মুসলিমদের জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে অন্যতম সেরা একজন পণ্ডিত আবু রায়হান আল বিরুনি। ভূগোল, জোতির্বিজ্ঞান এবং পদার্থবিজ্ঞানসহ বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় অবদান রেখে ইতিহাসের পাতায় অমর হয়েছেন এই ইরানী বহুমুখী পণ্ডিত। ভাষাবিদ, কালনিরুপণবিদ এবং একজন সফল ইতিহাসবিদ হিসেবেও তার সুনাম রয়েছে। মধ্যযুগে যে সময়টাকে ইসলামের স্বর্ণযুগ বলে অভিহিত করা হয়, সে সময়ের একজন কাণ্ডারি আল বিরুনি মুসলিম বিজ্ঞানীদের জন্য আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করে দিয়ে গেছেন। সে সময়ের অনেক মুসলিম বিজ্ঞানীর মধ্যে যে গুটিকয় বিজ্ঞানী ও পণ্ডিতের কাজ বর্তমান সময়েও প্রবলভাবে টিকে আছে, তাদের মধ্যে একজন আবু রায়হান আল বিরুনি।
আবু রায়হান আল বিরুনি ৯৭৩ খ্রিস্টাব্দের ৪ সেপ্টেম্বর উজবেকিস্তানের খোয়ারিজম (বর্তমান খিভা) শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব কাটে অক্সাস নদীর তীরে খেলাধুলা করে। তখন সেখানে খোয়ারিজম রাজবংশের শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত। খোয়ারিজম শাসকরা প্রত্যেকেই জ্ঞান চর্চার উদার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তারা তৎকালীন পণ্ডিতদের সরকারি খরচে বিদেশ ভ্রমণে উৎসাহিত করতেন জ্ঞানের নতুন নতুন শাখায় আরোহণের জন্য। ফলে শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় মুসলিমরা জ্ঞান-বিজ্ঞানে দ্রুত সামনে অগ্রসর হয়। সেই গৌরবময় পথচলার অন্যতম একজন অগ্রনায়ক হচ্ছেন আবু রায়হান আল বিরুনি।
আবু রায়হান মোহাম্মদ তার পুরো নাম। তবে খোয়ারিজমের মূল শহর কাথের বাইরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলেই তার নামের সাথে অতিরিক্ত ‘আল বিরুনি’ অংশটি যোগ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ‘আল বিরুনি’ অর্থ বাইরের। তবে এটা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। অনেকে দাবি করেন খোয়ারিজম শহরের বাইরে অবস্থিত একটি ছোট্ট গ্রাম ‘বিরুনি’তে তার জন্ম, যদিও ইতিহাসে বিরুনি নামক গ্রামের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না! অন্যদিকে শব্দের আক্ষরিক অর্থ প্রথম দাবির পক্ষে জোরালো সমর্থন জানালেও তার নাম ছাড়া আর কোনো ব্যক্তির নামের পাশে এই শব্দটির অস্তিত্ব নেই। তাহলে কীভাবে হলো তার এই নাম? ইবনে সিনাও খোয়ারিজমে বাইরে থেকে এসেছিলেন, কিন্তু তার নামের পাশে তো বিরুনি শব্দটি নেই। তাই তর্কের খাতিরে মেনে নেয়া ভালো- খোয়ারিজমের আশেপাশে আসলেই একটি স্থান ছিল যার নাম বিরুনি এবং আবু রায়হান মোহাম্মদের জন্ম সেখানে।
আবু রায়হান আল বিরুনির পিতা-মাতা তার শৈশবেই মারা যান। তিনি কোথায়, কার কাছে বড় হন এবং পড়ালেখাই বা কোথায় করেন, এসব বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। ধারণা করা হয়, সমসাময়িক মুসলিম বালকদের মতো তিনি মক্তব এবং মাদ্রাসায় পড়ালেখা করেছেন। উচ্চ শিক্ষা তিনি লাভ করেছিলেন কিনা তা জানা না গেলেও তিনি নিজেকে সমৃদ্ধ করেছিলেন দেশে দেশে ভ্রমণের মাধ্যমে এটি নিশ্চিত। তার শৈশব, কৈশোর এবং শিক্ষাজীবন সম্পর্কে বিশদ জানা যায় না। তথাপি অল্প বিস্তর যা কিছু জানা যায়, তা নিয়েও রয়েছে ব্যাপক বিতর্ক। তাই সেসব আলোচনার চেয়ে বরং তার গবেষণার উপরই গুরুত্ব দেয়া যাক।
