সময়টা ১৪০০ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি। কোরিয়া উপদ্বীপের সিংহাসনে আসীন জসন সাম্রাজ্যের শাসকেরা। প্রায় ছয় শতাব্দী জুড়ে শাসন করা জসন সাম্রাজ্যের শুরুর দিকের কথা। কোরিয়া উপদ্বীপ জুড়ে শান্তি আর সমৃদ্ধির সুবাতাস বইছে। তখন কোরিয়া মানে ছিল শুধু কোরিয়া। উত্তর আর দক্ষিণ স্রেফ কম্পাসের কাঁটায় আবদ্ধ দু’টি দিক ছাড়া অন্যকিছু ছিল না। সবাই একসাথে মিলেমিশে বাস করতো। সংস্কৃতিগত কিংবা ভাষাগত কোনো পার্থক্য নেই পুরো কোরিয়ায়। বছরের শুরুতে নতুন বছরের মেলাতে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাজিকররা খেলা দেখাতে আসতো। শিশু, তরুণ, বুড়ো সবাই মিলে একসাথে বসে সেই বাজি খেলা দেখতো। সন্ধ্যায় কোরিয়ার আকাশজুড়ে রঙিন আতশবাজি খেলা চলতো। আর কোরিয়ার রাজা রাজপ্রাসাদের ব্যালকনিতে বসে সেই দৃশ্য দেখতেন। তার মনে তখন রাজ্যের প্রশান্তি। কোরিয়ার মতো শান্তির দেশ আর কোথাও আছে কি?
এরপর দেখতে দেখতে কেটে গেলো প্রায় ৬০০ বছর। ততদিনে জসন সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছে। এরপরই হঠাৎ করে কোরিয়া উপদ্বীপে অশান্তির শুরু হলো। কোথায় যেন ছন্দপতন ঘটলো। উপদ্বীপের মাঝ বরাবর বড় করে একটা রেখে টেনে দেয়া হলো। ভেঙে গেলো সেই শান্তিপূর্ণ কোরিয়া। জন্ম নিলো উত্তর এবং দক্ষিণ কোরিয়া। সেদিনের মেলার বাজিকরেরা কোথায় যেন হারিয়ে গেলো। মেলার রঙিন ঝালরের বদলে স্থান পেলো কাঁটাতারের বেড়া। শিশু, তরুণ, বুড়ো সবাই ভয় পেতে শুরু করলো। কোরিয়ার আকাশে আতশবাজির জায়গা দখল করে নিলো বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্রের ত্রাস। নতুন অধিপতিরা সেই দৃশ্য মনোযোগ দিয়ে অবলোকন করেন আর মনে মনে যুদ্ধ নামক এক মহা জটিল অংক কষে চলেন। কোরিয়ার আরেক নাম হয়ে দাঁড়ালো অস্থিরতা আর হুমকি!
আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় কোরিয়া বিভক্তির ইতিহাস। ইতিহাস পর্যালোচনাকালে উঠে আসবে এর পেছনে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েতের প্রত্যক্ষ ভূমিকা।
কোরিয়া উপদ্বীপে জাপানি আগ্রাসন
১৯১০ সালের ঘটনা। তখন কোরিয়ার মসনদে আসীন জসন সাম্রাজ্যের ২৬তম রাজা গুজুং। প্রায় ৬০০ বছর ধরে জসন সাম্রাজ্যের শাসনে কোরিয়া জুড়ে শান্তি বিরাজ করছিলো। কিন্তু সেই শান্তি বেশিদিন দীর্ঘস্থায়ী হলো না।
সে বছর কোরিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্র যুদ্ধবাজ জাপান জোর করে কোরিয়া উপদ্বীপ দখল করে বসলো। এর মাধ্যমে কোরিয়ার বুকে জাপানি শাসন শুরু হলো। যুদ্ধবাজ জাপানিরা কোরিয়া দখল করেই ক্ষান্ত হলো না। তারা কোরিয়ানদের উপর বিভিন্ন অমানবিক উপায়ে জোর খাটাতে লাগলো। তাদের অন্যতম লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় কোরিয়ান সংস্কৃতি।
প্রথমেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম থেকে দেশীয় ইতিহাস এবং সংস্কৃতি সম্পর্কিত সবধরনের শিক্ষা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। কোরিয়ানদের দেশীয় উৎসব পালনে কড়াকড়ি জারি করা হলো। এমনকি কোরিয়ান ভাষা ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
