অটোমান সাম্রাজ্য যখন তার সোনালি অধ্যায় সূচনার পথে ঠিক তখন পারস্যে সাফাভি রাজবংশের গোড়াপত্তন হয়। সৃষ্টির পর থেকেই অটোমানদের সাথে তাদের দ্বন্দ্ব, যা স্থায়ী হয়েছিল সাফাভিদের উত্তরসূরি আফশারি রাজবংশ পর্যন্ত। ১৫১৪ সাল থেকে ১৭৪৭ সাল পর্যন্ত মুসলিম বিশ্বের দুই শক্তিশালী সাম্রাজ্যের মধ্যে একাধিক যুদ্ধ হয়েছে।
অটোমান আর সাফাভিদের মধ্যে যুদ্ধের মূল কারণ ছিল মধ্যপ্রাচ্য নিয়ন্ত্রণ এবং নিজ নিজ সাম্রাজ্যের সীমানার বিস্তৃতি ঘটানো, যেখানে মূল রসদ হিসেবে কাজ করেছিল ধর্মীয় মতভেদ। একদিকে অটোমানরা ছিলেন সুন্নি মুসলিম। অন্যদিকে সাফাভিরা ছিলেন শিয়া। শুধু শিয়া বললে ভুল হবে। বরং তাদের হাত ধরেই ইরানে শিয়া মতবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর আগে ইরানের অধিকাংশ মানুষ সুন্নি মুসলিম ছিলেন। মূলত অটোমানদের সাথে এখান থেকেই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।
সাফাভিদের সাম্রাজ্যের বিস্তৃত করার চেষ্টা থেকেই অটোমানদের সাথে তাদের দা-কুমড়া সম্পর্ক হয়। ১৫০০ সালে সাফাভি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা প্রথম ইসমাইল তার কিছু শিয়া অনুসারী যোদ্ধাদের নিয়ে আজারবাইজানের আক কয়ুনলু সালতানাতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। আক কয়ুনলু তখন ইরাক, ইরান ও ককেশাসের বড় একটি অংশ শাসন করতেন।
১৫০২ সালের মধ্যে ইসমাইল ও তার কিজিলবাস আন্দোলনের সমর্থকরা আক কয়ুনলুর অধীনে থাকা অধিকাংশ জায়গা দখল করে। তখন কয়ুনলু বাধ্য হয়ে অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতান দ্বিতীয় বায়েজিদের সাহায্য প্রার্থনা করেন। অটোমান সুলতান কয়ুনলুর আবেদনে সাড়া দিয়ে কিছু সৈন্য পাঠান, যাদের নেতৃত্ব দেন জাল পাশা এবং উসমান পাশা।
১৫০৩ সালে হামাদানের যুদ্ধে কয়ুনলুর সেনাদের সাথে অটোমান সেনারা যোগ দিলেও এই যুদ্ধকে অটোমান বনাম সাফাভি যুদ্ধ বলা যায় না। অটোমানরা কয়ুনলুকে সাহায্য করার পরও যুদ্ধে শাহ ইসমাইল জয়লাভ করে। হামাদানে জয়লাভ করার পর সাফাভিরা ইরানের সমগ্র মালভূমি দখল করার মধ্য দিয়ে আক কয়ুনলু রাজ্যকে বিলীন করে দেন।
আক কয়ুনলুকে হারানোর পর ইসমাইল নিজেকে ইরানের শাহ হিসেবে ঘোষণা করেন। আক কয়ুনলু রাজ্যের সুন্নিদের জোরপূর্বক শিয়া মতবাদ চাপিয়ে দেন। এরপর ধীরে ধীরে পুরো ইরানে তার শিয়া মতবাদ ছড়িয়ে দেন। এছাড়া শাহ ইসমাইল যেসব অঞ্চল দখল করেছেন সেখানকার সুন্নি মসজিদ ও মাজার গুঁড়িয়ে দিয়েছেন।
১৫০৭ সালে শাহ ইসমাইল দুলকাদিরদের উপর হামলা করেন, যা ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের পূর্ব সীমান্তে। সাফাভি সৈন্যরা পূর্ব আনাতোলিয়ার মধ্য দিয়ে গিয়ে দুলকাদিরদের উপর হামলা করে। পূর্ব আনাতোলিয়া ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের অংশ। এরপরও অটোমান সুলতান দ্বিতীয় বায়েজিদ কোনো প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করেননি।
কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সাফাভিরা সরাসরি অটোমানদের হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। শিয়া যোদ্ধারা পূর্ব আনাতোলিয়ায় ছোট ছোট বিদ্রোহ শুরু করে। এরপর শাহকুলুর নেতৃত্বে আনাতোলিয়ার অটোমান প্রশাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলে নড়েচড়ে বসেন সুলতান দ্বিতীয় বায়েজিদ৷