আল বিরুনি আজন্ম উদার এবং অসাম্প্রদায়িক মানসিকতার অধিকারী ছিলেন। যখন তার জন্মস্থানেই বিশাল বিশাল সমৃদ্ধ লাইব্রেরি স্থাপিত হলো, তখনও তিনি ভ্রমণের উপরই নির্ভর করতেন নিত্যনতুন জ্ঞানার্জনের জন্য। পাশ্চাত্যের এবং ভারতীয় উপমহাদেশের বিজ্ঞান গবেষণার সাথে পরিচিত হতে হলে ভ্রমণ ছাড়া আর কোনো উপায়ও ছিল না। তিনি যখন তার বিখ্যাত বই ‘আল হিন্দ’ রচনা করছিলেন, তখন গোঁড়া মুসলিম সমাজ থেকে তার বিরুদ্ধে বৈধর্ম্যের অভিযোগ উঠেছিল! তথাপি একজন প্রকৃত জ্ঞানপিপাসুকে কোনো অভিযোগই দমিয়ে রাখতে পারে না। কথিত আছে, নিজেকে জ্ঞান চর্চায় উৎসর্গ করতে তিনি বৈবাহিক জীবনে কোনো সন্তান গ্রহণ করেননি। তথাপি সন্তানের প্রতি পিতার ভালোবাসা তিনি জ্ঞানচর্চার জন্য বরাদ্দ করেছিলেন। তবে অধিক বিতর্কিত একটি দাবি অনুযায়ী তিনি বিয়েই করেননি!
আল বিরুনি ফার্সি, তুর্কী, সিরীয় এবং সংস্কৃত ভাষায় দক্ষ ছিলেন। গ্রীক বিজ্ঞান বিষয়ক বইগুলোর আরবি অনুবাদ পড়তেন তিনি। বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের রোমান ভাষার সাথেও তার বেশ সখ্যতা ছিল। খ্রিস্টান এবং ইহুদী অনেক পণ্ডিতের সাথে ছিল তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। এ কারণে বেশ কথাও শুনতে হয়েছে তাকে। অন্যদিকে ভারতীয় উপমহাদেশের জ্ঞান সাধকদের সাথে পরিচয় হয় ১০১০ খ্রিস্টাব্দের পর। ততদিনে তিনি পঞ্চাশের কাছাকাছি বয়সের একজন প্রবীণ। কিন্তু বয়স তাকে দমাতে পারলে তো? তিনি সেই বয়সে নতুন নতুন পণ্ডিতের সাহচর্যে নতুন ভাষা ‘সংস্কৃত’ শিখে ফেললেন। ২,৫০০-৩,০০০ সংস্কৃত শব্দ তিনি অনায়াসে মুখস্ত করে নেন। ভাবতে অবাক লাগে, জীবনীশক্তি কত বেশি হলে একজন মানুষ পঞ্চাশ বছরেও জ্ঞান চর্চায় নিজেকে এমন উদারভাবে বিলিয়ে দিতে পারেন! ভূগোল পড়েছেন বলে পদার্থ পড়বেন না? বিজ্ঞান পড়েছেন বলে ভাষার চর্চা করবেন না? আল বিরুনির কাছে জ্ঞানের যে কোনো নাম নেই, জ্ঞান তার জন্য শুধুই ‘জ্ঞান’।
এ সময় তিনি হিমালয় ভ্রমণ করেন। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত ছোট্ট শহর ‘নগরকোট’ এ অবস্থানকালীন এক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হন আল বিরুনি। তার অবস্থানকালীনই সে শহরটি জয় করেন গজনীর সুলতান মাহমুদ। পরে সুলতানের সৈন্যদের সাথে মাথুরা ও কনৌজ হয়ে গজনী গমন করেন। সেখানেই ১০৩৯ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন আল বিরুনি।
আল বিরুনি একজন অত্যন্ত কুশলী লেখক ছিলেন। বিভিন্ন বিষয়ের উপর তিনি অসংখ্য বই লিখেছেন। তার প্রধান কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে কিতাব আল হিন্দ, আল কানুন আল মাসুদি, আতহার আল বাগিয়া, তারিখুল হিন্দ, কিতাব আল জামাকির ও কিতাব আল সায়িদনা। তিনি বেশ কিছু সংস্কৃত বই আরবীতে অনুবাদ করেন। ভূগোল, ভূগণিত, মানচিত্রবিদ্যা এবং আবহাওয়া বিদ্যা বিষয়ক তার বই সংখ্যা ২৭টি। তাছাড়াও তিনি দর্শন, গণিত, পদার্থ, চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ক বইও লিখেছেন। তবে তিনি সবচেয়ে বেশি বিচরণ করেছেন জোতির্বিজ্ঞানের জগতে।
