Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

রাষ্ট্র যখন হ্যাকারদের আশ্রয় দেয়: নেশন স্টেট হ্যাকিংয়ের কথা

আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর দুনিয়ায় সব রাষ্ট্র একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছে। ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরে শুধু গতানুগতিক যুদ্ধক্ষেত্রের গন্ডিতে সংঘর্ষ সীমাবদ্ধ নেই, প্রযুক্তির অপব্যবহার করে প্রতিপক্ষের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কিংবা অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিমন্ডলে হস্তক্ষেপের ঘটনাও ঘটছে অহরহ। সাইবার অ্যাটাক কিংবা হ্যাকিংয়ের মতো শব্দগুলো এখন প্রায় সময়ই শোনা যায়। কিন্তু যখন রাষ্ট্র যখন এসব অপরাধে নিজেকে জড়িয়ে হ্যাকারদের ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়, তখন সব সমীকরণ পাল্টে যায়, প্রযুক্তিগত সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনার টেবিলে বসতে হয়।

গতানুগতিক যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিপক্ষকে খুব সহজেই চিহ্নিত করা যায়। কিন্তু সাইবার ওয়ারফেয়ার (Cyber Warfare) বা প্রযুক্তির মাধ্যমে আধুনিক যুগে নতুন যে যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছে, তাতে আপনার প্রতিপক্ষকে চিহ্নিত করতেই অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে, তারপরও সঠিকতার নিশ্চয়তা নেই। আর এই যুদ্ধের ময়দান এত বড় যে, এখানে মাউসের এক ক্লিকেই হাজার হাজার মাইল দূরের কোনো দেশের সামরিক গোপন বিষয় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয় কিংবা ওয়েবসাইট অচল করে দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়। সব মিলিয়ে ‘নেশন স্টেট হ্যাকিং’ নাম দিয়ে নতুন যে বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে, তা রাষ্ট্রগুলোর প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দুধর্ষ হ্যাকারদের মাধ্যমে বাইরের দেশের তথ্য চুরি কিংবা ওয়েবসাইট হ্যাক করার মতো ঘটনাগুলোকে সামনে এনেছে।

ময়নসহসনস
হ্যাকার বলতেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে এমন একজন ব্যক্তির অবয়ব, যিনি সবসময় আড়ালে থেকে দুধর্ষ সাইবার অপারেশন পরিচালনা করেন; image source: csoonline.com

হ্যাকার বলতেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে নিজেকে গোপন করে রাখা একজন ব্যক্তি বা বা একদল মানুষের প্রতিচ্ছবি, যারা দুনিয়ার সবকিছু থেকে নিজেদের গুটিয়ে রেখে কম্পিউটারের স্ক্রিনের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকেন, যাদের জীবন কোনো নির্দিষ্ট ছকে বাধা থাকে না। প্রযুক্তি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের কাছে যেসব বিষয় খুব দুর্বোধ্য ঠেকে, তাদের কাছে সেগুলো ডাল-ভাত। হ্যাকাররা সবসময় আলোচনার বাইরে থাকতে চান, আড়ালে থেকে প্রযুক্তির লড়াইয়ে নিজেদের শামিল করতে ভালোবাসেন। নেশন স্টেইট হ্যাকিংয়ের ক্ষেত্রে আড়ালে থাকাটা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রতিপক্ষ টের পেয়ে গেলে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক তিক্ততায় পর্যবসিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য যখন রাষ্ট্র হ্যাকারদের ব্যবহার করে, তখন হ্যাকাররা রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা পেয়ে থাকেন।