শুরুতে শাহকুলুর সমর্থকরা কিছু সাফল্য পায় এবং বেশ কয়েকজন অটোমান সেনাকে হত্যা করতে সক্ষম হয়। কিন্তু এরপর অটোমানদের অভিযানের মুখে শাহকুলু প্রাণ হারান। কিন্তু এরপরও তার সমর্থকরা আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়নি। তাদের কিছু সাফাভিদের নিয়ন্ত্রিত রাজ্যে চলে যান। আর কিছু অংশ আনাতোলিয়ার পাহাড়ি অঞ্চলে পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করেন।
সাফাভিদের সাথে অটোমান সাম্রাজ্যের প্রথম আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ
অটোমানদের চাপের মুখেও সাফাভিরা ক্রমাগত তাদের সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি ঘটাতে থাকে। ইরান, ইরাক ও ককেশাসের সম্পূর্ণ অংশ দখল করার পাশাপাশি আনাতোলিয়ার কিছু অংশও নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়। সাম্রাজ্য বৃদ্ধি এবং সৈন্য সংগ্রহের কাজে শাহ ইসমাইল নিজের ধর্মীয় বিশ্বাসকে কাজে লাগাতেন। তিনি শক্তভাবে শিয়া মতবাদকে প্রচার করতেন।
ইসমাইল যদিও শিয়া মতবাদের সাথে পরিচিত হয়েছিলেন পূর্বসূরিদের মাধ্যমে। কিন্তু তার পূর্বে সাফাভিরা নেতারা শিয়া মতবাদ রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। শাহ ইসমাইল সেই দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি ঘোষণা করে সাফাভি সাম্রাজ্যে একমাত্র শিয়া মতবাদে বিশ্বাসীরা থাকবেন। অন্য সকল ধর্মীয় বিশ্বাসীদেরও এর আওতায় আসতে হবে।
এখানে বলে রাখা ভালো, শিয়ারা বিশ্বাস করেন হযরত মোহাম্মদ (সা) এর মৃত্যুর পর খিলাফতের যোগ্য উত্তরসূরি ছিলেন হযরত আলী (রা)। কিন্তু তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে সেই সময় খলিফা হতে পারেননি। এছাড়া তারা ১২ ইমামে বিশ্বাসী। যার সর্বশেষ ইমাম হবেন ইমাম মাহাদী বা মেসিয়াহ (ইহুদিরা এই নাম ব্যবহার করেন)।
শাহ ইসমাইলের শিয়া ও কিজিলবাস সমর্থকদের অনেকেই বিশ্বাস করতেন তিনি নিজেও একজন ইমাম। যদিও তিনি তা কখনোই দাবি করেননি। তার সমর্থকরা এটাও বিশ্বাস করতেন যে, মধ্যপ্রাচ্যের নিয়ন্ত্রণ এবং খিলাফত তাদের মাধ্যমেই পরিচালিত হওয়া উচিত। কিন্তু ইসলামী খিলাফতের প্রধান তখন অটোমান সুলতানরা। সাফাভিদের এমন দাবির পরও তৎকালীন সুলতান দ্বিতীয় বায়েজিদ কোনো কঠিন পদক্ষেপ নেননি।
কিন্তু সুলতান বায়েজিদের পুত্র সুলতান সেলিম শত্রুদের প্রতি কখনোই দয়া দেখাননি। ১৫১২ সালে সিংহাসনে বসার পর থেকেই তিনি তার নিষ্ঠুর চরিত্রকে শত্রু-মিত্র উভয়ের সামনে তুলে ধরেছেন। তার সময়ে উজিরে-আযমরা বুক পকেটে নিজের শেষ ইচ্ছা লিখে রাখতেন। কেননা সুলতান সেলিম তার উজিরদের যখন তখন হত্যা করার জন্যই খুবই বিখ্যাত ছিলেন।
১৫১৪ সালে সুলতান সেলিম সাফাভিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দেন। যাতে করে আনাতোলিয়ায় আর শিয়া মতাদর্শে বিশ্বাসীরা বিদ্রোহের কোনো রসদ না পায়। ১৫১৪ সালের ২৩ আগস্ট ব্যাটল অব চালদিরানে শাহ ইসমাইলকে পরাজিত করেন সুলতান সেলিম। এবং সেই সাথে সাফাভি সাম্রাজ্যের রাজধানী তাবরিজ দখল করেন। এরপর সুলতান সেলিম ইরানের আরে ভেতরে গিয়ে পুরো সাফাভি সাম্রাজ্য জয় করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও জেনেসারিরা সায় দেননি।