তখনকার সময়ে মুসলিমদের মধ্যে জোতির্বিজ্ঞানচর্চা ছিল না খুব একটা। অন্যদিকে ভূগোল চর্চাকেও গুরুত্বহীন মনে করা হতো। আল বিরুনি এই গুরুত্বহীনতার উল্টোটি করে দেখান। তিনি পবিত্র কুরআনে বিভিন্ন নবী-রাসুলের ভ্রমণ বিষয়ক আয়াতগুলো তুলে ধরে তৎকালীন মুসলিম সমাজকে ভূগোল চর্চার গুরুত্ব বোঝানোর চেষ্টা করেন। তিনি জোতির্বিজ্ঞান বিরোধীদের বিরুদ্ধেও কুরআনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। তাছাড়াও জোতির্বিজ্ঞানের গুরুত্ব বোঝাতে তিনি চন্দ্র-সূর্যের প্রভাবে জোয়ার-ভাটা এবং ঋতু পরিবর্তন ব্যাখ্যা করেন। অন্যদিকে কিবলার সঠিক দিক নির্ণয়ের জন্য অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ নির্ণয়ের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। ইসলামকে বিজ্ঞানবিমুখী নয়, বরং বিজ্ঞানমুখী করে তোলেন আল বিরুনি। আর পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন আয়াত থেকে বিজ্ঞান বের করে নিয়ে এসে তিনি যেন তৎকালীন মুসলিমদের মন-মানসে বিপ্লব ঘটান।
আল বিরুনি সৌরজগতের সৌরকেন্দ্রিক এবং ভূকেন্দ্রিক তত্ত্বের উপর বিশ্লেষণমূলক বই ‘আল তাহদিদ’ রচনা করেন। তবে সেখানে তিনি ভূকেন্দ্রিক তত্ত্বকে সমর্থন দেওয়ায় বর্তমান পণ্ডিতগণের নিকট সমালোচিত হয়েছেন। তিনি নামাজের সঠিক সময় নির্ধারণের জন্য সময় নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্যের পার্থক্য এবং মেরু অঞ্চলে দীর্ঘ সময় যাবত দিন বা রাত থাকার কারণ সম্বন্ধে তিনি অনুসন্ধান শুরু করেন। এ বিষয়ে তিনি ‘রিসালাহ’ নামক একটি বই লেখেন। এই বইয়ে তিনি সূর্যের দূরত্ব নির্ণয়ের ব্যাপারটিও উল্লেখ করেন এবং টলেমির তত্ত্ব সমর্থন করেন। এই তত্ত্ব মতে সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব পৃথিবীর পরিধির ২৮৬ গুণ।
আল বিরুনি ‘কানুন আল মাসুদি’ বইয়ে চন্দ্র ও সূর্য গ্রহণের চমৎকার ব্যাখ্যা প্রদান করেন। তিনি ঊষা এবং গোধুলি লগ্নের বিস্ময়কর ব্যাখ্যা দান করেন। তিনি দেখান, সূর্য দিগ্বলয়ের ১৮° ডিগ্রি নিচে থাকতে গোধুলির আগমন ঘটে এবং এ বিষয়টি আধুনিককালের জোতির্বিদরা প্রমাণ করেছেন। সূর্যের ব্যাপারে আল বিরুনি বলেন, সূর্য হচ্ছে একটি সৌর অগ্ন্যুৎপাতের গোলকীয় অগ্নিকুণ্ড। অন্যদিকে চাঁদ যে কক্ষে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে তা পূর্ণ গোলক নয় বলে দাবি করেন তিনি। তিনি পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব সঠিকভাবে নির্ণয় করতে না পারলেও পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন কত হতে পারে তা হিসাব করেন। জোয়ার-ভাটার ব্যাপারে তিনি চাঁদের বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন অবস্থানকে দায়ী করেন।
আকাশের তারকারাজি নিয়ে প্রাচীন জোতির্বিদ হিপারকাস এবং টলেমির গবেষণা বিশ্লেষণ করে আল বিরুনি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে আকাশে আসলে কত সংখ্যক তারকা আছে তা সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব না। পুরো আকাশ তো দূরের কথা আকাশের একটি (দৃশ্যমান) ক্ষুদ্র অংশেও ঠিক কত তারা আছে তা নির্ণয় করা সম্ভব না। তিনি তারকাদের ঘিরে অ্যারিস্টটলের প্রচলিত কুসংস্কারের অবসান ঘটান। আকাশের তারার দিকে চেয়ে থাকলে চোখের ক্ষতি হয় কিংবা তারাই মানুষের সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্যের কারণ, এসব বিষয় তিনি ফুঁৎকারে উড়িয়ে দেন। ভাবতে অবাক লাগে, বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তির এই যুগেও অসংখ্য মানুষ নিজের ভাগ্যের জন্য তারকাদের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে আছে। অথচ হাজার বছর আগের একজন ব্যক্তি কতটা উদারমনা হলে এ বিষয়গুলোকে নিছক কুসংস্কার হিসেবে ধরে নিতে পারেন তা পরিমেয় নয়!
