আদর্শিক লড়াই স্নায়ুযুদ্ধের পর পৃথিবীজুড়ে শুরু হয় গণতন্ত্রের জয়জয়কার। ১৯৮৯ সালের শুরুর দিকেও ইউরোপের স্কলাররা যে ধারণা করছিলেন, তা চুরমার করে বছরের শেষেই পৃথিবী প্রত্যক্ষ করে বার্লিন দেয়ালের পতন, যার সূত্র ধরে শেষ হয় স্নায়ুযুদ্ধ। একে একে পূর্ব ইউরোপের রাষ্ট্রগুলোতে গণতন্ত্রায়ন শুরু হয়। ১৯৭৪ সালে বিশ্বে যেখানে মাত্র ৩৬টি দেশ ছিল ‘নির্বাচনী গণতন্ত্র’, সেখানে ১৯৯২ সালে পৌছায় ৯৯টিতে, এবং ২০১৪ সালে হয় ১১৮টি।
এই গণতন্ত্রায়ণকে এস পি হান্টিংটন ‘আধুনিক গণতন্ত্রের তৃতীয় ঢেউ’ বলে অভিহিত করেন। কিন্তু নব্বই দশকের শেষ ও একবিংশ শতকের শুরুর দশকেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা চিহ্নিত করেন অনুদার গণতন্ত্রের উত্থান। অর্থাৎ সেসব দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ঠিকই, কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসেন অগণতান্ত্রিক নেতা, যারা ধ্বংস করেন গণতন্ত্রের আদর্শকে, হুমকির মুখে পড়ে সাংবিধানিক উদার গণতন্ত্র। যাদের একটি গোষ্ঠী মূলত জনতুষ্টিবাদী নেতা, বা পপুলিস্ট। যার মধ্যে খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্থান ঘটে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো পপুলিস্ট নেতার।
ট্রাম্প কারা?
ডোনাল্ড জন ট্রাম্প (সংক্ষেপে ডোনাল্ড ট্রাম্প) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫ তম রাষ্ট্রপতি, যিনি রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন ২০১৬ সালে। বিশ্ববাসীর কাছে তিনি পরিচিত একজন জনতুষ্টিবাদী নেতা হিসেবে। জনতুষ্টিবাদী নেতারা ধর্ম, গোত্র, শ্রেণী বা অবস্থানের উপর ভিত্তি করে একটি অংশকে গণশত্রু হিসেবে উপস্থাপন করেন, উস্কে দেন বিভাজন। কাস মাডের মতে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে জনতুষ্ঠিবাদী বলতে সেসব নেতাদের বোঝায় যারা বন্দোবস্তের বিরোধিতা করেন এবং সমাজের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ‘বিশুদ্ধ জনগণ’ ও ‘দুর্নীতিগ্রস্থ এলিট’ নামে পরস্পর বিরোধী বিভাজন সৃষ্টি করেন।
প্রায়শই তারা নিজেদের জনস্বার্থ ও জনগণের প্রকৃত বন্ধু ও প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী দলকে দেশশত্রু, ‘জনগণের স্বার্থের শত্রু’ হিসেবে উপস্থাপন করেন। কেউ তাদের বিরুদ্ধে বললে পড়েন রোষানলে। এছাড়াও জনতুষ্টিবাদী নেতারা অতি-জাতীয়তাবাদী, তারা গণশত্রু হিসেবে উপস্থাপন করে ধর্মের ভিত্তিকে সংখ্যালঘু গোষ্ঠী, অভিবাসী নাগরিক, এস্টাবলিশমেন্টের পক্ষের রাজনীতিবিদেরকে। হার্ভার্ড রাষ্ট্রবিজ্ঞানী লিভস্তকি ও জিবলাটের ভাষায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই বর্তমানে হয়ে উঠেছে কর্তৃত্ববাদের সুফলা ভূমি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পুঁজি করে জনতুষ্টিবাদী নেতা (পপুলিস্ট) ক্ষমতায় আরোহণ করে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে গণতান্ত্রিক নিয়ম, আদর্শ, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান। সুতরাং ট্রাম্প (একটি বিশেষণ হিসেবে) হচ্ছেন তারা যারা জনতুষ্টিবাদী, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অগণতান্ত্রিক নেতা, যারা মূলত উদার গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।
বর্তমান পৃথিবীর চিত্র
