Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ডিনামাইট থেকে নোবেল পুরস্কার: আলফ্রেড নোবেলের কীর্তি

‘নোবেল পুরস্কার’, শব্দযুগল কানে আসলেই চোখে ভেসে ওঠে সেরাদের মধ্যে সেরা পদার্থবিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, রসায়নবিদ, চিকিৎসাবিদ দের কথা। নিজেদের কাজের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট হিসেবেই প্রতি বছর নোবেল পুরস্কার পান গুটিকয়েক জ্ঞানীগুণী। এই পুরস্কারটিকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানজনক, ঈর্ষণীয় এবং দামী পুরস্কার। কি বিজ্ঞানী, কি সাহিত্যিক, সকলের মনেই নিজ কাজের জন্য সম্মানিত হবার বাসনা থাকে। এক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কার যেন একটি সার্বজনীন স্বপ্নের নাম। আর এই নামটি, এই পুরস্কারটি আজ এত সম্মানিত, এত জনপ্রিয় যার জন্য, তিনি আলফ্রেড নোবেল।

জন্ম ও শৈশব

আলফ্রেড বার্নার্ড নোবেল, ১৮৩৩ সালের ২১ অক্টোবর সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে এক গরীব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ইমানুয়েল নোবেল ছিলেন একজন স্বপ্রতিষ্ঠিত প্রকৌশলী, উদ্ভাবক এবং উদ্যোক্তা যিনি প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা খুব একটা করতে পারেননি। তার মা অ্যান্ড্রিয়েট আলসেল ছিলেন গৃহিণী।

নোবেলের বাবা ইমানুয়েল এর ব্যবসায় হঠাৎ মন্দা দেখা দেয়। পরপর কয়েকটি মন্দায় পড়ে তিনি ঋণখেলাপী হয়ে যান। এদিকে নোবেল ছিল তার চতুর্থ সন্তান। দুর্ভাগা নোবেলের জন্মের পরই বাবার ব্যবসায় এই আকাল হওয়ায় ঠিকমতো আদরযত্নও পেতেন না। তার ভাগ্যের চূড়ান্ত পরিহাসে তাদের বাড়িটা আগুনে পুড়ে যায়। নোবেল পরিবার একেবারেই নিঃস্ব হুয়ে পড়ে।

আলফ্রেডের বয়স যখন ৪ বছর, তখন তার বাবা ইমানুয়েল নতুন ব্যবসার উদ্দেশ্যে ফিনল্যান্ড পাড়ি জমান। পরিবার সুইডেনই রেখে যান। তবে নতুন ব্যবসা শুরু করা এবং পরিবারের জন্য টাকা পাঠাতে তার অনেকদিন সময় লেগে যায়। তখন ইমানুয়েলের পরিবারকে সহায়তা করেন ইমানুয়েলের শ্বশুর তথা আলফ্রেডের নানা। তিনি আলফ্রেডের মাকে একটি মুদি দোকান খুলে দেন। আলসেল সেখানে দিন রাত কাজ করতেন সামান্য লাভের জন্য যা দিয়ে তার পরিবার চলতো।

কিশোর আলফ্রেড নোবেল; google.com

৭ বছর বয়সে আলফ্রেড ‘জ্যাকব’স প্যারিশ অ্যাপলজিস্ট স্কুল’ নামে একটি দরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের স্কুলে ভর্তি হন। স্কুলে ছাত্র-শিক্ষক সবাই ছিল বেশ রুক্ষ মেজাজের অধিকারী। তার উপর শৃঙ্খলাজনিত কারণে প্রতিদিনই শিক্ষার্থীদের পেটাতেন শিক্ষকরা। কিন্তু আলফ্রেড এই পরিবেশে মানিয়ে নেন চমৎকারভাবে। তিনি পড়ালেখায় এবং অন্যান্য কাজে বেশ ভালো করেন যার জন্য তার বাবা তার উপর বেশ খুশি হন।