এভাবে চললো বেশ কয়েক বছর। কোরিয়ান সংস্কৃতি প্রায় পঙ্গু হয়ে গেলো। কিন্তু জাপানিরা তাতেও সন্তুষ্ট হলো না। তারা বিভিন্ন সংগ্রহশালা এবং পাঠাগারে হানা দিলো। কোরিয়ান ইতিহাস এবং ঐতিহ্য সম্পর্কিত সকল নথিপত্র বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হলো। এমনকি কোরিয়ায় উৎপাদিত শস্য দ্বারা উপার্জিত অর্থ জাপানে পাচার করে দেয়া হলো।
প্রায় ৩৫ বছর ধরে জাপানিরা কোরিয়ানদের উপর অত্যাচার করলো। সেই কালো অধ্যায় শেষে আপন সংস্কৃতি এবং ইতিহাস হারিয়ে জন্ম নিলো এক বিভাজিত কোরিয়া।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়
কোরিয়া উপদ্বীপে জাপানের আগ্রাসন ৩৫ বছরের বেশি টিকলো না। দেখতে দেখতে বিশ্বজুড়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উঠলো। বিশ্বযুদ্ধ হবে আর যুদ্ধবাজ জাপানিরা হাত গুটিয়ে বসে থাকবে? তা তো হবে না।
জার্মানদের সাথে হাত মেলালো জাপান। চীন দখলের মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়লো তারা। যুক্তরাষ্ট্রের পার্ল হারবার কাঁপিয়ে দিলো জাপানি সেনারা। কিন্তু মার্কিনীরা পার্ল হারবারের বদলা নিলো হিরোশিমা-নাগাসাকিতে। পরপর দুটো পারমাণবিক বোমা হামলার পর জাপানিরা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হলো।
জাপানের পরাজয়ে কোরিয়া জুড়ে আনন্দের ঢল বয়ে গেলো। বিভিন্ন অঞ্চলে উৎসব শুরু হয়ে গেলো। সবার মনে তখন একই প্রশ্ন, “কবে মিলবে স্বাধীনতা?” উৎসুক জনতা গভীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকে কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার জন্য। কিন্তু কোরিয়ানরা কল্পনাও করতে পারেনি, তাদের সামনে অপেক্ষা করছে অন্ধকার ভবিষ্যৎ, যেখানে স্বাধীনতার নামগন্ধও নেই।
১৯৪৫ সালে জাপানের আত্মসমর্পণের ঘোষণার পর মিত্রশক্তির নেতারা জাপান অধিভুক্ত সকল রাষ্ট্রের উপর থেকে জাপানের অধিকার কেড়ে নেয়। মিত্রশক্তির অন্যতম দুই পরাশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র পাল্লা দিয়ে সে রাষ্ট্রগুলো দখল করতে থাকে।
কিন্তু কোরিয়া উপদ্বীপে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ঘাঁটি ছিল না। তাদের নিকটবর্তী ঘাঁটি ছিল কোরিয়া থেকে ৫০০ মাইল দূরে। এই সুযোগে সোভিয়েত সেনারা কোরিয়া উপদ্বীপে প্রবেশ করে এবং জাপানি সেনাদের হত্যা করতে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রও থেমে থাকার পাত্র নয়। সোভিয়েতের কোরিয়া আগ্রাসন মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের কপালে ভাঁজ ফেলে দিয়েছিলো। তাই তারা দ্রুত কোরিয়া উপদ্বীপ দখলে রওয়ানা দেয়।
একদিকে যখন কোরিয়ানরা স্বপ্ন দেখছিলো একটি সুন্দর স্বাধীন রাষ্ট্রের, তখন অপরদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন আর যুক্তরাষ্ট্র মেতে উঠেছিলো কোরিয়া দখলের খেলায়। তাই এই যাত্রায় জসন সাম্রাজ্যের সেই শান্তিপূর্ণ কোরিয়ার প্রত্যাবর্তন হলো না।
