বিগ ব্যাং থিওরি যখন আবিস্কৃত হয়নি; তখনো মানুষ ছিল। আর মানুষের মনে ছিল অপার জিজ্ঞাসা। তাই, জগৎ ও জীবনের উৎস আর সম্পর্ক খুঁজতে গিয়ে জন্ম নিয়েছে নানা উপকথা। কেবল অতীতের ব্যাখ্যা নিয়েই শান্ত থাকেনি মানুষ; দিয়েছে পৌঁছাতে না পারা ভবিষ্যতের ছবি। বলেছে, কীভাবে হবে সবকিছুর সমাপ্তি।
প্রতিটা সংস্কৃতিই একটা চূড়ান্ত দিনের কথা বলে। খ্রিষ্টধর্মে ‘বুক অভ রেভেলেশন’ অনুসারে বিচার দিবস, ইহুদি ধর্মে ‘আখারিত হায়ামিম’, এজটেক পুরাণে ‘পাঁচ সুর্যের আখ্যান’, ইসলামের কেয়ামত এবং জরাথুস্ত্রবাদে মিথ্যার দেবতা আঙরা মাইনুর উপর সত্যপ্রভূ আহুরা মাজদার বিজয় লাভ। হিন্দুধর্ম মতে, অন্যায়ে পূর্ণ কলিযুগে মহাপ্রলয়ের পর আবার নতুন করে সত্যযুগের আগমন ঘটবে। ব্রহ্মার নতুন দিনের শুরু। তাই সবকিছুর শেষ মানে এই ক্ষেত্রে একটা চক্রের সমাপ্তি হয়ে অপর চক্রের শুরু। সময় এখানে সরলরৈখিক না; চাক্রিক। ইন্দো-ইউরোপীয় সংস্কৃতির উত্তরাধিকার হিসাবে নর্স উপকথাতেও এই বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। মধ্যযুগের জার্মান ভাষাগোষ্ঠীর মানুষেরা সেই মহাপ্রলয়কে চিনতো র্যাগনারক নামে। তবে, র্যাগনারকে কেবল মানুষের না; দেবতাদের নিয়তিও নির্ধারিত।
ভাইয়ের সাথে ভাই লড়বে, হত্যা হবে পরস্পরে
আত্মীয়রা শান্তি ভেঙে দিন কাটাবে লড়াই করে;
জগৎ জুড়ে কঠিন সময়, বাড়বে ব্যাভিচার নিয়ত
চলবে কুড়াল আর তরোয়াল, ঢালগুলোও দ্বিখণ্ডিত।
ঝড়ো সময়, নেকড়ে সময়, বসুন্ধরাই পাগল যেনো,
মানুষ হয়েও মানুষ দেখে থাকবে না তিল দরদ কোনো।
(Poetic Edda, শ্লোক-৪৪ থেকে অনূদিত)
র্যাগনারক
প্রাচীন নর্স শব্দ র্যাগনারক (Ragnarök) মূলত দুইটা শব্দের সমষ্টি। প্রথমত Ragna শব্দের উৎপত্তি Regin থেকে; যার অর্থ দেবতাগণ। দ্বিতীয়টি Rök বা নিয়তি হলে র্যাগনারক শব্দের অর্থ দাঁড়ায় ‘দেবতাদের নিয়তি’। অন্যদিকে দ্বিতীয় শব্দটি ‘Rökkr’ বা ‘সন্ধ্যা’ হলে ‘র্যাগনারকর’ হিসাবে অর্থ দাঁড়াবে ‘দেবতাদের সন্ধ্যা’। উভয় ক্ষেত্রেই একটা সমাপ্তিবাচক অর্থই প্রকাশ করছে। মাঝে মাঝে একে অবশ্য ‘আলদার রক’ বা সময়ের সমাপ্তি নামেও ডাকা হয়।