রাশিয়ায় নোবেল

ছেলে স্কুলে ভালো করছে তো বাবাও ব্যবসায় উন্নতি করলেন। রাশিয়ান মিলিটারির জন্য অস্ত্র তৈরীর একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন ইমানুয়েল। বিত্তবান হন অল্প সময়ের মধ্যেই আর পরিবারকেও নিয়ে আসেন রাশিয়া। সেইন্ট পিটার্সবার্গে নোবেল যখন পা রাখেন তখন তার বয়স মাত্র ৯ বছর। রাশিয়ান ভাষা শিখতে তার সময় লেগেছিল মাত্র এক বছর। ইমানুয়েল ছিলেন কঠোর প্রোটেস্ট্যান্ট নিয়মকানুনের অনুসারী। রাশিয়ায় তিনি তার সন্তানদের আর স্কুলে পাঠাননি। বাড়িতে গৃহশিক্ষক রেখে তাদেরকে প্রোটেস্ট্যান্ট ভাবধারার শিক্ষা দান করেন। ইমানুয়েলের অস্ত্র ব্যবসা খুব দ্রুতই বেড়ে উঠতে লাগলো এবং পরিচিতি লাভ করলো। এর মাঝে আলফ্রেডের পড়াশুনাও চলছিল ভালই। রসায়ন হয়ে ওঠে তার প্রিয় বিষয়। রসায়নে তিনি বেশ দক্ষতা অর্জন করেন। অন্যদিকে ইংরেজি, ফরাসি আর জার্মান ভাষাও শিখে ফেলেন।

স্টকহোমের এই বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন আলফ্রেড নোবেল; stockholmskallan

১৬ বছর বয়সে আলফ্রেড নোবেল একজন লেখক হবেন বলে ঠিক করেন। গৃহশিক্ষকের নিকট শেক্সপিয়ার পড়ে তিনি সাহিত্যের প্রেমে পড়েন। অন্যদিকে শেলীর কবিতায় মুগ্ধ হয়ে তিনি কবিতা লিখাও শুরু করেন। বিষয়টি জানতে পেরে তার বাবা তাকে বলেন যে সাহিত্য পড়া ভালো তবে তিনি তার ছেলেকে ঐ পথে যেতে দিতে পারেন না। তিনি নোবেলকে যুক্তরাষ্ট্রে এবং ইউরোপে ঘোরার প্রস্তাব দেন। বিনিময়ে তার ছেলে যেন তার ব্যবসার কাজকর্মে মনোনিবেশ করে।

নোবেল তার বাবার এই প্রস্তাবে সানন্দে রাজি হয়ে গেলেন। ভ্রমণে গিয়ে তিনি নিউ ইয়র্ক আর প্যারিস ঘুরে দেখার সুযোগ পেলেন। বেশিরভাগ সময়ই কাটাতেন রাসায়নিক গবেষণাগার আর ফ্যাক্টরিতে। ১৮৫২ সালে যখন তিনি রাশিয়া ফিরে আসেন, তখন তার বয়স উনিশ। তার বাবার ব্যবসা তখন বিশাল যেখানে প্রায় ১০০০ এর অধিক শ্রমিক কাজ করে। স্বাস্থ্য সমস্যা এবং পুনরায় আর্থিক সঙ্কটে রাশিয়া ফিরে এসে নোবেল পুরোদমে বাবার ব্যবসায় মন দেন। কিন্তু তার স্বাস্থ্য ততদিনে বেশ খারাপ। ঘন ঘন রোগে ভুগতেন কিশোর নোবেল। তার স্বাস্থ্যের সাথে সাথে ইমানুয়েলের ব্যবসাও খারাপ হতে শুরু করে।

