Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

জর্জ বুল: একজন স্বশিক্ষিত গণিতবিদের কথা

কম্পিউটার বা ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স নিয়ে একটু আধটু পড়াশোনা করেছেন যারা, তারা সবাই বুলিয়ান বীজগণিতের সাথে পরিচিত। ডিজিটাল সার্কিট ডিজাইনের এ বীজগাণিতিক পদ্ধতিটির নাম, জর্জ বুল নামক একজন ইংলিশ গণিতবিদের নাম থেকে এসেছে। ১৮৫৪ সালের দিকে এ গাণিতিক মডেল প্রস্তাব করেছিলেন তিনি।

সালটির দিকে ভালোভাবে লক্ষ্য করলে অবাক হতে পারেন। ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সের বিকাশ হয় এরও প্রায় এক শতাব্দী পরে। তাহলে এত আগের একজন গণিতিবিদ এ গণিত তৈরি করেছেন কীভাবে? জর্জ বুল আসলে এ গাণিতিক প্রক্রিয়ার প্রস্তাব করেছিলেন ‘দর্শনের লজিকে’ প্রয়োগে করার জন্যে, পরে ১৯৩৮ সালে আমেরিকান ইঞ্জিনিয়ার ক্লড শ্যানন একে বৈদ্যুতিক সার্কিটে প্রয়োগ করেন।

দর্শনের ‘লজিক’ থেকে ইলেকট্রণিক্সের ‘লজিক’ কীভাবে আসলো সেটি আরেক গল্প, তা অন্য কোনো লেখায় আলোচনা করা যাবে। আজকের লেখায় আমরা আলোচনা করবো জর্জ বুলের জীবন নিয়ে।

জর্জ‌ বুলের প্রতিকৃতি; Image Source: irishphilosophy.com

১৮১৫ সালের ২ নভেম্বর ইংল্যান্ডের লিংকন শহরে জন্মগ্রহণ করেন জর্জ বুল। বাবা জন বুল ও মা মেরি এন বুলের চতুর্থ সন্তান ছিলেন তিনি। তার বাবা জন বুল ছিলেন একজন ছোটখাট ব্যবসায়ী, জুতা মেরামতের একটি দোকান ছিল তার। জুতা মেরামতের প্রতি জনের যতটা না আগ্রহ ছিল, তার চেয়ে বেশি আগ্রহ ছিল অপটিক্যাল যন্ত্রপাতির বিষয়ে। এ বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত গণিত নিয়েও তিনি বেশ দক্ষ ছিলেন।

জন বুল একবার একটি টেলিস্কোপ তৈরি করেছিলেন। এরপর নিজের দোকানের সামনে একটি বিজ্ঞপ্তি টানিয়ে দিয়েছিলেন, “নিষ্ঠাবান অন্তর নিয়ে যারা মহান ঈশ্বরের সৃষ্টি দেখতে চান, তাদের আমার টেলিস্কোপ দিয়ে দেখার আমন্ত্রণ রইলো।” প্রযুক্তি ও গণিত বিষয়ে বাবার ভালোবাসাই সঞ্চারিত হয়েছিল জর্জ বুলের মাঝে। জর্জ বুল গণিতের প্রথম পাঠ পেয়েছিলেন বাবার কাছ থেকেই।

প্রথাগত শিক্ষা খুব বেশিদিন তার ভাগ্যে জোটেনি। সাত বছর বয়সে স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। খুব দ্রুতই অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্কুলে। স্কুলের পড়াশোনা আয়ত্ব করতে কষ্ট হয়নি তার। কৈশোরে স্কুলের পাশাপাশি ভাষা শেখার প্রতি মনোযোগ দেন তিনি। স্থানীয় এক বই বিক্রেতার কাছ থেকে ল্যাটিন শেখেন, ধার করা বই দিয়ে শেখেন গ্রিক, ফরাসি ও জার্মান ভাষা।

চার্চ অব ইংল্যান্ডে পাদ্রি হবার প্রস্তুতি হিসেবে এ ভাষা শেখা শুরু করেছিলেন তিনি। একেই নিজের ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেবেন ভেবেছিলেন তিনি। ১৮৩১ সালে, ষোল বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে দেন জর্জ। দরিদ্র পরিবারকে সাহায্য করার জন্য তিনি সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি নেন একটি বোর্ডিং স্কুলে। এটি ছিল খ্রিস্টান ওয়েসলিয়ান মেথডিস্টদের পরিচালিত একটি স্কুল। সেখানে ল্যাটিন ও গণিত শেখাতেন তিনি।

