গ্রিকরা স্থাপত্যশিল্পের জন্য যুগে যুগে সমাদৃত হয়ে এসেছে। ইউরোপজুড়েই এমন অসংখ্য গ্রিক স্থাপনা ছড়িয়ে আছে আজও যেগুলো প্রাচীন গ্রিসের ইতিহাস আর ঐতিহ্যের স্মারক বয়ে চলেছে হাজার বছরে ধরে। প্রাচীন গ্রিক সমাজ থেকে শুরু করে এথেনিয়ান আর পাশ্চাত্য সংস্কৃতির স্মৃতিবিজড়িত এরকমই একটি স্থাপত্যের নাম ‘পার্থেনন’। ২,৫০০ বছর আগে নির্মিত এই স্থাপনা, কালের মহাস্রোতে এখনো ভেসে যায়নি। বারবার যুদ্ধ বিগ্রহের আক্রোশে ক্ষয়প্রাপ্ত হলেও এখনো টিকে আছে স্বমহিমায়।
খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকের শুরুর দিকে, ইতিহাস বিখ্যাত ম্যারাথন যুদ্ধের সময় প্রথম গ্রিসের এথেন্সে একটি আশ্রম বা মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়। অ্যাক্রোপলিসের সবচেয়ে উঁচু জায়গায় চলছিল এর নির্মাণকাজ। কিন্তু ইতিহাস থেকে যতদূর জানা যায়, এই মন্দিরটি নির্মাণের পূর্বেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। খুব সম্ভবত ৪৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, যখন পার্সিয়ানরা অ্যাক্রোপলিস আক্রমণ করে, তখন তারা শহরের অনেক স্থাপনার সাথে নির্মাণাধীন এই স্থাপনাটিও ধ্বংস করে। এরপর কোনো এক অজানা কারণে পার্থেননের নির্মাণ কাজ আটকে যায় দীর্ঘ ৩৩ বছরের জন্য। ৪৪৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পুনরায় শুরু হয় এর নির্মাণ কাজ।
সে সময় রাষ্ট্র বলতে কিছু ছিল না। যা ছিল তা হচ্ছে নগর রাষ্ট্র। গ্রিসের এরূপ অসংখ্য (১৫০-৩০০) নগর রাষ্ট্র মিলে একটি জোট গড়ে তোলে যার নাম দেয়া হয় ‘ডেলিয়ান লীগ’। খুব সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকের মধ্যভাগে এই সংঘের কেন্দ্র হিসেবে এথেন্সকে বাছাই করা হয়। শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, শিল্পচর্চা সবদিক থেকে এ সময় অনন্য হয়ে ওঠে এথেন্স। এই সময়কালকে তাই বলা হয় এথেন্সের স্বর্ণযুগ। তখন এথেন্সের সেনাপতি ছিলেন বিখ্যাত যোদ্ধা এবং রাজনীতিবিদ পেরিক্লেস। ৪৪৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তিনি এথেন্সের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরু করেন। তারই অংশ হিসেবে নির্মাণ করেন পার্থেনন। এর নির্মাণ কাজ শেষ হয় ৪৩২-৩১ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে। এর সকল ভাস্কর্যের নকশা এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন বিখ্যাত গ্রিক ভাস্কর ফিডিয়াস। অন্যদিকে পুরো স্থাপনার নকশা প্রণয়ন করেন স্থপতি ইকটিনোস এবং ক্যালিক্রেটস।
পার্থেনন একটি গ্রিক শব্দ যার অর্থ অবিবাহিত/কুমারী নারীর ঘর। গ্রিক দেবী এথেনার সম্মানে এই মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রাথমিককালে পার্থেনন ছিল পুরো স্থাপনার কেবল একটি কক্ষের নাম। সম্ভবত সে কক্ষে গ্রিক দেবী এথেনার একটি মূর্তি ছিল। পরবর্তীতে পুরো স্থাপনাটি পার্থেনন হিসেবে পরিচিত হয়। দেবী এথেনাকে গ্রিসের রক্ষক মনে করা হতো। আর অনেকের ধারণা, দেবিকে সন্তুষ্ট করতেই তার জন্য একটি মন্দির নির্মিত হয়। কিন্তু প্রকৃত ইতিহাস ভিন্ন কিছুই বলে। এর গঠন আর নির্মাণশৈলীর কারণে একে মন্দির বলা হলেও প্রাথমিকভাবে পার্থেনন কিন্তু মন্দির ছিল না! এর একটি কামরাতেই কেবল এথেনার মূর্তি ছিল।