আলফ্রেডের বয়স যখন ২৫, তখন ইমানুয়েলের ব্যবসা গভীর অর্থাভাবে। এর মূল কারণ ছিল রাশিয়ান সরকারের ক্রিমিয়ার যুদ্ধে হেরে যাওয়া। ক্রিমিয়া যুদ্ধ হেরে সরকার অস্ত্রের অর্থমূল্য পরিশোধ করেনি। তাছাড়া ইমানুয়েল তখনকার সময়ে ব্যবহৃত গানপাউডারের চেয়ে অনেক শক্তিশালী একপ্রকার বিস্ফোরক ‘নাইট্রোগ্লিসারিন’ আবিষ্কারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এই ব্যর্থতাও তার ব্যবসায় আর্থিক ক্ষতির কারণ হিসেবে কাজ করে।

নাইট্রোগ্লিসারিন

নাইট্রোগ্লিসারিনের রাসায়নিক সংকেত; wikipedia.org

১৮৬৩ সালে রাশিয়া ফিরে এসে অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম শুরু করেন নোবেল। তার বাবা-মা তখন সুইডেন চলে গেছেন। নোবেল একটি ছোট শিল্প কারখানায় নিজের ল্যাবরেটরি স্থাপন করেন। এখানে তিনি হাড়ভাঙা পরিশ্রম শুরু করেন। দৈহিকভাবে খুব একটা ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী না হলেও তিনি দৈনিক ১৮ ঘন্টা ল্যাবরেটরিতে কাজ করতেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি নাইট্রোগ্লিসারিন এর বিস্ফোরণ ঘটাতে শিখে যান।

সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু ১৮৬৪ সালে ঘটে যায় একটি মর্মান্তিক ঘটনা। তার কনিষ্ঠ ভাই এমিলও গবেষণাগারে কাজ করতো। দুর্ঘটনার দিন এমিল, আরও একজন সহকর্মী এবং ঝাড়ুদার সহ ৫ জন পুড়ে মারা যায়। আলফ্রেড এতে করে প্রাথমিকভাবে কিছুদিন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তবে কর্মঠ মানসিকতার নোবেল বেশিদিন কাজের বাইরে বসে থাকতে পারেননি।  খুব দ্রুতই তিনি অধিক পরিমাণ নাইট্রোগ্লিসারিনের বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য গবেষণা শুরু করেন এবং সফলও হন।

ব্লাস্টিং ক্যাপ

আলফ্রেড নোবেল কর্তৃক উদ্ভাবিত ব্লাস্টিং ক্যাপ; cactusbush

ল্যাবরেটরিতে আগুন লেগে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু হবার পর থেকেই নোবেল কিভাবে অধিক পরিমাণ বিস্ফোরক সহজে এবং অব্যর্থভাবে বিস্ফোরিত করা যায় সে বিষয়ে গবেষণা করছিলেন। অবশেষে তিনি আবিষ্কার করলেন তার বিখ্যাত ব্লাস্টিং ক্যাপ ডেটোনেটোর। তার এই ক্যাপ আবিষ্কারের পর প্রায় ৫০ বছর কোনোরকম পরিবর্তন ছাড়াই ব্যবহৃত হয়। এমনকি এখনো কোনো কোনো কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

অতঃপর ডিনামাইট!

ডিনামাইট; prezi.com

১৮৬৩ সালে আলফ্রেড নোবেল নাইট্রোগ্লিসারিনের সাথে কাঠ কয়লার মতো আরও কিছু গুড়ো পদার্থ মিশিয়ে একপ্রকার অধিক শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল বিস্ফোরক তৈরী করেন। ১৮৬৪ সালে তিনি তার এই নতুন বিস্ফোরক এর জন্য সুইডিশ প্যাটেন্ট অফিসে প্যাটেন্ট এর জন্য আবেদন করেন। তবে কিছু দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় তার আবেদন মঞ্জুর হচ্ছিল না। এরপর তিনি আবার গবেষণায় ফিরে যান। তিনি নাইট্রোগ্লিসারিনকে এক প্রকার শোষক পদার্থ দিয়ে শোষণ করিয়ে নেন। পদার্থগুলো হচ্ছে কিসেলগার, করাতের কাঠের গুড়ো, সিলিকেট ইত্যাদি। এরপর এই বিস্ফোরককে কাগজে মুড়ে তৈরী করেন ডিনামাইট। তিনি গ্রীক শব্দ ‘ডিনামিস’ থেকে ইংরেজি প্রতিশব্দ ডিনামাইট শব্দটি নেন যার অর্থ শক্তি। এই ডিনামাইটকে শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা হবে বলেই তিনি বিশ্বাস করতেন।

