‘জলপুত্র’ কেন ব্যতিক্রম? এমন একটা প্রশ্ন আপনার মাথায় আসা স্বাভাবিক। উত্তরটা অবশ্য বইয়ের পেছনেই দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে,
“এপার-ওপার কোনো বাংলাতেই বঙ্গোপসাগরের জেলেদের নিয়ে জলপুত্রের আগে কেউ উপন্যাস লেখেননি। তাই জলপুত্র ব্যতিক্রম।”
কথাটা একেবারে মিথ্যে নয়। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ কিংবা অদ্বৈত মল্লবর্মণের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ – সব বইয়ের প্লটই গড়ে উঠেছে নদীবিধৌত অঞ্চলের জেলেদের নিয়ে। এসব বইয়ে আমরা নদীর পাড়ের জেলেদের সুখ দেখেছি, দুঃখ দেখেছি, এমনকি সংগ্রামও দেখেছি। কিন্তু বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষে যে জেলে পাড়ার অবস্থান? তাদের কথাও তো কাউকে না কাউকে বলতে হতো। সেই কথাই বলেছেন তাদেরই একজন, হরিশংকর জলদাস। একবাক্যে যদি বলতে হয়, তাহলে বলতে হবে- জলপুত্র সমুদ্রনির্ভর জেলেদের সমাজজীবনের উপাখ্যান।
গল্পের শুরু হয় চন্দ্রমণি নামে এক জলপুত্রের নিখোঁজের মাধ্যমে। শুরুতেই একটি চরিত্রের নিখোঁজের বার্তা দিয়ে আসলে প্রারম্ভেই লেখক আমাদের জেলেজীবনের একটি নির্মম সত্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চেয়েছেন। এই সত্যটি হলো- এই জলপুত্রদের আসলে জীবনের নিশ্চয়তা নেই। তারা যেকোনো সময় মারা যেতে পারে, করায়ত্ত হতে পারে সমুদ্রের। শহুরে সমাজ থেকে বহুদূরের এই জেলেদের জীবনের অনিশ্চয়তাতে যে সভ্য সমাজের কিছু যায় আসে না, এমন নির্মম সত্য তুলে ধরার মাধ্যমেই এই বইটির শুরু হয়। এছাড়াও শুরুতে আমরা চন্দ্রমণির সহধর্মিণী ভুবনেশ্বরীর স্বামীর জন্যে প্রতীক্ষার এক নির্মম চিত্র পাই। গোটা চিত্রপটই জীবন্ত হয়ে উঠেছে কল্পনায়, হরিশংকর জলদাস এমন দৃশ্যের সাক্ষী হয়েই চিত্রটি সার্থকভাবে অঙ্কন করতে পেরেছেন। ভুবনেশ্বরী, যে জানে না তার স্বামী আদৌ কোনোদিন ফিরবে কি না, তবুও প্রতীক্ষা করে থাকে তার ফেরার। মূলত ‘জলপুত্র’ উপন্যাসটি শুরুই হয় ভুবনেশ্বরীর এই প্রতীক্ষার মধ্য দিয়ে। আর এই প্রতীক্ষার মধ্যে দিয়েই জেলেজীবনের নানা আখ্যান বর্ণনা করা হয়েছে ‘জলপুত্র’ উপন্যাসে।
জলপুত্র উপন্যাসটি মোটাদাগে একটি ‘লিটারারি ফিকশন’ নাকি ‘লিটারারি ক্যানন’, সে ব্যাপারে খানিকটা সন্দেহ থাকতে পারে। সেই সন্দেহ দূর করার আগে বরং আপনাদের এই দুটি টার্মের সাথে পরিচিত করে নিয়ে ফেলি। অতি সংক্ষেপে বলতে গেলে, যদি কোন ফিকশনের পুরো গল্পটা একটি চরিত্রকে ঘিরে গড়ে ওঠে, তাহলে সেটাকে বলা হয় ‘লিটারারি ফিকশন’। আর যদি গল্পটা গড়ে ওঠে কোনো জায়গা কিংবা কোনো গোষ্ঠী নিয়ে, তাহলে সেটাকে বলা যেতে পারে ‘লিটারারি ক্যানন’।
জলপুত্র যে ‘লিটারারি ক্যানন’ তা নিয়ে বোধহয় সন্দেহ নেই। কেননা, পুরো উপন্যাস যেহেতু লেখা হয়েছে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসবাসকারী নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে নিয়ে, অর্থাৎ বঙ্গোপসাগর উপকূলে বসবাসকারী জেলেদের নিয়ে। এবার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, তাহলে একে ‘লিটারারি ফিকশন’ও কেন বলছি?