মহাবিশ্ব এবং এতে স্থিত সকল কিছুই ধ্বংস হবে। র্যাগনারক বস্তুত সবকিছু ধ্বংসের সাথে জড়িত কতিপয় ঘটনার সমষ্টি। তুষার আর আগুন দানবেরা একসাথে দেবতাদের উপর আক্রমণ চালাবে। দুনিয়া বিধ্বস্ত হয়ে ডুবে যাবে সমুদ্রে। পানি থেকে আবার গড়ে উঠবে পৃথিবী; যেন এক নতুন সূচনা। নর্স উপকথার সর্বশেষ আখ্যান হিসাবে আঁকা হয়েছে সেই ছবি। ভাইকিংস সংস্কৃতিতে এক অলঙ্ঘ ভবিষ্যৎ র্যাগনারক। যার হাত থেকে মুক্তি পাবে না দেবতারাও। তৎকালীন জার্মান জাতিগোষ্ঠীর বিশ্ববীক্ষা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা পাওয়া যায় র্যাগনারকে।
আখ্যানের শুরু
নর্নস হলো নর্স পুরানে বর্ণিত একদল নারী, যারা নিয়তি নিয়ন্ত্রণ করে। বুঝতে অসুবিধা হয় না, তাদের ক্ষমতার কাছে খোদ দেবতারাও নস্যি। তাদের কেউ এসেছে দেবতা, কেউ এলফ্ এবং কেউ বামনদের থেকে। যখন নর্নসরা আদেশ জারি করবে, তখনই আগমন করবে ফিমবুলভেতর বা মহাশীতকাল। অন্য যেকোনো শীতের চেয়ে এটি আলাদা। ঝড়ো বাতাস চারদিক থেকে তুষার নিয়ে আসবে। সূর্য ম্লান হয়ে যাবে, পৃথিবী নিমজ্জিত হবে অভূতপূর্ব ঠাণ্ডায়। তিন বছর জুড়ে বিস্তৃত এই শীতের মাঝে কোনো প্রকার বিরতি নেই। খাবার ও নিত্যকার দ্রব্যের জন্য মানুষ হন্যে হয়ে যাবে। ভেঙে পড়বে সকল প্রকার আইন ও নৈতিকতাবোধ। কেবল চলবে টিকে থাকার সংগ্রাম। পিতা পুত্রকে হত্যা করবে; পুত্র পিতাকে।
নর্স সৃষ্টিতত্ত্ব মতে, স্কল নামের এক নেকড়ে সূর্যকে এবং হাতি নামের এক নেকড়ে চন্দ্রকে ধাওয়া করে চলছে সৃষ্টির পর থেকেই। হাতি চন্দ্রকে কামড় দিয়ে অল্প অল্প করে খসিয়ে নেয় বলেই চাঁদের হ্রাস ঘটে প্রতি মাসে। র্যাগনারকের সময় স্কল আর হাতি শিকার ধরে ফেলবে। আকাশ থেকে গায়েব হয়ে যাবে চন্দ্র আর সূর্য। তারাগুলোও ধ্বংস হবে; থাকবে শুধু অগাধ অন্ধকার। নয়টা জগৎকে ধারণ করা মহাবৃক্ষ ইগদ্রিসিল হঠাৎ কেঁপে উঠবে। মাটিতে ধসে পড়বে সকল গাছ এবং পাহাড়।
ধ্বংস নিনাদ
কূটকৌশলের দেবতা লোকি বিয়ে করেছিল দানবী আঙ্গরবদাকে। সেই ঘরে জন্ম নেয় তিন সন্তান- ইয়োরমুঙ্গানদর, হেল এবং ফেনরির। দেবতারা ভবিষ্যদ্বাণী জেনেছিলেন, এই সন্তানেরা সৃষ্টিজগতে ধ্বংস ডেকে নিয়ে আসবে। তাই ইয়োরমুঙ্গানদর জন্ম নেয়ার সাথে সাথে সর্বপিতা ওদিন তাকে ফেলে আসে সমুদ্রে। সেখানেই সে মিদগার্দ বা মানুষের পৃথিবীকে বেষ্টনী দিয়ে আছে। দ্বিতীয় সন্তান হেলকে জন্মের পর পাঠিয়ে দেয়া হয় পাতালে। ফেনরিরের জন্ম, বৃদ্ধি আর স্বভাব দেখে দেবতারা চোখের আড়াল করতে সাহস পেলেন না। নির্মাণের জন্য বিখ্যাত সোয়ারতালফেইম থেকে গ্লেইপনির নামে শিকল বানিয়ে আনা হলো। ফেনরিরকে বেঁধে রাখা হলো দেবতা টিয়রের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে।
