চলতি বছরের আগস্টে যখন ব্রাজিলে আমাজন বন জ্বলছিল, তখন চিন্তিত দেখা গেছে হাজার কিলোমিটার দূরের অনেক মানুষকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাজনের জন্য লাখ লাখ মানুষ প্রার্থনাও করেছেন।
ব্রাজিলের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্চের তথ্যমতে, চলতি বছর আগের তুলনায় আমাজনে আগুন লাগার ঘটনা ৮৪ শতাংশ বেশি ছিল। একই সাথে গত বছরের মতো একই সময়ে আমাজনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।
আমাজনকে বলা হয় পৃথিবীর ফুসফুস। সেই ফুসফুসকে জ্বলতে দেখে বিশ্বনেতাসহ সাধারণ মানুষ সকলেই চিন্তায় পড়ে যান।
চিন্তার অবশ্য বেশ কারণ রয়েছে৷ কেননা বিশ্ব জুড়ে বনভূমি উজাড়ের হার উদ্বেগজনক। আজ থেকে ১২ হাজার বছর আগে মানবজাতি যখন কৃষি কাজ করা শুরু করে, তখন পৃথিবীর অর্ধেক জুড়ে গাছ ছিল প্রায় ৫.৮ ট্রিলিয়ন।
বর্তমান পৃথিবীতে গাছের সংখ্যা কত জানেন? ২০১৫ সালে ন্যাচার সাময়িকীতে প্রকাশিত এক জার্নালের তথ্যমতে, পুরো পৃথিবীতে গাছের সংখ্যা তিন ট্রিলিয়ন।
কিন্তু এই তিন ট্রিলিয়ন গাছ যে নিরাপদে আছে- তা বলার সুযোগ নেই৷ ন্যাচারের গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি বছর সারা পৃথিবীতে ১৫ বিলিয়ন গাছ কাটা পড়ছে। শিল্পের প্রসার হওয়ার পর থেকে সারা পৃথিবীতে প্রায় ৩২ শতাংশ বনভূমি কমেছে, যা ক্রমাগত হারে বেড়েই চলছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, যদি কোনো এক সময় পৃথিবীর সব বনভূমি উজাড় হয়ে যায়, তাহলে কী ঘটবে? বাস্তবিক অর্থে পৃথিবীর সকল গাছ কখনোই উজাড় হবে না, কিন্তু বনভূমির পরিমাণ কমতে কমতে বিপদসীমার কাছাকাছি চলে আসতে পারে। যদি আমরা তর্কের খাতিরে মেনে নিই যে, কোনো কারণে এক রাতের ব্যবধানে পৃথিবীর সব গাছ উজাড় হয়ে গেছে- তখন আসলে আমাদের এই পৃথিবীতে কী ঘটবে? মানুষসহ অন্যান্য প্রজাতি কতদিন কোনো গাছ ছাড়া টিকে থাকতে পারবে?
পৃথিবীর জন্য গাছ হলো আয়ুরেখার মতো। গাছ ছাড়া পৃথিবীর অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। অন্য গ্রহগুলোর সাথে পৃথিবীর মূল পার্থক্য হলো, এখানে মানুষের বসবাস উপযোগী পরিবেশ রয়েছে। আর সেই পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে একমাত্র গাছের জন্য। গাছ ছাড়া আমরা যে পৃথিবী কল্পনা করতে পারি, সেখানে মানবজাতিসহ অন্যান্য প্রজাতির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।
ইতোমধ্যে বনভূমি উজাড় হওয়ার ফলে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হওয়া শুরু করেছে। এর মধ্যে যদি কোনো কারণে পৃথিবীর বাকি সব গাছ হারিয়ে যায়, তা হবে সকল প্রজাতির প্রাণীর জন্য সর্বনাশা এক পরিস্থিতি।
যেসব স্থানে বনভূমি উজাড় হবে, সেখানে সর্বাধিক প্রভাব পড়বে। সেই সাথে বিপদে পড়তে হবে বনভূমি থেকে দূরে থাকা অঞ্চল সমূহকেও। তবে যেসব প্রজাতির প্রাণী সরাসরি একক কোনো গাছ অথবা গাছের কোনো অংশের ওপর নির্ভরশীল, তাদের বিলুপ্তি ঘটবে সবার প্রথমে।
২০১৮ সালে এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব অঞ্চলে গাছের পরিমাণ বেশি, সেখানে মুক্ত এলাকার চেয়ে ৫০-১০০ শতাংশ বেশি প্রজাতির প্রাণীর বসবাস। এমনকি কোনো ফাঁকা স্থানের একটি গাছও জীববৈচিত্র্যকে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে। সেগুলো বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করার পাশাপাশি তাদের খাবার ও আশ্রয় দিয়ে থাকে।