কারণ, এই পুরো উপন্যাসটি গড়ে উঠেছে ভুবেনশ্বরীকে ঘিরেই।
ভুবনেশ্বরী
‘জলপুত্র’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র এই ভুবনেশ্বরী। ভুবনেশ্বরীর স্বামী যখন নিখোঁজ হয়ে যান, তখন তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। এক পুত্র ও এক শ্বশুর নিয়ে তিনি কীভাবে সংসার চালাবেন, সেরকম একটা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতে দেখা যায় তাকে। ইতোপূর্বে যেহেতু ভুবনেশ্বরী কোনো কাজ করেননি, তাই একরকম দিশাহীন হয়ে যান তিনি। আর ঠিক তখনই দেখা যায়, প্রতিবেশী এক নারীর পরামর্শে তাকে কাজে নেমে পড়তে।
ভুবনেশ্বরী চরিত্রের মধ্যে আত্মমর্যাদাসম্পন্ন নারীর ছবি প্রকাশ পায়। ভুবনেশ্বরীর চিন্তাভাবনার যে ডালপালা পুরো উপন্যাসজুড়ে আমরা দেখতে পাই, তাতে করে চরিত্রটিকে আপনি একটি সংকীর্ণ জনগোষ্ঠীতে অবস্থানরত নারীর জাগরণের সাথে মিলিয়ে ফেলতে পারেন। যেমন ধরুন, ভুবনেশ্বরী চায় তার ছেলে মাছ না ধরে পড়াশোনা শিখবে। এই চিন্তার পালাবদলে ‘জেলেপুত্র মাত্রই জলপুত্র’ ধরনের যে নিয়ম, সেই নিয়ম ভাঙার একটা সূচনা আমরা দেখতে পাই। এমনকি এই নিয়ম মানতে গিয়ে তাকে সচরাচর পুরুষতন্ত্রকে উপেক্ষা করতেও দেখা যায়। স্বভাবতই বঙ্গোপসাগরের কূলে এক জেলেপাড়ায় বসবাস করে এমন নিয়ম ভাঙা ভুবনেশ্বরীর জন্য সহজ ছিল না। কিন্তু তবুও দাঁতে দাঁত চেপে সেটাই করতে দেখা গেছে তাকে। যদিও শেষ অব্দি তার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে কি না, সেটা জানতে হলে আপনাকে বইটি পড়তে হবে।
বইটিতে ভুবনেশ্বরী চরিত্রের আরেকটি গুরুত্ব হলো, এই চরিত্রের মাধ্যমে লেখক অন্যান্য কিছু চরিত্রের ভাব প্রকাশ করতে চেয়েছেন। এই ব্যাপারটি অবশ্য প্রথম কিছু পাতা জুড়েই দেখা যায়, এরপর পার্শ্বচরিত্রগুলো স্বাধীনভাবেই নিজের চিন্তা প্রকাশ করতে থাকে। তবে তা করলেও মোটা দাগে এই বইটি ঘিরে আছে ভুবনেশ্বরীকে নিয়েই। ভুবনেশ্বরীর গল্প বলতে গিয়ে কখনও কখনও অন্যান্য চরিত্রের গল্পও লেখক লিখেছেন বটে, তবে তা গল্পের প্রয়োজনেই। কিংবা ভুবনেশ্বরী চরিত্রটি আরো নিখুঁতভাবে অঙ্কনের প্রয়োজনেই।
জেলেপাড়ার সংস্কৃতি
‘জলপুত্র’ বইয়ের মাধ্যমে জেলেপাড়ার সংস্কৃতি বেশ ভালোভাবেই তুলে ধরেছেন লেখক। যেমন- লেখক শুরুতেই জলপুত্রদের বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে ‘নাউট্যাপোয়া’ ব্যাপারটির অবতারণা করেন। ‘নাউট্যাপোয়া’ মূলত একজন কিশোর, যে কি না মেয়ে সেজে লোকের মনোরঞ্জন করে। আবহমান কাল ধরে বাংলায় এর প্রচলন দেখা যায়। এমনকি, এমন নাউট্যাপোয়াদের ‘ঘেটুপুত্র’ নাম দিয়ে হুমায়ুন আহমেদও সিনেমা নির্মাণ করেছিলেন যার নাম ছিল ‘ঘেটুপুত্র কমলা’। হুমায়ুন আহমেদের সেই সিনেমাতে ঘেটুপুত্রদের সাথে হওয়া নানা দুর্ব্যবহার ও অন্যায়ের চিত্র ফুটে উঠেছিল, সেই একই রকম চিত্র ফুটে উঠেছে এই ‘জলপুত্র’ উপন্যাসে। এমনকি প্রত্যন্ত এসব অঞ্চলে সমকামীতার চর্চাও যে এসব নাউট্যাপোয়াদের মাধ্যমে বেশ ভালোভাবে টিকে আছে, তা-ও দেখা যায় উপন্যাসে।