র্যাগনারকের সময় ফেনরির তার শিকল ভেঙে বেরিয়ে আসবে। ইয়োরমুঙ্গানদর সমুদ্রের তল ছেড়ে উঠে যাবে ডাঙায়। সমুদ্র নিজেই আছড়ে পড়বে পৃথিবীর বুকে। নোঙর থেকে মুক্ত হবে নালফার। নালফার হলো নারী আর পুরুষের নখ দিয়ে তৈরি এক বিশেষ জাহাজ, যা খুব সহজেই ডুবে যাওয়া পৃথিবীতে চলাচল করবে। নাবিক দানববাহিনীকে প্রধান হিসাবে নির্দেশনা দেবে খোদ লোকি। নর্স সৃষ্টিতত্ত্ব মতে, দেবতাদের আগে জন্ম নিয়েছে ইয়োতুন বা দানবেরা। দেবতারাও আবার দুইটি শিবিরে বিভক্ত- এসির এবং ভানির। এসিরই ইয়োতুনদের আসগার্দ থেকে বিতাড়িত করে ভিন্ন জগৎ ইয়োতুনহেইমারে থাকতে বাধ্য করে। লোকি বস্তুত ইয়োতুন ফারাবাউতি ও লাউফির সন্তান। তবে আসগার্দে এসিরের সাথে তাদের একজন হয়েই বেড়ে ওঠে। সেখানেই জন্ম দেয় ওদিনের ঘোড়া স্লেইপনিরসহ তার সন্তানদের।
ওদিনের অন্ধপুত্র হোদরকে প্ররোচিত করেছিল লোকি। অনেকটা মজার ছলেই তার হাতে তুলে দেয় লতায় বানানো বর্শা। কিছু না দেখে, না বুঝে হোদর তা ছুড়ে মারে ভাই বালদরের বুকে। ওদিনপুত্র বালদর মৃত্যুমুখে পতিত হয়। প্রতিশোধের জন্য লোকির ছেলে নারফিকে হত্যা করা হলো। তারপর তার নাড়িভুড়ি দিয়ে পাথরের সাথে বাঁধা হলো লোকিকে। মাথার উপরে বসিয়ে দেয়া হলো বিষাক্ত সাপ। যখনই সাপের বিষ লোকির মুখে ও শরীরে পড়ে, ব্যথায় ককিয়ে উঠে গোটা পৃথিবী। আধুনিক মানুষেরা পৃথিবীর এই কেঁপে উঠাকে ভূমিকম্প বলে।
র্যাগনারকের সময় লোকি বন্দিত্ব থেকে মুক্তি পাবে। নাক আর চোখ দিয়ে আগুন ছুড়ে পৃথিবী জ্বালিয়ে দেবে ফেনরির। নিচের চোয়াল থাকবে মাটিতে আর উপরের চোয়াল আকাশে। ধ্বংস করে যাবে সামনে যা পড়বে সব। ইয়োরমুঙ্গানদর বিষ ছড়িয়ে দেবে মাটি, পানি আর বাতাসে। আকাশ ভেঙে পড়বে। সেই ফাটল দিয়ে মুসপেলহেইমে আটকে থাকা আগুন দানবেরা প্রবেশ করবে পৃথিবীতে। তাদের নেতা সুর্তরের হাতে থাকবে সূর্যের চেয়েও উজ্জ্বল এক তরবারি। দানব সৈন্যদের দলবদ্ধ পদধ্বনিতে ভেঙে পড়বে আসগার্দের সেতু বাইফ্রস্ট। দেবতাদের প্রহরী হেইমদ্যাল ফুঁকে দেবে সতর্ক ঘন্টা গালারহর্ন। অর্থাৎ দেবতারা যেই সময়ের জন্য ভীত ছিল; সেই সময় উপস্থিত।