Tony Blair Institute for Global Change-এর মতে, বর্তমান পৃথিবীতে (জানুয়ারি, ২০২৩) ক্ষমতায় আছেন মোট ১১ জন জনতুষ্টিবাদী নেতা। অর্থাৎ পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ১.৭ বিলিয়ন মানুষ এখনও জনতুষ্টিবাদী নেতাদের শাসনে বসবাস করছেন। ২০০৩ সালের পর এই সংখ্যা সবচেয়ে কম এসে দাঁড়িয়েছে ২০২৩ সালে। যেখানে ২০২২-এ জনতুষ্টিবাদী নেতা ছিলেন ১৩ জন। তাছাড়া ১৯৯০ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ৩৩টি দেশে ৪৬টি জনতুষ্টিবাদী নেতা ও রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আরোহণ করে।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, বর্তমান বিশ্বে ১১ জন জনতুষ্টিবাদী নেতা ক্ষমতায় থাকলেও সদ্য ক্ষমতাহারা হয়েছেন এমন জনতুষ্টিবাদী নেতা রয়েছেন, যারা ছিলেন বিশ্বব্যাপী আলোচিত। যেমন- ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রাজিলের জাইর বলসোনারো, ফিলিপাইনের রদ্রিগো দুতার্তে, স্লোভেনিয়ার জেনেজ জানসা প্রমুখ। তথ্যমতে বর্তমান জনতুষ্টিবাদী নেতারা হচ্ছেন-
- Giorgia Meloni (Italy)
- Benjamin Netanyahu (Israel)
- Narendra Modi (India)
- Recep Tayyip Erdoğan (Turkey)
- Viktor Orbán (Hungary)
- Andrej Babiš (Czech Republic)
- Jarosław Kaczyński (Poland)
- Mateusz Morawiecki (Poland)
- Viktor Yanukovych (Ukraine)
- Nicolás Maduro (Venezuela)
কিন্তু এই জনতুষ্টিবাদী নেতাদের কে কোন ধরনের জনতুষ্টিবাদী?
জনতুষ্টিবাদের ধরন
কাস মাড জনতুষ্টিবাদী নেতাদের মোটাদাগে তিনভাগে ভাগ করছেন- ডানপন্থী, বামপন্থী ও এন্টি-এস্টাব্লিশমেন্ট বা বন্দোবস্ত বিরোধী।
ডানপন্থী বা সাংস্কৃতিক জনতুষ্টিবাদ
ডানপন্থী জনতুষ্টিবাদী নেতারা অতি-জাতীয়তাবাদী, জাতি রাষ্ট্রের নেটিভিজমে বিশ্বাসী ও সংরক্ষনশীল। অভিবাসী, সংখ্যালঘুদের (ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক) তারা বহিরাগত বিবেচনা করে, মনে করে স্ব-জাতি ও অর্থনীতির জন্য হুমকি। বহু সংস্কৃতির চরম বিরোধিতা করা ডানপন্থী জনতুষ্টিবাদকে বলা হয় সাংস্কৃতিক জনতুষ্টিবাদ। তারা নেটিভদের ‘ট্রু পিপল’ বা প্রকৃত জনগণ হিসেবে উপস্থাপন করে ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও অভিবাসীদের বিরুদ্ধে উসকে দেয়। বিশ্বের মোট পপুলিস্টদের মধ্যে এই ধরনের পপুলিস্টই সবচেয়ে বেশি। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য-
- Giorgia Meloni (Italy)
- Benjamin Netanyahu (Israel)
- Recep Tayyip Erdoğan (Turkey)
- Viktor Orbán (Hungary)
- Jarosław Kaczyński (Poland)
- Mateusz Morawiecki (Poland)
- Viktor Yanukovych (Ukraine)
- Jair Bolsonaro (Brazil)
- Rodrigo Duterte (Philippines)
- Gotabaya Rajapaksa (Sri Lanka)
বামপন্থী বা আর্থ-সামাজিক জনতুষ্টিবাদ
এই ধরনের জনতুষ্টিবাদীদের বামপন্থী জনতুষ্টিবাদী বলা হয়। তারা মূলত ‘ট্রু পিপল’ হিসেবে উপস্থাপন করে শ্রমজীবী মানুষদের, যেখানে পুঁজিপতি, বড় ব্যবসায়ী ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে (যেমন- IMF) উপস্থাপন করে বহিরাগত ও প্রকৃত জনগণের শত্রু হিসেবে। তারা বিশ্বায়ন বিরোধিতা করে এবং সামাজিক সাম্যবাদে বিশ্বাসী। বামপন্থীদের মধ্যে রয়েছেন-
- Narendra Modi (India)
- Nicolás Maduro (Venezuela)
বন্দোবস্ত বিরোধী
এই ধরনের জনতুষ্টিবাদীরা সমাজে প্রচলিত ব্যবস্থার বিরোধী। তারা ডানপন্থা বা বামপন্থার কোনো বৈশিষ্ট্য ধারণ করে না। তারা সমাজকে শুধুমাত্র দুই ভাগে বিভক্ত করে, যেখানে প্রতিষ্ঠিত এলিট শ্রেণিকে দেখানে হয় ট্রু পিপলের শত্রু হিসেবে। এই ধরনের পপুলিস্ট হচ্ছেন-
- Andrej Babiš (Czech Republic)
- Janez Janša (Slovenia)
কে কোন দল ও মতাদর্শে বিশ্বাসী?