জর্জ বুলের বাড়িতে যুক্ত করা হয়েছে এ ফলকটি; Image Source: wikimedia commons

তার জ্ঞানের জন্যে তিনি শেখানে শ্রদ্ধাভাজন হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু এ চাকরি দু’বছরের বেশি স্থায়ী হয়নি তার। ওয়েসলিয়ান মতবাদের সাথে তার দ্বিমতের খবর প্রচারিত হলে এ চাকরি ছাড়তে হয় তাকে। এছাড়া বোকাসোকা ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াতে গিয়ে তিনি ধৈর্য ধরে রাখতে পারতেন না। তাদের বারবার একই বিষয় বোঝাতে গিয়ে মেজাজ হারিয়ে ফেলতেন প্রায়ই। এটি ছিল তার চাকরি ছাড়ার দ্বিতীয় কারণ।

তবে এ দু’বছর তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এ সময় জর্জ ভাষা শেখার বদলে গণিত বিষয়ে মনোযোগী হন। ল্যাগ্রাঞ্জ, নিউটন, পয়সনের মতো বিখ্যাত গণিতবিদদের কাজ নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। এ পড়াশোনা তিনি একা একাই করেছিলেন, কোনো সহপাঠী বা কোনো প্রথাগত পাঠ্যক্রম ছাড়া। পরবর্তীকালে এক বন্ধুর কাছে বলেছিলেন, তার প্রচণ্ড ইচ্ছা শক্তির কল্যাণেই এটি সম্ভবপর হয়েছিল। কোনো বিষয় যতক্ষণ না বুঝতে পারতেন, ততক্ষণ বার বার পড়ে যেতেন তিনি।

ওয়েলসিয়ান স্কুলে তার চাকরি ছাড়ার পর তিনি আবার শিক্ষকতার চাকরি নেন ওয়াডিংটনে। কিন্তু বৃদ্ধ বাবা-মায়ের কাছে থাকার জন্য এ চাকরিও ছাড়তে হয় তাকে। এরপর ১৮৩৫ সালে লিংকনে ফিরে এসে নিজের স্কুল চালু করেন। এটি একদিক দিয়ে তার জন্যে একটি সুবর্ণ সুযোগ নিয়ে আসে।

এর কিছুদিন আগে লিংকনে মেকানিকস ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। রয়্যাল সোসাইটি থেকে প্রকাশিত গবেষণাপত্র পাওয়া যেত সেখানে। সৌভাগ্যবশত জর্জের বাবা সে সময় ছিলেন এ ইনস্টিটিউটের কিউরেটর। তার সুবাদে কাজের বাইরে জর্জের অবসর সময় কাটতে থাকে এ ইনস্টিটিউটের পড়ার ঘরে। জন্ম হতে থাকে একজন ‘গণিতিবিদ জর্জ বুলের’।

এ বাড়িতেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মেকানিক্যাল ইনস্টিটিউট; Image Source: wikimedia commons

১৮৩৮ সালের দিকে এসে জর্জ বুল তার মৌলিক প্রবন্ধ লিখতে শুরু করেন। পরপর দুটি প্রবন্ধ রচনা করেন তিনি। এরপর আসে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, তার এ প্রবন্ধ ছাপাবে কে? একজন স্কুল শিক্ষক, যে গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রী তো পরের কথা, কখনো বিশ্ববিদ্যালয়েই যায়নি, এমন একজন ব্যক্তির প্রবন্ধ কি কোনো জার্নাল প্রকাশ করবে? বুল যখন তার এ দুটি প্রবন্ধ কী করবেন তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে আছেন, তখন তার জীবনে আশীর্বাদ হয়ে আসে ‘ক্যামব্রিজ ম্যাথমেটিক্যাল জার্নাল’ নামের একটি নতুন জার্নাল।

এ জার্নালটির প্রকাশনা শুরু হয়েছিল ১৮৩৭ সালে। যেসকল প্রবন্ধগুলো বিতর্কিত হওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠিত জার্নালগুলো প্রকাশ করতো না, তাদের সুযোগ করে দেয়ার জন্যেই শুরু হয়েছিল এটি। শুরু থেকেই অগাস্টাস ডি মর্গান, আর্থার কেলি, জেমস সিলভেস্টার, জর্জ স্টোকস সহ বর্তমানে বিখ্যাত অনেক গণিতবিদের কাজ প্রকাশিত হতে থাকে এখানে। বুল যখন তার প্রবন্ধের জন্য প্রকাশক খুঁজছিলেন, ক্যামব্রিজ ম্যাথমেটিক্যাল জার্নাল তখন খুঁজছিল মৌলিক পাণ্ডুলিপি।