অন্তিম সংঘর্ষ
হেইমদ্যালের শিঙ্গায় ফুৎকার দেবার কারণে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়বে দেবতারা। ওদিন প্রিয় পরামর্শদাতা জ্ঞানী মিমিরের মাথার সাথে কথা বলবে। বসবে দেবতাদের জরুরি আলোচনা সভা। সংঘর্ষের পরিণাম ও ভবিষ্যদ্বাণী কারো অজানা না। তারপরেও সিদ্ধান্ত হবে সম্মুখ যুদ্ধের। সকলেই সজ্জিত হবে অন্তিম মোকাবেলার জন্য। থর থেকে শুরু করে হেইমদ্যাল। দুইপক্ষ মুখোমুখি হবে ভিগরিদ নামক এক প্রান্তরে। সৃষ্টির সর্বশেষ যুদ্ধের মাঠ। একপক্ষে লোকি, আগুনদানব সুর্তরের বাহিনী, মৃত মানুষেরা, পাতালের কুকুর গার্মর, লোকির তিন দুর্ধর্ষ সন্তান এবং রিমের অধীনে বাকি দানবমণ্ডলি। অন্যপক্ষে শুধু দেবতারা।
ওদিন ফেনরিরকে ঠেকাতে এনহেরিয়ার নিয়ে এগিয়ে যাবে। বিখ্যাত যে সব বীর যোদ্ধারা অতীতে মারা গেছে; তাদের আত্মা ওদিন বিশেষ প্রকোষ্ঠ ভালহালাতে রেখে দিয়েছিল। র্যাগনারকের সময় ফেনরিরকে মোকাবিলার উদ্দেশ্যে জমানো এইসব আত্মাদেরই এনহেরিয়ার বলা হয়। ভাইকিং যোদ্ধারা মৃত্যুর পর এনহেরিয়ার হবার প্রত্যাশা করতো। যাহোক, ওদিন আর তার সহযোগীরা প্রচণ্ড বিক্রমে যুদ্ধ করবে; পৃথিবী আর অমন বীরত্ব দেখেনি। তবুও হবে না শেষ রক্ষা। ফেনরির গোগ্রাসে গিলে ফেলবে তাদের। পিতার মৃত্যু দেখে শোক আর ক্রোধে ঝাঁপিয়ে পড়বে ভিদার। পায়ে তখন বিশেষ ধরনের জুতা। ফেনরিরের চোয়ালে জুতা রেখে মুখ খোলা করে রাখবে। তারপর তরবারি বসিয়ে দেবে টুঁটিতে। মৃত্যু হবে নেকড়ে দানবের।
দেবতা টিয়র মোকাবিলা করবে অন্য পাতালের কুকুর গার্মরের। পরস্পর পরস্পরের হাতে খুন হবে। লোকি এবং আসগার্দের প্রহরী হেইমদ্যাল মুখোমুখি হলে তাদের পরিণামও হবে অনুরূপ। পরস্পরকে হত্যা করবে দেবতা ফ্রেয়র এবং আগুনদানব সুর্তর। থর আর ইয়োরমুঙ্গানদর বহু পুরাতন শত্রু। র্যাগনারকের সময়ে মুখোমুখি হবে দুইজন। থর তার হাতুড়ির সমস্ত শক্তি দিয়ে সাপটাকে গুড়িয়ে দেবে। কিন্তু ততোক্ষণে প্রচুর বিষে ঢেকে দিয়েছে থরকে। মাত্র নয় কদম হেঁটেই মাটিতে আছড়ে পড়বে থর। তার রক্ত মিশে যাবে রক্ত ভেসে যাওয়া ভিগরিদের প্রান্তরে। পৃথিবী তখন বিধ্বস্ত। যা বাকি থাকবে; তাও ডুবিয়ে দেবে সমুদ্র। কেবল থাকবে দীর্ঘ অন্ধকার। চারিদিক এমনভাবে গুটিয়ে নেয়া হবে; যেন কখনোই কোন কিছু সৃষ্টি হয়নি।