৩৮ ডিগ্রী সীমারেখা
কোরিয়া উপদ্বীপে মার্কিনীদের দখল শুরু হয় দক্ষিণ দিক থেকে। অপরদিকে সোভিয়েতরা উত্তর দিক থেকে দখল করতে করতে সামনে এগিয়ে আসছিলো। শেষপর্যন্ত তারা ৩৮ ডিগ্রী অক্ষরেখাতে একে অপরের সাথে মিলিত হলো। দখলদারি শেষে এবার শুরু হলো ভাগ করার পালা। মার্কিন সেনা কর্মকর্তা কর্নেল চার্লস বনস্টিল এবং ডিন রাস্ককে দায়িত্ব দেয়া হলো যুক্তরাষ্ট্র অধিকৃত কোরিয়া থেকে সোভিয়েত অধিকৃত অঞ্চলের সীমারেখা নির্ধারণ করার। কিন্তু তাদের হাতে সময় বেঁধে দেয়া হলো মাত্র ত্রিশ মিনিট।
কোনো কোরিয়ান নেতার সাথে আলোচনা না করেই চার্লস বনস্টিল ৩৮ ডিগ্রী সীমারেখা বরাবর কোরিয়াকে দু’ভাগ করে ফেলার প্রস্তাবনা পেশ করেন। সোভিয়েত সামরিক বাহিনীর এই প্রস্তাব মনঃপুত হলো। এই প্রস্তাবনা অনুযায়ী দক্ষিণ কোরিয়ায় সিংহভাগ যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে চলে আসে। কোরিয়ার রাজধানী সিউল দক্ষিণ কোরিয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়।
অপরদিকে সোভিয়েতদের হাতে উত্তর কোরিয়ার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে আসে। কিন্তু এই বিভাজন সাময়িক সময়ের জন্য কার্যকর ঘোষণা করা হয়। অতিসত্ত্বর নতুন সরকার গঠনের মাধ্যমে দুই কোরিয়া একীভূত করার উদ্দেশ্যে কাজ শুরু করে সোভিয়েত এবং যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন-সোভিয়েত দ্বন্দ্বে দুই কোরিয়ার জন্ম
বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে সোভিয়েত-মার্কিন দ্বৈরথের কথা কারো অজানা নয়। বিশ্বযুদ্ধে মিত্রপক্ষ হিসেবে যুদ্ধ করলেও কোরিয়া উপদ্বীপ ইস্যুতে সোভিয়েত আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বনিবনা শুরু হলো। যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক কোরিয়াকে নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে হিসেবে ঘোষণা দেয়ার দাবি জানানো হয়। কিন্তু বেঁকে বসলেন সোভিয়েত নেতারা। গণতন্ত্র তাদের দু’চোখের বিষ। তারা এই দাবি মেনে নেবেন কেন! তারাও পাল্টা দাবি ছুঁড়ে দিলেন, কোরিয়াকে পূর্ণ কমিউনিস্ট রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হোক।
এমনকি কোরিয়ান স্থানীয় নেতৃবৃন্দরাও এই দাবির পক্ষে-বিপক্ষে দু’দলে ভাগ হয়ে গেলেন। যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়। উপায় না দেখে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার গণতান্ত্রিক নেতা সিঙ্গমান রি-কে দক্ষিণ কোরিয়ার শাসক হিসেবে নির্বাচিত করে। ১৯৪৮ সালে রি’র তত্ত্বাবধানে দক্ষিণ কোরিয়া স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে আত্মপ্রকাশ করে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন সিঙ্গমান রি। তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় কমিউনিস্ট নেতাদের দমন করা শুরু করেন।