এর অর্থ হলো, একক কোনো গাছের বিলুপ্তিও প্রাণী জগতে অনেক বড় প্রভাব সৃষ্টি করে। একটি গাছ কাটা মানে অনেকগুলো প্রাণীর আহার ও বাসস্থান ধ্বংস করা।
গাছ প্রকৃতিতে প্রাকৃতিক পাম্প হিসেবে কাজ করে। মাটির নিচ থেকে পানি শোষণ করে প্রস্বেদনের মাধ্যমে প্রকৃতিতে বাষ্প আকারে ছড়িয়ে দেয়, যা আবার বৃষ্টি আকারে ঝরে পড়ে। আমরা এটিকে পানিচক্র হিসেবে জানি।
আর পানিচক্র প্রকৃতির জন্য কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ, সে বিষয়ে আমরা স্কুলের বই পাঠ করেই জেনে এসেছি। যদি গাছ না থাকে, তাহলে এই পানিচক্রে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাঘাত ঘটবে।
গাছ শুধু যে বৃষ্টি হতে সাহায্য করে, সেটা নয়। বৃষ্টি ও বন্যার পানিকে আটকে ভূমিধ্বসে বাধাও দিয়ে থাকে। পাশাপাশি উপকূলীয় অঞ্চলে বড় বড় ঝড় আটকাতে বড় ভূমিকা পালন করে গাছপালা। যার প্রমাণ সুন্দরবন কিছুদিন আগেই দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলকে বুক চিতিয়ে বাধা দিয়ে উপকূলের মানুষকে বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছে দেশের সর্ববৃহৎ এই বন।
যদি সব বনভূমি উজাড় হয়ে যায়, তাহলে স্বাভাবিকভাবে সেসব অঞ্চল শুষ্ক হতে হতে মরুভূমিতে পরিণত হবে। এর আগে যদি কখনো ভারি বৃষ্টি হয়, তাহলে সেখানে বড় ধরনের ভূমিধ্বস হবে। কারণ বৃষ্টির পানিকে বাধা দেওয়ার মতো কোনো কিছু তখন থাকবে না। এতে করে সমুদ্র উপকূল ও নদীর পাশ্ববর্তী বিভিন্ন অঞ্চলের বড় একটি অংশ পানির মধ্যে চলে যাবে। পাশাপাশি বড় ধরনের ভূমিধ্বস সমুদ্রে বসবাসকারী জলজ প্রাণীদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
গাছ মানুষকে যে ছায়া প্রদান করে, তা এককথায় অমূল্য। সূর্যের আলো থেকে মাটি যে তাপ শোষণ করে, গাছের ছায়ার মাধ্যমে তা আবার কমে যায়। কারণ গাছ পরিবেশ থেকে তাপ শোষণ করে।
এছাড়া গাছ পরিবেশ থেকে কার্বন ডাই অক্সাইডও শোষণ করে। সেই গাছই যদি না থাকে, পরিবেশে কার্বনের পরিমাণ বেড়ে যাবে। এবং সেইসাথে তাপমাত্রাও বৃদ্ধি পাবে। মাত্র ২৫ বর্গ কিলোমিটার বনভূমি উজাড় করার কারণে গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে বছরে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে বাড়ে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বৈশ্বিকভাবে গাছ ইতোমধ্যে উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। তাদের প্রতি বছর পরিবেশ থেকে বিপুল পরিমাণ কার্বন শোষণ করতে হচ্ছে। কিন্তু এরপরও তাদের কাটা পড়তে হচ্ছে৷ যার ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে৷
জাতিসংঘের ইন্টার গভর্নমেন্ট প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের তথ্যমতে, পুরো বিশ্বের মোট কার্বন নির্গমনের ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে অরণ্যের বিনাশের কারণে।
যদি সারাবিশ্বে কোনো গাছের অস্তিত্ব না থাকে, তাহলে ধারণা করা হচ্ছে, তখন পরিবেশে মোট কার্বনের পরিমাণ দাঁড়াবে ৪৫০ গিগাটনে, যা এতদিন মানুষ যে পরিমাণ কার্বন ত্যাগ করেছে তার দ্বিগুণ।