শেষ মানে নতুন শুরু
সম্প্রতি জার্মান টিভি সিরিজ ‘ডার্ক’- এর সুবাদে ‘শুরুই শেষ, শেষই শুরু’ ধারণাটা বেশ জনপ্রিয়। নর্স পুরাণের আলোচনাতেও এর আভাস দেখা যায়। র্যাগনারককে তাই গল্পের সমাপ্তি পর্ব মনে হলেও তা একই সাথে নতুন গল্প প্রস্তাবনা। পানির মধ্য থেকে জন্ম নেবে সবুজ, বিশুদ্ধ এবং সুন্দর পৃথিবী। দেবতা হোনির, ভিদার এবং ভালি টিকে থাকবে তখনো। বালদর এবং হোদর উঠে আসবে মৃত্যু থেকে। বেঁচে থাকবে থরের দুই পুত্র মোদি এবং ম্যাগনিও।
ধ্বংসের সময়ে হোদমিমিস হোল্ট নামক জায়গায় লুকিয়ে পড়বে দুইজন মানুষ। একজন পুরুষ- লিফ এবং অপরজন নারী লিফথ্রাসির। তাদের মাধ্যমে আবার আবাদ হতে শুরু করবে পৃথিবী। মৃত সূর্যের কন্যা আকাশে নতুন সূর্য হিসাবে দেখা দেবে। দেবতা, মানুষ আর প্রকৃতি মিলে এক নতুন সময়ের সূচনা ঘটাবে। আর তাদের শাসন করবে এক নতুন পরম শাসক।
অবশেষ
ধরা যাক, আপনি ভাইকিং যুগে চলে গেছেন। মানুষ জানে পৃথিবী একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে; এমনকি তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া দেবতারাও। যার কানাকাড়ি মূল্য আছে; ছাড় পাবে না সেও। পৃথিবীর ভেতরেই ধ্বংসের বীজ নিহিত; এবং তা অপ্রতিরোধ্যভাবে সেদিকেই হেঁটে চলছে। তাহলে আপনি কীভাবে একে ব্যাখ্যা করতেন? এর চেয়ে খুব বেশি ব্যতিক্রম হতো বলে মনে হয় না। অবশ্য র্যাগনারকের পেছনে এরচেয়ে বড় তাৎপর্য আছে।
র্যাগনারক একটা নতুন প্যারাডাইম তৈরির সুযোগ। পৃথিবীতে বিদ্যমান আইন, নিয়ম-নীতি এবং ক্ষমতার সমাপ্তি নিয়ে মানুষের অনুধাবন। মূল্যবোধ এবং কর্মফল নিয়ে ধারণা। ফলে র্যাগনারক হতাশা নিয়ে আসা কোন ট্র্যাজেডি গল্প না; আশা জাগানিয়া চেতনা। মৃত্যু মানুষের অলঙ্ঘ নিয়তি। জীবনের সীমাবদ্ধতার এই ব্যথা যেন মলিন হয়ে যায় দেবতাদের মৃত্যুর নিয়তি শুনলে। দেবতারাও নিজেদের দুর্বলতা, আবেগ আর অবধারিত দুঃখ থেকে বের হতে পারে না। সব জেনেও সাহস, বীরত্ব এবং সম্মান নিয়ে নিয়তির মোকাবিলা করে। মানুষের দ্বারাও তেমন সম্ভব। এই চোখে দেখলে সহস্র বিষাদ, জরা, দুর্ভাগ্য এবং মৃত্যুভয়ও আমাদের দমিয়ে রাখতে পারে না। অনুপ্রেরণা দেয় মহৎ ও পরিশুদ্ধ কাজের মাধ্যমে সত্যকে উচিয়ে তুলতে। সবাই বিদায় নেবে; কেবল শুদ্ধরাই গীত হবে পরবর্তী প্রজন্মের গানে।