এরপর ১৫১৭ সাল পর্যন্ত সুলতান সেলিম আনাতোলিয়ায় শিয়া সমর্থকদের বিদ্রোহ দমন করেন। যদিও এসব খণ্ড যুদ্ধকে সাফাভিদের দমন বলা যায় না। কারণ এর সাথে শাহ ইসমাঈলের কোনো সৈন্য ছিল না। তবে আনাতোলিয়ার বিদ্রোহীরা শাহ ইসমাইলকে অনুসরণ করতেন।
আমাসিয়ার চুক্তি এবং পরবর্তী যুদ্ধসমূহ
একদিকে সুন্নি অটোমান আর শিয়া সাফাভি সাম্রাজ্যের মধ্যে যুদ্ধ চলমান ছিল। অপরদিকে দুই সাম্রাজ্যের মধ্যে বিবাদ মেটানোর চেষ্টাও হয়েছে, যাতে চিরতরে দুই সাম্রাজ্যের মধ্যে আর কোনো যুদ্ধ না হয়। এর শুরু করেন সুলতান সেলিমের উত্তরসূরি সুলতান সুলেমান। অটোমান সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ সুলতানও বলা হয় তাকে।
১৫১৪ সালে শাহ ইসমাইলকে হারালেও সুলতান সেলিমের সাথে তিনি কোনো চুক্তি করেননি। এরপর ১৫১৬ থেকে ১৫১৭ সালের মধ্যে সুলতান সেলিম মিসরের মামলুক জয় করে তার নাম পরিবর্তন করে রাখেন আব্বাসীয় খিলাফত। এর ফলে অটোমানরা তাদের যে খিলাফত তা মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়ে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করেন।
শাহ ইসমাইল হারানোর পর থেকে সাফাভিদের সাথে অটোমান সাম্রাজ্যের ব্যবসা-বাণিজ্য নিষিদ্ধ ছিল। এবং ইরানের কোনো শিয়া মুসলিম মক্কায় হজ্ব করার সুযোগ পেতেন না। সুলতান সুলেমান সিংহাসনে বসার পরও এই নিয়মের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বরং ১৫৩২ সাল থেকে আবারো সাফাভিদের সাথে অটোমানদের যুদ্ধ শুরু।
দীর্ঘ ২৩ বছরের যুদ্ধ শেষে ১৫৫৫ সালে পারস্যের শাহ তামাস্প সুলতান সুলেমানের সাথে শান্তিচুক্তি করতে বাধ্য হন। এই চুক্তির পর সাফাভি ও অটোমানদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু হয়। সেই সাথে দুই সাম্রাজ্যের সীমানা নির্ধারণের পাশাপাশি ইরানের শিয়া মুসলিমদের মক্কায় হজ্বের অনুমতি দেওয়া হয়। বিনিময়ে সাফাভিরা অটোমান সুলতানদের ইসলামের খলিফা হিসেবে মেনে নেয়।
কিন্তু এই চুক্তি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ১৫৭৮ সালে সুলতান তৃতীয় মুরাদ ককেশাস দখল করেন। যা সাফাভি সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। এরপর ১৫৯০ সালে সাফাভিদের হারানোর পর শাহ আব্বাসের সাথে কনস্টান্টিনোপল চুক্তি করেন তৃতীয় মুরাদ। এই চুক্তি অনুসারে সাফাভিরা ককেশাস অটোমান সুলতানের কাছে ছেড়ে দেন। সেই সাথে তৃতীয় মুরাদকে নিজেদের খলিফা হিসেবেও মেনে নেন।
কিন্তু শাহ আব্বাস ছিলে সাফাভি বংশের শ্রেষ্ঠ শাহ। তিনি সহজেই চুক্তি মেনে নেননি। চুক্তির কয়েক বছর পর শাহ আব্বাস অটোমানদের উপর পাল্টা আক্রমণ করেন। ১৬০৩ সাল থেকে ১৬১৮ সালে মধ্যে শাহ আব্বাস পুনরায় ইরাক, ককেশাস ও পূর্ব আনাতোলিয়ার হারানো ভূখণ্ড উদ্ধার করেন। কিন্তু তিনি তা ধরে রাখতে পারেননি।