এ জার্নালের সম্পাদক ছিলেন স্কটিশ গণিতবিদ ডানকান এফ গ্রেগরি। ট্রিনিটি কলেজ, এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো তৎকালীন সময়ের শ্রেষ্ঠ সব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছিলেন তিনি। নিজের উচ্চ সামাজিক অবস্থান সত্ত্বেও ‘অশিক্ষিত’ জর্জ বুলের প্রতি বিন্দুমাত্র অহমিকা দেখাননি গ্রেগরি। জর্জ বুলের প্রবন্ধের পাণ্ডুলিপি দেখে তার সামর্থ্য অনুধাবন করতে সক্ষম হন গ্রেগরি। বুলকে লেখার পদ্ধতি উন্নত করতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শও দেন তিনি।

১৮৪০ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্রেগরির জার্নালেই প্রকাশিত হয় বুলের প্রথম গবেষণাপত্র, ‘Theory of Analytical Transformation’। এর তিন মাস পরে লিনিয়ার ডিফারেন্সিয়াল সমীকরণ নিয়ে তার দ্বিতীয় প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়। এরপর আরো বেশ কয়েকটি প্রবন্ধ তিনি লিখেছিলেন এ জার্নালে। জর্জ বুল তখন পঁচিশ বছর বয়সী তরুণ। গবেষণাপত্র প্রকাশে সফলতা পাওয়ার পর, তিনি এ সময় ক্যামব্রিজে পড়াশোনা শুরু করার কথাও ভেবেছিলেন, কিন্তু এর বিশাল খরচের কথা চিন্তা করে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হন।

ডানকান এফ গ্রেগরির প্রতিকৃতি; Image Source: devianart.com

১৮৪৩ সালের দিকে এসে বুলের ক্যারিয়ারে আরেকটি টার্নিং পয়েন্ট আসে। এ সময় তিনি On a General Method in Analysisশিরোনামে একটি প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন। প্রবন্ধটি পড়েই গ্রেগরি বুঝতে পেরেছিলেন, এটি বুলের জীবন বদলে দিতে পারে। তিনি বুলকে পরামর্শ দেন এ প্রবন্ধটি রয়্যাল সোসাইটিতে জমা দেয়ার জন্যে, বুলও তা-ই করেন। এ গবেষণাপত্র গ্রহণ করা না করা নিয়ে বেশ খানিকটা বিতর্কের পর, অবশেষে রয়্যাল সোসাইটি প্রকাশ করে এটি। ১৮৪৪ সালের নভেম্বরে এ গবেষণাপত্রের জন্য রয়্যাল মেডেলও লাভ করেন জর্জ বুল।

তখন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গণিতবিদদের একজন হওয়ার পথে যাত্রা শুরু হয়েছে জর্জ বুলের। রয়্যাল মেডেল পাওয়ার পর সামনের পথ মসৃণ বলেই মনে হচ্ছে। তবে তার এতদূর আসার জন্যে যার অবদান, তার সেই শুভাকাঙ্ক্ষী ডানকান গ্রেগরি এটি দেখে যেতে পারেননি। তার আগেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি। বুলও তার এ অকৃত্রিম বন্ধুকে ভুলেননি। একটি প্রবন্ধের পাদটীকায় গ্রেগরির প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনও করেছিলেন তিনি।

বুলকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর থেকে কোনো বিরতি ছাড়াই তার একের পর এক প্রবন্ধ প্রকাশিত হতে থাকে। ১৮৪৭ সালে এসে Mathematical Analysis of Logic নামে তার একটি বুকলেট প্রকাশিত হয়। একে তার পরবর্তী মাস্টারপিস ‘An Investigation of the Laws of Thought’ এর প্রাথমিক খসড়া বলা যায়, যা আরো সাত বছর পরে বেরিয়েছিল।

এ দুটি বইয়ে বুল দর্শনের লজিক বা যুক্তিকে গাণিতিক রূপ দেন, যা থেকে আসে তার বিখ্যাত বুলিয়ান বীজগনিত। ক্লড শ্যাননের কল্যাণে যা এখন ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সের একদম মৌলিক বিষয় হয়ে গেছে। জর্জ বুল এসব অসাধারণ কাজ করে যাচ্ছিলেন লিঙ্কনে বসেই। কিন্তু তার মতো একজন দেশবরেণ্য গণিতবিদ বাচ্চাদের পড়িয়েই বাকি জীবন কাটিয়ে দেবেন, তা তো হতে পারে না।