পার্থেননের উল্লেখ পাওয়া যায় ইতিহাসের জনক খ্যাত হেরোডটাসের লেখায়। হেরোডটাস ছাড়াও অন্যান্য উদ্ধৃতি ঘেটে যতটুকু জানা যায়, পার্থেননে স্থাপিত এথেনার বিশাল মূর্তিটিও কোনোরূপ পূজা-অর্চনার জন্য ব্যবহৃত হতো না। সেখানে ছিল না কোনো পূজারি বা ধর্মযাজক। নিছক সম্মানের জন্যই মূর্তিটি স্থাপন করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে এটি ব্যবহৃত হতো গ্রিকদের নগররাষ্ট্রগুলোর একটি দরবার ঘর হিসেবে। কিন্তু মন্দির হিসেবে এর ব্যবহার কখন শুরু হয়, সে সম্পর্কে ইতিহাসে কোনো সুস্পষ্ট ইঙ্গিত নেই। বরং, অনেক লেখা থেকে জানা যায় যে পার্থেননের নীচে লুকায়িত আছে মহামূল্যবান গুপ্তধন! তবে এটা নিশ্চিত, পার্থেনন নির্মিত হবার ১০০ বছরের মধ্যেই এটি মন্দির হয়ে ওঠে।
পার্থেননকে কেন মন্দির বলা হয়, তা আরো স্পষ্ট হয় এর গঠনপ্রকৃতি দেখে। অষ্টস্তম্ভ বিশিষ্ট ডোরিক ঢঙে নির্মিত এই স্থাপনাটি যে কেউ একনজর দেখলে মন্দির বৈ অন্য কিছু ভাবতে পারবে না। প্রাচীন গ্রিসের আরো অনেক মন্দিরের সাথেই এর নির্মাণশৈলীর মিল রয়েছে। সামনে পেছনে দুই প্রান্তে রয়েছে ৮টি করে স্তম্ভ, দু’পাশে রয়েছে ১৭টি করে। মোট স্তম্ভ সংখ্যা ৬৯টি। ভেতরকার কক্ষগুলো মূলত দুটি কম্পার্টমেন্টে বিভক্ত, যেগুলোকে ‘সেলা’ (Cella) বলা হয়। কম্পার্টমেন্ট দুটির নাম ‘সেকোস’ এবং ‘নাওস’। ইমব্রাইস নামক বিশাল বিশাল মার্বেল পাথরে আচ্ছাদিত ছাদের ধ্বংসাবশেষে তাকালে তা মুহূর্তে নিয়ে যায় প্রাচীন গ্রিসের সেই পদচারণায় মুখর পার্থেননে। ১৩.৭ মিটার উচ্চতার এই স্থাপনার দিকে এক নজর দিয়েই যেন অনুভব করতে পারা যায়, এর অতীত কতটা গৌরবময় ছিল।
পার্থেননের বাহ্যিক গঠনে অপরাপর গ্রিক মন্দিরের সাথে মিল থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে এই স্থাপনা অনন্য। একে বলা হয় পৃথিবীতে আজ অবধি টিকে থাকা একমাত্র নিখুঁত প্রাচীন গ্রিক ডরিক মন্দির। প্রাচীনত্ব, ঐতিহ্য আর অঙ্গসজ্জায় বিশেষত্ব, সব মিলিয়ে এর তুলনা পাওয়া ভার। নাওসের দেয়ালের অসাধারণ কারুকাজ এবং মোমবাতি রাখার চমৎকার সব গঠনগুলো এর সৌন্দর্যে যোগ করেছে অন্য মাত্রা। আর কলামগুলোর ‘এন্টাসিস’ বা বিশেষ স্ফীত গঠনের অনন্যতা না দেখলে বোঝা যাবে না।
ক্লাসিক্যাল গ্রিক স্থাপত্যকলার চিরাচরিত নিয়ম ধরে রেখে এর ছাদের দিকটাও কিছুটা অধিবৃত্তাকারে বাঁকানো। তবে এখানে একটি ‘কিন্তু’ রয়েছে। এই বর্ণনা পড়ে আপনি ভেবে বসতে পারেন যে পার্থেনন একটি ঝকঝকে তকতকে রাজকীয় কোনো মন্দির। কিন্তু বাস্তবে তার উল্টো! হ্যাঁ, পার্থেননের এখন ছাদ বলতে কিছু নেই, দেয়ালের কারুকার্য কিংবা স্তম্ভের এন্টাসিসও অতটা চিত্তাকর্ষক থাকেনি। তথাপি, যা অবশিষ্ট আছে, তা থেকেই প্রত্নতাত্ত্বিকগণ এর প্রাথমিককালের নির্মাণশৈলী আঁচ করতে পারেন সহজেই।
