘটা ইত্যাদি নানা ভীতিকর ঘটনা ঘটেই চলেছে।

করিনা দিমিত্রিভা নামক এক গাড়িচালক নিজেকে এসব ঘটনার এক প্রত্যক্ষ সাক্ষী বলে দাবি করেছেন। তিনি নাকি বেশ কিছুদিন আগে একটি ভিডিও রেকর্ড করেন৷ ভিডিওতে দেখা যায় বিবাহের পোশাক পরা এক নারী ছায়ামূর্তি ঐ পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছে। একবার তাকে দেখা যাচ্ছে, পরের মুহূর্তেই সে মিলিয়ে যাচ্ছে৷

কথিত ভিডিও থেকে ধারণকৃত স্থিরচিত্রে ঝাপসা ভৌতিক ছায়ার উপস্থিতি

ধারণকৃত সেই ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে ঐ এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। ঐ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় পাচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ৷ ড্রাইভাররা পারতপক্ষে ঐ রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যেতে চাইছেন না।

ঘোস্ট হান্টার ইলিয়া স্যাগলিনি ও তার দল

ঘোস্ট হান্টাররাও সেই স্থানে গিয়ে সন্দেহজনক ব্যাপার লক্ষ্য করেছেন৷ ইলিয়া স্যাগলিনি নামের একজন প্যারানরমাল পর্যবেক্ষকের দাবি, দুই বছর আগে সে রাস্তাকে ঘিরে একটি ডকুমেন্টরি করা হয়। তাতে একটি আবছায়া নারী মূর্তিকে সড়কের একপাশে দেখা যায় যা সেসময় খুবই আলোড়ন ফেলেছিল।

 অভিশপ্ত ট্যুরিস্ট লজ

পর্যটকদের কাছে কালিম্পংয়ের খ্যাতি বহুকাল ধরে। এ শৈল শহর রোমান্টিক মাদকতায় আচ্ছন্ন করেছে আপামর বাঙালিকে। যাদের ভ্রমণের নেশা আছে আর তারা যদি কালিম্পংয়ে গিয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয় জানেন, এই শৈলাবাসের এক অন্যতম বিখ্যাত হোটেল মর্গ্যান হাউজের কথা।

হোটেল মর্গ্যান হাউজ

১৯৩০ সালে বাড়িটি তৈরি করা হয়। বাড়িটি তৈরি করেন জর্জ মর্গ্যান নামের এক ব্রিটিশ অফিসার। তিনি ও তার স্ত্রী বাড়িটিতে বসবাস করতেন। ব্রিটিশ আমলের পুরনো এই বাড়ি থেকে পাহাড়ের নান্দনিক শোভা, শৈত্য আর সবুজের সমারোহ দেখে যে কেউ এ বাড়িটিতে থাকতে চাইতে পারেন। কিন্ত এর অতীত ইতিহাস জানলে যে কারো অসীম সাহস নিমিষেই উধাও হয়ে যেতেই পারে! রীতিমতো সাহসী না হলে মর্গ্যান হাউজে থাকতে পারেন না কেউই। ভয়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন!

অভিশপ্ত বাড়ি মর্গ্যান হাউজ

কারণ মর্গ্যান হাউজ এক অভিশপ্ত বাড়ি হিসেবে সকলের কাছেই পরিচিত। আজও নাকি এক অতৃপ্ত আত্মা সারা দিন-রাত ঘুরে বেড়ায় লজের এক ঘর থেকে অন্য ঘরে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে যতটুকু জানা যায়, ঠাণ্ডা আবহাওয়ার জন্য ব্রিটিশদের প্রিয় শহর ছিল দার্জিলিং। সেজন্য দার্জিলিংয়ে ভিড় সবসময় লেগেই থাকত। জর্জ মর্গ্যান যখন এই বাড়ি বানিয়েছিলেন তখন তার ইচ্ছে ছিল স্ত্রীর সঙ্গে পাহাড়ের কোলে নিরিবিলিতে থাকার। তাই তিনি বেছে নিয়েছিলেন কালিম্পংয়ের নিভৃত পরিবেশ।