১৬২৩ সাল থেকে ১৬৩৯ সাল পর্যন্ত সুলতান চতুর্থ মুরাদ সাফাভিদের উপর হামলা করে আব্বাস যা দখল করেছিলেন তার বেশি উদ্ধার করেন। ১৯৩৯ সালে দুই সাম্রাজ্য জুহাব চুক্তি স্বাক্ষর করে, যেখানে সুলতান সুলেমানের আমাসিয়া চুক্তি মোতাবেক পুনরায় দুই সাম্রাজ্যে সীমানা পুনরায় নির্ধারণ করা হয়।
অটোমানদের সাথে সাফাভিদের শান্তিচুক্তি হলেও ইরানের শাহদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে সেখানকার সুন্নি মতাদর্শের সেনারা। যাদের অধিকাংশ ছিলেন আফগান এবং উজবেক। আর তাদের নেতৃত্ব দেন নাদের শাহ। তিনি ছিলেন একজন যোদ্ধা। ১৭৩৬ সালে সাফাভিদের হটিয়ে তিনি নতুন রাজবংশের ঘোষণা দেন। যা আফশার নামে পরিচিত। নাদের শাহ ইরানকে সুন্নি রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেন।
এদিকে নাদের শাহ অটোমানদের অনুরোধ করেন শিয়াদের প্রচলিত মতবিরোধী সুন্নি বা জাফারি হিসেবে ঘোষণা করার। এবং শিয়াদের ধর্মচর্চা বন্ধ করে দেওয়ার। অটোমানরা দ্বিতীয় বিষয়টি মেনে নিলেও প্রথম অনুরোধ সরাসরি প্রত্যাখান করেন। নাদের শাহ ইরানকে সুন্নি রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করলেও অটোমানরা তাকে স্বীকৃতি দেননি।
নাদের শাহের ইচ্ছা ছিল সুন্নি রাষ্ট্র ঘোষণা করে পরবর্তীতে সাম্রাজ্যে পশ্চিমে বিস্তৃত করবেন। তার এই ফন্দি বুঝতে পেরেই অটোমান সুলতানরা তাকে স্বীকৃতি দেননি। এতে তার সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। যদিও তা অটোমানদের জন্য বড় কোনো হুমকি হয়ে উঠতে পারেনি।
১৭৪৭ সালে নাদের শাহের মৃত্যুর পর তার রাজবংশেরও ইতি ঘটে। পরবর্তীতে যে সকল রাজবংশ ইরান শাসন করেছে তারা অটোমান সুলতানদের ইসলামের খলিফা হিসেবে মেনে নিয়েছে। পরবর্তী যা কিছু বিরোধ হয়েছে তার কারণ ছিল সাম্রাজ্যের সীমানা নিয়ে। তবে এতে বড় কোনো বিরোধ সৃষ্টি হয়নি। ফলে ১৭৪৭ সালের পর অটোমান ও পারস্যের কোনো শাহদের সাথে যুদ্ধ হয়নি।
জয়-পরাজয়ের হিসাব-নিকাশ
ধর্মীয় মতবিরোধ থেকে অটোমান ও সাফাভি সাম্রাজ্যের মধ্যে ধারাবাহিক যুদ্ধ হলেও তার বড় অংশে জয় পেয়েছে অটোমানরা। কারণ অটোমানদের প্রভাব-প্রতিপত্তির কাছে সাফাভিরা তেমন কিছুই ছিল না। সাফাভিরা যেখানে আঞ্চলিক শক্তি, অটোমানরা তখন ইউরোপ, এশিয়া এবং আফ্রিকা পর্যন্ত নিজেদের সাম্রাজ্যকে বিস্তৃত করেছিল।
অটোমানরা ছিল পরাশক্তি। তাদের অনেক শত্রুর মাঝে সাফাভিরা ছিলেন অন্যতম। সুলতান সুলেমানের সময় অটোমানরা স্প্যানিশ, ভেনেশিয়ান, হাঙ্গেরিয়ান এবং রোমানদের সাথে সমানে সমান লড়ে গেছে। হাঙ্গেরি দখল করার পর অটোমানরা দীর্ঘদিন ইউরোপের সাথে যুদ্ধ করেছে। চেষ্টা করেছে ভেনিস দখলের। যদিও তা সম্ভব হয়নি।
অটোমানরা তাদের সুদীর্ঘ শাসনকালে অসংখ্য যুদ্ধ করেছে, যার মাত্র ৫টি ছিল সাফাভিদের বিরুদ্ধে। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল মধ্যপ্রাচ্যকে নিয়ন্ত্রণ করা। সেই হিসেবে সাফাভিরা অটোমানদের প্রধান প্রতিপক্ষ ছিল না। এরপরও তাদের সাথে ১৫১৪ সাল থেকে ১৭৪৭ সাল পর্যন্ত লড়াই চলেছে। তখন থেকে অটোমানদের সাম্রাজ্যের সূর্য ঢলে পড়তে শুরু করে। এরপরও ইরান তাদের বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারেনি। তবে সাফাভিরা আঞ্চলিক শক্তি হয়েও দীর্ঘসময় পরাক্রমশালী অটোমানদের বিরুদ্ধে লড়ে গেছে।