পার্থেনন নির্মিত হয়েছিল গ্রিক দেবী এথেনার সম্মানে, এ তথ্য শুরুতেই পেয়েছেন পাঠক। এই স্থাপনার মূল আকর্ষণই ছিল এথেনার সুবিশাল একটি ‘ক্রাইসেলেফ্যান্টাইন’ ভাস্কর্য। যে সকল মূর্তি বা ভাস্কর্য স্বর্ণ এবং আইভরি দিয়ে নির্মিত, সেগুলোকে বলা হয় ক্রাইসেলেফ্যান্টাইন। ইতিহাসের বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী এটিই ছিল এই কালজয়ী গ্রিক ভাস্কর ফিডিয়াসের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। আমাদের আফসোস যে এরকম অমূল্য একটি ভাস্কর্য দেখার সুযোগ আমাদের হয়নি। ২৯৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এথেন্সের কুখ্যাত স্বৈরাচারী শাসক ল্যাচার্স তার সৈন্যদের ভরণপোষণের জন্য এই অনুপম ভাস্কর্যটির গায়ের পুরু স্বর্ণের স্তর তুলে ফেলেন! ক্ষতিগ্রস্ত ভাস্কর্যটি মেরামত করা হয়। খুব সম্ভবত ৫ম খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে রোমানরা পার্থেনন থেকে এই ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলে।
এরপর দেবী এথেনার ভাস্কর্যের আর কোনো খোঁজ মেলেনি। তবে, একটি বিতর্কিত সূত্রে ১০০০ খ্রিস্টাব্দেও এথেনার ভাস্কর্যটির উল্লেখ পাওয়া যায় কনস্টান্টিনোপলে। এর সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেয়া যায় না। অন্যদিকে এথেনার ভাস্কর্য ছাড়াও পার্থেনন সাজানো হয়েছিল আরো অসংখ্য সুদৃশ্য সব ভাস্কর্য আর মূর্তি দিয়ে। কালের প্রবাহে টিকে থাকা ভাস্কর্যগুলোর অধিকাংশের স্থান হয়েছে ব্রিটিশ মিউজিয়াম আর এথেন্সের অ্যাক্রোপলিস জাদুঘরে। তাছাড়া ল্যুভরেও রয়েছে হাতে গোনা কিছু দুর্লভ ভাস্কর্য। ইতালির রোম ও পালেরমো শহর এবং ভিয়েনার অনেক জাদুঘরেও রয়েছে পার্থেননের দুর্লভ কিছু ভাস্কর্যের ধ্বংসাবশেষ।
ডরিক স্থাপনাগুলোর ছাদের কারুকার্যের নীচে থাকে আয়তাকার দেয়াল, যেখানে খোদাই করা থাকে গ্রিক ইতিহাসের নানা দিক। এই আয়তাকার দেয়ালকে বলা হয় মেটপ। পার্থেননের মেটপেও খোদাই করা আছে অসংখ্য পৌরাণিক সব দেব-দেবী আর যুদ্ধের ছবি। মেটপের একদিকের খোদাই করা ছবিগুলোতে ফুটে উঠেছে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার চিত্র। অন্যদিকে চিত্রিত হয়েছে সন্ত্রাস আর বিশৃঙ্খলা। অ্যামাজনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, অর্ধেক মানুষ আর অর্ধেক ঘোড়ার মতো একপ্রকার কল্পিত জীব ‘সেন্টর’ বা নরাশ্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, দৈত্যমানবদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, গ্রিক বনাম ট্রোজানদের যুদ্ধ সহ অসংখ্য পৌরাণিক যুদ্ধের ছবি খোদাই করা পার্থেননের মেটপে।
ক্লাসিক্যাল গ্রিক স্থাপত্যকলার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ভবনের সামনের অগ্রভাগ ত্রিকোণাকার থাকে। একে বলা হয় ‘পেডিম্যান্ট’। পার্থেননের পেডিম্যান্টে রয়েছে দারুণ কিছু খোদাই করা ভাস্কর্য। এর মধ্যে একটিতে সমুদ্রদেবতা পোসাইডন এবং দেবি এথেনার মধ্যকার লড়াইয়ের চিত্র রয়েছে। পুরাণে আছে, এই লড়াইতে জিতেই এথেনা নিজেকে গ্রিসের বৈধ রক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন! অন্যদিকে পেডিমেন্টে আরো রয়েছে এথেনার জন্মের ছবি এবং জিউসের একটি খোদাই করা ছবি।