উল্লিখিত জনতুষ্টিবাদী নেতাদের মধ্যে কে কোন দল করে ও তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক।
জর্জিয়া মেলোনি
জর্জিয়া মেলোনি ইতালির ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ‘ব্রাদার্স অব ইতালি’র নেতা। তিনি তার জাতীয়তাবাদী এবং অভিবাসন বিরোধী অবস্থানের জন্য এবং সেই সাথে ঐতিহ্যবাহী ইতালীয় মূল্যবোধ এবং আত্ম-পরিচয়ের রাজনীতির জন্য একজন জনপ্রিয় বলে বিবেচিত। বর্তমানে ইতালির কোয়ালিশ সরকার গঠন করেছে মেলোনির দল যার মোট ভোট শেয়ার রয়েছে ২৫.৯৯ শতাংশ।
বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু
বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হচ্ছেন ইসরায়েলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, তিনি প্রায়ই তার ডানপন্থী নীতি, জাতীয়তাবাদী বক্তব্যের জন্য পরিচিত। বৃহত্তর ইসরায়েলি জনসংখ্যার সাথে সংযোগ স্থাপনে ও নির্বাচনে ভোটের জন্য তিনি নিরাপত্তা ও ইহুদি আত্ম-পরিচয়ের মতো বিষয়গুলো ব্যবহার করে থাকেন। তিনি ইসরায়েলের প্রধান ডানপন্থী রাজনৈতিক দল লিকুদ পার্টির সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হন ২০২২ সালের নির্বাচনে। তিনি মনে করেন যে তিনিই ইহুদিদের প্রকৃত কণ্ঠস্বর।
নরেন্দ্র মোদি
নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত ও বর্তমান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তার ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের প্রতি দৃঢ় কণ্ঠস্বর তাকে একজন জনতুষ্টিবাদী নেতায় পরিণত করেছে। সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ ভারতের মাইনরিটির জন্য নানা হুমকি তৈরি করেছে। তিনি হিন্দুত্ববাদ এবং হাইপার ন্যাশনালিজমের উপর জোর দেন।
ভিক্টর অরবান
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানকে তার দৃঢ় অভিবাসন বিরোধী অবস্থান, ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার প্রচেষ্টা এবং ঐতিহ্যবাহী হাঙ্গেরিয়ান মূল্যবোধের উপর জোর দেওয়ার কারণে প্রায়শই একজন জনতাবাদী হিসেবে দেখা হয়। তাকে টিভি কিংবা মিডিয়ায় প্রকাশ্যে মুসলিমবিদ্বেষী ও অভিবাসন বিরোধী বক্তব্য দিতে শোনা যায়। অরবানের রাজনৈতিক দল ফিডেজ, ক্ষমতায় আছেন ২০১০ থেকে।
রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান
তুরস্কের একে পার্টির থেকে নির্বাচিত (২০২৩) প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানকে তার কর্তৃত্ববাদী শৈলীর নেতৃত্ব, তার ইসলামী মূল্যবোধের প্রচারের জন্য জনতুষ্টিবাদী বলা হয়। তিনি নিজেকে তুরস্কের সাধারণ মানুষের নেতা হিসেবে উপস্থাপন করে সেকুলার এলিট শ্রেণীকে সাধারণের শোষণের জন্য দায়ী করেন।
আন্দ্রেজ বাবিশ
চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেজ বাবিশ, রাজনীতিতে তার ব্যবসাভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি, বন্দোবস্ত বিরোধী বক্তব্য এবং সাধারণ মানুষের স্বার্থের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব করার দাবির জন্য একজন জনতুষ্টিবাদী নেতা হিসেবে বিবেচিত। তিনি বলেন, “Run the state like a business”। অন্যরা দুর্নীতিগ্রস্থ ও নিজেকে দুর্নীতিবিরোধী একজন যোদ্ধা হিসেবে উপস্থাপন করেন।