এর প্রভাব পড়বে ছোট ছোট উদ্ভিদের উপর, বিশেষ করে ঘাস। ছোট প্রজাতির উদ্ভিদ যখন বড় বড় উদ্ভিদের তুলনায় অধিক হারে কার্বন গ্রহণ করবে, তখন তারা তা পুরোপুরি নিজেদের মধ্যে ধারণ করতে পারবে না। একসময় তারা আবার প্রকৃতিতে কার্বন ত্যাগ করবে। এবং কয়েক দশকের মধ্যে এসব উদ্ভিদও হারিয়ে যাবে। ফলে পরিবেশ থেকে কার্বনের পরিমাণ কমার কোনো সুযোগ তখন থাকবে না৷
প্রকৃতিতে একবার যখন কার্বনের পরিমাণ বাড়তে থাকবে, তখন তা বোমায় পরিণত হবে। বলা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা হবে সেটি। আকারেও হবে বিশাল। কেননা, পুরো পৃথিবীই তখন একটি একক বোমায় পরিণত হবে।
পৃথিবী তার স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকশত গুণ উষ্ণ হয়ে উঠবে। এমনকি সাগরের পানিতে কার্বন মিশে যাবে। এতে করে অতিরিক্ত অম্লীকরণ ঘটে সাগরে বসবাস করা সকল প্রাণীর মৃত্যু ঘটবে।
বৈশ্বিক উষ্ণতা বিপদসীমা অতিক্রম করার আগেই মানুষের ভোগান্তি শুরু হবে। অতিরিক্ত তাপমাত্রার এবং গাছের অভাবে পানিচক্র ভেঙে পড়বে। একইসাথে ছায়ার অভাবে কয়েক বিলিয়ন মানুষ ও পশুপাখির মৃত্যু ঘটবে।
বর্তমানে প্রায় ১.৬ বিলিয়ন মানুষ সরাসরি গাছের ওপর নির্ভরশীল। যাদের অনেকে খাবার ও ঔষধ উৎপাদনের সাথে জড়িত। গাছ হারিয়ে গেলে তাদের মধ্যে দরিদ্রতা ও মৃত্যু হানা দেবে। বিশ্ব জুড়ে লাখ লাখ কাঠুরে, কাগজ নির্মাতা, কাঠমিস্ত্রী ও ফল উৎপাদনকারীরা হঠাৎ করেই কর্মহীন হয়ে যাবেন। যার প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতিতে।
বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য বলছে বর্তমানে ১৩.২ মিলিয়ন মানুষ সরাসরি কাঠশিল্পের উপর নির্ভরশীল, যারা প্রতি বছর ৬০০ বিলিয়ন ডলার উৎপাদন করছে।
গাছের অভাবে কৃষি ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। যে সকল ফসল ছায়ায় উৎপন্ন হয়, সেসবের উৎপাদন বহুলাংশে কমে যাবে। অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের অভাবে অধিকাংশ ফসলের উৎপাদন কমে যাবে। যে সকল ফসল বর্তমানে চাষ করতে সমস্যা হচ্ছে, সেগুলো তখন একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। মাটি অতিরিক্ত শুষ্ক হওয়ার কারণে ফসল চাষের জন্য মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু একসময় সেসবও অকার্যকর হয়ে পড়বে। তখন পৃথিবীর অধিকাংশ ভূমি চাষ ও বসবাসের জন্য অযোগ্য হয়ে পড়বে।
পৃথিবীর সকল গাছের বিলুপ্তি মানুষের স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। গাছ পরিবেশ থেকে বিভিন্ন প্রকার দূষণকারী পদার্থ শোষণ করে এবং বিভিন্ন বস্তুকণা তার পাতা ও ডালের মাধ্যমে আটকে রাখে, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর৷
ইউএস ফরেস্ট সার্ভিসের হিসাবমতে, শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের গাছগুলো প্রতি বছর ১৭.৪ মিলিয়ন টন দূষণকারী পদার্থ পরিবেশ থেকে শোষণ করে, যা পরিষ্কার করতে গেলে ব্যয় হবে ৬.৮ বিলিয়ন ডলার। শুধু তা-ই নয়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর গাছের এই ভূমিকা ৮৫০ মানুষের জীবন রক্ষা করে। পাশাপাশি ৬ লাখ ৭০ হাজার মানুষের তীব্র শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে দূরে থাকতে সহায়তা করে।
গাছের অভাবে বিরল ও নতুন নতুন রোগের বিস্তার ঘটে। ইবোলা ভাইরাস এর বড় উদাহরণ। যদি হঠাৎ করে পৃথিবীর সব গাছ হারিয়ে যায়, তাহলে ইবোলা, নিপাহ এবং ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসের দ্রুত বিস্তার ঘটবে। পাশাপাশি মশার মাধ্যমে ছড়ানো ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাবও বেড়ে যাবে।