হেরুলি দস্যুরা দ্বিতীয় শতকে এথেন্সের অ্যাক্রোপলিস আক্রমণ করে এবং ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। সে সময় পার্থেনন ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এর চূড়ান্ত ক্ষতিটা হয় মূলত আগুন লেগে। ভয়াবহ সে আগুনেই ধ্বসে পড়ে পার্থেননের ছাদ, ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভেতরের ভাস্কর্য এবং কক্ষগুলো। তবে কিছুকাল পর এর উপর কাঠের ছাদ নির্মাণ করা হয়। পার্থেনন নির্মিত হবার সর্বোচ্চ ১০০ বছরের মধ্যেই মন্দির হিসেবে এর ব্যবহার শুরু হয়ে যায়। গ্রিক দেবী এথেনার মন্দির হিসেবে এর পরিচিতি টিকে ছিল প্রায় ১ হাজার বছর। ৪৩৫ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট দ্বিতীয় থিওডোসিয়াস একটি রাজকীয় ডিক্রি জারির মাধ্যমে সমগ্র গ্রিসে সকল প্রকার পেগান মন্দির বন্ধ ঘোষণা করেন। পার্থেননে দেবি এথেনার পূজা সেই যে বন্ধ হয়, তা আর কখনো চালু হয়নি।
এথেনার উপাসনা বন্ধ হতেই পার্থেননের ধরণ বদলাতে শুরু করে। প্রথমে একে রূপান্তর করা হয় একটি খ্রিস্টান চার্চে। এর সম্মুখভাগের সাজসজ্জা পরিবর্তন করা হয়, মূল প্রবেশপথ পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আনা হয়, নির্মাণ করা হয় একটি টাওয়ার। উল্লেখ্য, ততদিনে এথেনার বিশাল ভাস্কর্যটি আর নেই সেখানে। ১৫ শতকের শেষভাগে অটোমানরা অ্যাক্রপলিস আক্রমণ করে একে মসজিদে রূপান্তর করে। প্রবেশপথ আবার পশ্চিম থেকে পূর্বে নেয়া হয়, বাইরের টাওয়ারটিকে আরো উঁচু করে মিনারে রূপান্তর করা হয়, দক্ষিণ দিকে অর্থাৎ কিবলার দিকে (অ্যাক্রপলিস থেকে মক্কা দক্ষিণ দিকে বা কিছুটা দক্ষিণ পূর্বে) নির্মাণ করা হয় একটি মেহরাব। তবে সবকিছুর মধ্যদিয়েও এর মূল গঠন অপরিবর্তিতই ছিল।
পার্থেননের উপর সবচেয়ে বড় ঝড়টি বয়ে যায় তুর্কি যুদ্ধের সময়। এ যুদ্ধে পার্থেননকে গানপাউডার রাখার স্থান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ফলাফল যা হবার তাই হলো। যুদ্ধের একপর্যায়ে একদিন পার্থেননে বিশাল এক বিস্ফোরণ হলো, নিহত হলো ৩ শতাধিক অটোমান সৈন্য, ধ্বংস হলো পার্থেননের প্রাথমিক স্থাপনার অধিকাংশই, ধ্বংস হলো মসজিদের মিনার, গীর্জার অঙ্গসজ্জা আর আদি এথেনার মন্দিরের বহু অমূল্য নিদর্শন। ১৮৩২ সালে গ্রিস স্বাধীন হলে পুরো গ্রিসজুড়ে নির্মিত সকল অটোমান নিদর্শন ধ্বংস করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় সরিয়ে ফেলা হয় পার্থেননের সাময়িক সময়ের মসজিদের সব নিদর্শনও। আর এই স্থানটিকে সংরক্ষণ করা হয় পর্যটকদের জন্য।
বিস্ফোরণে মধ্যভাগ প্রায় পুরোটাই উড়ে গিয়েছিল পার্থেননের। কংকালসার এই স্থাপনা এভাবেই দাঁড়িয়ে ছিল প্রায় দু’শ বছর। ২০০২-১৪ সালের মধ্যে গ্রিক সরকার ব্যাপকভাবে এর সংস্কার এবং পুনঃপ্রতিষ্ঠার কাজ করে। ছাদ ব্যাতীত বাকি প্রায় সব কিছুই পুনঃনির্মাণ করা হয়। ২০০৭ সালে ইউনেস্কো একে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত করে। কালের সর্বগ্রাসী স্রোতে বারবার আঘাতপ্রাপ্ত হয়েও সগৌরবে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে থাকা এই সুপ্রাচীন স্থাপনা আজ বিশ্বজুড়ে লাখো পর্যটকের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে।
ফিচার ছবি: wall.alphacoders.com