আরও কিছু বিষ্ফোরক

১৮৭৩ সালে আলফ্রেড নোবেল প্যারিসে চিরস্থায়ীভাবে থিতু হবার বাসনা প্রকাশ করেন। দু’বছর পর তিনি ‘গ্যালিগনাইট’ নামক একপ্রকার বিষ্ফোরক তৈরী করেন। এই গ্যালিগনাইট ছিল ডিনামাইটের চেয়ে অধিক শক্তিশালী, স্থিতিশীল, নিরাপদ এবং পানির নিচেও বিষ্ফোরণ যোগ্য যা একে নিয়ে যায় ভিন্ন মাত্রায়।

১৮৮৭ সালে নোবেল নাইট্রোসেলুলোজ এবং নাইট্রোগ্লিসারিনের মিশ্রণে তৈরী করেন বুলেট এবং কামানের শেলে ব্যবহারের জন্য একপ্রকার প্রোপ্যালেন্ট, যার নাম ‘ব্যালিস্টিট’। ফরাসী মিলিটারি এই ব্যালিস্টিট এর প্রতি কোনো আগ্রহ না দেখালে তিনি ইতালির মিলিটারির কাছে লাইসেন্স করিয়ে নেন। এতে করে ফরাসী সরকার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালায়, তার গবেষণাগারে অভিযান চালায় এবং অনেক সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করে। এই ঘটনায় দুঃখ পেয়ে নোবেল চিরতরে ফ্রান্স ত্যাগ করে ইতালিতে বসবাস শুরু করেন।

নোবেল পুরস্কার ও একটি বিস্ময়কর ইতিহাসের যাত্রা শুরু

আলফ্রেড নোবেলের ছবি সম্বলিত নোবেল পুরস্কার; history.com

নোবেল তার বিষ্ফোরক তথা ডিনামাইট থেকে যতই উপার্জন করছিলেন ততই মর্মপীড়ায় ভুগতে শুরু করেন। তিনি বুঝতে পারেন তার মৃত্যুর পর মানুষ তাকে চিরজীবন ঘৃণাভরে স্মরণ করবে। বিশেষ করে ভাইয়ের মৃত্যুর তিনি একথা ভালোভাবেই উপলব্ধি করেন। তিনি দেখেন যে একটি পত্রিকা ভুলক্রমে তার ভাইয়ের বদলে তার মৃত্যুর শোক সংবাদ ছেপেছে। সংবাদটির শিরোনাম ছিল এরূপ-

“মৃত্যু ব্যবসায়ীর মৃত্যু!”

তাই সবকিছু ভেবে এবং ডিনামাইট আবিষ্কারকে নিজের পাপ হিসেবে মনে করে এর প্রায়শ্চিত্ত করতে, ভবিষ্যতের পৃথিবীকে সুন্দর করতে তিনি এক অভাবনীয় কাজ করে রেখে যান। তিনি তার বিশাল পরিমাণ বিত্ত বৈভব সব মানব কল্যাণে কাজ করা ব্যক্তিদের পুরস্কার প্রদানের জন্য রেখে যান। তিনি নিজের ৯৪ ভাগ সম্পত্তি দিয়ে পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য, শান্তি এই ৫টি বিষয়ে বৈশ্বিকভাবে সেরা ব্যক্তিদের পুরস্কার প্রদানের জন্য ফান্ড গঠন করেন। ১৯০১ সালে তার মৃত্যুর ৫ বছর পর প্রথমবারের মতো নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়।