তবে গাছের অভাব শুধুমাত্র শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও আঘাত করবে। উদ্যান ও বনভূমি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
নিউ ইয়র্কের স্টেট ডিপার্টমেন্ট অভ এনভায়রনমেন্টাল কনজসরভেশন দুশ্চিন্তা কমিয়ে এনার্জি লেভেল ও ঘুমের উন্নতির জন্য উদ্যানে হাঁটার পরামর্শ দিয়েছেন।
স্বাস্থ্যসেবায় গাছের ভূমিকা আরো গভীর। ১৯৮৪ সালে এক গবেষণায় জানা যায়, কোনো অস্ত্রোপচারের পর যদি রোগীকে চার দেয়ালে বন্দী রাখা হয়, তাহলে তার সুস্থ হতে সময় বেশি লাগে। বিপরীতে তার কক্ষের পাশে যদি সবুজ কোনো প্রকৃতির দৃশ্য থাকে, তাহলে রোগী অল্পদিনেই সুস্থ হয়ে উঠেন। সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় জানা গেছে, বাচ্চারা যদি সবুজ প্রকৃতির মধ্যে খেলাধুলা করে, তাহলে তাদের মধ্যে ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে ওঠে। পাশাপাশি তারা পড়াশোনায় অধিক মনোযোগী হয়।
গাছের গুণকীর্তন এখানেই শেষ করা সম্ভব নয়। গাছ অপরাধ কমাতেও সাহায্য করে!
যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে ১০ শতাংশ গাছের বৃদ্ধি ঘটার ফলে ১২ শতাংশ অপরাধ হ্রাস পেয়েছে। এমনকি জাপানের চিকিৎসকরা বর্তমানে রোগ নিরাময়ের জন্য ‘ফরেস্ট বাথ’ এর পরামর্শ দিচ্ছেন।
গাছের বিলুপ্তি পরিবেশ, স্বাস্থ্য কিংবা অর্থনীতি ছাড়াও সংস্কৃতিতেও আঘাত হানবে। গাছ বিশ্বের প্রতিটি দেশের শিল্প, সাহিত্য, কাব্য, গান ও আরো অনেক অংশে জুড়ে রয়েছে। গাছের বিলুপ্তি মানে এসবও হারিয়ে যাবে। বহু কবিতা কিংবা গানের কথা তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে। এছাড়া, গাছ বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের সাথেও জড়িত। গাছের অভাবে অনেক এসব ধর্মীয় অনুষ্ঠানও হারিয়ে যাবে।
সবশেষে প্রশ্ন হলো, মানুষ কি গাছ ছাড়া টিকতে পারবে? উত্তর হচ্ছে- না। পৃথিবীতে যদি কোনো গাছ না থাকে, তাহলে পৃথিবীতে কোনো মানুষের অস্তিত্বও থাকবে না। কেননা গাছের অভাবে বাতাস বিষাক্ত হয়ে যাবে। চাষযোগ্য কোনো জমি থাকবে। উদ্ভিদ ও প্রাণীজ কোনো খাবারই থাকবে না৷ এছাড়া পরিবেশ শুষ্ক হতে হতে বিশ্বের প্রায় সকল ভূমি মরুভূমিতে পরিণত হবে। ফলে তীব্র পানির সংকট দেখা দেবে। পানি, অক্সিজেন ও খাবার ছাড়া কোনো মানুষের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব? অবশ্যই না। তবে সব মানুষ একদিনে মারা যাবে এমন না। তবে পর্যায়ক্রমে সব মানুষেরই মৃত্যু হবে।
তবে এর সমাধান অবশ্যই আছে। আর তা হলো, এখন থেকেই প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো। কারণ একমাত্র গাছই পারে আমাদের আগের পরিবেশকে ফিরিয়ে দিতে।
এখন সিদ্ধান্ত আমাদের। আমরা কি পরিবেশ ধ্বংস করে শিল্প গড়ে তুলবো, নাকি আমাদের পৃথিবীর আরো সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্য বনভূমিকে টিকিয়ে রাখবো? পৃথিবী আমাদের, জীবনও আমাদের। আজ আমরা পৃথিবীর যে ক্ষতিসাধন করে যাব, তার ফল ভোগ করবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। তাই আমাদের এখনই ভাবা প্রয়োজন, আমরা সুন্দরবন কিংবা মহেশখালী ধ্বংস করব, নাকি নিজেদের জন্যই এসব টিকিয়ে রাখব?