তবে এসবের চেয়ে বইয়ের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো লেখকের দেওয়া জেলেপাড়ার বর্ণনা। লেখক দক্ষ হাতে এমন মাধুর্যমণ্ডিত করে জেলেপাড়ার বর্ণনা দিয়েছেন, তাতে পুরো চিত্রটা চোখের সামনে যেন ভেসে ওঠে। আর এই জেলেপাড়ার জলপুত্রদের মাছ ধরার সূক্ষ্ম বর্ণনাও আমরা পাই বইয়ে।
তবে শুধু কি মাছ ধরার বর্ণনা? একেকটি জাল দিয়ে যে জেলেরা একেক ধরনের মাছ ধরে, কিংবা একেক জায়গায় ব্যবহার করতে হয় একেক ধরনের জাল, সেটারও একটা সূক্ষ্ম বর্ণনা আমরা বইয়ে পাই। এমনকি, বইয়ের এক জায়গায় বঙ্গোপসাগরের মাঝে জাল ফেলার যে বর্ণনা লেখক দিয়েছেন, তাতে চমৎকৃতই হতে হয়। ইতোপূর্বে জেলেজীবন নিয়ে অনেক উপন্যাস লেখা হলেও জাল ও মাছ ধরার এমন সূক্ষ্ম বর্ণনা আর কেউ দিয়েছেন বলে মনে হয় না।
এমনকি, ‘জাগ দেওয়া’ ও ‘হাজা চুক্তি’র মতো কিছু জেলেপাড়ার সংস্কৃতির সাথেও পাঠক পরিচিত হয় এই বইয়ের মাধ্যমে।
গৌরাঙ্গ সাধু
‘গৌরাঙ্গ সাধু’ চরিত্রটি উপন্যাসে বেশ ছোট পরিসরে থাকলেও গোটা বইয়ে এই চরিত্রটি একটি শক্ত বার্তা দেয়। উপন্যাসের খুব অল্প জায়গাতেই চরিত্রটি দেখা গেলেও, চরিত্রটি জেলে পাড়ায় শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার যে আহ্বানের কথা বলে, এই আহ্বান মূলত একজন যাজকের বৈশিষ্ট্যকে নির্দেশ করে। কোনো এক ঘুণে ধরা সমাজ জেগে ওঠার প্রাক্কালে যে এরকম গৌরাঙ্গ সাধুদের ছোট ছোট আহ্বানের বেশ বড় ভূমিকা আছে, সেটা বইয়ে লেখক দেখাতে চেয়েছেন। তবে সেই আহ্বানের ধরন কিংবা ফলাফল কী হয়, তা জানতে হলে আপনাকে এই বইটি পড়ে ফেলতে হবে।
জেগে ওঠার আহ্বান
জেলে পাড়ায় জেগে ওঠার চিত্র হিসেবে লেখক বেছে নিয়েছে ‘গঙ্গাপদ’ চরিত্রকে। গঙ্গাপদ মূলত ভুবনেশ্বরীর ছেলে। ইতোপূর্বে জেলেপাড়ায় দেখা যায়, তারা ঋণ নিয়ে মাছ ধরে সেই ঋণ কখনও শোধ করতে পারত না। কারণ যাদের কাছ থেকে ঋণ নেওয়া হতো, সেসব লোকেরা অশিক্ষিত জেলেদের মূর্খতার সুযোগ নিয়ে কখনোই ঋণের দায় নিচে নামতে দেয়নি। আর মূর্খ জেলেরাও যে অঙ্কের কথা এই ঋণদাতারা বলেছে, তা-ই বিশ্বাস করে এসেছে। মূলত শোষিত এই জেলেদের জেগে ওঠার জন্যে কোনো এক বিপ্লবী চরিত্রের দরকার ছিল। এই বিপ্লবী চরিত্রই হলো গঙ্গাপদ।
গঙ্গাপদকে একদিন দেখা যায়, সে সমগ্র জেলেপাড়ার লোকদের সমবেত করে ঋণদাতাদের এই শোষণ সম্পর্কে সাবধান করছে। শুধু তা-ই নয়, গঙ্গাপদের কথার সুরে ‘আর এভাবে চলতে দেওয়া যায় না’ সূচক একটা ভাব আমরা দেখতে পাই, যা কি না কোনো এক সমাজবিভাজনকে দূর করার শুরুর দিকে জেগে ওঠার জন্যে কোনো এক বিপ্লবীকেই নির্দেশ করে। আর এই বিপ্লবের চিত্রগুলো যে ফিকশনের মাধ্যমে বেশ ভালভাবে দেখানো যায়, সেটা ইতিপূর্বেই সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই। এমনকি ‘আমেরিকান লিটারারি স্কলার’ ক্রিস্টোফার ক্যাস্টিগ্লিয়ারের একটি জার্নালও আছে এ সম্বন্ধে। জার্নালটির নাম ‘Revolution Is a Fiction: The Way We Read’।