ব্যক্তিগত জীবন এবং মহাপ্রয়াণ

ব্যক্তিগত জীবনে নোবেল ছিলেন বেশ সৌখিন। আর্থিকভাবে যখন স্বচ্ছল হতে শুরু করেন তখন থেকেই তিনি মোটামুটি বিলাসবহুল জীবন যাপন শুরু করেন। তথাপি পরিশ্রমের কোনো কমতি ছিল না তার মাঝে। তিনি খুবই দানশীল ছিলেন এবং নিজের অতীতের কথা স্মরণ করে সর্বদাই দান করতেন। একদিন তিনি তার কোনো এক গৃহভৃত্যকে জিজ্ঞেস করলেন যে সে কি উপহার চায়। জবাবে ভৃত্য নোবেলের একদিনের আয় চেয়েছিল! নোবেল ভৃত্যকে সেদিন যে পরিমাণ অর্থ দান করেছিলেন তার বর্তমান মূল্য ২০ লাখ ডলারেরও বেশি!

ধনীরা স্বভাবত নারীর প্রতি খুবই দুর্বল হতো, কিন্তু নোবেল ছিলেন ঠিক বিপরীত। তিনি ভাবতেন নারীরা তাকে ভালবাসে না অথবা নারীদের নিকট তিনি খুবই অপ্রিয়। অন্যদিকে তিনি খুবই লাজুক এবং নিঃসঙ্গ প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। কথা কম বলতেন এবং খুব সহজে কারো বন্ধু হতে পারতেন না।

দাম্পত্য জীবন শুরু করতে চেয়েছিলেন আলেক্সান্দ্রা নামক এক নারীর সাথে যার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হন নোবেল। ১৮৭৬ সালে বার্থা কিনস্কি নামে এক মহিলাকে নিজের পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ দেন যার প্রেমে পড়তে নোবেলের সময় লেগেছিল মাত্র কয়েক সপ্তাহ। কিন্তু বার্থার আগেই বিয়ে ঠিক হয়েছিল এবং সে কয়েক বছর পর প্যারিস ছেড়ে চলে যায়। তবে নোবেল তার পরবর্তী জীবনে সবসময় চিঠি আদান প্রদানের মাধ্যমে বার্থার সাথে যোগাযোগ রাখেন। ঘটনাক্রমে ১৯০৫ সালে বার্থা শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

নোবেলের অসমাপ্ত প্রেম কাহিনির এখানেই শেষ নয়। তিনি বার্থার প্রেমে ব্যর্থ হয়ে সোফি নামের আরেক অস্ট্রিয়ান নারীর প্রেমে পড়েন যার আগের প্রেমিকের ঘরে একটি সন্তান ছিল! তথাপি নোবেল নিয়মিত সোফির সাথে দেখা করতে অস্ট্রিয়া যেতেন এবং টাকা পাঠাতেন। এই প্রেমের শেষ হয় যখন সোফি তার আগের প্রেমিককে বিয়ে করে!

জীবনের অন্তিম সময়ে নোবেল হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগেছেন। ১৮৯৬ সালের ১০ ডিসেম্বর ৬৩ বছর বয়সে এই মহান বিজ্ঞানী মৃত্যুবরণ করেন। স্টকহোমের উত্তরাঞ্চলীয় সমাধিক্ষেত্রে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।

তথ্যসূত্র

১) en.wikipedia.org/wiki/Alfred_Nobel

২) nobelprize.org/alfred_nobel/biographical/articles/life-work/

৩) biography.com/people/alfred-nbel-9424195

৪) bbc.com/history/historic_figures/nobel_alfred.shtml

৫) famousscientists.org/alfred-nobel/

Related Articles