কালিম্পংয়ের সবুজ ঘাসে ঢাকা অসমান লনের প্রান্তর, ধুপি আর পাইন গাছের জঙ্গল, ক্ষণে ক্ষণে ভেসে আসা মেঘের দল , দেলো পাহাড়ে ছড়িয়ে থাকা কত চেনা অচেনা ফুল-লতা-পাতাবাহার- সব মিলিয়ে মর্গ্যান দম্পতির ভালো লেগে যায় সেখানকার পরিবেশ। এভাবে সুখেই কেটে যাচ্ছিল বেশ ক’টা দিন। বাকি জীবনটা সেখানেই কাটিয়ে দেবেন বলে স্থির করেন এই দম্পতি। মর্গ্যানের ইচ্ছা পুরোপুরি পূরণ হয়নি। স্ত্রীর সঙ্গে তিনি সে বাড়িতে বেশিদিন থাকতে পারেননি। আকস্মিকভাবেই একদিন মৃত্যু হয় লেডি মর্গ্যানের। তারপর ভগ্ন হৃদয় নিয়েই বাড়িটি বিক্রি করে দেশে চলে যান জর্জ মর্গ্যান।

অভিশপ্ত মর্গ্যান হাউজের সান্ধ্যকালীন দৃশ্যপট

ঘটনার অনেকদিন পর, যখন সাহেবের সাধের বাড়িটি ট্যুরিস্ট লজে পরিণত হয়, তখন থেকেই নজরে আসে এক অদ্ভুত ব্যাপার! লেডি মর্গ্যান কোথাও যাননি! আজও তার আত্মা বাড়িটিতেই রয়ে গিয়েছে। সারা বাড়ি তিনি ঘুরে বেড়ান। হয়তো খুঁজে বেড়ান স্বামীকে।

তবে লেডি মর্গ্যান আজ পর্যন্ত কারও কোনো ক্ষতি করেননি। তিনি শুধু বাড়িতে পায়চারি করে বেড়ান। শোনা যায় তার হাই হিলের শব্দ। কখনোবা শোনা যায় তার চাপা কণ্ঠস্বর। ফিসফিস করে তিনি কিছু একটা বলতে চান ট্যুরিস্টদের।

স্বাভাবিকভাবেই ট্যুরিস্টরা ভয় পেয়ে যান! আর লজে থাকতে সাহস পান না। আপনি যদি হয়ে থাকেন ঘোস্ট হান্টার তবে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন অভিশপ্ত মর্গ্যান হাউজ। লেডি মর্গ্যান শুধু তার বাড়িতে যারা থেকেছেন, তাদের সঙ্গেই যোগাযোগ করতে চান! এর বেশি আর কিছুই নয়!

ঘন কুয়াশায় ঘেরা মর্গ্যান হাউজের পরিবেশ

আপনি নিজেকে একবার ঐ বাড়িটির ট্যুরিস্ট হিসেবে কল্পনা করুন। ঘন কুয়াশা যখন পাহাড়কে ঢেকে ফেলে, তখন এক অতৃপ্ত আত্মা হেঁটে যান একঘর থেকে অন্যঘরে। যখন গভীর হয় রাত, আঁধারে মুখ ঢাকে চরাচর, শোনা যায় তার পায়ের হাই হিলের শব্দ। কখনোবা স্রেফ তার ইচ্ছেতেই সশব্দে বন্ধ হয়ে যায় জানালার কপাট। অথবা হুটহাট করেই খুলে যায় ছিটকিনি তোলা দরজা!

পরপারের এই রহস্য বুকে নিয়েই জেগে থাকে কালিম্পংয়ের এক অংশ যার নাম মর্গ্যান হাউজ ট্যুরিস্ট লজ।

This article is in Bangla language. It's about two famous horror stories.

References:

1. dailystar.co.uk/news/latest-news/506803/Ghost-bride-filmed-hovering-horror-crash-hotspot-Moscow-Oblast-region

2.  dailymail.co.uk/news/article-3529930/Is-ghost-bride-killed-way-wedding-27-years-ago-Dashcam-footage-eerie-figure-accident-blackspot-goes-viral.html

3. naijaonpoint.com/news/omg-ghost-bride-caught-camera-scene-horror-crash-newlywed-died-27-years-ago-video.html?doing_wp_cron=1486446123.7115230560302734375000

4.  theedgeofreality.proboards.com/thread/6373/ghost-bride

5.  indiatoday.intoday.in/story/5-haunted-hotels-of-india-hotel-taj-mahal-palace-mumbai-hotel-brij-raj-bhavan-kota-morgan-house-tourist-lodge-kalimpong/1/532827.html

6.  telegraphindia.com/1040330/asp/siliguri/story_3051029.asp

7. kolkatabengalinfo.com/2015/08/morgan-haunted-house-kalimpong-sightseeing-spots.html

Featured Image: wall2born.com

Related Articles