প্রতিটি হ্যাকিং কিংবা সাইবার অ্যাটাকের পেছনে কারণ থাকে। যুক্তিবিদ্যার কার্যকারণ নিয়ম অনুসারে যেমন প্রতিটি কাজের পেছনে অবশ্যই কারণ থাকে, তেমনই রাষ্ট্রের হ্যাকারদের প্রতিটি আক্রমণের পেছনে কোনো না কোনো কারণ থাকবেই। এই কারণ হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করার প্রচেষ্টা, হতে পারে নিজেদের প্রযুক্তিগত আধিপত্যের বিষয়ে প্রতিপক্ষকে সতর্কবার্তা দেয়া, কিংবা হতে পারে রাজনৈতিক কোনো ঘটনার প্রতিশোধ নিতে হ্যাকারদের লেলিয়ে দেয়া। গতানুগতিক যুদ্ধের চেয়ে হ্যাকিং অনেক বেশি সাশ্রয়ী। সামরিক যুদ্ধে যেখানে মারণাস্ত্রের পেছনে বিশাল অংকের অর্থ ব্যয় করতে হয়, সেখানে সাইবার ওয়ারফেয়ার (Cyber Warfare) পরিচালনায় তেমন খরচ নেই (গতানুগতিক যুদ্ধের তুলনায়)। এছাড়া গতানুগতিক যুদ্ধে সামরিক-বেসামরিক মানুষের হতাহতের বিষয়টিও প্রতিটি রাষ্ট্রের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কিন্তু প্রযুক্তির যুদ্ধে এই ধরনের কোনো ঝামেলা নেই।

বর্তমানের নেশন স্টেইট হ্যাকিংয়ের ক্ষেত্রে চীনের নাম বেশ জোরেসোরে উচ্চারিত হচ্ছে। ধারণা করা হয়, চীনের সামরিক বাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মির অধীনে হাজার হাজার হ্যাকার রয়েছে, যারা চীনের জাতীয় স্বার্থে অসংখ্য হ্যাকিং ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছেন। চীন-আমেরিকার যে বাণিজ্যযুদ্ধ, তাতে হ্যাকারদের ভূমিকা ছোট করে দেখার অবকাশ নেই। শুধু সামরিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নয়, আমেরিকান বিজ্ঞানী ও গবেষকদের মেধাস্বত্বগত সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রেও চীন উঠে-পড়ে লেগেছে বেশ কয়েক বছর ধরে। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে মার্কিন বিজ্ঞানী, গবেষকদের ‘ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি’ হিসেবে যেসব গবেষণামূলক তথ্য পাওয়া যায়, সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে চীনা কোম্পানিগুলো নিজেদের উদ্ভাবনী শক্তিকে বিকশিত করছে। বৈশ্বিক বাজার দখলে বর্তমানে যে কোম্পানি প্রতিনিয়ত উদ্ভাবনের মাধ্যমে পণ্যের নতুন সংস্করণ আনতে পারবে, তারাই টিকে থাকবে। একটি মার্কিন গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি বছর ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি চীনাদের মাধ্যমে হস্তগত হওয়ার কারণে প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার লোকসান হয় আমেরিকার।

সনসনসনসন
হ্যাকার বলতেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে এমন একজন ব্যক্তির অবয়ব, যিনি সবসময় আড়ালে থেকে দুধর্ষ সাইবার অপারেশন পরিচালনা করেন;
image source: csoonline.com

চীনের স্বাস্থ্যসেবার উন্নতির গ্রাফ প্রতি বছরই উর্ধ্বমুখী হওয়ার পেছনে চীনা হ্যাকাররা এবং চীনের গোয়েন্দারা বিশাল ভূমিকা পালন করছেন। বলতে গেলে এখনও স্বাস্থ্যখাতে যেসব প্রযুক্তির উন্নয়ন হচ্ছে, তা মোটাদাগে পশ্চিমা ইউরোপীয় দেশগুলোই করছে। চীন এক্ষেত্রে হ্যাকিং এবং ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে ইউরোপীয় প্রযুক্তি নিজ দেশে আনার কাজ করছে। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে চেষ্টা করা হয় ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি হাতিয়ে নেওয়ার। ধরা যাক, একজন ফরাসি বিজ্ঞানী স্বাস্থ্যসেবায় ব্যবহৃত কোনো প্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য নতুন কোনো মডেল ডিজাইন করেছেন কিংবা নতুন কোনো যন্ত্র আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন। এক্ষেত্রে চীনা হ্যাকারদের কাজ হচ্ছে কোনভাবে সেই বিজ্ঞানীর কম্পিউটার থেকে সেই ডিজাইন কিংবা সম্ভাব্য আবিষ্কারের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য চুরি করা। পরবর্তীতে সেই চুরি করা তথ্য কিংবা ডিজাইন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কাছে হস্তান্তর করলে তারা স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে তা ব্যবহার করবে। এভাবে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে একটি দেশের কোনো সরকারি খাতকে আমূল বদলে দেয়া সম্ভব।