জারোস্লো কাকজিনস্কি ও মাতেউস মোরাউইকি
জারোস্লো কাকজিনস্কি পোলান্ডের ‘ল এন্ড জাস্টিস’ পার্টির নেতা এবং মাতেউস মোরাউইকি একই দলের নেতা ও পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। তারা প্রায়শই তাদের রক্ষণশীল, জাতীয়তাবাদী নীতি এবং উদার গণতান্ত্রিক নিয়মের প্রতি তাদের চ্যালেঞ্জের জন্য জনতুষ্টিবাদী হিসাবে পরিচিত। মাতেউস একজন চরম ডানপন্থী।
নিকোলাস মাদুরো
নিকোলাস মাদুরো, ভেনিজুয়েলার রাষ্ট্রপতি, তার পূর্বসূরি হুগো শ্যাভেজের মতো তিনিও একজন জনতুষ্টিবাদী হিসেবে বিবেচিত। তার সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বক্তব্য ও অর্থনীতির উপর উল্লেখযোগ্য সরকারী নিয়ন্ত্রণের জন্য তাকে জনতুষ্টিবাদী নেতা বলা হয়। তার রাজনৈতিক দল United Socialist Party of Venezuela (PSUV), যা একটি জনতুষ্টিবাদী দল। জনগণ প্রকৃত ক্ষমতার মালিক ও এলিটরা জনশত্রু এই ধরনের কথা জনতুষ্টিবাদী বানিয়েছে।
জাইর বলসোনারো
ব্রাজিলের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও লিভার পার্টির নেতা জাইর বলসোনারোকে প্রায়শই তার ডানপন্থী এবং জাতীয়তাবাদী অবস্থানের পাশাপাশি, শ্রমিক-শ্রেণির জনগণের কাছের মানুষ ও এলিটরা শত্রু- তাদের থেকে পরিত্রাণ পেতে হবে এমন বক্তব্য এবং তার শক্তিশালী কর্তৃত্ববাদী নেতৃত্বের জন্য একজন জনতুষ্টিবাদী বলা হয়। তিনি প্রায়শ রাজনীতিবিদদের দুর্নীতিগ্রস্থ বলে বক্তব্য দেন।
রদ্রিগো দুতার্তে
ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতি রদ্রিগো দুতার্তেকে তার অপরাধ নীতিতে কঠোরতা, কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা এবং তার ‘জনসাধারণের মানুষ’ ভাবমূর্তির জন্য একজন জনপ্রিয় হিসাবে দেখা হয়। এবং সমাজের আমূল পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি জনগণের প্রকৃত ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করতে একটি শ্রেনী– এলিটকে শত্রু হিসেবে উপস্থাপন করেন। তার রাজনৈতিক দল PDP-Laban এর হয়ে ২০১৬ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
জেনেজ জানসা
জেনেজ জানসা স্লোভেনিয়ার তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, স্লোভেনিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা। তার দল একটি রক্ষণশীল দল। তাকে জনতুষ্টিবাদী বলা হয় তার ডানপন্থী এবং জাতীয়তাবাদী নীতির কারণে, সেই সাথে জাতীয় আত্ম-পরিচয়ের রাজনীতি ও বন্দোবস্ত বিরোধী বক্তব্যের জন্য।
পপুলিস্ট নেতাদের সমাজে একটি শ্রেণীকে প্রকৃত জনগণ ও অপর শ্রেণীকে শত্রু বানিয়ে জনসংখ্যার বৃহৎ অংশের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। কিন্তু গণতন্ত্র সবার অধিকারের কথা বলে। গণতন্ত্র ধনীদের সম্পদের সুরক্ষার কথা বলে, গরীবের বৈষম্যের থেকে মুক্তির কথা বলে, সংখ্যালঘুদের নিশ্চিন্তে জীবন পরিচালনার সুযোগ দেয়। গণতন্ত্র ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি, জাতি ব্যতিরেকে প্রকৃত অর্থে দেশের প্রতিটি মানুষের সরকার; এবং জনতুষ্টিবাদীরা উদার গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।