অপরদিকে উত্তর কোরিয়ার হালচাল এর সম্পূর্ণ বিপরীত। সোভিয়েত সরকার উত্তর কোরিয়ার সামরিক কর্মকর্তা কিম ইল সুংকে উত্তর কোরিয়া শাসনের দায়ভার প্রদান করেন। প্রচণ্ড বদমেজাজি সুং প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক নেতাদের নিধন করা শুরু করেন। বিশেষ করে পুঁজিবাদী সমাজ তার রোষানলের শিকার হয়। কিম ইল সুং নিজেকে উত্তর কোরিয়ার ‘মহান নেতা’ (Great Leader) পদবীতে ভূষিত করেন। স্বৈরাচারী সাং উত্তর কোরিয়ায় নিজস্ব মতধারায় এক নতুন সাম্রাজ্য গঠনের কাজে হাত দেন।
দুই বিপরীত ধারার রাজনৈতিক মতাদর্শ কোরিয়ানদের জন্য মোটেও সুখকর ছিল না। এর ফলে দুই কোরিয়া একীভূত হওয়ার সম্ভাবনা সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট হয়ে যায়। উল্টো দুই দেশের নেতাদের বিরোধের কারণে দুই কোরিয়া যুদ্ধের দিকে ধাবিত হতে থাকে।
কোরিয়া যুদ্ধ
দুই কোরিয়া স্বায়ত্তশাসিত সরকার গঠন করলেও সর্বদাই দুই দেশের মাঝে সংঘাত বিরাজ করতো। ৩৮ ডিগ্রী সীমারেখা অঞ্চলে প্রায়ই দু’পক্ষের মাঝে গুলি বিনিময় হতো।
এমতাবস্থায় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম ইল সুং পুরো কোরিয়া পুনরায় একীভূত করার চিন্তাভাবনা করতে থাকেন। যেই ভাবা সেই কাজ! তিনি ১৯৫০ সালে বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া দখল করার চেষ্টা করেন। অতর্কিত আক্রমণে দক্ষিণ কোরিয়া খেই হারিয়ে ফেলে। কিন্তু ধীরে ধীরে তারা নিজেদের গুছিয়ে নিতে থাকে। এরপর দক্ষিণ কোরিয়া পাল্টা আক্রমণ করে বসে। এর মাধ্যমে শুরু হয় কোরিয়ার ইতিহাসে অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ- কোরিয়া যুদ্ধ।
দিকে দিকে মানুষ মরতে থাকে। কোরিয়ানদের আর্ত-চিৎকারে পরিবেশ বিষিয়ে উঠে। যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে জাতিসংঘ কোরিয়া অঞ্চলে শান্তি মিশন পরিচালনা করে। যুদ্ধের কিছুদিন পরে পুনরায় বহির্বিশ্বের হস্তক্ষেপ হয় কোরিয়ার উপর। দুই কোরিয়ার সাথে যুদ্ধে পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রে, চীন এবং রাশিয়া। রাশিয়া এবং চীন উত্তর কোরিয়ার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করে। যুদ্ধ চলাকালীন তারা উত্তর কোরিয়ায় বিভিন্ন অস্ত্র-রসদ দিয়ে সাহায্য করে।
প্রায় তিন বছর ধরে কোরিয়া যুদ্ধ চলে। যুদ্ধে প্রায় ত্রিশ লক্ষ কোরিয়ান নিহত হয়। ১৯৫৩ সালে দু’পক্ষের মাঝে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ৩৮ ডিগ্রী সীমারেখায় দু’দেশের মাঝে তিন মাইল ব্যাপী ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ নির্ধারণ করা হয়। এর মাধ্যমে দুই কোরিয়ার সম্পর্কের চূড়ান্ত ইতি ঘটে। এর মাধ্যমে কোরিয়া বিভক্তির ষোলকলা পূর্ণ হয়।
বিশ্ব রাজনীতির মোড়ল পর্যায়ের রাষ্ট্রগুলোর ক্ষমতালোভী ও আগ্রাসী মনোভাবের খেসারত দিতে গিয়ে দেউলিয়া হতে হয়েছে কোরিয়া, ভিয়েতনাম, সুদানের মতো রাষ্ট্রকে। এই মনোভাবের কোনো পরিবর্তন না আসলে দেউলিয়ার তালিকা দীর্ঘায়িত হতে পারে, যা বিশ্বশান্তির জন্য হুমকিস্বরূপ।