ইরান কিংবা উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় হ্যাকারদের তৎপরতার পেছনে ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির দায় রয়েছে। বর্তমানে মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে ইরানকে একঘরে করে ফেলতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। অপরদিকে উত্তর কোরিয়া আর আমেরিকার সম্পর্কও একটা ভালো নয়। ভূরাজনৈতিক ক্ষেত্রে শিয়াপ্রধান ইরানের সাথে মধ্যপ্রাচ্যের অপর দেশগুলোর বিরোধ প্রকাশ্যেই আঁচ করা যায়। আর কোরিয়া যুদ্ধের পর থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক একদম তলানিতে। ইরানের সাইবার হামলাগুলোর প্রধানত করা হয় মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নী দেশগুলোতে। এসব দেশের সামরিক বাহিনীর ওয়েবসাইটগুলোর দখল নেয়ার চেষ্টা করা হয়, সামরিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের অযাচিত হস্তক্ষেপের চেষ্টা করা হয়। অপরদিকে উত্তর কোরিয়ার আক্রমণের প্রধান টার্গেট হলো দক্ষিণ কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটির ওয়েবসাইট। ধারণা করা হয়, উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের চীন ও রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

সনশননয়নশন
আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-এর কালোতালিকায় থাকা দুজন ইরানি হ্যাকার; image source: zdnet.com

চীনের মতো রাশিয়ায় হাজার হাজার হ্যাকার নেই, কিন্তু যারা আছে, তাদের দক্ষতা নিয়ে কোনো সন্দেহ রাখা উচিত হবে না। বলা হয়ে থাকে, পৃথিবীর সবচেয়ে দক্ষ হ্যাকার হচ্ছে রাশিয়ার। ক্রেমলিন হ্যাকারদের পেছনে বেশ বড় অংকের অর্থ খরচ করে, আর রাশিয়া প্রযুক্তিগত দিক থেকে আগে থেকে বিশ্বে সবচেয়ে উপরের দিকে ছিল। ২০১৬ সালের নির্বাচনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার মতো ঘটনায় বোঝা যায় রাশিয়ার হ্যাকাররা কী পরিমাণ দক্ষ। জর্জিয়ায় ২০০৮ সালে যখন সংকট চলছিল, তখন রাশিয়ান হ্যাকারদের হ্যাকিং ক্যাম্পেইন দেখেই বোঝা গিয়েছিল রাশিয়ান সরকার তাদের হ্যাকারদের জায়গামতো ব্যবহার করছে।

ডহরহনরবীী
মনে করা হয়, প্রযুক্তিগত দক্ষতার দিক থেকে রাশিয়ার হ্যাকাররা সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে; image source: thehackernews.com

আমেরিকা ও ইসরায়েলের হ্যাকাররা প্রযুক্তিগত দিক থেকে অনেক উন্নতমানে ডিভাইস ব্যবহার করে। সাধারণভাবে ধারণা করা হয়, আমেরিকা সাধারণত নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হ্যাকিং পরিচালনা করে, যার উদ্দেশ্য নিজেদের সরকারি ওয়েবসাইট কিংবা সামরিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। উত্তর কোরিয়া, ইরান, রাশিয়া কিংবা চীন– সবারই টার্গেট আমেরিকা। তাই আমেরিকাকে নিজের স্বার্থে হ্যাকার ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হয়। তবে আমেরিকা যে বাইরের দেশে একদমই হ্যাকিং পরিচালনা করে না, এমনটি কিন্তু নয়। পৃথিবীর সবচেয়ে দুধর্ষ ক্যাম্পেইনগুলোর অনেকগুলোই মার্কিন হ্যাকাররা পরিচালনা করেছে। স্টাক্সনেট (Stuxnet) হিসেবে পরিচিত ম্যালওয়্যার ব্যবহার করে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বড় ধরনের ক্ষতি করা হয়েছে, যেটি করেছে মার্কিন হ্যাকাররা।