তখনকার সময়ে গণিতের প্রধান শাখা ছিল পাটিগণিত, জ্যামিতি, পদার্থবিজ্ঞান এবং সঙ্গীত বিষয়ক বিজ্ঞান। আল বিরুনি প্রতিটিতেই দক্ষতা অর্জন করেন। তাছাড়া গণিতে তখন একটি নতুন শাখা বীজগণিতের উদ্ভব ঘটান আরেক মুসলিম মনিষী মুসা আল খারিজমি। আল বিরুনি বীজগণিতও চর্চা করতেন। তবে পাটিগণিতেই তিনি অধিক দক্ষ ছিলেন। তার ‘রাসিকাত আল হিন্দ’ বইয়ে তিনি গোলকীয় ত্রিকোণমিতি সম্বন্ধে বিস্তর আলোচনা করেন।
জীবাশ্ম বিজ্ঞানেও আল বিরুনির দারুণ ঝোঁক ছিল। তিনি আরবের মরুভূমি, জুরাইন এবং খোয়ারিজমে আবিষ্কৃত ফসিল নিয়ে গবেষণা করেন। গবেষণা ফলাফল কিছুটা উদ্ভটই বলা চলে। তিনি গবেষণা করে জানান, আরবের সেসব মরুভূমি কোনো এক প্রাগৈতিহাসিককালে বিশাল সমুদ্র ছিল! যদিও এ ব্যাপারে কোনো ঐতিহাসিক বা বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যায় না। তিনি সাতটি আকালিম বা মহাদেশ, বিভিন্ন সাগর, উপসাগর এবং মহাসাগর সম্বন্ধেও ভালো জ্ঞান রাখতেন। তিনি হিমালয় বা তৎকালীন হিমাভান্ত পর্বতমালাকে পৃথিবীর মেরুদণ্ড বলে অভিহিত করেন। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় যে ‘চাঁদের পাহাড়’ নিয়ে উপন্যাস লিখেছেন, আফ্রিকার সেই চাঁদের পাহাড়কে আল বিরুনি নীলনদের উৎস বলে গণ্য করেন। অন্যদিকে ভারতবর্ষের ভূগোল তিনি বেশ দক্ষতার সাথে নিখুঁতভাবে বর্ণনা করেছেন। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দীর্ঘ নদী সিন্ধুর উৎপত্তি এবং প্রবাহপথ সম্বন্ধেও আল বিরুনি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে সক্ষম হন।
আবু রায়হান আল বিরুনিকে একজন বিজ্ঞানী, গবেষক কিংবা দার্শনিক বললে তার প্রতি অন্যায় হবে। বরং তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের জ্ঞান ‘সাধক’। জ্ঞানের মাধ্যমেই তিনি ইহলৌকিক এবং পারলৌকিক পুণ্য অর্জনের পথ বেছে নিয়েছিলেন। তিনি মুসলিম সমাজের গোঁড়ামি গ্রহণ করেননি, তথাপি তিনি আট-দশজন সাধারণ মুসলমানের চেয়ে অধিক ধর্মপ্রাণ ছিলেন। অদম্য পরিশ্রম, দুর্দান্ত যুক্তি এবং অক্লান্ত প্রচেষ্টায় আল বিরুনি মধ্যযুগের একজন শ্রেষ্ঠ ভূতত্ত্ববিদ, জোতির্বিদ কিংবা ‘জ্ঞান সাধক’ হয়ে ইতিহাসের পাতায় অমর হয়েছেন।