জর্জ বুল স্মৃতিস্তম্ভ; Image Source: wikimedia commons

এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটে ১৮৪৯ সালে এসে। সেসময়ে নতুন শুরু হওয়া কুইন্স কলেজে (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) গণিতের গবেষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন তিনি। একজন দরিদ্র মুচির ছেলে, কখনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ না পাওয়া ছেলেটি তখন ‘প্রফেসর জর্জ বুল’।

কুইন্সে আসার পর তার কায়রিয়ারও অন্য মাত্রা পায়। ১৮৫২ সালে ইউনিভার্সিটি অব ডাবলিন থেকে তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী দেয়া হয়। ১৮৫৪ সালে প্রকাশিত হয় তার শ্রেষ্ঠ কাজ ‘An Investigation of the Laws of Thought’। ১৮৫৭ সালে তিনি রয়্যাল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন। ১৮৫৮ সালে সম্ভাব্যতা নিয়ে তার কাজের জন্য লাভ করেন কিথ প্রাইজ। ১৮৫৯ সালে এসে প্রকাশিত হয় তার আরেকটি গবেষণাপত্র ‘A Treatise on Differential Equations এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরেকটি ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন তিনি।

এ সময়ে তার ব্যক্তিগত জীবনেও সুখের জোয়ার চলছিল। ১৮৫০ সালের দিকে মেরি এভারেস্টের সাথে পরিচয় হয় তার। মেরি এভারেস্ট ছিলেন বিখ্যাত জর্জ এভারেস্টের (যার নামে এভারেস্টের নামকরণ) ভাইয়ের মেয়ে। সেসময় মেরির বয়স ছিল জর্জ বুলের বয়সের প্রায় অর্ধেক। তাছাড়া তাদের সামাজিক অবস্থানেরও ছিল বিস্তর ফারাক। তবে তাদের ভালোবাসার কাছে এসব বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ১৮৫৫ সালে এসে বিয়ে করেন তারা।

জর্জ ছিলেন অত্যন্ত পরিবারিক মানুষ। বেশ সুখেই চলছিল তাদের বৈবাহিক জীবন। নয় বছরের ব্যবধানে, পাঁচজন সন্তানের জনক-জননী হয়েছিলেন জর্জ ও মেরি। সন্তানদের সাথে সময় কাটাতে ভীষণ পছন্দ করতেন বুল। বলা চলে, এ সময় সবদিক থেকেই তার জীবনে চরম সুখের বাতাস বইতেছিল। কুইন্স কলেজে এসে যেন স্বর্গীয় সময় কাটছিলো বুলের।

মেরি এভারেস্ট বুল; Image Source: agnesscott.edu

কিন্তু একটি বড়সড় ভুল করে বসেন তিনি। ১৮৬৪ সালের ২৪শে নভেম্বর তিনি কলেজে যাচ্ছিলেন লেকচার দিতে। পথে প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির সম্মুখীন হন। ঝড়-বৃষ্টি ঠেলে কাকভেজা হয়ে পৌঁছান কলেজে। কাপড় না বদলিয়ে এ ভেজা শরীর নিয়েই লেকচার দেন তিনি। নিউমোনিয়া ধরে বসে তাকে। তার স্ত্রী মেরি বিশ্বাস করতেন, মানুষের যেকোনো রোগ সেভাবে সারানো উচিৎ, যেভাবে এটির উৎপত্তি হয়েছে; অনেকটা বিষে বিষ ক্ষয়ের মতো।

যেহেতু জর্জ বুল বৃষ্টিতে ভিজে ঠাণ্ডা লাগিয়েছেন, তাই মেরি তাকে ভেজা চাদর দিয়ে আবৃত করে রাখলেন। তবে অনেকের মতে, মেরি এর চেয়েও বাজে কাজ করেছিলেন। বালতিতে করে ঠাণ্ডা পানি এনে ঢেলেছিলেন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বুলের ওপর। এরকম হাস্যকর চিকিৎসা-পদ্ধতির শিকার হয়ে ১৮৬৪ সালের ৮ ডিসেম্বর জীবনাবসান ঘটে মহান এ গণিতবিদের। পঞ্চাশ বছরও বাঁচেননি তিনি। তবে এর মধ্যেই পৃথিবীকে যা দিয়ে গেছেন, তার জন্যে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন তিনি।

তথ্যসূত্র

The Logician and the Engineer: How George Boole and Claude Shannon Created the Information Age by  Paul J. Nahin, page(17-28)

ফিচার ইমেজ: youtube.com/George boole

Related Articles