মূলত নেশন স্টেইট হ্যাকিং ক্যাম্পেইন কিংবা অপারেশনগুলো সরকারিভাবে ক্লাসিফাইড করে রাখা হয়, জনগণের সামনে কিছুই প্রকাশ করা হয় না। তারপরও মিডিয়ায় অনেক কিছু চলে আসে। ২০০৭ সালের দিকে ইসরায়েল জানতে পারে সিরিয়া গোপনে পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। সেই পারমাণবিক প্লান্ট ধ্বংস করতে বিমানহামলা চালায় ইসরায়েলিরা। বলা হয়ে থাকে, বিমান হামলা চালানোর আগে ইসরায়েলের হ্যাকাররা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বিকল করে দেয়। ইরানের একটি হ্যাকার গ্রুপ ২০১২ সালে শামুন (Shamoon) নামের একটি ভাইরাস ব্যবহার করে সৌদি আরবের বিখ্যাত তেল কোম্পানি আরামকোর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হ্যাক করে। পরে ওয়েবসাইটের অনেক তথ্য ইরানিয়ান হ্যাকাররা মুছে ফেলে, আমেরিকা পতাকা পোড়ানোর ছবি ওয়েবসাইটের হোমপেজে ঝুলিয়ে দেয়। ২০১৩ সালে রাশিয়া ও রুশভাষী দেশগুলোর লাখ লাখ অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে ম্যালওয়্যার পাওয়া যায়, যেখানে ধারণা করা হয় রাশিয়া নিজ দেশের জনগণের উপর নজরদারি চালাতেই এ কাজ করেছিল।

ননমৃৃৃৃবডডগহমম
‘শামুন’ ভাইরাসের মাধ্যমে ইরানি হ্যাকাররা সৌদি তেল কোম্পানি আরামকোর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হ্যাক করে;
image source: securityaffairs.co

ভারত ও পাকিস্তানের তিক্ত সম্পর্কের কথা আমরা সবাই জানি। ভূরাজনৈতিকভাবে দুটি দেশ একে অপরের চিরশত্রু। একাধিকবার তারা যুদ্ধে জড়িয়েছে। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে প্রযুক্তির লড়াইও চলছে প্রতিনিয়ত। ২০০৯ সালে ‘পাকিস্তান সাইবার আর্মি’ নামের একটি পাকিস্তানি হ্যাকার গ্রুপ ভারতের সর্বোচ্চ পুলিশ সংস্থা সিবিআই-এর (সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হ্যাক করে, ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়। ২০১২ সালে প্রায় ১০০টি সরকারি ওয়েবসাইট দখলে নেয় পাকিস্তানি হ্যাকাররা। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভারতের হ্যাকাররাও ‘অপারেশন হ্যাংওভার’ নামে বিশাল হ্যাকিং ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে।

মোটামুটি সব কর্তৃত্ববাদী শাসক দ্বারা পরিচালিত দেশের হাতেই শক্তিশালী হ্যাকার গ্রুপ রয়েছে। এসব দেশের জাতীয় স্বার্থে হ্যাকাররা নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে বাইরের দেশের ওয়েবসাইট হ্যাক করা কিংবা ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে নজরদারি চালানোর চেষ্টা করে। সাইবার ওয়ারফেয়ার পরিচালনার মাধ্যমে রাষ্ট্রগুলোর একটি বড় সুবিধা হলো এখানে নিজেকে আড়ালে রেখেই যুদ্ধ পরিচালনা করা যায়, অর্থনৈতিক দিক থেকেও এটি অনেকাংশে সাশ্রয়ী। অনেক সময় দেখা যায় গোয়েন্দা সংস্থা যেখানে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে, হ্যাকাররা সেখানে সফলতার মুখ দেখতে পায়। সামনের দিনগুলো যখন পুরোপুরি প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়বে, তখন হ্যাকারগ্রুপগুলো হয়ে উঠবে আরও বেশি শক্তিশালী, রাষ্ট্রগুলো আরও বেশি করে দুধর্ষ হ্যাকারদের কাছে টেনে নেবে।

Related Articles