বিশ্বাস ও বিভাজন
মঙ্গল কামনায় যুগ যুগ ধরে নানা সমাজ নানা ধরনের কার্যকলাপ অক্ষুণ্ন রেখে চলেছে। জেলে পাড়াও এর ব্যতিক্রম কোনো সমাজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। মঙ্গলার্থে ‘জাগ দেওয়া’ কিংবা ‘দেবী গঙ্গার পূজা’র যে চিত্র লেখক তুলে ধরেছেন, পাঠক সেই চিত্র পড়ে জেলে পাড়ার বিশ্বাস সম্বন্ধে একটা বিস্তারিত চিত্র পাবে। এখানে অবশ্য একটা মজার ব্যাপার ঘটে। জেলেদের সেই বিশ্বাস প্রতিফলিত না হলে, কিংবা দেবী গঙ্গার পূজা ঠিকঠাক দেওয়া হলেও যখন দেখা যায় জেলেরা বিপদসংকুল পরিবেশ এড়াতে পারেনি, তখন জলপুত্রদের কাউকে প্রশ্ন করতে দেখা যায়নি। এখানে আবহমান কাল ধরে চলা বিশ্বাসের যে শক্ত ভিত্তি, তা-ই প্রকাশ পেয়েছে।
তবে জেলেপাড়ায় যে একের পর এক বিভাজনও চলমান থাকে, সেই চিত্রও লেখক এখানে তুলে ধরেছেন। বহদ্দার থেকে সামান্য মাছবিয়ারি অব্দি ক্ষমতার যে ‘চেইন অব অর্ডার’ সেই চেইন অফ অর্ডার সম্বন্ধে লেখক সুকৌশলে এখানে বর্ণনা করেছেন। যেমন- এক জায়গায় ‘গোলকবিহারী’ নামক একটি চরিত্র নিচের স্থান থেকে ‘বহদ্দার’ হতে চায়। সে জন্য তার কাছে যথেষ্ট অর্থও আছে। কিন্তু তার প্রতি অন্য বহদ্দারদের যে অবদমিত আচরণ, সেটি মূলত আমাদের সমাজে কাউকে উপরে উঠতে না দেওয়ার যে হিংসাত্মক প্রবৃত্তি, সেটিকেই নির্দেশ করে।
পাঠ প্রতিক্রিয়া
‘জলপুত্র’ পড়ে ভালো লেগেছে। ১৯২ পৃষ্ঠার একটি বইয়ের মাধ্যমে একটি পুরো সমাজজীবনের সংস্কৃতি, বিশ্বাস, জীবনযাত্রার ধরন, ক্ষমতার ‘চেইন অব অর্ডার’ তুলে আনা সহজ কোনো ব্যাপার ছিল না। অথচ লেখক এটাই করেছেন বেশ সাবলীলভাবে। পুরো বইয়ে আরেকটা ব্যাপার পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সেটি হলো, লেখক প্রতিটি চরিত্রকে দিয়ে কথা বলিয়েছেন আঞ্চলিক ভাষায়। অর্থাৎ প্রতিটি চরিত্র কথা বলেছে চট্টগ্রামের ভাষাতে। সেই কথা বুঝতে কিছুটা অসুবিধা হলেও লেখক এখানে চরিত্রগুলো দিয়ে শুদ্ধ বাংলা ভাষা বলিয়ে একটা সমাজভিত্তিক উপন্যাসের ফ্লেভার নষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে এতটুকু ছাড় দিতে চাননি। লেখকের এই চাওয়া আমার ভালো লেগেছে। তবে যে ব্যাপারটা খানিকটা দৃষ্টিকটু লেগেছে, তা হলো: শুরুর দিকের গল্পের ধারা আর শেষের দিকের গল্পের ধারা ঠিক একই ধারায় এগোয়নি। শেষদিকে খানিকটা থ্রিলের আভাস দিতে চাইলেও সেই ব্যাপারেও লেখক পুরোপুরি সফল হননি বলেই আমার মনে হয়।
বাংলা সাহিত্যে ‘জলপুত্র’ উপন্যাসের বিশেষ গুরুত্ব আছে। একটি সমাজকে চেনার জন্যে এই ধরনের উপন্যাস ফিকশনের আদলে নন-ফিকশনের তথ্যের মতো কাজ করে। এ ধরনের উপন্যাসই মূলত একটি সংস্কৃতির বার্তা অন্য সংস্কৃতিতে ছড়িয়ে দিতে পারে। এই বইয়ের জন্যে লেখক ‘আলাওল সাহিত্য পুরষ্কার’-এ ভূষিত হন।